CH Ad (Clicksor)

Tuesday, December 17, 2013

সত্যি কি প্রেম ছিল_Written By aarushi1977 [১ম খন্ড (চ্যাপ্টার ০১ - চ্যাপ্টার ০৩)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




সত্যি কি প্রেম ছিল
Written By aarushi1977






ভূমিকাঃ

আমি লিখতে জানি না, একটু চেষ্টা করছি। গল্পটা কিছু দিনের মধ্যে শুরু করব। আপনাদের আশির্বাদ পেলে নিজেকে খুব ধন্য মনে করব। গল্পে কোন ভুল হলে মাফ করে দেবেন।

এই গল্পটা একটি মেয়ের যে তার বান্ধুকে ভালবাসত কিন্তু দুই জনের মধ্যে কেউই কাউকে শেষ পর্যন্ত বলে উঠতে পারলো না।





সত্যি কি প্রেম ছিল (#01)

শীতকাল, আর কলকাতার শীত আসতে একটু সময় নেয়। সকালের রোদটা বেশ মিষ্টি লাগে। ঘুম থেকে উঠে কারুর কি আর কলেজ যেতে ভাল লাগে তাও যেতে হয়। কুড়িটা শিত কাটিয়ে এই তো সবে কলেজ এ পা রেখেছিলাম সেইদিন। ছোটবেলা থেকে শুধু পড়াশুনা পড়াশুনা করে কাটিয়ে গেলাম। অনেক কিছু তো করতে পারিনি বা করতে মন চায়নি। চারদিকে মেয়েদের দেখে মনে হত ওরা কত চনমনে উছহল। যেন সবাই একটা বাঁধনহারা নদী। আমি বরাবর শান্তশিসটি মেয়ে ছিলাম। থাকার মধ্যে এক প্রানের বান্ধবি, বাসবি, ছাড়া আমার বিশেষ কেউ বন্ধু বান্ধবী ছিলনা। কোনদিন তো জিন্স ও পরিনি তাই তো ছেলেরাও কেমন কেমন করে তাকিয়ে দেখত আর হইত পেছনে হাসতও হবে। আমার মনে হত মাঝয়ে মাঝয়ে ডানা মেলে উড়ে যেতে যেথাই দু চখ যায়। মনে হত কেউ যদি আমার কাছে আমাকে চায় তো আমি কি বলব তাই তো আর কোন দিন কাউকে মুখ ফুটে কিছু বলতেই পারলাম না। এই ভাবে কেটে যাই দু মাস, শুধু পড়াশুনা। 

হাঁ নভেম্বর এর প্রথমে ও কলেজ জইন করে। আমাদের চেয়ে একটু দেরিতে জইন করে। কারন তো র সেইদিন জানতাম না। লাস্ট বেঞ্চে বসে গুরু গম্ভির গলায় স্যার এর প্রশ্নর উত্তর দেই। আমি ফার্স্ট বেঞ্চয় এ বসে পেছনে তাকিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করি কে এই রকম ভারি গলায় উত্তর দেই। চারদিকে এত ছেলে মেয়েদের মধ্যে প্রথম দিন ওকে দেখতে পাইনি। তারপরে টিফিন টাইমএ দেখলাম একটা মঝারি গড়ন রোগা পটকা ছেলে, চখে চশমা, আমাদের চেয়ে বড় হবে বয়সে। বিশেষ কারুর সাথয়ে কথা বার্তা বলে না, ছুপছাপ নিজের টিফিন খেয়ে বেরিয়ে গেল ক্লাস থেকে।

দেখে মনে হয়েছিল "কি রে বাবা কেমন যেন ভুত। নাক উঁচু ছেলে নাকি যে কারুর সাথে কথা বলেনা?" লাস্ট বেঞ্চে বসে একা একা নিজের মনে নোটস লিখয়ে যায় আর ক্লাস এর পরে চুপচাপ কারুর সাথে কথা না বলে চলে যায়।





সত্যি কি প্রেম ছিল (#02)

তারপর একদিন দেখা বাস স্ট্যান্ডে, আমি আর বাসাবি দাঁড়িয়ে আছি বাসএর জন্য দেখি শুভ্র এক কোনে দাড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছয়ে। আমাদের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি করে হাসল, আমিও কি করি কি করি একটু হাসতে হয় তাই দন্ত বিকশিত করে একটা হাসি দিলাম। একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করি "কিরে কলেজএ এতো চুপ চাপ থাকিস কেন?" তার পরে ভাবলাম "আমার বয়ে গেছে জিজ্ঞেস করতে ও আমার কন তের দিনিয়া যে আমি জিজ্ঞেস করবো?"

আমি বাসাবি কি জিজ্ঞেস করলাম "কিরে কেমন যেন ছেলেটা তাইই না? কেমন যেন কথাবার্তা দেখে তো বাঙালি মনে হয় কিন্তু কথা বার্তা শুনে তো বাঙালি বলে মনে হয় না রে"

বাসাবি বলল "আমি জানি না রে বাবা, তবে তুই এত কেন জিজ্ঞেস করছিস ওর ব্যাপারে বলত?"

মুচকি হেসে বললাম "নারে কিছু না, কিন্তু একটা আস্ত গান্দু ছেলে মাইরি। দেখেছিশ শিল্পির দিকে কেমন ভাবে তাকিয়ে ছিল। এইই যেন খেয়ে ফেলবে।"

বাসাবি বলল "কই আমি তো দেখিনি"

---"তুমি তো সোনা নেকু পুশুমুনু, তুমি বই ছাড়া কি কিছু দেখো?"

---"ধ্যাত তুই কবে থেকে দেখতে শুরু করলি রে? তোর তো কোনদিন নোলা শোঁক-শোঁক করেনি ছেলে দেখে?"

---"কোন দিন করেনি বলে কি করতে নেই এইই কি মহাভারতে লেখা আছে নাকি। যাই হক চল বাস এসে গেছে।"

বাসটা বড় ভিড়, দাঁড়াবার জায়গা পাওয়া মুশকিল আর কলকাতার বাস তো, মেয়েদের দাঁড়াবার জায়গা আলাদা থাকে। সেইখানেও ছেলে বুড় সব মিলে দাঁড়িয়ে হুমড়ি খেয়ে পরে যেন কুকুর গুলো কোন দিন মেয়ে দেখেনি। তার পরে পিঠে হাত লাগানো তো আছেই সেই সব বাঁচিয়ে কোন রকমে বাসে উঠলাম। 

বাসাবি বলল "এইই বাস টা ছেড়ে দিলে হতোনা?"

আমি বললাম "বাড়ি কি হেঁটে যাবি নাকি না তোর শ্বশুর আমাদের জন্য গারি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছয়ে রে?"

আমি বেশ ভুঝতে পারছিলাম যে কেউ আমার পিঠে হাত রেখেছে মাথাটায় রক্ত চরে গেল কিন্তু কি করা যাবে এক হাতে ব্যাগ আর এক হাত দিয়ে ওপরের রড টা ধরে নিজেকে কোনোরকম সামলে সাম্নের দিকে আরও ঝুঁকে পরি যাতে পেছনের কুত্তাটার হাত না লাগে। তার পরে দেখি এতো বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে লোকটা মধ্যবয়স্খ তাও দেখি ঠেলে এসেছে আমার পিছনে।

আমি ঝাঁজিয়ে উঠলাম "কি কাকু একটু সোজা হয়ে দাঁড়াননা"

এক দাগা পান খাওয়া দাঁত বার করে একটা নোংরা হেসে বলে "খুকুমনি বাসে অনেক ভিড় কোথাই যাই বলতো"

---"কেন ছেলেদের দিকে তো অনেক জাইগা আছে, ওদিকে গিয়ে দাঁড়াননা।"

এমন সময়ই দেখি ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসে শুভ্র, আমার দিকে তাকিয়ে দেখে এক বার বুড়োটার দিকে কটমট করে তাকায়।

---"কি মশাই মেয়ে দেখন্নি নাকি, ওতো আপনার নাত্নির বয়সের হবে আর আপনি তো এক পা কবরে দিয়ে বসে আছেন তাও সাধ মেটেনা?"

এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল বুড়ো টাকে আর আমার পেছনে এসে আমাকে গার্ড করে দাঁড়াল। আমি এক বেচারা বেচারা হাসি হাসলাম, কি করবো কৃতজ্ঞতা বলেও তো পৃথিবীতে কিছু আছে।

আমার হাসি দেখে বাসাবি আমাকে জিজ্ঞেস করল "দেখলি তো ছেলেটা ভাল"

নাক কুঁচকে ওঁকে বললাম "হাঁ আর বলতে, লাইন মারছে শালা"

---"তোকে লাইন মারবে তাহলে হয়েছে।"

---"কেন আমি দেখতে খারাপ নাকি?"

---"নিজেকে একবার আয়নায় দেখিসতো, কোনদিন কি ঠিকঠাক ভাবে ড্রেস করে কলেজে এসেছিশ?"

আমি পিছন ঘুরে দেখতে চেষ্টা করলাম যে শুভ্র কি আমাদের কথা শুনছে কিনা। ওমা দেখি ও আমার দিকে মিটিমিটি করে হাসছে।

হাসি দেখে রাগ হল প্রথমে "কি রে ঐ রকম দাঁত বার করে হাসছিস কেন?"

আমার দিকে একটু ঝুঁকে কানেকানে বলল "তোদের কথা শুনে হাসি পেল তাই হাসছি। যাই হক তুই কোথাই থাকিস?"

আমি হেসে বলি---"কেন বলব, তুই কি আমার বাড়ি যাবি?"

---"না আমি কেন তোর বাড়ি যাব, আমি কি তোকে লাইন মারি নাকি যে তুই আমাকে তোর বাড়ি ডাকবি?"

আমি আর হাসি চাপতে পারলাম না "আমাদের কথা শুনশিলিশ কেন? মেয়েদের কথা শুনতে নেই"

---"কথা তো আমাকে নিয়ে করছিলিশ তাই তো আর মন টা ধরে রাখা গেলনা, যাই হক আমি দমদম নামবো তুই কোথাই নামবি বল টিকিটটা কেটে নেই"

---"তুই কেন আমার টিকিট কাটবি?"

---"বাহ রে প্রথম বার দেখা হল তো একটা কারসি বলে কিছু আছে তো রে বাবা। যাই হক আমি না হই না কাটলাম তুই আমার টা কেটে দে।"

আমি মিছকি হেসে জবাব দেইই "আমার বয়ে গেছয়ে তোর টিকিট কাটতে।"

আমার হাসি দেখয়ে আমার কানের কাছয়ে মুখ নিয়ে এসে বলে "ক্লাসে মাঝয়ে মাঝয়ে হাসিস না হলে সবাই তোকে রাম গারুরে ছানা বলবে।"

---"কেন তুই ও তো হাসিস না।"

---"আমি তো কলকাতায় নতুন, কাউকে চিনিনা জানিনা তাই তো কথা বলা বা হাসার লোক ও পাই না।"

আমি ওকে জিজ্ঞেস করি "তুই নতুন মানে? তুই কলকাতার ছেলে নস?"

আমার দিকে হেসে বলে "প্রথম দিনে কি পুলিশএর মত জেরা করবি নাকি? বাড়ি ডেকে চা তো খাওয়াবিনা তো আমি বলব কেন?"

আমি আর হাসি চাপতে না পেরে বললাম "ঠিক আছে তবে আজ নই আজ বাড়ি তে কেউ নেই, পরে একদিন ডেকে চা খাইয়ে দেবো।"

আমার দিকে তাকিয়ে বলল "আমি তোর বাড়ি গেলে তোকে নিশ্চয়ই খেয়ে ফেলতাম না"

ঠোঁট উলটে হেসে বললাম---"কি জানি বাবা, বাড়ি গিয়ে দেখলাম তোর অন্য মূর্তি তাহলে কি করবো?"

---"আছা বাবা অন্য দিন হবে।"

আমি বললাম "আমি ও দমদম থাকি"






সত্যি কি প্রেম ছিল (#03)

আমি নামতে যাব, পেছন থেকে শুভ্র বলে উঠল "অহনা, তোর ফোন নাম্বার তা দিলি না ত?"

আমি নিজেকে আর সামলাতে না পেরে, একটু মুচকি হেসে বললাম "তুই না একটা পাগল," আর কিছু না বলে বাস থেকে নেমে গেলাম।

বাসাবি হেসে আমায় জিজ্ঞেস করল "কিরে কেমন মনে হল?"

আমি ঠোঁট উলটে বললাম "কি আবার, আরে পাঁচটার মতন হ্যাংলা ছেলে, প্রথম দিনেই আমার কাছে ফোন নাম্বার চায়।"

বাস থেকে নেমে পড়ে বাসটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম, মনটা বলছিল যে শুভ্র হয়ত বাস থেকে নেমে আসবে, কিন্তু বাসটা ছেড়ে দিল। আমি তাকিয়ে থাকি, চলে যাওয়া বাসটার দিকে, যতক্ষণ না বাসটা ঐ ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল। একটু সময়ের জন্য মনটা খারাপ লেগেছিল কিন্তু নিজেকে বুঝালাম "তুই নিজে ত পাকামো করে দিলি না আবার মন খারা করছিস কেন রে?"

তার পর নিয়মিত হয়ে গেল গল্প করা। ক্লাসে আমার দেখাদেখি আরও মেয়ে গুলো বেশ শুরু করল ওর সাথে কথা বলা। এমনিতে শুভ্র বেশ হাসি খুশি ছেলে ছিল না তবে যেই রকম ভাবে কথাবার্তা বলত মনে হত জীবনে অনেক কিছু দেখেছে। মাঝে মাঝে মুখ টা দেখে খুব খারাপ লাগতো, কারুন চোখে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতো। খুব ইচ্ছে হতো জিজ্ঞেস করি "তোর কিসে কষ্ট রে?"

ক্লাসে দেখলাম যে ওর বেশ ভাল বন্ধু হয়েছে পরাশর আর অর্ণব। পরাশর টা একদম ফাজিল ছিল। তার দেখা দেখি শুভ্র দেখলাম বেশ ফাজিল হয়ে উঠল।

একদিন মজা করে বললাম "কি বাছাধন কলকাতার জল পেটে পরেছে? বেশ তো চনমনে লাগছে রে তোকে?"

আমাকে হটাত করে চোখ মেরে বলে "জন্ম তো কলকাতা এই কিছু দিনের জন্য বাইরে ছিলাম এই আর কি?"

ক্লাসে দুটো মেয়ে বেশ সুন্দরী দেখতে ছিল, এক সুপর্ণা আর পারমিতা। সুপর্ণার নাকটা একটু উঁচু ছিল তাই ও আমার সাথে কোন দিন বিশেষ কথা বলত না। নিজেকে যেন বিশ্ব সুন্দরী বলে ধারনা করত। আরে ছেলে গুলো তো ওর আশপাশে মউমাছির মতন ভন ভন করত। পারমিতা ভাল মেয়ে ছিল, ও আমার সাথে কথা ও বলত আর মাঝে মাঝে টিফিনও শেয়ার করতাম আমরা।

এক দিন লাস্ট পিরিওড টা খালি ছিল, আমরা মেয়েরা ক্লাসেই বসে ছিলাম। ছেলে গুলো সব বাইরে মাঠে বসে তাস খেলছিল।

পারমিতে আমাকে জিজ্ঞেস করল "এই অহনা একটা কথা বলবি?"

আমি জিজ্ঞেস করলাম "কি রে?"

---"তোর কোনো বয়ফ্রেনড নেই?"

আমি আমার হাসি চেপে রাখতে পারলাম না---"ধুর কি যে বলিস? আমার কেন বয়ফ্রেন্ড থাকতে যাবেরে?"

আই উলটে পারমিতে কে জিজ্ঞেস করলাম---"তোর নেই?"

একটু হেসে, পারমিতা আমাকে বলল---"না রে আমার কোন বয় ফ্রেন্ড নেই।তবে একটা কথা জিজ্ঞেস করার আছে, শুভ্র কেমন ছেলে রে?"

---"কেন বলত তুই কি কিছু মানে মানে ...?"

এক গাল হেসে উত্তর দিল---"কি যে বলিস না, ও আমার টাইপ এর ছেলেই নয়।"

আমি ভালভাবে ওর দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করি পারমিতা কি শুভ্রর পেছনে পরেছে?

আমার তাকান দেখে পারমিতা নিজের হাসি সামলাতে পারল না---"আরে কিছু না, তুই ঐ রকম ভাবে দেখছিশ কেন? আমি এমনি জিজ্ঞেস করলাম, তুই তো বেশ কথা বলিশ ওর সাথে তাই।"

আমি কিছু গন্ধ পেলাম তাই মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলাম---"তুমি তো সোনা এমনি এমনি কিছু জিজ্ঞেস করনা সত্যি করে বলত কি ঘটনা?"

---"আমি আমার জন্য জিজ্ঞেস করছি না রে। আমাকে পরাশর বলল যে শুভ্র নাকি সুপর্ণার পেছনে পাগল, তাই জিজ্ঞেস করা"

আমি কিছু উত্তর না দিয়ে একটু ব্যাঙ্গ হেসে ওকে বলি---"নিজেই জেনে নিস না কেন ওর কাছ থেকে, আমার সার্টিফিকেটের কি দরকার।" আমার সে দিন একটু রাগ হয়ে ছিল "বলে কি না আমার বন্ধু আর আমাকে একবারও জানাল না?"

কিছু দিন আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না ওকে, ও আমাকে কিছু বলল না। বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতাম হয়তো শুভ্র আসবে। বাসাবি বেশ বুঝতে পারত আমি কার জন্য অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে। মনটা কে মানিয়ে নিলাম, শুধু মাত্র কলেজের সহপাঠী ত, আমার বন্ধু ত নয়, আমি কেন অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকব? বাস আসত আমিও উঠে পরতাম আর বাড়ি চলে যেতাম।

দিন দিন, শুভ্র দেখলাম সুপর্ণার সাথে বেশ মিশে গেছিল। আমি মিটি মিটি করে তাকিয়ে দেখে হাসতাম আরে মনে মনে বলতাম "অহনা ভালই হল একটা হ্যাংলা ছেলের থেকে বেঁচে গেলি।"

লাস্ট বেঞ্চ থেকে শুভ্র আগে এসে সুপর্ণার পেছনে বসা শুরু করে দিল। টিফিন টাইমে আগে আগে ও আমাদের সাথে টিফিন করত, আস্তে আস্তে সেটা কমে গেল। আমি যে হেতু বিশেষ কারুর সাথে কথা বলতাম না তাই আমি আর বাসাবি একটু একটু করে আলাদা হয়ে গেলাম।

প্রথমে একদিন দুদিন কিছু বলিনি, তার পর এক দিন না থাকতে পেরে জিজ্ঞেস করি "কি রে কি চলছে?"

আমার দিকে ভ্রূকুটি করে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল "কি চলছে? কিছু নাতো।"

আমি একটা মুচকি হেসে ওকে রাগানর জন্য জিজ্ঞেস করলাম "ন্যাকা সেজ না আমার কাছে, আমি বেশ ভাল করে বুঝি। তুই তো আজ কাল দেখছি সুপর্ণার পেছনে বেশ লেগে আছিস?"

শুভ্র এমন একটা মুখ করল যেন ও ধরা পড়ে গেছে খুব বড় একটা চুরি করতে গিয়ে। আমার দিক থেকে মুখটা ফিরিয়ে নিয়ে আমতা আমতা করে বলল "না রে ও সব কিছু না।"

আমি আগ বাড়িয়ে বেশি কিছু আর জিজ্ঞেস করলামনা ওকে। যখন মন করবে বলতে হলে বলবে না হলে বলবে না। দিন দিন আমাদের মেলা মেশা একদম কমে গেল। একই ক্লাসে বসে, দুটো বেঞ্ছ পরে বসে থেকে ও আমাদের মধ্যে কথা বার্তা কমে গেছিল। প্রথম প্রথম একটু খারাপ লেগেছিল তার পরর মনটা কে মানিয়ে নিয়ে ছিলাম "বয়ে গেছে তোর সাথে কথা বলতে আমার।"

ঐ দিনটা শুভ্রর জন্মদিন ছিল। বাবা, মা, মামার বাড়িতে বেড়াতে গেছিল, তাই আমাকে নিজেই নিজের টিফিনটা বানাতে হয়ে ছিল। আমি সেই দিন একটু সুজি বানিয়ে ছিলাম।

টিফিনের সময় আমি শুভ্র কে ডেকে বলি---"এই আমি তোর জন্য টিফিন এনেছি খেয়ে যাস।"

ও দিকে ওর বন্ধুরা এবং সুপর্ণা ওকে ডাক দিতে ও আমার দিকে একটা হাসি ছেড়ে আমাকে বলল---"আজ নয়, অহনা অন্য দিন আমি তোর টিফিন খাবো।"

আমি বলতে যাচ্ছিলাম---"আমি তোর জন্য সুজি বানিয়ে এনেছি একটু তো খেয়ে যারে।"

আমার কথা ওর কানে গেলনা, তার আগেই ও দরজা দিয়ে দউরে বেরিয়ে গেল। টিফিন টা সুজি টা আমার চোখে বিষাক্ত হয়ে উটলো "ধুর তোর সুজি, আমি কোন দিন তোর সাথে আর কথা বলব না"

ব্যাস সেই দিন থেকে মনে মনে ভেবেনিলাম যে আমি কোন দিন আর শুভ্রর সাথে কথাই বলব না।

দিন দিন দেখতে থাকলাম যে শুভ্রকে, সুপর্ণা বেশ লেজে খেলাছে। শুভ্র যেন, সব কিছু দিয়ে দেবে এই রকম ভাবসাব দেখাচ্যে।

আমি এক দিন পারমিতা কে জিজ্ঞেস করলাম---"কি রে, সুপর্ণা আর শুভ্রর মধ্যে কি কিছু চলছে?"

পারমিতা হেসে উত্তর দিল---"জানিনা বাবা ওদের কথা। সুপর্ণা তো এমনি তে নাক উঁচু মেয়ে, ও কি আরে শুভ্র কে পাত্তা দেবে? আমি জানি ও লেজে খেলিয়ে ছেড়ে দেবে একদিন। অনেক তো দেখলাম ওকে।"

---"মানে?"

---"মানে আর কি, সুপর্ণা হছ্যে দশ ঘাটের জল খাওয়া মাগি। ওকি আর একটা তে সন্তুষ্ট থাকেরে। কলেজ কাউ কে চাই যে ওকে তোয়াজ করবে, যে ওর পেছনে পয়সা খরচ করবে। তাই এখন শুভ্র কে ওর ভাল লাগছে, আর কি। দেখিস একদিন শুভ্র হুমড়ি খেয়ে পরবে, বড় বেশি উরছে তো।"

আমি মনে মনে সেই দিন খুব শান্তি পেয়েছিলাম "বেশ হয়েছে, ধম্ম হয়েছে। যে যেই রকম সে সেই রকম পেয়েছে।"








কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




aarushi1977-এ লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

aarushi1977-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment