আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
নিষিদ্ধ ভালবাসা
Written By pinuram
Written By pinuram
অদৃশ্য পত্র (#01)
দিন কেটে যায়। মা জানালেন যে পরী বাসন্তি পুজোর পরে বাড়িতে আসবে। খবর শুনে আমি আহ্লাদে আটখানা, তবে বাসন্তি পুজ মানে সেই এপ্রিল মাসে। সাথে সাথে মনের মধ্যে একটু দুঃখ হয়, এপ্রিল মাস মানে অনেক দিন। এতদিনের বিচ্ছেদে আমাদের প্রেমে চর না পরে যায়, মনের এক গহিন কণে লাগে ভয়। দু’তলার নিজের রুম ছেড়ে আমি তিন তলার রুমে শিফট করে যাই। পরী আসবে, মা ব্যাস্ত ওর ঘর সাজানো নিয়ে। নতুন পর্দা, নতুন বিছানার চাদর, সব কিছু নতুন কেনা হয়। আমার যেহেতু কোন বোন নেই তাই পরীকে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে তার সব স্বপ্ন পূরণ করে নিতে চায় মা। বাবা মা সব সময়ে আমার ওপরে যেন একটু ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হয়তো ভগবানের কাছে মেয়ে চেয়েছিলেন, সেখানে ভগবান ছেলে দিয়েছে, সেটাই ক্ষোভ। প্রতি রাতে খাবার টেবিলে পরীর কথা, মাঝে মাঝে আমার কেমন হিংসে হয় পরীর ওপরে। সাথে সাথে মনটা বেশ খুশিতে ভরে ওঠে, এবারে কাছে পাবো, একেবারে আমার চোখের সামনে, হৃদয়ের পাশে। আমার সাথে থাকবে সব সময়ে।
গ্রামের বাড়িতে যে হেতু ফোন ছিলনা তাই পরীর সাথে যোগাযোগ করা হত না। পরীর কথা মনে পরত প্রতি রাতে আর আমি ওর দেওয়া রুমালটা নাকে ধরে ওর গন্ধ শুঁকে ঘুমিয়ে পরতাম। সেই ছোট্ট সিল্কের রুমালের মাঝে ওর ঠোঁটের পরশ খুঁজে পেতাম, যেন কোমল অধর ওষ্ঠ আমার গালে স্পর্শ করছে।
একদিন বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে, মা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন "কি রে বিয়েবাড়িতে কিছু হারিয়ে এসেছিস নাকি।"
আমি বললাম "না আমার ঠিক মনে নেই।"
প্যাকেট থেকে একটা জামা বের করে আমারকে ধরিয়ে দিয়ে দেখতে বললেন যে এটা আমার কিনা। আমি দেখেই চিনতে পারলাম যে ওটা আমার শার্ট, বেশ কিছু দিন ধরে খুঁজছিলাম আমি। বললেন যে পরী মায়ের স্কুলে এসে জামাটা দিয়ে গেছে। পরী দিয়ে গেছে শোনা মাত্র আমার মনের ভেতরটা খুশীতে নেচে উঠলো।
ও আমার শার্ট ছুঁয়েছে। হাতে ধরে, ওর হাতের কোমল স্পর্শ অনুভব করার চেষ্টা করলাম। মা আমাকে একটা খাম দিয়ে বললেন যে পকেটে ছিল, কিন্তু খালি।
রাতের আমি শার্ট পরে শুয়ে পরি, পরীর ছোঁয়া সারা শরীরে অনুভব করার চেষ্টা করি। খালি খামটা হাতে নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখলাম, কিছুই লেখা নেই পুরো খালি। ঘিয়ে রঙের পুরনো ডাকঘরের খাম। পরের দিন আমি খামের কথা নিয়ে ভাবতে থাকি, কি হতে পারে এই খামে, খালি কেন? ভেবে ভেবে উত্তর পাইনা। রাতে খাবার পরে, নিজের রুমে ঢুকে খামটা হাতে নিয়ে আবার উল্টে পাল্টে দেখি। খামের চার কোনা খুলে, আবার আঠা দিয়ে লাগানো হয়েছে। তার মানে খামটা খোলা হয়েছিল। আমি হাতে একটু জল নিয়ে এসে, চার কোনায় লাগিয়ে খাম খানি মেলে ধরি। খোলার পরেও দেখি ভেতরে কিছুই নেই। নাকের কাছে নিয়ে এসে প্রেয়সীর মন মাতানো জুঁই ফুলের সুবাসে মন ভরে যায়, তার সাথে পেলাম অন্য এক গন্ধ, ভাবলাম "জুঁই ফুলের গন্ধ তো ঠিক আছে, কিন্তু লেবুর গন্ধ কেন আসছে?"
কিছুক্ষণ চিন্তা ভাবনা করে দেখার পরে হটাৎ যেন মাথার সব কটা শিরা উপশিরা জেগে ওঠে। আমার হাতে পরীর লেখা একটা চিঠি, অদৃশ্য চিঠি লেবুর রসে লেখা যাতে কেউ পড়তে না পারে। আমি খাম খানি ঠোঁটের ওপরে চেপে ধরি, পরী টিচার না হয়ে সিক্রেট এজেন্ট হলে ভালো হত। মোমবাতির আলোর সামনে মেলে ধরি চিঠিটা।
"মাই লাভ, ছোট্ট রাজকুমার,
তোমার শাল গায়ে দিলেই মনে হয় যেন তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছো। শীতের রাত গুলো অনেক বড় অনেক ঠাণ্ডা। তোমার ফেলে যাওয়া স্মৃতি গুলো ঘুরেফিরে আমাকে ঘুমোতে পর্যন্ত দেয়না। আমার কপালে তোমার ঠোঁটের পরশ এখন লেগে আছে, যেখানে তুমি প্রথম চুম্বনখানি এঁকেছিলে। আমাকে হারিয়ে আমার হৃদয় খানি চুরি করে নিয়ে গেলে। তুমি আমাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে চল যেখানে শুধু তুমি আর আমি, আর কেউ নয়।
ভবিষ্যতে কি হবে জানতে চাইনা আমি। আমি বর্তমানে তোমার পাশে তোমার সাথে প্রত্যেক দিন বাঁচতে চাই।
জীবনের সব পুরানো কথা সব ভুলে যেতে চাই। সারা জীবন ধরে আমার কনিষ্ঠ কন্যে হবার যে দুঃখ সেটা আমি ভুলে যেতে চাই। আমি আমার অতীত ভুলে, বর্তমানে বেঁচে থাকতে চাই, আমি দেখতে চাই না ভবিষ্যতে কি হবে। শুধু মাত্র এই টুকু চাহিদা তোমার কাছে।
আমি তোমার অপেক্ষায় আছি, সোনা, তোমার সাথে দেখা করার উগ্র প্রতীক্ষায় দিন গুনছি। কাল বাদে পরশু, দুপুর এগারোটা, বারাসাত রেল স্টেসানে।
ভালো থেক। ফর এভার ইওরস, ফ্রম এওর হার্ট।"
কাল বাদে পরশু, মানে গত কাল চিঠি দিয়েছে, মানে রাত পেরলেই পরীর সাথে দেখা হবে। এটা জেনে হৃদয়টা পেখম তোলা ময়ুরের মতন নেচে ওঠে। প্রবল উত্তেজনায় সারা রাত ঘুমোতে পারিনা, কত দিন পরে পরীর সাথে দেখা হবে।
সকালে খাবার টেবিলে আমাদের বিশেষ কথা বার্তা হয় না। শীত কালের সকাল, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ। চারদিকে একটু কুয়াসাচ্ছন্ন ভাব। স্কুলে বের হবার আগে মা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে পরীকে কিছু জানানর আছে কি না। আমি তো কথা শুনে থ, মানে মা আজকে পরীর সাথে দেখা করবে আর পরী আমার সাথে মানে মায়ের সাথে পরীর দেখা হবে না। মাই মাকে মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেই যে পরীকে কিছু জানানর নেই। মনে মনে তো বললাম, যে তোমাকে জানাতে হবে না আজ তো আমি ওকে জানিয়ে দেব।
নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা আগেই আমি স্টেসানে পৌঁছে গেছিলাম। পরীর ব্যাকুল প্রতীক্ষায় যেন সময় কাটছিল না আমার। এক সেকেন্ড যেন এক এক বছর মনে হচ্ছিল। কি করবো, সময় তো কিছু করে হোক কাটাতে হবে তাই প্লাটফর্মের এদিক থেকে ওদিক পর্যন্ত হেঁটে বেড়াই আমি। প্রায় পনেরো দিন পরে দেখা করবো আমরা। পনেরো দিন, না, পনেরো বছর পরে দেখা হচ্ছে যেন আমাদের। বার বার ঘড়ির দিকে দেখি, কখন আসবে মেয়েটা, আদৌ আসবে কিনা।
কিছুক্ষণ পরে দেখি প্লাটফর্মের একদিক থেকে দৌড়ে আসছে পরী। আমি তাকিয়ে দেখলাম, হাল্কা নীল রঙের সাড়ী পরা, তার ওপরে একটা লম্বা জ্যাকেট চাপিয়ে। দৌড়ে আসার ফলে হাপাচ্ছে, ডান গালে চুলের এক গুচ্ছ নাচছে আর তার জন্য চেহারার সৌন্দর্য টা যেন শত গুন বেড়ে গেছে। কি মেয়ে, সব সময়ে শুধু সাড়ী পড়তেই ভালবাসে। আমি ওকে বললাম এত হাঁপাচ্ছ কেন, একটু থেমে বড় করে শ্বাস নাও।
"আমি সরি, অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছনা তুমি?"
আমি একটু রাগ দেখিয়ে বলি "ইউ সুড বি সরি।"
আমার বাঁ হাত জড়িয়ে ধরে, স্টেসান থেকে বেরিয়ে পড়ি আমরা।
অদৃশ্য পত্র (#02)
আমাকে জিজ্ঞেস করে যে ওর ছোটমা মানে আমার মা কেমন আছেন, আমি জানিয়ে দিলাম যে বাড়ির সবাই ভাল আছে। আমি আর জানালাম যে আমার মা আজ বিকেলে ওদের বাড়ি যাবে সবার সাথে দেখা করতে। সেই শুনে পরীর একটু খানি মন খারাপ হয়ে যায়, আমার মাকে খালি ফিরতে হবে। দেখা হবে না ওর সাথে।পরী দিদাকে জানিয়ে এসেছে যে বারাসাতে বান্ধবীর সাথে দেখা করতে যাচ্ছে। আমি আর জানালাম যে, আমার মা ওর রুম তৈরি করার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে, মা খুব খুশী যে পরী মায়ের কাছে থাকবে।
পরী আমার দিকে বড় বড় কালো চোখে তাকিয়ে থাকে, বুকের বাঁ পাশে কেমন ব্যাথা অনুভব করি ওর চাহনি দেখে, মনে হল যেন হৃদয় টাকে চোখ দিয়ে চুরি করে নিয়ে গেল। মিষ্টি হেসে বলে "খুব দেখা করতে ইচ্ছে হচ্ছিল তোমার সাথে, আর কিছু দিন হলে তো আমি মারা পরতাম। আমার চিঠি পেয়েছ তাহলে, কত বুদ্ধিমান অভি আমার।"
আমি হেসে বললাম "বুদ্ধিমান কে, আমি না তুমি? আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে তুমি ওরকম করে চিঠি লিখতে পারো।"
একটু খানি কাঁধ ঝাঁকিয়ে হেসে বলে "তাহলে বল তোমার প্রেমিকা অনেক বুদ্ধিমতী।"
হসি দেখে আমার মনে হচ্ছিল যে আমি ওখানেই দু’হাতে জড়িয়ে ধরে মিষ্টি ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে নেই। কিন্তু সে উপায় নেই, চারদিকে লোকজনের ভিড়। আমি জিজ্ঞেস করলাম "কোথাও যাবে?"
উচ্ছল তরঙ্গিণীর ন্যায় হেসে বলে "হ্যাঁ, নিশ্চয়। চল একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসি। আমার কাছে একটা দারুন প্ল্যান আছে।"
"আবার কি মাথার মধ্যে ঘুরছে তোমার?"
রেস্টুরেন্টে ঢুকে আমরা পাশাপাশি বসলাম। আমি পরীকে বললাম যে আমি এখন চাকরি করি না, সুতরাং আমার কাছে বেশি পয়সা নেই। আমার বাঁ হাত জড়িয়ে ধরে ঘাড়ের পাশে নাক ঠোঁট ঘষে বলে "চিন্তা করছ কেন, তোমার মাসি আছে তো তোমার সঙ্গে।"
ওর মুখে নিজেকে আমার মাসি বলাতে আমি হেসে ফেলি, সেটা দেখে ও হেসে ফেলে।
"তোমার মনে আছে, ছোড়দার বিয়েতে আমার দুই বান্ধবীর সাথে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলাম, যাদের বিয়ে হয়ে গেছে।"
"হ্যাঁ, মনে আছে, তো?"
"জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ওরা পুরো এক সপ্তাহর জন্য মানালি যাচ্ছে ঘুরতে, আমি সাথে যাচ্ছি।"
আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না কি জানাতে চাইছে, আমি মাথা নেড়ে বলি "ঠিক আছে, তো?"
আমার দিকে রেগে মেগে তাকিয়ে বলে "তো মানে, আমার সাথে তুমি যাবে।"
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম, বলে কি মেয়েটা? "বাবা মাকে ভুজুং ভাজুং দিয়ে তো কাটানো যাবে। সেটা প্রবলেম নয় পরী। কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে তোমার বান্ধবীরা, সবাই জানে তুমি আমার সম্পর্কে মাসি হও।"
চেঁচিয়ে ওঠে প্রায় "না না, আমি ওদের সাথে যেতে চাই না" আমার কাঁধে মাথা রেখে বলে "তুমি নিয়ে যাবে আমাকে এমন জায়গায়, যেখানে শুধু তুমি আর আমি, আর কেউ আমাদের চেনে না।"
আমার দিকে কাতর চোখে তাকিয়ে থাকে। ওর চাহনি দেখে আমার ভেতরটা গলে যায়।
"ঠিক আছে, হাওড়া স্টেসান থেকে আমি তোমাকে আলাদা তুলে নেব। ব্যাস।"
"না রে বাবা, সেখানে এক প্রবলেম আছে। সুব্রত দা আমাদের সবার টিকিট কেটেছে একসাথে। আমরা সবাই মিলে হাওড়া কালকা মেলে করে কালকা যাচ্ছি।"
কিছুক্ষণ মাথা চুলকে বললাম "ওকে ঠিক আছে, হিমাচলে কি কি জায়গা আছে সেটা একবার দেখতে হবে আমাকে।"
"আমি জায়গা জানতে চাই না, অভি, শুধু তোমার সাথে থাকতে চাই আমি।"
ততখনে নুডলস আর সুপ দিয়ে যায় ওয়েটার, কাঁটা চামচে কিছু নুডুলস নিয়ে আমার মুখের মধ্যে পুরে দেয়। আমি বলি "আমি আর ছোটো নই পরী।"
আমার মুখের মধ্যে কাটা চামচ দিয়ে নুডুলস ঠেলে ঢুকিয়ে দিয়ে বলে "তুমি এখন আমার সেই ছোট্ট রাজকুমার।"
আমি নুডুলস চিবোতে চিবোতে বলি "আর তুমি আমার সুন্দরী মাসি।"
হেসে বলে "আচ্ছা এবারে বল, কি করে আমায় চুরি করছ?"
আমি মাথা চুলকে বলি "আমাকে ভাবতে দাও। আমার ওপরে বিশ্বাস আছে তোমার?" মাথা নাড়ায় পরী "হ্যাঁ।"
"ঠিক আছে আমি তোমার জন্য কালকা স্টেসানে উপেখা করে দাঁড়িয়ে থাকবো। তোমাকে ভেবে দেখতে হবে যে কি করে তুমি তোমার বান্ধবীদের কাছ থেকে ছাড়া পাবে। তারপরের প্লান, কোন প্লান নেই এখন পর্যন্ত।"
আমার গাল দুটিতে চিমটি কেটে নাড়িয়ে দিয়ে বলে "উফফফ এটা ভেবেই আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। তুমি আমি একসাথে। আমার ছোট্ট সোনার রাজকুমার।"
আমি ওর চিবুককে আলতো করে আঙ্গুল ছুঁইয়ে বলি "তোমার বান্ধবীরা কি জানে যে তুমি প্রেম করছ?"
"না সেটা ঠিক জানে না, তবে কিছু একটা আন্দাজ করেছে ওরা। তবে আমি যদি বলি যে আমি কালকা থেকে অন্য কারুর সাথে অন্য কোথাও যাবো, তাহলে ওর হয়তো জানতে চাইবে বাঁ দেখা করতে চাইবে কার সাথে আমি কোথায় যাচ্ছি।"
অদৃশ্য পত্র (#03)
এত আচ্ছা মুশকিলে ফেলে দিল আমাকে আমার প্রেমিকা। আমি মাথা চুলকে ভেবে চিন্তে কূলকিনারা করতে পারছিনা যে কি করা যায়। আমি ওর কাঁধে ধাক্কা মেরে জিজ্ঞেস করি "কিছু তো আইডিয়া দেবে।"
"যা বাবা, আমি রাস্তা দেখালাম এবারে তুমি কি করে নিয়ে যাবে সেটা তোমার ব্যাপার।"
হুম, বেশ প্যাঁচাল অবস্থা। আমি পরীকে জানালাম যে, জানুয়ারি মাসে হিমাচল প্রদেশে অনেক ঠাণ্ডা পড়বে, তার জন্য ওকে অনেক গরম জামাকাপড় নিতে হবে। ও আমাকে জানাল যে গরম জামা কাপড় ওর আছে সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আমি ওকে বললাম যে সাড়ীতে কাজ হবে না, যা ঠাণ্ডা পড়বে ওখানে। ও বলল যে ওর সাড়ী আর সালোয়ার ছাড়া আর কিছু পরেনা। ও জিন্স, প্যান্টস বা শর্টস পরেনা, তাই ও সালোয়ার নিয়ে যেতে পারে। আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম যে তাই ঠিক।
নুডুলস খাওয়া শেষ। কথায় কথায় জানতে পারলাম যে সুব্রতর হানিমুন ভালো কেটেছে, খুব মজা করেছে দুজনে মিলে। ইন্দ্রানি মাসি বম্বে ফিরে গেছে, চব্বিশ বছরে প্রথম বার ইন্দ্রানি মাসি ওর সাথে ভালো ভাবে কথা বলেছে, ওকে বম্বে যেতে বলেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম যে ও যেতে চায় কিনা। ও মাথা নাড়িয়ে বলল, যে ও পুরানো কথা সব ভুলে শুধু এগিয়ে যেতে চায়। ও চায় ওর ছোটমার সাথে থাকতে, কলেজে পড়তে আর এম.এস.সি করে ছোটমার মতন স্কুল টিচার হতে।
রাস্তায় বেড়িয়ে পরি আমরা। পরী ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে বলে "এবারে আমাকে উঠতে হবে, না হলে বাড়ি পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাবে।"
আমি বললাম "একটা গুডবাই কিস পাবো না?"
"না সোনা, আমি অত আধুনিকা নই যে শহরের মেয়েদের মতন রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে তোমাকে চুমু খাবো।"
আমার দিকে চোখ টিপে ঠোঁটে একটা দুষ্টু মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে "এই গেঁয়ো মেয়েকে ভালবেসেছ তাকে নিয়ে থাকতে হবে।"
বাস স্টান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, সেই সময়ে জিজ্ঞেস করি আমি "আমাকে বিশ্বাস কর তুমি?"
আমার দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে বলে "হটাৎ এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছ কেন?"
"আমি কিছু একটা করব, যাতে আমাদের এই ট্রিপটা মনে থাকে।"
মিষ্টি হেসে বলে "সেটা তো আমি জানি। আমি তোমার জন্য কালকা স্টেসানে ওয়েট করব।"
বাস এসে পরে, বাসে উঠে জানালার ধারের একটা সিটে বসে পরে। জানলা দিয়ে আমার দিকে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে থাকে। হাসি দেখে আমার মনের ভেতরটা কেমন যেন খালি খালি মনে হয়। পরী ডান হাতের তর্জনী, লাল ঠোঁটে ছুঁইয়ে আমার দিকে নাড়িয়ে একটা মিষ্টি চুম্বন ছুঁড়ে দেয়। বাস বেড়িয়ে যায়। আমি দাঁড়িয়ে থাকি যতক্ষণ না বাসটা আমার চোখের সামনে থেকে চলে গেল।
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereপিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment