আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
সিরিজা - একটি উপন্যাস
Written By Lekhak (লেখক)
Written By Lekhak (লেখক)
।। পঁয়ত্রিশ ।।
দোলন কথাটা বলা মাত্রই, তিনজনেই চমকে উঠলো ভীষন ভাবে। রীতা বললো, "তার মানে সিরিজাকে আমি দেখেছি, ওই মেয়েটা? সেদিন খুব ঠেস মেরে কথা বলছিল আমার সামনে। স্বামীকে পছন্দ নয়। কোন এক পরপুরষের প্রতি আকর্ষিত। সিরিজা তাহলে ওই?"
রজতের শ্বশুড়ও হতভম্ব। রজত তার মানে ভালোই বুদ্ধিটা খাটিয়েছে। সিরিজাকে দিবাকরের স্ত্রী বানিয়ে ওদেরকে বোকা বানিয়েছে। চোখ কপালে তুলে শ্বশুড়ও বললো, "মেয়েটা আর দিবাকর, দুজনেই আমাদের সাথে অত কথা বললো, অথচ আমরা ধরতে পারলাম না।"
রীতা অবাক হয়ে বললো, "কিন্তু মেয়েটাকে আমি মনে হয় আগে কোথাও দেখেছি। সেদিনও আমার তাই মনে হচ্ছিল।"
মাতাল স্বামী সুখেন খেপে যাচ্ছিলো বাপ মেয়ের কথা শুনে। ওদের দুজনকে খেঁকিয়ে বললো, "কি যা তা বকছেন? সিরিজা আমার বউ। ও আমাকে ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। আর আপনি বলছেন ওকে আগে দেখেছেন? এ কখনো হয় নাকি?"
রজতের শ্বশুড় বললো, "সিরিজা তোমার বউ যখন, ওকে ধরে রাখতে পারলে না কেন? তাহলে তো এত কান্ড হত না। কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে জুটলো, আর জামাইও পড়ে গেল তাকে নিয়ে। এই পৃথিবীতে কি আর মেয়ে নেই? সিরিজাকে নিয়ে এত কান্ড। কি আছে ওর মধ্যে?"
দোলন দেখলো যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে, এর মধ্যে যদি রজত এসে পরে, কি যে হবে এখন থেকেই তা আঁচ করা যাচ্ছে।
মাতাল স্বামীটা বললো, "দোষ কিছুটা আমার। আমিই পারিনি ওকে কব্জা করে রাখতে। আমার বউ দেখতে ভালো বলে সবাই আমাকে হিংসে করত। কেউ কেউ তামাশাও করতো। গ্রামে অনেকেই আমাকে বলো তো, সিরিজাকে বিয়ে করেছিস তুই? দেখবি ও তোকে ছেড়ে একদিন না একদিন ঠিক পালাবে। তোর জন্য ওই বউ নয়। যাকে দেখে সবারই কিনা ভীমরতি হয়, সে থাকবে তোর কাছে? এ জীবনে আশা ছেড়ে দে। আমি কাজ কর্ম করতাম না। মদ নিয়ে সারাদিন পরে থাকতাম। তাড়াহুড়ো করে ওর পেট করে দিলাম। বাচ্চাও হল। ভাবলাম এই বার বুঝি সিরিজাকে বেঁধে রাখা যাবে। কিন্তু কোথায় কি? বাচ্চা নিয়েই ও চলে আসলো ওখান থেকে।"
রীতা সব শুনে বললো, "বাচ্চা? কই সেদিন তো বাচ্চা দেখিনি সিরিজার সাথে? কোথায় ওর বাচ্চা?"
সিরিজার স্বামী দোলনের দিকে তাকিয়ে বললো, "এই হারামীটা সব জানে। ওই তো সিরিজাকে পাঠিয়েছে এখানে।"
ভয়েতে দোলনের হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে। রীতা বললো, "কি ব্যাপার দোলন? সিরিজার বাচ্চাটা কোথায়? তুমি যখন সব জানো, তখন এটাও বলে দাও।"
দোলন আমতা আমতা করে বললো, "বাচ্চা সিরিজার সাথেই আছে। আমার কাছে কিছুদিন রেখেছিল, তারপর ওর বাচ্চা ও ফেরত নিয়ে নিয়েছে।"
রজতের শ্বশুড় বললো, "স্বামীকে ছেড়ে পরপুরুষের প্রতি ওর এক আকর্ষন কেন? বাচ্চা হবার পরও সখ যায়নি। অদ্ভূত বলতে হবে।"
দোলন চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। মাতালটা সেই সময় বলে উঠলো, "এও কি কম যায় নাকি? সব মাগীগুলোই একজাত।" বলে দোলনের দিকে কটমট করে তাকালো।
শ্বশুড়, রীতা দুজনেই সিরিজার স্বামী সুখেনের দিকে তাকালো। কার কথা বলছে ও? দুজনের কেউই বুঝতে পারছে না।
সুখেন বললো, "আপনারা কি জানেন? এই মাগীটারও স্বামী নেই এখন। ওকে ছেড়ে পালিয়েছে। স্বামী নেই, তাই সিরিজার মত পীরিত মারতে ইনিও চলে এসেছেন এখানে।"
দোলনের শরীরটা যেন কুঁকড়ে যাচ্ছে আসতে আসতে। সিরিজা নেই, রজত নেই, দিবাকরও নেই। তিনজন যেভাবে একা পেয়ে শাঁড়াশির মত চেপে ধরেছে ওকে। সকাল বেলা নগ্ন হয়ে রজতের সাথে ঢং করার সময় একবার কি ও এটা ভেবেছিল?
সুখেন রজতের শ্বশুড়কে বললো, "ভালো করে আমার বউটাকে কি আপনারা দেখেছেন? কামুক শরীর ওর। পুরুষমানুষকে পটাতে ওর সময় বেশী লাগে না। আপনার জামাইরে পটিয়েছে, এখন আবার কার মাথা খাচ্ছে কে জানে?"
শ্বশুড় একটু অস্বস্তি বোধ করলো সুখেনের কথা শুনে। জামাইও তো ধোয়া তুলসীপাতা নয়। একা সিরিজাকে দোষ দিয়ে কি হবে?
রীতা বললো, "সিরিজা যদি দিবাকরের বাড়ী গিয়ে থাকে, তাহলে তো ওকে আনতে ওখানেই যেতে হবে। এখন প্রশ্নটা হচ্ছে দিবাকর থাকে কোথায়? রজত না আসা অবধি কিছু তো করা যাবে না।"
সুখেন রজতের শ্বশুড়কে খেঁকিয়ে বললো, "আপনি ফোনটা ধরলেন না কেন? এখন ও যদি সিরিজাকে অন্য কোথাও গায়েব করে দেয়? কি হবে? আমি কোথায় খুঁজবো তখন?"
রজতের শ্বশুড় বললো, "আগে ও আসে কিনা দেখি। তারপর যা করার করছি।"
ট্যাক্সিতে রজত চিন্তাগ্রস্ত। এমন একটা পরিস্থিতি, এই মূহূর্তে ওর মাথা কোন কাজ করছে না। একদিকে সিরিজার স্বামী, আর একদিকে দিবাকর। এই মূহূর্তে সিরিজা দিবাকরের জিম্মায়। ওকে ওখান থেকে নিয়ে এলে সিরিজা জীবনের মত হাতছাড়া। সিরিজার স্বামীকে বলাও যাবে না সিরিজা দিবাকরের কাছে আছে। বললে মাতাল লোকটা তখন দিবাকরের বাড়ী গিয়ে হানা দেবে। আবার দিবাকরকে সিরিজার ভার বহন করতে দিলে, দিবাকর তার ফায়দা লুটবে। সুযোগকে যেভাবে কাজে লাগিয়েছে দিবাকর, রজত নিশ্চিত কাল রাতে অঘটন কিছু একটা ঘটেছে।
ট্যাক্সিটা প্রায় দিবাকরের বাড়ীর দোড়গোড়ায়, রজত তখনো ভেবে কূল কিনারা করতে পারছে না কি করবে? গাড়ী থেকে নেমে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরবে সিরিজাকে। বলবে, "চলো সিরিজা এখনই আমরা কোথাও চলে যাই। আমিও আর ফিরবো না বাড়ীতে। তোমাকে অন্য কোথাও রেখে দিয়ে তারপরে ওদের মোকাবিলা করবো। এমন জায়গায় তোমাকে রাখবো, যেখানে কাকপক্ষীও টের পাবে না।"
ট্যাক্সিটা দিবাকরের বাড়ী পৌঁছোনোর পর রজত মানিব্যাগ বার করে ভাড়া দিতে যাচ্ছিলো, এমন সময় ওর মোবাইলটা আবার বেজে উঠলো।
তাড়াহুড়োতে রজত দেখেনি ফোনটা কে করেছে? ও রিসিভ করলো।
ও প্রান্ত থেকে ভেসে এল এক মহিলার গলা, "কে বলছেন?"
- "আপনি কে বলছেন?"
-- "আমি রেশমী বলছি।"
- "রেশমী?"
-- "হ্যাঁ। সিরিজা আছে?"
- "সিরিজা?"
-- "হ্যাঁ ও আমাকে ফোন করেছিল। বলেছিল রোববার দেখা করবে। কাল তো রোববার। তাই ফোন করলাম। সিরিজার সাথে কথা বলা যাবে কি?"
রজত যেন আশা করতে পারেনি রেশমী এভাবে ফোন করবে। ওর মনে পড়ে গেল। রবিবারের কথাটা। সিরিজার সাথে রেশমীর কথা হয়েছিল। হ্যাঁ ঠিকই তো। বলেছিল রেশমীর সাথে মিট করবে। কিন্তু সিরিজা যে এখন সেই দিবাকরের সাথেই?
রেশমা রজতকে বললো, "আপনি কে?"
রজত আমতা আমতা করছে। নামটা বললেই তো সব মাটি হয়ে যাবে। ও গলাটা একটু কেঁপে বললো, "আমি....."
রেশমী বললো, "রজত?"
রেশমী রজতের গলার স্বর শুনে এতোক্ষনে বুঝতে পেরেছে। ফোনেও বুঝতে অসুবিধে হয় নি।
বেশ রেগেমেগে বললো, "এটা তোমার ফোন? আমি আগে তো বুঝতে পারিনি। তাহলে ঐ মেয়েটা কে? সিরিজা, যে আমাকে ফোন করেছিল?"
রজত কিছুক্ষণ চুপ করে বললো, "সিরিজা, আমার স্ত্রী।"
রেশমী বললো, "সিরিজা তোমার স্ত্রী? কি ব্যাপার বলো তো রজত? এতদিন পরে রেশমীকে মনে পড়লো। তাও আবার নিজের স্ত্রীকে দিয়ে ফোন করালে। ব্যাপারটা কি? আমি তাহলে ভুল জায়গায় ফোন করেছি, ঠিক আছে রাখলাম।"
বিরক্ত হয়ে ফোনটা রেখেই দিতে যাচ্ছিলো। রজত সঙ্গে সঙ্গে রেশমীকে বাধা দিয়ে বললো, "রেশমী প্লীজ প্লীজ তুমি ফোন ছেড়ো না। তোমাকে আমার ভীষন দরকার।"
-- "কেন?"
- "তোমার দিবাকরকে মনে নেই রেশমী?"
-- "দিবাকর?"
- "হ্যাঁ। দিবাকর। যার জন্য আমি অপরাধী। দিবাকর তোমাকে ভালোবেসেছিল। আমি শুধু তোমাদের দুজনকার কথা ভাবি। কি দোষে আমি সেদিন তোমাকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম। অথচ দিবাকর তোমাকে ভালোবাসতো। আমার একবারও ওর কথা মনে হয় নি। আজও দিবাকর তোমাকে কত চায়। আমি আর সিরিজা দিবাকরের জন্যই তোমার খোঁজে সেদিন গেছিলাম। মনে হয়েছিল একবার তোমাকে শুধু যদি রাজী করাতে পারি। আমি তো বলছি ভুল আমার। আমিই যদি সেদিন আগ বাড়িয়ে তোমাদের দুজনের মাঝখানে না আসতাম....."
রেশমী রজতের কাছ থেকে পুরোনো কথাগুলো শুনে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। তারপর ভারী গলায় বললো, "দিবাকর কোথায় এখন? ওর ওই পুরোনো বাসায়? বোলো, আমি তাহলে কালই যাবো ওখানে। লোকটাকে আমিও বুঝতে পারিনি সেদিন। আজও ভাবি, তোমাকে ভালোবেসে আমিও তো ভুল করেছিলাম। দিবাকর যে আমাকে এত চায়, সেটা আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল।"
রজত প্রফুল্ল হয়ে বললো, "তুমি আসছো তাহলে?"
রেশমী বললো, "হ্যাঁ আসছি, কালকেই আসছি। দিবাকরকে বোলো, যাকে ও ভালোবাসতো, সে আসছে ওর কাছে।"
ট্যাক্সি থেকে নামার পরে রজতের মুখে হাসির ঝিলিকটা খেলে গেল। ভাড়া মিটিয়ে ও দিবাকরের ঘরের দরজার দিকে এগোচ্ছে। অকল্পনীয় ভাবে, রেশমীর ফোনটাও এই মূহূর্তে এসেছে। দিবাকরকে খুশীর খবরটা অবশ্যই দিতে হবে। সেই সাথে সিরিজার ঠোঁটে একটা চুমু......
দিবাকর যেন রজতকে নিয়ে একটু বেশী চিন্তা করছে। ফোনটা ধরেনি বলেই চিন্তাটা হয়তো বেশী। এই মূহূর্তে যদি এসে পরে, মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বলা যায় না, ও হয়তো কিছু নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আসছে। সিরিজাকে নিয়ে টানাটানি করলেই, বাঁধা দিতে হবে। ওর প্ল্যানটাকে পুরো ভেস্তে দিতে হবে।
সিরিজা বললো, "কি চিন্তা করছো? এখনও ওকে নিয়ে?"
দিবাকর বললো, "ফোনটা তো ধরলো না। মনে হচ্ছে ও এখুনি এসে পড়বে। আমার হাত পা সব শক্ত হয়ে যাচ্ছে। রজতকে কিভাবে আটকাবো, সেটাই আমি....."
উদ্বিগ্ন হয়ে তখনো পায়চারী করছিল। সিরিজা বললো, "শোন এখানে।"
দিবাকর ওর দিকে তাকালো।
সিরিজা বললো, "এসো একটু আমার কাছে।"
দিবাকর সিরিজার সামনে গেল।
সিরিজা বললো, "বসো একটু আমার পাশে।"
দিবাকর বসলো।
সিরিজা বললো, "তাকাও একটু আমার দিকে।"
সিরিজা ঠোঁটটা দিবাকরের ঠোঁটের দিকে নিয়ে গেল।
দিবাকর বললো, "কি বলছো?"
সিরিজা বললো, "সব চিন্তা দূর করতে চাও?"
দিবাকর বললো, "কিভাবে?"
সিরিজা বললো, "আমার ঠোঁটে একটা চুমু খাও। চিন্তা দূর হয়ে যাবে।"
দিবাকর ভাবছিল কি করবে? চুমু খেতে তো আপত্তি নেই। কিন্তু.....
সিরিজা ঠোঁটটাকে আরও কাছে নিয়ে বললো, "কি হলো, খাও।"
ওর গাল দুটো ধরে দিবাকর বললো, "সিরিজা কাল থেকে তুমি আমার মনে শক্তি জোগাচ্ছো। মাঝে মাঝে ভাবছি, রজতকে নিয়ে আমি শুধু চিন্তা করছি। ও কোন হরিদাস পাল? যে আমাকে ভয় দেখাবে। আমার কাছে তুমি আছো, তখন আর চিন্তা কি? কিন্তু তারপরই আবার ভাবছি, ব্যাটা ঝেমেলা না করে বসে। বউ নিয়ে অনেক অস্বস্তিতে ফেঁসে আছে। ওর কাছ থেকে সিরিজাকে ছিনিয়ে নেওয়া মানে, মাথায় রক্ত উঠে যেতে পারে। ওর এখন করনীয় শুধু একটাই। আমি যেমন ভাবছি তোমাকে নিয়ে কোথাও দূরে চলে যাবো। রজতও হয়তো সেটাই ভাবছে। দূরে কোথাও চলে গেলে ওকেও ঝেমেলা পোয়াতে হবে না। বউও নেই, দোলনেরও চাপাচাপি নেই। এখান থেকে অনেক দূর। যেখানে কেউ ওকে খুঁজে পাবে না। সিরিজাকে নিয়ে জীবনের বাকী দিনগুলো উদযাপন। একবার তোমার মনটা যদি ও দূর্বল করে দিতে পারে তাহলেই তো রজতের জিৎ হবে। আর আমি মেনে নেব হার।"
সিরিজা বললো, "আমি তোমাকে হারতে দেব না। তাকাও আমার দিকে।"
দিবাকর মনটা একটু খচখচ করে বললো, "কিন্তু....."
সিরিজা বললো, "কোন কিন্তু নয়।"
সিরিজা টুপ করে দিবাকরের ঠোঁটে চুমুটা খেয়ে বসলো।
দিবাকরের মাথাটা এমন ভাবে দুহাতে আঁকড়ে ধরলো, যাতে চুমুর দাপটটা ওর সব চিন্তাটাকে দূর করে দেয়। ঠোঁটের মধ্যে যেন আঠালো এক শক্তি। মিষ্টি স্বাদ, চট করে ঠোঁট সরানো যায় না। শিরা উপশিরা গুলো সব নড়ে চড়ে উঠে বসে। চুমুতে কত যে শক্তি তা শুধু গভীর ভাবে আবদ্ধ হয়েই অনুভব করা যায়। দিবাকর সিরিজার ঠোঁটের সাথে এমন ভাবে আবদ্ধ হয়ে রইলো, যে খেয়াল নেই, ইতিমধ্যে রজত একবার দরজাটায় কড়া নাড়িয়েছে বাইরে থেকে।
ভাগ্যিস কলিংবেলটা দুবার টিপেও বাজেনি। রজত বুঝতে পারছিল না সুইচটা খারাপ হয়ে গেল কিনা? লোডশেডিং হয়ে থাকলেও কলিংবেল বাজবে না। একবার দরজাটায় কড়া নাড়লো। সাড়া শব্দ নেই। সিরিজার ঠোঁটের সাথে আবদ্ধ হয়ে দিবাকরের প্রবল উদ্দীপনা ফিরে আসছে। সিরিজার দুটো গাল ধরে ও নিজেই প্রতিদানের চুমু দিতে লাগলো। গভীর চুমুতে যদি গভীরতা ভরা আবেগ মেশানো থাকে, চট করে চাইলেও অত সহজে ঠোঁট ছাড়া যাবে না। দম নেওয়ার জন্য শুধু ঠোঁটটা মাঝে মাঝে আলগা করেই আবার আঁকড়ে ধরতে হবে উজাড় করে। দিবাকর তাই করতে লাগলো। কখনও উপরের ঠোঁট কখনও নিচের ঠোঁট। সিরিজার মিষ্টি ঠোঁট দুটো থেকে যতটা মধু চুষে নেওয়া যায়, ও তাই করতে লাগলো। এই মূহূর্তে রজত ছাড়া যদি অন্য কেউ ওখানে যেত, তাহলে বোধহয় আধঘন্টা ওকে অপেক্ষা করতে হত বাইরে দাঁড়িয়ে চুমু লীলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
সিরিজার ঠোঁট চুষতে চুষতে দিবাকর বললো, "তোমাকে অনেক চুমু খেয়েছে ও, এতোদিন। তাই না সিরিজা?"
সিরিজা চোখ দুটো বুঁজে দিবাকরের চুমুতে সাড়া দিতে দিতে বললো, "হ্যাঁ।"
দিবাকর বললো, "আর খেতে পারবে না ও। অনেক হয়েছে, এটা শুধু এখন আমার।"
চোখ বোজা অবস্থাতেই সিরিজা বললো, "আমার ঠোঁটটাকে রজত অনেক চুষেছে। আমার সারা শরীরটাকে স্বেচ্ছায় তুলে দিয়েছিলাম ওর হাতে। এই ঠোঁট, আমার বুক। সব কিছু উজাড় করে দিয়েও কি পেলাম? ও আমাকে ঠুকড়ে দোলনকে কাছে রাখলো। কি জন্য? আমি তাহলে ওকে সবকিছু কেন তুলে দিলাম। বলো তো দিবাকরদা?"
দিবাকর চুমু খেতে খেতেই সিরিজার বুকে হাত রেখে বললো, "অনেক দিয়েছো তুমি ওকে। আর দিও না সিরিজা। তাহলে কিন্তু আমি মরে যাবো।"
সিরিজা চট করে দিবাকরের মুখটা নিজের বুকের খাঁজে চেপে ধরে বললো, "তোমাকে ছাড়া আর কাউকেই কিছু দেব না দিবাকরদা। এই সিরিজা শুধু তোমার।"
দিবাকর বুকের ব্লাউজটা খুলতেই যাচ্ছিলো। সেই সময় দরজায় একটা জোরে কড়া নাড়ার শব্দ পেল।
দিবাকর ভাবলো, সিরিজার স্তনটা মুখে নেবার একটা চরম সুযোগ এসেছিল, হঠাৎই কে যেন এসে স্তন খাওয়াটাকে মাটি করে দিল।
রজত বাইরে থেকে এবার চেঁচাতে শুরু করে দিয়েছে, "এই দিবাকর, দিবাকর..... বাড়ী আছ? দরজা খুলছো না কেন? দিবাকর....."
চট করে সিরিজার বুক থেকে মুখ তুলে দিবাকর সিরিজার দিকে তাকিয়ে বললো, "রজত?"
সিরিজা দিবাকরের ঠোঁটে হাত রাখলো। আসতে করে বললো, "চুপ। তুমি একদম ঘাবড়াবে না। ওকে আসতে দাও। আমি ঠিক সামলে নেব।"
দিবাকর বিছানা থেকে উঠতে যাচ্ছিলো। সিরিজা বাঁধা দিয়ে বললো, "আর শোনো?"
দিবাকর দেখলো সিরিজা ওর শাড়ীর আঁচল দিয়ে ওর ঠোঁটটা মুছিয়ে দিচ্ছে ভালো করে। ওকে বললো, "ও খুব চালাক। এখনই যেন না বোঝে, তাই তোমার ঠোঁটটাকে মুছে দিলাম। কিছু বলবে না। বলবে, সিরিজা স্নানে গেছে। আমি ততক্ষনে বাথরুমে ঢুকছি।"
আঁচল শুদ্ধু শাড়ীটা ঠিক করে সিরিজা একটা তোয়ালে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে গেল। দিবাকর দরজার দিকে এগিয়ে গেল আস্তে আস্তে।
দরজাটা খুলেছে দিবাকর। রজত বললো, "কি ব্যাপার? আমার বন্ধুটা যে দেখি একদিনেই পাল্টে গেল অনেক।"
দিবাকর বললো, "কেন?"
রজত বললো, "ফোনে পাচ্ছি না, দরজা নেড়েও সাড়াশব্দ নেই। তুমি কি জীবিত আছো? না, আমি ভাবলাম রেশমীর শোকে, প্রানটাই দিলে বেঘোরে। অকালে মৃত্যু ঘটলে ব্যাচারা রেশমীর কি হবে?"
দিবাকর অবাক হয়ে বললো, "রেশমী?"
রজত একটু ঠেস মেরে বললো, "হ্যাঁ রেশমী। তোমার ডারলিং। কি ব্যাপার? রেশমীকেও মনে করতে পারছো না? এত ন্যাকা সাজছো ব্যাপারটা কি?"
দিবাকর বললো, "রেশমী আবার কোথায় এলো?"
রজত বললো, "আসবে তো। কালকে। আমায় বলেছে। তোমার জান আবার ফিরে আসছে তোমার কাছে। তুমি রেশমীকে নিয়ে ঘর করবে আর আমি সিরিজাকে নিয়ে।"
রজত হেঁয়ালি করছে কিনা দিবাকর বুঝতে পারছে না। ও বললো, "রেশমী কাল আসবে? তুমি কি করে জানলে?"
রজত বললো, "ওটাই তো কথা। কেন, তুমি খুশি নও?"
দিবাকর ভেবে পাচ্ছিলো না কি বলবে? রজতকে বললো, "আমাকে আগে বলো, আসলে কি হয়েছে।"
দিবাকরের ঘরে ঢুকে চেয়ারটায় বসে রজত মহা আনন্দে একটা সিগারেট ধরালো। দিবাকরকে বললো, "তুমি খুব লাকি। জানো তো দিবাকর।"
দিবাকরও একটু দূরে বসেছে। রজতকে বললো, "কেন?"
রজত বললো, "এই তোমার কোন ঝেমেলা নেই। কোন হেডেক নেই। কাল রেশমী এলেই তুমি টুপ করে ওর গলায় মালা দিয়ে দেবে। আর যত চিন্তা আমারই। শালা....."
দিবাকর বললো, "কেন?"
-- "ঐ শালা হারামজাদাটা এখানে এসেছে।"
- "কে?"
-- "সিরিজার স্বামী। ওকে খুঁজতে খুঁজতে আমার বাড়ী এসে চড়াও হয়েছে।"
- "সিরিজার স্বামী?"
-- "হ্যাঁ আমার শ্বশুড় আর আমার বউও আছে এই চক্রান্তের পেছনে। ওরাই পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছে।"
দিবাকর বললো, "কেন? কি করে হলো এসব?"
রজত বললো, "সেটাই তো ভাবছি। বুড়ো আর শয়তান মাগীটা যে আমায় সুখে থাকতে দেবে না, আমি আগেই জানতাম। ওরা তলে তলে অনেক বুদ্ধি খাটাচ্ছিল। কিভাবে আমাকে ফাঁসানো যায়। রীতার তো একটা প্রবল রাগ রয়েছে আমার প্রতি। তাই না?"
-- "কিন্তু তুমি যে বললে দোলন ব্যাপারটা সামলে দিয়েছে। ওকে ওখান থেকে চলে আসতে সিরিজার স্বামী দেখেনি।"
রজত বললো, "আমার তো মনে হয় দোলনের এর মধ্যে কোন কারসাজি নেই। ও কিছু করেনি। করেছে ওই হারামজাদা বুড়োটাই। মেয়ের জন্য এখন উঠে পড়ে লেগেছে আমাকে বিপাকে ফেলতে।"
দিবাকর বললো, "তুমি চলে এলে। সিরিজার স্বামী এখন কোথায়?"
রজত বললো, "বললাম তো বাড়ীতে। সিরিজাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ও অপেক্ষা করছে। আমি গেলেই আমাকে চেপে ধরবে। আর দোলনও যদি কিছু বলে দেয়, তাহলে তো আরো মুশকিল। দোলন তো জানে, সিরিজা এখানেই রয়েছে কাল থেকে।"
বলেই দিবাকরের ভেতরের ঘরের দিকটায় একবার তাকাল রজত। ওকে বললো, "সিরিজা কোথায়?"
দিবাকর বললো, "বাচ্চাটাকে ঘুম পাড়িয়ে বাথরুমে ঢুকেছে। স্নান করে বেরোবে একটু পরে।"
রজত নির্লজ্জ্বের মতন বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল। বাইরে থেকে দরজাটায় দুবার টোকা মেরে বললো, "সিরিজা, ও সিরিজা। আমি এসে গেছি ডার্লিং।"
পেছনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দিবাকরের চোয়ালটা আবার শক্ত হয়ে যাচ্ছে।
সিরিজা ভেতর থেকে কোন সাড়া দিল না। ও বুঝতে পেরেছে রজত টোকা মারছে বাইরে থেকে।
রজত সাড়া না পেয়ে আবার চেয়ারটায় এসে বসল। দিবাকরকে বললো, "মনে হয় কল খুলে রেখেছে। জলের শব্দে আওয়াজ শুনতে পারছে না। দেখি বেরোক, আমি তো সামনেই বসে রয়েছি।"
দিবাকর বললো, "রেশমীর সাথে তোমার কিভাবে কথা হল?"
রজত বললো, "এইসব ঝেমেলার মধ্যেই রেশমী ফোন করেছে আমাকে। ও আসলে সিরিজাকে খুঁজছিল। সেদিন ফোনে কথা হয়েছিল না? সবই তো তোমার জন্য দিবাকর।"
রজত আবারো বললো, "ইউ আর ভেরী লাকি গাই।"
দিবাকর এদিকে ভাবছে, তাহলে কি সিরিজা আর রেশমী দুজনকে নিয়েই ওকে ঘর করতে হবে? রেশমী তো আগেই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে রজতের সাথে। এখন আবার কামব্যাক করছে দিবাকরের জন্য। আর সিরিজা রজতকে ছেড়ে এখন দিবাকরের শরনাপন্ন। ভালোবাসার খেলা জমে উঠেছে। দুজনকে ভালোবাসা কি একসাথে দিতে পারবে দিবাকর? রজত না হয় সিরিজার স্বামী, দোলন আর শ্বশুড় বউকে সামাল দিক। আর সেই সুযোগে দিবাকর সিরিজা আর রেশমী দুই সঙ্গিনীকে নিয়ে দূরে সেই শিমূলতলাতে। দোতলা বাড়ী। অনেকগুলো ঘর। একটা ঘরে সিরিজা আর একটা ঘরে রেশমী। পালাবদলের মতন দুঘরে দিবাকরের অবাধ প্রবেশ। ওফ্, সত্যি যদি এমন হত?
রজত ভূরূটা কুঁচকে বললো, "মনে হচ্ছে রেশমীর খবরটা শুনে তুমি খুশি হও নি।"
দিবাকর বললো, "না, তা কেন?"
-- "তাহলে মুখটা অমন ব্যাজার মতো করে ফেললে? পুরোনো বান্ধবী ফিরে আসছে, আমি তো তোমার জায়গায় থাকলে নাচতে শুরু করে দিতুম।"
দিবাকর বললো, "না, আসলে ঠিক তা নয়, আমি আসলে তোমার কথা ভাবছি।"
রজত বললো, "আমার কথা ভাবছ? কি কথা?"
- "এই তুমি এখন নানা সমস্যায়। একদিকে বউ শ্বশুড় তো আছেই, দোলনকে নয় এখন বাদই দিলাম। কিন্তু সিরিজার স্বামী যে আবার জুটে এসে বসেছে।"
রজত একটা সিগারেট ধরিয়ে বললো, "শালার পাছায় মারবো এক লাথি। যেখান থেকে এসেছে, ওখানে আবার ফেরত পাঠিয়ে দেব। মাতালের আবার বউকে নিয়ে কত দরদ। যাকে কিনা সিরিজা কোনদিনই পচবে না। সে এখন সিরিজা সিরিজা করে মাথা খারাপ করছে।"
দিবাকর বললো, "সবই তো বুঝলাম। কিন্তু লোকটাকে তো তাড়ানো দরকার। কিভাবে তাড়াবে, সেটাই তো ভাবছি।"
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে রজত বললো, "ভেবেছিলাম, তোমাকে আর সিরিজাকে কোথাও পাঠিয়ে দেবো। কিন্তু সেটা তো এখন আর সম্ভব নয়। কাল যে রেশমী আসছে।"
রজত কথাটা সত্যি বলছে কিনা দিবাকর বোঝার চেষ্টা করছিল। ও একবার তাকালো রজতের মুখের দিকে। দেখলো রজতও তাকিয়ে আছে ওর দিকে। তারমানে দিবাকরকে রজতও পরীক্ষা করার চেষ্টা করছে।
একটু গম্ভীর হয়েই রজত এবার বললো, "আচ্ছা দিবাকর। তোমার ফোনটা তো বাজছিল সকালে। তারপরই আবার বন্ধ হয়ে গেল কেন? তুমি কি তখন অন্য কিছুতে ব্যস্ত ছিলে?"
একটু অপ্রস্তুতে পড়ার মতন, দিবাকর বললো, "মনে হয় মোবাইলে চার্জ ছিল না। আমি তো অন করে তোমাকে আবার ফোন করলাম। দেখলাম বাজছে তোমার ফোনটা, অথচ তুমিও ধরলে না।"
রজত বললো, "আমি তখন তোমার বাড়ীর কাছাকাছিই এসে পড়েছিলাম। দেখলাম শুধু শুধু তোমার ব্যালেন্স খরচা হবে। সিরিজার জন্য পাগল হয়ে ছুটতে ছুটতে যখন চলে এসেছি, তখন তোমার ঘরে এসেই নয় চেহারাটা দেখাই। একটা সারপ্রাইজ তো দিতে হবে। না কি?"
দিবাকর এবার একটু গম্ভীর হয়ে বললো, "কিসের সারপ্রাইজ?"
রজত বললো, "এক রাত সিরিজাকে কাছে পাইনি। অভাবটা ফিল করেছি। আমার অভাব কিসে দূর হবে তুমি জানো না? সিরিজাকে কয়েকটা চুমু খাবো, ওর ঠোঁটে, গালে বুকে। তবেই তো অভাবটা দূর হবে। আমি এলাম, অভাবটা পূরণ করলাম, এটাই তো সারপ্রাইজ।"
দিবাকরের মনে হল, "রজতের ঠোঁট দুটোয় এখনি একটা সেলোটেপ জাতীয় কিছু মেরে দেয়, যাতে ও চুমু খাবার জন্য হাঁ করতে না পারে। শালার কত সখ? একরাতে দোলনকে চুদে আবার এসেছে সিরিজার ঠোঁট চুষতে। কাল যখন মাগীটার জন্য সিরিজাকে ভাগিয়ে দিলি, তখন তোর এটা মনে ছিল না?"
রজত বললো, "সিরিজা রাত্রে শুলো কোথায়?"
দিবাকর শোবার ঘরটা দেখিয়ে দিল। বললো, "ও ঘরে।"
রজত বললো, "আর তুমি?"
দিবাকর বললো, "আমি এ ঘরে।"
-- "ঘুমিয়েছিলে না জেগেছিলে?"
দিবাকর একটু অস্বস্তি অনুভব করলো, রজতকে বললো, "কেন, জেগে থাকবো কেন? আমিও ঘুমিয়েছি।"
অনেক রাত জাগা চোখ দুটো দেখলে মানুষের যেমন সন্দেহ হয়, রজত তেমনি বললো, "তোমার চোখ দেখে মনে তো হচ্ছে না ঘুমিয়েছ? রাত জেগে বুঝি রেশমীর স্বপ্ন দেখছিলে?"
দিবাকর বোকার মতন বলে উঠলো, "হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিকই বলেছো। আমি রেশমীর কথা কালকেই খুব ভাবছিলাম।"
রজত মনে মনে একটু গাল দিল দিবাকরকে। বললো, "শালা ন্যাকামি কম জানে না। সিরিজা ঘরে রয়েছে, আর উনি রেশমীর কথা চিন্তা করেছেন? আমাকে উজবুকটা যেন বানাতে পারলেই হল। তোর মনের ইচ্ছা যেন আমি বুঝি না?"
সিগারেটটা এমন ভাবে মনের সুখে টানছিল, দিবাকরের মনে হল, এত কিছু হবার পরও রজতের যেন কোন টেনশন নেই। শুধু অপেক্ষা করছে, সিরিজা কখন বাথরুম থেকে বেরোবে। বেরোলেই খপ করে ধরবে। যেন শিকারীর মতন বসে আছে চেয়ারে।
ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তেই রজত বললো, "আমি অবশ্য এসব নিয়ে ভাবছি না।"
দিবাকর বললো, "কোনটা?"
রজত বললো, "ঐ বাড়ীতে যা এখন হচ্ছে। এগুলো দুতিনদিন খুব হবে। তারপরই সব চুপসে যাবে, রজতের কেরামতি দেখলে। আমাকে তো চেনে না ওরা। এমন জায়গায় সিরিজাকে নিয়ে চলে যাবো। জন্ম জন্মান্তরেও আর হদিশ পাবে না।"
দিবাকর বললো, "কোথায় যাবে?"
রজত বললো, "তোমাকে বলেছিলাম না, চলো কদিন বেড়িয়ে আসি। তুমিও গা করলে না। আর সিরিজাও তাই। ও পরে রইলো রেশমীকে নিয়ে। রেশমী আর তোমার পুনর্মিলন ঘটাবে। সেই রেশমীই যখন আসছে। তখন আর চিন্তা কি? চলো, এবার আমরা চারজনেই কোথাও চলো চলে যাই। অনেক দূর। যেখানে আমরা থাকব। নতুন একটা বাসা বাধবো। দুটো ছেলে আর দুটো মেয়ে, জোড়া অন্তর্ধান। কেমন হবে বলো তো?"
দিবাকর মনে মনে ভাবছে, "শালা এক দোলনকেই সামাল দিতে পারলো না। নাকানি চোবানি আর হিমশিম খেয়ে নাকাল। আর এখন বাবুর ভ্রমণের সখ হয়েছে। যেন উনি চাইলেই সিরিজা অমনি এক কথায় রাজী হয়ে যাবে, সঙ্গে যেতে।"
রজত দিবাকরকে একটু ধ্যাতানি দিয়ে বললো, "সিরিজা তো এক কথায় যাবে। এবার তুমি যাবে কিনা বলো? তবে তো প্ল্যানটা ওরকম ভাবে সাজাই। রেশমীকেও তো রাজী করানোর ব্যাপারটা আছে। যা করার আমাদের আজকেই ঠিক করে নিতে হবে, সময় হাতে কিন্তু বেশী নেই।"
দিবাকর বুঝতে পারছিল, একটু পরে সিরিজা বাথরুম থেকে বেরোলে, কি অবস্থাই না হবে রজতের। নেহাত সিরিজা ওকে মানা করে রেখেছে। নইলে এতক্ষনে মুখের ওপর বলেই দিত। আশা ছেড়ে দাও। এ জন্মে সিরিজা আর তোমার হল না।
বলতে পারছে না। কারন সিরিজার স্বামীটাও তালে গোলে এমন সময় এসে হাজির হয়েছে, যে রজত সব দোষ দিবাকরের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারে। বলা যায় না, স্বামীটাকেও সঙ্গে করে নিয়ে আসতে পারে এ বাড়ীতে। ভালোমানুষ সেজে ঐ মাতালটাকে বলবে, সিরিজার সাথে আমি তো কিছু করিনি, যা করার ঐ লোকটাই করেছে। সুতরাং ওকে পাকড়াও। তোমার বউ এর মাথা খাওয়ার মূলে ওই। আমি তো নিতান্তই সাধুপুরুষ।
দিবাকরকে চমকে দিয়ে রজত বললো, "এতো নাটক কেন করো? আসল কথাটা বলে দিলেই তো হয়?"
দিবাকর যেন আকাশ থেকে পড়লো, বললো, "কিসের নাটক? কি করেছি আমি?"
রজত বললো, "এই যে, রেশমীকে নিয়ে তুমি হয়তো আমার আর সিরিজার সাথে ভিড়তে চাও না। নির্জনে প্রেম করবে। তা সেটা তো বললেই হয়। অত ন্যাকামোর কি আছে?"
দিবাকর বললো, "দাঁড়াও দাঁড়াও, আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে।"
রজত বললো, "কি?"
- "সিরিজ আর রেশমী দুজনকে নিয়েই আমি না হয় গায়েব হয়ে যাচ্ছি। তোমার এই মূহূর্তে গা ঢাকা দেওয়াটা ঠিক হবে না।"
রজত বেশ চেঁচিয়ে উঠে বললো, "ওয়াট?"
এতক্ষণ ওর চোয়ালটা শক্ত হয় নি। এবার সত্যি সত্যি শক্ত হল। মনে মনে দিবাকরকে গাল দিয়ে বললো, "শালা, তোর পেটে পেটে এত? একটার বদলে এখন দুটো? তোর ঐ নিচের আখাম্বাটার জোর আছে? দুজনকে সামাল দিতে পারবি তুই? সে ক্ষমতা তোর আছে?"
দিবাকর বললো, "তুমি যতই অন্যকিছু ভাবো, আমি কিন্তু তোমার জন্যই....."
রজত বললো, "মানে?"
- "মানে তুমি বুঝতে পারছো না? এখন যদি ঐ বাড়ীতে জোর করে কদিন একাই থাকতে পারো, তাহলেই তো মুশকিল আসান। ওর বরটাকে বলবে, সিরিজা তো আমার কাছে নেই। ওকে অন্য কেউ নিয়ে পালিয়ে গেছে। আর কোথায় গেছে তুমিও জানো না। ওর বরটা হন্যে হয়ে কদিন ঘুরবে, তারপর হতাশ হয়ে গ্রামে ফিরে যাবে। আর তুমিও তখন আবার ফিরে আসবে আমাদেরই কাছে।"
কি বুদ্ধি! রজত মনে মনে বললো, "শালা তোর পেটে পেটে এত? একটাকে নয়, দুটোকেই চাই? সিরিজাকেও চাই আবার রেশমীকেও চাই? জীবনে কোনদিন, মেয়েমানুষের গা ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখলি না। একবার সিরিজার আর আমার ভালোবাসা দেখে তুই শুকনো ডাঙায় আছাড় খেলি। তোর পেটে পেটে এখন এতো?"
দিবাকরও বুঝতে পারছিল, কথাটা রজতের হজম করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে, ও মনে মনে বললো, "কেন, এখন কদিন না হয় দোলনকে নিয়েই তুমি ফূর্তী করো। রেশমী সিরিজা কেউ যখন তোমার সাথ দেবে না। তখন ওদেরকে যা বোঝার আমাকেই তো সব বুঝে নিতে হবে, তাই না? আগে তুই সিরিজার বরটাকে কিভাবে সামল দিবি, সেটা নিয়েই বেশী চিন্তা করো।"
এক নারীকে নিয়ে টানাপোড়েন, আর দ্বন্দ। কি অবস্থাই হয়েছে এখন দুজনের মধ্যে। কেউ সিরিজাকে ছাড়ার পক্ষপাতী নয়। পারলে যেন, এই মারে কি সেই মারে। আর কি?
রজত বললো, "সিরিজা এত দেরী করছে কেন? কখন ঢুকেছে বাথরুমে? কুড়ি মিনিট তো হয়ে গেল বসে আছি। বেরুবার নামই করছে না।"
দিবাকর, রজতের অস্থির হওয়াটা দেখে বেশ মজা পাচ্ছিল। এখন সিরিজা রজতের আর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। মায়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে দিবাকরকেই সঙ্গী করেছে। কাল রাতে সিরিজাকে অবজ্ঞা করার মজাটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রজত। বলা যায় না ও হয়তো ইচ্ছে করেই বেরোচ্ছে না। রজত যাতে আরো ব্যতিব্যস্ত হয়। ছটফট করে মরে যাবে রজত। জানে না কি ভুলই ও কাল করেছে।
ঠিক তার দু মিনিট পরেই বাথরুম থেকে স্নান সেরে বেরোলো সিরিজা। রজত দিবাকর দুজনেই ওকে দেখে বেশ অবাক হল। দেখলো সিরিজা ভিজে শাড়ীটা গায়ে জড়িয়েছে। কিন্তু শাড়ীটা এমন ভাবে চেপে বসেছে, শরীরর উঁচু নিচু খাঁজগুলো সব শাড়ীর তলাতেও স্পষ্ট। স্তনের বোঁটার চারপাশে কালো আর খয়েরী মেশানো অংশটা, যেটা একটা কালো আধার তৈরী করেছে। ভিজে শাড়ীর তলা থেকেও ওটা স্পষ্ট বিদ্যমান। ফুলে থাকা বোঁটাদুটো যেন বিকশিত হচ্ছে ভেতর থেকে। এত উন্নত আর দৃঢ় সিরিজার স্তন। সেঁটে থাকা শাড়ীটা যেন জৌলুস আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বুকদুটোর। রজত ঠোঁটদুটো একটু হাঁ করে ফেললো। কিন্তু দিবাকর হাঁ করলো না। ওর জিভটা দাঁতের ফাঁকে কোথায় যেন আটকে গেল। মনে হল, সিরিজার ওই শক্তিশালী বুক দুটো দেখে জিভ এমনভাবে জড়িয়ে গেছে, ওটাকে এখন স্বাভাবিক করা বেশ শক্ত।
রজত আত্মহারার মতন বলে উঠলো, "সিরিজা তুমি বেরিয়েছো? আমি তো কখন থেকে এসে বসে আছি তোমার জন্য।"
সিরিজা, দিবাকরের দিকে একবারও তাকালো না। রজতকে বললো, "আমি বাথরুমের ভেতর থেকে সবই শুনছিলাম, তোমার কথা। ঐ সুখেনটা এসেছে বুঝি? ও আমাকে নিয়ে যাবে? জোর করে? আমিও যাবো ওর সঙ্গে? এতদিন বাদে, আবার আমার জন্য তার এত দরদ কেন? পারে তো অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করে নিক। সুন্দরী মেয়ের তো অভাব নেই ঐ গ্রামেতে। ও যা অপদার্থ লোক। কে বিয়ে করবে ওকে? ভেবেছে, আমিই বুঝি, সারাজীবন ওর গলায় মালা দিয়ে থাকবো? আমার নিজস্ব কোন শখ আল্লাদ নেই? স্বাধীনতা নেই।"
রজত কিছু বলতে যাচ্ছিলো, সিরিজা বাধা দিয়ে বললো, "তোমাকে সেই থেকে কত ঝেমেলা পোয়াতে হচ্ছে। অথচ আমিই বলেছিলাম, আমাকে নিয়ে তোমার কোন সমস্যা নেই। এখন সব জোট হয়েছে এক সাথে।"
রজত উঠে দাঁড়িয়ে তখনই জড়িয়ে ধরে সিরিজাকে চুমু খেতে যাচ্ছিলো, সিরিজা একটু চালাকী করলো, রজতকে বললো, "একটু বসো, আমি এক্ষুনি আসছি, কাপড়টা ছেড়ে।"
এই বলে শোবার ঘরে ঢুকলো। আর দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিল। রজতের আর ভেতরে ঢোকা হলো না।
সিরিজার আচরণটা ঠিক বোধগম্য হল না দিবাকরের। রজত বললো, "আসলে তুমি সামনে রয়েছ তো, তাই একটু লজ্জ্বা পেল মনে হয়।"
বলেই আপন মনে হাসতে লাগলো রজত। আবার একটা সিগারেট ধরালো। মনটা বেশ খুশি খুশি লাগছে। দিবাকরকে নিয়ে একটা সন্দেহ করেছিল ও। সিরিজা ওভাবে রজতের প্রতি দরদ দেখাতে সন্দেহটা এখন কেটে গেছে।
বেশ খুশি মনেই দিবাকরকে বললো, "দিবাকর কিছু যদি মনে না করো, সিরিজা বেরোলেই, আমি ওঘরে একটু ঢুকবো। ওর সাথে কিছু কথা আছে আমার। তাছাড়া, ওকে নিয়ে একটু খুনসুটি, আর সাথে কিছু আদর। বোঝো তো সব। তুমি যদি এক ঘন্টা এঘরে একটু একা থাকো, আপত্তি নেই তো তোমার?"
রজতের কথাটা দিবাকরের মাথায় যেন বাজ পড়ার মতন হল। বুঝতেই পারছিল, ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি তৈরী হতে যাচ্ছে একটু পরে। এতবড় সাহস ওর? বলে কিনা, এক ঘন্টা আমি সিরিজাকে আদর করবো, আর তুমি ততক্ষণ এঘরে একদম এসো না। আমি উজবুক? আমি নির্বোধ? শালা খচ্চর একটা, দম থাকে তো, সিরিজাকে আদর করে দেখা দেখি ওঘরে? তোর ক্ষমতায় কুলোবে না। সিরিজা তোকে.....
বলতে বলতেই শোবার ঘরের দরজাটা খুলে সিরিজা এসে দাঁড়ালো সামনে। দিবাকরকে অবাক করে সিরিজা রজতকে বললো, "এঘরে আসবে নাকি? দিবাকরদা ততক্ষণ, না হয় এঘরেই বসুক। আমার কাপড় ছাড়া হয়ে গেছে। এসো তাহলে।"
সিরিজার ওই এক কথাতেই রজতের মনে হল, আগের সিরিজা যেন আগের মতই আছে। কোন পরিবর্তন নেই, ঠিক যেন চেনাপরিচিত সেই ঢং। সেই আকুতি, সেই শরীরের টান, রজতকে কাছে পাবার জন্য যে নিজেও ছটফট করে মরে।
রজত চেয়ার ছেড়ে পুরো লাফিয়ে উঠলো, ভাবলো, "এই তো আমার জান নিজে থেকেই ডেকেছে আমাকে। যেন এখুনি ঘরে ঢুকে সিরিজার শরীরটা ওপর থেকে নিচ অবধি, মন মাতানো সুখে চাটবে। আদরে আদরে ভরিয়ে দেবে শরীর। ওকে পাওয়া মানে, সব বাঁধাকে হেলায় তুচ্ছ করা। সিরিজা কাছে থাকলে, টেনশন বলে পৃথিবী কিছু আর থাকে না।"
দিবাকর পুরো হতভম্ব। সিরিজার হঠাৎ রজতকে এভাবে ঘরে ডেকে নেবার উদ্দেশ্য কি, ওর কিছুই মাথায় ঢুকলো না। কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। তারপর দেখলো, সিরিজা, রজত দুজনেই ওকে প্রায় কলা দেখিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল।
চেয়ারে একা একা বসে রইলো দিবাকর। দেখলো, শোবার ঘরের দরজাটাও আসতে আসতে বন্ধ হচ্ছে। তারমানে এই মূহূর্তে ওর ঘরে ঢোকারও আর কোন অধিকার নেই।
কেন এমন করলো সিরিজা? তাহলে কি রেশমীর ব্যাপারটাই ওকে সম্পূর্ণ বদলে দিল? রজত এতক্ষণ চেয়ারে বসে রেশমীর কথাগুলো জোরে জোরে এমন ভাবে বলেছে, সিরিজা বোধহয় সবই শুনেছে বাথরুম থেকে। রেশমী আসছে, এই শুনেই কি সিরিজা তাহলে সরে যেতে চায় দিবাকরের জীবন থেকে? আবার সেই রজতকেই মেনে নেওয়া। রজতের হাজার দোষ থাকা সত্ত্বেও? সিরিজার দেওয়া প্রতিশ্রতি, রজতের প্রতি তার তীব্র অভিমান, সব দিবাকরের মনে হচ্ছিল, মনগড়া সব কথা। পুরুষের মনকে আকৃষ্ট করতে সিরিজা এসবে দক্ষ। সাধে কি সবাই ওর জন্য পাগল হয়? রজত পাগল হয়েছে এমনি এমনি?
মুখটা এমন ভাবে ব্যাজার করে বসে রইলো দিবাকর, যেন দেখে মনে হবে একটু আগে শ্মশান থেকে উঠে এসেছে। মনে মনে ভাবল, না সিরিজা নয়, এখন মনে হচ্ছে রেশমীই আমার জীবনে ঠিক নারী। কথায় কথায় এমন পাল্টি খেতে রেশমী জানে না। ভালোবাসাটা ওর কাছে স্বচ্ছ। সিরিজার মত মেকী ভালোবাসা নয়। দেহগত ভালোবাসা ছাড়া সিরিজা মনে হয় আর কিছুই জানে না।
একটু কান খাড়া করে শোনবার চেষ্টা করলো দিবাকর, ওদের দুজনের মধ্যে কি কথা হচ্ছে। কিন্তু ও দেখলো, দরজাটা ভেতর থেকে সিরিজা বা রজত যেই হোক না কেন, এমন ভাবে লাগিয়েছে, টু শব্দটিও শোনা যাচ্ছে না ভেতর থেকে। যেন ওরা দুজনে খুব আস্তে আস্তে কথা বলছে। বাইরে থেকে দিবাকর শুনুক, সেটা দুজনের কেউ চায় না।
সিরিজাকে ঘরের মধ্যে পেয়ে রজত প্রথমেই ওর ঠোঁটে একটা জোরালো চুমু খেতে যাচ্ছিলো, সিরিজা বললো, "এই দাঁড়াও, দাঁড়াও। পাশের ঘরে দিবাকরদা আছে, সেটা খেয়াল আছে তোমার?"
রজত বললো, "কে দিবাকর? আমি চিনি না ওকে।" বলেই সিরিজাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত দুহাতে।
- "কি করছো তুমি?"
-- "আমার সিরিজাকে এখন একটা চুমু খাবো।"
- "কেন? কাল বুঝি চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা মনে পড়েনি?"
-- "কাল তো আমি দোলনের শুধু মন রেখেছি সিরিজা, তুমি বুঝতে পারো নি?"
- "খুবই পেরেছি। দোলনকে নিয়ে তোমার অত পীরিত।"
-- "পীরিত? ঐ পাজী মেয়েটাকে নিয়ে পীরিত? কখনই নয়।"
- "তাহলে কি?"
-- "ওটা সিরিজাকে চিরকাল পাওয়ার জন্য।"
- "আমাকে চিরকাল পাবে বলে, তুমি এখানে পাঠিয়ে দিলে? তাই বুঝি?"
রজত সিরিজার ঠোঁটের কাছে ঠোঁটটা নিয়ে গিয়ে বললো, "কেন? তুমি বোঝো না? আমি তোমাকে কতটা চাই? সারা পৃথিবী একদিকে, আর তুমি আমি একদিকে। এত লড়াই করছি কার জন্য? শুধু তোমাকে পাব বলেই তো....."
সিরিজা বললো, "আমাকে পেতে তোমার কত কষ্টই সহ্য করতে হচ্ছে তাই না?"
রজত বললো, "দূর, এ আর এমন কি কষ্ট? কষ্টটা মনে করলেই কষ্ট। তোমার জন্য আমি সব বাঁধা অতিক্রম করতে পারি। কেউ তোমাকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না আমার কাছ থেকে।"
সিরিজা বললো, "দোলন তোমাকে বুঝি কাল অনেক জ্বালিয়েছে? সারারাত শুতে দিয়েছিল তোমাকে? না কি....."
রজত বললো, "কি যে বলো সিরিজা। ওর কি এমন ক্ষমতা যে আমাকে জ্বালিয়ে মারবে? দোলনকে শুধু রেখেছিলাম এক রাতের জন্যই। আমি তো জানতাম না, সকালে এমন কান্ডটা হবে। শ্বশুড় আসতে পারে সেটাই জানতাম। তোমাকে যারজন্য ওখান থেকে সরিয়ে দিলাম। সকাল হতে দেখি, বুড়োটা আবার তোমার স্বামীকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছে।"
সিরিজা বললো, "আমি সব জানি। সব শুনেছি, বাথরুম থেকে।"
রজত বললো, "দিবাকরের তো হিল্লে হয়ে গেল। সেটা কি শুনেছো?"
সিরিজা বললো, "হ্যাঁ রেশমী আসছে, শুনেছি, তাই তো?"
-- "কি অবাক ব্যাপার তাই না? ও নিজে থেকেই ফোন করলো আমাকে। আমি সব খুলে বললাম। রেশমী আমাকে বললো, দিবাকরের জন্য ও অনুতপ্ত। ভালোবাসাটা তাই ফিরিয়ে দিতে চায়।"
সিরিজা মুখে কিছু না বলে মুখটা একটু করুন মত করে রজতের দিকে তাকিয়ে রইলো। রজত বললো, "কিন্তু দিবাকর এরকম আচরণ করলো কেন?"
সিরিজা বললো, "কি?"
-- "রেশমীর কথাটা শুনে ও খুশি হল না। যাকে ও এত ভালোবাসতো, তার কথা শুনে মুখে একটুও হাসির ঝিলিকটা দেখতে পেলাম না। কারণটা কি?"
সিরিজা বললো, "ও রেশমী এলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। দিবাকরদা একটু চাপা স্বভাবের, তাই খুশীটা দেখাতে পারছে না তোমাকে। কাল যখন রেশমী আসবে, দেখবে দিবাকরদার কি অবস্থা হয়।"
রজত বললো, "রেশমীকে দিবাকরের সঙ্গে ভিড়িয়ে দিয়ে এবার আমার শান্তি কি বলো?"
সিরিজা চুপ।
রজত বললো, "দিবাকর কোনদিন রেশমীকে চুমুটাও খেতে পারেনি। আমি ওকে শেখাবো, কিভাবে মেয়েদের দিকে ঠোঁট বাড়িয়ে দিতে হয়।"
সিরিজা বললো, "কিভাবে? তুমি কি রেশমীর ঠোঁটে চুমু খাবে নাকি?"
রজত বললো, "পাগল? আমার সিরিজার এত সুন্দর ঠোঁট থাকতে আমি রেশমীকে চুমু খেতে যাবো কোন দুঃখে? ওকে শুধু সাহস আর ভরসা জোগাবো এই আর কি....."
সিরিজা বুঝতেই পারছিল, রজত ওর ঠোঁট দুটোকে কামড়ে ধরার জন্য একেবারে উসখুস করছে। শুধু সিরিজার চোখের সাথে দৃষ্টিটা একাকার করার চেষ্টা করছে। সিরিজার ঠোঁট যতক্ষণ রজতের ঠোঁটের কাছাকাছি রয়েছে, ততক্ষণই রজতের সারা শরীরে একটা তীব্র শিহরণ হচ্ছে। একবার সিরিজার ঠোঁটের মধ্যে রজত ঠোঁটটা চুবিয়ে দিলেই তখন আর ওকে সামলানো যাবে না। চুমু খেতে খেতে সিরিজার বুকে হাত দিয়ে টেপাটেপি শুরু করে দেবে। ঠোঁট থেকে শুরু করে তারপর সারা শরীরটায় চুমু খাবে। সিরিজাকে নগ্ন করবে, বিছানায় ফেলবে, উন্মুক্ত স্তন মুখে নিয়ে শিশুর মতন দুধ পান করবে। তারপর এমনই বাঁধভাঙা শ্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে দেবে, দিবাকরের এই বিছানাতেই শুরু হবে তখন তীব্র রতিক্রীড়া। পাশের ঘরে বসে দিবাকর তখন যতই যন্ত্রণা আর ব্যাথা অনুভব করুক, সিরিজা বুঝলেও রজত কিছুতেই সেটা বুঝবে না। উন্মাদের মতন তান্ডব শুরু করবে সিরিজাকে নিয়ে। ঝড়ের গতিতে আঘাত করতে করতে শেষ পর্যন্ত কামনার সঙ্গম যখন স্তব্ধ হবে, ততক্ষনে দিবাকরের না প্রানটাই চলে যায়। সিরিজার দূঃখে দিবাকর কিছু করে বসলে, সিরিজার একটা আফসোস হবে। কিন্তু রজতের তাতে বিন্দুমাত্র আফসোস হবে না।
এত কিছু জেনেও সিরিজা রজতকে খুশি করতে দ্বিধা করলো না। চোখ বুজে রজতকে বললো, "খাও। কিন্তু বেশীক্ষণ ধরে চুষবে না। যদি দিবাকরদার এটা বাড়ী না হত, তাহলে তোমাকে আমি মানা করতাম না।"
সিরিজার অনুমতি আর সাড়া পেয়ে রজত যেন এবার ধরাকে সরা দেখতে লাগলো। দিবাকরকে নিয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, সেভাবেই সিরিজার ঠোঁট চুষে তীব্র কামনা মেটাতে লাগলো। চোষার রসনাটা যেন ক্রমশই বাড়তে শুরু করেছে। এত আরাম আর এত তৃপ্তি যেন কোনকিছুর মধ্যেই আর নেই।
মাথার মধ্যে কিলবিল করছে যেন কামনা আর ভূখটা। তীব্র আশ্লেষে চুমু খেতে খেতে রজত বললো, "আমি শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই সিরিজা, একেবারে জীবনের শেষ পর্যন্ত।"
জিভ আর ঠোঁটের ভরপুর খেলা চলছে। রজত বললো, "এই কাঙালটা যখন তোমাকে পেতে এত ছটফট করে, তুমি কি চাওনা বুক চিতিয়ে আমি ওদের সাথে লড়াই করি? কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না তোমাকে আমার কাছ থেকে। পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নেই।"
সিরিজা ওই চোষার ফাঁকেই কিছু বলার চেষ্টা করছিল, রজত ওকে সুযোগ না দিয়ে আরও পাগলের মতন চুষতে লাগলো। ঠোঁটকে যেভাবে চুষছিল, যেন এক পিপাসু, লোভী। উপায় না দেখে সিরিজা পুরোপুরি সঁপে দিল। রজতের মনে হল, স্বর্গসুখ পেতে ও যখন এখানে ছুটে এসেছে, তখন সেই প্রাপ্তিযোগটা ঘটতে আর বেশী দেরী নেই। সিরিজা হয়তো নিজে থেকেই এবার রজতকে আহবান করে নেবে, বিছানায় শোবার জন্য।
-- "তোমার এই আবেদন, উজাড় করা ভালোবাসা কি ভোলা যায়?"
সিরিজার ঠোঁটের মধ্যে নিজের জিভটা ঢোকাচ্ছে আর বার করছে, রজত বললো, "আমি খুব উত্তপ্ত হয়ে যাচ্ছি সিরিজা। তোমাকে ছেড়ে এক্ষুনি আমি যেতে পারবো না, আজ আমি সারাদিন এখানেই থাকবো। তোমাকে আদর করবো। দিবাকর কিছু ভাবলেও আমার কিছু এসে যায় না।"
সিরিজা বললো, "এরকম ভাবে বোলো না। দিবাকরদা যদি মেনে নিতে না পারে?"
রজত ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠলো, আবার সিরিজার ঠোঁট কামড়ে ধরে বললো, "কেন পারবে না? আমার যে তোমাকে ছেড়ে থাকা কষ্টকর। আমি পারবো না। আমি আজ এখানেই থাকব। কোথাও যাবো না।"
সিরিজা বুঝতে পারছিল রজতের হাত এবার ওর বুকে থাবা বসিয়েছে। আসতে আসতে ব্লাউজ সমেত করায়ত্ব করার চেষ্টা করছে সিরিজার ভারী স্তনের একটাকে। কামলীলায় মত্ত হওয়ার মতন ওর বুক টিপছে আর আয়েশ করে চুমু খাচ্ছে ঠোঁটে। যেভাবে ক্ষেপে উঠেছে রজত, ওকে থামানো এবার সত্যিই মুশকিল। রজত যেন আর অপেক্ষা করতে পারছে না।
মরীয়া হয়ে ও সিরিজাকে বললো, "চলো না সিরিজা, আমরা একটু খাটে যাই, তোমার বাচ্চাটা তো ঘুমোচ্ছে। আমরা একপাশে একটু জড়াজড়ির খেলা খেলব। দিবাকর ওঘরে বসে আছে। ও কিচ্ছু এখন মনে করবে না।"
সিরিজা বললো, "দিবাকরদা কিছু মনে করবে না, সে আমিও জানি। কিন্তু এর বেশী আর কিছু কোরো না এখন। আমাদের সুখেনের ব্যাপারটা নিয়ে একটু বেশী ভাবতে হবে এখন।"
রজত সিরিজার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে বললো, "ইস তুমি ঐ হতভাগাটার নাম নিলে, আর আমার সুখে আবার এখন বাঁধা পড়লো।"
সিরিজা রজতের গালে হাত রেখে বললো, "কি হয়েছে তাতে? আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি? আমি তো আছিই। তুমি ওকে কিভাবে তাড়াবে, সেটা একবারও চিন্তা করেছো?"
রজত বললো, "চিন্তা আবার কি? ওকে গিয়ে বলব, তোমার বউ দিবাকরের সাথে ভেগে গেছে।"
সিরিজা অবাক হয়ে বললো, "সত্যি?"
রজত বললো, "সত্যি তো নয়। কিন্তু এমন ভাবে কথাটা বলতে হবে, যাতে সত্যি মনে হয়।"
সিরিজা বললো, "সেটা কিরকম?"
রজত বললো, "আমি এখান থেকে চলে যাবার পর, তোমরা খুব বেশী সময় নেবে না। দিবাকরকে বলে দিচ্ছি, ও তোমাকে নিয়ে কোন হোটেলে চলে যাক। আমি বাড়ী গিয়ে বলব, দিবাকরের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখলাম তালা মারা। মনে হয় দিবাকর সিরিজাকে নিয়ে পালিয়েছে।"
সিরিজা বললো, "তারপর?"
রজত বললো, "তারপর আবার কি? ও যদি বিশ্বাস না করে, ওকে বলব, চলো আমার সাথে। তাহলেই বুঝে যাবে আমি সত্যি বলছি কিনা? তোমার ঐ সুখেনটা তখন আমার সাথে আসবে। এখানে এসে দেখবে, সত্যি তোমরা নেই। ও তখন ফিরে যাবে।"
- "আর তুমি?"
-- "আমি আগে তোমার বরটাকে সাইজ করবো। তারপর দোলনকে ভাগাবো ওখান থেকে।"
- "কিভাবে?"
-- "ওকে বলবো, দেখেছো তো কত ঝেমেলা। তুমি সিরিজাকে নিয়ে এত হিংসে করছিলে, আর দেখো সিরিজাই শেষ পর্যন্ত আমাকেই ছেড়ে চলে গেল। আর কি ওকে ফিরে পাব আমি? সিরিজাকে ছাড়া আমার জীবন যে একেবারে অচল হয়ে গেল। এবার তুমিও তাড়াতাড়ি বিদায় হও। অনেক আমার মাথা খেয়েছ, এবার আমাকে মুক্তি দাও। কারণ আমি এখন এখান থেকে অনেক দূরে চলে যাবো।"
সিরিজা বললো, "দোলন যদি শেষ পর্যন্ত না মানে?"
রজত বললো, "তাহলে ওর কপাল মন্দ। কারণ ঐ বাড়ীতে ও তো আর একা থাকতে পারবে না। আর রীতাও চাইবে সেটা। এতক্ষনে মনে হয় সব জেনে গেছে।"
সিরিজা বললো, "আর রেশমী এলে?"
রজত বললো, "রেশমী আবার আমাকে ফোন করবে। কাল যখন ও আসবে, আমরা চারজনে একজায়গায় মিট করবো। তুমি আমি রেশমী আর দিবাকর। তারপরে ঠিক করে নেবো, কোথায় আপাতত যাওয়া যায়। রেশমীকেও ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলতে হবে।"
সিরিজা বুঝলো রজত খুব অল্পসময়ের মধ্যেই খাটিয়েছে বুদ্ধিটা। রজতকে বললো, "দিবাকরদাকে এখুনি ব্যাপারটা বলো, যা করার তাহলে তাড়াতাড়িই করতে হবে।"
রজত সায় দিল। সিরিজা ঘরের দরজাটা খুললো। পাশের ঘরে মুখটা বাড়ালো। দেখলো দিবাকর যেখানটায় বসেছিল, সেখানে আর নেই।
রজত বললো, "এই তো একটু আগে ছিল। তাহলে গেল কোথায়?"
ওরা দেখলো সদর দরজাটাও বাইরে থেকে বন্ধ। যেন ভেতরে ওদের তালাবন্দী করে রেখে দিবাকর ভ্যানিস হয়ে গেছে ওখান থেকে।
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
লেখক(Lekhak)-এর লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereলেখক(Lekhak)-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment