CH Ad (Clicksor)

Thursday, January 9, 2014

ভালবাসার রাজপ্রাসাদ_Written By pinuram [খুঁজে পাওয়া বাল্যকাল, নতুন মুখ]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




ভালবাসার রাজপ্রাসাদ
Written By pinuram





খুঁজে পাওয়া বাল্যকাল

দু’জনে কতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিল তাঁর ঠিকানা নেই। অভির চোখ খলে যখন কেউ ওর মাথার পেছনে সজোরে এক চাটি মারে। ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে যে ইন্দ্রানি মাসি ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। পায়ের দিকে কিছু দুরেই মাটিতে পরে আছে সুব্রত। 

ইন্দ্রানি মাসি ওদের দিকে রেগে বলে, "শূয়োর কোথাকার। তোদের কোন হুস জ্ঞান নেই? সবাই তোদের কে হন্যে হয়ে খুঁজছে আর তোরা এখানে পরে পরে ঘুমাচ্ছিস?"

অভি পা দিয়ে ঠ্যালা মেরে সুব্রত কে জাগিয়ে দেয়। সুব্রত মাথা চুলকাতে চুলকাতে চোখ খুলে দেখে যে ইন্দ্রানি মাসি ওর দিকে রেগে মেগে তাকিয়ে।

অভি, "সরি মাসি। মানে আমরা কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল।"

চেয়ারে রাখা মদের বোতল আর গ্লাসের দিকে ইন্দ্রানি মাসির চোখ যায়। তাড়াতাড়ি গায়ের শালটা চেয়ারের ওপরে ফেলে দিয়ে ওগুলো ঢেকে দেয়। ওদিকে মন্ডপের দিকে পায়ের আওয়াজ শোনা যায়, কেউ আসছ। ইন্দ্রানি মাসি জানিয়ে দেয়, "অভি আর সুব্রত সারা রাত প্যান্ডেলে রাত কাটিয়েছে।"

মা, দিদা, পরী, মৈথিলী সবাই প্যান্ডেলের দিকে দৌড়ে আসে। মা আর দিদা দু’জন কে বেশ ভাল বকুনি দেবার পরে চলে যায়। মৈথিলী সুব্রতকে টানতে টানতে বাড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। 

পরী অভির কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, "এই ঠাণ্ডার রাতে এখানে কি করছিলে তোমরা?"

সদ্যস্নাত পরীকে দেখতে ঠিক শিশিরে ভেজা জুঁই ফুলের মতন দেখাচ্ছে, সারা গা থেকে মন মাতান এক সুবাস বের হচ্ছে। 

অভি, "না কিছু না, কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিল এই আর কি..."

আড় চোখে দেখল অভি, ইন্দ্রানি মাসি কাজের লোককে ডেকে বোতল আর গ্লাস পরিষ্কার করে নিতে বলল। 

বাড়িতে ঢোকা মাত্রই যেন হাজার চোখ অভিকে খেয়ে ফেলার জন্য উদগ্রীব। বাবা আর সুমন্ত মামা যেন পারলে ওকে খেয়ে ফেলে। 

পরী ওকে টানতে টানতে একটা ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিল। ঠেলে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে ওর সামনে এসে দাঁড়াল। অভির এলোমেলো চুলে বিলি কাটতে থাকে পরী। ঘরের পর্দা যে দেওয়া নেই সেদিকে কারুর খেয়াল নেই। অভি ওর পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে।

ক্ষমা চায় অভি, "সরি পরী। কাল রাতের জন্য ভেরি সরি।"

মমতা মাখান হাসি দিয়ে উত্তর দেয়, "ঠিক আছে, আমি ত কিছু বলিনি। ছেলেরা দুষ্টুমি করবে না ত কে করবে।"

অভি, "তুমি তাহলে আমার ওপরে রাগ করনি, আমার সুইট পরী।"

মায়ের দেওয়া হারটা অভির হাতে দিয় বলে, "এটা আমাকে পড়িয়ে দেবে কি?" এই বলে অভির দিকে পেছন করে দাঁড়িয়ে পড়ল। ঘাড়ের ওপরে হাত খোঁপা টাকে আলতো করে ঘাড় থেকে সরিয়ে দিল অভি। মরালী গ্রিবার মতন ফর্সা ত্বক, অভির হাত কিঞ্চিত কেঁপে ওঠে। হার পরানোর আগে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় ওই ঘাড়ের ওপরে।

উষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়া পেয়ে কেঁপে ওঠে, "কি করছ? আবার দুষ্টুমি। কেউ এসে পরবে, এস টাকে ঠিক করে লক করে দাও।"

ঘাড়ের কাছে এস টাকে লক করে মসৃণ ত্বকের ওপরে হাত বুলিয়ে দিল অভি। বেড়াল ছানার মতন মিউ মিউ করে উঠল পরী। অভি আবার দু’হাতে ওকে জড়িয়ে ধরল।

জিজ্ঞেস করল, "রাতের বেলায় কি পড়ছ?"

মাথা নাড়াল পরী, "জানি না, তুমি বলে দাও কি পড়ব।"

অভি, "তুমি অনেক সুন্দরী, তুমি যা পরবে তাতেই তোমাকে সুন্দরী দেখাবে। তুমি যে আমার সত্যিকারের পরী।"

পরী ঠেলে অভিকে বাথরুমের দিকে ঢুকিয়ে দেয়, "যাও তাড়াতাড়ি স্নান সেরে আস। তোমার গা থেকে বোটকা গন্ধ বের হচ্ছে।"

ঠিক সেই সময়ে ইন্দ্রানি মাসি ঘরের মধ্যে ঢোকে। ইন্দ্রানি মাসিকে দেখে দু’জনে একটি তফাত দাঁড়ায়। ইন্দ্রানি মাসি পরীকে বলে যে অভির মা নাকি ওকে খুঁজছে। পরী ইন্দ্রানি মাসি কে জিজ্ঞেস করল যে কেন ওর ছোটো মা ওকে ডেকেছে। মাথা নাড়িয়ে ইন্দ্রানি মাসি জানাল যে কারন জানেন না। পরী কিছু পরে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। বেড়িয়ে যাবার আগে, ঘাড় ঘুরিয়ে অভির দিকে তাকাল। ডান হাতের তর্জনী টা ঠোঁটের কাছে এনে, আঙ্গুলের ডগায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে, একটা ছোট্ট চুমু ছুঁড়ে দিয়ে চলে গেল। 

ইন্দ্রানি মাসি, "দিদি জামাই বাবু তোমার ড্রিঙ্কসের কথা জানে?"

অভি সিলিং এর দিকে তাকিয়ে থাকে অনেকক্ষণ, "না গো জানে না।" তারপরে বলে, "সরি মাসি, তবে থ্যাঙ্কু ওই সময়ে যা করেছ।"

ইন্দ্রানি মাসি, "যাও বাথরুমে ঢুকে স্নান সেরে নাও।"

তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে পড়ল অভি। তাড়াতাড়ি স্নান সেরে নিতে হবে। আজ একটা মাত্র দিন, পরীকে কাছে পাওয়ার, আজ বিকেল বেলায় অভিকে কোলকাতা ফিরে যেতে হবে। কোনো রকমে স্নান সেরে নিচে নেমে দেখে যে মা অথবা পরী কেউই নেই। বাড়ির লোকজন কে জিজ্ঞেস করে মায়ের কথা, একজন উত্তর দিল জানেনা। বারান্দার দিকে হেঁটে গিয়ে দেখে যে দিদা ইন্দ্রানি মাসি কে আর মেঘনা কে কিছু নির্দেশ দিচ্ছে। পাশে গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে অভি। ওদের কথা শেষ হয়ে যাবার পরে দিদাকে মায়ের কথা জিজ্ঞেস করে। ওর মন বলছে, মা যেখানে থাকবে পরীও সেখানেই থাকবে। পরীও চাইছে ওর বেশির ভাগ সময় ওর ছোটো মার কাছে কাটুক। 

দিদা অভি কে বলল, "তোর মা পরীকে জিজ্ঞেস করেছিল যে পরী বিকেল বেলায় কি জামা কাপড় পরবে। পরী জানায় যে হয়ত শাড়ি বা সালোয়ার। তোর মায়ের ঠিক পছন্দ হয়নি তাই তোর মা আর বাবা পরীকে নিয়ে বারাসাত গেছে সপিং করতে। ফিরতে ফিরতে বিকেল চারটে বেজে যাবে।"

অভির খুব রাগ হল, পরী ওকে না জানিয়ে চলে গেল? একবার হাতের কাছে পেলে হয়।

দিদা অভি কে পাশে বসতে বলে ওর ছোটো বেলার কথা শুনাতে লাগল, "তুই ছোটো বেলায় খুব দুষ্টু ছিলিস। সারা বাড়ি হামাগুরি দিয়ে বেরাতিস আর পরীও তখন অনেক ছোটো, ও তোর পেছন পেছন ঘুরে বেড়াত। সুব্রত তোদের থেকে কিছু বড়, তোকে নিয়ে সুব্রত বাড়ির পেছনের পুকুর পাড়ে নিয়ে গিয়ে মাছ ধরত। তোরা দু’জনে ছোটো ছোটো ছিপে মাছ ধরতিস আর তারপরে সেই মাছ গুলো আবার পুকুরের জলে ছেড়ে দিতিস। চল আমার সাথে তোকে কিছু দেখানর আছে আমার।"

গল্পের মাঝে অভি লক্ষ করল যে একটা গড়ি এসে উঠানে দাঁড়িয়েছে। গাড়ি থেকে বেশ কিছু মহিলারা নামলেন। দিদা আর অভি ওদের কে লক্ষ না করে বাড়ির পেছন দিকে হাটা দিল। বহু বছর পরে অভি সেই বাল্যকালের খেলার জায়গায় ফিরে এসেছে। দু’পাসে আম কাঁঠালের বাগান, তার মাঝে পায়ে হাঁটার সরু রাস্তা এঁকে বেকে এগিয়ে চলেছে। 
কিছু দূর যাবার পরে দিদা ওকে পুকুর দেখিয়ে বলে, "এই সেই পুকুর, তোর হয়ত কিছুই মনে নেই।"

মাথা নাড়ায় অভি, "না গো দিদা, আমার কিছুই মনে নেই।"

অভির হাত ধরে পুকুরের এক কোনায় নিয়ে যায়। একটা আমের গাছ দেখিয়ে অভিকে ছুঁতে বলে গাছের গুরি।

দিদা, "এই গাছটা দেখছিস। তুই তখন কথা বলতে শিখেছিস। একদিন সকাল বেলা আমি পুজো সেরে উঠেছি আর তুই দৌড়াতে দৌড়াতে আমার কাছে এসে আমাকে হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসিস এখানে। গাছ দেখিয়ে বলিস যে তুই একটা আমের গাছ পুঁতেছিস।"

দিদা অভির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, "ছুঁয়ে দ্যাখ, কত বড় হয়ে গেছে তোর পোঁতা আম গাছ। আজও আমার বাগানের সেরা আম গাছ এটা।"

অশ্রু ভরা চোখে অভির দিকে তাকিয়ে বলে, "আমারও বয়েস হয়েছে, তোর মায়েরও বয়স হয়েছে। তোর মা এতদিন কি করে এই সব বুকের মাঝে লুকিয়ে রেখেছিল জানিনা।"

পুকুর পাড়ে বসে পরে দিদা আর অভিকে পাশে বসতে বলে, "উলুপি আমাদের জন্য অনেক করেছে। আমরাই ওকে ভুল বুঝলাম রে।"

অভি দিদকে জড়িয়ে ধরে বলে, "দিদা, আবার কেন ওই সব কথা শুরু করছ?"

কান্না ভেজা চোখে দিদা বলল, "নাঃ রে। একটি মেয়ে, দুই মায়ের মাঝে, সময়ের ব্যাবধানে দূর হয়ে গেল।"

ঠিক সেই সময়ে ইন্দ্রানি মাসি এসে পড়ল। ওদের দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। দিদা ইন্দ্রানি মাসিকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে? উত্তর ইন্দ্রানি মাসি বলল যে মেয়ের বাড়ি থেকে লোকজন এসেছে আর দিদাকে খুঁজছে। 

বাড়ি পৌঁছাতেই দিদাকে সব আত্মীয় সজ্জনেরা ঘিরে ধরল। অভি আবার সেই ভিড়ে একা হয়ে পড়ল।





নতুন মুখ

অভির খুব একা একা লাগছিল, থেকে থকে রাগ হচ্ছিল মায়ের ওপরে, কেন পরীকে নিয়ে শপিংএ চলে গেছে, কেন একবার ওকে জানাল না। শপিং ওর ভাল লাগে না, তবুও পরীর সঙ্গ ত পেত। ঠিক সেই সময়ে দুষ্টু ডাক দেয়, বলে যে সুব্রত ওকে ওর ঘরে ডাকছে। 

ঘরে ঢুকে দেখে যে একটি নতুন মুখ। একটি তন্বী তরুণী মৈথিলীর পাশে বসে। সুব্রত ওকে দেখে কাছে ডেকে মেয়েটার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। মেয়েটি ওর খুড়তুত শালি, অরুণিমা। অরুণিমা দক্ষিণ কোলকাতায় থাকে, বি.এ ফার্স্ট ইয়ার পড়ছে। কথাবার্তা শুনে মনে হল যেন, অভির সাথে অরুনিমার পরিচয় কোন এক গুড় কারনে করতে চাইছে ওরা।

অরুনিমার দিকে তাকাল অভি, সবে মাত্র গোলাপের কুঁড়ি, বয়স আন্দাজ এই উনিশ কি কুড়ি, দেখতেও ভাল। ওর দিকে বড় বড় চোখ নিয়ে তাকাল। অভি সুব্রতর কাঁধে হাত রেখে বলল, "মামা আমার এখন ঠিক ভাল লাগছে না, আমি একটু একা থাকতে চাই।"

মৈথিলীর দিকে তাকাল অভি, মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানাল। মৈথিলী ওর এই আচরনে হেসে ফেলল। অভি মজা করে বলল, "চুর্নি, তোমাকে দারুন দেখতে। তোমার সাথে আমার আগে দেখা হওয়ার দরকার ছিল।"

ওর কথা শুনে মৈথিলীর লজ্জায় কান লাল হয়ে গেল, রেগে মেগে সুব্রতর দিকে তাকাল। চুর্নি নামে শুধু মাত্র সুব্রতই ওকে ডাকে। অভি সুব্রত কে আসস্থ করে বলল, "ভায়া তোমার বউয়ের দিকে আমি নজর দিচ্ছি না চিন্তা নেই।" 

অভি ঘর থেকে বেড়িয়ে নিচে নেমে গেল। এক কাপ কফি নিয়ে আবার ছাদে উঠে গেল। খালি ছাদে দাঁড়িয়ে নীল আকাশের দিকে চেয়ে থাকল অভি। এক কোনায় দাঁড়িয়ে দু’হাত ছড়িয়ে বুক ভরে গ্রামের শুদ্ধ বাতাস ভরে নিল বুকের ভেতরে।

কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে ভাবতে থাকে ওর আর পরীর সম্পর্ক। পরী ওর কে হয়? মায়ের দুর সম্পর্কের বোন। হ্যাঁ, সত্যি, কিন্তু রক্তের ত কোন সম্পর্ক নেই, মায়ের নিজের বা কাছের বোনও নয়। মায়ের ছোটো দাদুর, ছোটো মেয়ের, ছোটো মেয়ে হচ্ছে পরী। কেনই বা ওদের প্রেম এই সমাজ বা ওর বাবা মা মেনে নেবে না? শুধু মাত্র এই কারনে যে পরী ওর থেকে দু’বছরের বড় বলে? বয়সের ব্যাবধান কি এতই বড় যে ওর বাবা মা ওদের সম্পর্ক মেনে নেবে না? কিছুতেই মনকে শান্তনা দিতে পারলনা অভি, এই ভালবাসা অবৈধ হতে পারেনা। ওরা দু’জনেই প্রাপ্ত বয়স্ক, দু’জনের বুকের মাঝে একটি হদপিন্ড আছে। কেই বা বুঝবে? মা না দিদা? এ ভালবাসা যে বড় মুধুর। ভালবাসা মানুষের মনে কি দরজায় টোকা মেরে আসে? না জানিয়ে আসে। প্রেমে মন মজে গেলে, বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায়, রাতে ঘুম আসে না, সবসময়ে খোলা চোখের সামনে শুধু প্রেমিকার কাজল কালো দু’নয়ন খেলে বেড়ায়। এইসব ভাবনা চিন্তায় ডুবে যায় অভি।

ওর চিন্তনের রেশ কাটল এক মিষ্টি আওয়াজ শুনে, "তোমাকে নিচে খেতে ডেকেছে।" ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল অভি, পেছনে অরুনিমা দাঁড়িয়ে।

অভি, "হুম চল, আমি ত খাবার কথা একদম ভুলে গেছিলাম। ত কে তোমাকে পাঠাল আমাকে ডাকতে? তোমার দিদি না জামাইবাবু?"

অরুনিমা, "দিদি জামাইবাবু খেতে বসবে তাই তোমাকে ডাকতে বলল।"

নিচে নামতে নামতে অরুনিমা ওকে জিজ্ঞেস করল, "তুমি কলকাতার কোথায় থাক?"

অভি, "আমি উত্তর কোলকাতায় থাকি, তুমি ত মনে হয় দক্ষিণ কোলকাতায় থাক, তাই না?"

অরুনিমা, "হ্যাঁ, ঢাকুরিয়া।"

অভি একনজর দেখল অরুনিমাকে, পাতল গঠন গায়ের রঙ ফর্সা। পোশাক আসাক বেশ রুচিশীল। টকটকে লাল রঙের শাড়ি পড়েছে, পিঠ বিহীন ব্লাউস গায়ে, পিঠের ওপরে দুটি সুতা দিয়ে বাঁধা। 

অরুনিমা, "তুমি কলেজের ফাইনাল ইয়ারে?"

অভি, "হ্যাঁ।"

অরুনিমা, "তারপরে?"

অভি, "তারপরে মানে?"

অরুনিমা, "না মানে কলেজের পরে কি? হাইয়ার স্টাডিস করবে না চাকরি করবে?"

মাথা চুলকায় অভি, এই মেয়েটা ওকে এতসত প্রশ্ন কেন করছে। উত্তর দিল, "আমাকে চাকরি করতে হবে। আমি একটা প্রাইভেট সংস্থা থেকে কম্পিউটার শিখছি।"

অভি অরুনিমাকে জিজ্ঞেস করল, "তুমি ভবিষ্যতে কি করতে চাও?"

অরুনিমা একটু ভাবুক হয়ে বলল, "আমি কিছু করতে চাই না।"

পরীর একদম উলটো স্বভাবের মেয়ে অরুনিমা।

খাবার টেবিলে শুধু মাত্র দুটি চেয়ার খালি, অগত্যা অভিকে অরুনিমার পাশেই বসতে হল। মৈথিলী আর সুব্রত ওদের উলটো দিকে বসে। ওদেরকে পাশাপাশি বসতে দেখে, মৈথিলী সুব্রতর কানেকানে কিছু বলল, সুব্রত একবার অভির দিকে তাকিয়ে হেসে দিল। ওই হাসি দেখে অভি বুঝতে পারল যে ওরা কি করতে চাইছে। নিজের মনে হেসে ফেলল অভি, "কি অদ্ভুত প্রস্তাব।"

খাবার সময়ে খুব চুপচাপ ছিল অভি, ওর মনটা পরে আছে কখন পরী আসবে সেই চিন্তায়।

খাবার পরে সুব্রত অভিকে ডেকে এক কোনায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল যে ওর কি হয়েছে, ও এত চুপচাপ কেন। অভি চেপে গেল যে, পরীকে খুব মনে পড়ছে, উত্তর দিল যে, দিদা ওকে ওর ছোটো বেলার কথা মনে করিয়ে দেওয়াতে ওর মন খারাপ লাগছে।

সুব্রত, "তুমি অরুনিমাকে নিয়ে একবার বাগানে বা পুকুর পাড় থেকে ঘুরে আসতে পারত? অরুনিমা বেশ সুন্দরী মেয়ে, হয়ত তোমার মনে ভাল লেগে যেতে পারে।"

অভি ম্লান হেসে উত্তর দিল, "কেন চেষ্টা করছ?"

সুব্রত, "কেন কি হল? এইরকম একটা সুন্দরী মেয়েকে দেখে তোমার মনের ভেতরে কিছু হচ্ছে না? আমি যদি েই কথা আমার কোন বন্ধুকে বলতাম ওরা ত হুমড়ি খেয়ে পড়ত অরুনিমার ওপরে। এক কাজ কর, তুমি ছাদে যাও আমি ওকে ছাদে পাঠিয়ে দিচ্ছি।"






কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment