CH Ad (Clicksor)

Wednesday, October 15, 2014

ইসলাম পুরুষদের কেন বহুবিবাহের অনুমতি দেয় aka ইসলামে পুরুষদের কেন বহুবিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে



ইসলাম পুরুষদের কেন বহুবিবাহের অনুমতি দেয়
or
ইসলামে পুরুষদের কেন বহুবিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে




ইসলাম সম্পর্কে অমুসলিমদের, এমনকি কিছু মুসলিমদেরও অনেক বিরূপ তথা ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। তারমধ্যে খুব সাধারন এবং ব্যাপক প্রচলিত কিছু ভূল ধারনা নিয়ে, আমি ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করব। ভ্রান্ত ধারনা এজন্য বলছি যে, ইসলাম সম্পর্কে যার মনে যত বিরুপ ধারনাই থাকুক, যত প্রশ্নই থাকুক, মনে রাখবেন আপনার প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব সবসময়ই আছে। হয়তো আপাতদৃষ্টিতে আপনি আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর খুজে পাচ্ছেন না, কিন্তু উত্তর সবসময়ই আছে, হয়তো আপনি তা জানেন না।এর কারন হচ্ছে কোরান শরিফে যে বিধান দেয়া হয়েছে তা মানুষের জন্য, স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত বিধান। কিন্তু সমস্যা হলো যারা কোর'আন সম্পর্কে জানেনা, অথবা মানে না, তারা কেন আমার কথা বিশ্বাস করবে। আর তাই আমি সামগ্রিক দৃষ্টিকোন থেকে আজকের প্রশ্নের উত্তরটা দেব। আপনি যদি একজন সত্যনিষ্ঠ, সুবেবেচক, বিজ্ঞানমনস্ক, বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হন, তাহলে আপনি মানতে বাধ্য হবেন যে, পবিত্র কুর'আন শরিফের সমস্ত বিধানই মানুষের কল্যানের জন্য। তবে পুরো প্রশ্নের জবাব পেতে হলে, আপনাকে আমার এ লেখাটা সম্পুর্ন পড়তে হবে, আংশিক পড়লে হবে না।

আজকের আলোচনার বিষয় ইসলামে পুরুষদের কেন বহুবিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে।


বিশেষজ্ঞরা বহুবিবাহ তথা POLYGAMY কে দুভাগে ভাগ করেন। প্রথম ভাগটির নাম Polygyny যেখানে একজন পুরুষ বহূ নারীকে বা একের অধিক নারীকে বিবাহ করে, আর অপরটি হচ্ছে, Polyandry যেখানে একজন নারী একের অধিক পুরুষকে বিবাহ করে। ইসলাম সীমিত Polygyny এর অনুমতি দেয়। আর দ্বিতীয়টি অর্থাৎ, Polyandry সম্পূর্ন নিষিদ্ধ।

এবার চলে আসা যাক মূল প্রশ্নে ইসলাম কেন পলিজিনি (polygyny) তথা পুরুষদের বহু বিবাহের অনুমতি দেয়। এর উত্তরে আমি প্রথম যে কথাটি বলব তা হলো পবিত্র কোরান শরিফই হচ্ছে, এই পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে, একটি বিবাহ করতে বলা হয়েছে (Al-qur'an is the only religious book on the face of the earth that contains, a phrase that, "marry only one"). পৃথিবীর বুকে এমন আর কোন ধর্মগ্রন্থ আপনি পাবেন না, যেখানে বলা হয়েছে, পুরুষরা এক বিবাহ করবে। যে ধর্মগ্রন্থের নামই আপনি বলেননা কেন, হোক তা বেদ, রামায়ন, মহাভারত, গীতা, তৈলমুদ, বাইবেল এরকম কোন ধর্মগ্রন্থেই পুরুষদের বহু বিবাহের সংখ্যার কোন সিমানা নির্ধারন করা হয়নি। এসব ধর্মগ্রন্থের মতে একজন পুরুষ যত খুশি স্ত্রী গ্রহন করতে পারবে। বস্তুত, পরবর্তিতে, এর সিমানা নির্ধারন করেন হিন্দু পুরোহিতরা, খ্রিষ্টান পাদ্রি এবং চার্চসমূহ, যে একজন পুরুষ একটি মাত্র বিবাহ বা স্ত্রী গ্রহন করতে পারবে।

হিন্দু ধর্মগ্রন্থমতে অনেক হিন্দু-ব্যাক্তিত্ত ও মহাপুরুষদেরই বহু-স্ত্রী ছিলো। রাজা দশরথ যিনি রামের পিতা, তাঁর ছিলো একের অধিক স্ত্রী, ভগবান কৃষ্ণের ছিলো বহু স্ত্রী।

অতীতে একজন খ্রিশ্চিয়ান পুরুষের বহু বিবাহের অনুমতি ছিলো, যেহেতু বাইবেলে এ ব্যাপারে কোন নিষাধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। মাত্র কয়েক শতাব্দি আগে, খ্রিশ্চিয়ান চার্চসমূহ এ আইন করেন যে, একজন খ্রিশ্চিয়ান পুরুষ কেবল একটি বিবাহ করবে।

Polygyny বা পুরুষদের বহু বিবাহ ইহুদি ধর্মমতেও বৈধ। তৈলমুদিক গ্রন্থমতে, ইব্রাহিম আঃ এর ছিল তিনজন স্ত্রী, সোলায়মান আঃ এর ছিলো কয়েকশত স্ত্রী। তাই পুরুষদের বহু বিবাহ ইহুদি সমাজে বহুদিন চালু ছিলো। রাব্বি গেরসম বিন ইয়াহূদ (960 C.E to 1030 C.E), প্রথম Polygyny এর বিরুদ্ধে ইহূদী সমাজে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। যেসব ইহুদি জনগোষ্ঠি মুসলিম অধ্যুসিত এলাকায় বাস করেন তাদের মধ্যে এই সেদিন পর্যন্ত (১৯৫০ ইং), Polygyny এর ব্যপক প্রচলন ছিলো। ইসরাইলের চীফ রেবিনেইট একটি আইন জারি করে (যেখানে বলা হয় একজন ইহূদী পুরুষ, একটি মাত্র বিবাহ করবে বা এক স্ত্রী গ্রহন করবে) Polygyny নিষিদ্ধ করেন।

১৯৭৫ ইং সালের ভারত সরকারের সেন্সার্(Census:জনগননা) সূত্রে একটি চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসে। একটি রিপোর্ট যার বিষয় ছিলো "Committee of the status of women in Islam", সেখানে একটি পরিসংখ্যান দেয়া হয় ১৯৫১ইং থেকে ১৯৬১ইং সালের মধ্যে ভারতে বহূ বিবাহ বা Polygamous কোন কোন জনগোষ্ঠিতে কি পরিমান বিরাজিত ছিলো। এই রিপোর্টের ৬৬ এবং ৬৭ নং পৃষ্ঠার পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় ১৯৫১ইং থেকে ১৯৬১ইং সালের মধ্যে শতকরা ৫.০৬ জন হিন্দু বহু বিবাহ করেন, অপরপঙ্ক্ষে মুসলমানরা এসময়ের মধ্যে বহু বিবাহ করেন শতকরা মাত্র ৪.৩১ জন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারতীয় আইনে মুসলমানরাই হচ্ছে একমাত্র জনগোষ্ঠি যাদের বহু বিবাহের অনুমতি রয়েছে। ভারতে হিন্দু জনগোষ্ঠির জন্য পুরুষদের বহু বিবাহ বা বহু স্ত্রী গ্রহন সম্পূর্ন আইন-বিরুদ্ধ। যাহোক অতীতে হিন্দু পুরুষদেরও বহু বিবাহে কোন বাধা ছিলোনা। ১৯৫৪ইং সালে ভারত সরকারের,"হিন্দু বিবাহ আইন", এ হিন্দুদের একের অধিক বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়। আর তাই ভারত সরকারের মাধ্যমেই হিন্দুদের বহু বিবাহ নিষিদ্ধ হয়, কোন হিন্দু ধর্মিয় গ্রন্থের মাধ্যমে নয়।

এবার দেখা যাক কেন ইসলাম, সিমিত Polygyny এর অনুমতি দেয়।


পবিত্র কোরান-শরীফ পুরুষদের সিমিত বহু বিবাহ অনুমোদন করে:

আমি আগেই বলেছি কোরান শরীফ-ই হচ্ছে, এ পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ, যাতে একটি বিবাহ করতে বলা হয়েছে। পবিত্র কোরানশরীফের আলোচ্চ আয়াতটি এরকম-

"marry women of your choice two, or three, or four; but if ye fear that ye shall not able to deal justly(with them), then only one."

"তোমাদের পছন্দের দুই, অথবা তিন, অথবা চারজন নারীকে বিবাহ কর; কিন্তু যদি আশংকা কর এদের মধ্যে স্বম-বিচার করতে পারবেনা, তহলে মাত্র একজনকে বিবাহ কর।"
(সুরা: নিসা, আল কুর'আন ৪:৩)

উল্লেখ্য পবিত্র কোর'আন শরিফের আবির্ভাবের পূর্বে পুরুষদের বহু বিবাহের কোন নির্দিষ্ট সীমা ছিলোনা। অনকেরই ছিলো বহু পত্নী, কারো কারো ছিলো কয়েকশত। ইসলামই প্রথম সর্বোচ্চ চারজনের সীমানা নির্ধারন করে দেয়। ইসলাম একজন পুরুষকে দুই, অথবা তিন, অথবা চারজন নারীকে বিবাহ করার অনুমতি দেয়, শুধুমাত্র যদি এইসব স্ত্রীদের সবার প্রতি, সমান বিচার করা সম্ভব হয়, তবেই। সুরা নিসা'রই ১২৯ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্-তায়ালা এ সম্পর্কে আরো বলেন, "তুমি কখনোই তোমার স্ত্রীদের প্রতি স্বম-বিচার করতে সমর্থ হবেনা...."। (আল কুর'আন অধ্যায়:৪ আয়াত:১২৯)।

আর তাই Polygyny বা পুরুষদের বহু বিবাহ ইসলামে কখোনই পালনিয় বা অবশ্যই-করনীয় কিছু নয়, এটি একটি বিকল্প ব্যাবস্থা মাত্র, যা শর্তসাপেক্ষে করা যেতে পারে। অনেক অমুসলিমদের এই ভূল ধারনাও রয়েছে যে, মুসলমানদের বহূ বিবাহ করা Compulsory।

ইসলামে করনিয়-অকরনিয়গুলোকে আমরা মোট ৫ ভাগে বিভক্ত করতে পারি।
১. ফরজ্- অবশ্যই করতে হবে।
২. মুস্তাহব- করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
৩. মুবাহ্- করা যেতে পারে (Permissible or allowed)।
৪. মাকরুহ্- করতে অনুৎসাহিত করা হয়েছে।
৫. হারাম- সম্পুর্ন নিষিদ্ধ।

Polygyny বা পুরুষদের বহু বিবাহ উপরের ভাগগুলোর মধ্যে, 'মুবাহ্' বা করা যেতে পারে এই শ্রেনীতে পরে। একথা কোনভাবেই বলা যাবেনা যে, একজন পুরুষের যদি দুই, অথবা তিন, অথবা চারজন স্ত্রী থাকে, সে বেশি ছোয়াব পাবে, যার মাত্র একটি স্ত্রী রয়েছে, তার তুলনায়। বরং তার পক্ষেই ভালো মুসলমান হওয়া সহজ, যার মাত্র একজন স্ত্রী রয়েছে।

এবার আসুন বাস্তবদার আলোকে, বিশ্লেষন করার চেষ্টা করি আল্লাহ-তায়ালা, কি কারনে পুরুষদের সিমিত বহুবিবাহ অনুমোদন করেন। 


মহিলাদের গড়-আয়ু পুরুষদের তুলনায় বেশিঃ

প্রকৃতিগতভাবে পুরুষ এবং নারী প্রায় সমান অনুপাতে জন্মগ্রহন করে। তথাপি একটি কন্যা শিশু'র শারিরিক প্রতিরোধ ব্যাবস্থা, বেশি থাকে ছেলেশিশুর তুলনায়। চিকিৎসকরা বলেন একটি কন্যাশিশু রোগ জীবানুর সাথে বেশি লড়তে পারে, একটি ছেলেশিশুর তুলনায়। আর তাই Pediatric ধাপে ছেলেশিশুরা, মেয়েশিশুদের তুলনায় বেশি মৃত্যুবরন করে।

আবার যুদ্ধের সময় পুরুষরা বেশি মৃত্যুবরন করে মহিলাদের তুলনায়। দূর্ঘটনা, রোগজীবানু, মাদকাশক্তি এসবে পুরষরাই বেশি মৃত্যুবরন করে। আর তাই মহিলাদের গড় আয়ু পুরষদের চেয়ে বেশি। 


পৃথিবীতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা বেশিঃ

শুধুমাত্র ভারত এবং তার আশেপাশের তৃতীয় বিশ্বের দু'একটা দেশ ছাড়া, সারা পৃথিবীতেই মহিলাদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি। এর কারন হচ্ছে, ভারতে কন্যা শিশু হত্যার হার প্রচুর। এছাড়া প্রতি বছর প্রায় দশ লক্ষ কন্যা শিশু এবর্শনের মাধ্যমে নষট করে ফেলা হয়, যখন তারা এটিকে, কন্যা-শিশু হিসেবে শনাক্ত করতে পারে। যদি এইসব অনাচার বন্ধ করা যায়, তাহলে ভারতেও মহিলাদের সংখ্যা বেশিই থাকত।

পৃথিবীতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা বেশি।

U.S.A তে ৭.৮ মিলিয়ন নারী বেশি, পুরুষদের তুলনায়(এক মিলিয়ন=দশলক্ষ)। শুধুমাত্র New York শহরেই এক মিলিয়ন নারী বেশি, পুরুষদের তুলনায়। আর নিউইয়র্ক শহরের মোট পুরুষ জনসংখ্যার প্রায় তিন ভাগের এক অংশই আবার Gay বা সমকামি। শুধু ইউ.এসে'তেই সমকামি বা Gayআছে, ২৫ মিলিয়নের উপরে। তারমানে এই ২৫ মিলিয়ন পুরুষ কোন মহিলাকেই কোনদিন বিবাহ করবে না।

পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গ্রেটব্রিটেনে আছে ৪ মিলিয়ন নারী বেশি, পুরুষের তুলনায়। জার্মানিতে আছে ৫ মিলিয়ন নারী বেশি, রাশিয়াতে আছে ৯ মিলিয়ন নারী বেশি, পুরুষদের তুলনায়। আর আল্লাহ-ই ভালো, জানেন সারা পৃথিবীতে আরো কত মিলিয়ন নারী বেশি আছে, পুরুষের তুলনায়।


ধরি যদি প্রতিটি পুরুষই একজন মহিলাকে বিবাহ করেঃ

ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি পুরুষই একজন নারীকে বিবাহ করলো, তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের ত্রিশ মিলিয়ন নারী কোনদিনই স্বামি পাবে না (২৫ মিলিয়ন Gay'র হিসাব ধরে)।

এঅবস্থায় আমার কিংবা আপনার বোন যদি যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে এবং সে যদি ঐ ত্রিশ মিলিয়ন নারীর একজন হয়, তার সামনে দুটো পথ খোলা থাকে। একটি হচ্ছে ইতোমধ্যে বিবাহিত এরকম কাউকে স্বামি হিসেবে গ্রহন করা অথবা জনগনের সম্পত্তি হওয়া। হ্যা শুনতে খারাপ লাগলেও, জনগনের সম্পত্তি কথাটিই বোধহয় সবচেয়ে শোভন শব্দ, যা আমি এক্ষেত্রে ব্যাবহার করতে পারি।

জনগনের সম্পত্তি হওয়ার চেয়ে, একজন বিবাহিত পুরুষকেই বিয়ে করা শ্রেয়।

পশ্চিমা বিশ্বে সাধারনত একজন পুরুষের বহু উপ-পত্নী, বান্ধবী থাকে। যেখানে নারীদের আসলে কোন অধিকার অথবা সন্মানবোধ কিছুই থাকেনা। অথচ এই সমাজই একজন পুরুষের বহু বিবাহ অনমোদন করেনা। যদিও বিবাহের মাধ্যমেই একমাত্র এইসব নারীরা তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা পেতে পারে।

এছাড়াও আরো কিছু কারন রয়েছে, যার জন্য ইসলাম সিমীত Polygyny'র অনুমতি দেয়। তবে মোদ্দা কথা হচ্ছে নারীদের সন্মান, এবং অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়ার জন্যই এ বিকল্প ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে। আর সেই নারীদের জন্যই এ ব্যাবস্থা যারা ইসলামিক মূল্যবোধে জীবন অতিবাহিত করেন, তাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এ ব্যাবস্থা।

এবার দেখা যাক, ইসলাম কেন, Polyandry বা নারীদের বহুবিবাহ অনুমোদন করে না। 


ইসলামে যদি একজন পুরুষকে বহু বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়, তাহলে একজন মহিলাকেও কেন বহু স্বামি গ্রহনের বা বহু বিবাহের বা 'Polyandry' এর অনুমতি দেয়া হলোনা। এই প্রশ্নটি শুধু ননমুসলিমদের মনেই নয়, কিছু মুসলিমদের মনেও বড় রকমের প্রশ্নবোধক হয়ে দাড়ায়। আসুন মহান সৃষ্টিকর্তা এর অনুমতি কেন দেননি তা জানার চেষ্টা করি।

ইসলামিক সমাজে একজন নারীর এবং একজন পুরুষের অধিকার; ন্যায় বিচার এবং স্বমঅধিকারের উপর প্রতিষ্ঠিত। এই স্বমতা পুরুষ এবং নারীর প্রয়োজন অনুসারে সমতা নিশ্চিত করা। বিজ্ঞানে একথা এখন স্বর্বজন স্বিকৃত যে, পুরুষ এবং নারীর শারিরিক এবং মানসিক গঠনে রয়েছে সুষ্পষ্ট ভিন্নতা। আর তাই আল্লাহ-তায়ালা, নারী এবং পুরুষের মানষিক এবং শারিরীক সামর্থ, দায়িত্ব আর প্রয়োজন অনুযায়ি এই স্বমঅধিকারের বিধান দিয়েছেন। 


এবার আসুন Polyandry কেন ইসলামে নিষিদ্ধ করা হলো, সেই কারনগুলো যুক্তিগ্রাহ্যভাবে বিশ্লেষন করি।

(ক) যদি একজন পুরুষের একের অধিক স্ত্রী থাকে, সেই পরিবারে যে সন্তান জন্ম গ্রহন করবে, সে জানবে তার পিতা কে, আর মাতাই বা কে। কিন্তু যে স্ত্রীর একের অধিক স্বামি থাকবে, তার সন্তান শুধু জানবে তার মাতা কে, পিতা তার কাছে অজ্ঞাত থেকে যাবে। তথাপি একথাও সত্যি যে, শৈশবে একটি শিশুর পিতা মাতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা; তার স্বাভাবিক মানষিক বিকাশের জন্য পরিপন্থি। আমি জানি বর্তমানে জেনেটিক টেষ্টের মাধ্যমে, পিতা-মাতা সনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু এটি স্বাভাবিক এবং সহজসাধ্য প্রক্রিয়া নয়। আর অতীতে এধরনের টেষ্টের তো প্রশ্নই আসে না।

(খ) একজন পুরুষ একজন নারীর তুলনায়, প্রকৃতিগতভাবেই অধিক বহুগামি।

(গ) বায়োলজিক্যালি; একজন পুরুষের পক্ষে একের অধিক স্ত্রী'র প্রতি, তার দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব। একই রকম পরিস্থিতিতে একজন নারীর পক্ষে, একের অধিক স্বামির প্রতি, দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। তথাপি একজন মহিলাকে, ভিন্ন ধরনের মানষিক এবং শারিরিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়, Menstrual cycle এর বিভিন্ন ধাপে।

(ঘ) একজন মহিলার একের অধিক স্বামি থাকলে, সেই মহিলার সেক্সুয়ালি ট্রানসমিটেড(Venereal or sexually transmitted diseases) রোগে আক্রান্ত হবার সর্বাধিক সম্ভবনা থাকবে। যদি এদের কারো এক্সট্রা মেরিটাল এ্যফেয়ার নাও থাকে, তারপরও এই সম্ভাবনা থাকবে। অপরপক্ষে একজন পুরুষের যদি একের অধিক স্ত্রী থাকে, তার বা তাদের এ ধরনের কোন রোগে আক্রান্ত হবার কোন সম্ভাবনা নেই, যদি কারো এক্সটা মেরিটাল সম্পর্ক না থাকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, একজন মুসলিম পুরুষের ছারকুম্ছাইছড বা সুন্নতে খৎনা করতে হয়। অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করে যে, সুন্নতে খৎনা পুরুষদের দাম্পত্য জীবনকে আরো সুখের করে এবং বিভিন্ন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড রোগ প্রতিরোধেও সহায়তা করে। অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আরো আবিস্কার করেন যে, সুন্নতে খৎনা এইডস্ (AIDS) রোগ প্রতিরোধেও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। 


উপরের কারনগুলো ছিলো সাধারন, যা একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি। এর বাইরেও নিশ্চয়ই অনেক কারন আছে, যা শুধু আল্লাহ্-ই জানেন, যার জন্য Polyandry নিষিদ্ধ করা হয়েছে।








কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার লেখা শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




মূল ইনডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

9 comments:

  1. Khoda carta bie korar onumoti diechhen thik e, tobe etao bolechhen, "Ami jani je tomra kokhonoi eta parbe na!" Ta mama, amra jodi Allahr etoi baddhogoto banda hoi, tahole ei kothar por to r bitorko thakar kotha na, eker odhik bie to durer kotha!!!

    ReplyDelete
  2. thanxss mama ..jodio ami esob info gula age jantam. ..khub e guruttopurno post eta...sob e manlam mama..but nijer personal ekta montobbo kori..seta holo..duniyate nari besi thaklei je purush der bohu bibaho kora jay..eta mante pari na.(jodio ajkal ek bou er jalay tika jay na..abar r o 3 ta.. ).nijer husbend ke onno jon der sathe share kora ta khub kostokor.GREAT POST.

    ReplyDelete
  3. Mama bitorko jara kore, tara na bujhei kore. Ar apni apnar ashe-pasher, koyta Muslim-ke chinen, jara eker odhik bie korsen. Tahole ei prosno apnara tulen keno? Ar apnara jokhon na jenei, shomalochona koren, tokhon er uttor deya ki amader daitto na??Ar omuslim-der moddhe, ki bohu bibaho hochse na? Muslim purushder bohu bibaher karon-gulo bollam. Eibar apne bolen, omuslim-rao keno bohubibaho kore????

    ReplyDelete
  4. ekdom poyla line e ekta roshshukar bad gese... vaggo valo amar moto amar member ra eto khut khuta na... khekz.

    amra islam (j kono dhormo e hok) khub kom jani. r ulta palta boyan dei, shuni. bivranto erate, ei jatio contribution er kono bikolpo nai. thanks vaigna.. jan.. porer adda teo apne abar amagore khilayen. keu mind korbona.

    ReplyDelete
  5. Bhalo lekhsen ..mama. Aaro bhalo lagse lekhar shurute Al-Quran shomporke manusher dharona ....eta ullekh korer jonno.!

    Mohanobi Mohammad (Sallellahoo Alaihissallm) amader uddeshhe ekta kotha e bole gesen ... .."Jotodin amra AL-Quran abong Uner hadis ba Sunnah ke onushoron korbo,totodon amader kono voy nai".

    May Allah(SWT) forgive us All. .

    ReplyDelete
  6. jotil hoise....mashallah

    ostad r ekta kotha hunsilam..

    ek purush 4 narir sathe shongome lipto hoite pare..jodi...tara apner stri or golam hoi....

    jehetu sri sara shongom kora jai na...r ayame jahiliyar pore GOLAM protha uitha gese...so ek er odhik biye kora prai shomvob silo na...

    vhul vhal thakle dhoira diyen

    ReplyDelete
  7. অনেক যুক্তি সম্পন্ন লেখা। এবং বুঝতে পারলাম যে সব ধর্মেই পুরুষদের বহুবিবাহকে সমর্থন করে কিন্তু মহিলাদের বহুবিবাহকে কঠোর ভাবে নিরুৎসাহিত করে । এর একটাই কারন হতে পারে আর তা হলো সব ধর্মপ্রচারক গন ই পুরুষ এবং গড ও নিশ্চয়ই পুরুষ ।

    ReplyDelete
  8. ইসলাম ধর্মে 'সানেনযূল' টা অনেক গুরুত্বপূর্ন। কোন প্রেক্ষিতে কোন আয়াত নাজিল হইছে দেখা জরুরী। কারন কোরান মজীদ রাসুলে পাকের কাছে আল্লাহর ইন্সট্রাক্সন ডাইরেক্টিভ হিসাবেও আসছে।

    বিধর্মীর দেশে বাস করি, দুইটা প্রশ্নের মুখামুখি প্রায়ই হইতে হয়, ১) তোমরা ৪টা বিয়া কেন কর? ২) নারীদের বোরখা কেন পরাও!

    এই টপিকে প্রথমটারই আলোচন হইছে তাই আমি যা বলি তাই এখানে কইতে চাই।

    যদি জিজ্ঞাসিত হই 'তোমরা ৪টা বিয়া কেন কর?, আমি কই "আমার তিনটা এখনো বাকী আছে, আর প্রশ্নকারী মাইয়া হইলে কই "তুমি রাজী থাকেলে কও দুই নাম্বারটা কইরা ফালাই"। খেকজ

    একাধিক স্ত্রীর বা বিবাহিত মুস্লিম পুরুষের সংখ্যা কত? তুমি ব্যাক্তিগত ভবে চিন এমন মুস্লিম পুরুষের সংখ্যা কত, আর তাদের মধ্যে একাধিক স্ত্রী কয়জনের আছে?

    কোন প্রেক্ষিতে আল্লাহ বহু বিবাহের অনুমতি দিয়েছিলেন, আর রাসুলের একাধিক বিয়ের পিছনে কি উদ্দেশ্য ছিল?

    (নিপুনের উল্লেখিত আয়াতগুলিতে পরিস্কার বলা আছে তাই আর কপচাইলাম না)

    যখন মক্কা থেকে রাসুল হিযরত করে মদিনায় চলে যান, তারপর থেকে অনেক নও মুস্লিম তাদের পরিবারকে ফেলে রেখেই জীবন বাচানোর তাগিদে মদিনায় হিযরত করতে থাকেন। এতে করে সামাজিক ভারসাম্যতা ঝুকিপূর্ন হয়ে যায়। তাই আনসারিদের মদ্ধে থেকে মুহাজিররা স্ত্রী গ্রহন করেন। এছাড়াও প্রাথমিক যুদ্ধে(বদর, ওহুদ ও খন্দকের যুদ্ধ) অনেক মুস্লিম সহীদ হয়ে যান, তাদের বিধবা স্ত্রীরা যাতে সামাজিক বোঝা হয়ে শরীয়তের বিরোধী কাজ না করে, তাদের উপর নির্ভরশীল পূত্রকন্যারা যাতে সহায়হীন না হয়ে পরে তার জন্য একাধিক বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়।

    রাসুলের পাকের বহু বিবাহের পিছনে এক্টা প্রধান কারন ছিল সমাজে যুদ্ধমান শিবির বা রাজ্য বা শক্তিগুলিএর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। বিয়ের মাধ্যমে আত্নীয়তা সৃষ্টি হয় তখন দুই যুদ্দংদেহী শক্তির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্টা হয়, এটা এক্টা পরিক্ষিত রেওয়াজ। ( সম্রাট আকবরের স্ত্রী যোধাবাঈ উল্লেখ্য)। আরো অনেক কারন আছে থাক্তে পারে যা আমার মত মুর্খের পক্ষে জানা কঠিন।

    গুড জব!

    আল্লাহ ভালো জানেন।

    ReplyDelete
  9. মামার শেষের কথাগুলোর সাথে সামান্য একটু যোগ করি। নারীদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে, তথা প্রায় সর্বস্তরে যাতে আল্লাহ তায়ালার, বিশেষ নির্দেশগুলো, উপদেশগুলো পৌছে, এটিও অন্যতম একটি কারন হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর বহু বিবাহের। মানে এমন অনেক গভীর ব্যাপার নারী পুরুষের দাম্পত্য জীবনে থাকে, যা কেবল মাত্র হূজুর সাঃ এর স্ত্রীদিগের দারাই সাধারন নারীদের কাছে পৌছানো সম্ভব হয়েছে। আরও অনেক কারন নিশ্চয়ই রয়েছে, যার জন্য তিনি বহু বিবাহ করেছেন, তার খুব সামান্যই আমাদের মত সাধারন লোক জানি বা ধারনা করতে পারি। সম্ভব হলে আরেকদিন আলোচনা করব।

    উল্লেখ্য বিবি খাদিজা রাঃ তায়ালা বেচে থাকতে হূজুর কোন বিবাহ করেননি। আর আমাদের প্রিয় নবী সাঃ, এর স্ত্রীগন আমাদের মাতাস্বরুপ।

    ReplyDelete