CH Ad (Clicksor)

Thursday, August 21, 2014

পাপ কাম ভালোবাসা_Written By pinuram [চতুর্বিংশ পর্ব (চ্যাপ্টার ০৭ - চ্যাপ্টার ০৮)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




পাপ কাম ভালোবাসা
Written By pinuram







চতুর্বিংশ পর্ব (#07)

ওদের আওয়াজ পেয়ে পারমিতা নিচে নেমে আসে।

পারমিতা মেয়েকে জিজ্ঞেস করে, "কেমন কাটালি?"

অনুপমা মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, "দারুন।"

পারমিতা বলে, "শ্রেয়া ড্রিঙ্ক করে একদম বুঁদ হয়ে গেছে দেখছি।"

অনুপমা হেসে ফেলে, "হ্যাঁ, অনেকদিন পরে ড্রিঙ্ক করেছে তাই আর হুঁশ নেই।"

নিজের রুমে ঢুকে অনুপমা দেখে যে, পায়েল নেই। প্রথমে একটু অবাক হয়ে যায়, তারপরে মা'কে জিজ্ঞেস করে পায়েলের কথা।

পারমিতা অঙ্কনের রুমের দিকে দেখিয়ে মিচকি হেসে বলে, "আমি রুমে ঢুকে যাওয়ার পরে পায়েল চুপিচুপি তোর ভাইয়ের রুমে গেছে।"

অনুপমা চোখ বড়বড় করে জিজ্ঞেস করে, "তুমি জানতে আর কিছু বলো নি?"

পারমিতা হেসে ফেলে মেয়ের কথা শুনে, "আশা করি এই বাড়িতে সবাই প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে গেছে। এই বাড়ির হবু বৌমা তো, এই টুকু ছাড় পেতেই পারে।"

মায়ের এই উদার রুপ দেখে খুব ভালো লাগে, পারমিতার গালে একটা চুমু খেয়ে বলে, "তুমি সত্যি অনেক বদলে গেছ।"

পারমিতা মেয়ের গাল টিপে বলে, "আর আদিখ্যেতা দেখাস না, যা রুমে যা। তোর ফোন না পেয়ে হ্যান্ডসাম ফোন করেছিল আমাকে।"

অনুপমার মাথায় হাত, "ইসসসস...... একদম ভুলে গেছি। এখুনি ফোন করছি ওকে।"

পারমিতা বলে, "এখন রাত তিনটে বাজে এখন আর করতে হবে না। তোর বাবা বিন্সার ফিরে এসেছে সেটা জানাতে ফোন করেছিল। কাল সকালে ওরা দেরাদুন যাবে।"

অনুপমা, "আচ্ছা, ওকে গুড নাইট।"

তারপরে নিজের রুমে ঢুকে পড়ে অনুপমা। পায়েল নেই, একটু খালি খালি মনে হয় রুম, তাও ভালো লাগে এই ভেবে যে পায়েল নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করছে।

সকালে খাবার টেবিলে সবার সাথে দেখা। পায়েল কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি, নিচে নেমে শ্রেয়া আর রূপক কে দেখে অবাক হয়ে যায়। শ্রেয়া জানায় যে গত রাতে ওরা সবাই মিলে ডিস্কো গিয়েছিল, পায়েল অনুপমার দিকে তাকিয়ে একবার দেখে। এমন ভাব যেন কেন ওকে বলা হয় নি। পায়েলের খোশ মেজাজ দেখে সবার বেশ ভালো লাগে। খাবার টেবিলে সবাই বসে, একথা সে কথার পরে অনুপমার দিকে রূপক চোখ টিপে ইশারা করে জার্মানির কথা বলার জন্য।

স্যান্ডউইচের ওপরে মেয়নিজ মাখাতে মাখাতে শ্রেয়া রূপককে জিজ্ঞেস করে, "তোমার ব্যাগ গোছানো হয়ে গেছে? আগামী সপ্তাহে আমরা যাচ্ছি।"

রূপক অনুপমার দিকে তাকায়, আর অনুপমা সেই প্রশ্নের উত্তরে বলে, "তুই কাল রাতে কি করেছিস তোর মনে আছে?"

শ্রেয়া হাজার প্রশ্ন নিয়ে অনুপমার দিকে তাকিয়ে থাকে। অনুপমা বলে, "গত রাতে তুই আর রূপক বেশ জড়াজড়ি করে নেচেছিস।"

শ্রেয়া রূপককে একটু কাঁধের ঠ্যালা দিয়ে বলে, "সত্যি এর চেয়ে বেশি কিছু করনি তো?"

রূপক কি উত্তর দেবে ভেবে পায়না। অনুপমা ওকে বলে, "তোর পাসপোর্ট কাল মনীষাকে দিয়ে দিস। ইতিমধ্যে এয়ার বার্লিনের থেকে ইনভিটেসান চলে আসার কথা। ওটা চলে এসে ভিসা পেতে অসুবিধে হবে না।"

জুসের গ্লাসে চুমুক দিয়ে শ্রেয়াকে জিজ্ঞেস করে, "তোরা বিয়ে কবে করছিস?"

রূপক আর শ্রেয়া দুইজনে ওর প্রশ্নে অবাক হয়ে যায়। অনুপমা হেসে বলে, "এত অবাক হওয়ার কি আছে। একদিন বিয়ে করবি, সেটাই জানতে চাইছি কবে করবি।"

রূপক, "আমাদের বিয়ে আর......"

অনুপমা ওকে চোখ টিপে চুপ করতে বলে আর শ্রেয়াকে জিজ্ঞেস করে, "তোরা হানিমুনে কোথায় যেতে চাস?"

শ্রেয়া রূপকের হাত খানা বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে বলে, "যেখানে নিয়ে যেতে চাইবে সেখানে যেতে রাজি আমি।"

অনুপমা দুইজনের দিকে তাকিয়ে বলে, "লুক্রেন, সুইস আল্পস না মরিশাস না রোম? কোথায় যেতে চাস?"

শ্রেয়া ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, "কেন কেন, তুই কি আমাদের হানিমুন ফাইন্যান্স করবি নাকি?"

অনুপমা বলে, "প্লেনের বিজনেস ক্লাসের ভাড়া দিতে পারি।"

শ্রেয়া বলে, "সেটাও অনেক। যাই হোক, তোর মাথায় অন্য কিছু একটা চলছে।"

ধরা পরে গেছে অনুপমা, তাই হেসে বলে, "অফিসে অনেক কাজের চাপ।"

শ্রেয়া বলে, "হ্যাঁ অনেক কাজের চাপ, আমার শ্বাস নেওয়ার সময় নেই।"

অনুপমা বলে, "সবার কাঁধে অনেক কাজের চাপ। তোকে অনেকদিন পরে কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে দেখে বড় ভালো লাগছে। তুই এক কাজ কর, তুই আর ইন্দ্রনীল আগে জার্মানি চলে যা।"

শ্রেয়া অবাক চোখে প্রশ্ন করে, "মানে?"

অনুপমা বলে, "দ্যাখ, আগে তুই ওখানে গিয়ে প্রোডাক্ট নিয়ে কথাবার্তা বলতে শুরু কর। ডিলের ব্যাপারে দীপঙ্করদা সব কাগজ তৈরি করে পৌঁছে যাবে আর টেকনিকালের জন্য সুপর্ণা ম্যাডাম পৌঁছে যাবে। তুই ততদিন ওখানে একটু ঘুরে বেড়িয়ে নিতে পারবি। ডিল ফাইনাল করতে তোর সাইন চাই, সব কিছু ফাইনাল করে সবাইকে নিয়ে ফিরে আসিস।"

শ্রেয়া রূপকের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, "এই প্রোজেক্টে তুমি নেই?"

রূপক মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, "না সোনা, এই প্রোজেক্ট আমার নয়। এটার জন্য যে পরিমানে অভিজ্ঞতা দরকার সেটা আমার নেই। এই প্রোজেক্ট সুপর্ণা ম্যাডামের অধীনে হবে।"

শ্রেয়া জিজ্ঞেস করে, "তুমি যাবে কি যাবে না, ঠিক করে বল।"

রূপক আমতা আমতা করে বলে, "না ডার্লিং, আমি যেতে পারছি না।"

শ্রেয়া মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, "তাহলে আমি যাচ্ছি না, প্রোডাক্টের জন্য আমি নিরঞ্জনকে পাঠিয়ে দেব, আর ডিল সাইন করার জন্য অনু চলে যাবে।"

অনুপমা হেসে ফেলে শ্রেয়ার অবস্থা দেখে, "এই পাগলি মেয়ে, মাত্র সাত দিন। শোন এক কথা, এই প্রোজেক্টের ওপরে আমাদের অনেক কিছু নির্ভর করছে, তুই এই কয়দিন ডুবে ছিলিস ডিজাইনিংয়ে, তুই ওদের আইটি ডিপার্টমেন্টের সাথে কথা বলেছিস। এই সময়ে তুই না গেলে পুরো ডিজাইন কেঁচিয়ে যাবে আর শেষ পর্যন্ত আমাদের হাত থেকে প্রোজেক্ট চলে যাবে। তুই কি চাস যে আমরা শুধু ওয়েবসাইট নিয়ে পরে থাকি?"

শ্রেয়া চুপচাপ একবার অনুপমার দিকে তাকায় একবার রূপকের দিকে তাকায়। অনুপমা বলে, "কি ভাবছিস? তোকে আমি চারশো ইউরো এক্সট্রা দেবো, মন খুলে শপিং করিস।"

কেনাকাটার আর টাকার অঙ্ক শুনে শ্রেয়ার চোখ চকচক করে ওঠে, মাথা নেড়ে খুশি হয়ে জানিয়ে দেয় যে যেতে রাজি আছে। রূপক বুঝিয়ে বলে যে কাজের চাপের জন্য যেতে পারবে না। শ্রেয়া জানিয়ে দেয় যে একাই যাবে। এত ছোটো বয়সে, এত বড় কাজের দায়িত্ত পেয়ে শ্রেয়া খুশি, নিজেকে বেশ বড় বড় মনে হয়।

কিছুদিনের মধ্যে এয়ার বার্লিনের কাছ থেকে আমন্ত্রন পত্র চলে আসে আর সবার ভিজা তৈরি হয়ে যায় সময় মতন। শ্রেয়া আর ইন্দ্রনীল কয়েক দিন পরে ফ্রাঙ্কফুর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আর তার কিছুদিন পরে সব কাগজ পত্র তৈরি করে দীপঙ্করদা আর সুপর্ণা ম্যাডাম ফ্রাঙ্কফারটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। শ্রেয়া চলে যাওয়ার পরে অফিসে বেশ ফাঁকা ফাঁকা মনে হয় অনুপমার। দেবায়ন নেই, শ্রেয়া নেই, পায়েল কোনদিন আসে, কোনদিন আসেনা। অনুপমা পায়েলকে অফিসে আসতে বিশেষ জোর করে না, কারন এই বছর ফাইনাল পরীক্ষা দেবে। বেশ কয়েক দিন কেটে যায় এই ভাবে।

সেদিন বিকেলে অনুপমা, কোম্পানির ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট দেখছিল। একাউন্টে অতিরিক্ত দুই কোটি টাকা দেখতে পেয়ে ভাবতে বসে যে কোথা থেকে এলো এতো টাকা, অঙ্ক মেলে না কিছুতেই। ওদিকে দেবায়নের আসতে এখন দিন তিনেক দেরি। ডালহৌসি গেছে বাবার সাথে, আবার ফোন পাওয়া যাচ্ছে না। অফিসে আরো কিছু কাজ বাকি পড়েছিল, সেই সব সারতে সারতে রাত হয়ে যায়। ফোন করে মামনিকে বলে দেয় যে রাতে খেতে যেতে পারবে না। মন পড়ে থাকে দেবায়নের কাছে, তিন দিন পরে ফিরবে, তিন দিন যেন তিন বছর মনে হয়। হৃদয় বাগ মানে না, মিলনের কথা চিন্তা করলেই শরীর চনমন হয়ে ওঠে। কঠিন বাহুপাশে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার জন্য প্রান ছটফট করে ওঠে। ভাবতে ভাবতেই সারা শরীর কাঁটা দিয়ে ওঠে, জানু মাঝে শিরশির শুরু হয়ে যায়। কফি কাপে চুমুক দিয়ে ওদের পুরানো ছবি খুলে বসে পড়ে।

রাত আটটা বাজে, ব্যাগ গুছিয়ে ড্রাইভারকে ফোন করে বলে গাড়ি বের করতে। কেবিন থেকে বেড়িয়ে দেখে অফিস খালি, সার্ভার অপারেশান টিমের কিছু ছেলেরা শুধু রয়েছে। করিডোরের এক কোনায় রুপকের কেবিনে তখন লাইট জ্বালা দেখে থমকে দাঁড়ায়। এত রাতে এখন বাড়ি যায়নি ছেলেটা, কি করছে। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে দেখে যে রূপকের হাতে একটা গ্লাস আর ল্যাপটপ খুলে বসে।

অনুপমা ওকে জিজ্ঞেস করে, "কি ব্যাপার, বাড়ি যাবি না?"

রূপক খুব মনোযোগ সহকারে প্রোগ্রামিংয়ে ব্যাস্ত ছিল, হঠাৎ অনুপমার গলা পেয়ে থতমত খেয়ে যায়। মুখ তুলে তাকিয়ে বলে, "না মানে এই যাচ্ছি।"

রূপকের চেহারা বেশ ক্লান্ত, মাথার চুল উস্কখুস্ক দেখে অনুপমার মন কেমন করে ওঠে। শ্রেয়া থাকলে হয়ত ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিত অথবা ওকে সান্ত্বনা দিত। এদিকে দেবায়ন নেই যে ওকে শান্ত করে ওদিকে শ্রেয়া নেই যে রূপককে শান্ত করে।

অনুপমা কাঁধের ব্যাগ নামিয়ে রূপকের পেছনে দাঁড়িয়ে বলে, "তোকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে, কি হয়েছে?"

রূপক হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে, "কিছু না, এমনি। এই কাজের চাপ আর কি।"

অনুপমা ওর মাথার চুলে আঙুল ডুবিয়ে টিপে দিতে দিতে বলে, "অফিসে হুইস্কি খাচ্ছিস?"

রূপক হেসে ফেলে, "এখন আমার সময়, অফিস ছুটির পরেই খাচ্ছি। যাই হোক তোর এত দেরি কেন?"

অনুপমা ওর গ্লাস থেকে একটা চুমুক দিয়ে বলে, "কিছু না, একটু কাজ বাকি ছিল, তাই দেরি হয়ে গেল।"

রূপক ল্যাপটপ ছেড়ে, গ্লাসে আরও একটু হুইস্কি ঢেলে নেয়। অনুপমার পাতলা নরম আঙুল ওর মাথার চুলের মধ্যে বিলি কেটে আরাম দেয়। আরামে রূপকের চোখ বুজে আসে। অনুপমা ঝুঁকে পরে রূপকের কাঁধের ওপরে, দুই হাতে দিয়ে ওর কাঁধের পেশি টিপতে শুরু করে। আরামে শরীর এলিয়ে চেয়ার হেলান দিয়ে বসে রূপক। কাঁধে মালিশের মাঝে মাঝে হুইস্কির গ্লাসে আরও দুটো চুমুক দেয় অনুপমা। রক্তে নেশা লাগতেই, রক্ত চনমন করে ওঠে অনুপমার। অনুপমা রূপকের পিঠের ওপরে ঝুঁকে পরে, কাঁধে মাথায় ওর রেশমি চুলে ঢেকে যায়। রূপক মাথা পেছনে হেলিয়ে দেয় আর অনুপমার মুখ ওর মুখের সামনে এসে যায়। চোখের সাথে চোখের তারা নিবদ্ধ হয়ে যায় হঠাৎ করে।

অনুপমা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, "কাকে ভাবছিস তুই?"

রূপক হাত উঁচু করে অনুপমার গলা জড়িয়ে নিজের মুখের ওপরে টেনে নামিয়ে দিয়ে বলে, "এখন অন্য কারুর কথা চিন্তা করছি না।"

রূপকের নাকে ভেসে আসে অনুপমার শরীরের মনমাতানো গন্ধ। রক্তে লাগে ঢেউ, ঠোঁট খুলে আলতো করে অনুপমার থুতনিতে একটা ছোটো চুমু খায়।

ভেজা ঠোঁটের পরশে অনুপমার শুকনো শরীর চনমনে হয়ে ওঠে। নরম স্তন চেপে ধরে রূপকের ঘাড়ের ওপরে। রূপক হাত পেছনে নিয়ে এসে অনুপমার কোমর জড়িয়ে ধরে। অনুপমা ঝুঁকে পরে ওর কপালে, নাকের ওপরে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।

রূপক ওর হাত ধরে সামনে নিয়ে এসে বলে, "বড় একা লাগছে একটু জড়িয়ে ধরবি?"

অনুপমার চোখ আধাবোজা হয়ে দুই হাত মেলে ওকে আহ্বান জানায়, "চলে আয়।"

রূপক দাঁড়িয়ে অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে। অনেকদিনের অভুক্ত শরীর অনুপমার, কঠিন বাহুপাশে নিজেকে এলিয়ে দিতে বড় ভালো লাগে। রূপক দুই হাতে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে অনুপমাকে, ঘাড় গুঁজে দেয় অনুপমার ঘাড়ে, নরম গালের ওপরে কর্কশ গাল থেকে কামাগ্নির স্ফুলিঙ্গ ঠিকরে বের হয়। রূপকের হাত ধীরে ধীরে অনুপমার পিঠের ওপরে আদর করে বেড়ায়। অনুপমা দুই হাতে রূপককে জড়িয়ে তৃষ্ণার্ত শরীরের তেষ্টা মেটাতে উন্মুখ হয়ে ওঠে। রূপকের ঠোঁট অনুপমার গাল ছুঁয়ে, ঠোঁটের দিকে অগ্রসর হয়। আবেগে দুই চোখ বন্ধ হয়ে যায় অনুপমার, ঠোঁট খুলে উষ্ণ শ্বাসে রূপকের মুখমন্ডল ভরিয়ে দেয়। দুই হাতে আঁজলা করে ধরে অনুপমার মুখ আর ঠোঁটের ওপরে ঠোঁট মিলিয়ে অধর সুধা আকণ্ঠ পান করে। দুই বিরহ কাতর নরনারীর শরীরে নেশার আগুনের সাথে সাথে মিলনের আগুন জ্বলে ওঠে।

রূপকের হাত দেহের মাঝে নেমে এসে জামার ওপরে দিয়েই অনুপমার এক পীনোন্নত স্তন মুঠোর মধ্যে নিয়ে আলতো চাপ দিয়ে আদর করতে শুরু করে দেয়। অনুপমার শরীর জ্বলে ওঠে, চনমন করে ওঠে সারা গায়ের রক্ত। বুক উঁচু করে রূপকের হাতের মধ্যে নিজের স্তন ঠেলে দেয়। রূপকের এক হাত নেমে আসে, জিন্সে ঢাকা পাছার ওপরে। অনুপমার এক স্তন ওর হাতের মুঠোয় অন্য স্তনের ওপরে রূপকের মুখ। এক হাতে নরম পাছা টিপে আদর করে দেয়। অনুপমার শ্বাসে লাগে কামনার আগুন, মাথা পেছনে হেলিয়ে সুখের সাগরে ভেসে যেতে প্রস্তুত। জানুসন্ধি মাঝে তিরতির করে রস বইতে শুরু করে দিয়েছে।

অনুপমার হাত নেমে আসে রূপকের প্যান্টের সামনে, কঠিন লিঙ্গের ওপরে। কঠিন লিঙ্গের ওপরে হাত ছোঁয়াতেই শরীর কেঁপে ওঠে অনুপমার। রূপক ওকে ঠেলে টেবিলের ওপরে বসিয়ে দেয়। দুই জানু মেলে দিয়ে জানু মাঝে দাঁড়িয়ে পরে রূপক। ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলে উন্মাদের মতন পরস্পরকে চুম্বন করতে থাকে। সেই সাথে রূপকের হাত নেমে আসে জিন্সে ঢাকা জানুসন্ধির ওপরে। জিন্সের ওপর দিয়েই অনুপমার যোনিদেশে হাত চেপে ধরে।

যোনি বেদীর ওপরে হাতের চাপ অনুভব করতেই কেঁপে ওঠে তৃষ্ণার্ত রমণী। পরনের প্যান্টি যোনি রসে ভিজে, যোনি বেদীর ওপরে লেপটে গেছে। হঠাৎ করেই নেশা ঘোর কেটে যায়, রূপকের লিঙ্গের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।

রূপকের হাত চেপে ধরে মাথা নাড়িয়ে অস্ফুট স্বরে রূপকের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, "না রূপক, আমাদের করা উচিত নয়।"

রূপক বুঝতে পারে নেশার ঝোঁকে কি করতে চলেছিল। বিদ্যুৎস্পর্শ করার মতন এক ঝটকায় অনুপমাকে ছেড়ে দাঁড়ায়। মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, "সরি অনুপমা, সরি। মদের ঝোঁকে...... সত্যি বলছি আমি দুঃখিত। প্লিজ কিছু মনে করিস না।"

অনুপমার চোখ মুখ লাল, মাথার চুল অবিন্যাস্ত, পরনের প্যান্টি ভিজে উঠেছে তাও নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁড়িয়ে পরে। রূপকের চোখের দিকে তাকাতে পারছে না। দুইজনেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ।

অনুপমা ল্যাপটপের ব্যাগ উঠিয়ে, কেবিনের দরজা খুলে বাথরুমে ঢুকে পরে নিজেকে ঠিক করার জন্য। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করে, যা করতে যাচ্ছিল, সেটা কি ঠিক না ভুল? এটা কি দেবায়নের সাথে প্রতারণা? দেবায়ন ওর পেছনে অনেকের সাথে যৌন সঙ্গম করেছে, এবং পরে বলেছে। অনুপমা সব মেনে নিয়েছে, কিন্তু ওর যদি পা ফস্কাত তাহলে কি দেবায়ন মেনে নিতে পারত? জানে না এর উত্তর।

অফিস থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার আগে রূপকের কেবিনে টোকা মেরে নিচু কণ্ঠে বলে, "বেশি হুইস্কি খাস না আর তারাতারিও বাড়ি ফিরিস। বাইক চালাতে না পারলে একটা ফোন করে দিস, আমি গাড়ি পাঠিয়ে দেব।"

দরজা খুলে দেখল না যে, রূপক মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে।

এর পরের বেশ কয়েকদিন দুইজনের মধ্যে কোন কথা নেই, সামনে এলেই পরস্পরকে এড়িয়ে যায়। এই আচরন অবশ্য কারুর চোখে ঠিক ধরা পরে না। অফিসের বাকি কর্মীরা উচ্চ পদস্থদের ব্যাপারে বিশেষ নাক গলায় না। অনুপমা এই ঘটনা দেবায়নের কাছ থেকে লুকিয়ে যায়।







চতুর্বিংশ পর্ব (#08)

দেবায়ন আসবে, অনুপমা বেশ খুশি। এক ঘন্টা আগেই এয়ারপোর্টে পৌঁছে যায় গাড়ি নিয়ে। এয়ারপোর্ট থেকে দেবায়ন সোজা নিজের বাড়ি যাবে আর বাবা বাড়ি ফিরে আসবে। অনুপমার ইচ্ছে রাতে দেবায়নের সাথে কাটায়, কিন্তু মামনি থাকলে সেটা সম্ভব নয়। এক মাস পরে বাড়ি ফিরছে, তাই নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। রাস্তা থেকে একটা ফুলের তোড়া কেনে। এরাইভালে দাঁড়িয়ে বারেবারে ঘড়ি দেখে, সময় যেন আর কাটতে চায় না, ঘড়ির কাটা কেন যে বিকেল চারটায় এসে থামে না সেটাই চিন্তা করে। ওদিকে মামনি অফিসে হাফ-ডে করে বাড়ি ফিরে রান্না চাপিয়ে দিয়েছে।

কিছু পরে ব্যাগ হাতে দেবায়ন কে আর বাবাকে বেড়িয়ে আসতে দেখে অনুপমা লাফিয়ে ওঠে। পাশে বাবা তাই মনের উচ্ছ্বাস সামলে রেখে ফুলের তোড়া দেবায়নের হাতে তুলে দিয়ে পাশে দাঁড়ায়। দেবায়ন ওর কাঁধে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে নেয়। এতদিন পরে অতি পরিচিত হাতের ছোঁয়া, অতি পরিচিত গভীর কণ্ঠস্বর, সব মিলিয়ে মনে হয় গলে পড়ে যাবে অনুপমা।

অনুপমা মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করে, "কেমন আছিস?"

দেবায়ন হেসে উত্তর দেয়, "কেমন দেখছিস?"

বুকের ওপরে চিমটি কেটে বলে, "একটু রোগা হয়ে গেছিস মনে হচ্ছে।"

দেবায়ন ওর মাথার ওপরে নাক ঘষে ফিসফিসিয়ে বলে, "তুই ছিলিস না তাই রোগা হয়ে গেছি। এবারে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।"

দেবায়ন সামনে বসে আর মিস্টার সেনের সাথে গাড়ির অনুপমা পেছনে বসে। পথে যেতে যেতে বিগত এক মাসের হোটেলের গল্প করে। কখন ডালহৌসি, কখন বিন্সার, কখন সোলাং ভ্যালি। এবারে পুনে, ব্যাঙ্গালোর আর উটি যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এই তিন জায়গায় গিয়ে হোটেলের মালিকানা স্বতঃ কেনা হয়ে গেছে। ওদের মালি কিছু দিনের মধ্যে কোলকাতা আসবে কাগজ পত্র ঠিক করে, সই সাবুদ নিতে। দেবায়ন চায় নি, মিস্টার সেন পারমিতাকে নিয়ে হোটেলের কাজে আবার বের হয়, তাই হোটেলের মালিকদের কোলকাতা ডাকা হয়েছে। কয়েক মাস পরে আবার বের হতে হবে, ব্যাঙ্গালোর, পুনে আর উটির উদ্দেশ্যে। তবে এইবারে একটা ভালো কাজ হয়েছে, মানালিতে মিস্টার সেনের এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে যায়, তিনি নাগগার নামের একটা জায়গায় একটা রিসোর্ট বানাতে চায়, জায়গা তার আছে, আপেল বাগানের বেশ কিছু অংশে তিনি রিসোর্ট বানাতে চান। টাকা বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে মিস্টার সেন এবং সেই সাথে মালিকানা। এই হোটেলের কন্সট্রাকশন নিজের কোম্পানি দ্বারা করাবে। এই সব কথাবার্তায় সময় কেটে যায়। অনুপমা আর দেবায়নকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে, গাড়ি মিস্টার সেনকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।

এক মাসে পরে ছেলেকে দেখতে পেয়ে দেবশ্রী ভারী খুশি। এর আগে এতদিন বাইরে থাকেনি, হ্যাঁ ছেলে ছেড়ে একবার দিন পনেরোর জন্য দিল্লী যেতে হয়েছিল, কিন্তু দেবায়ন কখন মা ছাড়া অন্যের সাথে বাইরে যায় নি। মানালি থেকে মায়ের জন্য আনা শাল, অনুপমার জন্য আনা একটা ফারের জ্যাকেট, নিজের জন্য আর অঙ্কনের জন্য জ্যাকেট ইত্যাদি উপহার গুলো খুলে দেখায়। দেবশ্রী ভারী খুশি, ছেলেকে পেয়ে, সেই সাথে অনুপমা।

অনুপমা বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে রাতে মামনির বাড়িতেই থেকে যাবে। এতদিন পরে কাছে পেয়েছে, তাই এক মুহূর্তের জন্য চোখের আড়াল করতে নারাজ। সারাক্ষণ মন আনচান করে কখন একটু নিবিড় সান্নিধ্য পাবে ওই পেশিবহুল ছাতির ওপরে। ওর আলিঙ্গনে বদ্ধ হয়ে বুকের ওপরে মাথাটা রেখে ঘুমাতে পারবে। রাতের খাওয়ার পরে দেবশ্রী শুতে চলে যায়, অনুপমা আর দেবায়ন সোফায় বসে টিভি দেখে। দেবশ্রী একবার অনুরোধ করেছিল যাতে অনুপমা তাড়াতাড়ি শুতে আসে, মনে মনে জানতো যে অনুপমা দেবায়নের রুমেই রাত কাটাবে।

সোফায় বসে অনুপমার কোমরে হাত জড়িয়ে কাছে ডেকে নেয়। দুই পা মুড়ে, শরীর কুঁকড়ে দেবায়নের বাহু মাঝে নিজেকে সমর্পণ করে দেয়। মত্ত সর্পিণীর মতন বিশাল দেহ কাঠাম জড়িয়ে ধরে, নিজেকে উজাড় করে দেয়। দেবায়ন ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে, আকন্ঠ অধর সুধা পান করে। ফুলের মতন নরম দেহটাকে কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে যায়। বহু দিন অভুক্ত ষাঁড়ের মতন ঝাঁপিয়ে পরে প্রেয়সীর কোমল দেহপল্লবের ওপরে, দুই হাতে পিষে নিঙরে একাকার করে দেয় কোমল দেহ। বুকের রক্ত মিলনেচ্ছুক, বেশি সময় নেয় না দুই কপোত কপোতী নিজেদের কে নিজেদের কাছে উজাড় করে মেলে ধরতে। সারা রাত ধরে ওদের মিলন খেলা চলে, কখন অনুপমা ওপরে, কখন দেবায়ন ওপরে, এইভাবে মিশে যায় প্রেমের খেলায়।

পরের দিন সকালে দুইজনে অফিসে হাজির। এই একমাসে অনেক কিছু বদলে গেছে। বেশ কয়েক জনের নতুন মুখ দেখতে পায়, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে নতুন কয়েকজন ছেলে নিযুক্ত হয়েছে, প্রোডাক্ট ডিজাইনিংয়ে বেশ কয়েকজন মেয়ে নিযুক্ত হয়েছে।

প্রথমেই রূপকের কেবিনের দরজা ঠেলে ঢুকে পরে দেবায়ন, "কি রে শালা কি ব্যাপার। বৌ নেই বাড়া হাতে কি করছিস?"

রূপক থতমত খেয়ে যায়, তারপরে চেয়ার ছেড়ে উঠে দেবায়নকে জড়িয়ে ধরে, "কি রে বাল, কোন হিল্লি দিল্লী করে বেড়াচ্ছিস?"

সেদিনের পর থেকে অনুপমার আর রূপকের মধ্যে একরকম ভাববাচ্যে কথাবার্তা। এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারেনি দুইজনে। দেবায়নের পেছনে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আড় চোখে রূপকের দিকে তাকায়, রূপক চোখ নামিয়ে দেয়।

দেবায়ন মজা করে রূপককে জিজ্ঞেস করে, "কি রে বাল, বৌ নেই কয় জনকে লাগিয়েছিস? অফিসে অনেক নতুন ফুল দেখছি যে?"

রূপকের কান লাল হয়ে যায় কথা শুনে, আমতা আমতা করে বলে, "ধুর বাল, আমি নিজের কাজেই ব্যাস্ত থাকি তাই এদিক ওদিক আর দেখা হয় না।"

দেবায়ন জিজ্ঞেস করাতে জানতে পারে যে, দিন তিনেকের মধ্যে শ্রেয়া ফিরে আসবে। এয়ার বার্লিনের প্রোজেক্ট ওরা পেয়ে গেছে, সেই সাথে জারমেনিয়া এয়ারলাইন্সের সাথে কথাবার্তা হয়েছে। দেবায়ন অনুপমাকে নিয়ে বেড়িয়ে যাবার আগে রুপককে বলে যে রাতে তিনজনে মিলে ডিস্কো যাবে। অনেকদিন পরে মোহময়ী, কল্লোলিনী কোলকাতার নিশার সৌন্দর্য আহরণ করতে চায়। অনুপমার বুক থমথম করে ওঠে, কিছুতেই রূপকের সাথে স্বাভাবিক হতে পারছে না।

নিজের কেবিনে ঢুকে, অনুপমাকে আবার জড়িয়ে ধরে। অনুপমা কপট অভিমান দেখিয়ে বলে, "এই কি করছিস, ছাড় শালা কুত্তা। এটা অফিস।"

দেবায়ন হেসে ওর গালে চুমু খেয়ে বলে, "আমার অফিস, আমার বৌ। যা ইচ্ছে তাই করব, যেখানে ইচ্ছে প্রেম করব।"

এমন সময়ে হঠাৎ রূপক এসে কেবিনের দরজা খুলে ঢুকে পরে। ভাবতে পারেনি যে দেবায়ন আর অনুপমা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে থাকবে, তাই বলে, "তোরা প্রেম করে নে, একটু পরে আসছি তাহলে।"

অনুপমা মাথা নিচু করে নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে, ওদিকে দেবায়ন ওকে টেনে ধরে বুকের সাথে মিলিয়ে রূপকের উদ্দেশ্যে বলে, "বাল তুই যখন ওর জন্মদিনের রাতে ওর সাথে করেছিলিস তখন এত লজ্জা পেতিস না। আজকে কি হল?"

কান লাল হয়ে যায় রূপকের, অনুপমার গলা শুকিয়ে যায়। অনুপমার ফ্যাকাসে চেহারা দেবায়নের চোখ এড়াতে পারে না। ওর থুতনি নাড়িয়ে রূপকের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে, "তোদের মাঝে কি কিছু হয়েছে? আসার পর থেকে দেখছি তোরা বেশ ছাড়াছাড়া।"

রূপক আমতা আমতা করে বলে, "না না কিছুই হয়নি।"

অনুপমা কি করবে ভেবে পায় না, দেবায়ন ওকে শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। নিজেকে কোনরকম ছাড়িয়ে গলা নিচু করে বলে, "তুই কাজ কর, আমি এখন আসছি। লাঞ্চের সময়ে কথা হবে।"

অনুপমার চুপচাপ হাভভাবে সন্দেহ হয় দেবায়নের, "কি ব্যাপার পুচ্চি সোনা, তোর আর রূপকের চেহারায় রঙ নেই কেন?"

চোখে চোখ রেখে অনুপমার থুতনি নাড়িয়ে বলে, "দুইজনে মিলে আমার পেছনে দুষ্টুমি করিস নি তো?"

অনুপমা রূপকের দিকে তাকাতে পারছে না, রূপক মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। দেবায়ন বুঝতে পারে আসল ঘটনা আর ওদের চেহারা দেখে হেসে ফেলে, "বাল, এতে এতো চোর পুলিশ খেলার কি আছে।"

রূপকের দিকে চোখ নাচিয়ে অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে চিবিয়ে জিজ্ঞেস করে, "কি রে, কেমন লাগলো আমার পুচ্চিকে?"

কান লাল হয়ে যায় অনুপমার, কোনোরকমে দেবায়নের বুকের মধ্যে সেঁধিয়ে যেতে চেষ্টা করে। রূপকের গলা শুকিয়ে যায়, কিন্তু হাসি টেনে বলে, "কই কিছু হয়নি তো।"

দেবায়ন হেসে বলে, "ধুর বাল, আমি কি বলেছি যে কিছু হয়েছে? তোর আর অনুর চেহারা বলছে যে অনেক কিছু হয়েছে, কিন্তু ঠিক জায়গায় মাল পড়েনি তাই দুইজনে দুইজনকে এড়িয়ে যাচ্ছিস।"

অনুপমা অবাক হয়ে যায় দেবায়নের পর্যবেক্ষণ শক্তি দেখে, এই দেবায়ন তো একমাস আগে কোলকাতা ছাড়েনি? তাহলে ওর আলিঙ্গনে যে দেবায়ন বদ্ধ, সেই কি তার পুচ্চু সোনা না অন্য কেউ?

দেবায়ন হেসে রূপককে কাছে ডেকে ফিসফিস করে বলে, "আমরা চারজনে মিলে কোথাও বেড়াতে যাবো। মনের সুখে যেটা অধরা রেখেছিস সেটা পূরণ করে নিস।"

বিকেলের মধ্যে, ডিস্কো-থেকে গিয়ে মদ উড়িয়ে, নেচেকুঁদে মন হালকা করে নেয় দেবায়ন। মনের মধ্যে প্রথমে একটু খচখচ করে উঠেছিল ঠিক, কিন্তু নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে, অনুপমা ছাড়া কত মেয়েদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে, এমন কি অনুপমার মায়ের সাথেও। সেই অনুপমা যদি কিঞ্চিত ভুলবশত ওর বন্ধুর সাথে শারীরিক মিলন করে ফেলে তারজন্যে ওর মনে কিছু করার নেই। রূপক আর অনুপমাও শেষ পর্যন্ত পরস্পরের কাছে স্বাভাবিক হয়ে যায়।

কয়েক দিন পরে ফিরে আসে শ্রেয়া। যে শ্রেয়া কোলকাতা ছেড়েছিল আর বার্লিন জার্মানি থেকে যে শ্রেয়া ফিরে আসে, দুই জনের মধ্যে অনেক তফাৎ লক্ষ্য করা যায়। অনুপমা বুঝতে পারে যে শ্রেয়া কোলকাতা ছেড়েছিল, সে কাজ না করে ফল খেতে বেশি ভালবাসত, সারাদিন শুধু ল্যাপটপে চ্যাটিং করতে ভালবাসত আর ল্যাপটপে সিনেমা দেখত। যে শ্রেয়া ফিরে এসেছে, সে বেশ পরিপক্ক, কাজের ভার নিজের কাঁধে নিতে শিখেছে। একটা ডিলে সই করে এই কদিনে নিজেকে সত্যিকারের ডাইরেক্টর হিসাবে ভাবতে শিখেছে। অনুপমার কেবিনে বসলে অথবা লাঞ্চে একসাথে বসলে সেই পুরানো শ্রেয়াকে দেখা যায় না হলে, অফিসে বাকি সবার কাছে এক নতুন শ্রেয়া। কাজে বুঁদ, প্রোডাক্ট ডিজাইনিং নিয়ে বেশ তৎপর, এমন কি আজকাল আয় ব্যায়ের, একাউন্ট স্টেটমেন্ট মাঝে মাঝে চেয়ে দেখে, মাঝে মাঝে একাউন্টসে গিয়ে বসে কথাবার্তা বলে। শ্রেয়ার এই রুপ দেখে অনুপমার বেশ ভালো লাগে সেই সাথে একটু খটকাও লাগে, কেন শ্রেয়া একাউন্টস নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছে?

একদিন লাঞ্চের সময়ে চারজনে একসাথে বসে সেসময়ে অনুপমা শ্রেয়াকে প্রশ্ন করে, "কি ব্যাপার তোর? আজকাল দেখছি তুই বেশ একাউন্টস দেখছিস?"

শ্রেয়া হেসে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, "লেজার বুক দেখা কি আমার জন্য মানা? আমিও একজন ডাইরেক্টর।"

শ্রেয়ার চোখের চমক অনুপমার চোখ এড়ায় না, ওর চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করে, "জার্মানি বেড়িয়ে এলি, আমাদের জন্য কিছু নিয়ে এলি না।"

শ্রেয়া কপট দুঃখ প্রকাশ করে বলে, "ইসসসস একদম ভুলে গেছি, শুধু মাত্র রূপকের কথা মনে ছিল তাই ওর জন্য আনা হয়েছে।"

অনুপমা বলে, "আমাদের ভুলে গেলি না ওখানে গিয়ে অনেক কিছু হয়েছে যেটা লুকাতে চাইছিস?"

শ্রেয়া হাসিতে ফেটে পড়ে, "কি যে বলসি না তুই। যাঃ, শুধু কাজ করে গেছি ওই কয়দিনে।"

অনুপমা হেসে জিজ্ঞেস করে, "কেন দীপঙ্করদা বলছিল যে তুই নাকি ইন্দ্রনীলের সাথে বার্লিন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, হেগ গেছিলিস?"

শ্রেয়া বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলে, "হ্যাঁ গিয়েছিলাম ওই সব জায়গায়। এয়ার বার্লিনের বেশ কয়েকটা অফিসে যেতে হয়েছিল, প্রোডাক্টের জন্য বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে যেতে হয়েছিল আমাকে।"

অনুপমা মাথা নাড়ায়, "ঠিক আছে বুঝতে পারছি, তুই এখন বেশ ব্যাস্ত মানুষ। আর যাই হোক, আমাদের ভুলে গেলেও চলবে কিন্তু দেখিস এই দৌড়ে যেন রূপককে ভুলে যাস না?"

শ্রেয়া, রূপকের হাত খানা নিজের হাতের মুঠির মধ্যে জড়িয়ে ধরে বলে, "দশ খানা নয়, পাঁচ খানা নয় আমার এই একখানা সোনামণি, এর কথা কি করে ভুলে যাব।"

শ্রেয়ার এই রুপ বদলের কথা দেবায়নকে জানায়। অনুপমার তীক্ষ্ণ চোখে কিছুই এড়াতে পারে না, ওর দৃষ্টি সবসময়ে শ্রেয়ার ওপরে নিবদ্ধ। অনেক কিছু লুকিয়ে রেখেছে শ্রেয়া, যেন অনেক কিছু জেনে ফেলেছে। সত্যি কি জানে যে ওদের দুটো কন্সট্রাকশন কোম্পানি আছে, জানে কি যে ওদের ছয় খানা হোটেল আছে? জানলে হয়ত একবার দেবায়ন অথবা ওকে প্রশ্ন করত, কিন্তু করেনি যখন তখন হয়ত জানে না এই সব বিষয়ে। শ্রেয়া ফিরে আসার পরেও শ্রেয়ার মতিগতি দেখে অনুপমা, ওকে অথবা রূপককে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বলেনি।

মার্চে অঙ্কনের হাইয়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষা আর তারপরে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ট্রান্সের পরীক্ষা। পায়েলের কলেজের ফাইনাল জুলাইয়ে। অনুপমার কথা অনুযায়ী, পায়েল অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছে, বাড়িতে বসে পড়াশুনায় মনোযোগ দিয়েছে। প্রতিদিন অফিস ফেরত, দেবায়ন দেখা করে যায়। ধীরে ধীরে অনেক সহজ হয়ে উঠেছে পায়েল। দেবায়নের সাথে হেসে কথা বলে, অঙ্কনের পরীক্ষার সময়ে ওর সাথে প্রত্যেক দিন স্কুলে গেছে। সব মিলিয়ে আগের পায়েল খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে। আজকাল দেবায়নের সাথে খোশমেজাজে গল্প করে, রাতে বসে দুই বান্ধবী অনেকক্ষণ ধরে কলেজের গল্প করে। মাঝে মাঝে ছাড় পেলেই অঙ্কনের রুমে রাত কাটিয়ে আসে। ঢিলে চুড়িদার ছেড়ে চাপা সালোয়ার কামিজ, অথবা জিন্স টি শার্ট, বাড়িতে থাকলে হাফ প্যান্ট না হলে স্কার্ট পরে ঘুরে বেড়ায়। অনুপমা সব লক্ষ্য করে, মাঝে মাঝেই অঙ্কন ওর প্রেমিকাকে নিভৃতে একা পেলে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়, এদিক ওদিকে হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়।

অঙ্কন যাদবপুরে ইলেক্ট্রনিক্স টেলিকমিউনিকেশান পায়। বাড়ির সবাই খুশি। সেই খুশিতে একটা বড় পার্টি দেওয়া হয়, পার্টিতে অঙ্কনের বন্ধু বান্ধবী ছাড়াও অনুপমার বন্ধু বান্ধবীদের কেও আমন্ত্রন জানানো হয়। অনেকদিন পরে সঙ্গীতা আর প্রবালের সাথে দেখা হয়, ঋতুপর্ণা আর ধিমানকেও নিমন্ত্রন জানায়, পরাশর আর জারিনাও আসে সেই পার্টিতে। পুরানো পায়েলকে দেখে সবাই আনন্দিত। পায়েল নিজের পুরানো রুপ ফিরে পায়, কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য অঙ্কনের কাছ ছাড়ে না। সেই দৃশ্য দেখে দেবায়ন আর অনুপমার বেশ ভালো লাগে।

এক বিকেলে অনুপমা দেবায়নকে প্রশ্ন করে, "হ্যাঁ রে, আমার একাউন্টে দুই কোটি টাকা কেউ জমা দিয়েছে। কি ব্যাপার, কোথা থেকে এসেছে ওই টাকা?"

দেবায়ন বলে, "আরে বাবা আমি একদম ভুলে গেছিলাম ওই টাকার কথা। ওই টাকা নিবেদিতা ম্যাডাম দিয়েছে।"

অনুপমা অবাক হয়ে যায় নিবেদিতার কথা শুনে, "নিবেদিতা দিয়েছে মানে?" মুখ হাঁ হয়ে যায় অনুপমার, কি ব্যাপার কিছুই বুঝতে পারে না।

দেবায়ন হেসে বলে, "ওই টা কন্সট্রাকশনের কাঁচা টাকা। পেছনের তারিখে একটা সফটওয়্যার ডিল দেখাতে হবে ওর কোম্পানির সাথে, তাহলেই ওই টাকা সাদা হয়ে যাবে।"

অনুপমা প্রশ্ন করে, "তুই ঠিক কি করছিস একটু খুলে বলবি? এই যে বাবার সাথে ঘুরে বেড়াস, এই দুটো কন্সট্রাকশন কোম্পানি এর ওপরে ছয়খানা হোটেল ডিল করছিস, এত সব টাকা কোথা থেকে আসছে?"

দেবায়ন হেসে উত্তর দেয়, "তোর সফটওয়্যার কোম্পানিতে কিছু আঁচ লাগবে না সেটা কোথা দিচ্ছি।"

অভিমান হয় অনুপমার, কি লুকাতে চায় দেবায়ন, "সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু আমাকে জানাতে দোষ আছে কি?"

দেবায়ন বুঝতে পারে যে প্রেয়সী একটু অভিমান করেছে, সবকিছু খুলে না বলা পর্যন্ত মানিনীর মান ভাঙ্গানো সম্ভব নয় তাই বলতে শুরু করে, "পুচ্চিসোনা, টাকায় টাকা বাড়ে। এই যে মাখন, দই নাড়াতে নাড়াতে অবশেষে দইয়ের ওপরে মাখন ভেসে ওঠে। ঠিক তেমনি টাকা, এদিক থেকে ওদিকে না নাড়ালে টাকা বাড়ে না। কখন এই কস্ট্রাক্সান কোম্পানি থেকে ওই কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে টাকা নিয়ে যেতে হয়। দেখাতে হয় এই কোম্পানি ওকে কাজের অফার দিয়েছে। হোটেলের টাকা কন্সট্রাকশনে ঢুকাতে হয় কখন, দেখাতে হয় যে হোটেলের কন্সট্রাক্সান আমাদের কন্সট্রাকশন কোম্পানি করেছে। এই ভাবে সফটওয়ারে কাজ করাতে হয়। ভুয়ো কাজ দেখিয়ে টাকা ঘুরিয়ে কাঁচা টাকাকে সাদা করাতে হয়, কোনসময়ে কাজ দেখিয়ে নেট প্রফিট কম করিয়ে দেখাতে হয়। এই ভাবে টাকা ঘুরাতে ঘুরাতে, এর লেজার থেকে ওর লেজারে টাকা ঘুরে বেড়ায়। সফটওয়ারে টাকা দেরিতে আসে, কন্সট্রাকশনে তাড়াতাড়ি আসে, হোটেলে মন্দ আয় হয় না। মাঝে মাঝে হোটেলের আয় কম দেখাতে হয়, কেননা হোটেলে অনেক রকমের ট্যাক্স, সেই সব বাঁচানোর জন্য হোটেলের আয় কম দেখাতে হয় আর সেই খানে দেখাতে হয় যে সফটওয়ারে খরচ অথবা এটা ওটা কন্সট্রাকশনে খরচ। কন্সট্রাকশনে প্রচুর কাঁচা টাকা, এদিক ওদিক থেকে চলেই আসে। বুঝেছিস কিছু?"

অনুপমা কতকটা বোঝে, কতকটা বুঝতে পারে না, শুধু দেবায়নের গলা দুইহাতে জড়িয়ে ধরে বলে, "তুই আছিস তো আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য, তাহলে আমার চিন্তা কোথায়?"

দেবায়ন বলে, "সেই জন্য বলি, টাকার চিন্তায় এত মাথা ঘামাস না। তুই সফটওয়্যার নিয়ে থাক। এখন এয়ার বার্লিন, এরপরে জারমেনিয়া এয়ারলাইন্স, তারপরে দ্যাখ ইউরোপে কেন, আফ্রিকায় পা রাখবে আমাদের কোম্পানি।"

চোখ বড় বড় করে দেখে দেবায়নের দিকে, "কি বলছিস তুই?"

দেবায়ন বলে, "হ্যাঁ রে, শুধু জার্মানি নয়, মিস্টার হেরজগের সাথে আমার কথা হয়েছে। এই যে আমাদের কন্সট্রাকসানে এত টাকা ঢেলেছে আর তার উপযুক্ত মুনাফা পাচ্ছে তাতে বেশ খুশি মিস্টার হেরজোগ। সাউথ আফ্রিকায় একটা রিয়াল এস্টেটে টাকা লাগাতে চলেছে, সেখানে আমাদের কোম্পানি কাজ করবে।"

অনুপমা বিশ্বাস করতে পারে না দেবায়নের কথা, "কি বলিস? সাউথ আফ্রিকা?"

দেবায়ন মিচকি গালের ওপরে আলতো চুমু খেয়ে বলে, "হ্যাঁ ডারলিং সাউথ আফ্রিকা। তবে সোজাসুজি কাজ নয়, কাজ করবে আমাদের লোক ভিন্ন নামে। ওই প্রোজেক্টের আর্কিটেকচার, ডিজাইন, ইনটেরিওর সব আমাদের লোক করবে, বেনামে করবে আর বেনামে টাকা আসবে। ইউরোতে পেমেন্ট হবে, ডলারের চেয়ে বেশি আয় হবে তাতে।"

অনুপমা বলে, "আমাদের কোম্পানি বাইরে যাবে?"

দেবায়ন হেসে বলে, "আমাদের মানে নিবেদিতার কোম্পানির লোক বাইরে যাবে। ওই কোম্পানিতে টাকা আনাতে চাই আমি। কিছু কাজ আমাদের কোম্পানিতে আসবে, না হলে মিস্টার হেরজোগের সন্দেহ হয়ে যাবে। সেটা হলে আমি দেখাতে পারব যে আমাদের নিজের কোম্পানিতে বিশেষ কাজ হয়নি আয় হয়নি আর সেই সাথে মিস্টার হেরজোগ যে পরিমান লাভ এইবারে আশা করেছেন সেই পরিমান তাকে দেওয়া হবে না। আমাদের টাকা উপার্জন কিছু উপায়ে করতে হবেতোনাকি?"

অনুপমা মাথা চুলকিয়ে বলে, "এই সবের প্যাঁচ ঘোঁচ কিছুই বুঝতে পারছি না।"

অনুপমার থুতনি নাড়িয়ে দেবায়ন দুষ্টু হেসে বলে, "পুচ্চি ডারলিং, তোকে এত মাথা ঘামাতে হবে না, তুই তোর সফটওয়্যার ফার্ম নিয়ে থাক।"



***** চতুর্বিংশ পর্ব সমাপ্ত *****






কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment