CH Ad (Clicksor)

Thursday, January 2, 2014

নিষিদ্ধ ভালবাসা_Written By pinuram [৪র্থ খন্ড (কান্না হাসির খেলা)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




নিষিদ্ধ ভালবাসা
Written By pinuram





কান্না হাসির খেলা (#01)

আমি বাস থেকে নামতেই, দেখি মা আমাকে ডেকে এক কোনায় নিয়ে গেল। আমার বুকের মাঝে ঝড় শুরু হয়ে যায়, এই বুঝি সব জানাজানি হয়ে গেছে আর তার খেসারত এখন গুনতে হবে। বুকের ধুকপুকানি সহস্র গুন বেড়ে যায়। তার বদলে মা আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে, বড় যাত্রী রাত এগারোটার মধ্যে খেয়ে দেয়ে ফিরে যাবে বসিরহাট, আমি ফিরতে চাই না আমি এখানে থাকতে চাই। আমি জানালাম, যে হেতু বাঙালি বিয়ে আমি অনেক দিন পরে দেখছি, সেজন্যে আমি রাতে থাকতে চাই। মা আমাকে থাকার জন্য অনুমতি দিয়ে দিলেন। আমি তো জেনে বেশ খুশী হলাম যে মা আমার আর পরীর কথা কিছু জানেন না।

কনের বাড়িতে বর যাত্রী উপস্থিত। সানাই বাজছে, চারদিকে হইহল্লা বেশ একটা রমরমা ব্যাপার স্যাপার। আমার চোখ থেকে থেকে পরী কে খোঁজে, কিন্তু মেয়েটা ভিড়ে কোথাও হারিয়ে গেছে। বরের ছোটো বোন, তার রকম সকম আলাদা, বেশ উৎফুল্ল মনে হচ্ছে। আমি একা একা একদিকে দাঁড়িয়ে বিয়ে বাড়ির ভিড় আর সাজসজ্জা উপভোগ করছিলাম।

এর মধ্যে এক সময়ে পরী আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করল "কি গো, চুপ করে বসে কেন?"

কথা বলার সময়ে লক্ষ্য করলাম যে আমার দিকে না তাকিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল কথা টা।

উত্তরে বললাম যে "তোমার সাথে সব সময়ে অনেক মেয়েরা থাকে, আমি খুব অড ফিল করি। তুমি এঞ্জয় করো।"

"ঠিক আছে, বসে থাকো। তবে সময় মতন খেয়ে নিও, এগারোটার মধ্যে বাস ছাড়বে। সবাই বাড়ি ফিরে যাবে শুধু, বড়দা আর সুব্রতদার দুই বন্ধু থাকবে।"

আমি বললাম যে, আমার মা আমাকে রাতে থাকার অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন, আমি রাতে বিয়েবাড়িতেই থাকছি।

অনেকক্ষণ পড়ে আমার দিকে তাকিয়ে ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল "কি? তার মানে কি আমাকেও থাকতে হবে?"

আমি ওর দিকে হেসে বললাম "সেটা তো তোমার ইচ্ছে, আমি কি করে জানবো তুমি থাকবে কি না।"

"ঠিক আছে সময় হলে দেখতে পারবে।"

পরী আমার দিকে একটু কটমট করে তাকিয়ে উত্তর দিল।

কিছুই করার নেই, আমি এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে থাকি। কিছুক্ষণ পরে বরযাত্রীর খাওয়া শেষ হয়, সবাই বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুত। এর মধ্যে দেখি পরী বায়না ধরেছে যে সে রাতে থাকবে। আমি বুঝতে পারিনি যে এই রকম কিছু একটা করবে।

মা বললেন "পরী, কোন মেয়েরা রাতে থাকছে না, তুই কি করে থাকবি বল। তোর মা কি বলবে তাহলে?"

মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে আদুরে গলায় বলে "আমাকে নাকি তুমি তোমার মেয়ের মতন ভালবাসো। প্লিস রাতে থাকতে দাও, প্লিস প্লিস।"

আমাকে কাছে ডেকে মা বললেন "এই ছেলে, পরী রাতে থাকতে চায়, ওর দিকে নজর রাখিস।"

আমার মনের অবস্থা ঠিক বর্ষা কালের চাতক পাখীর মতন, জল খুঁজে পেলাম মনে হল। খুশী টাকে বুকের মাঝে লুকিয়ে রেখে, বাধ্য ছেলের মতন মাথা নেড়ে বললাম যে ঠিক আছে আমি নজর রাখব। মনের ভেতরে ফুলঝুরি ফুটছিল, হয়ত অবচেতন মনে যেটা চেয়েছিলাম সেটা পেয়ে গেছিলাম বলে।

পরী মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খেয়ে বলে "আমার সোনা দিদি। আমি একদম ঠিক থাকব।"

কিছু পরে বরযাত্রী বাসে চেপে বেড়িয়ে পরে বসিরহাটের দিকে। বরযাত্রী চলে যাবার পরেই দেখি পরী আবার ভিড়ের মধ্যে উধাও হয়ে গেল। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি যে মেয়েটা আমার শাল গায়ে দিয়ে বিয়ের মন্ডপের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। চলন যেন এক মাদকতা মাখানো ছন্দ, শরীরে কেমন একটা দুলুনি লেগে। পেছন থেকে দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল যেন জড়িয়ে ধরি।

রাত গভীর হয়ে চলে, বিয়ে বাড়ির লোকজন ধিরে ধিরে কমে আসে। রাতে থাকার মতন আমি, পরী, বড় মামা সুমন্ত আর সুব্রতর দুই বন্ধু। বিয়ের লগ্ন আসন্ন, রাত বারোটা বাজে। আমি আর পরী দু’জনে ছাদনা তলায় দাঁড়িয়ে, আগুনের দিকে তাকিয়ে। মাঝে মাঝে পরীর আঙ্গুল আমার হাত ছুঁয়ে যায়, থেকে থেকে আমার শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ খেলে বেড়ায়। আমার দিকে না তাকিয়ে পরী আমার গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে ছিল, আমি ওর মুখের দিকে তাকাতে সাহস করে উঠতে পারছিলাম না। দু’জনেই বিবাহের অগ্নির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে মৌন ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম।

বেশ কিছুক্ষণ পরে এক মহিলা এসে পরী কে জিজ্ঞেস করে যে শোবে নাকি? আমি আড় চোখে ওর দিকে তাকিয়ে দেখি যে ও মাথা নেড়ে জানিয়ে দেয় যে যাবে না।

কিছুক্ষণ পরে আমি ওকে জিজ্ঞেস করে যে আমার সাথে একটু হাঁটবে? সম্মতি জানায়, আমি আর পরী রাতের অন্ধকারে বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ধিরে ধিরে হাঁটতে থাকি। ডিসেম্বরের কনকনে ঠাণ্ডা, আমার শাল টাকে গায়ের ওপরে ভালো করে জড়িয়ে নেয়, হাত দুটি বুকের কাছে ভাঁজ করা। কারুর মুখে কোন কথা নেই, চুপচাপ দু’জনে নিস্তব্ধ রাতে হেঁটে চললাম। শীত কালের রাত, চারদিক চুপচাপ, আমার বুকের মাঝের জায়গাটা হটাৎ করে খুব খালি মনে হয়। মনে হল খালি খালি হেঁটে চলেছি, কেউ এক’জন কে কথা শুরু করা উচিৎ।

আমি আড় চোখে ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম "কি হয়েছে, এত চুপচাপ কেন?"

নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটছিল পরী, মৃদু কম্পিত স্বরে উত্তর দেয় "কি হয়েছে! যেন তুমি কিছু জানোনা কি হয়েছে।"

"আমি কি করেছি" প্রশ্ন করি আমি।

"আচ্ছা, যেন তুমি কিছুই করো নি" কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পরে "জানো আমার কি হয়েছিল? আমার ওপরে যেন একটা বজ্রবিদ্যুৎ ঝলসে পড়েছিল।"

আমি কম্পিত স্বরে বলি "আমি কেমন যেন হয়ে গেছিলাম, আমার খুব ইচ্ছে করছিল তাই হটাৎ করে......"

পরী তখন পর্যন্ত মাথা উঠিয়ে আমার দিকে তাকায়নি, নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে হেঁটে চলেছে আমার পাশে "নড়াচড়ার শক্তিটুকু ছিলনা আমার। তুমি নেমে যাবার পরে, অনেকক্ষণ আমি চুপ করে বসেছিলাম। আমার শরীর কাঠ হয়ে গেছিল, কেমন যেন অবশ হয়ে গেছিলাম আমি।"





কান্না হাসির খেলা (#02)

আমি আলতো করে দু’কাঁধ ছুঁয়ে রাস্তার মাঝে ওর সামনে দাঁড়িয়ে পড়ি। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি আমি, চিবুকে তর্জনী ঠেকিয়ে আলতো করে ওর সুন্দর চেহারা তুলে ধরি। দু’চোখ বন্ধ, চোখের পাতা সুন্দর করে সাজানো লম্বা পালকে, আমি তাকিয়ে থাকি এক দৃষ্টে ঐ সুন্দর মুখপানে। ঠোঁট দুটি তিরতির করে কাঁপছে, আসন্ন কিছু আশার আকাঙ্খায়। হাত দুটি ভাঁজ করে বুকের ওপরে রাখা, শাল গায়ের সাথে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে। আমি একটু ঝুঁকে যাই ওর সুন্দর মুখের ওপরে আমাদের ঠোঁট জোড়া খুব কাছে। আমি সারা মুখে ওর উষ্ণ প্রশ্বাস অনুভব করি, এত কাছে দাঁড়িয়ে আমরা, আমি যেন ওর হৃৎপিণ্ডের ধুকপুক আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পাই। বুকের মাঝে উত্তাল তরঙ্গ বারংবার আছাড় খাচ্ছে যেন, পরীর বক্ষদ্বয় নিঃশ্বাস নেওয়ার ফলে ক্রমাগত ওঠানামা করছে আমার চোখের সামনে। দৃষ্টি থেকে থেকে আটকে যায়, বুকের খাঁজে। আমি মাথা নামিয়ে নিয়ে আলতো করে নাক দিয়ে ওর নাক ছুঁই, দু’জনেই ঘেমে গেছিলাম। ওর নাকের ঘাম আমার নাকে স্পর্শ করে, কেঁপে ওঠে পরী। ঠোঁট দুটি স্পর্শ করার প্রবল কামনা জাগে মনের গভীরে। পরী দাঁড়িয়ে, যেন কিছু শুনতে চায় আমার কাছে কিংবা নিবিড় চুম্বনের অধীর অপেক্ষায়। আমি সাহস যোগাড় করে উঠতে পারিনা সেই চুম্বনটি আঁকার জন্য।

এমন সময় হটাৎ করে পরী চোখ খোলে। দু’নয়নে অশ্রু টলমল করছে, নাকের পাটা ফুলে উঠেছে, নাকের ডগা লাল। ধরা গলায় বলে ওঠে "না, না। এটা সম্ভব নয় অভি। তুমি আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও।"

মাথা নামিয়ে, চোখে জল নিয়ে আমার সামনে থেকে দৌড়ে চলে যায় পরী। 

আমি দাঁড়ায়ে একলা, সেই রাতের অন্ধকারে। বুকে মধ্যে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে পরে। নিজেকে খুব একা মনে হয়, যেন এই পৃথিবীতে আমার কেউ নেই, আমি যেন অজানা এক গ্রহে হারিয়ে গেছি। একটা সিগারেট ধরাই আমি। মাথার মধ্যে শুধু ঘুরতে থাকে, "আমি কে? আমি কি? কে এই অভিমন্যু?"

বুকের কোন এক কোনা থেকে উত্তর আসে "জীবন যুদ্ধে পরাজিত এক মানুষ, তুমি!"

আমার দু’চোখে জল চলে আসে, সেটা কি সিগারেটের ধোঁয়ায় না পরাজয়ের, জানিনা বা জানতে চেষ্টা করিনি আমি। আমার কি অধিকার আছে কারুর সন্মান কারুর ধারনা অথবা অনুভুতিকে যন্ত্রণা দেবার। আমার কোন অধিকার নেই, শুচিস্মিতার কে অসম্মান করার বা তার হৃদয়ে যন্ত্রণা দেবার। আমি হেরে গেছি এই পৃথিবীতে, নিজের কাছে। আমি আমার এক দুর সম্পর্কের আত্মীয়ার প্রেমে পড়েছি, সে আমার প্রেমে পড়েছে। আমাদের সম্পর্ক সমগ্র সভ্যতার চোখে নিষিদ্ধ। আমাদের এই সভ্যতা সংস্কৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে হয় জীবনে, তাকে এড়িয়ে কি করে জীবন কাটানো সম্ভব? কিছুতেই সেটা সম্ভব নয়। 

বিধ্বস্ত পরাজিত, বুকের মাঝে এক তোলপাড় নিয়ে ফিরে যাবার জন্য পা বাড়াই। ঠিক সেই সময়ে আমাকে কেউ ডাক দেয়, মাথা উঠিয়ে দেখি, সুব্রতর এক বন্ধু আমাকে ডাকছে। বিয়ের পালা শেষ, বর কনে এবারে খেতে বসবে তাই ডাক পড়েছে আমার।

প্যান্ডালে ঢুকে দেখি, পরী এক কোনায় মাথা নিচু করে এক দৃষ্টিতে নিভে যাওয়া আগুনের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। নাকের ডগা লাল চোখের পাতা ভারী, চোখের কোনে জল। মনে হল ফুঁপিয়ে কাঁদছে, থেকে থেকে মৃদু ভাবে পিঠ ওঠানামা করছে। আমি প্রমাদ গুনলাম, আমি কেন এলাম, কেন ওকে কাঁদিয়ে দিলাম। যা ঘটে চলেছে সেটা ঠিক না ভুল জানিনা। 

এমন সময়, কনের মা এসে পরী কে জিজ্ঞেস করে "কি হল, একা একা কেন বসে? তোমাকে সবাই খাওয়ার টেবিলে খুঁজছে। তোমার নতুন বউদি তোমার জন্য খাবার টেবিলে অপেক্ষা করে বসে আছে।"

ডাক শুনে, পরী সোজা হয়ে বসে, চোখের জল মুছে মিষ্টি হাসে। কনের মা, ওকে নিয়ে খাবার জায়গায় ঢুকে পরে। আমি ও পেছন পেছন ঢুকে পড়লাম খেতে। ঢুকে দেখি, ও নতুন বউয়ের পাশে বসে বেশ গল্প করছে হাসছে। কিন্তু কেন যেন আমার মনে হচ্ছিল যে সেই পুরানো নারী, যে এইখানে এসেছিল, সে যেন হারিয়ে গেছে। আমি একটা কোনায় বসে চুপ করে খাওয়া সেরে নিলাম। পুরো সময়টাই কেউ কারুর দিকে তাকাই নি। 

খাওয়া দাওয়া শেষে, সবাই যে যার নিজের কাজে চলে যায়। বর কনে কে নিয়ে সুব্রতর বন্ধুরা বাসর জাগতে চলে গেল। পরীকে সাথে নিয়ে কনের মা চলে যান।

আমি একা একটা চেয়ার টেনে বিয়ের জায়গায় বসে থাকি। ডিসেম্বরের কনকনে ঠাণ্ডা কিন্তু আমার যেরকম মনের অবস্থা, তাতে ঠাণ্ডা বিশেষ লাগেনা। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে, নিভে যাওয়া আগুনের থেকে নির্গত ধোঁয়ার পানে এক ভাবে চেয়ে বসে থাকি। মাথার মধ্যে যেন কিছুই নেই, কোন চিন্তা নেই একদম খালি। 

জানিনা রাত কটা বাজে, ঘড়ি থাকলেও সেটা আর দেখা হয়ে ওঠেনা। এমন সময়ে নাকে এসে লাগে জুঁই ফুলের গন্ধ, কাঁধে ওপরে আলতো ছোঁয়া, এসেছে তাহলে আমার কাছে, আমি তো ভেবেছিলাম হয়তো আর আসবে না। আমি একটা চেয়ার টেনে পাশে বসার ইশারা করি। পরী চেয়ারটা টেনে নিয়ে আমার সামনে বসে পরে। ভাবলেশহীন চোখে ওর দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে থাকি। ওর লাল ঠোঁটে মিষ্টি একটা বাঁকা হাসি মাখা। 

আমায় জিজ্ঞেস করে "ঠাণ্ডা লাগছে?"

অনেক ক্ষণ পরে ওর আওয়াজ শুনে মনে হল যেন কিছু ফিরে পেলাম আমি। মাথা নাড়াই "হ্যাঁ ঠাণ্ডা তো লাগছে।"

"আমি আর একটা শাল এনেছি তোমার জন্য।"

"আমার শাল টা আমাকে দেবে না?"

মাথা নাড়িয়ে চোখে হাসে মাখিয়ে বলে "না, এই শাল আমি দেব না, এটা আমার। চিরদিনের জন্য আমার।"

মৃদু হেসে বলি আমি "ঠিক আছে, আমার রানীর যা ইচ্ছে তাই হোক।"





কান্না হাসির খেলা (#03)

বকে দিল আমাকে "অনেকক্ষণ ধরে দেখে যাচ্ছি, শুধু সিগারেট খেয়ে চলেছ।"

আমি আঙ্গুল থেকে সিগারেট টা মাটিতে ফেলে বললাম "ঠিক আছে বাবা, এই নাও আর খাচ্ছিনা।"

"তুমি আজ রাতে এখানে থাকলে কেন?"

"আমি কোনদিন কোন কাছের আত্মীয়র বিয়ে দেখিনি তাই পুরোটা এঞ্জয় করতে রয়ে গেলাম।"

আবার বকে দিল আমাকে "তাহলে তুমি আমার জন্য থাকনি?"

আমি অবাক "কোন লেডিস রাতে স্টে করেনি, তো আমি কি করে জানবো যে তুমি স্টে করবে কি করবে না।"

আমার হাতের ওপরে মৃদু চাপর মেরে বলে "তুমি একটা আস্ত গাধা। আমাকে একবারের জন্য জিজ্ঞেস করলে না কেন? একবারের জন্য ভেবে দেখলে না আমি অতটা রাস্তা একা একা কি করে ফিরব?"

"তোমাকে বোঝা বড় দায়, পরী। আমি সত্যি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিনা তোমাকে। বাসে সবাই তোমার চেনা জানা, তুমি একা কেন হবে?"

অভিমানীনি পরী বলে ওঠে "তোমরা ছেলেরা কখন বুঝবে না আমাদের।" রেগে আমার সামনে থেকে উঠে যায়। 

আমি ওর হাত দুটি হাতের মধ্যে নিয়ে কাতর স্বরে বলি "প্লিস যেওনা। বস একটু।"

"কেন বসতে যাবো আমি? তুমি তো এখানে আমার জন্য বসে নয়। একা একা বসে থাকো।" 

"প্লিস মাফ করে দাও। সরি। রিয়ালি সরি।"

আমি টেনে ওকে আমার বাঁ পাশে বসিয়ে দিলাম, আমার বাঁ কাঁধে মাথা রেখে আমার হাতে নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে আমার আঙ্গুল গুলো নিয়ে নাড়াচারা করে। ফিসফিস করে বললাম আমি "পরী, আমি সত্যি জানিনা, আমাদের সম্পর্কে আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে। আমি জানিনা এর কি পরিণতি।"

কাঁপা গলায় বলে "আমি জানতে চাই না এর পরিণতি, অভি। আমি বর্তমানে বাঁচতে চাই, জীবন টাকে সম্পূর্ণ ভাবে উপভোগ করতে চাই। আমি ভবিষ্যৎ দেখিনি, দেখতে চাইনা।"

আমি বাঁ হাত দিয়ে পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে কোমল কটিদেশে আঙ্গুল বুলাতে থাকি, আস্তে আস্তে হাত চলে যায় কোমল পেটের পাশে। পরী আমার গা ঘেঁসে বসে আমার শরীরের উষ্ণতা টুকু নিজের শরীরে অনুভব করার জন্য। ডান হাতে ওর ডান হাত নিয়ে ঠোঁটের কাছে নিয়ে আসি আমি। হাতের উলটো দিকে আলতো করে একটা চুমু খাই আমি। আমার দিকে অর্ধ নিমিলত নয়নে তাকিয়ে, দু’চোখ দিয়ে যেন ভালোবাসার অশ্রু ঝরে পড়ছে। গায়ের গন্ধে আমার বুকের ভেতর টা আনচান করে ওঠে, আমি ওর তর্জনীটা ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে আলত করে চুষি। 

মিষ্টি স্বরে কঁকিয়ে ওঠে "উমমম...... প্লিস এরকম করো না, আমার ভেতরটা কেমন যেন চিনচিন করছে, অভি।"

আঙ্গুলে বের করে নিতে চেষ্টা চালায় পরী, কিন্তু সাথে সাথে আমার ঘাড়ে গর্দানে নাক আর ঠোঁট ঘসতে শুরু করে দেয়। আমার সারা শরীরে কেমন যেন একটা আগুন ধরে যায়। আমি ওর আঙ্গুল নিয়ে ক্রমাগত চুষে যাই, থামিনা। আমার প্রগার বাহু বন্ধনে সাপের মতন আড়ামড়া খেয়ে চলে "প্লিস... দুষ্টুমি করে না সোনা।"

আমি আমার চোয়ালে পরীর নরম ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করি, আলতো করে জিব দিয়ে আমার চোয়াল চেটে দেয়, মাঝে মাঝে ছোটো ছোটো চুমু খেতে থাকে। দু’জনের মাঝে ভালবাসার বহ্নিশিখা জ্বলে ওঠে। 

আমি ওর হাত ছেড়ে ওর মুখপানে তাকিয়ে থাকি, ও আমার পাঞ্জাবির কলার হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে থাকে। ডাগর কালো নয়নে আবেগের শিখা জ্বলে ওঠে, সেই নয়নের আগুন যেন আমার অন্তরাত্মা পর্যন্ত জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয়। আমি ডান হাতের তালু ওর বাম গালের ওপরে রেখে কপালে আলতো করে একটা চুমু খাই। 

কেঁপে ওঠে পরী, আমার ঠোঁটের পরশে। ধিরে ধিরে আমার ঠোঁট নিচে নামে, ধনুকের মতন বাঁকা ভুরুর ওপরে আলতো করে চুমু খাই, চোখ বন্ধ করে নেয় পরী। আমি চোখের পাতার ওপরে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়াই। নাক দিয়ে ঘন ঘন উষ্ণ নিঃশ্বাস নির্গত হয়। নাকের ডগায় আলত করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেই আমি। দু’জোড়া ঠোঁটের মিলনের আসন্ন সময় নিকটবর্তী, উৎকণ্ঠায় কেঁপে ওঠে পরী আমার নিবিড়ঘন বাহু বন্ধনে। 

অবশেষে ঠোঁট জোড়া মেলে, প্রথমে মৃদু স্পর্শ। ঠোঁটের ওপরে আমার স্পর্শ অনুভব করে আমার কলার নিজের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে থাকে। আমার ওপরের ঠোঁট কামড়ে ধরে পরী, আমার বুকের ওপরে ওর কোমল বুক পিষে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে, ঠোঁট জোড়া নিয়ে খেলা শুরু হয়ে যায় দু’জনার। আমি আমার ঠোঁটের ওপরে মখমলের মতন জিবের ছোঁয়া অনুভব করি, আমার সারা শরীরে খেলে বেড়ায় এক শিহরণ। 

সময় যেন থমকে দাঁড়িয়ে আমাদের চারপাশে, পৃথিবীর আজ যেন শেষ দিন, কালকের সূর্য যেন উদয় হবেনা। আমি ওর কোমর জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নেই। আমার মুখটি নিজের হাতের মাঝে অঞ্জলির ন্যায় তুলে ধরে। আমরা এই প্রথম চুম্বন টাকে শেষ করে দিতে চাই না, প্রানপনে চাইছিলাম যেন সময় শেষ না হয়। কনকনে ঠাণ্ডা রাতে, প্রেমের অগ্নি স্ফুলিঙ্গ থেকে থেকে ঠিকরে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। আমি ডান হাত নিয়ে যাই ওর মাথার পেছনে, আবেশের বশে, চুলের ক্লিপ খুলতে চেষ্টা করি।





কান্না হাসির খেলা (#04)

কি যে ভুল করেছিলাম, আমার ঠোঁট ছেড়ে হেসে বলে "প্লিস আমার খোঁপা খুলো না। আমি চাই না আমাদের দেখে কেউ কিছু ধরে বসে।"

দীর্ঘ চুম্বন আর সোহাগের আদরে আমাদের নিঃশ্বাস ঘন হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হচ্ছিল যেন, উত্তাল সমুদ্র তিরে দুই কপোত কপোতী অনাবিল আনন্দে তরী ভাসানোর প্রস্তুতি করছে। আমার মন খুশীতে ভরে গেল, পরীর চোখে ভালোবাসার পরশ দেখে। আবার যেন খুঁজে পেলাম আমার হারিয়ে যাওয়া রমণীকে। ওর দু’চোখে জেগে ওঠে সেই হারিয়ে যাওয়া রোমাঞ্চ, পুরানো সেই দুষ্টু মিষ্টি পরী আমার সামনে বসে।

আমি ইচ্ছে করে ঠোঁট চাটি, আমার ঠোঁটে ওর লিপস্টিকের রঙের সাথে ওর পরশ লেগে, জিব দিয়ে সেই মিষ্টি ছোঁয়া টাকে অনুভব করে নিতে চেষ্টা করি। 

"উমমমমম... তোমার ঠোঁট দুটো যা মিষ্টি না, কি যে বলি তোমায়।" 

"হ্যাঁ অনেক হয়েছে, যাঃ দুষ্টু ছেলে তুমি, সেটা আর বলতে।"

মন আমার খুশীতে ভরে যায় সেই পুরানো পরী কে দেখে। 

চেয়ার ছেড়ে উঠে পরে ও, আমার হাত ধরে টান দেয় "দেখো প্রায় চারটে বাজে। রেস্ট নেওয়া দরকার। তুমি কি কখন টায়ার্ড হও না?"

আমি মজা করে বলি "তুমি কাছে থাকলে টায়ার্ডনেস থোরি আমার কাছে আসে।"

"হ্যাঁ অনেক আদিখ্যেতা হয়েছে। আচ্ছা, শোন, মাসিমা বরযাত্রীর রেস্ট নেওয়ার জন্য একটা রুমের ব্যাবস্থা করেছিলেন। যাবে নাকি সেখানে শুতে? ছোড়দার বন্ধুরা তো ছোড়দার সাথে বাসর জাগছে, কেউ নেই ঐ রুমে।"

"হুম, কিন্তু তোমার বড়দা তো ঐ রুমে থাকতে পারেন?"

"যাঃ বাবা, আমি একদম ভুলে গেছিলাম। তো কি করবে, এই ঠাণ্ডার মধ্যে বসে থাকবো নাকি আমরা?"

আমি ওর হাত ধরে টান মেরে কোলের ওপরে বসিয়ে দেই "তুমি তো কাছে আছো, তাহলে কি ঠাণ্ডা কি ক্লান্তি। সবাই কে তাড়িয়ে দেব আমি।"

আদুরে গলায় বলে ওঠে পরী "কিন্তু আমাদের এইরকম অবস্থায় যে কেউ দেখে ফেলতে পারে। ব্যাপারটা তাহলে খুব সাঙ্ঘাতিক হয়ে যাবে যদি ধরা পরে যাই।"

"তাহলে তুমি কি বল করতে?"

আমি ওর ক্ষীণ কটিদেশ দু’হাতে জড়িয়ে আর নিবিড় করে নেই ওকে আমার বুকের কাছে।

"আমাকে কোল থেকে তো উঠতে দেবে নাকি? না সারা রাত আমরা এই রকম ভাবে গল্প করে যাবো?" দু’হাতে আমার গলা জড়িয়ে ধরে, প্রগাড় হয়ে যায় বাহুবন্ধনি "আমি চাই না আজকের রাত টা শেষ হোক, চাই না সকালের সূর্য ওঠা।"

দু’হাতে ক্ষীণ কটিদেশ প্রগাড় বাহুবেষ্টনীতে আবদ্ধ করে ধরি, রমণীর কোমল নিতম্বের চাপে পিষ্ট হয়ে যায় আমার দুই জঙ্ঘা। 

দুহাতে গলা জড়িয়ে, মাথার চুলে বিলি কাটতে থাকে। আমার কানে ফিস ফিস করে অনুরোধ করে "প্লিস একটা গান গাও?"

আমি প্রায় চেঁচিয়ে উঠি "ড্যাম সিট পরী, রাস্তার কুত্তা গুলো আমাকে গান থামাতে বলবে তাহলে।"

"উম, তুমি না বাসে গান গেয়েছিলে? এবারে আমার জন্য গান গাও।"

"চলো অনেক হয়েছে, ছেলেখেলা। সূর্য উঠবে হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে।"

"হ্যাঁ গো, আমাদের এবারে ভেতরে যাওয়া উচিৎ।"







কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment