Friday, January 17, 2014

পাপ কাম ভালোবাসা_Written By pinuram [ষষ্ঠদশ পর্ব (চ্যাপ্টার ১ - চ্যাপ্টার ৪)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




পাপ কাম ভালোবাসা
Written By pinuram






ষষ্ঠদশ পর্ব (#01)

দেবায়ন পারমিতার স্তন চুষতে চুষতে আর পিঠের উপরে আদর করতে করতে চোখ বুজে আসে ঘুমে। চুলের মধ্যে, পারমিতা চাঁপার কলি আঙুল ডুবিয়ে আঁচর কেটে দেয়। অতি মধুর সম্ভোগ সঙ্গমের পরে সুখের রেশ বুকে মাখিয়ে স্তন চোষে দেবায়ন। পারমিতার উষ্ণ শ্বাস দেবায়নের কানে গালে বয়ে যায়। চোখ বন্ধ করে চুপচাপ নিস্তেজ হয়ে পরে থাকে দেবায়ন। এমন সময়ে পারমিতা দেবায়নের কানের কাছে মুখ এনে মিহি মধুর কণ্ঠে নিজের প্রেম ব্যাক্ত করে।

পারমিতা দেবায়নের কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে এসে ফিসফিস করে বলে, “আই এম ইন লাভ দেবায়ন। আই লাভ ইউ হ্যান্ডসাম। তুমি আমাকে আমার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছ, তোমার ছোঁয়া পেয়ে আমি ধন্য দেবায়ন। তোমার এই আদর খেতে খেতে আমি তোমাকে হৃদয় দিয়ে ফেলেছি দেবায়ন। আমি সত্যি সত্যি তোমাকে হৃদয় থেকে ভালোবেসে ফেলেছি সোনা।”

সেই কথা শুনে দেবায়নের হৃদয়ে এক অজানা ভীতি প্রবেশ করে, অতি কষ্টে নিজের আচরন আয়ত্তে রেখে নিস্তেজ হয়ে পরে থাকে। পারমিতার শরীর থেকে হাতের পায়ের বেড় আলগা করে দেয়। দেবায়নের বুকে শুধু অনুপমার ভালোবাসার আঁচর কাটা, ওর প্রানপ্রেয়সী, ওর হৃদয়ের রানী শুধু মাত্র অনুপমা। অনুপমার মায়ের সাথে শুধু মাত্র যৌন সহবাসের আনন্দ নিতে সম্ভোগ সঙ্গমে মত্ত হয়েছিল। সেই কাম বাসনা পূরণ করতে গিয়ে পারমিতার হৃদয়ের কোনে ওর প্রতি ভালোবাসা জেগে উঠবে সেটা দেবায়ন ভাবেনি। দেবায়ন জানে পারমিতা নিজের বুকের জ্বালা, নিজের শরীরের অতৃপ্ত কামের জ্বালা নিবারন করতে দেবায়নের কাছে ধরা দিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেবায়নের প্রেমে পরে যাবে পারমিতা, সেটা দেবায়নের অঙ্কে মেলে না।

পারমিতা দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া পর্যন্ত মরার মতন চোখ বন্ধ করে নিস্তেজ হয়ে বিছানায় শুয়ে ছিল দেবায়ন। মাথায় চিন্তার চক্র ঘুরতে শুরু করে, “এই বুকে শুধু মাত্র অনুপমার স্থান, হৃদয় রানী, ভালোবাসার পরী পুচ্চি সোনার স্থান। এই স্থান কেউ কেড়ে নিতে পারে না।”

বুকের ভেতর হুহু করে কেঁপে ওঠে, এটা যে ওর কষা অঙ্কের সাথে মিলছে না। দেবায়ন চেয়েছিল অনুপমা ছাড়া অন্য কারুর সাথে শুধু কাম সহবাসে লিপ্ত হবে, কিন্তু কেউ যদি ওকে ভালোবেসে ফেলে সেইসময়ে কি করবে দেবায়ন, আর সেই মহিলা যদি ওর প্রেয়সীর মা হয় তাহলে কি করবে দেবায়ন। ভেবে কুল কিনারা করে উঠতে পারে না দেবায়ন, মাথায় বিরূপ চিন্তা ঢুকে পরে, যদি পারমিতার প্রেম প্রত্যাখান করে আর পারমিতা যদি মিস্টার সেনকে সব বলে ওর স্বপ্ন কেড়ে নেয়, তাহলে কি করবে দেবায়ন? পারমিতার প্রেমের জালে জড়াতে নারাজ অন্যদিকে ওর স্বপ্ন ভীষণ ভাবে দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে যায় দেবায়ন। 

পারমিতা চলে যাবার পরে চোখে আর ঘুম আসে না। বিছানা ছেড়ে উঠে পরে, ঘড়িতে সারে চারটে বাজে, সারা শরীরে চরম যৌন সহবাসের ফলে মিলিত কামরস রাগরসে মাখামাখি। উলঙ্গ দেবায়ন বাথরুমে ঢুকে আয়নার নিজেকে দেখে, নিজের মুখের অভিব্যাক্তি দেখে বুঝতে চেষ্টা করে, সত্যি কি দেবায়ন নিজেও পারমিতার সাথে সঙ্গম সহবাস করতে করতে ভালোবেসে ফেলেছে? না, ওর মুখ ওর বুক ওর শরীরের রন্ধ্র রন্ধ্র চেঁচিয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে জানান দেয় যে ওর বুকের মাঝে শুধু মাত্র ওর প্রেয়সীর পটছবি আঁকা।

দেবায়ন হাতে মুখে জল দিয়ে জাঙ্গিয়া প্যান্ট পরে সিঁড়ি দিয়ে দুতলায় চড়ে। মাঝ খানের ছোটো বসার ঘরের একপাশে পারমিতার শোয়ার ঘর আর ঠিক তার উলটো দিকে অনুপমার শোয়ার ঘর। পারমিতার ঘরের দিকে তাকায় দেবায়ন, ঘরের দরজা বন্ধ, দরজার নীচ দিয়ে ঘরের ভেতরের মৃদু আলো দেখা যায়। দেবায়ন পা টিপে টিপে পারমিতার শোয়ার ঘরের দরজায় কান পাতে। দরজার পেছনে পারমিতার ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ পেয়ে দেবায়ন স্থম্ভিত হয়ে যায়। অতি সন্তর্পণে দরজায় ঠ্যালা মারে, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, দেবায়ন পিছিয়ে আসে পারমিতার ঘরের দরজা থেকে, “শেষ পর্যন্ত একি হয়ে গেল।” ভাবতে ভাবতে দেবায়ন অনুপমার ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে।

বিছানায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ওর প্রান প্রেয়সী, চুপচাপ বিছানার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে অনুপমার ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে থাকে। নরম গোলাপি রঙের বিছানার উপরে একপাশ হয়ে শুয়ে অনুপমা। নধর কমনীয় দেহপল্লবের আঁকিবুঁকি যেন প্রশান্ত সাগরের ঢেউ। পরনের স্লিপ কোমরের কাছে উঠে গেছে, প্যান্টি পরা নেই, উরুসন্ধির দিকে চোখ যায় দেবায়নের, অনাবৃত যোনিকেশের পাটি দেখা যায় দুই পুরুষ্টু থাইয়ের মাঝে। দেবায়নের ভালোবাসা মাখা দৃষ্টি ঘুমন্ত অনুপমাকে জরিপ করে বারেবারে। দেবায়ন কাপড় খুলে উলঙ্গ হয়ে অনুপমার পাশে শুয়ে পরে। দেবায়ন পেছন থেকে অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে, অনুপমার পিঠের সাথে নিজেকে চেপে দেয়। অনুপমার গায়ে দয়িতের উত্তাপ লাগতেই অনুপমা আলতো নড়ে ওঠে। দেবায়নের হাত স্তনের উপরে চেপে ধরে ঘুমে ডুবে যায়। দেবায়ন অনুপমার চুলের মধ্যে নাক ডুবিয়ে, শরীরের সাথে শরীর মিলিয়ে চোখ বন্ধ করে পরে থাকে বেশ কিছুক্ষণ। শিথিল লিঙ্গ অনুপমার নগ্ন পাছার খাঁজে আটকা পরে যায়। 

অনুপমা দেবায়নের হাতের উত্তাপ গালে মাখিয়ে মিহি আদুরে কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “তোমাদের আলাপ আলোচনা শেষ হল?”

অনুপমা ঘুম জড়ানো মিষ্টি কণ্ঠস্বর শুনে দেবায়নের সম্বিৎ ফিরে আসে, “হ্যাঁ সোনা শেষ হল।”

অনুপমা, “এবারে একটু ঘুমাবার চেষ্টা করো ত, অনেক হয়েছে মাথা প্যাঁচানো।”

দেবায়ন, “হ্যাঁ সোনা।”

চোখ বন্ধ করলেও কানে ভেসে আসে পারমিতার মিহি কান্নার আওয়াজ, না সত্যি সত্যি ভেসে আসেনা কানের মধ্যে পুরাতন আওয়াজ প্রতিধ্বনি হয় বারেবারে। 

সকালে উঠে পরে অনুপমা, গতরাতে একটু দেরি করে ঘুমিয়েছিল তাই উঠতে একটু দেরি হয়। অঙ্কনের ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখে, ভাই জেগে গেছে অনেক আগে। বাবা মায়ের ঘরের দরজা বন্ধ দেখে বুঝতে পারে যে অনেক রাত পর্যন্ত ওদের আলাপ আলোচনা চলেছিল। বিছানায় মরার মতন ঘুমিয়ে ওর প্রেমিক, দেবায়ন। উলঙ্গ দেবায়নের দেহের দিকে তাকিয়ে মিচকি হেসে দেয় অনুপমা, গায়ের উপরে একটা চাদর টেনে ঢেকে দিয়ে মাথার চুলে আঙুল ডুবিয়ে আদর করে দেয়। গালে হাত বুলিয়ে আদর করে আলতো চুমু খায় অনুপমা। বাড়িতে কাজের লোক এসে গেছে, অঙ্কন মনে হয় দরজা খুলে দিয়েছিল। নিচে নেমে রান্না ঘরে ঢুকে কাজের লোককে চা বানাতে বলে। কাজের লোক চা বানিয়ে দিলে সেই চায়ের ট্রে নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে পরে অনুপমা।

দেবায়নের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে ডাক দেয়, “পুচ্চু সোনা, উঠে পর, এই দেখ তোমার জন্য চা এনেছি।”

দেবায়ন চোখ খুলে প্রেয়সীর সুন্দর মুখমন্ডল দেখে পুলকিত হয়ে ওঠে। অনুপমার হাত ঠোঁটের উপরে চেপে ধরে বলে, “আই লাভ ইউ পুচ্চি সোনা।”

অনুপমা ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে, গালের উপরে আদর করে বলে, “এবারে সোনা উঠে পর বিছানা থেকে।”

দেবায়ন অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে বুকের উপরে টেনে নেয়, “না পুচ্চি একটু জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকি কিছুক্ষণ, তারপরে উঠবো।”

অনুপমা মিষ্টি হেসে বলে, “সকাল হয়ে গেছে, বাড়ির সবাই কিছুক্ষণের মধ্যে জেগে উঠবে। বাবা মা এখন ঘুমাচ্ছে আর তুমি আমার বিছানায়। দেখে ফেললে কি হবে বলত?”

দেবায়ন ঘুম জড়ানো গলায় বলে, “কি আর হবে, তোমার বাবা মা জানে আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর কাকিমা জানে আমি তোমার সাথে কি কি করেছি।”

অনুপমা, “ধুত অসভ্য ছেলে, জানা এক আর বাবা দেখে ফেলা আরেক। মায়ের কথা না হয় ছেড়ে দিলাম।”

এমন সময়ে দরজা খুলে পারমিতা ঘরে ঢোকে, বিছানায় দেবায়ন আর অনুপমাকে জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকতে দেখে একটু থতমত খেয়ে যায়। ঠোঁটে হাসি টেনে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে, “সরি, তোদের প্রেমালাপে কি ডিস্টারব করে দিলাম?”

অনুপমা মাকে দেখে, সঙ্গে সঙ্গে দেবাওয়নকে ছেড়ে বিছানায় উঠে বসে, আমতা আমতা করে মিষ্টি হেসে উত্তর দেয়, “না না ঠিক আছে, অনেক রাতে ঘুমাতে এসেছিল তাই একটু আদর করছিলাম এই আর কি।”

দেবায়ন পারমিতার দিকে তাকায়, পারমিতার চোখ মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়, মাথা নিচু করে নেয় পারমিতা। নিচু কণ্ঠে মেয়েকে বলে, “ওকে মুখ হাত ধুয়ে নিচে আসতে বল। তোর বাবা এখন ঘুমাচ্ছে, তার আগে নিচে চলে যাক। খাবার টেবিলে দেখা হবে, সোমেশ মনে হয় আজকে আর অফিস যাবে না।”

পারমিতা মাথা নিচু করে মনের অভিব্যাক্তি লুকিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। মায়ের কথার ধরন দেখে একটু অবাক হয় অনুপমা, মা দেবায়নের সামনে এমন লাল হয়ে মাথা নিচু করল কেন? মা দেবায়নকে আদর করে “হ্যান্ডসাম” ডাকে, কিন্তু দেবায়নের সাথে সোজাসুজি কোন কথা না বলে চলে গেল? দেবায়নের সাথে মায়ের কি কিছু মনমালিন্য হয়েছে। পারমিতা ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবার পরে অনুপমা দেবায়নের দিকে তাকায়, মুখের অভিব্যাক্তি দেখে মনে হয় যে দেবায়ন যেন কিছু একটা লুকাতে চাইছে। দেবায়নের রন্ধ্রে রন্ধ্রের সাথে অনুপমা পরিচিত, দেবায়ন না জানালেও মুখ দেখে অনুপমা বলে দিতে পারে ওর জ্বর হয়েছে না কান্না পেয়েছে।

দেবায়নের হাতের উপরে হাত রেখে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে কাল রাতে?”

দেবায়ন অনুপমার চোখের ওপর থেকে দৃষ্টি না নামিয়ে উত্তর দেয়, “কাল রাতে তোমার বাবা মায়ের সাথে আলাপ আলোচনা হল। কাকু বললেন যে কোম্পানি বিক্রি করতে একটু সময় লাগবে, কোম্পানি বিক্রির নানা অসুবিধে সেই সব বুঝাল, কে কে ডাইরেক্টর, কার কত পারসেন্টেজ আছে এই কোম্পানিতে সেই সব কাগজ পত্র দেখাল। অঙ্কনের নামে জমিজমার কাগজ দেখলাম, কোম্পানির ব্যালেন্সসিট ইত্যাদি দেখলাম। এই সব করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেল।”

দেবায়ন ইচ্ছে করে অনুপমার কাছ থেকে নিজের সফটওয়্যার কোম্পানি খোলার কথা আর ওর বাবার টাকা দেওয়া কথা এড়িয়ে গেল। 

অনুপমা চোখ মুখ দেখে বুঝতে পারল যে দেবায়ন মিথ্যে কথা বলছে না ঠিক, কিন্তু কিছু কথা লুকিয়ে গেছে। বিশেষ জোরজার না করে দেবায়ন কে বিছানা থেকে উঠতে বলে। ওইদিকে মায়ের হাবভাবের পরিবর্তন দেখে অনুপমার মনে একটা সন্দেহের বীজ রোপণ হয়। গতরাতে এমন কি ঘটে গেল যে মায়ের সাথে দেবায়ন চোখাচুখি কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে।

দেবায়নের ঘর থেকে নিজের ঘরে ঢুকে পারমিতা কান্নায় ভেঙ্গে পরেছিল। স্বামীকে ভালবাসতে চেয়েছিল মনপ্রান দিয়ে, স্বামী ওর ভালোবাসা উপেক্ষা করে ওর শরীর কাজে লাগিয়ে দেয়, তারপর থেকে পারমিতা ভালোবাসার কাঙ্গাল হয়ে গেছিল। ঠিক সাতদিন আগে, দেবায়ন ওকে কোলে তুলে বাড়িতে নিয়ে এসে ভালোবাসার আসল অর্থ বুঝিয়ে আদর করল। দেবায়ন ওর মেয়ের প্রেমিক হয়েও ওকে প্রেমের অর্থ এক অন্য ভাষায় বুঝিয়ে দিল। শরীরের আদর মিটাতে মিটাতে কন্যের ভালোবাসার বীজ নিজের হৃদয়ে গেঁথে ফেলেছে। দেবায়নের কাছ থেকে দুরে সরে যেতে চায়, চোখের সামনে থেকে দুরে যেতে পারবে না ঠিক, তবে নিজেদের মাঝে এক প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে, দুর্ভেদ্য প্রাচীর অলঙ্ঘনীয় প্রাচীর। কথাবার্তার ঢঙ বদলে যায় পারমিতার, সোজাসুজি দেবায়নের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়।

দেবায়ন পারমিতার আচরন ধরতে পারে, পারমিতার অজান্তে পারমিতার বুকের ভাষা ওর কানে গেছে। দেবায়ন চায়না, এই সুন্দরী পরিতপ্ত মহিলার হৃদয় টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে দিতে কিন্তু নিরুপায় দেবায়ন, ও যে পারমিতাকে ভালোবাসে না। দেবায়ন অনুপমাকে নিয়ে মাতামাতি করে পারমিতার চিন্তা মাথার থেকে দুরে সরিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। কিন্তু এক ছাদের নিচে থেকে পারমিতাকে চোখের সামনে থেকে সরাতে পারে না। দেবায়নের চোখ বারবার পারমিতার দিকে চলে যায়। সকাল থেকেই পারমিতার মুখ খানিক থমথমে, আষাঢ়ের কালো মেঘে ঢাকা।







ষষ্ঠদশ পর্ব (#02)

অনুপমা মায়ের আর দেবায়নের মাঝে টানটান উত্তেজনার রেশ বুঝতে পারে। সকালের খাবার পরে দেবায়ন কে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে পুচ্চু, পায়েলের বাড়িতে যাবি?”

দেবায়ন চাইছিল কিছুক্ষণ বাড়ির বাইরে যেতে, অন্য কোথাও যেতে পারমিতার চোখের সামনে থেকে দুরে কোথাও যেতে। দেবায়ন পায়েলের বাড়িতে যেতে রাজি হয়ে যায়। অনুপমা মাকে জানিয়ে দেয় যে দুপুরে হয়ত পায়েলের বাড়িতে খাবে না হয় পায়েল কে নিয়ে বাড়ি চলে আসবে। পারমিতা জানিয়ে দেয় পায়েল কে নিয়ে বাড়ি চলে আসতে।

অনুপমা দেবায়নকে নিয়ে পায়েলের বাড়ির দিকে রওনা দেয়। পায়েলের বাড়ি অনুপমাদের বাড়ির কাছেই। অনুপমাদের বাড়ির সামনে একটা বিশাল পার্ক আছে, সেই পার্কের উল্টো দিকে পায়েলের বাড়ি। দেবায়ন কোনদিন পায়েলের বাড়িতে যায়নি। পায়েলের বাড়ি যাবার পথে, অনুপমা পায়েলের ব্যাপারে দেবায়নকে সব জানায়। পায়েলের বাবা অর্থোপেডিক সারজেন, ডক্টর কমলেশ সান্যাল, একটু বদরাগী মানুষ। পায়েল বাবা মায়ের এক মাত্র মেয়ে, পায়েলের মা, সুজাতা, একটু শান্ত প্রকৃতির মহিলা, চুপচাপ থাকতে ভালবাসেন। যেহেতু পায়েলের বাবা একটু বদরাগী তাই পায়েলের মায়ের কাছে পায়েলের সব আব্দার আদর। পায়েলের বাবা যখন বাড়িতে থাকেন তখন পায়েলের অন্যরুপ, একদম ভালো মেয়ে হয়ে থাকে। মা মেয়ে দু’জনকেই পায়েলের বাবা বেশ দমিয়ে রাখে। কলেজে বা বাড়ির বাইরে পায়েল নিজের জীবন উপভোগ করার জন্য চরম উশৃঙ্খল হয়ে গেছে। পায়েল অনুপামকে জানিয়েছিল যেদিন পায়েল নিজের ভালোবাসা খুঁজে পাবে সেদিন পায়েল তাকে বিয়ে করে বাড়ি থেকে পালাবে। আনন্দ খুশি খুঁজতে খুঁজতে ভালোবাসা খুঁজে পেলনা মেয়েটা, চরম উশৃঙ্খল হয়ে গেল। অনুপমা অনেকবার পায়েলকে এই রকম উশৃঙ্খলতার হাত থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছে, শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়েছে।

দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “তাহলে কলেজে যে ওই ছোটো ছোটো স্কার্ট পরে যায়? চাপা জিন্সের কাপ্রি, চাপা টপ, ফ্রিল শার্ট, মদ খেয়ে বাড়ি ফেরা, সেই গুলি কি করে সম্ভব?”

অনুপমা হেসে বলে, “ওর অর্ধেকের বেশি কাপড় চোপর আমার বাড়িতে। ওর বাবা বাড়িতে থাকলে, মেয়ে সালোয়ার কামিজ অথবা জিন্স টপ পরে বাড়ি থেকে বের হয়, তারপরে আমার বাড়ি এসে আমরা ড্রেস বদলে নিয়ে কলেজে যাই। যেদিন মদ খেয়ে মাতাল হয়ে আসে, সেদিন আমি ওকে আমার বাড়িতে রেখে দেই। এক পাড়ায় থাকি সেই সুত্রে আমার বাবার সাথে ওর বাবার চেনাজানা আছে তাই আমার বাড়িতে রাত কাটালে ওর বাবা কিছু বলে না।”

দেবায়ন মাথা নাড়ায়, “বুঝলাম সব, কিন্তু পায়েলের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিস ওর বাবা যদি আমাকে দেখতে পায় তাহলে হয়ত পায়েলকে মেরে ফেলবে।”

অনুপমা, “না রে, ওর বাবা কোন এক অর্থোপেডিক কনভকেশানে পন্ডিচেরি গেছে, আগামী কাল বিকেলে বাড়িতে ফিরবে। তাই ত এই কয়দিন আমাদের সাথে চুটিয়ে মজা করতে পেরেছে, পার্টিতে যেতে পেরেছে, সেদিন মনিদিপার সাথে ওই কান্ডকারখানার সময় যেতে পেরেছে।”

অনুপমা চোখ টিপে মিচকি হেসে বলে, “চিন্তা করিস না, আমি জানি তোর খুব শখ একবার পায়েলের সাথে করার।”

দেবায়ন লজ্জায় লাল হয়ে যায়। অনুপমা দেবায়নের গালে আলতো চাটি মেরে বলে, “ঠিক আছে পুচ্চু সোনা, আজ রাতে তোদের মিলন ঘটিয়ে দেব। ওই পার্টিতে ঠিক ভাবে আদর করা হয়নি, সব কেমন উথাল পাতাল চোদাচুদি হচ্ছিল সেইদিন।”

দেবায়ন মানস চোখে একবার পায়েলের উলঙ্গ শরীর কল্পনা করে, ভারী নরম তুলতুলে পাছা, অপেক্ষাকৃত ছোটো স্তন জোড়া, অনুপমার মতন অত ফর্সা না হলেও ফর্সা বলা চলে, গোল মুখাবয়াব। ভারী পাছার ভার সামলানোর জন্য থাই জোড়া বেশ পুরুষ্টু আর গোলগাল, কেশ হীন নরম ফোলা ফোলা মসৃণ যোনি দেশ।

দেবায়ন অনুপমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “তোর মা জানতে পারলে রক্ষে থাকবে না।”

অনুপমা, “মায়ের কিছু কি জানার আর বাকি আছে?”

দেবায়ন চোখ টিপে বলে, “তা জানার বাকি নেই তবে কাকি... মানে মিমিকে সাথে নিতে পারলে বড় ভালো।”

“কাকিমা” বলতে গিয়েও যে দেবায়ন মায়ের “মিমি” বলে ডেকেছে, সেই আওয়াজ অনুপমার কানে বাজে। ইদানীং সবকিছু জানাজানি হবার পর থেকে মাকে মিমি বলে ডাকে দেবায়ন। সেই নাম ছেড়ে হটাত “কাকিমা” শুনে অনুপমার মনের সন্দেহ দৃঢ় হয়ে যায়। পার্কের মাঝে দাঁড়িয়ে দেবায়নের দিকে তাকায়। হটাত করে অনুপমাকে থেমে যেতে দেখে দেবায়ন হতচকিত হয়ে পরে। অনুপমাকে দাঁড়িয়ে যাবার কারন জিজ্ঞেস করে।

অনুপমা দেবায়নের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রেখে সোজাসুজি জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বল কাল রাতে তোদের মধ্যে কি আলোচনা হয়েছে। কি এমন কথা হয়েছে যে তুই আমার কাছ থেকে লুকিয়েছিস।”

দেবায়ন ধরা পরে গেছে, তাও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে উত্তর দেয়, “অনু, গতকাল রাতে যা যা আলোচনা হয়েছে সবকথা আমি তোকে জানিয়েছি। তার বেশি কিছুই হয়নি।”

অনুপমা চেপে ধরে দেবায়নকে, “না আমি জানি তুই মিথ্যে বলছিস না, তবে তুই সবকথা আমাকে জানাস নি। তুই মাকে আদর করে মিমি ডাকিস। হটাত করে আজ সকাল থেকে তোর আর মায়ের মাঝে এমন এক প্রাচীর কেন? এই প্রাচীর আমার আর মায়ের মাঝে ছিল, তুই সেই দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভেঙ্গে আমাদের মিলিয়ে দিয়েছিস। এমন কি হল যে তোদের মাঝে একটা প্রাচীর গড়ে উঠল?”

দেবায়ন উত্তরের ভাষা খোঁজে, কিন্তু ভাষা হারিয়ে যায়। অনুপমার শ্যেন দৃষ্টি ওর চেহারার অভিব্যাক্তি জরিপ করে। দেবায়ন মাথা চুলকে ভাবে ওর বাবার কথা বলে দিতে। দেবায়ন বলে, “আমাকে একটা কথা দিতে পারবি, আমি যে কথা তোকে জানাবো সেই কথা তুই মিমিকে অথবা মিস্টার সেনকে বলতে পারবি না, কেননা এই কথা তোকে জানাতে বারন করেছে তারা।” 

অনুপমা দেবায়নের হাত ধরে বলে, “তুই আমার সব, এমন কি কথা আছে যেটা তুই আমার কাছ থেকে লুকাচ্ছিস? আমি কথা দিচ্ছি, কাউকে জানাবো না।” অনুপমার বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায়, অনুপমা ভালো ভাবে নিজের বাবা, মাকে চেনে, জানে কথার ছলে ফাঁসিয়ে কাজ হাসিল করতে ওদের জুরি নেই। দেবায়নকে লোভ দেখিয়ে অনুপমার কাছ থেকে দুরে সরে যেতে বলেনি ত?

দেবায়ন পার্কের মাঝে দাঁড়িয়ে অনুপমার কাঁধে হাত রেখে বলে, “গত রাতে তোর বাবা আমাকে বলল আমাকে টাকা দেবে নিজের কোম্পানি খোলার জন্য। আমি ভেবেছিলাম, কলেজে পড়া কালিন কম্পিউটার শিখে একটা চাকরি করতে, কিন্তু তোর বাবা জানালেন যে আগামী বছরের মধ্যে কোম্পানি বিক্রি হয়ে গেলে তিনি আমাদের সত্তর থেকে আশি কোটি টাকা দেবেন একটা সফটওয়্যার কোম্পানি তৈরি করার জন্য। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি কাউকে চিনি কিনা। রূপক জাদবপুর থেকে ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে বিটেক করেছে, ভাবলাম ওকে নিয়ে একটা প্রোজেক্ট প্লান করব।”

অনুপমা সব কথা শুনে হাসবে না কাঁদবে ভেবে পেল না। অনুপমা জিজ্ঞেস করে, “বাবা বলছে তোকে একটা নিজের কোম্পানি তৈরি করতে সাহায্য করবে? আমি বিশ্বাস করিনা সেই কথা। তুই কি জানিয়েছিস?”

দেবায়ন, “হ্যাঁ কাকু আমাকে বলেছে, এমন কি মিমি বলেছে। দ্যাখ পুচ্চি, তুই যেমন আমার জীবনে অনেক বড় একটা স্থান নিয়ে রেখেছিস, তেমনি এটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক বড় এক পদক্ষেপ। তোর সাথে কথা না বলে আমি কিছু করতে পারিনা। আমাদের হাতে এখন এক বছর ভেবে দেখার সময় আছে। মায়ের সাথে কথা বলব, তোর সাথে কথা বলব তারপরে কিছু একটা সিদ্ধান্তে আসব আমি।”

অনুপমা কিছুক্ষণ ভাবে তারপরে দেবায়নকে বলে, “আমি বিশ্বাস করতে পারছি না আমার বাবা তোকে এই সব বলেছে। পুচ্চু, প্লিস সাবধানে পা ফেলিস, আমি সব হারাতে রাজি কিন্তু তোকে হারাতে রাজি নয়।”

দেবায়ন অনুপমাকে ওইখানে জড়িয়ে ধরে মাথায় চুমু খেয়ে বলে, “তোর বাবা মায়ের বারন সত্তেও তাই তোকে জানালাম সব কথা। এখন তোর সাথে তোর বাবা মায়ের সম্পর্ক ভালো হয়েছে, আমি চাই না এমন কিছু ঘটুক যাতে আবার সেই সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। এবং আরও একটা কথা, আমার যতদূর বিশ্বাস, মিমি অথবা মিস্টার সেন এবারে কোন ছল কপট করছে না।”

অনুপমা, “কেন মনে হল?”

দেবায়ন, “আমি প্রথমে তোর বাবার কথা বিশ্বাস করিনি, কিন্তু কাকু আমাকে অনেক ব্যাক্তিগত কাগজ পত্র দেখালেন, কোম্পানির কাগজ, অঙ্কনের নামে যে সব জমিজমা তোর জেঠু লিখে গেছে তার কাগজ, অনেক ব্যাক্তিগত কথা জানালেন। যদি আমার সাথে ছল কপট করতে হত তাহলে ওই সব কাগজ পত্র দেখানোর কোন মানে হয় না। আমাকে সোজা লোভ দেখাতে পারত কাকু।”

অনুপমা, “ওকে আমি আগেই বলে দিয়েছি, তুই যেটা ভালো বুঝবি সেটা করিস। কিন্তু পুচ্চু সোনা, টাকা পেয়ে যেন আমাকে ভুলে যাস না।”

দেবায়ন পার্কের মাঝে প্রেয়সীকে বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে, “কি যে বলিস না তুই, ছাড় অইসব কথা। এই সব ভাবনা চিন্তার চেয়ে চল চল পায়েলের পাছা দেখি।”

অনুপমা মিচকি হেসে দেবায়নকে মারতে মারতে বলে, “শয়তান ছেলে, ওর বাড়িতে কিছু করতে যাস না। খুব কাকিমা একটু রক্ষনশীল মনস্কের মহিলা, ছেলেদের সাথে মেয়েদের বেশি ঢলে মেশা পছন্দ করে না। তবে মেয়েরা গেলে কিছু ছাড় দেওয়া আছে।”

পায়েলের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজাতেই একটা চাকর এসে দরজা খুলে দিল। অনুপমাকে দেখে চিনতে পারে, হেসে ভেতরে নিয়ে যায়। এক তলায় পায়েলের বাবার চেম্বার, পায়েলরা দুই তলায় থাকে। পায়েল দেবায়নকে দেখে অবাক হয়ে যায়। দৌড়ে এসে অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে। দুই সুন্দরী ললনার কমনীয় দেহপল্লব জড়িয়ে যায়। দৌড়ানোর ফলে পায়েলের নরম ভারী পাছার দুলুনি দেখে দেবায়ন মনে মনে হাসে। পায়েলের মা বেড়িয়ে আসেন ওদের বসার ঘরে বসতে বলেন। পায়েলের মাকে দেখে দেবায়নের পরিচয় দেয় অনুপমা।

পায়েলের মুখে খুশির খই ফোটে, অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁরে শয়তানটা কখন এসেছে?”

অনুপমা হেসে উত্তর দেয়, “পুচ্চু সোনা, কালকে এসেছে। রবিবার পর্যন্ত থাকবে বাড়িতে।”

পায়েলের দুই চোখ বড় বড় হয়ে যায়, “কি বলছিস তুই? তোর বাবা মা মানা করে নি?”

দেবায়ন হাসে, অনুপমা দেবায়নের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, “আরে বাবা, ওর কথা জানিস না। বাবা মাকে পটিয়ে নিয়েছে, তাইত আমি এত দিন ওর বাড়িতে থাকতে পারলাম আর এখন ও আমার বাড়িতে থাকবে কিছুদিন।”

পায়েল, “তোরা বেশ ভালোই আছিস।”

অনুপমা পায়েলের কানেকানে কিছু একটা বলে, পায়েল দেবায়নের দিকে তাকিয়ে মিচকি হেসে জবাব দেয়, “ঠিক আছে যাবো। তবে দুপুরে আমার বাড়িতে খাওয়ার পরে বিকেলে তোর বাড়িতে।”

দেবায়নের বুঝতে অসুবিধে হয় না যে রাতে পায়েল অনুপমার বাড়িতে থাকবে। দেবায়নের কামুক বুক চঞ্চল হয়ে ওঠে, পার্টির রাতে উদ্দাম যৌন ক্রীড়ায় পায়েলের সাথে মন ভরে সম্ভোগ সহবাস করে উঠতে পারেনি। রাতে পায়েল কে নিয়ে অনুপমা আর দেবায়ন প্রান ভরে সম্ভোগ সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারবে। দেবায়নের কামুক দৃষ্টি বারেবারে পায়েলের নধর দেহপল্লবের উপরে ঘোরাফেরা করে। অনুপমা আগে থেকেই পায়ালের বাবা মায়ের মানসিকতা দেবায়ন কে জানিয়ে দিয়েছিল, তাই পায়েলের সাথে দেবায়ন বিশেষ কিছু মন্তব্য করে না।







ষষ্ঠদশ পর্ব (#03)

অনুপমা বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে পায়েলের বাড়িতে দুপুরের খাওয়া সেরে ওরা বাড়ি ফিরবে। পারমিতা মেয়ের আব্দার শুনে রাজি হয়ে যায়। অনুপমা বাড়ির কথা দেবায়নকে জানায়, পায়েল নেচে ওঠে অনুপমার কথা শুনে। দেবায়ন পায়েলে আর অনুপমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে রাতে দুই জনকে ঘুমাতে দেবে না। মায়ের চোখের আড়াল করে পায়েল দেবায়নের গালে চাটি মেরে জানিয়ে দেয় যে অনুপমাকে ছুঁতে দেবে না। এইভাবে বেশ কিছু খুনসুটি মারামারির সাথে গল্প গুজব চলে, দেবায়ন অনুপমার কথা মত রক্ষণশীল ব্যাবহার করে পায়েলের মায়ের সামনে।

ওদিকে দেবায়নের পারমিতার সামনে দাঁড়ানোর মতন অবস্থা নেই। অনুপমার বাড়ির কথা মনে পরতেই পারমিতার ম্লান চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। গতরাতের পারমিতার কাতর ভালোবাসার নিবেদন কানে বেজে ওঠে, অনুপমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেবায়নের প্রান কেঁদে ওঠে। বুদ্ধিসত্বা লোপ পায় যতবার পারমিতার কথা মনে পরে আর সেইসাথে প্রেয়সীর বুক ভরা ভালোবাসার কথা মনে পরে।

দুপুরে খাবার পরে পায়েল অনুপমা আর দেবায়ন অনুপমার বাড়িতে ফিরে আসে। সারা রাস্তা পায়েল আর অনুপমার কিচিরমিচির শুনতে শুনতে দেবায়নের মাথা খারাপ হয়ে যাবার যোগাড়। অনুপমার বাড়ির দিকে যেতে যেতে মাঝে মাঝে পায়েল অঙ্কনের কথা জিজ্ঞেস করে। অঙ্কন বাড়িতে আছে জেনে পায়েলের চোখ চকচক করে ওঠে। অনুপমার চোখ সেই অভিব্যাক্তি এড়িয়ে গেলেও দেবায়নের চোখে সেই খুশির অভিব্যাক্তি ধরা পরে যায়। দেবায়ন কথা বাড়ায় না পায়েলের চোখের চমক দেখে, তবে কিছু একটা সন্দেহ মনের মধ্যে জেগে ওঠে। দুই বান্ধবীকে দেখে দেবায়নের মনে ভেতরে খই ফোটে, রাতে একসাথে দুইজনকে নিয়ে সম্ভোগ সঙ্গম খেলায় মত্ত হবে। হাঁটার তালেতালে চোখের সামনে পায়েলের নধর গোলগাল পাছা দুলুনি দেখে দেবায়নের বারেবারে মনে হয় দুই হাতে ধরে চটকে দিতে। মনের সেই অদম্য ইচ্ছেটাকে সংবরণ করে অনুপমা আর পায়েলের পেছন পেছন হাটে।

বাড়িতে ফিরেই অনুপমা আর পায়েলকে একসাথে দেখে পারমিতা মিচকি হাসি দেয়। পায়েলের জানা নেই যে পারমিতা সব ঘটনা জানে। পারমিতার সাথে মেয়ের চোখে চোখে কথা হয়ে যায়। পারমিতা মিচকি হেসে জানিয়ে দেয় যে রাতে তাড়াতাড়ি খাবার পরে যেন সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চলে যায়। পায়েলের গলার আওয়াজ শুনে অঙ্কন নিজের ঘর ছেড়ে নিচে নেমে আসে। পায়েলকে দেখে অঙ্কনের চেহারায় হাসি ফুটে ওঠে। দেবায়ন বুঝে যায় যে অঙ্কন হয়ত মনে মনে পায়েলকে চায়, কিন্তু পায়েল ওর দিদির বান্ধবী, ওর চাইতে অনেক বড়, সেই জন্য হয়ত অঙ্কন সরাসরি পায়েলকে মনের কথা খুলে বলতে পারছে না। পায়েলের চেহারা অঙ্কনকে দেখে খুশিতে ভরে ওঠে। অনুপমা একবার অঙ্কনের দিকে তাকায় একবার পায়েলের দিকে তাকায়। দুইজনের চোখের তারার ঝিলিক দেখে দেবায়নের সাথে চোখের ইঙ্গিতে জানিয়ে দেয় যে ওর ভাই পায়েলের রুপে ঘায়েল। দেবায়ন ইঙ্গিতে অনুপমাকে জানায় যে এই ব্যাপার আগে থেকে দেবায়ন অনুধাবন করেছিল। দুইজনে কথা বাড়ায় না, চুপচাপ সময়ের অপেক্ষায় থাকে। বসার ঘরে বসে গল্পগুজবে সময় কেটে যায় চারজনের। কিছুপরে দেবায়ন টিভি খুলে বসে পরে, অঙ্কন একটু বিরক্ত বোধ করে দেবায়নের উপরে কিন্তু দেবায়ন অনেক বড় তাই দেবায়নকে কিছু বলতে সাহস করে না। দেবায়নকে ছেড়ে পায়েল আর অনুপমা উপরে নিজের ঘরে চলে যায়। বিকেলের দিকে অঙ্কন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে বেড়িয়ে যায়।

বেশ কিছু সময় টিভি দেখার পরে দেবায়নের মেয়েদের কথা মনে পরে। দেবায়ন উপরে উঠে অনুপমার ঘরের দরজা খুলে ঢুকে দেখে দুই মেয়ে তখন গল্পে ব্যাস্ত। পায়েল অনুপমার বিছানার উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে, হাঁটু দুটি ভাঁজ করে দোলাচ্ছে। পায়েলের পরনের স্কার্ট হাঁটু ছেড়ে উপরে উঠে গেছে, পুরুষ্টু থাই অধিকাংশ অনাবৃত হয়ে গেছে। মোটা গোল গোল দুই থাইয়ের উপরে নধর গোলগাল পাছার উপরে চোখ যায় দেবায়নের। বিকেল থেকে ওই দুই পাছার চটকানোর খুব ইচ্ছে করছিল। পার্টির দিনে ঠিক ভাবে পায়েলের নধর দেহপল্লব নিয়ে খেলা করা যায়নি, সেদিন সবাই মত্ত উন্মাদের মতন একে অপরের সাথে সহবাস সঙ্গমে লিপ্ত ছিল। কার লিঙ্গ কোন যোনিতে কখন ঢুকেছে তার কোন ঠিক ছিলনা। আজ রাতে প্রেয়সিকে সাথে নিয়ে পায়েলের সাথে মনের আশ মিটিয়ে সহবাসে লিপ্ত হতে পারবে। ভাবতে ভাবতে দেবায়নের প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ ছটফট করতে শুরু করে দেয়। দরজা খোলার আওয়াজ পেতেই অনুপমা দেবায়নের দিকে তাকায়, দেবায়ন চোখ টিপে অনুপমাকে চুপ করে থাকতে ইশারা করে। পা টিপে টিপে বিছানার কাছে গিয়ে পায়েলের উপরে হুমড়ি খেয়ে পরে দেবায়ন। দেবায়নের কঠিন পেশি বহুল দেহের নিচে পরে পায়েল চেপটে যায় বিছানার সাথে।

পায়েল চমকে উঠে দেবায়নকে ঠেলে পিঠের থেকে নামিয়ে দিতে চেষ্টা করে। দেবায়নের ঊরুসন্ধি পায়েলের নধর তুলতুলে নরম পাছার উপরে চেপে বসে। দেবায়ন পায়েলের পিঠের উপরে ঝুঁকে পায়েলের গালে ছোট্ট চুমু খেয়ে বলে, “ডারলিং আজ রাতে তোকে প্রান ভরে আদর করব।”

পায়েলের স্কার্ট উপরে উঠিয়ে নগ্ন পাছার খাঁজে দেবায়ন লিঙ্গ চেপে ধরে। পায়েলের ছটফটানির ফলে লিঙ্গের চাপ পাছার উপরে বেড়ে যায়, সেই সাথে দেবায়নের লিঙ্গের কঠিনতা বেড়ে ওঠে। উত্তপ্ত লিঙ্গের পরশে পায়েলের শরীরের রোম রোম জেগে ওঠে।

অনুপমা ধাক্কা মেরে দেবায়নকে পায়েলের পিঠের উপর থেকে ফেলে দিয়ে বলে, “এই ছাড় ওকে, অনেক শয়তানি করেছিস ওকে নিয়ে। আর জানিস একটা দারুন খবর আছে।”

পায়েলের পিঠের উপর থেকে পরে যেতেই পায়েল দেবায়নের বুকে পেটে চড় মারতে শুরু করে দেয়। দেবায়ন পায়েলের হাত ধরে বিছানায় চিত করে শুইয়ে দেয়। পায়েল দেবায়নের চাপের নিচে পরে ছটফট করে, সেই সুযোগে দেবায়ন পায়েলের উপরে চেপে যায়। পায়েলের নরম স্তন জোড়া দেবায়নের প্রসস্থ বুকের নিচে পিষে সমান হয়ে যায়। দেবায়ন ঝুঁকে পরে পায়েলের মুখের উপরে, পায়েলের চোখ দেবায়নের চোখের ওপরে স্থির হয়ে যায়। পায়েল নিজেকে দেবায়নের আলিঙ্গন থেকে বাঁচানোর জন্য পিঠে মারতে শুরু করে। দেবায়ন হেসে জানিয়ে দেয় ওর নরম হাতের মার দেবায়নের বেশ ভালো লাগছে।

দেবায়ন অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “কি রে কি খবরের কথা বলছিস? পায়েলের নতুন প্রেমিক গজিয়েছে নাকি এই কদিনে?”

অনুপমা পায়ের গাল টিপে আদর করে বলে, “ভাইয়ের দিকে নজর আমার বান্ধবীর।”

দেবায়ন পায়েলের উপরে চাপ দিয়ে বিছানার সাথে পিষে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি রে আমার শালার দিকে নজর। উম্মম কিন্তু তোর থেকে অনেক ছোটো অঙ্কন।”

পায়েল বাধা দেয়, “না না, একদম মিথ্যে কথা। অনু সব বানিয়ে বানিয়ে বলছে।”

অনুপমা, “সোনা মণি, তুমি কি ভাব আমি কিছু বুঝি না? রাস্তা থেকে জিজ্ঞেস করতে করতে আসছিস, অঙ্কন কেমন আছে, অঙ্কন কি বাড়িতে আছে? এসে পর থেকে দেখছি অঙ্কনের সাথে বেশ গল্প, তোকে দেখে অঙ্কন নিচে নেমে এল। কই শ্রেয়া অথবা তনিমা এলে অঙ্কন আসে না? তোর আর অঙ্কনের মধ্যে সত্যি কিছু একটা চলছে?”

পায়েল অস্বিকার করে, “নারে বাবা, আমি জানি অঙ্কন আমার চেয়ে অনেক ছোটো। এত ছেলে থাকতে আমি কেন অঙ্কনের পেছনে পড়তে যাব রে? তোর ভালো বান্ধবী বলে অঙ্কনের আমাকে ভালো লাগতেই পারে, তাই বলে প্রেম, একদম না।”

দেবায়ন পায়েলের থাইয়ের মাঝে চাপ দিয়ে থাই ঢুকিয়ে দেয়। দেবায়নের শরীরের শক্তির কাছে পায়েল একদম পুতুল, দেবায়নের থাই পায়েলের উরুসন্ধির উপরে ঘষে যায়। পায়েল বাধা দিতে গিয়েও দেবায়নকে বাধা দিতে অক্ষম হয়।

অনুপমা পায়েল আর দেবায়নের পাশে শুয়ে জিজ্ঞেস করে, “ওকে ঠিক আছে মেনে নিলাম তোর কথা। তবে কোনদিন যদি ভাইকে মনে ধরে তাহলে যেন আমাকে জানাস। লুকিয়ে প্রেম করতে যাস না।”

পায়েল কোনোরকমে হাত ছাড়িয়ে দেবায়নকে মারতে শুরু করে দেয়। মারতে মারতে অনুপমাকে জানায়, “হ্যাঁ রে বাবা হ্যাঁ। তোদের না জানিয়ে কি করে বাঁচব বলতে পারিস। যেদিন কাউকে মনে ধরবে সেদিন তোরা দুই জনে সব থেকে আগে জানবি। এবারে আমাকে এই শয়তানটার হাত থেকে ছাড়া।”

অনুপমা, “তোদের কুত্তা বিল্লির মতন মারামারি দেখতে বেশ লাগছে। তোরা কি এখুনি শুরু করতে চলেছিস?”

পায়েল রগেমেগে বলে, “ধুত, শালা এই শয়তান টা আমাকে ছাড়লে তো? পার্টির দিনে আমার পাছা যেমন ভাবে খামচা খামচি করেছিল তার শোধ আজকে নেব।” 

দেবায়ন হেসে বলে, “ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম। রাতে এর শোধ নেব ভালো মতন।” বলে পায়েল কে ছেড়ে দেয়।

পায়েল মিচকি হেসে জানিয়ে দেয় রাতে কাছেই আসতে দেবে না। অনুপমা হেসে ফেলে দেবায়ন আর পায়েলের কথা শুনে। কিছুক্ষণ নিজেদের মধ্যে মারামারি করে তিনজনে নিচে নামে।

পারমিতা একবারের জন্যেও নিচে নামে না, যতক্ষণ ওরা গল্প করে। বিকেলের চা পর্যন্ত নিজের ঘরে বসে খায়। মিস্টার সেন বাড়িতে ছিলেন না, দুপুরের পরে কাজে কোথাও বেড়িয়েছিলেন। সন্ধ্যের পরে বাড়িতে ফিরে দেবায়নের সাথে কথা বলতে বলতে একটু ড্রিঙ্ক করা হয়। মিস্টার সেন আসার পরে পারমিতা নিচে নেমে আসেন। মায়ের থমথমে চেহারার পেছনে কি লুকিয়ে আছে কিছুতেই ধরতে পারে না অনুপমা। পারমিতা বুদ্ধিমতী, নিচে নেমে সবার সাথে বেশ গল্প গুজবে মেতে ওঠে, থমথমে অভিব্যাক্তি ঢেকে দেয় হাসি খুশিতে। শুধু মাত্র দেবায়নের সঙ্গে কথা বলার সময়ে বেশ মেপে কথা বলে। রাতের খাবার সময়ে পারমিতা আর দেবায়ন কাউকে বুঝতে দেয় না ওদের ভেতরের দ্বন্দ। দুইজনে দু’জনাকে আড় চোখে জরিপ করে যায়। পারমিতা আর দেবায়নের মাঝে দুর্ভেদ্য প্রাচীর অলঙ্ঘনীয় হয়ে ওঠে। দেবায়নের চোখে চোখ পড়লে পারমিতা চোখ নামিয়ে নেয় অথবা অন্যদিকে সরে যায়।

কি করনীয় এই অবস্থায়, এটা ভেবে দেবায়ন চিন্তায় পড়ে যায়। এই সময়ে যদি দেবায়ন বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তাহলে অনুপমার মনের মধ্যে সন্দেহের বীজ বেড়ে উঠবে। এই প্রাচীর কিছু করে লঙ্ঘন করে ভাঙ্গতে হবে, কিন্তু সবার সামনে পারমিতার সাথে খলাখুলি কথা বলার অবকাশ পায়না। অনুপমা জানেনা গত রাতের ঘটনা, পারমিতা অথবা দেবায়ন কেউ জানায়নি যে গতরাতে ওর দুইজনে চুটিয়ে সম্ভোগ সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল আর শেষ পর্যন্ত পারমিতা দেবায়নের প্রেমে পরে গেছে।







ষষ্ঠদশ পর্ব (#04)

পারমিতার হাসির পেছনের হৃদয়ের প্রবল দ্বন্দ দেবায়নের চোখ এড়াতে পারে না কিছুতেই। রাতের খাবার পরে নিত্য দিনের মতন মিস্টার সেনের সাথে দেবায়ন নিচে বসে ড্রিঙ্ক করে কিছুক্ষণ। পারমিতা মাথা ধরার আছিলায় নিজের ঘরে চলে যায়। অনুপমা আর পায়েল জানিয়ে দেয় যে ওরা তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাচ্ছে। অনুপমার চোখের দুষ্টু হাসি দেখে দেবায়ন সব বুঝতে পারে। মিস্টার সেন টিভিতে বেশ মজে গেলে সিগারেট ধরাবার অছিলায় দেবায়ন উপরে চলে আসে। দেবায়ন উপরে উঠে অনুপমার ঘরের দিকে পা বাড়ানোর সময়ে দেখে যে পারমিতা চুপচাপ বিছানায় শুয়ে একটা মেয়েদের ম্যাগাজিন পড়ছে। দেবায়ন ধির পায়ে পারমিতার দরজায় টোকা মারে। পারমিতা দরজার দিকে তাকিয়ে স্থম্ভিত হয়ে যায়। কাঁপা গলায় আসার কারন জিজ্ঞেস করে। পারমিতার বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায় দেবায়নের চেহারা দেখে।

দেবায়ন, “একটু আসতে পারি, কিছু কথা ছিল।”

পারমিতা নিচু কণ্ঠে জবাব দেয়, “কি ব্যাপার দেবায়ন?”

“হ্যান্ডসাম” এর জায়গায় নিজের নাম শুনে সব পরিষ্কার হয়ে যায় দেবায়নের, পারমিতা হৃদয়ের প্রাচীর। দেবায়ন দরজায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, “আমি কি বাড়ি থেকে চলে যাবো?”

পারমিতা ঠাণ্ডা গলায় জিজ্ঞেস করে, “কেন? অনু কি কিছু বলেছে তোমাকে?”

দেবায়ন, “অনুর সাথে আমার মনোমালিন্য কেন হতে যাবে? সকাল থেকে তুমি যে রকম ব্যাবহার করছ তাতে অনুর মনে সন্দেহ হয়েছে। তাই বলছি, যে আমি কি তোমার চোখের সামনে থেকে চলে যাব?”

পারমিতা মাথা নিচু করে বলে, “তুমি যা ভাল বোঝো তাই কর দেবায়ন।”

দেবায়ন ধির পায়ে ঘরের ভেতরে ঢোকে। পারমিতার দেহের রক্ত শুকিয়ে যায়, নিচে স্বামী বসে, উপরে নিজেদের ঘরে ছেলে মেয়ে আছে। বুকের মধ্যে হাপর টানে, ধিরে ধিরে বিছানার উপরে উঠে বসে পারমিতা, দেবায়নের মুখের দিকে তাকাতে গিয়েও তাকাতে পারেন। দেবায়নের দৃষ্টি পারমিতার শুষ্ক চেহারার উপরে নিবদ্ধ। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে পারমিতার সামনে দাঁড়ায়। পারমিতা চোখ বন্ধ করে প্রমাদ গোনে। দেবায়ন বিছানার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পারমিতার হাতে হাত রাখে। উষ্ণ হাতের পরশে পারমিতার দেহ কেঁপে ওঠে, চোখের পাতা ভিজে ওঠে।

দেবায়ন পারমিতার হাত মুঠি করে নিয়ে বলে, “মিমি” ডাক শুনে পারমিতা দুই চোখ চেপে বন্ধ করে দেয়, চিবুক বুকের উপরে নেমে আসে। দেবায়ন বলে, “মিমি, গতরাতে তুমি চলে যাবার আগে যে কথাগুলো বলেছিলে, সেগুলো আমি শুনেছি।”

পারমিতা কি বলবে কিছু বুঝে পায় না, হৃদয় কেঁপে ওঠে, দেবায়ন কি বলতে চলেছে। পারমিতার চোখের পাতা ভিজে চোখের কোল জলে ভরে আসে, ঠোঁট জোড়া তিরতির করে কেঁপে ওঠে। দেবায়ন বলে, “মিমি, আমি জানি তোমার হৃদয়ের অভিপ্রায়।”

পারমিতা জল ভরা চোখে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কণ্ঠে অস্ফুট কেঁদে ওঠে, “না...”

দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে জানায় “হ্যাঁ।”

পারমিতা জিজ্ঞেস করে, “তুমি ঘুমিয়ে পরেছিলে দেবায়ন।”

দেবায়ন, “না মিমি, ঘুম আসতে গিয়েও এলনা শেষ পর্যন্ত।”

পারমিতা কেঁদে ফেলে, “আমি হতভাগী দেবায়ন, জীবনে কিছুই পেলাম না। আমার স্বামীর ভালোবাসা আমি পেলাম না, আমার মেয়ে আমাকে খারাপ চোখে দেখে। এমন সময়ে তুমি এলে একটা আলো নিয়ে, পথ দেখালে, টেনে তুললে। কিন্তু হৃদয় বড় অবুঝ দেবায়ন...”

দেবায়নের হাতের উপরে টপ টপ করে পারমিতার চোখের জল পরে, দেবায়ন ঠাণ্ডা কণ্ঠে পারমিতাকে বলে, “মিমি, অনু তোমাকে ফিরে পেয়েছে, অনুর ভালোবাসা তুমি নিজের মতন করে অর্জন করে নিও। কিন্তু মিমি, আমার ভালোবাসা শুধু মাত্র অনুপমা, তুমি যা চাও সেটা আমি তোমাকে দিতে পারি না। দুজনের ভালোর জন্য বলি, মন থেকে অইসব মুছে পরিবার সংসার নিজের মতন করে গুছিয়ে নাও। এখন তোমার সাথে অনুর সম্পর্ক ভালো হয়ে গেছে, গত রাতের মিস্টার সেনের কথাবার্তা শুনে মনে হল তিনি সব ভুলে তোমাকে আর তার এই পরিবারকে কাছে টেনে নেবেন। আমি চাই তুমি সেই পুরানো মিমি হয়ে যাও, সেই জম্মুর মিমি।”

পারমিতা, “কি করে দেবায়ন? আমার ভালোবাসার নামে তুমি ডাক দিয়েছ। সোমেশের কাছে যে আমি মিতা হয়ে গেছি, সোমেশ আমাকে মিমি বলে ডাকে না, দেবায়ন। তুমি আমার চোখের সামনে থাকবে সবসময়ে আর তোমার ভালোবাসার কথা বারেবারে মনে যাবে, আমি কি করব দেবায়ন? আমি তোমাকে দুরে যেতে বলতে পারিনা, কাছে আসতে বলতে পারি না। আমি নিজের কাছে হেরে গেছি দেবায়ন। গতকাল একবার মনে হয়েছিল আমি নিজেই সব ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাই। অনুকে দেখার জন্য তুমি আছো, কিন্তু ছেলেটার জন্য বুক কেঁপে উঠল আমার। অঙ্কনকে ছেড়ে যেতে পারলাম না।”

দেবায়ন, “মিমি, আমি যদি এখন তোমার মন রক্ষার্থে বলি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি তাহলে অনেক বড় মিথ্যে বলা হবে। মিমি, তুমি হারিয়ে যেও না আমাদের কাছ থেকে। আমি তোমাকে ভালোবাসি সেটা সত্যি কিন্তু সেই ভালোবাসা আর অনুর ভালোবাসার মাঝে অনেক তফাত আছে। তুমি অনুপমার জায়গা নিতে পার না মিমি। তুমি আমার কাছেই থাকবে, কিন্তু অনুর জায়গা সবসময়ে আমার বুকের বাম দিকে থাকবে।”

পারমিতা দেবায়নের হাত নিজের গালে চেপে কেঁদে ফেলে, “আমি জানি, তাই নিজেকে বড় পাপী মনে হয়েছে। আমি মেয়ের ভালোবাসা কেড়ে নিতে পারিনা দেবায়ন, সেই পাপ বোধে সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। গতরাতে আমি ঘুমাতে পারিনি, দেবায়ন।”

পারমিতার গালে আদর করে হাত বুলাতে বুলাতে দেবায়ন বলে, “আমি জানি মিমি, এই বন্ধ দরজার পেছনে তুমি সারারাত কেঁদেছিলে, আমি শুনেছি তোমার কান্না মিমি।”

পারমিতা, “আমি কি করব একটু বলে দিতে পার, দেবায়ন। মন যে একদম মানতে চাইছে না কাল থেকে।”

দেবায়ন পারমিতার মাথা নিচে টেনে কপালে চুমু খেয়ে বলে, “তোমাকে না আমি মিমি বলে ডেকেছি?”

পারমিতা মাথা নাড়ে, “হ্যাঁ”

দেবায়ন, “তাহলে আমার সুন্দরী মিমি, মিষ্টি মিমি আমাকে আগের মতন হ্যান্ডসাম বলে ডাকবে আর মুখে হাসি নিয়ে থাকবে। আমাদের ভালোবাসা একটু অন্য রকমের হোক মিমি। দুঃখ পেয়োনা মিমি, তোমাকে বুকে রাখতে পারছিনা তবে মনের গভীরে তোমার স্থান থাকবে।”

পারমিতা জল ভরা চোখে ঠোঁটে হাসি টেনে বলে, “হ্যান্ডসাম...”

দেবায়ন হেসে পারমিতার নরম গালে হাত বুলিয়ে বলে, “এই ত আমার মিমি। এইরকম না হাসলে তোমার মেয়ে আমাকে প্রশ্ন বাণে জর্জরিত করে মেরে ফেলবে। সেই সকাল থেকে অনু আমাকে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে, মায়ের কি হল, মায়ের কি হল। আমি শেষ পর্যন্ত কথা ঘুরিয়ে, গত রাতের কাকুর কথা কোম্পানির কথা, অঙ্কনের কথা বলেছি নিজেকে বাঁচাতে আর তোমাকে বাঁচাতে।”

পারমিতা দেবায়নের কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে, “তুমি একটা পাগল ছেলে হ্যান্ডসাম।”

দেবায়ন মনেমনে বলে “মা মেয়ে দুইজনে এক পাগলের প্রেমে, কি যে করি এখন।”

দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে বলে, “কি আর করা যাবে বল। এবারে চোখ মুছে ঠোঁটে হাসি নিয়ে ঘর ছেড়ে বাইরে বের হও। আজ রাতে মিস্টার সেনকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও। আজকে বেশি ড্রিঙ্ক করতে দিও না, পারলে নিজের ঠোঁটের রসে মিস্টার সেনকে ডুবিয়ে দিও।”

পারমিতা চোখের জল মুছে মিষ্টি হেসে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “হ্যান্ডসাম তোমার কাছে সবার জন্য কিছু না কিছু ওষুধ আছে তাই না?”

দেবায়ন হেসে বলে, “যাদের সত্যি ভালো লাগে তাদের জন্য আমার কাছে ভালোবাসা আছে, যাদের ভালো লাগে না তাদের জন্য ওষুধ আছে। তুমি আমার মিষ্টি মিমি, তোমার জন্য ভালোবাসা সবসময়ে থাকবে। এবারে একটা দারুন লঞ্জারি পরে নাও, বেশ সেক্সি সাজ, ঠোঁটে গাড় লিপস্টিক, চোখের কোণে কাজল, গলায় হার কানে দুল। আর কাল রাতে আমাকে যেমন ম্যাসাজ করে দিয়েছিলে, ঠিক তেমনি মিস্টার সেনকে ম্যাসাজ করে দিও, আজ রাতে দুইজনে পাগল করে দুইজনকে মাতিয়ে দিও, ভেবে নিও তোমার সোমেশ আবার তোমার কাছে ফিরে এসেছে।”

পারমিতা, “যাও যাও, বেশি বোকো না। বড্ড ফাজিল হয়ে যাচ্ছ তুমি, হ্যান্ডসাম। আমি কি করব না করব সে ফিরিস্তি দিয়ে দিলে। আজ রাতে তোমার পোয়াবারো, দু’দুটো মেয়েকে নিয়ে রাত কাটাবে। ইসসস... ”

দেবায়ন উঠে দাঁড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ যাই গিয়ে দেখি মেয়ে দুটো কি করছে। আমার ডার্লিং আমার খোঁজ না পেলে রেগে যাবে।”

পারমিতা বিছানা ছেড়ে দেবায়নের সামনে উঠে দাঁড়ায়, “এত কিছু বললে, একটু দাঁড়িয়ে দেখে যাবে না তোমার মিমিকে?”

পারমিতা দেবায়নকে জড়িয়ে ধরতে যায়, দেবায়ন দুই পা পেছনে সরে গিয়ে বলে, “না মিমি, আজকে তুমি শুধু মিস্টার সেনের। আজকের এই ভালোবাসার অধিকার আমার নেই, তোমাকে দেখার অধিকার আমার নেই। তুমি যাও মিমি, কালকের কথাবার্তা শুনে মনে হল মিস্টার সেন বদলে গেছে, নিজেকে ওর কোলে উজাড় করে দাও।”

পারমিতার চোখ দুটি চিকচিক করে ওঠে, ঠোঁটে মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে, “তোমাকে বড্ড ভালোবাসি, তুমি যা বলবে আমি তাই করব হ্যান্ডসাম।”

পারমিতার কথা শুনে দেবায়ন প্রাণপণে নিজেকে আয়ত্তে রাখে। সামনে দাঁড়িয়ে অতীব সুন্দরী আকর্ষণীয় মহিলার চোখ আবার ওকে ডাকছে, এই ডাক উপেক্ষা করার মতন শক্তি যোগাড় করে দেবায়ন। দুই হাত মুঠি করে চোয়াল শক্ত করে হাসে পারমিতার চিকচিক করা চোখের দিকে তাকিয়ে। পারমিতা ঠোঁট কামড়ে দেবায়নের মুখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে। 

দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে বলে, “গুড নাইট মিমি, হ্যাভ আ প্যাসোনেট নাইট উইথ মিস্টার সেন। আমার দিকে আর ওই রকম ভাবে তাকিয়ো না, দোহাই মিমি।”

দেবায়ন আর বেশিক্ষন দাঁড়ায় না পারমিতার সামনে, দেবায়ন বুঝে গেছে পারমিতাকে ফিরিয়ে এনেছে কিন্তু বেশিক্ষন ওর চোখের সামনে দাঁড়ালে দুই জনে নিজেদেরকে সামলে রাখতে পারবে না। 

দেবায়ন পারমিতার ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায়, সামনে অনুপমার বন্ধ দরজার দিকে তাকায়। মাথার সব শিরা উপশিরা পারমিতাকে বুঝাতে বুঝাতে পেঁচিয়ে গেছে, সেই সাথে বুকের ভেতর টা একসময় পেঁচিয়ে যাবার উপক্রম হয়। বুক ভরে শ্বাস নেয় দেবায়ন, মাথার প্যাঁচানো অলিগলি থেকে নিজেকে মুক্ত করে।






কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment