আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
পাপ কাম ভালোবাসা
Written By pinuram
Written By pinuram
দ্বাবিংশ পর্ব (#04)
পারমিতার প্যান্টি খুলে নামিয়ে দেয় দেবায়ন। চোখের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায় ফর্সা যোনি। যোনির চেরা মাঝে দুই কালচে গোলাপি পাপড়ি বেড়িয়ে। দুই পাপড়ি, যোনি রসে ভিজে চকচক করছে। দেবায়ন যোনি বেদিতে চুমু খেয়ে, যোনির চেরা চেতে দেয়। পারমিতা দেবায়নের চুল আঁকড়ে ধরে যোনির ওপরে চেপে ধরে ওর মাথা। অন্য হাতে নিজের একটা স্তন ধরে চটকাতে আরম্ভ করে। দেবায়ন পারমিতার পাছা দুটি হাতের থাবার মাঝে নিয়ে চটকে পিষে দেয়। সেই সাথে, যোনির চেরায় জিবের ডগা দিয়ে চাটতে শুরু করে। নীচ থেকে উপরের দিকে কুকুরের মতন চাটে। জীবে লাগে মিষ্টি, কষ যুক্ত যোনির রসের স্বাদ। নাকে ভেসে আসে উগ্র কামনার গন্ধ। দেবায়ন পারমিতার দুই থাইয়ের নীচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে কাঁধের ওপরে নিয়ে আসে ওর পা। পারমিতার যোনি সম্পূর্ণ খুলে যায় দেবায়নের মুখের সামনে। তীব্র গতিতে জিব সঞ্চালন করে চেটে চুষে পাগল করে তোলে পারমিতাকে।
পারমিতা শীৎকারে শীৎকারে ঘর ভরিয়ে তোলে, “ক্লিট ডলে দাও হ্যান্ডসাম, আরও চাট... উফফফ মাগো কি যে হচ্ছে... হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যান্ডসাম... চাট আমাকে চেটে চেটে খেয়ে ফেলে শেষ করে দাও... আমি তোমার হাতে আজকে চুদতে চুদতে মরে যেতে চাই...”
পারমিতা আর থাকতে পারে না, সারা শরীর বারেবারে শিউরে ওঠে। তলপেট ভেতরে ঢুকে যায়, চোখে অন্ধকার দেখে, লাল নীল হলুদ সবুজ সব রঙ দেখতে পায়। সারা শরীরে যেন শত সহস্র পিঁপড়ে দৌড়ে বেড়ায়। দেবায়ন পারমিতার যোনির ভেতরে দুই আঙুল ঢুকিয়ে নাড়াতে শুরু করে দেয়। আঙ্গুলের গোড়া পর্যন্ত ঢুকিয়ে দিয়ে চেপে ধরে থাকে। চিপচিপে আঠালো রসে ভিজে যায় দুই আঙুল। সেই সাথে ভগাঙ্কুরে জিবের ডগা দিয়ে ডলে পিষে একাকার করে দেয়। পারমিতা আর থাকতে পারে না, মাথার চুল আঁকড়ে ধরে টেবিলের ওপরে শুয়ে পরে। দেবায়নের আঙুল সঞ্চালনের ফলে বেঁকে যায় পারমিতার দেহ। দেবায়ন আঙুল বের করে ছোটো ছোটো চাঁটি মারতে থাকে যোনির ওপরে। পারমিতা চিৎকার করে ওঠে, ওর চরম মুহূর্ত ঘনিয়ে আসে। বেঁকে যায় পারমিতার শরীর। দেবায়নের মাথা আঁকড়ে ধরে যোনির চেরায় ওর মুখ চেপে ধরে। দেবায়ন পারমিতার স্তন জোড়া চেপে চটকে ধরে। পারমিতার যোনি গুহায় কাম রসের বাণ ডাকে। ঠোঁট চেপে ধরে চোঁচোঁ করে সেই আঠালো যোনি রস চুষে নেয় দেবায়ন। পারমিতার যোনি রসে ভিজে যায় দেবায়নের মুখ আর ঠোঁট। রাগরস স্খলনের পরে পারমিতা হাঁপিয়ে ওঠে। টেবিলের ওপরে দুই পা কোমরের উপরের অংশ, টেবিলের পাশ দিয়ে ঝুলে থাকে দুই পা। যোনি ভরে রাগরস চুইয়ে পরে, বাকি সেই রাগরস পাছার চেরা পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। অনেকদিনের জমানো কামক্ষুধার জ্বালা, লালসার বিষ যোনি থেকে বেড়িয়ে আসে। সারা শরীর যেন একটা উত্তেজিত আগ্নেয়গিরি। সারা শরীর আঁচরের কামড়ের লাল লাল ছোপ ছোপ দাগ।
দেবায়ন উঠে দাঁড়ায় পারমিতার মেলে ধরা থাইয়ে মাঝে। ওর কঠিন লিঙ্গ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে, মাছের মুখের মতন হাঁ করা সিক্ত গোলাপি মিষ্টি যোনির দিকে তাগ করে থাকে। দেবায়নের চোখের দিকে তাকায় পারমিতা, ঠোঁটে মাখা মিষ্টি তৃপ্তির হাসি। অভুক্ত দেহের প্রতিটি রোমকূপ দেবায়নের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য উন্মুখ। দেবায়ন, রাগরসে চিপচিপে ভেজা আঙুল দুটি পারমিতার ঠোঁটের কাছে ধরে। পারমিতার স্তন এক হাতে টিপে আলতো আদর করে দেয়। পারমিতা ওর দুই ভেজা আঙুল ঠোঁটের মাঝে নিয়ে নিজের রস চুষে চেটে নেয়। সারা মুখশ্রীতে মাখা এক অনাবিল যৌন পরিতৃপ্তির ছটা। দেবায়নের শরীর পারমিতার শায়িত শরীরের ওপরে ঝুঁকে যাওয়ার ফলে কঠিন লম্বা লিঙ্গ, যোনির চেরা বরাবর ঘষে যায়। ভেজা যোনির পাপড়ি, গরম লিঙ্গের ত্বকে চুমু খায়।
পারমিতা হেসে বলে, “তোমার বাড়া অনেক গরম হয়ে আছে, হ্যান্ডসাম। আমার গরম গুদে ঢুকে, চুদে চুদে ফাটিয়ে দাও আমাকে।”
দেবায়ন, পারমিতাকে দুই হাতে পাঁজাকোলা করে তুলে ধরে। পারমিতা, দেবায়নের গলা জড়িয়ে কাঁধের ওপরে মাথা রাখে। ভালোবাসার মানুষের হাতে নিজেকে ছড়িয়ে দেয়।
দেবায়ন ওর নাকের ডগায় নাক ঘষে বলে, “মিমিসোনা, তোমার হাসি বড় মিষ্টি। তোমার মাই দুটি ভারী নরম, চটকাতে, কচলাতে বড় ভালো লাগে। তোমার গুদের রস সবসময়ে মিষ্টি।”
পারমিতা মিহি কণ্ঠে বলে, “তোমাকে কাছে পাবার জন্য জমিয়ে রেখেছিলাম এতদিন। তুমি আসবে, তোমার হাতের ছোঁয়ায় পারমিতা আবার মিমি হয়ে যাবে। তুমি আমাকে প্রান ভরে আদর করবে, আমি তোমার আদর খেতে খেতে হারিয়ে যাবো।”
দেবায়ন খুব ধিরে পারমিতার নধর গোলগাল শরীর, সাদা ধবধবে বিছানার উপরে শুইয়ে দেয়। পারমিতা দুটো বালিস মাথার নিচে দিয়ে, দুই পা ভাঁজ করে মেলে ধরে। একহাতে নিজের যোনির চেরায় আঙুল বুলিয়ে সিক্ত করে নেয়। যোনি গুহায় বান ডেকেছে, কিছু আগেই রাগরস স্খলন করেছে, কিন্তু দেবায়নের কোলে উঠতেই আবার যোনিগুহা ভরে উঠেছে রসে। দেবায়ন ওর পার্স থেকে কন্ডম বের করে, লিঙ্গের উপরে পড়িয়ে দেয়। পারমিতা দেখে ওর দিকে, যোনি চেরা দুই আঙ্গুলে ফাঁক করে গোলাপি যোনির দেয়াল দেখায়। ইঙ্গিতে জানায়, লিঙ্গ ঢুকিয়ে ওকে মন্থনে পেষণে মর্দনে কামসুখের শিখরে নিয়ে যেতে।
দেবায়ন ওর শরীরে ওপরে ঝুঁকে পড়ে, বাম হাত বিছানার ওপরে দিয়ে ভর দিয়ে ঊর্ধ্বাঙ্গ উঠিয়ে রাখে। ডান হাতে নিজের লিঙ্গ ধরে যোনি চেরায় স্থাপন করে। লিঙ্গের লাল মাথা, যোনি পাপড়ির মধ্যে একটু খানি ঢুকে যায়। পারমিতার যোনি ফুলে যায়, লাল মাথা ঢুকে যাওয়াতে। পারমিতা, “উম্মম” করে এক মিহি সুখের শীৎকার করে। ধিরে ধিরে কোমর নামিয়ে লিঙ্গ সম্পূর্ণ ঢুকিয়ে দেয় পারমিতার সিক্ত পিচ্ছিল যোনির ভেতরে। দুইজনের নিম্নাঙ্গ মিশে যায়। দেবায়ন ঝুঁকে পড়ে পারমিতার শরীরের ওপরে। পারমিতা দুই হাতে দেবায়নের শরীর জড়িয়ে, কোমর উঁচিয়ে, বড় কঠিন লিঙ্গের দীর্ঘ আর উত্তাপ নিজের যোনির দেয়ালে অনুভব করে। চোখ বন্ধ করে চেপে ধরে থাকে দেবায়নের পাছা।
পারমিতা কামার্ত কণ্ঠে দেবায়নের কানে কানে বলে, “ঢুকিয়ে ধরে থাক প্লিস। তোমাকে আমার ভেতরে অনেকদিন পড়ে পেলাম হ্যান্ডসাম। তুমি যখন তোমার বাড়া ঢুকাও, আমার দেহের সবকিছু ফুলে ফেঁপে ওঠে। পেটের ভেতরে গিয়ে ধাক্কা মারে তোমার বাড়ার ওই লাল মাথা। শক্ত করে চেপে ধরে থাক... আমি শেষ হয়ে গেলাম।”
মন্থন শুরু করার আগেই, শুধু মাত্র লিঙ্গের চাপে যোনির দেয়াল কেঁপে ওঠে। পারমিতার শরীর আবার কেঁপে ওঠে, লিঙ্গের চারপাশে, সিক্ত কোমল যোনিপেশি সঙ্কুচিত সম্প্রসারিত হয়ে, দুধ দয়ার মতন লিঙ্গ চেপে চেপে ধরে। পারমিতার যোনিপেশির চাপে দেবায়ন উন্মাদ হয়ে ওঠে। পারমিতার মাথার নিচে হাত দিয়ে মাথা উঁচু করে ঠোঁটের ওপরে ঠোঁট বসে কামড় দেয় ঠোঁট। জিবের খেলা, চুম্বনের খেলা চলে। সেই সাথে দেবায়ন কোমর উঠিয়ে লিঙ্গ বের করে যোনি থেকে। কিছুটা বের করে আবার চাপ দিয়ে লিঙ্গ, সম্পূর্ণ ঢুকিয়ে দেয়। শুরু হয় কামার্ত রমণীর সাথে এক সুঠাম পুরুষের আদিম কাম খেলা। প্রতি ধাক্কায় পারমিতার কামার্ত শীৎকার তীব্র হয়। দেবায়নের মন্থনের গতি ধিরে ধিরে বেড়ে ওঠে। বিছানা নড়ে ওঠে ওদের মিলিত কাম খেলায়। দুলতে শুরু করে পারমিতার দেহ, সেই সাথে আগুপিছু দুলতে শুরু করে পারমিতার গোল গোল দুই নরম স্তন। দেবায়ন স্তনের ওপরে চুমু খেতে খেতে আর স্তন জোড়া চটকে কচলে যোনি মন্থন করে। মন্থনের তালে তালে দুইজনে উত্তেজনার চরম শিখরে পৌঁছায়। পারমিতার সারা শরীর দুমড়ে মুচরে যায়, তলপেট ভেতরে ঢুকে যায়। সেইসাথে, দেবায়নের অণ্ডকোষে বিশাল ঝড়ের পূর্বাভাস দেখা দেয়। পারমিতাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে, খুব জোরে জোরে লিঙ্গের ধাক্কায় যোনি মন্থন করে। পারমিতা হাঁপিয়ে উঠে দেবায়নেকে দুইপায়ে ওর কোমর পেঁচিয়ে ধরে।
পারমিতা কামার্ত শীৎকার করে ওঠে, “আমাকে চেপে ধর হ্যান্ডসাম। একবারে এত বড় ঝড় আমার আসেনি। আমি পাগল হয়ে গেলাম... আমি উড়ে যাচ্ছি হ্যান্ডসাম...”
দেবায়ন প্রলাপ বকে, “মিমি... মিমি... মিমি... মিমি... তুমি খুব মিষ্টি... তুমি চূড়ান্ত সেক্সি... তোমার গুদে অনেক রস... মিমি আমার হয়ে যাবে... সোনা আমাকে চেপে ধর...”
পারমিতা, “হ্যাঁ হ্যাঁ... হ্যান্ডসাম... আস আমার ভেতরে আস... ”
বিশাল এক ঝড় সমুদ্রতটে আছড়ে পড়ে, দুই শরীর মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। যোনির ভেতরে লিঙ্গ চেপে, কাঁপতে শুরু করে দেয়। গরম বীর্য ঝলকে ঝলকে বেড়িয়ে আসে লিঙ্গ থেকে। কন্ডমের ভেতরে ভরে যায় বীর্য, সেইসাথে পারমিতার যোনিপেশি কামড়ে ধরে দেবায়নের লিঙ্গ। চরম উত্তেজনায় পারমিতা দেবায়নের কাঁধে দাঁত বসিয়ে দেয় নিজের কাম শীৎকার যাতে কেউ শুনতে না পারে সেই জন্য। পারমিতার গালে ঠোঁট চেপে দেবায়ন নিস্বার হয়ে পড়ে থাকে। দুই শরীর যেন আর দুটি নয়, মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে গোয়ার এক কটেজের সাদা ধবধবে বিছানার ওপরে। কামরস, রাগরস আর ঘামে মাখামাখি হয়ে দেবায়ন আর পারমিতা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ শুয়ে থাকে অনেকক্ষণ।
কঠিন লিঙ্গ ধিরে ধিরে যোনির ভেতরে শিথিল হয়ে আসে। দেবায়ন পারমিতার দেহের ওপর থেকে নেমে পাশে শুয়ে পড়ে। দেবায়নের বুকের ওপরে মাথা রেখে, দুই হাতে জড়িয়ে নিস্বার হয়ে পড়ে থাকে পারমিতা। সারা অঙ্গে ভালোবাসার ছোপ ছোপ দাগ, সারা অঙ্গে মাখা কাম ক্ষুধার তৃপ্তির চিহ্ন।
দেবায়ন পারমিতার মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কেমন লাগলো মিমি?”
পারমিতা বুকের ওপরে ছোট্ট চুমু খেয়ে বলে, “ধুর পাগলা ছেলে এই কথা আবার জিজ্ঞেস করে নাকি? তোমার আদর সবসময়ে এক অন্য আনন্দ দেয় আমাকে।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “একটা কথা আমাকে বলবে মিমি?”
পারমিতা, “তুমি আর কি জানতে চাও হ্যান্ডসাম?”
দেবায়ন, “নিবেদিতা কেমন মহিলা?”
পারমিতা সাপের মতন ফোঁস করে ওঠে। একটা বিছানার চাদর গায়ে জড়িয়ে দেবায়নের পাশে বসে চোখের ওপরে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করে, “কেন হটাত নিবেদিতার কথা এল? র্যাডিসন ফোর্টে, সেদিন রাতে কি হয়েছিল?”
দেবায়ন বুঝে পেল না হটাত পারমিতার আহত হওয়ার কারন, পারমিতার হাত বুকের ওপরে টেনে ধরে বলে, “শোনো মিমি, ওর সাথে আমার কিছু হয়নি। আমি শুধু জিজ্ঞেস করলাম এই আর কি। সোমেশ কাকু গাড়িতে বলছিল যে তোমার সাথে নিবেদিতার একদম বনে না।”
পারমিতা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “সুন্দরী, আর মাথায় ঘিলু আছে তাই দেমাকে মাটিতে পা পড়ে না।”
দেবায়ন ওর আঙ্গুলে চুমু খেয়ে, মসৃণ পিঠের ওপরে হাত বুলিয়ে বলে, “তোমার আর অনুর চেয়ে সুন্দরী নয় নিবেদিতা।”
দেবায়নের এই বক্তব্য একদম মনের গভীর থেকে আসে। নিবেদিতার চেয়ে পারমিতার বয়স বেশি হলেও পারমিতা অনেক সুন্দরী ওর চেয়ে।
পারমিতা ম্লান হেসে বলে, “ওর মাথায় বুদ্ধি আছে তাই ওর দেমাক। আমার মাথায় সত্যি বলতে এই সব বিজনেসের বেশি প্যাঁচঘোঁচ একদম ঢোকে না। তাই আমি খুব কম অফিসে যাই। আমি সি.এম.ডি, অফিসে আমার দর বেশি। ও আমার চেয় বেশি পড়াশুনা করেছে। কিন্তু ক্লায়েন্ট আর পয়সা আমি এনে দেই। ফাইনাল ডিলে আমাকে থাকতে হয়, কারন তোমার অজানা নয়। বিজনেস আর অফিসের অন্যদিক ওই সামলায়, পরমিত আসেনা বলতে গেলে। সুতরাং ও ভাবতে চায়না যে আমি ওই কোম্পানির মালকিন। ওর আসার আগের দশ বছর কি ভাবে ওই কম্পানিকে আমি টেনেছি আমি জানি। তখন ওর বাবা ছিলেন ডাইরেক্টর। নিবেদিতা অনেক বার চেষ্টা করেছে কোম্পানি নিজের নামে করে নিতে। আমি হতে দেইনি, কারন আমি জানতাম ওই কোম্পানির জন্য সোমেশ আমাকে দেখে আর আমার কথা শোনে। নাহলে সোমেশ হয়ত আরো নিচে নেমে যেত। দ্বিতীয় কারনে পারেনি কারন অত টাকার জন্য কোন ক্যাপিটালিস্ট যোগাড় করতে পারেনি। আর পেরে উঠলেও সোমেশ ভেঙ্গে দিয়েছে। সোমেশের খেলা আমি আজ পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারলাম না।”
শেষের বাক্য বড় আহত কণ্ঠে বলে, চোখের কোল চিকচিক করে আসে পারমিতার। দেবায়ন বিছানায় উঠে বসে পারমিতাকে জড়িয়ে ধরে। পারমিতা ওর কাঁধে মাথা রেখে বলে, “তুমি বলে গেলে আমাকে সোমেশের কাছে যেতে। আমি গেলাম, প্রথম কয়েক দিন বেশ ভালো লাগলো, খুব আদর করল।”
গলা ধরে আসে পারমিতার, “আমি ফিরে গেলাম, কিন্তু মিমি হতে পারলাম না, হ্যান্ডসাম। সোমেশ আজও আমার কাছে অধরা।”
দুই চোখে জল গড়িয়ে লাল গাল ভিজিয়ে দেয়।
দেবায়ন গালে বুড়ো আঙুল দিয়ে অশ্রু মুছিয়ে বলে, “প্লিস কেঁদো না, আমি বুঝতে পারছি তোমার কষ্ট।”
কোমল গালে উষ্ণ আঙ্গুলের ছোঁয়ায় পারমিতা যেন আরও গলে যায়, দেবায়নের বুক আছড়ে পড়ে ককিয়ে ওঠে, “আমি সত্যি হতভাগী, হ্যাডসাম।”
দেবায়ন পারমিতাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেয়, “তোমার ছেলে মেয়ে সবাই তোমাকে ভালোবাসে, মিমি।”
পারমিতা চোখের জল মুছে মিষ্টি হেসে বলে, “হ্যাঁ তাই বেঁচে আছি আর তোমার জন্য বেঁচে আছি। জানিনা আবার কবে তুমি আসবে আমাকে পাগল করে দিতে, আমাকে আদর করতে। তবে সেইদিনের অপেক্ষায় থাকতে ভালো লাগবে আমার। তোমাকে দূর থেকে দেখেও আমার শান্তি।”
দেবায়ন আর পারমিতা বেশ কিছুক্ষণ পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে। সঙ্গমের সুখের রেশ কেটে এক অন্য ভালোবাসায় ভরে ওঠে পারমিতার বুক। দেবায়নের বুকের মাঝে জাগে এক ভিন্ন মাধুরী, এক ভিন্ন প্রকারের ভালোলাগা। পারমিতা দেবায়নের আলিঙ্গন ছাড়িয়ে, উলঙ্গ হয়ে বিছানা থেকে নেমে যায়। হাঁটার তালে দুই ভারী পাছা দুলে ওঠে মত্ত তালে, সেই ছন্দে দুলে ওঠে দুই স্তন। দেবায়ন কামুক চাহনি নিয়ে নগ্ন পারমিতার দেহ সুধা আকণ্ঠ পান করে। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে পারমিতার দিকে ধোয়া ছাড়ে। ধোয়ার মাঝে উলঙ্গ অপ্সরাকে আরও মায়াবি বলে মনে হয়। দেবায়নের শুয়ে থাকা লিঙ্গে আবার রক্তের সঞ্চালন শুরু হয়ে যায়। পারমিতা হেসে ফেলে দেবায়নের লিঙ্গের নড়াচড়া দেখে। সুটকেস থেকে নিজের জামাকাপড় বের করে বাথরুমের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ায় পারমিতা। দেবায়ন একটা দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পারমিতার দিকে এগিয়ে যায়।
পারমিতা খিলখিল করে বাচ্চা মেয়ের মতন হেসে বাথরুমে ঢুকে বলে, “শান্ত কর তোমার ওটাকে, আর না এখন। পারলে একবার অনন্যাকে ফোন করে জিজ্ঞেস কর কোথায় আছে? মনে হয় এতক্ষণে মুম্বাই পৌঁছে গেছে।”
দ্বাবিংশ পর্ব (#05)
দেবায়ন, অনুপমাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে ওরা গোয়াতে ভালো ভাবে পৌঁছে গেছে। অনুপমা দেবায়নকে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস করে যে মিমি কে একা পেয়ে কি হল। অনুপমার কথা শুনে, দেবায়নের কান ঈষৎ লাল হয়ে ওঠে লজ্জায়। অনুপমা হেসে বলে, গোয়াতে যেন বেশ মজা করে আর সেই সাথে অনন্যাকে কাছে পেয়ে যাবে ওর সাথেও যেন চুটিয়ে আনন্দ ফুর্তি করে নেয়। দেবায়ন ফোনে অনুপমাকে চুমু খেয়ে বলে ওর মনে যদি কাউকে ধরে তাহলে তাঁর সাথে আনন্দ করতে পারে। অনুপমা বলে সময় হলে জানিয়ে দেবে। পায়েলের প্রেমিকের ওপরে নজর ছিল অনুপমার তখন জানত না যে পায়েলের প্রেমিক ওর ভাই হবে তাই বর্তমানে, রূপক ছাড়া কারুর ওপরে তেমন নজর নেই। হেসে দেয় দেবায়ন, বলে পরীক্ষার পড়ে চারজন মিলে গোয়াতে বেড়াতে আসবে তখন রূপক আর অনুপমাকে ছেড়ে দেবে।
পারমিতা স্নান সেরে বেড়িয়ে আসে শুধু ব্রা আর প্যান্টি পরে। ফর্সা নধর দেহে, গোলাপি লেস ব্রা আর ক্ষুদ্র গোলাপি প্যান্টি। দেবায়নের লিঙ্গ আবার জেগে ওঠে। তোয়ালের নিচে দেবায়নের লিঙ্গের নড়াচড়া দেখে পারমিতা হেসে দেয়। সুটকেস থেকে একটা বডিস বের করে পরে নেয় সেই সাথে কোমরে পেঁচিয়ে নেয় একটা সারঙ। দেবায়নকে ঠেলে স্নানে ঢুকিয়ে দেয় পারমিতা। দেবায়ন স্নান সেরে বেড়িয়ে একটা টি শার্ট আর বারমুডা গলিয়ে নেয়।
অনন্যার ফোন আসে, গোয়া এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রিসোর্টে চলে আসবে। পারমিতা পরমিতকে ফোন করে জেনে নেয় ওর অবস্থান। পরমিত মুম্বাই পৌঁছে গেছে, সন্ধ্যের মধ্যে রিসোর্টে পৌঁছে যাবে। পারমিতা আর দেবায়ন লাউঞ্জে দিয়ে অনন্যার জন্য অপেক্ষা করে। কিছু পরে অনন্যা রিসোর্টে পৌঁছে যায়। দেবায়ন অনন্যাকে দেখে, পরনে একটা জিন্সের কাপ্রি আর টপের ওপরে ব্লেজার। পোশাকের ধরন দেখে বোঝা যায় বেশ দামী। অভিনেত্রী বলে ওইখানে কেউ ওকে চেনে না, তাই বিশেষ মাথাব্যাথ নেই ওদের। পারমিতাকে দেখে অনন্যা প্রায় দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে বলে, ভারী সুন্দরী দেখাচ্ছে পারমিতাকে। দুই সুন্দরী রমণীর আলিঙ্গন দৃশ্য বেশ উপভোগ করে দেবায়ন। পারমিতা, অনন্যার কপালে চুমু খেয়ে কুশল ইত্যাদি জিজ্ঞেস করে। পাশে দেবায়নকে দেখে একটু অবাক হয়ে যায় অনন্যা। পারমিতা আসল সম্পর্ক জানায় না, অনন্যাকে বলে বিজনেস ডিল করার জন্য দেবায়নকে আনা হয়েছে। পারমিতা অনন্যাকে ওর রুমে নিয়ে যায়। অনন্যা, ক্লায়েন্টের কথা জিজ্ঞেস করলে বলে ওদের এক ডাইরেক্টর, মিস্টার পরমিত সিংহ ধিলন, পাঞ্জাবী ভদ্রলোক, দিল্লীতে থাকেন, সন্ধ্যের আগে পৌঁছে যাবেন।
অনন্যা জামাকাপড় বদলে নেয়, একটা ঢিলে বারমুডা আর হাতকাটা টপ পরে। চাপা টপের ভেতর দিয়ে দুই ভারী স্তন ফেটে বেড়িয়ে আসার যোগাড়। তিনজনে সমুদ্রতটের দিকে হাঁটতে শুরু করে। রিসোর্ট থেকে একটা ছোটো পথ কাভেলসসিম বিচের দিকে গেছে। অনন্যা ইচ্ছে করে দেবায়নের পাশে পাশে হাটে। অনন্যার সামনে পারমিতাকে একটু সম্ভ্রম করে চলে দেবায়ন। তৃতীয় কোন ব্যাক্তির সামনে ওদের গোপন সম্পর্ক খোলসা করতে নারাজ।
অনন্যা পারমিতাকে জিজ্ঞেস করে, “ম্যাম, তোমার জামাই বেশ ভালো।”
পারমিতা হেসে জিজ্ঞেস করে, “কেন? তুই কি করে জানলি ওর কথা?”
পারমিতা আড় চোখে দেবায়নের দিকে তাকায়। দেবায়নের শরীর দুই রমণীর উত্তেজক দৃশ্যে আর অনন্যার নরম হাতের ছোঁয়ায় উত্তপ হয়ে ওঠে।
অনন্যা দুষ্টু হেসে বলে, “আর বল না ম্যাম, তুমি যেন কিছুই জানো না। র্যাডিসন ফোরটের পার্টিতে দেখা হল, কথা হল। ছাড়ো অসব কথা। এত বিজনেস ডিল হচ্ছে কি ব্যাপার? কয় খানা ফার্ম খুলবে তোমরা?”
পারমিতা অনন্যার থুতনি নাড়িয়ে আদর করে বলে, “পাগলি, সত্যি বলছি আমি কিছু জানিনা। ওই দেবায়ন আর সোমেশ জানে এইসব ব্যাপার। আমাকে শুধু বলে দেওয়া হয় যে এই কাগজে সই কর আমি সই করে দেই।”
বিকেলের পড়ন্ত বেলায়, সমুদ্রের ধারে বেশ কয়েক জোড়া ভারতীয় আর বিদেশী পর্যটকের দেখা মেলে। বিদেশী মেয়েদের পোশাক আশাক একটু খোলামেলা, তবে কেউ বিকিনি পরে নেই। অনেকের পরনে সিঙ্গেল পিস সুইমসুট। এক ভারতীয় যুগল, অদুরে সমুদ্রের জলে খেলায় মেতে। মেয়েটার পরনে লাল রঙের ব্রা আর লাল প্যান্টি, একটা সারঙ কোমরে জড়ানো ছিল কিন্তু সমুদ্রের ঢেউ আর সাথীর টানাটানিতে সারঙ খুলে গেছে। প্যান্টিটা বেশ ক্ষুদ্র, একটা ছোটো ত্রিকোণ কাপড়ে যোনিদেশ ঢাকা, পেছনের দড়ি দুই পাছার খাঁজে হারিয়ে গেছে। ছেলেটার ঊর্ধ্বাঙ্গ খালি, জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে মেয়েটাকে জল ছিটিয়ে, আদর করে জড়িয়ে ধরে ব্যাতিব্যাস্ত করে তুলেছে। সেই যুগলকে দেখে মনে হল সদ্য বিয়ে করে হানিমুনে এসেছে।
অনন্যা দেবায়নের হাতে চিমটি কেটে চোখের ইঙ্গিতে ওই যুগলের দিকে দেখায়। দেবায়ন অনন্যার কাঁধে হাত দিয়ে কাছে টেনে কানেকানে বলে, “যাবে নাকি জলে?”
অনন্যা, “ইসসস... শখ দেখো ছেলের। তুমি ম্যামের সামনে আমাকে নিয়ে যাবে? ম্যাম কি ভাববে বল ত?”
দেবায়ন, “তোমার ম্যাম কিছু ভাববে না। আমি তোমাকে বলেছিলাম না অনু আমাকে ছাড় দিয়েছে।”
অনন্যা, “তোমরা দুইজনে সত্যি কত বোঝো পরস্পরকে। তুমি অনুকে ছাড় দিয়েছ আবার অনু তোমাকে ছাড় দিয়েছে।”
পারমিতা হাঁটতে হাঁটতে একটু এগিয়ে চলে গেছিল। পেছন ফিরে দেবায়ন আর অনন্যাকে নিবিড় ভাবে হাত ধরে হাঁটতে দেখে হেসে জিজ্ঞেস করে, “এই তোরা কি করছিস রে?”
পারমিতার দিকে তাকায় দেবায়ন, গাড় নীল রঙের বডিস, স্তনের নীচ থেকে পেটের অধিকাংশ খালি। সারঙটা বেশ ভালো ভাবে জড়ানো কোমরে। হাঁটার সময়ে সারঙ্গের চেরা দিক থেকে ফর্সা পা বেড়িয়ে আসে। মনে হয় যেন এক জলপরী এই মাত্র উঠে এল সমুদ্র থেকে। দেবায়ন অনন্যার দৃষ্টি লুকিয়ে পারমিতার দিকে একটা ছোট্ট চুমু ছুঁড়ে দেয়। পারমিতার কান লাল হয়ে যায় লজ্জায়। পশ্চিম আকাশে সূর্য পাটে বসতে চলেছে। পরমিতের ফোন আসে সেইসময়ে, পরমিত পারমিতাকে জানায় যে গোয়া পৌঁছে গেছে কিছুক্ষণের মধ্যেই রিসোর্টে পৌঁছে যাবে। পারমিতা, দেবায়ন আর অনন্যাকে বলে ওদের রিসোর্টে ফিরে যাওয়া উচিত, কিছুক্ষণের মধ্যে পরমিত এসে যাবে। তারপরে ডিনারের সময়ে ওদের বসতে হবে এই ডিলের ব্যাপারে। রিসোর্টের দিকে হাঁটতে হাঁটতে অনন্যাকে বলে যে পরমিত দুই রাতের জন্য গোয়া থাকবে, সেই সময় টুকু ওকে পরমিতের সাথে কাটাতে হবে। অনন্যা একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে সেটা বুঝে নেবে। দেবায়নের বুক ছ্যাঁত করে ওঠে, দুইজনের কাউকে অন্য কারুর সাথে ভাবতে পারে না।
রিসোর্টে ফিরে সবাই পোশাক আশাক বদলে নেয়। পরমিতের সাথে লাউঞ্জে দেখা হয়। পরমিতের বয়স পঞ্চাশের নিচে নয়। পাঞ্জাবী ভদ্রলোক, পাঞ্জাবী হিসাবে যে রকমের লম্বা চওড়া বলে দেবায়ন ধারনা করেছিল তেমন লম্বা নয় তবে একটু চওড়া। পারমিতাকে দেখে হেসে হাত বাড়িয়ে অভিবাদন জানায়। পারমিতা বলে যে ডিনারে কথা হবে। অনন্যা আর দেবায়ন অদুরে দাঁড়িয়ে ছিল। অনন্যা দেবায়নকে বলে, এই লোক খুব জ্বালাবে রাতে। দেবায়ন হেসে ফেলে কথা শুনে, পারমিতা ওকে বলেছিল যে পরমিত সম্ভোগ সঙ্গমে বেশ পটু, সারা রাত ধরে কামখেলা খেলে যাবার মতন ক্ষমতা রাখে। দেবায়ন অনন্যাকে জিজ্ঞেস করে কি দেখে পরমিতের সম্বন্ধে ওই ধারনা হল ওর। অনন্যা বলে যেমন ভাবে পারমিতার হাত ধরে আছে তাতে মনে হয়না সহজে হাত ছাড়বে, পারলে পারমিতাকে ওই লাউঞ্জে দাঁড়িয়ে করে ফেলে। কিন্তু সে সাথে পরমিতের চোখ আশেপাশে যেমন ভাবে ঘোরাফেরা করছে তাতে বেশ বোঝা যায় যে যেরকম মেয়ে পেলেই ওর হল। কিছু পরে পারমিতা, দেবায়নকে আর অনন্যাকে ডেকে পরমিতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
অনন্যার সাথে হাত মেলানোর সময়ে হাত ধরে হেসে ফেলে, “আমি বাংলা সিরিয়াল দেখিনা বটে তবে আপনাকে এখানে দেখে বেশ ভালো লাগছে।”
অনন্যা হাত ছাড়িয়ে হেসে বলে, “শুনে বেশ খুশি হলাম।”
পারমিতা দেবায়নকে দেখিয়ে বলে, “আমার মেয়ের ফিয়ন্সে, মিস্টার দেবায়ন বসাক।”
পরমিত ওর সাথে হাত মিলিয়ে বলে, “তুমি তাহলে এম্পায়ারের মালিক হতে চলেছ। কিসের বিজনেস তোমার?”
দেবায়ন বলতে যাচ্ছিল এখন পর্যন্ত কলেজে পড়ে, পারমিতা ওর কথা কেড়ে নিয়ে বলে, “সোমেশের সাথেই বিজনেসে আছে। আচ্ছা তুমি রুমে যাও, কিছুপরে দেখা হবে। কোথায় বসতে চাও, মামা মিয়া না টিয়া মারিয়াতে? দুটোই পুল সাইড।”
পরমিত বলল, “তোমাদের যেমন ইচ্ছে। আমাকে ফোন করে দিও, আমি চলে আসব।”
পরমিত চলে যাবার পরে, পারমিতা দেবায়নকে বলে, “কাউকে বলার দরকার নেই তুমি কলেজে পড়।”
অনন্যা হাঁ করে তাকিয়ে থাকে পারমিতা আর দেবায়নের দিকে। দেবায়ন কলেজে পড়ে সেটা বিশ্বাস করতে পারে না। অনন্যার অবাক চাহনি দেখে পারমিতা হেসে বলে, “তুই কি ভেবেছিলি, এ সোমেশের সাথে বিজনেসে? হ্যাঁ বটে, আবার নাও বটে!”
দেবায়নের পিঠ থপথপিয়ে বলে, “বিজনেসে নেই তবে এই আমাদের ম্যান ফ্রাইডে, অনুর ফিয়ন্সে।”
অনন্যা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, “আর কি লুকিয়েছ আমার কাছ থেকে? আমি সেদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি কে, তুমি ঠিক উত্তর দাও নি।”
দেবায়ন হেসে বলে, “আমি মিথ্যে বলিনি ডিয়ার।”
পারমিতা জিজ্ঞেস করে, “কোথায় বসতে চাও?”
অনন্যা বলে, “পুল সাইড ওপেন কিছুতে নয়, অন্য কোথাও। পরমিতের যা স্বভাব তাতে মনে হয় খাবার চেয়ে বেশি আমাকে খেতে চাইবে। একটু ঢাকা জায়গা হলে ভালো হয়।”
পারমিতা হেসে বলে, “তাহলে কাবাবস এন্ড কারিসে বসা যাবে। হ্যাঁরে তুই, শাড়ি এনেছিস? রাতে ডিনারের সময় একটু বাঙালি বউদের মতন সেজে আসিস। পরমিতের ফ্যান্টাসি, বাঙালি মেয়েকে কাছে পাওয়া।”
অনন্যা মাথা নেড়ে জানিয়ে দেয় যে কথা মতন সেজে আসবে। অনন্যা চলে যাবার পড়ে পারমিতা দেবায়নকে বলে, “তুমি রাতে রুমে থেকে যেও, আমি কটেজে চলে যাবো। অনন্যার সামনে একটু সাবধানে ব্যাবহার করা ভালো।”
দেবায়ন হেসে মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, “আমি জানি মিমি।”
পারমিতা, “চল, ড্রেস চেঞ্জ করে ফেলি আর তুমি একবার ফাইল গুলো গুছিয়ে নাও। আমি সোমেশকে ফোনে জিজ্ঞেস করে দেখি কিছু বলে কি না।”
কটেজে ঢুকে দেবায়ন জিন্সের ওপরে একটা সাদা টি শার্ট পরে আর তার ওপরে ছাই রঙের একটা ব্লেজার চড়িয়ে নেয়। পারমিতা একটা গাড় নীল রঙের শাড়ি নিজের নধর দেহপল্লবে জড়িয়ে নেয়। শাড়ির পরতে পরতে যেন আগুন চাপা। দেবায়ন সোফায় বসে দেখে পারমিতার সাজ। ছোটো হাতার ব্লাউজ, বুকের দিকে বেশ গভীর কাটা, স্তনের খাঁজের অনেকটা দেখা যায় ব্লাউজের সামনে থেকে। পিঠের দিকে দুটি দড়ি দিয়ে বাধা, সম্পূর্ণ ফর্সা মসৃণ পিঠ অনাবৃত। নাভির বেশ নিচে শাড়ির গিঁট। পারমিতার রুপ সুধা পান করতে করতে দেবায়ন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পারমিতা ওর দিকে তাকিয়ে হেসে ইশারায় জানায় চুপচাপ বসে থাকতে, যেন দুষ্টুমি না করে। সাজার পরে কটেজ থেকে বেড়িয়ে আসে। পারমিতা, অনন্যাকে ডেকে নেয়। উজ্জ্বল শ্যামলা ত্বকের সাথে অনন্যার আকাশী নীল রঙের শিফনের শাড়ি বেশ মানিয়েছে। শাড়িটা বেশ পাতলা, দেহের আঁকিবুঁকি সব পরিস্ফুটিত। হাতকাটা আকাশী নীল রঙের ব্লাউজ পরনে, কপালে একটা ছোটো টিপ, ঠোঁটে লাল রঙ, চোখের কোলে কাজল। অন্ধকারের রানী, যামিনী সুন্দরী অনন্যার শরীর থেকে মাদকতার ছটা বিচ্ছুরিত হয়। দেবায়ন, অনন্যাকে দেখে বলে ওকে বেশ সুন্দরী দেখাচ্ছে। পারমিতা, পরমিতকে ফোনে জানিয়ে দেয় ওরা কাবাবসে বসবে। কাবাবসে চারজনে বসে একটা কোনার টেবিল দেখে। চৌক টেবিলের চারদিকে চারজন। অনন্যা আর পারমিতা মুখোমুখি, পরমিত আর দেবায়ন মুখোমুখি। ড্রিঙ্কের সাথে কথাবার্তা শুরু হয়।
পরমিত একটা গ্লাসে চুমুক দিয়ে অনন্যাকে জিজ্ঞেস করে, “আপনি বেশ সুন্দরী, শাড়িতে আরো ভালো লাগছে। বাঙালি মেয়েরা শাড়ি না পড়লে মনে হয় গোলাপ ফুলে যেন গন্ধ নেই।”
পারমিতা আর অনন্যা ওর কথা শুনে হেসে ফেলে। দেবায়ন হেসে বলে, “একদম যথার্থ কথা বলেছেন। তবে পাঞ্জাবী মেয়েরা ঘি দুধ খেয়ে একদম সিমলার আপেল হয়ে যায়।”
পরমিত হেসে বলে, “হ্যাঁ, তা হবেই যে। পাঞ্জাবের কাছেই হিমাচল, আপেল সোজা পাহাড় বেয়ে নেমে আসে।”
অনন্যা, পরমিতকে জিজ্ঞেস করে, “কিসের বিজনেস আপনার?”
পরমিত হেসে বলে, “জামা কাপড়ের এক্সপোর্ট আছে, একটা মোটর পার্টসের কারখানা খুলেছিলাম ওই গুরগাওয়ের দিকে কিন্তু মারুতির প্লান্টে গণ্ডগোল দেখে সেই ব্যাবসায় বড় ধাক্কা খেলাম। রিয়াল এস্টেটে এইবারে কিছু টাকা বিনিয়োগ করেছি। এই সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক কিছু আছে।”
অনন্যা, “দিল্লীর কোথায় থাকেন?”
পরমিত, “লাজপত নগরে, অনেক দিনের পুরানো বাড়ি আমাদের। আমি দিল্লীতে আসতে বলতাম আপনাদের কিন্তু এই সময়ে দিল্লীতে নামলে কোলকাতার লোক জমে কুলফি হয়ে যেত।” সবাই ওর কথা শুনে হেসে ফেলে। পরমিত অনন্যাকে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কবে নায়িকা হচ্ছেন একবার জানাবেন। বাংলা বুঝি না তবে আপনার সেই সিনেমার ডিভিডি কিনে বাড়িতে দেখব।”
অনন্যা হেসে ফেলে পরমিতের কথায়, “তাহলে আপনাকে আরও অপেক্ষা করে থাকতে হবে মিস্টার ধিলন।”
পারমিতা পরমিতকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি বলছিলে একবার যে, ট্রান্সপোর্টে টাকা ঢালবে তার কি হল?”
পরমিত একটু অবাক হয়ে বলে, “আরে মিসেস সেন? সেই কথা তোমার মনে আছে নাকি? সে ত অনেকদিন আগেকার কথা।”
পারমিতা লাজুক হেসে বলে, “তারপরে দেখা আর হল কই সেই রকম ভাবে।”
পরমিত একটা গ্লাসে চুমুক দিয়ে পারমিতাকে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার মিসেস সেন, আমার শেয়ার কিনে কি করতে চলেছ?”
পারমিতা অতশত জানে না, র্যাডিসনের বিজনেস মিটিঙ্গে পারমিতা ছিল না, এবং মিস্টার সেন এইসব কথার কিছুই পারমিতাকে জানায় নি। পারমিতা দেবায়নের দিকে তাকায়। দেবায়ন উত্তর দেয়, “সেই ব্যাপারে নিশ্চয় কাকুর সাথে আপনার বিস্তারিত কথাবার্তা হয়ে গেছে।”
দেবায়ন আসল খবর চেপে যায়, পরমিতের ভুল ভাঙ্গান বোকামোর কাজ।
পরমিত বুদ্ধিমানের মতন মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, “হ্যাঁ হয়ে গেছে, যাই হোক। তোমাকে তুমি বলছি কিছু মনে করো না। তোমার কিসের বিজনেস?”
দেবায়ন পারমিতার দিকে তাকিয়ে বলে, “বিজনেসে ঢুকব এবারে।”
পরমিত হেসে বলে, “হ্যাঁ, সেটা বুঝতে পারছি। মিস্টার সেনের মতন বড়োলোক শ্বশুর, বেশ ভালো।”
দেবায়নের চোয়াল শক্ত হয়ে যায় পরমিতের কোথা শুনে। পারমিতা টেবিলের তলা দিয়ে দেবায়নের হাত চেপে শান্ত হতে বলে। দেবায়ন মাথা ঠাণ্ডা করে মজা করে, “এক সাথে রাজকন্যে আর রাজত্ব পেয়ে গেলাম আর কি।”
পরমিত, “ভালো বলেছ।” পারমিতার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “ফাইল দেখে কি কাজ হবে? মেমরেন্ডাম আমাকে অনেক আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে আর সেই মতন কথাবার্তা, আলোচনা সব সারা। তোমার কি মত, মিসেস সেন?”
পারমিতা, “দেখো পরমিত, এই বিষয়ে আমার কোন মত নেই। আগেও ছিল না এবারেও নেই। তোমার শেয়ারের যা বর্তমান দাম, সেটা কত? কত পেলে তুমি খুশি?”
পরমিত, “কোম্পানির কুড়ি শতাংশের মালিক আমি। সেই অনুযায়ী পঁয়তাল্লিশ কোটি টাকা হয়। সব মিস্টার সেন জানে, আবার এই সব প্রশ্ন কেন?”
দেবায়ন খানিক ক্ষণ চোখ বন্ধ করে ভাবতে চেষ্টা করে একাউন্টসের হিসেব নিকেশ, তারপরে গম্ভির কণ্ঠে বলে, “না মিস্টার ধিলন, আপনার অঙ্কে ভুল আছে। চল্লিশ কোটি হয়। আপনি যত টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তার পাঁচ গুন লাভ আপনি এতদিনে পেয়ে গেছেন। গত কুড়ি বছরে, আপনাকে কবে কত দেওয়া হয়েছে তার পুরো হিসাব আমার কাছে আছে। সেই হিসাব যদি এখানে খুলে বসি তাহলে চল্লিশের চেয়ে কম পাওনা হয় আপনার।”
পরমিত জানত যে পারমিতা এইসবের ব্যাপারে কোনদিন কিছু বলেনা তাই সে প্রশ্নটা পারমিতাকে করেছিল। কিন্তু দেবায়ন ওর হয়ে উত্তর দেবে সেটা ঠিক ভাবে নি। দেবায়নের মুখের উত্তর শুনে পরমিত বাঁকা হেসে বলে, “যদি কাগজে স্বাক্ষর না করি?”
পারমিতা আবার টেবিলের তলা দিয়ে দেবায়নের হাত চেপে ধরে। ইঙ্গিতে জানায় কোন বসচায় না যেতে। দেবায়ন পরমিতকে বলে, “আমি ছোটো, আমি এই খেলায় নতুন। কিন্তু কাকুর সাথে থেকে একটু খেলা আমি শিখে গেছি। কোম্পানি ডিসলভ করে দেব। এই চল্লিশের এক টাকাও আপনি পাবেন না। আর বাকি অংশ নিয়ে আমি কি করব সেটা আমি আপনাকে কেন বলতে যাবো?”
অনন্যার মাথার ওপর দিয়ে এইসব কথাবার্তা বেড়িয়ে যায়, পারমিতার দিকে চেয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি ব্যাপারে কথাবার্তা হচ্ছে। পারমিতা চোখের ইশারায় চুপ করে থাকতে বলে।
পরমিত হেসে ফেলে, “আরে না না, মিস্টার বসাক। আমি এমনি জানতে চাইছিলাম যে দুশো কোটি টাকা নিয়ে তুমি কিসে বিনিয়োগ করতে চলেছ। হে হে... মানে আমাকেও তাহলে একটু সুযোগ দিও ভবিষ্যতে এই আর কি।”
দেবায়ন বুঝে যায়, কোন প্রকৃতির মানুষ মিস্টার পরমিত সিং ধিলন। এতক্ষণ ওর কণ্ঠে সম্ভ্রমের ছোঁয়া ছিলনা, দেবায়নের কথা শুনে পরমিতের গলার স্বর পালটে গেছে। দেবায়ন বাঁকা হেসে বলে, “আমি জানি আপনি মজা করছিলেন। তবে আপনাকে চল্লিশ আর মিসেস চৌধুরীকে পঞ্চাস দেবার পরে এমন কিছু বাঁচবে না যাতে একটা বড় কোম্পানি খোলা যাবে। আগে টাকা আসুক তারপরে রোডম্যাপ তৈরি করব।”
পরমিত, “তোমার মতন মানুষ, কখন টাকার জন্য অপেক্ষা করে না, মিস্টার বসাক। তুমি পরবর্তী পদক্ষেপ ভেবেই রেখেছ, বলতে চাইছ না সেটা আলাদা ব্যাপার।”
ড্রিঙ্ক আর স্টারটার শেষে, দেবায়ন ফাইল এগিয়ে দেয় পরমিতের দিকে। পরমিত হেসে বলে, “ডিনার শেষ হোক, তুমি ম্যাডামের হাতে ফাইল পাঠিয়ে দিও আমি সই করে দেব।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “দুটো কাগজ আছে ওইখানে। একটা চল্লিশ একটা পঁয়তাল্লিশ, কোনটা সই করবেন?”
পরমিত হেসে বলে, “আরে বাবা মিস্টার বসাক, সি.এম.ডি বসে আছে, একটু আলাপ করব না? তুমি মিসেস সেনের হাতে ফাইল দিয়ে দিও, আমি একদম ঠিক কাগজে সই করে দেব। তুমি চিন্তা করো না।”
দেবায়ন চিবিয়ে বলে, “আপনাকে চল্লিশে সই করতে হবে না। আমার সামনে আপনি পয়তাল্লিশে সই করে দিন, সেই সাথে কাকিমাও সই করে দেবে ট্র্যান্সফার কাগজ। দুটো কপি করা আছে, একটা আপনার কাছে থাকবে, আসলটা আমার কাছে।”
পরমিত হতভম্ব হয়ে যায় দেবায়নের কথা শুনে। তিনি পাক্কা ব্যাবসাদার। নারী মাংসের চেয়ে টাকা বেশি চেনে, তবে শেষ বারের মতন পারমিতাকে ভোগ করার লোভ ছাড়তে পারে না। পরমিত মানতে পারে না, যে কালকের একটা ছেলে ওকে নেস্তানাবুদ করে দেবে। পরমিত বুঝে যায় যে দেবায়ন ঘাসে মুখ দিয়ে চলে না, পরমিতের আসল উদ্দেশ্য ধরে ফেলেছে আর তাই পাঁচ কোটি টাকা ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে। পরমিত ম্লান হেসে বলে, “দাও কোথায় সই করতে হবে দেখি।”
পারমিতা, দেবায়নের শক্ত চোয়াল দেখে মনের অবস্থা বুঝে যায়। দেবায়ন এক দৃষ্টে পরমিতের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। এযেন দুইজনের মুক যুদ্ধ। পারমিতা অবস্থার সামাল দেওয়ার জন্য দুইজনকে হেসে বলে, “আরে বাবা, থাম তোমরা। ডিনার করে ফেলি। কাবাবসে এসেছি এখানকার গলোটি কাবাব খেয়ে দেখো, জীবে দিলেই গলে যাবে এমন দারুন বানায়।”
পারমিতা অনন্যাকে ইশারায় কথা বলতে বলে, দেবায়নকে শান্ত করতে ইশারা করে।
দ্বাবিংশ পর্ব (#06)
পরমিত আর দেবায়নের কথাবার্তা আলোচনায় ডিনারের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অনন্যা টেবিলের তলা দিয়ে দেবায়নের থাইয়ের ওপরে নরম হাত চেপে ঠাণ্ডা করে। দেবায়নের দিকে আলতো হেসে বলে, “এই তোমরা অনেকক্ষণ ধরে শুধু বিজনেসের প্যাঁচ নিয়ে কথা বলে যাচ্ছ। একটু থামবে? আমাদের মাথায় কিছু ঢুকছে না এই সব ব্যাপার।”
পরমিতের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “চিন্তা করবেন না মিস্টার ধিলন, আমি আপনার কাছে ফাইল নিয়ে চলে যাব।”
দেবায়ন কাষ্ঠ হেসে বলে, “মিস্টার ধিলনের এখানকার কাবাব কি আর ভালো লাগবে? খোদ দিল্লীর মানুষ, পুরানো দিল্লীতে দারুন কাবাব পাওয়া যায় নিশ্চয়। কি বলেন মিস্টার ধিলন?”
পরমিত দেবায়নকে বলে, “হ্যাঁ, একবার দিল্লীতে এস। লাল কিলার কাছে পরাঠে ওয়ালা গলিতে ভালো পারাঠা আর কাবাব খাওয়াব তোমাকে।”
দেবায়ন বলে, “হ্যাঁ এবারে যেতে হবে দিল্লী।”
ডিনার দিয়ে যায় অয়েটার। ব্যাবসা ছেড়ে কথার মোড় অন্যদিকে ঘুরে যায়, অনন্যার সিনেমার কথা হয়। মিস্টার ধিলনের মেয়ে একজন ক্যানাডিয়ান এন.আর.আই কে বিয়ে করেছে, সেই নিয়ে কথা হয়। উত্তপ্ত পরিবেশ শান্ত হয়ে যায়। খাওয়া শেষে, মিস্টার ধিলন জিজ্ঞেস করেন সাক্ষর করার কথা। দেবায়ন অনন্যার হাতে ফাইল ধরিয়ে দেয়। পরমিত একটু হাসে সেই দেখে। অনন্যাকে বলে, একটু টিয়া মারিয়াতে গিয়ে ড্রিঙ্কস নেবে তারপরে রুমে চলে যাবে। অনন্যা বলে, রুমে পৌঁছে গেলে একবার যেন দেবায়নকে ফোনে জানিয়ে দেয়, তাহলে সেই মতন ফাইল নিয়ে চলে যাবে। অনন্যা আর পারমিতা কটেজে চলে যায়। দেবায়ন আর পরমিত বারের দিকে হাঁটা দেয়। পরমিত বারে ঢুকে যায়।
দেবায়ন একটা বিয়ারের বোতল হাতে নিয়ে সমুদ্র তটের দিকে হাঁটতে শুরু করে। ঠাণ্ডা কনকনে হাওয়া বইতে থাকে সমুদ্রের দিক থেকে। ঘন কালো অন্ধকারে সমুদ্রের ঢেউ মাঝে মাঝে চিকচিক করে, সাদা ঢেউয়ের ফেনা আছড়ে পরে পায়ের কাছে। কোন এক ছোটো বেলায় মায়ের সাথে দিঘা ঘুরতে গেছিল, সে কথা মনে নেই। একা নির্জন সমুদ্র তটে হাঁটতে হাঁটতে সব কিছু কেমন স্বপ্নের মতন মনে হয়। স্বপ্নের মতন এক সুন্দরী ওর হাতে ধরা দিল, সেই সুন্দরীর হাত ধরে লক্ষ্মী একসময়ে ধরা দিল। এই টাকা পয়সা প্রতিপত্তি ওকে কোথায় নিয়ে যাবে সেই চিন্তা করে। অনুপমার কথা মনে পরতেই, প্রেয়সীকে ফোন করে। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পরে মাকে ফোন করে দেবায়ন। মন খুশিতে ভরে ওঠে, অনুপমার গলা শুনে।
পরমিত কিছু পরে দেবায়নকে ফোন করে জানিয়ে দেয় রুমে পৌঁছে গেছে। পরমিত দেবায়নকে বলে, “মিস্টার বসাক, তোমার যখন জন্ম হয়নি তখন থেকে আমি ব্যাবসা করি। টাকা কি ভাবে অর্জন করতে হয় তোমার থেকে ভালো ভাবে জানি, কিন্তু তুমি একজন মানুষকে কি ভাবে তাঁর সন্মান তাঁর সমাদর করতে হয় সেটা জানো। আমি বুঝি, একশো কোটি টাকার মধ্যে পাঁচ কোটি টাকার কত মুল্য। আমার দূরদৃষ্টি বলে, তুমি টাকার সাথে সাথে মানুষের মন জয় করবে। হ্যাঁ, তুমি হয়ত আমার মতন উপায়ে টাকা অর্জন করবে না কিন্তু ভবিষ্যতে তুমি যেটা অর্জন করবে সেটা অমুল্য। সেই জিনিস কোটি টাকা দিয়ে কেনা যায়না। আজকে আমি যদি চোখ বন্ধ করি, তাহলে কেউ আমার পরিবারের পাশে নিঃস্বার্থে এসে কেউ দাঁড়াবে না। যারা দাঁড়াবে তারা আমার সম্পত্তির লোভে এসে দাঁড়াবে। কিন্তু তোমার অবর্তমানে তোমার পরিবারের পাশে এসে অনেকে দাঁড়াবে সেটা তুমি কোটি টাকার বিনিময়ে কিনতে পারবে না। ভগবান তোমার সাথে থাকুক এটাই আমার কাম্য।”
দেবায়ন হেসে ধন্যবাদ জানায় মিস্টার ধিলনকে। অনন্যাকে ফোনে বলে দেয়, পরমিত রুমে পৌঁছে গেছে। কথাটা বলার সময়ে দেবায়নের গলা কেঁপে ওঠে। মনেপ্রানে মেনে নিতে কষ্ট হয় এক মেয়েকে পাঠাতে হবে পরমিতের কাছে। অনন্যার সাথে কথা বলার পরে, রাগে বিতৃষ্ণায় ফোন ছুঁড়ে ফেলে বালিতে। ধুপ কর ঠাণ্ডা বালিতে বসে হাতের বোতল সমুদ্রের দিকে ছুঁড়ে দেয়। অন্ধকার কালো সমুদ্রের জলে হারিয়ে যায় বিয়ারের বোতল। অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে বালির ওপরে। অনন্যাকে পাঠানো উচিত হয়নি পরমিতের কাছে। ডিনারের সময় সাক্ষর করিয়ে নিলে ভালো হত।
চুপচাপ রুমের দিকে পা বাড়ায় দেবায়ন। ওর জামাকাপড় সব কটেজে রাখা। পারমিতা সেই রাতে কাছে আসতে বারন করে দিয়েছে। এত রাতে কটেজে যাওয়া ঠিক হবে না। এই রুমটা অনন্যার জন্যে বুক করা হয়েছিল। আলমারিতে অনন্যার জামা কাপড় রাখা। আলমারি খুলে অনন্যার গন্ধে মাখা পোশাক গুলোর দিকে চোখ যায়। অন্য সময় হলে, দেবায়ন ওর কাপড় নিয়ে নাকে মুখে চেপে হস্ত মৈথুন করত হয়ত। কিন্তু অনন্যার জামা কাপড় দেখে ওর মন আরও ভারী হয়ে যায়। রুমে ঢুকে জামা কাপড় খুলে, কোমরে তোয়ালে জড়িয়ে চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকে। মাথা একদম খালি হয়ে যায়, যেন অসীম শূন্য আকাশে বিচরন করছে। চোখের সামনে রুমের ছাদ, কিন্তু দেবায়নের চোখ যেন ছাদ ফুঁড়ে, মাথার অপরের কালো আকাশে বিচরন করছে। চোখের সামনে অসংখ্য তারা, নক্ষত্র জ্বল জ্বল করছে। অনেকক্ষণ না অল্পক্ষণ, সময়ের খেয়াল থাকে না, একসময়ে ঘুমিয়ে পরে দেবায়ন।
কত রাত হবে ঠিক জানে না, এমন সময়ে দরজায় বেশ জোরে জোরে ধাক্কার আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায়। এত রাতে কে হতে পারে? পারমিতা আসবে না। অনন্যাকে পেয়ে পরমিত মজে গেছে এতক্ষণে। গোয়াতে আর কাউকে চেনেনা দেবায়ন। চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানা ছেড়ে উঠে ঘড়ির দিকে তাকায়, বেশি সময় ঘুমাতে পারেনি। বাইরে সমুদ্র থেকে ভেসে আসা হাওয়ার আওয়াজ। দরজা খুলে সামনে অনন্যাকে দেখে ঘুম উবে যায় নিমেষের মধ্যে।
সামনে দাঁড়িয়ে অনন্যা। সুন্দরীর সৌন্দর্য বিদ্ধস্থ, মাথার চুল বেনুনি করা ছিল, সেটা একটা হাত খোঁপায় ঘাড়ের কাছে দুলছে। চোখের কোনের কাজল একটু লেপে গেছে, ঠোঁটের লিপস্টিক নেই, কপালে টিপ নেই। গোলাপি শাড়িটা কোনোরকমে শরীরের সাথে জড়ানো। দেবায়ন ওই চেহারা দেখে মাথা নিচু করে নেয়। অনন্যার চোখের দিকে তাকানোর ক্ষমতা নেই ওর। ইচ্ছে করেই, নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য অনন্যাকে পাঠিয়েছিল পরমিতের কাছে। সেই অনন্যা, ওর সামনে দাঁড়িয়ে ওর দিকে বাদামি রঙের ফাইল বাড়িয়ে দেয়। দেবায়ন কে চুপ দেখে ধির পায়ে রুমে ঢুকে পরে। হাতের ফাইলটা ছুঁড়ে ফেলে বিছানার ওপরে। হাঁটার সময়ে পা একটু টলে যায়। দেবায়ন দৌড়ে অনন্যাকে ধরতে যায়। অনন্যা ওর দিকে হাত দেখিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে ইঙ্গিত করে।
অনন্যা ওর দিকে ছলছল চাহনি নিয়ে বলে, “কাজ হয়ে গেছে দেবায়ন।”
দেবায়ন চুপ, মাথা চিন্তা শূন্য হয়ে যায়। সারা শরীরে মৌমাছি যেন হুল ফুটিয়ে দিয়েছে।
অনন্যা টলতে টলতে বাথরুমের দিকে এগিয়ে যায়। বুকের থেকে আঁচল খসে মেঝেতে লুটিয়ে পরে। একটানে গা থেকে শাড়িটা খুলে ফেলে। শাড়ির প্যাঁচে খুলে যেতেই অনন্যার চওড়া পিঠ দেখা দেয়। পেছনে দুটো পাতলা দড়ি দিয়ে বাঁধা ব্লাউস। চওড়া পিঠে আঙ্গুলের দাগ দেখে দেবায়নের কান গরম হয়ে যায়। আগে থেকে জানত যে পরমিত, সঙ্গম খেলার সময়ে উন্মাদ হয়ে ওঠে। অনন্যা, গা থেকে ব্লাউস খুলে একদিকে ছুঁড়ে মারে। এমন ভাব দেখায় যেন রুমের মধ্যে একা। অতি ক্ষুদ্র ব্রাটা কোনোরকমে বুকের ওপরে ঝুলে আছে। অনন্যা ওর দিকে একটু বেঁকে তাকায়। দেবায়নের চোখ যায় অনন্যার স্তনের ওপরে। স্তনের বোঁটার চারপাশে লাল ছোপ ছোপ দাগ। স্তনের ওপর দিকে দাঁতের দাগ। পরমিত ক্ষুধার্ত হায়নার মতন অনন্যাকে পিষে কচলে সম্ভোগ করেছে। ব্রা খুলে খালি সায়া পরে দেবায়নের দিকে ঘুরে তাকায়। দেবায়ন কি করবে ভেবে পায় না। অনন্যা বাথরুমের দরজা ধরে টলে যায়। দেবায়ন হাত বাড়িয়ে অনন্যাকে ধরতে যায়।
অনন্যা ওকে বলে, “কাপবোর্ড থেকে আমার একটা স্লিপ বের করে দিতে পারো?”
দেবায়ন সঙ্গে সঙ্গে আলমারি খুলে একটা স্লিপ বের করে অনন্যার হাতে দেয়। ততক্ষণে অনন্যা, সায়ার দড়ি খুলে দিয়েছে। নিচে প্যান্টি নেই। পায়ের ফাঁকে, দুই নধর জঙ্গায় দৃষ্টি যায় দেবায়নের। দুই মসৃণ জঙ্ঘায় আঁচরের দাগ। যোনির পাপড়ি যোনির চেরা থেকে বেড়িয়ে এসেছে।
দেবায়ন অনন্যাকে বলে, “চল তোমাকে স্নান করিয়ে দিচ্ছি।”
অনন্যা ওর হাত থেকে স্লিপ নিয়ে বলে, “না থাক। তুমি বরং ফাইল চেক করে নাও। সব ঠিক আছে কিনা একবার দেখে নাও। কাল সকালে পরমিত চলে যাবে দিল্লী আর তোমরা চলে যাবে কোলকাতা। যাও নিজের কাজ ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখে নাও।”
দেবায়নের মানসিকতা সেই ফাইল দেখার মতন নেই। হাত বাড়িয়ে অনন্যার হাত ছোঁয়। অনন্যা ওর হাত টেনে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। দেবায়ন চুপচাপ মাথা ধরে জানালার পাশে একটা কাউচে এসে বসে পরে। সত্যি দেবায়ন এত নিচে নেমে গেছে? না, ও চেয়েছিল পঁয়তাল্লিশ কোটি টাকা দিতে। ও ভেবেছিল যে পরমিত হয়ত অনন্যার গায়ে হাত দেবে না। দেবায়নের একবার মনে হয় যে পরমিতের রুমে ঢুকে এক ঘুসিতে নাক ফাটিয়ে দেয়। কিন্তু আসল দোষী কে? দেবায়ন নিজে।
রুমের মধ্যে মৃদু হলদে আলো। সামনের বড় কাঁচের জানালার পাশে বসে এক দৃষ্টে কালো অন্ধকারের দিকে চেয়ে থাকে। খুট করে একটা আওয়াজে পেছন ফিরে তাকায়। অনন্যা বাথরুম থেকে বেড়িয়ে চুপচাপ বিছানায় উঠে একটা কম্বল টেনে শুয়ে পরে। দেবায়ন কি করবে ভেবে পায় না। ওর পাশে শোয়া উচিত? কি ভাববে অনন্যা? বড় ইচ্ছে করে একবার ওকে জড়িয়ে ধরে একটু প্রবোধ দিতে। কিন্তু কি প্রবোধ দেবে দেবায়ন? এটা যে কর্ম, এটাই ভবিতব্য। অনন্যা এখানে এসেছিল পরমিতের সাথে শুতে। অনন্যাকে এখানে ডাকার পরিকল্পনা দেবায়নের। যদি পারমিতা আর দেবায়ন আসত তাহলে ওই ডাইনিং টেবিলে বসে সই করিয়ে নিত। দেবায়ন একটা সিগারেট জ্বালায়। বুক ভরে ধোয়া টানতেই মাথা ভোঁভোঁ করে ওঠে।
“তুমি কি সারা রাত ওইখানে বসে সিগারেট খাবে?”
অনন্যা ওকে জিজ্ঞেস করে। দেবায়ন ঘাড় ঘুরিয়ে অনন্যার দিকে তাকায়। বিছানায় একপাসে শুয়ে পুরো কম্বলে মুড়ি দিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করে কথা গুলো।
দেবায়ন আমতা আমতা করে বলে, “না মানে আমি কাউচে শুয়ে পড়ব। তুমি আরাম করে বিছানায় ঘুমাও।”
অনন্যা তির্যক হেসে বলে, “কেন, একটা কলগার্লের সাথে এক বিছানায় শুতে ঘৃণা বোধ হচ্ছে, মিস্টার দেবায়ন বসাক? আমি একটু আগে পরমিতের সাথে সেক্স করে এসেছি আর তোমার সাথে করিনি তাই তোমার ঘৃণা করছে? র্যাডিসন ফোরটে তোমার সেই রকম কিছু মনে হয় নি। আমার সাথে তখন দিব্যি রাত কাটিয়েছিলে। পারলে সারা রাত ধরে সেক্স করতে, শুধু সময় ছিল না বলে।”
দেবায়ন কান গরম হয়ে যায় অনন্যার কথা শুনে, চাপা স্বরে বলে, “না, সে কথা নয় অনন্যা। তুমি আমাকে ভুল বুঝছ।”
অনন্যা, “কি ভুল এখানে দেবায়ন? কে ভুল এখানে? তুমি আমার সাথে সেক্স করতে চাও, চলে এস। পারমিতা ম্যাম আমাকে দুই লাখ টাকা দিয়েছে এবারে। একটু আগে পরমিত যা করেছে তাতে দুই লাখ পূরণ হয়নি। এস বিছানায়, আমার শরীর দিয়ে বাকি টাকাটা উসুল করবে না?”
দেবায়ন চোয়াল চেপে বলে, “তুমি বিশ্বাস কর আমি ভাবিনি যে পরমিত তোমার সাথে সেক্স করবে।”
অনন্যা অট্টহাসিতে ফেটে পরে, “রাত এগারোটার সময়ে একটা বেশ্যা, বিজনেস ডিলের ফাইল নিয়ে একজনের রুমে যাবে। এর মানে আর কি হতে পারে মিস্টার বসাক? আমার সাথে কি পরীর গল্প করার জন্যে আমাকে দুই লাখ টাকা দিয়ে এখানে ডেকেছ?”
দেবায়ন অনন্যার পাশে এসে বসে বলে, “অনন্যা প্লিস ভুল বুঝ না আমাকে। আমি ওই টেবিলে ডিল সাইন করতে চেয়েছিলাম। পাঁচ কোটি টাকার চেয়ে তুমি আমার কাছে অনেক দামী।”
তির্যক হাসে অনন্যা, “তাহলে দুই লাখ টাকা দিয়ে এখানে কেন ডেকেছ আমাকে? গল্প করার জন্য? কেউ আমার সাথে গল্প করতে আসে না মিস্টার বসাক। যে টাকা দেয় সে আমার শরীর ব্যাবহার করতে আসে।”
দেবায়ন অনন্যার হাতের ওপরে হাত রেখে বলে, “প্লিস তুমি একটু ঘুমাবে? আমি জানি তুমি আমার ওপরে প্রচন্ড রেগে।”
একটা হাত গালের ওপরে নিয়ে আলতো করে নরম গালে হাত বুলিয়ে দেয়। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
দেবায়নের উষ্ণ হাতের পরশ পেয়ে অনন্যার চোখ ছলছল কর ওঠে, “প্রচুর মানুষ দেখলাম দেবায়ন। কত জনের সাথে সেক্স করেছি গুনতে ভুলে গেছি। এই রকম বিজনেস ডিল আমাদের দিয়েই হয়। আগেও প্রচুর হয়েছে। সবাই নিজের টাকা উসুল করতে ব্যাস্ত। পরমিত সেটাই করেছে। আমি জেনেই এসেছিলাম যে পরমিতের সাথে আমাকে শুতে হবে। পারমিতা ম্যাম আমাকে আগেই বলে রেখেছিল ক্লায়েন্টের ব্যাপারে। শুধু এইটুকু বলেনি যে, পরমিত আসলে ম্যামের সাথে সেক্স করতে চায়। পরমিত বড় ক্ষুণ্ণ হয়ে যায় আমাকে দেখে। মুখে কিছু না বললেও আমার সাথে পাশবিক ব্যাবহার করার সময়ে আমি ওর মনের অভিপ্রায় বুঝতে পেরেছিলাম। তুমি জানতে মিস্টার ধিলন ম্যামের জন্য অপেক্ষা করে বসেছিলেন। তুমি চাইছিলে না যে ম্যাম যাক তাই আমাক এখানে এনেছ, তাই না?”
দেবায়ন অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে। অনন্যা ওর বুকের ওপরে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে ওঠে, “আমার কান্না সেখানে নয় দেবায়ন। রুমে তোমাকে দেখে আমার চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে এল। আমি জানিনা আমার কি হচ্ছে... দেবায়ন।”
দেবায়ন ওর মাথা বুকের ওপরে চেপে, দুই হাতে অনন্যাকে জড়িয়ে বলে, “চুপচাপ ঘুমাও। কাল সকালে আমি আর তুমি এই সি বিচে বেশ আনন্দ করব।”
অনন্যা চোখের জল মুছে, দেবায়নের বুকে ঠোঁট চেপে বলে, “আজ রাতে একটু জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকো। কাল সকালে আমি চলে যাবো। এখানে দিনের বেলা আমি তোমার সাথে বের হতে পারব না। কত মানুষের কত রকমের মতলব থাকে। কেউ একটা ছবি তুলে যদি কোন ম্যাগাজিনে দিয়ে দেয় তাহলে আবার বদনামের ভয় আছে। কত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, আপনার সাথের এই ছেলেটা কে? আপনার নতুন প্রেমিক? ইত্যাদি। শুধু আজকের রাতটা আমাকে জড়িয়ে ধরে থাক।”
দেবায়ন অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে। অনন্যা দেবায়নের প্রসস্থ বুকের ওপরে মাথা রেখে, একটা পা দিয়ে দেবায়নকে জড়িয়ে ধরে। বুকের ওপরে নখের আঁচর কেটে দেয়।
দেবায়ন ওর ঘন কালো রেশমি চুলের মধ্যে বিলি কেটে আদর করে জিজ্ঞেস করে, “কি ভাবছ এত?”
অনন্যার সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়, “উম্মম্মম এই ঠাণ্ডায় এইরকম ভাবে জড়িয়ে ধরে থাকলে আর কি ঘুম আসে? মনে হয় সারা রাত এই ভাবে বুকে মাথা রেখে জেগে কাটিয়ে দেই।”
দেবায়ন বুঝতে পারে যে অনন্যার বুকে এই অন্য টান জেগেছে। দেবায়ন সেই চুম্বকের টানে সারা দেয় না। নিস্তেজ হয়ে আলিঙ্গন শিথিল করে নেয় অনন্যার শরীর থেকে। অনন্যা বুঝতে পেরে যায় দেবায়নের মনের দ্বন্দ। হেসে বলে, “না গো, অনুর জায়গা আমি চাইছি না।”
দেবায়ন হেসে ফেলে, “তাহলে কি চাও।”
অনন্যা, “আমাকে কিছু টাকা দেবে, আমি একটা বিজনেস করতে চাই।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “তোমার অনেক টাকা, তুমি আবার আমার কাছ থেকে টাকা চাইছ?”
অনন্যা ম্লান হেসে বলে, “আমার কাছে টাকা নেই। যে রকম আয় হয়, সেই রকমের খরচ হয়। আমাদের এই চকমকে সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে অনেক টাকা বেড়িয়ে যায়। সবসময়ে কাজ থাকে না, সেই দিন গুলতেও আমাকে চলতে হয়। আমার কাছে তেমন কিছু ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স নেই, দেবায়ন।”
দেবায়ন, “টাকা এখন আমার কাছে নেই।”
অনন্যা মৃদু হেসে বলে, “তুমি মিথ্যে কথা বলছ। তুমি এত বড় একটা বিজনেস ম্যান, তোমাকে সব বিজনেস ডিলে দেখা যায় আর তুমি বলছ যে তোমার কাছে টাকা নেই? তুমি আমাকে টাকা দেবে না সেটা পরিষ্কার বলে দিলেই পারো।”
দেবায়ন অনন্যাকে বুঝাবে কি করে, এই সব মিস্টার সেনের জন্য হচ্ছে। দেবায়ন বলে, “তোমাকে এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।”
অনন্যা জিজ্ঞেস করে, “কেন এক বছর কেন?”
দেবায়ন নিজের আসল পরিচয় লুকিয়ে বলে, “একটা বড় প্রোজেক্টে অনেক টাকা চলে গেছে। এক বছর অপেক্ষা কর, তারপরে তোমাকে টাকা দেব। কিন্তু তুমি কি বিজনেস করতে চাও?”
অনন্যা, “জানি না। তবে ভাবছি জামশেদপুর ফিরে যাবো। ওখানে গিয়ে কিছু একটা খুলব।”
দেবায়ন, “জামশেদপুর ফিরে কেন যাবে? এই কোলকাতায় কোন বিজনেস করতে পারো। রেস্টুরেন্ট খুলতে পারো, বুটিক করতে পারো, চাইলে মডেলিং এজেন্সি করতে পারো।”
অনন্যা মডেলিং এজেন্সির নাম শুনে হেসে বলল, “না গো এই আলোর ঝকমকি থেকে দুরে যেতে চাই। মডেলিং এজেন্সি খুলব না। ওই রকম এজেন্সি শেষ পর্যন্ত হাই প্রোফাইল পিম্প হয়ে যায়। আমি ওই সব থেকে বেড়িয়ে আসতে চাই। তোমার এই রেস্তুরেন্টের আইডিয়া বেশ ভালো।”
দেবায়ন, “ঠিক আছে, আমি তোমাকে টাকা দেব।”
অনন্যা, “আমি তোমাকে সব শোধ করে দেব ধিরে ধিরে। টাকা দিয়ে যদি শোধ না করতে পারি তাহলে তুমি যখন যেখানে আমাকে আসতে বলবে সেখানে আমি চলে আসব।”
দেবায়ন হেসে বলল, “তোমাকে শোধ করতে হবে না। আমি তোমাকে প্রেসেন্ট করব তোমার রেস্টুরেন্ট।”
কথাটা শুনে অনন্যার বুক খালি হয়ে যায়, বিশ্বাস করতে পারে না নিজের কান কে, “তুমি সত্যি বলছ?”
দেবায়ন ওর মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলে, “হ্যাঁ সত্যি বলছি।”
দেবায়নের বুকে মাথা রেখে একসময়ে অনন্যা চোখ বন্ধ করে নেয়। সারা রাত দেবায়নের চোখে ঘুম আসে না। অনন্যার মাথা বুকের ওপরে রেখে সারা রাত জেগে কাটিয়ে দেয়। সকালের দিকে চোখ একটু লেগে যায়।
ঘুম ভাংলে দেখে যে রুমে অনন্যা নেই। সকাল গড়িয়ে অনেক সময় কেটে গেছে। ঘড়িতে দেখে দশটা বাজে। ঠিক সেই সময়ে অনুপমার ফোন আসে। অনুপমা জিজ্ঞেস করে গত রাতের কথা। দেবায়নের মাথায় তখন অনন্যার চিন্তা ছিল। কোনোরকমে অনুপমার সাথে ফোনে কথা বলে ফোন রেখে দেয়। ফোন রেখে সঙ্গে সঙ্গে বাথরুমের দিকে চোখ যায়। বাথরুম খালি, আলমারি দেখে, আলমারিতে অনন্যার ব্যাগ না দেখতে পেয়ে দেবায়ন বুঝে যায় যে অনন্যা বেড়িয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে অনন্যাকে ফোন করে কিন্তু অনন্যার ফোন বন্ধ। শেষ বারের মতন কথা বলে যেতে পারল না দেবায়ন। সাইড টেবিলে রাখা একটা সাদা কাগজে চোখ পড়ে দেবায়নের। একটা চিঠি লিখে গেছে অনন্যা, ছোটো দুই তিনটে লাইন।
“ডিয়ার দেবায়ন, তোমাকে ঘুমাতে দেখে আর জাগাতে ইচ্ছে করল না, তাই না বলেই বেড়িয়ে গেলাম। তোমার কাছে থাকতে ইচ্ছে করছিল খুব। কিন্তু কি করা যাবে, ইচ্ছে করলেও থাকা দায়। কে কখন দেখে ফেলে, নামের চেয়ে বদনাম আগুনের মতন দাউদাউ করে ছরায় বেশি। ব্রেকফাস্টের কথা ভুলে যেও না যেন, আমি অপেক্ষা করে থাকব। পাঁচ বছর পরে গতরাতে বেশ ভালো ঘুম হয়েছে। ইতি, সুলেখা।”
একটু পরে পারমিতাকে দেখে দেবায়ন অনন্যার কথা ভুলে যায়। দুইদিন দুইরাত পারমিতা আর দেবায়ন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। পারমিতা যেন শেষবারের মতন দেবায়নকে পাচ্ছে এমন ভাবে শেষ রাতে দেবায়নের সাথে মিলিত হয়। আসার দিন পারমিতার চেহারায় এক অন্য ধরনের আলোক ছটা দেখতে পায় দেবায়ন।
প্লেনে বসে পারমিতা নিচু গলায় ওকে বলে, “কোলকাতা গিয়ে আমাদের মনে হয় না আর দেখা হবে।”
দেবায়ন জানে, একজনের সাথে ক্রমশ শরীরের খেলা চলতে চলতে মনের টান আসা স্বাভাবিক। দেবায়ন চায় না, অনুপমা ছাড়া আর কাউকে ভালবাসতে। প্রচন্ড কাম লালসার চুম্বকীয় টানে পারমিতার সাথে মিলিত হয়েছিল। দেবায়ন চুপ করে থাকে, অনেকদিন আগে ভেবেছিল পারমিতাকে সারা জীবন ওর মেয়ের সাথে সাথে উপভোগ করে যাবে। কিন্তু একরাতে পারমিতার ক্রন্দন ভরা ডাক শুনে দেবায়ন পিছিয়ে গেছিল। আবার এই গোয়াতে এসে পরপর বেশ কয়েক বার মিলিত হয়ে পারমিতার বুকে সেই পুরানো টান ফিরে আসে।
দেবায়নকে চুপ থাকতে দেখে পারমিতা ম্লান হেসে বলে, “হ্যান্ডসাম অত চিন্তা করো না। শুধু মজা করছিলাম তোমার সাথে। আমার কিছু হয়নি। আমি জানি, সোমেশকে আগের মতন পাবো না। তবে যত টুকু পাবো সেই নিয়ে থাকব। তোমাকে কথা দিচ্ছি, সোমেশ ছাড়া আর কেউ আমাকে আর ছোঁবে না।”
দেবায়ন চুপচাপ পারমিতার কথা শুনে যায়। পারমিতা বলে, “অনু কখনই আমাকে ভালো চোখে দেখত না। ওর বোঝার শক্তি অনেক আগে থেকেই জন্মে গেছিল। তখন ছেলের জন্য বাঁচতাম। তোমার একরাতের জাদুর কাঠির ছোঁয়ায়, অনুকে ফিরে পেলাম। বর্তমানে আমার বাড়িতে পায়েলের আগমন। এবারে মনে হয় এই সব ছেড়ে ওদের জন্য বাঁচি। অনুকে দেখার জন্য তুমি আছো, দেবশ্রীদি আছে। পায়েল আর অঙ্কনকে আমাকেই দেখতে হবে।”
পারমিতার এক নতুন রুপ দেখতে পায় দেবায়ন। পারমিতার নরম হাত নিজের হাতের মুঠিতে নিয়ে বলে, “তুমি একা নও মিমি। আমি আর অনু তোমার সাথে থাকব সবসময়ে।”
******************* দ্বাবিংশ পর্ব সমাপ্ত *******************
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereপিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment