CH Ad (Clicksor)

Tuesday, September 16, 2014

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক আবুল কাশেমের ৬ খন্ডে প্রকাশিত প্রবন্ধ 'সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম'



অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক আবুল কাশেমের ৬ খন্ডে প্রকাশিত প্রবন্ধ 'সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম'





সতর্কতাঃ
নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে লেখককে দায়ী করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
-সংগ্রাহক




ভুমিকাঃ

ইসলামী সমাজে কাম বা সেক্স বিষয়টি একেবারেই অপ্রকাশ্য। সাধারণ মুসলিম সমাজে সেক্স শব্দটি কদাচিত উচ্চারিত বা আলোচিত হয়ে থাকে। হলেও হয় গোপনে, ভয়ে ভয়ে। (দৈব দূর্বিপাকে কোন সমস্যা দেখা দিলে কিংবা কাফেরদের দেশে নারীসম্ভোগের জন্যে গমন করা ছাড়া অন্য সময়ে যৌনবিষয়ক আলাপ আলোচনা ইসলামী সমাজে নিষিদ্ধই বলা যায়)। ইসলাম ভান করে যেন পুরুষ বা নারীর দেহে যৌনাঙ্গ বলতে কোনকিছুর অস্তিত্ব নাই। একজন মুসলিম রমণীকে তার মাথা হতে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হয় আজীবন, তার “আওরাকে” সে এভাবেই আবরণ দিয়ে রক্ষা করে। ইসলামী পরিভাষায় আওরা বলতে নারীর সেই অঙ্গকে বুঝায় যা দেখলে পুরুষ কামোত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং যা নারীর জন্যে লজ্জাস্বরূপ। অর্থাৎ সেক্সুয়াল অর্গান বা যৌনাঙ্গ হচ্ছে নারীদেহের একটি লজ্জাজনক অংশ ! ‘তার সমস্ত দেহটিই একটি লজ্জাজনক বস্তু’ - এই অনুভূতি নিশ্চয়ই নারীদের জন্যে সম্মানের বিষয় নয়।

পুরুষের জন্যেও সিস্টেমটি চরম অবমাননাকর। কারণ এতে এই প্রমাণ হয় যে পুরুষজাতি রাস্তায় বিচরণরত বেওয়ারিশ ষাঁড়ের চেয়ে বেশী কিছু নয়, সামনে মেয়ে দেখলেই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অপরিসীম যৌনক্ষুধা মিটিয়ে নেয়ার জন্যে সর্বক্ষন মুখিয়ে আছে সে। একেবারেই অর্থহীন বাজে একটি ধারণা। এই কাফেরদের দেশে যুগের পর যুগ বাস করছি আমি, নানা বর্ণের নানা বয়েসের লাখ লাখ মেয়ে অহোরাত্র প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে। তাদের কারও বেশভুষা শালীন, কারও বেশভুষা প্রচলিত ভাষায় যাকে বলে চরম ‘সেক্সি’। কিন্তু কখনও দেখিনি যে কোন পুরুষ কামতাড়িত হয়ে এমনকি চরম সেক্সি মেয়েটির উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং পাশবিক ক্ষুধা মিটিয়ে নিল। সেক্স সম্পর্কে ইসলামের ধারণা মুলতঃ বেদুঈন আরব কালচারের উপর প্রতিষ্ঠিত। আধুনিক সভ্য সমাজের মানদন্ডে এই কালচার একেবারেই সেকেলে, বর্বর আর অসভ্য বললেও কম বলা হয়। কেন ইসলামী সমাজে সেক্স শব্দটি চরম নোংড়া শব্দ বলে বিবেচিত হয়, কেনই বা এসম্পর্কিত আলোচনা সেখানে একেবারেই নিষিদ্ধ -এই বিষয়টি আমাকে দারূণভাবে কৌতুহলী করে তুলে। ইসলামের মৌলিক ধর্মীয় রচনাগুলিতে সেক্স সম্পর্কে লিখিত কোন বিধিবিধান আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে প্রবৃত্ত হই আমি। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম- তফসির, হাদিস, শরিয়া, ফিক্হ্ এইসব বিভিন্ন ইসলামী বিষয়ের উপর টন টন রচনা আছে, অথচ সেক্সের উপর যেটুকু তথ্য আছে তা অতীব সামান্য। সুতরাং এ সম্পর্কে কলম চালনা করতে আমাকে ভাসা ভাসা সুত্রের উপর নির্ভর করতে হলো। আরও একটি বড় ধরণের সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছিল আমার জন্যে। আমি বিস্ময়ের সাথে আবিস্কার করলাম- কামচর্চার নিষেধাজ্ঞাটি পুরুষদের উপর মোটেও কার্যকরী নয় ইসলামে ! আপাতঃ নিষেধ বলে যা প্রতীয়মান হয়, তা নেহায়েতই লোকদেখানো মাত্র!

ইসলামী আইনসমুহে অগণিত ছিদ্র রয়েছে। এত ছিদ্র আছে যে ইচ্ছে করলে যে কোন মুসলমান পুরুষ, তা সে বিবাহিত বা অবিবাহিত যাই হোক না কেন, আইনের কানাগলির সুযোগ নিয়ে অপরিমিত যৌনসম্ভোগ করতে পারে। তাকে যা করতে হবে, তা হলো খেলাটি ভালভাবে রপ্ত করা। না জেনে খেলতে গেলে সমুহ বিপদের সম্ভাবনা। সেক্স করার জন্যে ইসলামে এত গুপ্ত উপায়, না বলা এতসব আইনকানুন আছে যে মোল্লরা কখনও সে সম্পর্কে মুখ খুলবে না।

পাঠক। শীতকালে গরম লেপের উষ্ণতা কতোই না আরামদায়ক - তাই না? শেক্সপীয়ারের সনেট, রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান, অজন্তার গুহাচিত্র কিংবা প্রাচীন গ্রীসের ভাস্কর্য- সর্বযুগের সংস্কৃতিপ্রেমী মানবসন্তানের মনে সন্তোষের জন্ম দেয়। কিন্তু আপনি কি ভেবে দেখেছেন যে কিছু বিরল উপাদান আছে যার মাঝে মানুষ তার শারিরিক ও মানসিক তৃপ্তি এক সাথে খুজে পায়? সেক্স। হ্যা, সেক্স হচ্ছে সেই বিরল উপাদানগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী উপাদান যা মানবজাতির (বিশেষ করে পুরুষ প্রজাতির) ড্রাইভিং ফোর্স হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এই শক্তিশালী উপাদানটিকে কোন্ সমাজ কীভাবে হ্যান্ডল করে, তার উপরেই সেই সমাজের প্রাগ্রসরতা কিংবা পরিপক্কতার পরিচয় নির্ভর করে।

এই নিরিখে ইসলাম কীভাবে সেক্সকে হ্যান্ডল করেছে তার পর্যালোচনা করা যাক এবার। ইসলাম মানব-প্রজাতির যৌনাচারকে স্ত্রীজাতির মর্যাযাদার সাথে গুলিয়ে ফেলেছে। অথচ মানুষের স্বাভাবিক যৌন ক্রিয়াকলাপ আর নারীর মর্যাদা সম্পুর্ণ আলাদা দু’টি বিষয়। পৃথিবীতে প্রচলিত আর সব ধর্ম -সামাজিক সিস্টেমগুলির সাথে তুলনা করলে দেখা যায় যে ইসলাম সেক্স এবং সেক্সুয়াল পিউরিটির উপর অতিমাত্রায় গুরুত্ব আরোপ করে, অথচ এর মাঝে এত বেশী স্ববিরোধীতা রয়েছে যা দেখে মনে হয় নরনারীর স্বাভাবিক যৌনাচার সম্পর্কে ইসলাম বড় বেশী স্পর্শকাতর, বড় বেশী উৎকন্ঠিত। সেক্সসম্পর্কে ইসলামের কপটতা, দ্বিমুখী ও পক্ষপাতদুষ্ট নীতি এবং উদ্ভট ও অযৌক্তিক বিধিনিষেধের স্বরূপ উন্মোচন করাই বক্ষমান প্রবন্ধের মুল উদ্ধেশ্য। সেই সাথে এটাও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো যে যৌথ সম্মতির ভিত্তিতে নরনারীর যৌনতৃপ্তি মেটানোর প্রাকৃতিক অধিকারের উপর কিছু অন্যায় ও অযৌক্তিক বাধানিষেধ আরোপ করে মানুষের উপর অপরিসীম নির্যাতন চালানোর বিধান দেয়া হয়েছে ইসলামে। নরনারীর যৌন সম্পর্ক মানবজীবনের পরম গুরুত্ব পুর্ণ বিষয়। ধরাপৃষ্ঠে জীবকুলের বিকাশ যৌনপ্রক্রিয়ারই অবধারিত ফসল। এটি ছাড়া ডারউইনের বিবর্তন বহু আগেই বন্ধ হয়ে যেতো। পাঠক, আসুন এবার আমরা ইসলামি সেক্সের উপর আলোচনা শুরু করি।


ইসলাম মনে করে- কুমারিত্ব স্ত্রীজাতির শ্রেষ্ঠ ভুষণ। বিয়ের আগে কুমারিত্ব খোয়ানোর সমতুল্য আর কোন পাপ নাই এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে! ইসলামি সমাজে যথেষ্ট সাবালিকা মেয়েরাও প্রাক-বৈবাহিক সেক্সের কথা চিন্তা করতে পারে না (পুরুষদের ক্ষেত্রে অবশ্য স্বতন্ত্র নিয়ম। পরবর্তীতে আমরা দেখাব -বিয়ের আগেই একজন মুসলমান পুরুষ ক্রীতদাসী অথবা যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে যথেচ্ছ যৌনবিহার করতে পারে। তবে মুক্ত নারীদের সাথে বিবাহ-বহির্ভূত সেক্স সম্পুর্ণ রূপে নিষিদ্ধ)।

পাঠক মনে রাখবেন, বিবাহ-বহির্ভুত সেক্স ইসলামে একটি গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য, অপরাধীকে এর জন্যে গুরুতর শাস্তিভোগ করতে হয়। অপরাধী অবিবাহিত/অবিবাহিতা হলে শাস্তি এক শত দোররা বা বেত্রাঘাত। অপরাধী বিবাহিত(বিবাহিতা) হলে তার শাস্তি পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদন্ড। এই বিধান পবিত্র “হদুদ”আইন নামে পরিচিত; এর অর্থ- অপরাধকরে ফেললে এই বর্বর আইনের হাত এড়ানোর কোন উপায় নেই। একবার রায় হয়ে গেলে একে রদ করার ক্ষমতা কারওনেই, যে কোন ভাবে তা কার্যকর করতেই হবে। ইসলামি ক্ষমা আর সহিষ্ণুতার কি অপুর্ব নমুনা ! আমার বক্তব্য যদি কারও নিকট অতিরিক্ত বিদ্বেষমুলক প্রতীয়মান হয়, তবে তাকে একটি বিষয় স্মরণ করতে বলি। ইসলামের বিধান অনুযায়ী অননুমোদিত সেক্স নরহত্যার চেয়েও বড় অপরাধ। কারণ- হত্যাকারী ‘কিয়াস’ (বদলা) বা ‘দিয়া’র (রক্তপণ) বিনিময়ে অপরাধ থেকে ক্ষমা পেতে পারে। কিন্তু যৌন অপরাধের ক্ষেত্রে এরূপ কোন ক্ষমার সুযোগ নেই ! ভালবাসা খুন করার চেয়েও জঘন্য অপরাধ ইসলামে (বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে)! কতো বড় ঘৃন্য ও অদূরদর্শী আইন, ভাবা যায়! আমাদের যৌন অঙ্গগুলির ‘প্রকৃত মালিক’ কে? আমরা? না পাঠক, এগুলির প্রকৃত মালিক আমরা নই, এর প্রকৃত মালিক ইসলাম। বিশ্বাস করুন আর না করুন, পৃথিবীতে বিচরণকারী প্রতিটি মুসলমান নরনারীর যৌন প্রত্যঙ্গের মালিক ইসলাম।

এর সবকিছুর, এমন কি এর চারপাশে যে তুচ্ছাতিতুচ্ছ যৌনকেশ গজায়- তারও একমেবাদ্বিতীয়ম মালিক ইসলাম ! নীচের হাদিসটি পড়ুন। পবিত্র সহিহ হাদিস। মেয়েদের যৌনাঙ্গে উদ্গত লোমরাশিকে কীভাবে সামলাতে হবে তার নির্দেশনামা। দীর্ঘভ্রমন শেষে স্বামী রাত্রে ঘরে ফিরলে স্ত্রী তার যৌনকেশ উত্তমরূপে শেভ করে রাখবে…. ৭.৬২.১৭৩।

সহি বোখারিঃ ভলিউম-৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-১৭৩: জাবির বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিতঃ নবী বলেছেন - “যদি তুমি রাত্রিতে (তোমার শহরে) প্রবেশ কর (দীর্ঘভ্রমন শেষে), সাথে সাথে গৃহে প্রবেশ করো না যে পর্য্যন্ত না প্রবাসী ব্যক্তির স্ত্রী তার যৌনকেশ শেভ করে এবং আলুলায়িত কুন্তলা তার কেশগুলিকে ভালভাবে বিন্যস্ত করে।” আল্লাহর রসুল আরও বলেন- “হে জাবের, সন্তান লাভের চেষ্টা করো, সন্তান লাভের চেষ্টা করো”।

ফিতরার (সৎকাজ) পাঁচটি অনুশীলনঃ ১। খৎনা করা, ২। যৌনকেশ শেভ করা, ৩। নখ কাটা, ৪। গোঁফকে ছোট করে ছেটেরাখা, ৫। বগলের লোম পরিস্কার করা….. ৭.৭২.৭৭৭।

সহি বোখারিঃ ভলিউম-৭, বুক নং-৭২, হাদিস নং-৭৭৭।

আবুহুরাইরা হতে বর্নিতঃ
আল্লাহর রাসুল বলেছেন- “ফিতরার পাঁচটি নিদর্শনঃ- খৎনা করা, যৌনকেশ শেভ করা, নখ কাটা এবং গোঁফ ছোট করেছেটে রাখা”।

এখন কেউ হয়তো ভাবতে পারেন- নরনারীর উরুদ্বয়ের মাঝখানে কি আছে তার প্রতি আল্লাহর এত ইন্টারেস্ট কেন? তার তো জরুরী বহুৎ কাজ থাকার কথা ! যদি মনে করে থাকেন যে আল্লাহ আপনাকে যৌনাঙ্গ দিয়েছে আপনার ইচ্ছে মতো সেগুলি ব্যবহার করার জন্যে, তা’হলে সে চিন্তা বাদ দিন। আপনার একান্ত নিজস্ব একান্ত গোপন অঙ্গটি কীভাবে ব্যবহার করবেন তা নির্ধারণের ভার আপনার উপর নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, শৈশব থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত, গৃহের নিভৃত কন্দর থেকে সুবিশাল মরুপ্রান্তর পর্যন্ত- সর্বত্র তা নির্ধারণ করবে তথাকথিত আল্লাহর আইন নামক এক সেট শরিয়া আইন।

বিবেকহীন, নিষ্ঠুর, ঘৃন্য, নিষ্প্রাণ কতগুলো বিধান! এ প্রসঙ্গে সঙ্গতভাবেই প্রশ্নএসে যায়- শরিয়া যদি আল্লাহর আইনই হয় তবে কেন তা মানুষ ছাড়া অন্য জীবজন্তুর যৌনাঙ্গকে কন্ট্রোল করে না? কেন গরু, ছাগল, ঘোড়া, শুয়োর, বাঘ, সিংহ, পাখী,সাপ, কচ্ছপ- এক কথায় সমস্ত প্রাণীকুল সম্ভোগ কিংবা প্রজননের জন্যে ইচ্ছে মতো রতিক্রিয়া করতে পারে? দেখা যাচ্ছে-এক্ষেত্রে পশুদের যতটুকু স্বাধীনতা আছে, আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষের ততটুকু নেই! ভাবুন একবার! আমার প্রাইভেট পার্টটি আমার একান্তনিজস্ব, অথচ আমার এই মৌলিক অধিকারটিও ইসলাম কুক্ষিগত করে নিয়েছে। ইসলামের এই চরম বর্বরতার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য একটাই- কৌমার্যরক্ষার অজুহাতে প্রাণীর সহজাত এবং প্রাকৃতিক কাম প্রবনতা ও তজ্জনিত তৃপ্তি থেকে বিশেষভাবে মেয়ে প্রজাতিকে জোর করে বঞ্চিত রাখা। যে ভাবেই হোক, একজন মুসলমান নারীকে তার কুমারিত্ব বজায় রাখতেই হবে। বিবাহ বহির্ভুত কোন অনৈসলামিক উপায়ে একজন মুসলমান নারী যৌনতৃপ্তি মেটাবে তা কখনও হতে পারে না। এজন্যে যদি তাকে হত্যা করতে হয়- তাও ভি আচ্ছা।

অক্ষতযোনী কুমারির প্রতি ইসলামের এই অবসেশন কেন? কাফেরদের দেশে আসার পর এ নিয়ে বিস্তর ভেবেছি আমি।

পাপীতাপীদের এই দেশে বারবনিতা, বেশ্যারা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরস্পর সম্মতিতে সেক্স এদেশে কোন অপরাধ না,যদিও জোর করে কাউকে ধর্ষণ একটি সিরিয়াস অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। এজন্যে এমনকি যাবজ্জীবনও হয়ে যেতেপারে। পক্ষান্তরে ইসলামি প্যারাডাইজগুলিতে বিপরীত লিঙ্গবিশিষ্ট দু’জন নরনারীর (কিংবা সম লিঙ্গবিশিষ্ট) মধ্যে যৌনসম্পর্ক পুরোপুরি হারাম- তা সে পরস্পরের সম্মতিক্রমেই হোক কিংবা একজনের অসম্মতিক্রমেই হোক। সবচেয়েইম্পর্ট্যন্ট যা তা এই যে একজন মুসলিম নারীর বিবাহ-বহির্ভুত যৌনসম্পর্ক একেবারেই নিষিদ্ধ। মুসলিম দেশগুলি হতে যেসমস্তমুসলমান পাশ্চাত্যে বাস করতে আসে- তারা এদেশের নরনারীর স্বচ্ছন্দ ও অবাধ মেলামেশা দেখে তাই বিভ্রান্তিতেপড়ে যায়। তারা এদেশের জীবনবোধ তথা মুল্যবোধ সঠিকভাবে বুঝতে করতে পারে না। তারা দেখে- মেয়েরা বিয়ের আগেই অবাধে ছেলে বন্ধুদের সাথে সেক্স করছে। তারা ভাবে- এদেশে সব মেয়েই গণিকা, সস্তা পণ্য। একটি ছেলে ওএকটি মেয়ের মধ্যে যে সেক্সবহির্ভুত সহজ স্বাভাবিক সম্পর্কগড়ে উঠতে পারে, তারা তা ভাবতে পারে না। ফলে চারপাশেবিচরণরত কাফের মেয়েদের সাথে স্বাভাবিক ও প্রফেশনাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে সঙ্কোচ বোধ করে তারা। বিয়ে করার উপযুক্ত হিসেবে যে মেয়েটি একজন খাটি মুসলমানের মন-মানসে ভাসে, সে এক অক্ষতযোনী কুমারি। এইসব কাফেরমেয়েদের সাথে এক রাত্রির খেল্ চলতে পারে, তাই বলে বিয়ে? নৈব চ নৈব চ।ইসলামের বিধান অনুসারে- একজন অবিবাহিত মেয়ে তার প্রজনন যন্ত্রটিকে অবশ্যই তালাচাবি দিয়ে রাখবে। চাবীর মালিক একমাত্র স্বামী, আর কেউ নয়। আল্লাহ ও ধর্মের নামে মেয়েদেরকে যৌনসুখ বঞ্চিত রাখার কেন এই প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা- তা নিয়ে অনেক ভেবেছি আমি।

অবশেষে মুসলিম সমাজে সবচেয়ে খাঁটি এবং অথেনটিক বলে পরিচিত সহি বুখারি ও সহি মুসলিম শরীফের কিছু অমুল্য হাদিস হস্তগত হয় আমার। এগুলি পড়ে বুঝতে পারলাম কেন আল্লাহপাক বিয়ের আগ পর্য্যন্ত মুসলমান মেয়েটির যোনীপ্রদেশ অক্ষত রাখতে এত আগ্রহী। পাঠক, আসুন হাদিস কয়টির উপর একটু চোখ বুলিয়ে নিইঃ

সহি বুখারি: ভলিউম-৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-১৬জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিতঃ
আমরা একবার নবীর সাথে একটি ‘গাজওয়া’ (বিধর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযানকে গাজওয়া বলা হয়) হতে ফিরছিলাম। আমি আমার উটটিকে খুব দ্রুত চালনা করতে চাইলাম। এটি ছিল অত্যন্ত অলস একটি উট। সুতরাং আমার পেছন হতে একজন আরোহী এসে তার হস্তস্থিত বর্শা দ্বারা খোঁচা মারতেই আমার উটটি এত দ্রুত ছুটতে শুরু করলো যে মনে হবে এর চেয়ে দ্রুতগামী উট আর নেই। দেখ! আরোহীটি ছিলেন স্বয়ং নবী। তিনি বললেন- ‘এত তাড়া কীসের তোমার’? আমি বললাম- আমি নুতন বিয়ে করেছি। তিনি বললেন- ‘তোমার বউ কুমারি না মেট্রন (বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্তা)’? আমি বললাম- সে একজন মেট্রন। তিনি বললেন- ‘কচি মেয়ে বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তুমি তার সাথে খেলতে পারতে এবং সে তোমার সাথে খেলতে পারত’। যখন আমরা (মদীনায়) প্রবেশ করতে যাচ্ছি, নবী বললেন- ‘অপেক্ষা করো যেন তুমি রাত্রিবেলা(মদীনায়) প্রবেশ করতে পার। তাহলে মহিলা তার অবিন্যস্ত চুল আঁচড়িয়ে নেয়ার অবকাশ পাবে এবং যে নারীর স্বামী অনেকদিন অনুপস্থিত ছিল সে তার যৌনকেশ শেভ করার অবকাশ পাবে’।

সহি বুখারিঃ ভলিউম-৩, বুক নং-৩৮, হাদিস নং-৫০৪: জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিতঃ
আমি নবীর সাথে এক অভিযান থেকে ফিরছিলাম। আমার সওয়ারি উটটি ছিল মন্থর গতিসম্পন্ন এবং সবার পেছনে। [...যখন আমরা মদীনার সমীপবর্তী হলাম, আমি (দ্রুত) আমার (বাড়ীর) পথ ধরলাম। নবী বললেন- ‘তুমি কোথায় যাচ্ছ’? আমি বললাম- ‘আমি একজন বিধবাকে বিয়ে করেছি’। তিনি বললেন- ‘তুমি কুমারি বিয়ে করলে না কেন? তাহলে তোমরাএকে অপরের সাথে রঙ্গরস করতে পারতে’।

[.....সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৫৪৯: জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ.....
আল্লাহর রসুল (দঃ) আমাকে বললেন- ‘তুমি কি বিয়ে করেছো’? আমি বললাম- হ্যা। তিনি বললেন- ‘সে কি কুমারী না পুর্ব-বিবাহিতা (বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা)’? আমি বললাম- পুর্ব-বিবাহিতা। তখন তিনি বললেন- ‘কুমারির সাথে মজা করারস্বাদ থেকে বঞ্চিত রইলে কেন’? শু’বা বলেন- এই ঘটনার কথা আমি আমর বিন দিনারের কাছে উল্লেখ করলে আমর বলেছিলেন- আমিও জাবেরের মুখে বর্ণনাটি শুনেছি। (আল্লাহর রসুল) তাকে বলেছেন- তুমি একজন বালিকা বিয়ে করলে নাকেন? তা’হলে তুমিও তার সাথে খেলতে পারতে, সেও তোমার সাথে খেলতে পারত।


পূর্বোক্ত হাদিস তিনটি ভালভাবে পাঠ করুন পাঠক। কী মনে হয় আপনার? কেউ একজন দয়া পরবশ হয়ে বিধবা বিয়ে করলো, মোহম্মদের (দঃ) প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তার অবস্থাটা কী দাড়ালো তা’হলে? তার বিধানকে ফলো করে কেউ যদি অতি অল্পবয়েসী মেয়েকে বিয়ে করার জন্যে ক্ষেপে উঠে, তাকে খুব একটা দোষ দেয়া যায় কি? যৌন-নির্যাতনকারী হিসেবে গণ্য করাও মুশকিল, কারণ সে আল্লাহর রসুলের (দঃ) নির্দেশ পালন করেছে মাত্র। স্বয়ং রসুলের (দঃ) হেরেমে এরূপ একজন কুমারি ছিল। তিনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলেন যে কম বয়েসী কুমারির সাথে সহবাসে মজাই আলাদা। বালিকা শিশুদের সাথে সহবাসে আল্লাহপাকেরও নিশ্চয়ই সম্মতি রয়েছে। কোরাণে আছে- আল্লাহ তার বিশ্বাসী বান্দাদের মনোরঞ্জনের জন্যে অক্ষতযোনী কুমারিদের অক্ষয় ভান্ডার রেডী করে রেখেছেন। প্রমাণ স্বরূপ কোরাণ-পাকের গোটাকয়েক আয়াত এখানে উদ্ধৃতি দেয়া গেল। মেয়েদের কুমারিত্বের প্রতি আল্লাহপাকের কতটুকু মোহ- এ থেকে মোটামোটি তার একটি চিত্র পাওয়া যাবে।

সুরা দুখান (৪৪): ৫১-৫৪: “নিশ্চয়ই খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে, উদ্যানরাজি ও নির্ঝরিণীসমুহে। তারা ব্যবহার করবে পাতলা ও কিংখাবখচিত রেশমী বস্ত্র, পরস্পর মুখোমুখী হয়ে বসবে। এরূপই হবে এবং তাদের জন্যে রয়েছে আয়তলোচনা স্ত্রীগণ”।

সুরা আর-রহমান (৫৫): ৫৪-৫৮: “তারা সেথায় রেশমের আবরণবিশিষ্ট বিছানায় হেলান দিয়ে বসবে। উভয় জান্নাতের ফল ঝুলবে তাদের সামনে। অতএব তোমাদের পালনকর্তার কোন্ অবদানকে অস্বীকার করবে? তথায় থাকবে আয়তলোচনা রমনীগণ, কোন মানব ও জ্বিন পুর্বে তাদেরকে ব্যবহার করে নাই।….প্রবাল ও পদ্মরাগ সদৃশ রমনীগণ”।৭০-৭৪: “সেখানে থাকবে সচ্চরিত্রা সুন্দরী রমনীগণ। অতএব তোমাদের পালনকর্তার কোন্ অবদানকে অস্বীকার করবে? তাবুতে উপবেশকারী হুরগণ।….কোন মানব ও জ্বিন পুর্বে তাদেরকে স্পর্শ করেনি”।সুরা ওয়াক্কিয়া (৫৬): ৩৫-৩৮: “আমি জান্নাতের রমনীদিগকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী। কামিনী, সমবয়স্কা। ডানদিকের লোকদের জন্যে”।সুরা আন্-নাবা (৭৮): ৩১-৩৪: “পরহেজগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য, উদ্যান, আঙ্গুরবীথি। সমবয়স্কা, ইন্দ্রিয়তৃপ্তিকারী তরুনী এবং পুর্ণ পানপাত্র”।
(কোরানুল করিমঃ মাওলানা মহিউদ্দিন খাঁন কর্তৃক অনুদিত)

উপরের আয়াতগুলি পড়লে বুঝা যায়, কেন অল্পবয়স্কা কুমারি বিয়ে করা উত্তম। কারণ আল্লাহপাক অল্পবয়েসী কুমারি মেয়ে পছন্দ করেন, তাই তিনি তার প্রিয় বান্দাদের মনোরঞ্জনের জন্যে বেহেশতে তার অঢেল সরাবরাহ নিশ্চিত করেছেন।

এজন্যেই বোধ হয় পারস্যের দার্শনিক কবি উমর খৈয়াম গেয়েছিলেন-
“স্বর্গ পুরের হর্মে নাকি
দেদার হুরি বসত করে,
সেথায় দেখ অঢেল সুরার
উর্মিমুখর ঝর্ণা ঝরে”।
আল্লাহর পাক কালামেও ঠিক অনুরূপ বিবরণই রয়েছে।


এক রাত্রির খেলঃ
কথায় আছে- লাখ কথা খরচ করে একটি বিয়ে হয়। বিয়েতে শুধু যে লাখো কথা আর সুদীর্ঘ সময় লাগে তাই নয়, দেনমোহরের বোঝাটাও কম ভারী নয়। এতসব ঝামেলা এড়াতে অনেককে তাই ‘কুইক সেক্সের’ শরণ নিতে দেখা যায়। পৃথিবীর প্রাচীনতম এই পেশাটিতে রমনীর অভাব কোনকালে ছিল না। এক রাত্রির অতিথিদের আনন্দ দিতে তারা এক পায়ে খাড়া।আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় এই সেক্সের নাম “এক রাত্রির খেল"- ওয়ান নাইট ষ্ট্যান্ড। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন- এই সহজ উপায়টির সমতুল্য বিধান পবিত্র ইসলামেও আছে! এক রাত্রির খেলার ইসলামি পারিভাষিক নাম- ‘মু’তা’। মু’তা ম্যারেজ।

এই বিয়ের নিয়মানুযায়ী একজন পুরুষ কোন মেয়ের সাথে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে বিয়ের চুক্তি করে অনায়াসে তার সাথে সহবাস করতে পারে। যদিও সুন্নী সমাজে এই ধরণের বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, শিয়াদের মাঝে এখনও তা চালু আছে। মু’তা বিয়ের মাধ্যমে সন্ধেবেলায় একটি মেয়েকে বিয়ে করে সকালবেলায় কিক আউট করা খুবই সম্ভব। তালাক-ফালাকের কোন ঝামেলা নাই। মু’তা বিয়ে এক সাথে ঘুমানোর একটি চুক্তি মাত্র- এর বেশী কিছু নয়। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে এক সাথে চার জনের বেশী বউ রাখা যদিও শরীয়তে নিষিদ্ধ, তবে মু’তা বা টেম্পোরারী বিয়ের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য নয়। কোন বিশেষ সময়ে একজন মুসলমান কত জন অস্থায়ী বউ রাখতে পারবে, তার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নাই। আধুনিক ভাষায় এরই নাম ‘ওয়ান নাইট ষ্ট্যান্ড’। মু’তা বিয়ের কোন টাইম লিমিট নাই। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ‘এক রাত্রির খেল’ প্রথাটি পুরোপুরি ইসলামসম্মত। মু’তা বিয়ের মাধ্যমে একজন মুসলমান ইচ্ছে করলে যে কোন সংখ্যক নারীর সাথে দিনরাত সঙ্গমসুখ উপভোগ করতে পারে। কথিত আছে যে নবীর (দঃ) দৌহিত্র হযরত হাসানের (রাঃ) বৈধ স্ত্রীদের অতিরিক্ত তিন শ’ জন সেক্স পার্টনার ছিল (ইসলামী পরিভাষায় অস্থায়ী স্ত্রী)। এদিক বিবেচনা করলে হযরত হাসানকে সে যুগের ইসলামী প্লেবয় আখ্যা দেয়া যেতে পারে। আমার বর্ণনায় আপনার সন্দেহ হচ্ছে? তাহলে নীচের সহি হাদিসটি লক্ষ্য করুন, দেখুন এক রাত্রির খেলের জন্যে সঙ্গিনী বা উপপত্নী যোগাড় করার ইসলামি নিয়ম কী?

সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩২৫৩: রাবি বিন ছাবরা হতে বর্ণিত হয়েছে যে মক্কা বিজয়ের সময় তার পিতা রাসুলুল্লাহর (দঃ) সাথে এক যুদ্ধে শরীক হয়। ‘আমরা সেখানে পনের দিন অবস্থান করি। আল্লাহর রসুল (দঃ) আমাদিগকে অস্থায়ী বিয়ের অনুমতি দেন। সুতরাং আমি আমার গোত্রেরই এক লোকের সাথে (মেয়ে খুজতে) বেরিয়ে পড়ি। আমার সঙ্গীর চেয়ে আমি দেখতে সুন্দর ছিলাম, পক্ষান্তরে সে দেখতে ছিল প্রায় কদাকার। আমাদের উভয়েরই পরণে ছিল একটি করে উত্তরীয় । আমার উত্তরীয়টি ছিল একেবারেই জীর্ণ, আমার সঙ্গীরটি ছিল আনকোরা নুতন।..শহরের একপ্রান্তে একটি মেয়ে দৃষ্টিগোচর হলো আমাদের।অল্পবয়েসী চমৎকার একটি মেয়ে, ঠিক যেন মরাল গ্রীবা চটপটে এক মাদী উট। আমরা বললামঃ আমাদের মধ্যে একজন তোমার সাথে অস্থায়ী বিয়ের চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চাই। তা কি সম্ভব? সে বলল- দেনমোহর বাবদ তোমরা আমাকে কী দিতে পার? আমরা উভয়েই তার সামনে আমাদের স্বস্ব উত্তরীয় মেলে ধরলাম। সে আমাদের উভয়ের উপর দৃষ্টি বুলিয়ে নিল।আমার সঙ্গীও মেয়েটির উপর দৃষ্টি বুলিয়ে নিল এবং বললো- ওর উত্তরীয় ছিড়ে গেছে, পক্ষান্তরে আমার উত্তরীয়টি একেবারে নুতন। মেয়েটি অবশ্য বললো- এই উত্তরীয়টি (পুরাতনটি) গ্রহন করায় ক্ষতি নাই। কথাটি সে দু’তিনবার বললো। সুতরাং আমি তার সাথে অস্থায়ী বিয়ে সম্পন্ন করে ফেললাম এবং যে পর্য্যন্ত আল্লাহর রসুল প্রথাটি নিষিদ্ধ ঘোষণা না করেন, সে পর্য্যন্ত এই সম্পর্ক আমি ছিন্ন করিনি।
মু’তা’র শাব্দিক অর্থ উপভোগ। (ডিকশনারী অব ইসলাম- টি.পি.হাফস, পৃঃ-৪২৪)। প্রায়োগিক অর্থ- কিছু অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্যে অস্থায়ী বিবাহ। এই ধরণের বিয়ে ইরানে শিয়াদের মাঝে এখনও প্রচলিত আছে (ম্যালকম’স পারশিয়া, ভলিউম-২, পৃঃ-৫৯১), তবে সুন্নীরা এই ধরণের বিয়েকে অবৈধ বলে থাকে। আওতাস নামক স্থানে নবী এই ধরণের বিয়ে করতে অনুমতি দিয়েছিলেন যা নাকি মুসলিম সম্প্রদায়ের নৈতিক মর্য্যাদার উপর নিঃসন্দেহে এক গুরুতর আঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সুন্নীদের দাবী- পরবর্তীতে খায়বার নাক স্থানে প্রথাটি বাতিল করে দেন নবী। (মেশকাত)।


যৌন বিকৃতি/ অন্ধ-মোহগ্রস্থতাঃ
ধরুন রাস্তায় আপনি একটি মেয়ে দেখলেন। অপরূপ সুন্দরী, পূর্ণযৌবনবতী, সেক্সি। মেয়েটিকে দেখে আপনি দারুণভাবে কামোত্তেজিত হয়ে পড়লেন। কী করবেন আপনি? এই অবস্থায় ইসলামী সমাধান- চটপট ঘরে ফিরে গিয়ে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করুন। বর্তমান যুগে রাস্তাঘাট-অফিস আদালত সর্বত্র পর্ণগ্রাফি তথা কামোত্তেজক জিনিসের ছড়াছড়ি।ম্যাগাজিনের শোভন মলাটে নগ্ন নারীমুর্তি দেখে কতবার যে আপনাকে ঘরে দৌড়াতে হয়- কে জানে ? এ প্রসঙ্গে যে হাদিসটি আছে তার বিবরণঃ সহি মুসলিমঃ বুক নং-৮, হাদিস নং-৩২৪০: জাবির হতে বর্ণিতঃ আল্লাহর রাসুল (দঃ) একবার একজন স্ত্রীলোক দেখতে পেলেন। সুতরাং তিনি তাড়াতাড়ি তার স্ত্রী জয়নবের নিকট গেলেন এবং তার সাথে সঙ্গমে মিলিত হলেন। জয়নব তখন একটি চামড়া ট্যান করছিলেন। সঙ্গম শেষে রাসুল সাহাবীদের নিকট ফিরে গিয়ে বললেন- সাক্ষাৎ শয়তান মেয়ের রূপ ধরে আমার কাছে আসল। সুতরাং তোমরা কেউ যদি এরূপ মেয়ের মুখোমুখী হও, তৎক্ষনাৎ নিজের স্ত্রীর নিকট চলে যাবে। এভাবেই কেবল অন্তরের কু-বাসনার নিবৃত্তি সম্ভব।


ফরজ গোসলঃ
যদি কোন ব্যক্তি যৌন বিষয়ক চিন্তার প্রকোপে অত্যাধিক কামোত্তেজিত হয়ে পড়ে - তাকে ফরজ গোসল করে পাক-পবিত্র হতে হবে (যৌন সঙ্গমের পর বাধ্যতামুলকভাবে সর্বাঙ্গ ধৌত করার ইসলামী নাম ফরজ গোসল)। একবার ভাবুন, এই নিয়ম ফলো করতে হলে দিনে কতবার আপনাকে ঘরে দৌড়াতে হবে এবং স্ত্রীর যৌনাঙ্গর সাথে আপনার খৎনা করা প্রতঙ্গটিকে মিলাতে হবে? যৌনমিলনের পর কীভাবে নিজকে পাকপবিত্র করতে হয়, সে সম্পর্কে একটি হাদিসঃ সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৮৪:আবু মুসা হতে বর্ণিতঃ এক দল মুহাজির এবং এক দল আনসারের মধ্যে একবার মতবিরোধ দেখা দেয়। (মতবিরোধের কারণ ছিল এই যে) জনৈক আনসার বলেছিল- গোসল ফরজ হবে কেবলমাত্র তখনই যদি (যৌন সঙ্গমের ফলে) বীর্য বেরিয়ে আসে। কিন্তু মুহজিরগণ বলেন যে মেয়েলোকের সাথে সঙ্গমে মিলিত হলেই গোসল ফরজ হয়ে যায় (বীর্যপাত ঘটুক আর নাই ঘটুক, তাতে কিছু এসে যায় না)। আবু মুসা বললেন- ঠিক আছে, আমি তোমাদেরকে এ বিষয়ে সঠিক নিয়ম বাৎলে দেব। তিনি (আবু মুসা) বলেনঃ আমি সেখান থেকে উঠে আয়েশার নিকট গেলাম এবং তার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থণা করলাম। অনুমতি মিলল এবং আমি তাকে প্রশ্ন করলামঃ উম্মুল মোমেনীন, আমি আপনাকে এমন একটি বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই যা বলতে আমারই লজ্জা লাগছে।

তিনি বললেন- যে কথা তুমি তোমার জন্মদাত্রী মাকে জিজ্ঞেস করতে লজ্জা পেতে না, আমাকেও তুমি তা জিজ্ঞেস করতে পার। আমি তোমার মায়ের মতোই। এ কথার পর আমি তাকে বললাম- একজন পুরুষের উপর গোসল ফরজ হয় কখন? উত্তরে তিনি বললেন- তুমি ঠিক জায়গায়ই এসেছ। রসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন- কোন ব্যক্তি যদি (স্ত্রীলোকের) চারটি প্রত্যঙ্গের উপর সওয়ার হয় এবং খৎনা করা অঙ্গগুলি পরস্পর স্পর্শ করে, তখনই গোসল করা ফরজ হয়ে দাড়ায়।পুরুষটির চরম তৃপ্তি হলো কিন্তু সঙ্গিনীর হলো না (কিংবা বিপরীত ঘটলো-- মেয়েটির অর্গাজম হলো, পুরুষটির হলো না)।অসমাপ্ত যৌনতৃপ্তির ক্ষেত্রে ইসলামী সমাধান কী, নীচের হাদিস দু’টি হতে তার উত্তর পাওয়া যেতে পারে। পাঠক, হাদিস দু’টি পাঠ করুন এবং আপনার বেডরুমেও কোনদিন এরূপ সমস্যার মুখোমুখী হয়ে থাকলে তার সাথে মিলিয়ে নিন।সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৭৭: উবেই ইবনে ক্কাব হতে বর্ণিতঃ আমি একজন লোক সম্পর্কে রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে জিজ্ঞেস করি। লোকটি স্ত্রীর চরম তৃপ্তির আগেই উঠে পড়তো। এ কথা শুনে তিনি (নবী) বললেন- তার উচিৎ স্ত্রীর (যৌনাঙ্গ হতে নিঃসৃত) ক্ষরণ ধুয়ে ফেলা, অতঃপর অজু করে নেয়া ও নামাজ পড়া।সহি মুসলিমঃ বুক নং-৩, হাদিস নং-০৬৮০: জায়িদ বিন খালিদ বলেছেন যে তিনি উসমান ইবনে আফফানকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ একজন লোক স্ত্রীর সাথে সঙ্গমে মিলিত হলো, কিন্তু স্ত্রী চরম তৃপ্তি পর্য্যন্ত পৌছুতে পারল না। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?

উসমান বললেন- নামাজের জন্যে সে যেভাবে অজু করে এক্ষেত্রেও তার তাই করা উচিৎ, এবং নিজের যৌনাঙ্গটিও ধুয়ে ফেলা উচিৎ। উসমান আরও বলেন- আমি এ কথা রসুলুল্লাহর (দঃ) মুখ থেকে শুনেছি।


নারীদেহ ভোগের জন্যে, নিশ্চিন্তে চালিয়ে যানঃ
ইসলামে সেক্স শব্দটির অর্থ হলো নারীদেহ ভোগ। সেক্স যে নর এবং নারী- এই উভয় প্রজাতির জন্যেই চরম আনন্দদায়ক একটি অভিজ্ঞতা হতে পারে- সে ধারণা ইসলামী কামশাস্ত্রে অনুপস্থিত। ইসলামী প্রথামতে পুরুষটিই এই খেলার একমেবাদ্বিতীয়ম খেলোয়ার। খেলাটি কীভাবে চলবে তা স্থির করবে পুরুষটি, নারীর কোন ভুমিকা সেখানে নেই।ইসলামী রতিক্রিয়ায় নারীর সক্রিয় অংশগ্রহনের নিয়ম নেই। সে পুরুষের রতিখেলার একজন নিস্ক্রিয় সহযাত্রী মাত্র; পুরুষটিকে যৌনতৃপ্তি দেয়ার মামুলি যন্ত্র বিশেষ। ইসলামী আইনসমুহের ভিত্তি বলে পরিচিত কোরাণ এবং হাদিসশাস্ত্র নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করার পর আমার অন্ততপক্ষে তাই মনে হয়েছে।ইসলামী অনু শাসন অনুযায়ী দৈহিক/জৈবিক আনন্দলাভের এই প্রক্রিয়া আর দশটা বানিজ্যিক অথবা ব্যবসায়িক লেনেদেন-প্রক্রিয়ার মতোই। একজন প্রাপ্তবয়স্কা নারীরও নিজের পছন্দানুযায়ী বর নির্বাচনের অধিকার নাই ইসলামে, বর নির্বাচনে তাকে অভিভাবকের পছন্দের উপর নির্ভর করতেই হবে। বিবাহ কিংবা যৌনসম্পর্কিত যে কোন কর্মকান্ডে নারীর অস্তিত্ব শুধুমাত্র একটি যৌনতৃপ্তি-প্রদায়ী বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। নারী একটি সেবা প্রদানকারী মেশিন (সার্ভিস প্রভাইডিং অবজেক্ট); সেবার বিনিমিয়ে সে কিছু অর্থমুল্য পাবে। ইসলামী পরিভাষায় এই বিনিময় মুল্যের নাম দেনমোহর, সংক্ষেপে মোহরানা। বিয়ের পুর্বে একজন মুসলমান পুরুষকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রদানে স্বীকৃতি জ্ঞাপন করতে হবে।এই অর্থ সে তাৎক্ষনিকভাবেও পরিশোধ করতে পারে, কিংবা পরবর্তীতে পরিশোধ করবে- এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাকীতেও সার্ভিস ক্রয় করতে পারে। মোহরানা প্রদানের চুক্তি ছাড়া কোন বিয়েই ইসলামী আইনানুযায়ী বৈধ নয়। দেনমোহর আসলে যৌনসম্ভোগের জন্যে একটি নারীদেহের অধিকার লাভ করার বিনিময় মুল্য ছাড়া আর কিছু নয়। মোহরানার এই সংজ্ঞা আপনার কাছে অমার্জিত বলে মনে হতে পারে; তবে শারিয়া সম্পর্কিত যে কোন আইন বই ঘাটলেই আমার বক্তব্যের যথার্থতার প্রমাণ পেয়ে যাবেন আপনি। মনে রাখবেন- শারিয়া আইন মুসলিম সমাজে অবশ্য প্রতিপাল্য-; স্বয়ং আল্লাহপাক নিজ হাতে মুসলমানদের জন্যে এই আইন তৈরী করে দিয়েছেন। অত্র প্রবন্ধের পরিশিষ্টে উল্লেখিত ৮নং রেফারেন্সটি ইসলামী সমাজে অত্যন্ত প্রামাণ্য শরিয়া গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। আপনার তাৎক্ষনিক বিবেচনার জন্যে আমি সেখান থেকে একটিমাত্র রেফরেন্স উল্লেখ করছি এখন (রেফারেন্স-৮, পৃষ্ঠা-৫২৬)।

স্ত্রীদেহের একচ্ছত্র মালিকানা পুরুষের, স্ত্রীদেহকে সে যেভাবে ইচ্ছে ভোগ করতে পারে, প্রয়োজন পড়লে প্রহারও করতে পারেঃ স্বামীর অধিকারঃ- স্ত্রীর শরীর (মাথা হতে পায়ের পাতা পর্য্যন্ত) ইচ্ছেমতো ভোগ করার পুর্ণ অধিকার রয়েছে স্বামীর, তবে কথা থাকে যে এরূপ ভোগপ্রক্রিয়ায় স্ত্রী যেন শারিরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। স্ত্রীর পায়ুপথ দিয়ে সঙ্গম করা সম্পুর্ণভাবে হারাম। ভ্রমনকালে স্বামী ইচ্ছে করলে স্ত্রীকে সাথে বহন করতে পারে।এবার আমরা ইসলামী আইনের (ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্স) উপর আরেকটি প্রামাণ্য গ্রন্থের কিছু অংশ আলোচনা করব।

হানাফি আইনের টেক্সট বই হিসেবে বৃটিশ আমলে এটির বহুল ব্যবহার ছিল ভারতবর্ষে (রেফারেন্স-১১)। ইসলামী আইনের ব্যখ্যায় শারিয়াবিদগণ প্রায়শই এই বইয়ের সাহায্য নিয়ে থাকেন। বইটির ৪৪নং পৃষ্ঠায় লেখা আছেঃ নারীদেহের ‘বোজা’ (Booza) প্রদানের পর পুর্ণ মোহরানা প্রদান করা আবশ্যিক। বোজা শব্দের ল্যাটিন প্রতিশব্দ Genetalia Arvum Mulierist.


স্ত্রী কর্তৃক পুর্ণ দেনমোহর প্রাপ্যতার শর্তঃ

যৌনমিলনের মাধ্যমে বিবাহ পুর্ণাঙ্গ করণ অথবা স্বামীর মৃত্যু।- - কেউ দশ দিরহাম কিংবা তদোর্ধ কোন অঙ্কের দেনমোহরের বিনিময়ে বিয়ে করল। অতঃপর সে যৌনমিলনের মাধ্যমে বিয়েকে পুর্ণাঙ্গ করল কিংবা মৃত্যু বরণ করল। এই উভয় ক্ষেত্রেই স্ত্রী পুর্ণ মোহরানা পাওয়ার অধিকারী। কারণ প্রথম ক্ষেত্রে দেনমোহরের বিনিময় হিসেবে স্ত্রী তার ‘বোজা’ বা স্ত্রী-অঙ্গ প্রদান করার শর্ত প্রতিপালন করেছে, সুতরাং তার দেনমোহর পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে স্বামীর মৃত্যুতে বিবাহ পুর্ণাঙ্গ হয়ে গেছে বলে বিবেচ্য, সুতরাং বিবাহ সংক্রান্ত সমুদয় শর্তাদি পালনযোগ্য। হ্যা পাঠক, ‘বোজা’র ল্যাটিন প্রতিশব্দ Genetalia Arvum Mulierist। বাংলায় স্ত্রীযোনি। উপরের বাক্য ক’টি হতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে ইসলামী বিয়ে মানে দেনমোহরের বিনিময়ে স্ত্রীযোনি বিক্রি করা। এতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ আছে কি?

সেক্স বলতে এ রকমটিই বুঝায় ইসলামে। দেনমোহর প্রদান করে স্ত্রী-অঙ্গ ক্রয় করা এবং তা ভোগ করা। যৌনমিলনে স্ত্রী যৌনসুখ পেলো কিনা, ইসলামী বিবেচনায় তা একেবারেই অবান্তর। নগদ অর্থে মোহরানা প্রদান করে (কিংবা পরবর্তীতে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে) বিয়ের চুক্তির মাধ্যমে স্ত্রীকে ঘরে আনার পর পুরুষটির চরমতৃপ্তিই মুল বিবেচ্য বিষয়। যদি কেউ মনে করে থাকেন যে আমি বেশী বেশী বলছি কিংবা প্রসঙ্গহীন বক্তব্য রাখছি- তাদের জন্যে আইনটি আরেকটু বিশদভাবে বিবৃত করা দরকার আছে বলে মনে করি। পাঠক, ‘পজেশন অব অবজেক্ট অব কন্ট্রাক্ট’- এই লিগাল টার্মটির নাম শুনেছেন কখনও? নিশ্চয়ই শুনেননি। এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘চুক্তিকৃত বস্তুর উপর অধিকার’। বিয়ের কন্ট্রাক্টও একটি চুক্তি এবং চুক্তিকৃত বস্তুটি আপনার স্ত্রী।

দেনমোহর দিয়ে চুক্তিকৃত এই বস্তুটির উপর আপনার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে কীভাবে-তা জানেন? ইসলামি আইনানুযায়ী রতিক্রিয়া বা উপভোগের মাধ্যমে এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। নারী তার যোনিটি স্বামীর কাছে ডেলিভারি দিলে তবেই তার মোহরানা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত হয়, নচেৎ নয়! নীচের আইনটি লক্ষ্য করুনঃ

‘খাওলাত সহিহ্’ বা শয্যা-সংক্রান্ত উদাহরণঃ-একজন লোক স্ত্রীর সাথে শয্যায় গেল। রতিক্রিয়া করার পথে তাদের সামনে কোন আইনগত কিংবা প্রাকৃতিক বাধা নেই। এরপর স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেয়- সেক্ষেত্রে পুর্ণ মোহরানা পাওয়ার অধিকার রয়েছে স্ত্রীর। ইমাম শাফেয়ীর মতে- এক্ষেত্রে স্ত্রী ধার্যকৃত দেনমোহরের অর্ধেকের বেশী দাবী করতে পারে না। কারণ রতিক্রিয়া ব্যতিরেকে চুক্তিকৃত বস্তুর উপর স্বামীর অধিকার পুর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- এমত বলা যাবে না। স্ত্রীর দেহ উপভোগ না করা পর্যন্ত দেনমোহর পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ প্রসঙ্গে আমাদের ডাক্তারদের যুক্তি-যেহেতু স্ত্রী তার দেহ নিবেদন করে এবং সাধ্যমতো সমুদয় বাধা অপসারিত করে তার তরফের চুক্তি পরিপুর্ণরুপে পালন করেছে; সুতরাং তার বিনিময় মুল্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে; ঠিক সেইভাবে যেভাবে ক্রয়বিক্রয়েরক্ষেত্রে হয়ে থাকে। একজন বিক্রেতা একটি পণ্য বিক্রি করে ক্রেতার কাছে ডেলিভারি দিল, এবং ক্রেতাকতৃর্ক পন্যটি ভালভাবে যাচাই করে নেয়ার পথে কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করল না, এবং ক্রেতা অবহেলাবশতঃ পন্যটি সঠিকভাবে যাচাই করল না, এক্ষেত্রে আইনের দৃষ্টিতে ক্রেতা পণ্যটি যথাযথভাবে যাচাই করে নিয়েছে বলে গন্য করা হবে, এবং ক্রেতার উপর পণ্যের মুল্য পরিশোধ বাধ্যতামুলক। (রেফ-১১, পৃ-৪৫-৪৬)।

পুরুষের যৌনতৃপ্তি বিষয়ক এই আইনি পদ্ধতিগুলোর দৃষ্টিতে স্ত্রী-প্রজাতিটির (হোক সে বউ, যৌনদাসী কিংবা যুদ্ধ-বন্দিনী)ভুমিকা একেবারেই নৈর্ব্যক্তিক -- । সে একজন চাকরানীর চেয়ে বেশী কিছু নয়, যার একমাত্র কাজ স্বামীকে যৌনতৃপ্তি দেয়া। আপনি হয়তো বলবেন- এরকম হতেই পারে না। ইসলাম চিরদিনই নারীজাতিকে তার যোগ্য সম্মান দিয়ে আসছে।

সেই যোগ্য সম্মান কী এবং ইসলামি আইনে আপনার যৌন-সহচরীটির লিগাল ষ্ট্যাটাস কী - তার স্বরূপ আরেকটু ভালভাবে জেনে নিন।‘স্ত্রী সেবিকা, স্বামী সেবা গ্রহনকারী পাত্র’। (প্রাগুক্ত পৃ-৪৭)। বৈবাহিক সম্পর্কিত বিষয়াদিতে স্বামী কর্তৃক সেবা প্রদানের শর্ত।....... স্বামী যদি একজন স্বাধীন পুরুষ হয় (যদি ক্রীতদাস না হয়), তবে তার নিকট হতে সেবা (সার্ভিস) গ্রহন করা স্ত্রীর জন্যে অবৈধ, কারণ তা পরস্পরের নির্ধারিত অবস্থানের বরখেলাফ, এই জন্যে যে বিয়ের অন্যতম পুর্বশর্ত হলো স্ত্রী সেবিকা (Servant) এবং স্বামী সেবা গ্রহনকারী পাত্র (Person served); কিন্তু যদি এরূপ হয় যে দেনমোহর বাবদ প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের বিনিময়ে স্বামী স্ত্রীকে সেবা করে, এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে স্বামী সেবক এবং স্ত্রী সেবা গ্রহনকারী পাত্র: যা বিয়ের মৌলিক শর্তের বরখেলাফ সুতরাং অবৈধ; তবে যদি স্বামী তদ্পরিবর্তে অপর কোন স্বাধীন পুরুষ দ্বারা উক্ত সেবা প্রদান করে তবে তা বৈধ বলে বিবেচ্য কারণ তা চুক্তির শর্তের পরিপন্থী নয়; এবং ক্রীতদাস দ্বারা প্রদত্ত সেবাও বৈধ, কারণ ক্রীতদাস কতৃক তার স্ত্রীকে প্রদত্ত সেবা প্রকৃতপক্ষে মনিবের সেবা করার নামান্তর এবং মনিবের সম্মতিক্রমেই সে এই সেবা প্রদান করছে; এবং মেষ পালন দ্বারা সেবা প্রদান গ্রহণীয়, কারণ মেষ পালন এমন একটি সার্ভিস যা চিরস্থায়ী প্রকৃতির, সুতরাং স্ত্রীর জন্যে এই সার্ভিস প্রদান করা বিয়ের শর্ত লঙ্ঘন করে না; কারণ দেনমোহর পরিশোধের জন্যে স্বামী কতৃক স্ত্রীকে সেবা করা নিষিদ্ধ যেহেতু তা স্বামীর মর্যাদার পরিপন্থী; কিন্তু মেষ পালন কোন অসম্মানজনক পেশা নয় বিধায় তা স্বামীর মর্যাদার পরিপন্থী নয়।এবার পরিস্কার হয়েছে তো পাঠক? ইসলামি বিয়ের মর্মবাণী হৃদয়ঙ্গম হয়েছে আপনার? প্রকৃতপক্ষে ইসলামের দৃষ্টিতে সেক্স হচ্ছে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক মাত্র, এ এমন এক সম্পর্ক যার মাধ্যমে একজন পুরুষ দেনমোহরের বিনিময়ে নারীদেহ ক্রয় করে। এর পরেও যদি কেউ আপত্তি তুলেন যে উপরোক্ত শারিয়া আইন বিশ্বাসযোগ্য নয়, তাদেরকে আমি নিম্নবর্ণিত হাদিসগুলি পড়ে দেখতে অনুরোধ করছি। এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে স্ত্রীর সাথে যৌনসঙ্গম করতে হলে পুরুষকে অবশ্যই মোহরানা প্রদান করতে হবে। অমুসলিম দেশগুলিতে প্রচলিত পতিতাবৃত্তি ও নির্বিচার যৌনাচার সম্পর্কে ইসলামপন্থীরা খুবই উচ্চকন্ঠ। এই হাদিসগুলি সম্পর্কে তারা কী বলবেন? এগুলি পড়লে স্পষ্ট বুঝা যায় যে দেনমোহর আর কিছুই নয়, একটি মেয়ের সাথে যৌনসঙ্গমের বিনিময়মুল্য মাত্র।

সুনান আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-২০৭৮: উম্মুল মোমেনীন আয়েশা হতে বর্ণিতঃ আল্লাহর রাসুল (দঃ) বলেছেন:কোন মেয়ে যদি অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করে, তবে সে বিয়ে বাতিল। তিন বার (এই কথাটি উচ্চারণ করেন তিনি)। যদি তাদের মধ্যে সহবাস হয়ে গিয়ে থাকে, তা’হলে স্বামী যেহেতু মেয়েটির সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়েছে সুতরাং মেয়েটি দেনমোহর পাবে।

এক্ষেত্রে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয়, সুলতান (কতৃর্পক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি) হবেন তার অভিভাবক যার কোন অভিভাবক নেই। সুনান আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-২০৪৪: আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস হতে বর্ণিতঃ একজন লোক রাসুলুল্লাাহর (দঃ) কাছে আসল এবং বলল- এক ব্যক্তি আমার স্ত্রীর কাছে আসে এবং তাকে স্পর্শ করে, কিন্তু আমার স্ত্রী তাকে বাধা দেয় না। তিনি (নবী) বললেন- তাকে তালাক দাও। সে তখন বলল- আমার অন্তরাত্মা তাকে প্রবলভাবে কামনা করে বলে ভয় করি। তিনি বললেন- তা’হলে তাকে ভোগ কর।

সেক্স সম্পর্কে ইসলামের ধারণা কী, উপরোক্ত প্রামাণ্য সুত্রগুলো অধ্যয়ন করলে তার পুর্ণাঙ্গ চিত্র মেলে। সেক্স নর এবং নারী এই উভয় প্রজাতির দৈহিক তৃপ্তির চরমতম উপায়- এই ধারণা ইসলামে সম্পুর্ণ অনুপস্থিত। এখানে সেক্সকে শুধুমাত্র পুরুষ জাতির দৃষ্টিভঙ্গী হতে বিচার করা হয়, সেক্স যেন শুধু মাত্র একটি সেবা বা পন্য। এই সেবা আহরণ করতে কিংবা পণ্যটি (স্ত্রীর যৌনাঙ্গ) হতে ফায়দা লুটতে পুরুষ মেয়েটিকে দেনমোহর প্রদান করে। এ যেন একটি ব্যবসায়িক চুক্তি, যে চুক্তির শর্ত মোতাবেক এককালীন কিছু অর্থ মুল্য (মোহরানা) ও পরবর্তীতে প্রদেয় ভরণপোষনের (নাফাক্ক) বিনিময়ে মেয়েটি তার যোনি এবং অন্যান্য প্রজনন যন্ত্র পুরুষটির কাছে বন্ধক রাখে।

পবিত্র কোরাণের বিধান মোতাবেক একজন মেয়েকে যে কোন মুল্যে তার পবিত্রতা বজায় রাখতে হয় এবং জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত সব সময় নিজেকে গৃহভ্যন্তরে গুটিয়ে রাখতে হয়। মেয়েদেরকে গৃহভ্যন্তরে অবরুদ্ধ করে রাখার পেছনে কী কারণ-তা কখনও ভেবে দেখেছেন কি? যদি কোন ইসলামপন্থীকে এ ব্যপারে প্রশ্ন করেন- সে আপনাকে অনেক চোখা চোখা যুক্তি দেখাবে। বলবে- এতে সমাজে ধর্ষণজাতীয় অপরাধ কমে, যৌননির্যাতনের সম্ভাবনা কমে, ব্যভিচারের আশঙ্কা থাকে না---ইত্যাদি ইত্যাদি।

আত্মপক্ষ সমর্থনবাদীদের মনগড়া যুক্তির প্রতি কান না দিয়ে শারিয়া আইন হতে এর আসল কারণটি খুজে বার করার চেষ্টা করুন। দেখবেন - মেয়েদেরকে গৃহভ্যন্তরে বন্দী করে রাখার পিছনের কারণ একটাই- চাহিবামাত্র পুরুষটিকে (স্বামী, মনিব কিংবা বন্দীকর্তা) সেক্স-সার্ভিস প্রদান করা। যদি আপনার বিশ্বাস না হয়, নীচের ইসলামি আইনটি পড়ে দেখুনঃ

মেয়েদের গৃহভ্যন্তরে থাকার একমাত্র কারণ- সেক্স (রেফারেন্স-১১, পৃ-৫৪) পক্ষান্তরে, ‘মিহ্ মোয়াজিল’ (তরিৎ মোহরানা) সম্পুর্ণ ভাবে আদায় না করা পর্য্যন্ত স্বামীর কোন অধিকার নাই স্ত্রীকে ভ্রমন হতে বিরত রাখা কিংবা বিদেশ গমন হতে বিরত রাখা কিংবা বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করা থেকে বিরত রাখা; কারণ স্ত্রীর দেহভোগ নিশ্চিত করার জন্যেই স্ত্রীকে গৃহভ্যন্তরে অবরুদ্ধ করে রাখার অধিকার স্বামীকে দেয়া হয়েছে, এবং বিনিময় মুল্য পুরোপুরি পরিশোধ না করা পর্য্যন্ত ভোগ করার এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় না।

পাঠকদের জন্যে আরও কিছু চমকঃ

হাদিস শরীফে বর্ণিত নবীজির শিক্ষা (মিশকাত, আরবী সঙ্কলন; বাব-উন-নিকাহ):- (রেফারেন্স-৬, পৃ-৬৭১)

“স্বামী স্ত্রীকে ডাকলে সে তৎক্ষনাৎ হাজির হবে যদি সে চুল্লীর মধ্যেও থাকে”।

সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলার ইমাম গাজ্জালি (রঃ) বিখ্যাত ‘ইয়াহ্ইয়া উলুমেদ্দিন’ গ্রন্থে লিখেছেন (রেফারেন্স-৭, পৃ-২৩৫):-“স্ত্রীর উচিৎ স্বামীকে তার নিজ সত্ত্বার চেয়েও উপরে স্থান দেয়া, এমনকি তার সকল আত্মীয়স্বজনের উপরে স্থান দেয়া। সে স্বামীর জন্যে নিজকে সদা-সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন (রেডি) করে রাখবে যেন স্বামী যখন ইচ্ছা তাকে ভোগ করতে পারে.............।”

এই হলো ইসলামের দৃষ্টিতে সেক্সের নমুনা। পুরুষের যৌনতৃপ্তিই (অরগাজম) এর প্রাথমিক লক্ষ্য। এক্ষেত্রে মেয়েটি একটি যৌন-মেশিনের অতিরিক্ত কিছু নয়। মেশিনটি সবসময় রানিং কন্ডিশনে থাকবে যেন তার মালিক ইচ্ছে হলেই মেশিনের উপর সওয়ার হতে পারে। যে জগতে পুরুষের যৌনতৃপ্তি লাভই একমাত্র বিবেচ্য, সেখানে মেয়েদের স্পর্শকাতরতা বা তাদের পছন্দ-অপছন্দের মুল্যায়ন একেবারেই অবান্তর। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু মেয়েদের জন্যে নয়-পুরুষদের জন্যেও চরম অবমাননাকর। এতে পুরুষজাতি সেক্স-ম্যানিয়াক (যৌনোন্মাদ) হিসেবে চিত্রায়িত হয়, যেন সে যখন তখন সঙ্গম করার জন্যে মুখিয়ে আছে। পুরুষের এই কামচিত্র একেবারেই বাজে।

এই প্রথার শেষ পরিনাম কী? অবশ্যই স্ত্রী প্রজাতিটির অবধারিত গর্ভসঞ্চার এবং ইসলামি পুরুষটির বিবেচনাহীন যৌনাচারের প্রায়শ্চিত্ত করা।

স্বামী ভরণপোষণ দিচ্ছে, এমতবস্থায় স্বামী যদি সেক্স করতে চায় এবং স্ত্রীর তাতে সম্মতি না থাকে- তা’হলে অবস্থাটা কী দাড়াবে? আপনার হয়তো বিশ্বাস নাও হতে পারে, তবে ইসলামী আইন এমন ক্ষেত্রে স্ত্রীর উপর বলপ্রয়োগের অধিকার দিয়েছে পুরুষকে। একে কি আপনি ‘ইসলামি ষ্টাইলে ধর্ষণ’ বলবেন না পাঠক? এ সম্পর্কিত একটি হেদাইয়া রেফারেন্স-১১, পৃ-১৪১) স্ত্রীকে বলপ্রয়োগে ভোগ করা যায় যদি না সে একগুয়ে হয়ঃ যদি স্ত্রী অবাধ্য ও একগুয়ে হয় এবং স্বামীর সম্মতি ব্যতিরেকে বিদেশ ভ্রমনে যায়, এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর নিকট হতেভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার হারায় যে পর্যন্ত না সে ফিরে আসে এবং স্বামীর নিকট নিজকে সমর্পণ করে, কারণ এ ক্ষেত্রে বৈবাহিক সম্পর্ক সংক্রান্ত বাধা স্ত্রীর তরফ হতে উদ্ভূত হয়েছে; তবে যখন সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে, তখন পুনরায় পুর্বের ন্যায় ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবে সে। যখন কোন স্ত্রী স্বামীগৃহে অবস্থান করেও স্বামীর দাম্পত্য আলিঙ্গন অস্বীকার করে, সে যেহেতু ভরণপোষণ ভোগ করছে এবং স্বামীর অধিকারে আছে, সুতরাং স্ত্রীর অসম্মতি সত্ত্বেও স্বামী ইচ্ছে করলে তাকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে উপভোগ করতে পারে।

এ বিষয়ে আর আলোচনা নয়, একটি ছোট্ট মন্তব্য রেখেই এ চ্যাপ্টার শেষ করব এখন। ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহযোগ্যা একটি মেয়ে পুরুষের (হোক সে স্বামী, অথবা মনিব অথবা বন্দীকর্তা) আনন্দ উপভোগের উপকরণ ছাড়া অতিরিক্ত কিছু নয়। যৌনজীবন সম্পর্কে মেয়েদের স্পর্শকাতরতা, তাদের চাওয়া, তাদের আকাংখা, তাদের পছন্দ-অপছন্দ, তাদের প্রেম, তাদের ভালবাসা, তাদের অনুভুতি --এ বিষয়গুলি ইসলাম একেবারেই অস্বীকার করে। ইসলামে সেক্সের জগতটি একচ্ছত্রভাবে পুরুষের করায়ত্ত। পুরুষ সৃষ্টি হয়েছে যৌনসুখ উপভোগ করার জন্যে, মেয়েরা সেই আনন্দ যোগান দেয়ার যন্ত্র মাত্র। পাশ্চাত্যের সেকুলার সমাজগুলিতে মেয়েদের অবাধ যৌন স্বাধীনতার সমালোচনায় মুখর ইসলামী পন্ডিতবর্গ। তাদের মতে একেবারেই পঁচা-গন্ধা সমাজ এটি। ডাবল ষ্ট্যান্ডার্ড আর কাকে বলে ? উপরে বর্ণিত ঐসব আইনসম্মত যৌন কদাচার সম্পর্কে এইসব ইসলামী পন্ডিতগণ কী বলেন তা শুনতে বড়ো ইচ্ছে হয়।


গর্ভবতীর সাথে সেক্সঃ

বিয়ের পর যদি দেখা যায় যে নববধুটি গর্ভবতী তা’হলে উপায় কী? অতীব বিব্রতকর একটি অবস্থা। আধুনিক সমাজে এধরণের সিচুয়েশন প্রায় হয় না বললেই চলে। কারণ ছেলেমেয়েরা বহুদিন মেলামেশা, পরস্পর পরস্পরের সঙ্গ করার পরই কেবল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তবে ধারণা করা যায় যে নবীজির আমলে আনকালচার্ড বেদুঈনদের মধ্যে এ ধরণের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে হতেও পারে। একজন পুর্ব-গর্ভিনী মেয়ের সাথে সেক্স করার কথা চিন্তাও করা যায় না, এরূপ অবস্থায় অধিকাংশ লোকই হয়তো বিয়েটি বাতিল করে রস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌছতে চেষ্টা করবে। তবে ইসলামী দর্শন মোতাবেক এর সমাধান ভিন্নতর। যেহেতু লোকটি অলরেডি মোহরানার টাকা পরিশোধ করে ফেলেছে (কিংবা পরবর্তীতে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সুতরাং মেয়েটির যৌনাঙ্গ তার জন্যে হালাল হয়ে গেছে, কিংবা বলা যায় গর্ভবতীর দেহটি ভোগ করা তার উপর ফরজ হয়ে দাড়িয়েছে। ভোগপর্বের পর মেয়েটির কপালে কী ঘটবে? প্রাক-বৈবাহিক যৌনকর্মের শাস্তি বাবদ তার জন্যে জমা আছে এক শ’টি ইসলামিক দোররা। ভাবুন তো একবার, একটু আগে যার সাথে আপনি জীবনের শ্রেষ্ঠতম সুখের মুহুর্তগুলি কাটালেন, তার কুসুম-কোমল পৃষ্ঠদেশ চাবুকের আঘাতে রক্তাক্ত হচ্ছে! নতুন আগন্তুকটির জন্যেই বা কোন ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে? নির্দোষ একটি শিশু, সে হয়ে যাবে আপনার ক্রীতদাস! হ্যা, এই হচ্ছে ইসলামি বিচার। সহজ এবং সরল। এই প্রথার সমর্থণে দু’টি হাদিস --সুনানে আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-১২৬: বাসরা হতে বর্ণিত: বাসরা নামক জনৈক আনসার বলেন: আমি বোরখাধারী একজন কুমারিকে বিয়ে করি। তার সাথে মিলিত হওয়ার পর আমি দেখতে পাই যে মেয়েটি গর্ভবতী। (বিষয়টি নবীকে জানানোর পর) নবী (দঃ) বললেন- যেহেতু তুমি তার যোনিদেশ তোমার জন্যে হালাল করে নিয়েছ, সুতরাং সে (নির্ধারিত) মোহরানা পাওয়ার অধিকারী। শিশুটি হবে তোমার ক্রীতদাস। (বাচ্চা) প্রসব করার পর তাকে দোররা মার। (আল হাসানের ভার্সন)।

সুনানে আবু দাউদ: বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৫৩: রুয়াইফি ইবনে তাবিত আল আনসারি হতে বর্ণিতঃ হুনায়েনের দিন আল্লাহর রাসুলের (দঃ) মুখ থেকে আমি কি শুনেছি তা তোমাদের বলব কি? (তিনি বলেছেন) যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর বিশ্বাস করে তার উপর বৈধ নয় জল সিঞ্চন করা সেখানে যেখানে অন্য লোক (পুর্বেই) জল সিঞ্চন করেছে (অর্থাৎ গর্ভিনির সাথে সঙ্গম); যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর বিশ্বাস রাখে তার উপর বৈধ নয় বন্টনের পুর্বেই যুদ্ধলব্ধ মাল বিক্রয় করা।



ঋতুমতি মেয়েদের সাথে রতিক্রিয়ার বিধান আছে কি?

বিবি আয়েশার ঋতুকালীন অবস্থায় মহম্মদ (দঃ) তার সংগে কী আচরণ করেছেন নীম্নের হাদিসগুলি হতে সে বিবরণ পাওয়া যায়।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১, হাদিস নং-০২৭: উম্মুল মোমেনিন আয়েশা হতে বর্ণিতঃ
উমারাহ ইবনে ঘোরাব বলেন যে তিনি তার খুড়ির নিকট শুনেছেন যে তিনি (খুড়ি) আয়েশাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন- যদি আমাদের মধ্যে কেউ ঋতুস্রাব অবস্থায় থাকে এবং স্বামী-স্ত্রীর একটার বেশী বেড না থাকে, সে অবস্থায় তারা কী করবে? উত্তরে তিনি (আয়েশা) বলেছিলেন- এই অবস্থায় আল্লাহর রাসুল (দঃ) কী করেছেন আমি তোমাকে তা বলছি। আমার ঋতুকালীন সময়ে এক রাত্রে তিনি আমার ঘরে আসলেন। তিনি নামাজের জায়গায় গেলেন, অর্থাৎ সেই ঘরে নামাজের জন্যে সংরক্ষিত যে জায়গা ছিল সেই জায়গায়। তিনি যখন ফিরে আসেন তখন আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন; ঠান্ডায় তিনি ব্যাথা বোধ করছিলেন। এবং তিনি বললেন- আমার কাছে আস। আমি বললাম- আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে। তিনি বললেন- তোমার উরুদ্বয় উন্মুক্ত কর। সুতরাং আমি আমার উরুদ্বয় আবরণমুক্ত করলে তিনি তখন তার চিবুক ও বক্ষ তার মাঝে রাখলেন। আমি তার উপর ঝুকে বসে রইলাম যে পর্য্যন্ত না তিনি উষ্ণ হলেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন।

উপরের কাহিনীটির অনেক ধরণের ব্যাখ্যা সম্ভব। নিরপেক্ষভাবে বলতে গেলে বলতে হয় যে ঘটনাটি বরং মহম্মদের (দঃ) মহত্বই প্রতিষ্ঠিত করে। কারণ অন্ততপক্ষে তিনি স্ত্রীলোকের ঋতুস্রাবকে কোন রোগ বলে বিধান দেননি, উপরন্তু ঋতুকালেও আয়েশার সাথে প্রীতি ও ভালবাসাযুক্ত আচরণ করেছেন। প্রাণবন্ত একজন তরুনী আয়েশা, তার ঋতুকালীন অবস্থায় মোহম্মদের (দঃ) এই আচরণ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। এস্থলে সহি বুখারি থেকে আরও একটি হাদিস উদ্ধৃত করা হলো যা থেকে প্রমানিত হয় যে মহম্মদ (দঃ) তার প্রিয় স্ত্রী আয়েশার সাথে ঋতুকালেও অত্যন্ত প্রীতিময় আচরণ করতেন।

মোহম্মদ আয়েশাকে তার ঋতুকালেও আলিঙ্গন করতেন.........৩.৩৩.২৪৭।
সহি বুখারিঃ ভলিউম-৩, হাদিস নং-২৪৭:

আয়েশা হতে বর্ণিতঃ আমার ঋতুকালেও নবী আমাকে আলিঙ্গন করতেন। তিনি যখন ইতিকাফে বসতেন, তখনও তিনি মসজিদ হতে মাথা বাড়িয়ে দিতেন। আমি ঋতুমতী অবস্থায়ই তার মাথা ধুইয়ে দিতাম। এখন প্রশ্ন, ঋতুমতী অবস্থায় স্ত্রী কতটুকু পর্য্যন্ত হালাল? নীম্নের হাদিসটি হতে এর ইসলামি সমাধান জেনে নিন।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১, হাদিস নং-০২১২: আব্দুল্লাহ ইবনে সা’দ আল আনসারি হতে বর্ণিতঃ আব্দুল্লাহ আল্লাহর রাসুলকে (দঃ) প্রশ্ন করলেন- যখন আমার স্ত্রী হায়েজ অবস্থায়, তার সাথে কতটুকু পর্য্যন্ত বৈধ? তিনি উত্তর দিলেন- তার কোমর বন্ধনীর উপরের অংশ তোমার জন্যে হালাল।

উক্ত বর্ণনাকারীর পুর্ণাঙ্গ বর্ণনা হতে জানা যায় যে ঋতুকালীন অবস্থায় স্ত্রীর সাথে এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করাও বৈধ।


যদি কেউ দৈবক্রমে ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করেই ফেলে, সে ক্ষেত্রেও ডিভাইন সলিউশন রেডি হয়ে আছে। সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৬৪:

আব্দুল্লহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিতঃ
রক্ত যাওয়ার সময় যদি কেউ (ঋতুমতী স্ত্রীর সাথে) সঙ্গম করে ফেলে, তবে তাকে সদকা বাবদ এক দিনার দান করতে হবে। যদি রক্ত বন্ধ হওয়ার পর পরই সে এ কাজ করে, তবে তাকে দিতে হবে অর্ধেক দিনার। সুনান আবু দাউদের ১নং ভলিউমের ০২৬৪নং হাদিসেও ঋতুকালীন সঙ্গমের কাফফারা হিসেবে এই একই বিধান দেয়া আছে।

যদি ঋতুস্রাব অত্যন্ত বেশী হয়, সেক্ষেত্রেও চমৎকার বিধান আছে ইসলামে। সাইয়েদেনা আলী এবং মহম্মদ (দঃ) উক্ত সমস্যার যে প্রতিবিধানের কথা বলেছেন, আবু দাউদ ও মুসলিম শরীফের হাদিসে তার তথ্যভিত্তিক বর্ণনা রয়েছে। এই অত্যন্ত সহজ ইসলামি বিধান ফলো না করে আজকালকার মেয়েরা কেন যে গাইনকোলজিষ্টের চেম্বারে ছুটে মরে- ভেবে দেখা দরকার।

সুনান আবু দাউদঃ বুক-১, হাদিস-০৩০২:
আলী ইবনে আবি তালেব হতে বর্ণিতঃ যদি কোন স্ত্রীলোকের দীর্ঘ্য সময়ব্যপী রক্ত যায়, তার উচিৎ প্রতিদিন নিজেকে পরিস্কার করা এবং অতঃপর চর্বি অথবা তেল মিশ্রিত উলের কাপড়ের টুকরা ব্যবহার করা (অর্থাৎ উক্ত কাপড় দিয়ে যৌনাঙ্গটি বেঁধে রাখা)।

সহি মুসলিমঃ বুক-৩, হাদিস-০৬৪৭ এবং সহি মুসলিম বুক-৩, হাদিস-০৬৫৮:
উম্মুল মোমেনিন আয়েশার বরাত দিয়ে এই হাদিসদ্বয়। ঋতুকালে কীভাবে নিজেকে পরিস্কার রাখতে হয়, কীভাবে রক্তের দাগ মুছতে হয়, কীভাবে মোমের প্রলেপ দেয়া বস্ত্রখন্ড বাঁধতে হয়, কতদিন নামাজকালাম বন্ধ রাখতে হয়- এসবের বিস্তারিত বর্ণনা আছে এই হাদিস দু’টিতে।

সঙ্গমের পুর্বে যৌনসঙ্গীর সাথে কামকেলি করা বা শৃঙ্গারে রত হওয়া মানব প্রজাতির একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি (এমনকি চতুষ্পদ জন্তুরাও সঙ্গমের পুর্বে কিছুক্ষন শৃঙ্গার করে)। এটি খুবই আনন্দের বিষয় যে মহম্মদও (দঃ) তার অনুসারীদের সঙ্গমের পুর্বে কিছুক্ষন শৃঙ্গার করার জন্যে অনুপ্রানিত করেছেন। কোন প্রকার শৃঙ্গার ছাড়া পশুর মতো সরাসরি স্ত্রীলোকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে তিনি অনুসারীদের তিরস্কার করেছেন। মহম্মদ (দঃ) এ ব্যাপারে যে সব সুপারিশ করে গেছেন, তার কিছু নমুনা পাওয়া যায় ইমাম গাজ্জালির রচনায় (রেফ-৭, পৃ-২৩৩)।

‘পরস্পরের কাছে যাওয়ার আগে তাদের কিছুক্ষন শৃঙ্গার করে নেয়া উচিৎ; দু’চারটি প্রীতিপ্রদ বাক্য বিনিময়, একটু চুমো দেয়া। নবী বলেছেন- “পশুরা যেভাবে একে অন্যের উপরে লাফিয়ে পড়ে, স্ত্রীদের উপর তোমরা কেউ সেভাবে ঝাপিয়ে পড়ো না। বরং (তার আগে) তাদের মধ্যে একজন বার্তাবাহক আসতে দাও”। তারা জিজ্ঞেস করল- “হে আল্লাহর রাসুল, এই বার্তাবাহকটি কে”। তিনি বললেন- “চুম্বন এবং প্রীতিময় বাক্য বিনিময়”। অতঃপর যদি তার আগে শেষ হয়ে যায়, তার উচিৎ অপেক্ষা করা যে পর্য্যন্তনা তার স্ত্রীর শেষ হয়’।

এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে মহম্মদ (দঃ) সঙ্গমের পুর্বে শৃঙ্গারের বিধান দিয়েছেন এবং পরস্পরের তৃপ্তিদায়ক যৌনকর্মের পক্ষে সুপারিশ করেছেন।


উপবাসের (রোজা) সময় চুমো দেয়া এবং পরস্পরের জিহ্বা লেহন করা
সুনান আবু দাউদ, বুক নং-১৩, হাদিস নং-২৩৮০:

বিবি আয়েশার নিকট হতে আমরা জানতে পারি যে উপবাসরত অবস্থায়ও নবী তাকে চুমো দিতেন এবং জিহ্বা লেহন করতেন।


মধুর মিষ্টতা বনাম যৌনসঙ্গমের মিষ্টতা

হিলা বিবাহ; সেক্স ম্যানিয়াকদের জন্যে আশীর্বাদঃ

যদি কোন স্বামী মৌখিকভাবে তিনবার তালাক শব্দটি উচ্চারণ করে, তবে ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী স্ত্রীর উপর অফেরতযোগ্য তালাক (তালাকে বাইন) পতিত হয়। স্ত্রী তখন ঐ স্বামীর জন্যে সম্পুর্ণরুপে নিষিদ্ধ বা হারাম হয়ে যায়। সে উক্ত স্ত্রীকে পুনর্বিবাহ করতে পারবে না যতক্ষন না স্ত্রী অপর কোন ব্যক্তিকে বিয়ে করে, তার সঙ্গে যৌনসঙ্গম করে, অতঃপর উক্ত টেম্পোরারী স্বামী তাকে তালাক দেয়। দ্বিতীয় তালাকের পর স্ত্রী তার ইদ্দতকাল (তিনটি স্রাব, প্রায় তিন মাস) শেষ করলে তবেই কেবল প্রথম স্বামী তাকে বিয়ে করতে পারে। এই লজ্জাজনক প্রথার পক্ষে ইসলামপন্থীরা এই বলে সাফাই গায় যে- এটা নাকি স্বামীদের জন্যে সতর্কবার্তা, এর ফলে তালাকে বাইন উচ্চারণ করার পুর্বে স্বামীকে একশ’ বার ভাবতে হবে।

ইসলামি পরিভাষায় এই ধরণের বিবাহকে হিলা বিবাহ বলা হয়; পবিত্র কোরাণের ২:২৩০ আয়াতে (সুরা বাকারা) এই প্রকারের বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ০০২-২৩০:
অনন্তর যদি সে তালাক প্রদান করে তবে এর পরে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহিতা না হওয়া পর্য্যন্ত সে তার জন্য বৈধ হবে না, তৎপর সে তাকে তালাক প্রদান করলে যদি উভয়ে মনে করে যে তারা আল্লাহর সীমাসমুহ স্থির রাখতে পারবে, তখন যদি তারা পরস্পর প্রত্যাবর্তিত হয় তবে উভয়ের পক্ষে কোনই দোষ নেই এবং এগুলিই আল্লাহর সীমাসমুহ, তিনি অভিজ্ঞ সম্প্রদায়ের জন্যে এগুলি ব্যক্ত করে থাকেন।
এই উদ্ভট নিয়ম সমাজের কিছু চতুর লোকের সামনে প্রায় বিনে পয়সায় অবাধ সেক্স উপভোগ করার দ্বার অবারিত করে দিয়েছে। কোন কারণে একটি মেয়ে তালাকপ্রাপ্তা হলো। ব্যাস, মধুর ভান্ড যেন উপচে পড়লো। তাকে টেম্পোরারীভাবে বিয়ে করার জন্যে তথাকথিত সম্ভ্রান্ত এবং ভাল লোকের অভাব নেই সমাজে। বিয়ের নামে মেয়েটিকে দু’চার রাত উপভোগ করার পর তালাক দিলে তবেই কেবল সে তার পুর্বস্বামীর সঙ্গে ঘর করার লাইসেন্স পাবে, সেই উদ্দেশ্যেই এই বিয়ের প্রহসন।

সুতরাং সেক্স ম্যানিয়াকদের পোয়া বারো, প্রফেশনাল স্বামীর অভিনয় করে মুফতে একটি নারীদেহ ভোগ করা গেল। এই হলো ফ্রি সেক্স করার ইসলামি পথ। ফ্রি বললাম এই কারণে যে এসব বিয়ের বলি মেয়েটি প্রায়শই অসহায়া হয়ে তাকে এবং বিয়েটি হয় খুবই স্বল্প সময়ের জন্যে। সুতারং এরূপ বিয়ের দেনমোহরের পরিমান দু’ চার শ’ টাকার বেশী হওয়ার কথা নয়। কয়েকটিমাত্র পবিত্র বাক্য উচ্চারণ আর সামান্য কিছু অর্থ, বাস্- তরতাজা একটি নারীদেহ।


এখানে আরেকটি ব্যাপার ভালভাবে পরিস্কার হওয়া দরকার। কেউ আবার ভেবে বসতে পারেন যে হিলা শুধু নামকা ওয়াস্তে একটি বিয়ে। বিয়েটি নামকা ওয়াস্তে ঠিকই, তবে টেম্পোরারী স্বামীটি যতোক্ষন না নববধুর সাথে যৌনসঙ্গম করছে, ততক্ষন পর্য্যন্ত মেয়েটি তার পুর্বস্বামীর জন্যে হালাল হবে না। একেই বলে মধু খাওয়া, যৌনসঙ্গমের মধু। হিলার মাধ্যমে মজা লুটাকে বৈধতা দানকারী গোটাকয়েক হাদিস এখানে উদ্ধৃত করা হলো।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১২, হাদিস নং-২৩০২:

উম্মুল মোমেনিন আয়েশা হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুলকে (দঃ) একজন লোক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, যে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে, অতঃপর মেয়েটি অপর একজনকে বিয়ে করলো, কিন্তু সে মেয়েটির সাথে যৌনসঙ্গম না করেই তাকে তালাক দিল। এখন পুর্ব স্বামীকতৃক মেয়েটিকে বিয়ে করা বৈধ হবে কিনা। তিনি (আয়েশা) বলেন- নবী (দঃ) উত্তরে বলেছিলেন- যে পর্যন্ত মেয়েটি অপর স্বামীর মধু আস্বাদন না করে এবং অপর স্বামী মেয়েটির মধু আস্বাদন না করে, সে পর্যন্ত সে পুর্বস্বামীর জন্যে বৈধ নয়। সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৫৪:

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন- একবার রিফায়া’র স্ত্রী আল্লাহর রাসুলের (দঃ) কাছে এসে বলল- আমার রিফায়া’র সাথে বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু সে আমাকে অফেরতযোগ্য তালাক (তালাকে বাইন) প্রদান করে। অতঃপর আমি আব্দুর রহমান বিন আল-জুবেইরকে বিয়ে করি, কিন্তু তার কাছে যা আছে তা পোশাকের উপর চকচকে নকশা ছাড়া আর কিছু নয় (অর্থাৎ যৌনকর্মে অসমর্থ)। এ কথা শুনার পর আল্লাহর রাসুল (দঃ) একটু হেসে বললেন- তুমি কি আবার রিফায়া’র কাছে ফিরে যেতে চাও। তবে যে পর্যন্ত তুমি তার মিষ্টত্ব এবং সে (আব্দুর রহমান) তোমার মিষ্টত্ব আস্বাদন না করেছে, সে পর্যন্ত তুমি (করতে) তা পার না। সেই সময় আবু বকর তার (নবীর) কাছে ছিলেন এবং দরজায় ছিলেন খালিদ (বিন সাআদ) ভেতরে ঢোকার অনুমতি প্রাপ্তির অপেক্ষায়। তিনি (খালিদ) বললেন- আবু বকর, মেয়েলোকটি নবীর সামনে উচ্চস্বরে কীসব বলছিল তা কি তুমি শুনেছ?

সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৩৫৭:
আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহকে (দঃ) একজন স্ত্রীলোকের বিষয় জিজ্ঞেস করা হয় এক ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। অতঃপর লোকটি তাকে তালাক দেয় এবং সে (স্ত্রীলোকটি) অপর এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে, যে তার সাথে যৌনসঙ্গম না করেই পুনরায় তাকে তালাক দেয়। এই অবস্থায় প্রথম স্বামীর সাথে (বিবাহ বন্ধনে) আবদ্ধ হওয়া কি তার জন্যে বৈধ। তিনি (নবী) বললেন- না, যে পর্যন্তসে (দ্বিতীয় স্বামী) মেয়েটির মিষ্টত্ব আস্বাদন না করে।

মালিক মোয়াত্তাঃ বুক নং-২৮, নাম্বার-২৮.৭.১১৭:
.....নবীর জীবিতাবস্থায় রিফআ’ ইবনে শিমওয়াল তার স্ত্রী তামিমা বিনতে ওয়াহাবকে তিন তালাক দেয়। সে তখন আব্দুর রহমান ইবনে আজ-জুবায়েরকে বিয়ে করে। এবং সে (আব্দুর রহমান) বিয়ে পুর্ণাঙ্গ না করেই তাকে পরিত্যাগ করে।

রিফাআ তাকে (তামিমাকে) আবার বিয়ে করতে চাইলে বিষয়টি নবীর (দঃ) কাছে উত্থাপিত হয়। তিনি (নবী) তাকে বিয়ে করতে নিষেধ করেন এবং বলেন- “যে পর্যন্ত সে (তামিমা) যৌনসঙ্গমের মিষ্টত্ব আস্বাদন না করে, সে পর্যন্ত সে তোমার জন্যে হালাল নয়”।


প্রশ্রাব/ যৌনসঙ্গম করার পর ফরজ গোসল কি বাধ্যতামুলকঃ

পুর্ববর্তী অধ্যায়ে আমরা জেনেছি- যৌনসঙ্গম কিংবা পেশাব করার পর গোসল করা ফরজ (বাধ্যতামুলক)। তবে পরবর্তী হাদিস দু’টি পড়লে পাঠক চরমভাবে বিভ্রান্তিতে পড়বেন, কারণ এমনকি নবী করিম নিজেও সঙ্গমের পর গোসল না করেই নির্বিবাদে নিদ্রা যেতেন।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১, হাদিস নং-০০৪২: উম্মুল মোমেনীন আয়েশা হতে বর্ণিতঃ
নবী (দঃ) প্রশ্রাব করছিলেন এবং উমর তার পিছে জলপাত্র হাতে দাড়িয়েছিলেন। তিনি বললেন- এটা কী উমর? উত্তরে তিনি (উমর) বললেন-আপনার জন্যে পানি, এদিয়ে আপনি অজু করে নিবেন। তিনি বললেন- প্রতিবার পেশাব করার পর অজু করতে হবে এমন আদেশ আমি পাইনি। যদি আমি তা করি, তবে তা সুন্নত বলে পরিগনিত হবে।

সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১, হাদিস নং-০২২৮:
উম্মুল মোমেনীন আয়েশা হতে বর্ণিতঃ রাসুলুল্লাহ (দঃ) যৌনসঙ্গমের পর পানি স্পর্শ না করে নাপাক অবস্থায়ই নিদ্রা যেতেন।



এই উদ্ভট নিয়ম সমাজের কিছু চতুর লোকের সামনে প্রায় বিনে পয়সায় অবাধ সেক্স উপভোগ করার দ্বার অবারিত করে দিয়েছে। কোন কারণে একটি মেয়ে তালাকপ্রাপ্তা হলো। ব্যাস, মধুর ভান্ড যেন উপচে পড়লো। তাকে টেম্পোরারীভাবে বিয়ে করার জন্যে তথাকথিত সম্ভ্রান্ত এবং ভাল লোকের অভাব নেই সমাজে। বিয়ের নামে মেয়েটিকে দু’চার রাত উপভোগ করার পর তালাক দিলে তবেই কেবল সে তার পুর্বস্বামীর সঙ্গে ঘর করার লাইসেন্স পাবে, সেই উদ্দেশ্যেই এই বিয়ের প্রহসন।

সুতরাং সেক্স ম্যানিয়াকদের পোয়া বারো, প্রফেশনাল স্বামীর অভিনয় করে মুফতে একটি নারীদেহ ভোগ করা গেল। এই হলো ফ্রি সেক্স করার ইসলামি পথ। ফ্রি বললাম এই কারণে যে এসব বিয়ের বলি মেয়েটি প্রায়শই অসহায়া হয়ে তাকে এবং বিয়েটি হয় খুবই স্বল্প সময়ের জন্যে। সুতারং এরূপ বিয়ের দেনমোহরের পরিমান দু’ চার শ’ টাকার বেশী হওয়ার কথা নয়। কয়েকটিমাত্র পবিত্র বাক্য উচ্চারণ আর সামান্য কিছু অর্থ, বাস্- তরতাজা একটি নারীদেহ।
এইটার জবাব হিসাবে নিচের লেখাটি পড়তে পারেন। এটা আমার ব্লগে ছিল।

আমার ‘ইদ্দত’ নামের একটি ব্লগে‘vaber pagol’ মামু বলেছিলেন হিল্লা ম্যারেজ নিয়ে কিছু লিখতে, তার জন্যই সুযোগটা নিলাম।

আমার মতে ‘ম্যানিপুলেশন’ এর চুড়ান্ত হচ্ছে এই ‘মুসলিম ম্যারেজ ল’ টি, কোরান হাদিসের কোথাও বলা হয়নি তিন তালাক দেওয়ার পরে আবার বিবাহিত স্ত্রীকে আবার বিয়ে করা যায়। যেটা বলা হয়েছে:
“সুতরাং সে যদি তাকে তালাক দেয় বউ হালাল হইবে না যতক্ষন অন্য স্বামীর ঘর করে; অতপর সেই স্বামীও তালাক দিলে তবে উভয়ের কোন দোষ হইবেনা পূনর্বার গ্রহনে যদি মনে করে ঠিক রাখিতে পারবে আল্লাহর সীমা রেখা। জ্ঞানী কওমের জন্য আল্লাহ ইহা স্পস্ট বর্ণনা করেন”। সুরা বাকারা আয়াত২৩০।
এই বিবাহ যেটা মহিলাকে তার প্রথম স্বামীর বিয়ের জন্য যোগ্য করবে, একটি বৈধ বিয়ে হতে হবে, বেশীর ভাগ আলেমদের মতে ‘অস্থায়ী বিয়ে’ (মুতা ম্যারেজ) অথবা প্রথম স্বামীর কাছে ফেরত যাবার প্রক্রিয়াকে স্থাপন করার জন্য নারীর ‘অন্তর্বতী বিবাহ’ বা ‘হিল্লা’ বা‘হালালা বিবাহ’ নিষিদ্ধও অবৈধ। তারা মনে করেন এটা স্ত্রীকে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য বৈধ করে না।
সহি হাদিসে উল্যেখ করা হয়েছে যে ‘হিল্লা বিবাহ’ বা ‘হালালা বিবাহ’ হারাম।
“আল্লাহ মুহাল্লিল আর মুহাল্লাল্লাহুকে অভিসম্পাত করেন”-আবু দাউদ।
মুহাল্লিলঃ যে ব্যাক্তি নারীদিগে বিবাহ করে ও তালাক দেয় যাতে সে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরে যেতে পারে। ও মুহাল্লল্লাহুঃ প্রাক্তন স্বামী।
ইবনে মাজা ‘উকাবাহ ইবন আমির’ কে উল্লেখ করে বলেন রাসুল সাঃ বলেছেন “আমি কি তোমাদিগকে একটি ধারকৃত পাঠা সমন্ধে বলিব”, তখন তাহার বলিল, “বলুন ও আল্লাহর রাসুল”, তিনি বলিলেন “তা হইতেছে একজন মুহাল্লিল, আল্লাহ যেন মুহাল্লিল ও মুহাল্লাল্লাহু কে অভিসম্পাত করেন”।
‘আব্দ আল রাজ্জাক’ বর্ণনা করেন খলিফা ‘উমর ইবন আল খাত্তাব’ একবার তার বক্তৃতায় বলেছেন “আল্লাহর কসম, যদি আমার সন্মুখে কোন মুহাল্লিল ও মুহাল্লল্লাহু আনা হয় আমি তাকে প্রস্তর নিক্ষেপ করব” (একজন দ্বিরচারী হিসাবে)। কোন ব্যাক্তি তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে বিবাহের সময় যদি উল্ল্যেখ করে যে সে মহিলার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফেরত যাবার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করার জন্য সে এই বিবাহ করেছে অথবা প্রকাশ না করে ও এই কর্মের নিয়াত করে, এটা তার প্রতি লাগু হবে।
‘নাফে’ কে উল্ল্যেখ করে ‘আল হাকিম’ বর্ণনা করেন, এক ব্যাক্তি হযরত উমর রাঃ কে বলেন, “আমি এক তালাক প্রাপ্তা মহিলাকে বিবাহ করে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফেরত যাবার জন্য যোগ্য করেছি, এতে তার প্রাক্তন স্বামী আমার সাহায্য চায়নি অথবা তা সে জানেও না”। উমর বলেন “যে কোন বিবাহই একান্ত স্বদিচ্ছায় হতে হয়, যদি তুমি তাকে পছন্দ কর তবে তাকে রেখে দাও (সংসার করতে থাক) আর যদি পছন্দ না হয় তাহলে ছেড়ে দাও। রাসুলের সময়ে এটাকে যেনা হিসাবে গন্যকরা হ’ত এমনকি যদি তারা বিশ বছর বিবাহিত থাকত”।
‘ঈমাম আহমেদ’ কে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছি একব্যাক্তি এক তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে তার স্বামীর কাছে ফেরত যাবার যোগ্য করার লক্ষ্যে বিবাহ করেছিল, যা মহিলা জানতো না”। ঈমাম আহমেদ বলেন, “সে মুহাল্লিল, তার নিয়াত মহিলাকে বিবাহের জন্য নয় তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফেরত যাবার জন্য যোগ্য করার জন্য, সে অভিসপ্ত।“ 
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় হিল্লা বিবাহ বা হালালা ম্যারেজ বৈধ নয় বরং অভিসপ্ত, এটা করা গুনাহের কাজ, এটাকে ‘যেনা’ র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
একজন মহিলাকে তিন তালাক উচ্চারনের সাথে সাথে এটা লাগু হয়ে যায় আর ফেরত নেয়া যায় না।এজন্যই ইসলাম ধর্মে এক সাথে তিন তালাকও দেওয়া যায় না, কারন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই রাগের কারনে তালাক প্রদান করা হয়, তাই দ্বিতীয় তালাক ও তৃতীয় তালাকের মধ্যে সময় রাখা হয়েছে, যাতে করে আলোচনা করে সুস্থ মস্তিস্কে বোঝাপড়া করা যায়, ও তৃতীয় তালাক এড়ানো যায়, কিন্তু যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে তৃতীয় তালাক অসম্ভাবী হয়ে যায়, তাহলে সেই তালাক প্রাপ্তাকে অন্য কেউ বিয়ে করে আবার তাকে তালাক না দিলে সে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফেরত যেতে পারে না।
এক্টু ব্যাখ্যা দেয়া যাক, প্রথমেই মনে রাখতে হবে তিন তালাকপ্রাপ্ত মহিলা তার স্বামীর জন্য হারাম হয়ে গেছে, এখন তিনি (মহিলা) ‘ইদ্দত’ পালনের পর অন্য কাউকে ইচ্ছা করলে বিবাহ করতে পারবেন, এবং সেই স্বামী তার স্বাভাবিক সংসার ধর্ম পালন করার পরে স্বেচ্ছায় কোন প্রলোভনে বা প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে যদি তালাক প্রদান করেন, এবং মহিলা আবার ‘ইদ্দত’ পালন করেন তবে তিনি পুনর্বার বিবাহ করার জন্য তৈরী হলেন, এখানে তিনি আবার যে কাউকে বিবাহ করতে পারেন, এই জায়গাতেই হালালা বিষয়টি এসে যায়।অর্থাৎ তিনি বিয়ের জন্যা বৈধ (হালাল) হলেন।আর আঈনের ম্যানিপুলেশন সংঘঠিত হয়।
অনেক বক্তা আছেন বলেন, ‘স্বামী বেটার দোষের জন্য মহিলাকে অন্য পুরুষের সাথে শুতে হবে কেন’? এটা অবিচার ইসলাম ধর্মে অনাচার আর পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে’।
আমার মতে মানুষ নিজের স্বার্থে আঈনের প্রয়োগ নিজের মত করে নিয়েছে, ১) তালাক দেওয়ার আগেই খেয়াল রাখতে হবে, একবার তিন তালাক হয়ে গেলে তাকে ফেরত আনা যাবে না। শারিয়াতে তালাক পদ্ধতিকে জটিল করা হয়েছে এর অপপ্রয়োগ বন্ধ করার জন্য, তালাকে তিনটি স্তর করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছিল দুইজনের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে সমঝোতা হবে, কিন্তু সেই স্তর পার হয়ে গেলেই তখন তিন তালাক লাগু হয়। আর তার সাথে সাথে যা বৈধ ছিল তা অবৈধ হয়ে যায়।


২) তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর ভালমন্দ ইচ্ছা অনিচ্ছার জন্য প্রাক্তন স্বামী কোন ভাবেই দায়ী নয়, ইদ্দত পালন করার পর তিনি মুক্ত এবং বিবাহ যোগ্যা যাকে ইচ্ছা তিনি বিবাহ করতে পারেন। আর বিবাহ করলে স্বাভাবিক ভাবেই সংসারধর্ম পালন করতে হবে, অর্থাৎ যৌণ সম্পর্ক স্থাপিত হবে। এতে প্রথম স্বামীর অথবা বর্তমানে দ্বিতীয় বার বিবাহে বিবাহিত মহিলার কিছু করার নেই, যদি এই দ্বিতীয় স্বামী কোন কারন বসতঃ এই মহিলাকে তিন তালাক দেয়,(যা হতে হবে সম্পূর্ন কাকতালীয় ও স্বপ্রণোদিত)তবে তাকে আবার ‘ইদ্দত’ পালন করতে হবে। এই ইদ্দত পালনের পরে তিনি আবার মুক্ত, এবং যাকে ইচ্ছা তাকে বিবাহ করতে পারেন। এইখানে দ্বিতীয় স্বামীকে ‘মুহাল্লিল’ বলাহয়েছে, আর প্রথম স্বামীকে ‘মুহাল্লিল্লাহু’ বলা হয়েছে যা কিনা অভিসপ্ত। দ্বিতীয় স্বামী যদি বিয়ে করেই থাকে মহিলার প্রথম স্বামীর কাছে যাতে ফেরত যেতে পারে তবে এই দ্বিতীয়বিবাহটি হারাম, ও এই সম্পর্কটি ‘যেনা’ র অন্তর্ভুক্ত। এখানে স্ত্রীর শাস্তির কথা বলা হয়নি।
যদি দ্বিতীয় বিবাহটি হালালা বিয়ে বা কোন অর্থ, বা কোন কিছুর বিনিময়ে হয় তা পাপ গুনাহের কাজ,
আল্লাহর রাসুল সাঃ বলেছেন, “আল্লাহর অভিসম্পাত তার প্রতি যে কোন কিছুর বিনিময় হালালা বিবাহের চুক্তি করে” - সুনান আল দারামী/মিস্কাত আল মাসাবিহ)
শরিয়াত মহিলাকে বিবাহে বাধ্য করে নাই, এটা তার ইচ্ছা ও অধিকার, তিনি ইচ্ছা করলে দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার বিবাহে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। যদি তিনি দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার বিবাহে রাজী হন তা হলে তা শুধু তার প্রথম স্বামীর ইচ্ছাপুরণ নয়, এটা পরিপূর্ন সন্মান ও অধিকারসহ একটি স্বাভাবিক বিয়ে হতে হবে।
৩) তার প্রথম স্বামী ইচ্ছা করলে তাকে আবার বিবাহ করতে পারেন, কারন তিনি এখন কোন বিবাহ থেকে মুক্ত।
আঈন আছে, কিন্তু তার প্রয়োগকারী মানুষ, মানুষ নিজের স্বার্থে আঈনকে ভেংগেচুড়ে নিজের মতন করে নিয়েছে, এতে আঈনের দোষ কোথায়?


তথ্যসুত্রঃ
www.islamawckening.com
www.IslamOnline.net
www.jawaz.com







Discussion About It Where It Was Shared:



Member 1

ভুমিকাটা পইড়া আর আগাইতে ইচ্ছা করল না। সেক্স সম্পর্কে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রবন্ধ শুরু হইছে। আয়শা (রঃ) এর বর্ননায় অনেক হাদিস আছে যেখানে সেক্স সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা রয়েছে এবং সাহাবীদের প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (স  এই বিষয়ে অনেক আলোচনা করেছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়ে যে লেখা শুরু তা আর কেমন হবে?




Member 2

এই ধরনের লেখা সম্পর্কে মন্তব্য করতেও ইচ্ছা করে না। তবু নিজেকে কন্ট্রল করতে না পেরে লিখতে বাধ্য হলাম। 

ভাই, সম্পূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে তারপর অন্যের লেখার বঙ্গানুবাদ করা কি ঠিক ছিলনা? এই লেখাটা সম্পূর্ণরুপে আমার কাছে বে-আদাতী মনে হয়েছে (এটা আমার নিজস্ব মতামত)।




Member 3

আচ্ছা ব্রাদার, লিখাটা কি আপনি স্বপ্নে পাইসেন আমি না জিগাইয়া পারলাম না।




Member 4

ভাই, আমরা তো অনুবাদককেই প্রশ্নের মুখে দাড় করাব, লেখক এইটা এইখানে দিলে তাকে ধরতাম। এর লেখক যে কততা মুর্খ তার আরেকটা প্রমান দেই। "এক রাত্রির খেল" শিরোনামে মু'তা বিবাহের প্রসংগ তোলা হয়েছে। কিন্তু, মুর্খ লেখক এইটা এড়িয়ে গেছে যে রাসুল (সঃ) এর হিজরতের পর অল্প কিছু সময় মু'তা বিবাহের পারমিশন দেয়া হয়েছিল এবং পরে তা হারাম করে দেয়া হয়। অথচ এইখানে এই বিষয়ে ভুল ভাবে তা তুলে ধরা হয়েছে। কেউ বা কোন সম্প্রদায় যদি ভুল পতে পরিচালিত হয় তবে তার দায় তাদের, ইসলামের না।




Member 5

ISLAMER SOBCHEYE GOVIROTOMO SHARTATI HOLO BINA JUKTITE ALLAH O TER RASUL ER JEKONO KAZ E 50000000000000000................0000%(INFINITE) ASHTHA RAKHA EBONG BINDUMATRO DIMOTER CHINTAO NA KORA. IBLISHER DOKKHOTER ONNOTOMO NIDARSHAN HOLO MANUSHER MONE JUKTIR NANABIDHO DHEW TULE DEYA EBONG BEIMAN KORE DEYA. EKJON REAL THINKER
OBCOURSE BUJHBE JE IBLISH CHAY JE KONO PANTHAY MANUSH KE DERAIL KORE DITE. JOKHON
SOB CHESTA BERTHO HOY TOKHON LAST RESORT HISHEBE CHOLONAR ASROY NEY. PLEASE DON'T
LOSE YOUR THE BEST ASSET.









কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমাদের লেখা শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




মূল ইনডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment