CH Ad (Clicksor)

Thursday, August 21, 2014

পাপ কাম ভালোবাসা_Written By pinuram [পঞ্চবিংশ পর্ব (চ্যাপ্টার ০৫ - চ্যাপ্টার ০৬)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




পাপ কাম ভালোবাসা
Written By pinuram







পঞ্চবিংশ পর্ব (#05)

বেশ কিছুক্ষণ জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকার পরে, রূপক ওকে ছেড়ে দিয়ে পাশে শুয়ে পরে। অনুপমা হাত পা ছড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ চরম আবেগের অনুভূতি গায়ে মাখিয়ে নেয়, তারপরে গায়ের ওপরে চাদর ঢেকে রূপকের দিকে মুখ করে শোয়। দুইজনে পাশাপাশি শুয়ে পরস্পরের চোখের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসে। অনুপমার সারা চেহারায় চরম পরিতৃপ্তির আলোক ছটা, সেই সাথে রূপকের ঠোঁটে পরিতৃপ্তির হাসি। অনুপমা জানু মাঝে, যোনির মধ্যে আঙুল ঢুকিয়ে দুই নরনারীর মিশ্রিত তরল একটু বের করে রূপকের গালে লাগিয়ে দেয়।

রূপক হেসে উঠে বলে, "এই কুত্তা কি করছিস?"

অনুপমা খিল খিল করে হেসে বলে, "কেন রে কুত্তা, আমার ওইখানে চাটার সময়ে বেশ মন দিয়ে চাটছিলিস, এখন কেন ঘেন্না লাগছে রে তোর? আমাকে একা পেয়ে শেষ পর্যন্ত করেই ফেললি বল।"

অনুপমাকে জড়িয়ে ওর গালে চুমু খেয়ে বলে, "উম্মম্ম ডারলিং, এই রকম একটা সেক্সি বান্ধবী থাকলে কেউ কি আর দুরে থাকতে পারে? অনেকদিনের ইচ্ছে তোকে ভালো করে আদর করার, সেটা অবশেষে পূরণ হল।"

তারপরে চোখ বড়বড় করে বলে, "একবার দেবায়নকে ফোন করলে কেমন হয়।"

ভুরু কুঁচকে হেসে ফেলে অনুপমা, "ধ্যাত, কেউ জানে না আমরা জলপাইগুড়ি এসেছি। আর পুচ্চু যদি জানতে পারে যে তুই আমাকে একা পেয়ে লাগিয়ে দিয়েছিস তাহলে তোকে আর আস্ত রাখবে না।"

রূপক ওর দিকে হাত বাড়িয়ে অনুপমার হাত মুঠির মধ্যে নিয়ে বলে, "জার্মানিতে দেবু আমার বউকে লাগাতে পারে তাহলে আমি কেন ওর বউকে লাগাতে পারবো না? ওর সামনেই তোকে একদিন আবার লাগাবো দেখিস।"

অনুপমা ওর গালের ওপরে চাটি মেরে বলে, "চার জন একসাথে থাকলে ভালো। নে, এবারে একটু রেস্ট নে। কাল ভোরের ফ্লাইটে বাড়ি ফিরতে হবে। আর হ্যাঁ, একটা কথা মনে রাখিস, আমরা জলপাইগুড়ি কি কারনে এসেছি কেউ যেন ঘুণাক্ষরে না জানতে পারে।"

রূপক প্রশ্ন করে, "দেবায়ন কেও বলবি না?"

অনুপমা হেসে বলে, "সময় মতন ওকে আমি সব জানাবো চিন্তা নেই।"

রূপক অনুপমার গাল টিপে হেসে বলে, "উম্মম সোনামণি, তুই আমার খেয়াল রাখিস আমি তোর খেয়াল রাখব।"

জেনে বুঝেও অনুপমা প্রশ্ন করে, "তুই আমার কি খেয়াল রাখবি?"

রূপক ওর জানুমাঝে হাত দিয়ে যোনি বেদি চেপে ধরে বলে, "আমি তোর এখানের চুলকানির খেয়াল রাখব আর তুই আমার টাকার দিকে একটু খেয়াল রাখিস।"

অনুপমা তির্যক হেসে জবাব দেয়, "আমার চুলকানির কথা অত ভাবতে হবে না তোকে, তবে তোর এপ্রেসালের বিষয়ে দেবায়নের সাথে আলোচনা করব।"

শুধু মাত্র শারীরিক সুখের তাড়নায় অত সহজে বয়ে যাওয়ার পাত্রী নয় অনুপমা। শুধু মাত্র শারীরিক আনন্দের জন্য রূপকের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিল, এই শরীরকে ব্যাবসা করতে নয়। অনুপমা পাশ ফিরে চুপচাপ চোখ বুজে পড়ে থাকে। সেই রাতে ওর আর ঘুম আসে না। কাম তাড়নায় সত্যি সত্যি রূপকের সাথে সঙ্গম শেষ পর্যন্ত করেই ফেলল। বুকের মধ্যে জেগে ওঠে কুণ্ঠাবোধ।

মাঝরাতে বিছানা ছেড়ে উঠে পাশ ফিরে দেখে, রূপক বেহুঁশের মতন পড়ে রয়েছে। চুপচাপ বাথরুমে ঢুকে নিজেকে আয়নায় দেখে। দুই ফর্সা স্তনের ওপরে আঙ্গুলের দাগ, বৃন্ত দুটোর চারপাশে দাঁতের আলতো দাগ। যোনি কেশ ওদের শরীরের মিশ্রিত তরলে ভিজে চ্যাটপ্যাট করছে। পেটের ওপরে নাভির চারপাশে খুব চুমু খেয়েছিল, সেই খানে একটু লালচে ছোপ পড়েছে। দুই মসৃণ ফর্সা জানুর ভেতরের ত্বকে নখের আলতো দাগ কাটা। সব মিলিয়ে অনুপমা নিজের শরীর দেখে চমকে যায়। ফোন নিয়ে বাথরুমের মেঝেতে বসে পড়ে, ফোন করবে কি করবে না ভাবতে থাকে। এই সময়ে কি ফোন পাবে ওর? বড় দোটানায় পড়ে যায় ওর হৃদয়।

পরের দিন ভোরের ফ্লাইট ধরে কোলকাতা ফিরে আসে দুইজনে। দুই বাড়ির কেউ জানতে পারল না জলপাইগুড়ি যাত্রার আসল কারন। পরের দিন থেকে অফিসে, অনুপমা আর রূপক স্বাভাবিক ভাবেই পরস্পরের সাথে ব্যাবহার করে। ওরা দুইজনে ছাড়া বাকি কেউ জানতে পারল না ওদের মধ্যে কি কি হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে একা পেলে রূপক একটু রসিকতা করতে চেষ্টা করে সেই রাতের বিষয়ে, কিন্তু অনুপমা সেইসব আলোচনা এড়িয়ে যায়।

দুই দিন পরে জার্মানি থেকে দেবায়ন ফিরে আসে। ফিরে আসার পরে শ্রেয়ার চাল চলন বদলে যায়, পরপর দুটো ডিলে সাক্ষর করার পরে নিজেকে অনেক বড় মনে করে নেয়। দেবায়ন মনে মনে হাসে কিন্তু কিছু বলে না। ওদের ফিরে আসার কিছুদিন পরে, জার্মানি থেকে দুই এয়ারলাইন্স কোম্পানির আইটি টিম ওদের অফিস, কাজ, ইত্যাদি তদারকি করতে ভারতে আসে। সুপর্ণা ম্যাডাম আর তাঁর টিম কাজের মধ্যে ডুবে যায়। আগামী তিন মাসের মধ্যে এয়ার বার্লিনের প্রোজেক্ট ডেলিভারি করতে হবে আর বছরের শেষে জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের প্রোজেক্ট সারা অফিসে সাজসাজ রব। কিছু দিনের মধ্যেই অফিস রণক্ষেত্রে পরিনত হয়, প্রোজেক্ট ডেলিভারি যেন ওদের কাছে এক যুদ্ধের সাজ। অফিসের বেশির ভাগ লোক ওই দুই প্রোজেক্টে নিযুক্ত করা হয়।

যতবার ভাবে দেবায়নকে সব খুলে বলে দেবে, কিন্তু বলতে গেলেই মনে হত যেন ওর গলা শুকিয়ে এসেছে তাই সেই রাতের কথা দেবায়নকে আর জানানো হয়নি। এইবারে দেবায়ন অনুপমা আর রূপকের হাবভাবে সন্দেহ প্রকাশ করতে পারে না। রূপক মাঝে মাঝে অনুপমার দিকে হাতছানি দেয় কিন্তু অনুপমা সেই হাতছানিতে অত সহজে বয়ে যাওয়ার পাত্রী নয়। রূপক বুঝতে পারে, যে অনুপমা একজন লেলিহান অগ্নিশিখা, দূর থেকে আগুনের তাপ পোহানো ভালো, কাছে এলে হাত পুড়ে যেতে বেশি দেরি লাগবে না।

একদিন দুপুরে লাঞ্চের সময়ে ক্যাফেটেরিয়াতে দেবায়নকে না দেখতে পেয়ে ওর কেবিনে যায় অনুপমা। দরজা ঠেলে ঢুকে দেখে যে দেবায়ন কারুর সাথে ফোনে কথা বলছে। কথা বার্তা শুনে মনে হল ওর বাবার সাথেই কথা বলছে। অনুপমাকে দেখে ফোনে একটা কথা বলে রেখে দেয় দেবায়ন। দেবায়নের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, চোখ লাল, মাথার চুল উস্কোখুস্কো, চেহারা দেখে মনে হল বেশ চিন্তামগ্ন।

অনুপমা ওকে প্রশ্ন করে, "কি হয়েছে রে? কোন অসুবিধে?"

দেবায়ন ওর প্রশ্ন এড়িয়ে হেসে জবাব দেয়, "তারপরে তোর কি খবর? কেমন চলছে কাজ?"

ওর প্রশ্ন শুনে অনুপমা অবাক হয়ে যায়। রোজ দিন ছেলেটা অফিসে আসে তাও কি জানেনা যে অফিসে কি হচ্ছে? ওকে পালটে প্রশ্ন করে, "তুই নিজেই দেখতে পারিস তো কাজের কি হচ্ছে। তুই দেখিস না কেন?"

দেবায়ন বলে, "আরে বাবা, তুই আছিস দেখার জন্য সেই জন্য ওইদিকে আর মাথা ঘামাতে চাই না।"

অনুপমা বলে, "কি ব্যাপার বলতো, একটু ঝেড়ে কাশ। ওই রকম ঝড়ো কাকের মত কেন দেখাচ্ছে তোকে?"

দেবায়ন বড় শ্বাস নিয়ে জবাব দেয়, "আমাকে কিছুদিন পরে বের হতে হবে। পুনে, উটি আর ব্যাঙ্গালোর। গতবার কাকুর যাওয়াতে ঠিক ভাবে হোটেলের ডিল হয়নি।"

অনুপমার মন কিছুতেই মানতে চায় না, এই কয়েক সপ্তাহ হল জার্মানি থেকে ফিরেছে। আসার পর থেকে ঠিক ভাবে দুইজনে একসাথে বসতে পারেনি, একটু আদর খেতে পারেনি, বুকে জড়িয়ে ধরতে পারেনি। এর মধ্যেই আবার যাওয়ার কথা শুনে মন খারাপ হয়ে যায় অনুপমার। দুই চোখ ছলছল করে ওঠে এক অব্যাক্ত বেদনায়। সত্যি, টাকা উপার্জনের দৌড়ে নিজের প্রেম প্রীতি ভালোবাসা হারাতে বসেছে।

অনুপমা উঠে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে, "আমি যেতে দেব না এবারে।"

ছলছল চোখ দেখে দেবায়নের মন গলে যায়। দুইহাতে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের সাথে মিলিয়ে নিয়ে বলে, "কি করতে পারি সোনা, বল। এই তিনটে হোটেলের ডিল না করতে পারলে খুব মুশকিলে পড়ে যাবো।"

অনুপমার ঠোঁট বেদনায় কেঁপে ওঠে, "আমি তোকে সত্যি নরকে নামিয়ে এনেছি।"

দেবায়ন ওর কপালে ঠোঁট চেপে আদর করে স্বান্তনা দিয়ে বলে, "এই রকম কেন বলছিস তুই? তুই আমার সর্বস্ব, তুই আমার প্রাণশক্তি। তুই কাঁদলে আমি যাই কোথায় বলতে পারিস?"

অনুপমা বলে, "নিজের প্রাণশক্তি বলতে ছারিস না আর মাসের মধ্যে কুড়ি দিন আমার কাছেই থাকিস না। একবার ভেবে দেখিস না আমি কি ভাবে থাকি। এই কয়দিনে কয়বার আমাকে একটু আদর করেছিস? তোকে বলার জন্য কত কথা বুকের মধ্যে জমে আছে, কিন্তু তোর কাছে সেই সব শোনার মতন সময় নেই।"

কথা গুলো শুনে দেবায়নের হৃদয় ভেঙ্গে আসে, ওর গালে চুমু খেয়ে আদর করে বলে, "ঠিক আছে পুচ্চিসোনা, কাঁদিস না। এইবারে তোকে সাথে নিয়েই যাবো। এই ডিল হয়ে গেলে অনেকদিনের জন্য বেড়ান বন্ধ।"

অনুপমা ওর জল ভরা চোখে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে বলে, "সত্যি বলছিস না আমার মন রাখার জন্য বলছিস যে আমাকে নিয়ে যাবি।"

দেবায়ন ওর মুখখানি আঁজলা করে ধরে চোখের মাঝে চোখ রেখে বলে, "সত্যি বলছি, এই বারে তোকে আমার সাথে নিয়ে যাবো। তবে আমাকে একটা কথা দিতে হবে আমার কাজে ব্যাঘাত ঘটাস না যেন।"

অনুপমা প্রশ্ন করে, "মানে?"

দেবায়ন জবাব দেয়, "অনেক কিছু বিষয়ে সোজা আঙ্গুলে ঘী ওঠে না, সেই সব জায়গায় আঙুল বেঁকিয়ে ঘী তুলতে হয়।"

অনুপমা ওর হাতখানি বুকের কাছে চেপে ধরে, "আচ্ছা বাবা প্রমিস করছি যে তোর কাজের মধ্যে বাধা দেব না।"

সাথে যাবে এই শুনে অনুপমা বেশ খুশি হয়। দেবায়ন জানায় যে ওরা আগে মুম্বাই যাবে তারপরে পুনে। মুম্বাই যাওয়ার কথা শুনে মনের মধ্যে কৌতূহল জাগে। দেবায়ন হেসে জানিয়ে দেয় যে অচিরে ধীরে ধীরে সব কৌতুহল দুরে চলে যাবে।

পরের সপ্তাহে রবিবারে দুইজনে বেড়িয়ে পড়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে। চঞ্চল বুকের রক্ত, প্লেনের চাপার পর থেকেই আরও চঞ্চল হয়ে যায়। অদম্য জিজ্ঞাসা আর দমিয়ে রাখতে পারে না অনুপমা।

শেষ পর্যন্ত দেবায়নকে জিজ্ঞেস করে, "একটু ঝেড়ে কাশ না রে বাবা। কেন আমরা প্রথমে মুম্বাই যাচ্ছি।"

দেবায়ন জবাব দেয়, "অনেক মার প্যাঁচ আছে রে পুচ্চি। এই হোটেলের ডিল তিনটে এত সহজে হবে না।"

অনুপমা বলে, "কিসের মার প্যাঁচ?"

দেবায়ন বলে, "গত বার কাকু গেছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। আমি অবশ্য অনেক আগে থেকেই একজন প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর লাগিয়েছিলাম ওই তিন হোটেলের মালিকের পেছনে। কিন্তু কাকু যখন গেছলেন ততদিনে ওর সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়নি।"

অনুপমা অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, "প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর, সেটা কেন? কি জানতে চাস তুই ওদের ব্যাপারে?"

দেবায়ন হেসে জানায়, "কে কখন কোথায় থাকে, কার সাথে শোয়, কার সাথে খায়, কোথায় যায় সব নাড়ি নক্ষত্রের খবর জানা দরকার।"

অনুপমা বলে, "কেন?"

দেবায়ন, "এই সব বড় হোটেলের মালিকেরা কখন ধোয়া তুলসি পাতা হয়না। ওদের ফাক খুঁজে আড় পেতে কোপ না মারলে ওরা মচকাবে না। আর যদি না মচকায় তাহলে আমার কাজ হাসিল হবে না।"

একটু দোনামনা করে তারপরে বলে, "অনেক সময়ে নারীর শরীর কাজে আসে না, সেইখানে মাথা খাটাতে হয়, আঙুল বেঁকাতে হয় আর ওদের কোণঠাসা করতে হয়।"

অনুপমা বলে, "মানে?"

দেবায়ন হেসে জবাব দেয়, "মুম্বাই পৌঁছালেই সব জানতে পারবি।"

দুপুরের পরেই ওরা দুইজনে মুম্বাই পৌঁছে যায়। মুম্বাইয়ের এক নামকরা পাঁচতারা হোটেলে ওদের সুইট ভাড়া করা ছিল। রুমের মধ্যে ঢুকেই অনুপমাকে দুই হাতে জড়িয়ে মিশিয়ে নেয় নিজের সাথে। কোলকাতায় থাকলে, বাড়িতে অথবা অনুপমার বাড়িতে ঠিক একা পাওয়া যায় না। সেই বিরহ বেদনা দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে নিঙরে নিতে চায়। দুইজনে একসাথে স্নান সেরে, ধবধবে নরম বিছানায় গা ভাসিয়ে দেয়। প্রেমের রসে পরস্পরকে ভিজিয়ে দেয়।

দুপুরের খাওয়া সেরে সারাদিন দুইজনে গাড়িতে চড়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। মুম্বাইয়ের সব থেকে আকর্ষণীয়, জুহু বিচে বিকেলে এসে বসে। সূর্য বেশ কিছু আগেই পশ্চিমে ঢলে গেছে, পৌনে আটটা বাজে তাও আকাশে কমলা রঙের মাখামাখি। পেছনে সারি সারি নিওন বাতির মেলা, সারি সারি গাড়ি ধেয়ে চলেছে নিজেদের গন্তব্য স্থলে। গ্রীষ্মের গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সমুদ্রতটে প্রচুর লোকের ভিড়। জুহু বিচ যেন একটা মেলা। শিয়ালদা স্টেসানের চেয়ে মনে হয় তিন গুন লোক জড়ো হয়েছে বিচে। ওদের গাড়ি বিচের কিছু দুরেই দাঁড়ানো।

দেবায়নের ডান হাত নিজের দুই হাতে আঁকড়ে ধরে শরীরের সাথে শরীর মিশিয়ে হাঁটে। দুইজনে খালি পায়ে অনেকক্ষণ নোনা জলে ভেজা বালির ওপর দিয়ে পা ভিজিয়ে হাঁটে। এক যুগ পরে দুইজনের মনে হয় যেন পরস্পরকে আবার ফিরে পেয়েছে। আঙ্গুলের সাথে আঙুল পেঁচিয়ে যায়, অনুপমার বুক ভরে যায় শান্তিতে। দেবায়ন হাত ছাড়িয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। চোখের তারা পরস্পরের মণির ওপরে নিবদ্ধ হয়ে যায়। হটাত করে দুইজনের মনে হয় যেন চারপাশের কোলাহল কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। এই কমলা রঙের বিস্তীর্ণ আকাশের নিচে, এই নির্জন সমুদ্র সৈকতে ওরা দুই নরনারী ছাড়া আর কেউ নেই। অনুপমার হাত উঠে আসে দেবায়নের বুকের কাছে। দুই হাতে অনুপমার কোমর ধরে নিজের দিকে টেনে নেয়। ঠোঁট নামিয়ে আনে ওই লাল গোলাপের পাপড়ির মতন নরম দুই কোয়ার ওপরে। ভালোবাসার চুম্বনে ঠোঁট মিলিয়ে হারিয়ে যায় দুইজনে। অল্পক্ষণ না অনেকক্ষণ, সময়ের চক্র যেন দুইজনের চারদিকে থমকে দাঁড়িয়ে পরে। চোখ বুজে আসে আবেগে, সেই চুম্বনে কোন রুদ্রতা নেই, নেই কামনার লেলিহান অগ্নি শিখা, আছে শুধু হারিয়ে যাওয়ার ভালোবাসা।

ঠোঁট ছেড়ে দেবায়নের চোখের দিকে তাকিয়ে মিহি সুরে প্রশ্ন করে, "আমার পাশে সবসময়ে এই রকম ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবি তুই?"

দেবায়ন ওর মুখ আঁজলা করে ধরে নিয়ে বলে, "কেন থাকব না, নিশ্চয় থাকব।"

অনুপমা ওর হাতের ওপরে হাত রেখে, ওর তালুর উষ্ণতা গালে মাখিয়ে বলে, "তুই এই যে ঘুরে বেড়াস, মাঝে মাঝে ভয় হয়। এত কিছু পেয়ে যাওয়ার পরে হটাত যদি......"

কথাটা শেষ করতে পারে না অনুপমা, বুক দুরুদুরু করে কেঁপে ওঠে ওর, চোখের কোনে জল চিকচিক করে ওঠে।

দেবায়ন বুঝতে পারে ওর অব্যাক্ত ক্রন্দনের কারন। অনুপমার মাথা বুকের কাছে চেপে ধরে বলে, "আরে পাগলি তুই ভাবলি কি করে যে আমি তোকে ছেড়ে যেতে পারি। তুই আছিস বলেই আমি আছি। এই যে দেবায়ন তোর সামনে দাঁড়িয়ে এটা তোর জন্য দাঁড়িয়ে। তোকে যদি না পেতাম তাহলে আমি এতক্ষণে কোলকাতার কোন এক এঁদো কোম্পানিতে কেরানীর চাকরি করতাম। এই যে আজকে আমার মা আমাকে এত ভালোবাসে, তোর জন্য ভালোবাসে, নাহলে দিন দিন আমাদের মাঝে ব্যবধান বেড়ে যেত আর একদিন হয়ত দুইজনে দুইদিকে হারিয়ে যেতাম।"

এই এক কথা অনুপমার পক্ষেও প্রযোজ্য। ওর আলিঙ্গনে বদ্ধ যে ছেলেটা, তার জন্য নিজের বাবা মাকে কুড়ি বছর পরে ফিরে পেয়েছে। ওর বাড়িটা এক প্রকার সরাইখানার মতন ছিল, কেউ কারুর খোঁজ খবর বিশেষ রাখত না, সবাই যেন নিজের মধ্যে মত্ত। কোন এক জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় দেবায়ন যেন সব কিছু ঠিক করে দিয়েছে। কুড়ি দিন হয়ে গেছে, জলপাইগুড়ির কথা কিছুই জানানো হয়নি, না মনিদিপা সূর্যের কথা, না নিবেদিতা ধৃতিমানের কথা না রূপকের সাথে সেই রাতের কথা। এই কয়দিনে বহুবার চেষ্টা করেছিল দেবায়নকে খুলে বলার, কিন্তু যেই বলতে যায় ওমনি ওর গলা শুকিয়ে আসে, জিব জড়িয়ে আসে। দেবায়ন অনায়াসে যেখানে যা করেছে ঠিক তারপরের দিন ওর কাছে এসে বলেছে। এমন কি মায়ের সাথে সেক্স করার পরেও ওকে এসে বলেছে। সেই কথা জেনে বুক ফেটে গেছিল কিন্তু ভালোবাসায় চিড় ধরেনি। আজ রাতে ওকে মনের কথা খুলে বলতেই হবে না হলে মরমে মরে যাবে অনুপমা।

দেবায়ন ওকে বলে, "চল এবারে রুমে যাই। কিছু কাজ বাকি আছে।"

হোটেলে ঢুকেই রিসেপশনিস্ট জানায় যে এক মহিলা ওদের জন্য কফিশপে অপেক্ষা করছে। মহিলার কথা শুনেই অনুপমার মনে প্রশ্ন জাগে, হঠাৎ করে মহিলার সাথে দেখা? কেন? দেবায়নের মুখের দিকে তাকাতেই, দেবায়ন মিচকি হেসে ওকে চুপ থাকতে বলে। জানিয়ে দেয় যে অচিরে ব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

কফিশপে ঢুকে এদিক ওদিক দেখতেই একটা পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের সুন্দরী মেয়ে ওদের দেখে হাত নাড়ায়। মেয়েটির পরনে গাঢ় নীল রঙের হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট, ছোটো হাতার গোলাপি টপ। টপের সামনের দিক বেশ উঁচু হয়ে ওদের দিকে উঁচিয়ে, মনে হল যেন দুই ভারী স্তন এখুনি পরিধান ফাটিয়ে বেড়িয়ে পড়বে। দুই পায়ে হাল্কা কালো রঙের ফিনফিনে স্টকিংস। মেয়েটির ত্বক উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের হলেও দেহের গঠন বেশ নধর আর লাস্যময়ী। প্রকৃতি দেবতা বেশ ভালো ভাবেই সাজিয়ে গুছিয়ে পাঠিয়েছে মেয়েটাকে ওদের সামনে। ঠিক যেই অঙ্গে যত টুকু প্রয়োজন তাঁর থেকে কিছুটা অধিক দিয়েই পাঠিয়েছে যাতে শরীর নিয়ে ভালোই খেলতে পারে। মেয়েটা অনুপমার মতন অত লম্বা না হলেও ভালো উচ্চতা।

মেয়েটার ঠোঁটের হাসি দেখেই অনুপমার মাথা গরম হয়ে যায়। ও না আসলে কি দেবায়ন এর সাথে রাত কাটাত? দেবায়ন এখন কি চায়? এই মেয়েটাকে সাথে নিয়ে ত্রিকোণ যৌনখেলায় মেতে উঠতে চায় নাকি? ও ভেবে এসেছিল, দেবায়নের সাথে নিভৃতে একাকী প্রেম করবে আর বুকের মাঝে জমে থাকা কথা গুলো উজাগর করবে।







পঞ্চবিংশ পর্ব (#06) 

ওরা কাছে আসতেই, অনুপমার দিকে হাত বাড়িয়ে মেয়েটা নিজের পরিচয় দেয়, "আমি মিস কস্তুরী রঙ্গনাথন, প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। গ্ল্যাড টু মিট ইউ মিসেস অনুপমা বসাক। কালকেই বসাক স্যার বলছিলেন যে মিসেস সাথে আসছেন।"

অনুপমা হতবাক হয়ে মেয়েটার সাথে হাত মিলিয়ে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে। দেবায়ন চোখ টিপে ওর মুখ বন্ধ করতে ইশারা করে। চেয়ারে বসে পরে অনুপমা আর দেবায়ন, ওদের সামনের চেয়ারে বসে কস্তূরী।

দেবায়ন, কস্তূরীকে প্রশ্ন করে, "এখানে না বসে রুমে গেলে ভালো হয় না? সেখানে ডিনারের সাথে সাথে বাকি আলোচনা করা যাবে।"

অনুপমা চোখের ইশারায় দেবায়নকে প্রশ্ন করে যে সুইটে কেন ডাকা হচ্ছে। দেবায়ন ওকে শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সুইটে ঢুকে, দেবায়ন খাবারের অর্ডার দেয় ডিনারে স্মোকড স্যালমন, লাজানিয়া আর রেড ওয়াইন। শুরুতে সাথে দামী স্কচ আর স্টারটারের জন্য ছোটো ছোটো চিংড়ি মাছ আর কাবাব।

বসার ঘরের একটা ছোটো কাউচে কস্তূরী আরাম করে বসে আর ওর সামনের লম্বা কাউচে দেবায়ন আর অনুপমা বসে। অনুপমার বুকের মাঝে হাজার প্রশ্ন ভিড় করে আসে, কেন এই মেয়েটা এখানে এসেছে, কি কাজের জন্য প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর নিযুক্ত, কি খবর নিয়ে এসেছে কস্তূরী আর সেই খবর নিয়ে দেবায়ন কি করতে চলেছে। ইতিমধ্যে রুম সার্ভিস এসে হুইস্কি আর কাবাব দিয়ে চলে যায়।

দেবায়ন একটা হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দিয়ে, কস্তূরীকে জিজ্ঞেস করে, "কাজ আশা করি শেষ হয়ে গেছে। কি খবর এনেছ?"

সামনের টেবিলের ওপরে ল্যাপটপ খুলে কস্তূরী উত্তর দেয়, "তুমি যা যা বলেছিলে সেই মতন সব খবর জোগাড় করে নিয়েছি আর তোমার কথা অনুযায়ী কাজ সেরে ফেলেছি।"

অনুপমা একবার কস্তূরীর দিকে তাকায় একবার দেবায়নের দিকে।

দেবায়ন, কস্তূরীকে জিজ্ঞেস করে, "তাহলে দেখি কি খবর এনেছ?"

ল্যাপটপ খুলে কস্তূরী বলতে শুরু করে, "প্রথম উটির হোটেলের মালিক, এন.আর.পারিজাত। আময়িক ভদ্রলোক, খুঁজে পেতে স্বভাবে কোন ফাক ফোঁকর পাওয়া গেল না। স্ত্রী ছেলে মেয়েকে খুব ভালোবাসে। এক ছেলে ক্লাস টুয়েল্ভে পড়ে আর মেয়ে ক্লাস এইটে পড়ে। তাঁর স্ত্রী, গৃহবধূ। উটি ছাড়াও, মুন্নারে একটা হোটেল আছে, দুটো হোটেল বেশ ভালোই চলে, বেশ ভালো টাকা। ওইখানে কাজ হাসিল করতে তোমার পন্থা নিতে হয়।"

দেবায়ন বলে, "কাকে হাত করেছিলে? এইচ.আর ম্যানেজার না ফাইনেন্স ম্যানেজার?"

কস্তূরী হেসে দেয়, "তুমি বলেছিলে এইচ.আর. কে হাত করতে, সেটাই করেছি। আর যেমন ভাবা তেমন কাজ। ইতিমধ্যে বেশ কিছু লোক হোটেলের কাজ ছেড়ে চলে গেছে, নতুন লোকের অভাবে রিক্রুটমেন্ট বন্ধ। আর সেই জন্য গত দুই মাসে হোটেলে খুব চাপ। খালি হোটেল, কিন্তু ফুল অকুপেন্সি দেখাতে হচ্ছে লোকের অভাবে। ওদিকে লোক নিযুক্ত হচ্ছে না এইচ.আর. এর কারনে। তুমি গেলে গত কোয়াটারের ব্যালেন্স সিট দেখতে চাইবে। আমি খবর নিয়ে দেখেছি, গত কোয়ার্টারে ওদের আয় হয়েছে চার কোটি, আর এই কোয়ার্টারে আরও কমে গেছে। তার আগের দুই কোয়ার্টারে ওদের বেশ আয় হয়েছিল। একবার দশ কোটি, আর পরের বার আট কোটি। এবারে একেবারে নেমে যাওয়াতে হাঁফিয়ে উঠেছে পারিজাত। শুধু একটু ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। যদি না পড়ে......"

দেবায়ন হেসে বলে, "না পড়লে এবারে নিস্তার নেই, আরও দুই কোয়াটার ওকে এই ভাবেই কাটাতে হবে।"

কস্তূরী হেসে বলে, "তোমার মাথা বড় প্যাঁচালো। যাই হোক যেটা ভালো বুঝবে সেটা করবে। আর হ্যাঁ, ওদের এইচ.আর. যে লোকটা, মিস্টার কার্তিকেয়ন, ওর সাথে তোমার মিট হবে পরশু দিন পুনেতে। সেই ভাবে ওকে বলা আছে।"

দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, ঠিক আছে। অনুপমা হতবাক হয়ে দেবায়নের ব্যাবসার প্যাঁচ বুঝতে চেষ্টা করে।

দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, "পুনের কি খবর? মিস্টার রজত পানিক্কর কেমন আছেন? ওর সম্বন্ধে কি জানতে পেরেছ?"

তার উত্তরে হেসে কস্তূরী বলে, "বহাল তবিয়েতে আছে বুড়ো। ও বুড়ো বেটা ঘাঘু মাল, এই বয়সেও মালের টনটন করে, কিন্তু মাল পড়ে না ঠিক জায়গায়।"

দেবায়ন হেসে ফেলে চোখ টিপে জিজ্ঞেস করে, "কেন তোমার সাথে কিছু করেছিল নাকি?"

কস্তূরীর গাল লাল হয়ে যায়, অনুপমা বুঝতে পারে শরীর কাজে লাগিয়ে কস্তূরী ওর কাজ হাসিল করেছে সেইখানে। লাজুক হেসে কস্তূরী উত্তর দেয়, "কিছুটা ঢলে পড়তে হয়েছে তবে তার সব টাকা আমি তোমার কাছ থেকে উসুল করে নেব।"

দেবায়ন হেসে দেয়, "সব পুষিয়ে দেব একবার এই তিনটে হোটেল হাতে আসুক।"

কস্তূরী হেসে মাথা নাড়িয়ে বলে, "পাঁচ লাখ টাকা এখন বাকি আছে, সেটা মনে আছে তো?"

দেবায়ন হেসে উত্তরে বলে, "হ্যাঁ বাবা হ্যাঁ, পাঁচ লাখ দেব তোমাকে। আর হানিমুনে তুমি স্কটল্যান্ড যেতে চেয়েছিলে তার বিজনেস ক্লাসের আসা যাওয়ার ভাড়া দেব।"

কস্তূরী দেবায়নের দিকে হাওয়ায় একটা চুম্বন ছুঁড়ে অনুপমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, "কিছু মনে করো না যেন।"

অনুপমা কপট অভিমান দেখিয়ে হেসে কস্তূরীকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি আবার আমার বরের সাথে ঢলে যাওনি তো?"

কস্তূরী হেসে জবাব দেয়, "না না মিসেস বসাক। আজ প্রথম মিস্টার বসাকের সাথে সামনা সামনি দেখা হচ্ছে। এতদিন ভিডিও চ্যাটিং করে গেছি আর ইমেইলে কথা বার্তা হয়েছে।"

দেবায়ন অভিমান ভরা চাহনি নিয়ে অনুপমার দিকে তাকায়। অনুপমা ওর হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কোলের মধ্যে।

কস্তূরী বলতে শুরু করে, "বুড়ো রজতের অনেক কেচ্ছা। বৌ থাকা কালিন একটা অন্য মেয়ের সাথে মেলামেশা ছিল। বৌ জানতে পারে ওদের ব্যাপার আর তারপরে আত্মহত্যা করে। এই নিয়ে কেস চলেছিল কিন্তু টাকা খাইয়ে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওর তিন ছেলের মধ্যে দুই জন বর্তমান। বড় জনের অনেকদিন আগেই গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। বাকি দুইজনের কেউই হোটেল বিজনেসে আসবে না বলে ধরে নেওয়া যায়। কারন দুই ছেলেই ডাক্তার, একজন থাকে লন্ডনে আর একজন নিউজিল্যান্ডে। বুড়ো মরলে হোটেল পাবে ওর বড় বৌমা।"

কস্তূরী চোখ টিপে হেসে বলে, "কারন বর্তমানে বুড়োর এফেয়ার ওর বড় বৌমা, মেহেকের সাথে। মেহেক, চূড়ান্ত সেক্সি মহিলা, শরীরের আনাচে কানাচে যেন খিদে। বুড়োর পিঠের পেছনে মেহেক আবার একটা এফেয়ার করে বসে আছে এক ছোকরা ছেলের সাথে। বুড়ো শুধু ওর শরীর নিয়ে পড়ে থাকে, মেহেক ছেলেটাকে ভালোবাসে কিন্তু বুড়োর কবল থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করতে পারছে না। ছেলেটার নাম শুভম, পুনের একটা আই.টি. কোম্পানিতে চাকরি করে, দিন পাঁচেক হল ক্যালিফোর্নিয়া গেছে কিছু অফিসের কাজে।"

এই বলে ল্যাপটপে বেশ কিছু ছবি দেখায়। ছবি দেখিয়ে এক এক করে পরিচয় করিয়ে দেয়, রজতের সাথে, মেহেকের সাথে আর শুভমের সাথে। বেশ কিছু ছবিতে বুড়ো রজত আর বড় বৌমা মেহেক বেশ পাশাপাশি জড়াজড়ি করে বসে। সিসিলির কোন সমুদ্র সৈকতে রজতের সাথে মেহেকের কিছু অন্তরঙ্গ ছবিও আছে। কোন ছবিতে রজতের হাত মেহেকের পিঠের খালি অংশে, কখন কাঁধে, কখন রজত আর মেহেক পরস্পরকে চুমু খাচ্ছে। এর পরে কস্তূরী, মেহেক আর শুভম বেশ কিছু অন্তরঙ্গ ছবি দেখাতে শুরু করল। বেশ কয়েকটা ছবি গোয়ার সমুদ্র সৈকতে তোলা, সেখানে মেহেক সাগরের ঢেউয়ে ছোটো বিকিনি পরে দোল খাচ্ছে আর তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করছে শুভম। কস্তূরী এরপরে দেবায়নকে বিস্তারিত ভাবে সবার ঠিকানা, সবার ফোন নাম্বার, গাড়ির নাম্বার ইত্যাদি জানালো।

সব ছবি দেখার পরে দেবায়ন হেসে বলে, "ঠিক আছে পুনের ব্যাপার আমি সামলে নেব। এবারে ব্যাঙ্গালোরের কি খবর? মিস্টার দিলিপ কি করছে?"

ইতিমধ্যে রুম সার্ভিস এসে ওদের ডিনার দিয়ে যায়। স্মোকড স্যালমনের সাথে রেড ওয়াইন খেতে খেতে ওরা গল্প করে। অনুপমা জানতে পারল যে কস্তূরী, ব্যাঙ্গালোরের মেয়ে, সাইকোলজি নিয়ে পড়াশুনা করেছে। ইচ্ছে ছিল পুলিসে যাওয়ার কিন্তু গেল না, লোকের ওপরে নজর রাখার আর মেলামেশার বড় শখ তাই একটা প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর কোম্পানিতে চাকরি নেয়। ওর কাজ ছিল রিসেপশনিস্টের, কিন্তু ওর বস, প্রদীপের নেক নজরে কিছুদিনের মধ্যে চলে আসে ছোটো ছোটো কাজ হাতে নেয়। এর পরে নিজে থেকেই আলাদা হয়ে একা কাজ করে। দেবায়নের এই কাজ ওর কর্ম জীবনের সব থেকে বড় কাজ আর সেইজন্য দেবায়নকে ধন্যবাদ জানায় ওর ওপরে বিশ্বাস করার জন্য। ওর অনেকদিনের প্রেমিক, রুদ্রনাথ নায়ার, তার সাথে বিয়ে করতে চায়। ডিনার শেষে কস্তূরী ব্যাঙ্গালোর হোটেলের মালিক দিলিপের ব্যাপারে বলতে শুরু করে।

দিলিপ বিয়ে-থা করেনি। শুধু টাকা চেনে, আর কিছু চেনে না। টাকা ছাড়া আরও দুটো জিনিসের প্রতি ওর টান। এক মদ, দ্বিতীয় মেয়ে। যেহেতু বিয়ে করেনি তাই অবাধে মেয়েদের সাথে মেলামেশা করে, রোজ রাতে বিছানায় মেয়ে চাই। দিলিপের বিয়ে না করার কারন খুঁজতে গিয়ে জানা যায় যে কলেজে পড়াকালীন কণিকা নামের একটা মেয়েকে ভালবাসত। তাঁর সাথে বিয়ে না হওয়াতে শেষ পর্যন্ত আর বিয়ে করল না। সেই থেকে শুধু মদ, মেয়ে আর টাকা নিয়ে পরে থাকে। কস্তূরী আরো খোঁজ নিয়ে দেখেছে যে কণিকা বর্তমানে বিধবা। এইখানে দেবায়ন বেশ ফাঁপরে পরে যায়। ভাবতে বসে কি ভাবে মিস্টার দিলিপকে জব্দ করা যায়।

দেবায়ন প্রশ্ন করে, "এই কণিকার ব্যাপারে কোন খোঁজ খবর নিয়েছ কি?"

কস্তূরী হেসে উত্তর দেয়, "নিশ্চয় মিস্টার বসাক। বর্তমানে কণিকা মুসৌরির কাছে একটা মিশনারি স্কুলে চাকরি করে, একটা ছোটো ছেলে আছে তাঁর।"

দেবায়ন মাথা চুলকে প্রশ্ন করে, "তারমানে দিলিপ এই কণিকার বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে কিছুই জানে না।"

কস্তূরী মাথা নাড়ায়, "না জানে না। জানলে হয়ত মুসৌরি থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতো।"

দেবায়ন ভীষণ চিন্তায় পড়ে যায়। দিলিপের কাছে টাকা আর নারী শরীরের প্রাচুর্য বর্তমান। ওকে এই সব দিয়ে ঠিক ভোলানো যাবে না। দেবায়ন, ভেবে কুল পায় না, এই ব্যাঙ্গালোরের ডিল কি করে সম্ভব হবে। চিড়িক করে জ্বলে ওঠে অনুপমার চোখ, কিন্তু কস্তূরীর সামনে চুপ করে থাকে, সময় হলে দেবায়নকে বুঝিয়ে দেবে।

ডিনার শেষে, দেবায়ন চেকবই বের করে একটা পাঁচ লাখ টাকার চেক কেটে কস্তূরীর হাতে ধরিয়ে দেয়। কস্তূরী, ল্যাপটপ গুটিয়ে, দেবায়নের হাতে একটা ছোটো মাইক্রো কার্ড দিয়ে জানিয়ে দেয় ছবি, তথ্য, কাগজ পত্রের স্ক্যান কপি, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, গাড়ির নাম্বার ইত্যাদি। যা যা দেবায়ন চেয়েছিল, সব আছে এই মাইক্রো কার্ডে।

কস্তুরী চলে যাওয়ার পরে অনুপমা পোশাক বদলের জন্য বাথরুমে ঢোকে। সারাদিনের ক্লান্তি আর সারা সন্ধ্যের উত্তেজনা ধুয়ে ফেলে শরীর থেকে। ওদিকে বিছানায় একটা বারমুডা পরে দেবায়ন তাঁর প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করে। পরনের কাপড় বদলে একটা পাতলা ফিনফিনে স্লিপ চড়িয়ে দেয় গায়ে। স্লিপের নিচে শুধু ব্রা আর প্যান্টি পরা। স্লিপ ফিনফিনে হওয়ার জন্য ভেতরের ব্রা আর প্যান্টি পরিষ্কার দেখা যায়। অনুপমার গজ দাঁতের মোহিনী হাসি আর লাস্যময়ী রুপ থেকে দেবায়ন আর থাকতে পারে না। এক ঝটকায় অনুপমার নধর তুলতুলে দেহপল্লব কোলে তুলে আছড়ে দেয় বিছানার ওপরে। দেবায়নের বলিষ্ঠ শরীরের নিচে পিষে যায় অনুপমার নধর কমনীয় দেহপল্লব। চোখ বুজে দুই হাতে দয়িতের গলা জড়িয়ে নিজেকে উজাড় করে দেয়।

হঠাৎ মনের কোণে উদয় হয় অব্যাক্ত এক বেদনা, বন্ধ দ্বারের পেছনে অনেক কিছু লুকিয়ে রাখা কথা। না জানালে ওর বুক যে আজ রাতে ফেটে যাবে কিন্তু তাঁর আগে জানতে চায় যে সত্যি কি জার্মানি গিয়ে দেবায়ন আর শ্রেয়া কিছু করেছিল?

অনুপমার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার সময়ে দেবায়ন অনুভব করে যে ওর প্রেয়সী হটাত করে ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। অনুপমার চোখের কোণ চকচক দেখে দেবায়ন প্রশ্ন করে, "এই পুচ্চিসোনা, তোর আজকে হয়েছে কি বলতে পারিস? বিকেল থেকে শুধু তোর চোখে জল দেখছি।"

অনুপমাকে বুকের ওপরে জড়িয়ে দেবায়ন চিত হয়ে শুয়ে পরে। অনুপমা ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি শোনে মন দিয়ে। তার কিছু পরে মিহি দ্বিধা ভরা কণ্ঠে প্রশ্ন করে, "আমি একটা কথা জিজ্ঞেস করব ঠিক ঠিক উত্তর দিবি?"

অনুপমার সুন্দর গোল মুখ আঁজলা করে ধরে উত্তর দেয়, "আমি তোর কাছে খোলা বই তাও কি জানতে চাস বল।"

দ্বিধা জড়ানো কণ্ঠে অনুপমা প্রশ্ন করে, "জার্মানি গিয়ে তুই আর শ্রেয়া কি কিছু করেছিস?"

দেবায়ন হেসে ফেলে অনুপমার প্রশ্ন শুনে, "না রে পাগলি মেয়ে। তোকে না জানিয়ে কি কারুর সাথে আজ পর্যন্ত শুয়েছি?"

অনুপমার মনে তাও যেন একটা প্রশ্ন থেকে যায়, "সত্যি বলছিস আমাকে না আমার মন রাখার জন্য মিথ্যে বলছিস?"

দেবায়ন ওর গালে কপালে সারা মুখে অজস্র চুমু খেয়ে বলে, "এই তোকে ছুঁয়ে বলছি। আসলে জার্মানি গিয়ে অনেক কিছু ঘটেছে যেটা ঠিক আমিও বুঝে উঠতে পারছি না তাই আর তোকে বলা হয়নি।"

অনুপমা প্রশ্ন করে, "মানে? কি হয়েছে আর কি বুঝতে পারিস নি?"

দেবায়ন জানায় যে ওরা ফ্রাঙ্কফুর্টে পৌঁছানর পরে দেবায়ন ব্যাস্ত হয়ে যায় মিস্টার হেরজোগের সাথে আর মিস্টার মেরকেলের সাথে ওদের কন্সট্রাক্সান কোম্পানির ব্যাপারে। সুপর্ণা ম্যাডাম আর দীপঙ্করদা, জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের আইটি ডিপার্টমেন্ট আর মারকেটিং ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ব্যাস্ত হয়ে যায়। প্রথম কয়েক দিন শ্রেয়া সবার সাথেই ছিল, ইন্দ্রনীলও সাথেই ছিল। দিন দুই যেতে না যেতেই শ্রেয়া আর ইন্দ্রনীলের ব্যাবহার ওর চোখে লাগে। ইন্দ্রনীলের সাথে এই অন্তরঙ্গ ব্যাবহারের ব্যাপারে বেশ কয়েকবার ওকে জিজ্ঞেস করেছে এই ব্যাপারে, কিন্তু শ্রেয়া প্রতিবার সঠিক জবাব এড়িয়ে উত্তরে জানিয়েছিল যেহেতু ইন্দ্রনীল ওদের এই ব্যাবসা আনতে সাহায্য করেছে তাই ওর সাথে ভালো ব্যাবহার করছে। শ্রেয়া খুব চালাক মেয়ে, আর ওর মাথার মধ্যে কোন এক অভিসন্ধি চলছে, কিন্তু কোনদিকে ওর পা চলছে সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারল না। একরাতে দেবায়ন ওকে খেলাতে চেয়েছিল, ডিনারের পরে নিজের রুমে নিয়ে হুইস্কি খেতে দিয়েছিল কিন্তু শ্রেয়া সেই টোপ গেলেনি। খুব সুন্দর ভাবে এড়িয়ে গেছে দেবায়নকে।

সব শুনে অনুপমার বুক ফেটে চৌচির হয়ে যায়। প্রথমে নিজেকে ধিক্কার জানায় যে রূপকের কথায় ভেসে গিয়ে রূপকের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিল, আর দ্বিতীয় ওই জলপাইগুড়ির কথা লুকিয়েছে।

অনুপমার চোখের বেদনা দেবায়ন ঠিক পড়ে ফেলে আর প্রশ্ন করে, "এই বারে ঠিক ঠিক বলত কি হয়েছে তোর?"

অনুপমা মাথা নিচু মুখ ঢেকে কাঁপা গলায় বলে, "আমি আর রূপক একদিন......"

হটাত করে দেবায়নের মাথা ঝনঝন করে ওঠে। অনুপমার মুখ নিজের দিকে তুলে দেখে যে ওর চোখ বন্ধ আর চোখের কোল থেকে একটা সরু জলের দাগ। দেবায়ন বুঝতে পারে যে কুণ্ঠাবোধে অনুপমার বুক ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পাপ পুন্য, ভালোবাসা, প্রতারণা সব কিছু মানুষের মনের বিভিন্ন অভিব্যাক্তি। ওর অনুপমা ওকে ভাল না বাসলে বুক ঠুকে এই কথা বলতে পারত না। যদি লুকিয়ে রাখত তাহলে হয়ত দেবায়ন কোনদিন জানতেও পারত না ওদের মাঝে কি হয়ে গেছে।

অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকে দেবায়ন, তারপরে ওর গালে হাত দিয়ে বলে, "এতদিন চুপ করে ছিলিস কেন?"

অনুপমার গলা শুকিয়ে আসে, দুই চোখে শ্রাবনের বারিধারা, "জানিনা, বলতে সাহস পাচ্ছিলাম না। তোর সামনে করা এক জিনিস আর পেছনে করা অন্য জিনিস।"

দেবায়ন বলে, "সে তো আমিও অন্যের সাথে শুয়ে এসেছি, তাতে এত মাথা ব্যাথা কেন? লুকিয়ে রাখলেই পারতিস। তোকে দেখে অথবা রূপককে দেখে আমি এবারে সন্দেহ করতে পর্যন্ত পারিনি।"

অনুপমা ভাষা হারিয়ে চোখ বন্ধ করে ওর বুকে মাথা গুঁজে অঝোরে কাঁদে, "আমি আর পারছি না। রোজ মনে হত কেউ যেন আমাকে চড় মারছে। আমি তোকে খুব ভালোবাসি, বাকি তোর ওপরে......"

দেবায়ন ওর চোখের জল মুছে ওকে সান্তনা দিয়ে বলে, "শোন পুচ্চিসোনা, আমি তোকে ভালোবাসি আর তুই আমাকে ভালোবাসিস। আমাদের মাঝে সেটা বেঁচে থাকলেই সব থেকে বড়। জানি কিছু কথা বললে মনে হবে এক বিজ্ঞ ব্যাক্তির কথা, কিন্তু এই দেহ, এই রুপ কতদিন ধরে রাখা যায়? কেউ চিরকুমার নয়। যেখানে হৃদয়ের মিল থাকে সেখানে কোনদিন শারীরিক আনন্দ ফলপ্রসু হয় না। আজ আমরা এর সাথে ওর সাথে সেক্স করে, মদ খেয়ে, টাকা উড়িয়ে নেচে বেড়াচ্ছি। কিন্তু একসময়ে এই সব তেতো হয়ে যাবে। আসল প্রেম হচ্ছে একসাথে বুড়ো হওয়া, পরস্পরের সাদা চুলে রঙ মাখিয়ে দেওয়া, নকল দাঁত জলের গ্লাসে রাখা, চশমা খুঁজে দেওয়া, তখন তুই থাকবি আমার পাশে আর আমি তোর পাশে। গতকাল একটু বয়ে গিয়ে রূপকের সাথে কি করেছিস, অথবা আগামী কাল অন্য কারুর সাথে শুয়ে কাটাবি সেই নিয়ে আমার বিশেষ মাথা ব্যাথা নেই। যেদিন বুঝব যে সত্যি তুই আর......"

কথা শেষ করার আগেই দেবায়নের ঠোঁটের ওপরে হাত চেপে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলে অনুপমা, ঠোঁটে ঠোঁট চেপে নিজেকে উজাড় করে দেয় দেবায়নের বাহুপাশে। সেই রাতে দুই নরনারী প্রেমের সুখের সাগরে অনন্ত কালের জন্য ভেসে যায়। প্রথম মিলনের চেয়েও সেই রাতের মিলন ওদের যেন আরও মধুর মনে হয়। অনুপমার মনে হয় যেন হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা আবার খুঁজে পেয়েছে।






কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment