CH Ad (Clicksor)

Tuesday, October 27, 2015

অসীম তৃষ্ণা_Written By pinuram [দশম পর্ব (চ্যাপ্টার ৪ - চ্যাপ্টার ৬)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




অসীম তৃষ্ণা
Written By pinuram




দশম পর্ব

(#০৪)

সেইদিনের পরে মা আর ছেলের মাঝে বেশ কিছুদিনের জন্য কথাবার্তা অতি সীমিত মাত্রায় হয়ে যায়। ঋতুপর্ণা ইচ্ছে করেও ছেলের সাথে বান্ধবীর মতন মিশতে পারে না। ছেলের ছোঁয়াতে হৃদয়ের গভীর কোনে যে দোলা লাগিয়ে দিয়েছে সেটাকে কিছুতেই ভুলতে পারছে না, কিন্তু এক মা আর ছেলের মাঝে প্রেমিক প্রেমিকার মতন সম্পর্কের প্রশ্রয় কিছুতেই মন মেনে নিতে পারছে না। অন্যদিকে আদিও ঠিক করে উঠতে পারে না কি ভাবে মায়ের সাথে একটু খোলাখুলি ভাবে মেলামেশা করা যায়। মাকে নিজের করতে হলে আগে বেশ খোলা মেলা হিসাবে মিশতে হবে, মায়ের মনের উদ্দেশ্য জানতে হবে।

তিস্তা যাওয়ার পরের দিন অবশ্য ঋতুপর্ণা আর তিস্তা, স্কুল থেকে বেড়িয়ে পুজোর শপিং করতে গিয়েছিল, তবে তখন আদির সাথে ঋতুপর্ণার এক শীতল মন টানাটানি চলছিল তাই ঋতুপর্ণা আর আদিকে ডাকেনি। এইদিকে পড়ার চাপের জন্য তিস্তার কাছে বেশ কয়েকদিন যাওয়া হয়নি আদির।

অনেকদিন সুভাষের কোন ফোন আসেনি দেখে একদিন আদি নিজে থেকে বাবাকে ফোন করে। ফোন করেই আদি জিজ্ঞেস করে, "কি ব্যাপার, অনেকদিন ফোন কর না। আয়েশার সাথে সব ঠিক ঠাক চলছে না, আবার কোন নতুন মেয়ের পাল্লায় পড়েছো?"

সুভাষ হেসে ফেলে আদির কথাবার্তা শুনে, "নারে মানে বেশ বিজি ছিলাম তাই আর ফোন করে উঠতে পারিনি। তা ঋতু এখন কেমন আছে?"

আদি সব কথা খুলে বলে বাবার কাছে, তারপরে প্রশ্ন করে, "আচ্ছা, তুমি কি এখন মাকে ভালোবাসো? সত্যি করে বলবে?"

সুভাষ হেসে ফেলে, "জানিনা ঠিক তবে মনে হয় না। আসলে কি জানিস...."

কিছুক্ষণ থেমে যায় সুভাষ।

আদি প্রশ্ন করে, "কি হলো, ঠিকঠাক করে বল। তোমার কি ইচ্ছে। তুমি কি আবার মায়ের কাছে ফিরতে চাও নাকি?"

আদি মনে প্রানে চায় না ওর আর ওর মায়ের মাঝে তৃতীয় কোন পুরুষ আসুক, অন্তত ওর বাবা কখনই নয়। মায়ের ভালোবাসা, মায়ের হৃদয় কারুর সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার পাত্র নয় আদি। মাকে সম্পূর্ণ রূপেই নিজের করে নিতে চায় তাই সুভাষকে পরিস্কার করে জিজ্ঞেস করে, "তুমি কি চাও? মায়ের এক্সিডেন্টের খবর শুনে দৌড়ে এলে কিন্তু তারপরে একবারের জন্য ফোন করলে না। কি ব্যাপার?"

সুভাষ গম্ভীর হয়ে উত্তর দেয়, "আসলে কি জানিস, ভালোবাসা একসময়ে আমাদের মাঝে ছিল। তবে শুধু ভালোবাসা হলেই মানুষের হয় না। আমাদের মাঝে কিছু ডিফারেন্সেস ছিল যেটা সময়ের সাথে সাথে বিশাল হয়ে দাঁড়ায়।"

আদির জানতে ইচ্ছে করে এই বৈষম্য গুলো কি কি। সুভাষ জানায়, "তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস এখন তোর সাথে আমার সম্পর্ক আর বাবা আর ছেলের মতন নয়। সুতরাং তোকে সব কথা খুলে বলা যেতেই পারে। আসলে কি জানিস, বিয়ের পরে পরে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। তারপরে একদিন তুই এলি, তারপরে যত দিন গেল তত আমাদের খরচ বেড়ে গেল। ঋতুপর্ণা দেখতে ভীষণ সুন্দরী। আমি ভেবেছিলাম ঋতুপর্ণাকে দিয়ে মডেলিং করাবো, তাতে আমাদের ঘর-সংসার বেশ ভালো করেই চলে যাবে। বেশ কয়েকটা ফটোশুট করলাম, কিন্তু তোর মা অন্য কোন স্টুডিওতে গিয়ে ফটোশুট করতে গিয়ে বেঁকে বসলো। তার একটাই কথা, আমি কোন ছোট পোশাক পরে অন্য কারুর সামনে আসতে পারবো না। কারন জিজ্ঞেস করলে বলল, ছেলে বড় হচ্ছে, এই সময়ে মা'কে যদি ছোট পোশাকে দেখে তাহলে কি ভাববে। আর ওই সব ছোট পোশাকে আমি অভস্ত্য নই। এ ছাড়াও তোর মায়ের মানসিকতা বাড়ির মধ্যে উদার হলেও আই মিন বাড়িতে আমি যে রকম চাইতাম সেই রকম কাপড় পরতো, কিন্তু বাইরে শুধু মাত্র শাড়ি অথবা শালোয়ার কামিজ। বুঝতেই পারছিস, আমি ততদিনে একজন নাম করা ফটোগ্রাফার হয়ে গেছিলাম। মাঝে মাঝেই এইখানে সেখানে পার্টি হত, যেতাম মদ খেতাম। সেইগুলো তে তোর মায়ের বারন শুরু হল। শুরুতে কয়েকবার বাড়িতে পার্টি করেছিলাম, পার্টি মানে বন্ধু বান্ধবী মিলে একজায়গায় বসে মদ গেলা একটু কোমর জড়িয়ে নাচানাচি করা। সেই গুলো তোর মায়ের ভালো লাগতো না। কিন্তু ফ্যাশানের দুনিয়ায় এটাই চলন, তুমি মদ খেয়ে মেয়েদের সাথে নাচো। কখনও কোন প্রডিউসারকে মেয়ে দাও রাতের জন্য, কখনও ফটোশুট করতে করতে কোন এক মডেলের সাথে একটু আন্তরিকতা বেড়ে যায়। সেইগুলো তোর মা বুঝতো না। ওকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে এইসব এই ফ্যাশান দুনিয়ার একটা অঙ্গ। তীব্র আলোর পেছনের অন্ধকারে অনেক কিছুই অন্ধকার। দিনে দিনে তোর মা কেমন যেন কুঁকড়ে গেল। দুইজনে একসাথে এক বিছানায় শুয়েও মনে হত এক অজানা অচেনা কারুর সাথে শুয়ে আছি। তারপরে আমিও আমার দেহের চাহিদা মেটাতে এদিকে ওদিকে এই মডেলের সাথে ওই মডেলের সাথে সেক্স করতে শুরু করে দিলাম। এইভাবেই ধীরে ধীরে তোর মায়ের সাথে আমার যে বন্ধনটা ছিল সেটা ভাঙতে শুরু করে দিল। তারপরে একদিন তোর মা আমাকে আর তিতলি নামে এক কচি মডেল কে একসাথে আমাদের বাড়িতে দেখে ফেলল। সেটাই শেষ।"

এত কথা শুনতে শুনতে আদির চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, এতে মায়ের দোষ কল্পনাতীত কম, আর বাবার দোষ সেরকমই বেশি। আদি রাগ সামলানোর জন্য চুপ করে থাকলো।

সুভাষ বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকার পরে বললো, "তোর মায়ের মেন্টালিটি এখন ওই অন্ডালে পড়ে আছে বুঝলি। ওর সাথে ঘর করা চলে না, ওর সাথে বনবাস করা চলে। শুরুতে বলেছিলাম যে বাড়িতে পার্টি টার্টি হলে একটু ছোট খাট পোশাক পরো। বাইরের লোকের সামনে নাই পরলে, কিন্তু বাড়িতে পড়তে অসুবিধে কোথায়, তাতে আমার একটু সুবিধে হতে পারত। বুঝতেই পারছিস, হয়ত কয়েকটা এসাইনমেন্ট চলে আসত কিন্তু একদম না। ঋতুপর্ণা একেবারে ধোয়া তুলসি পাতা, শালোয়ার কামিজ পরবে...."

এতসব শোনার পরে আদির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। রেগে যায় সুভাষের কথা শুনে, "তুমি কেমন হাজবেন্ড যে নিজের বউকে অন্যের সামনে নেকেড হতে বলছ? মাকে ধোঁকা দিয়েছো, আর তারপরে বলছো যে মায়ের সাথে বনবাস করা চলে? এইবারে বুঝেছি কেন মা তোমাকে দুই চোখে দেখতে পারে না। তা সেদিন এক্সিডেন্টের সময়ে টাকা দিয়ে হেল্প করতে এলে কেন? কি ভেবে এসেছিলে, হয়ত এই হেল্প পেয়ে মা তোমার কাছে আবার ফিরে যাবে? জানো মা যখন জানতে পারে যে তুমি টাকা দিয়েছ, সেই থেকে মা ভীষণ ভাবে রেগে।"

সুভাষ অনেকক্ষণ চুপ করে থাকে, "রাগুক, আমি আসলে এসেছিলাম...."

আদি বাঁকা হেসে উত্তর দেয়, "জানি কেন এসেছিলে। তখন আয়েশার সাথে তোমার ঝগড়াঝাটি চলছিল তাই ভেবেছিলে যে টাকা দিয়ে যদি মায়ের মন পাওয়া যায়। কি আমি সত্যি না মিথ্যে বলছি।"

সুভাষ চাপা গলায় উত্তর দেয়, "হুম।"

আদি গম্ভীর কণ্ঠে সুভাষকে বলে, "দ্বিতীয় বার ফোন করার চেষ্টা করো না আর, বুঝলে। তোমাকে যতটা ভালো ভেবেছিলাম ততটা কিন্তু তুমি নও।"

সুভাষ উত্তর দেয়, "জানি। আর...."

আদি বলে, "তোমার পাঁচ লাখ টাকা আমি ফেরত দিয়ে দেব।"

সুভাষ গম্ভীর কণ্ঠে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, "হ্যাঁ হ্যাঁ, মুরোদ থাকলে দিয়ে দিস। সত্যি বলতে কি জানিস, এই পৃথিবীতে কারুর ভালো করতে নেই। আমি ভাবলাম.... না থাক। আমিও দেখে নেব, ওই গাড়ির ই.এম.আই দিয়ে, নাচের ক্লাস করিয়ে ঋতুপর্ণা কতদিন কাটায়। আর সত্যি কথা বলতে আমার ও আর তোদের টাকা দেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।"

আদি বাঁকা হেসে জিজ্ঞেস করে, "কেন কেন, আয়েশা মনে হচ্ছে আবার তোমার কাছে ফিরে এসেছে। নয়তো তুমি আবার নতুন কোন কচি মডেলের পাল্লায় পড়েছো যে তোমার টাকা দুই হাতে উড়াচ্ছে!"

সুভাষ এইবারে রেগে যায়, "আমি কি করছি না করছি সেটা তোকে দেখতে হবে না। তুই থাক তোর মাকে নিয়ে।"

আদিও রেগে বলে, "হ্যাঁ হ্যাঁ, এরপরে আর আমার মা ছেলের সংসারে আসতে যেও না।"

সুভাষ চেঁচিয়ে উত্তর দেয়, "আসবো না। দেখি তোরা কেমন থাকিস।"

আদি বলে, "হ্যাঁ দেখিয়ে দেব। আর একটা সেমেস্টার তারপরে ক্যাম্পাসিং হয়ে যাবে আর তোমার টাকার দরকার পড়বে না বুঝলে। নাও এখন ফোন রাখো।" বলে ফোন রেখে দেয়।

বাবার প্রতি এতদিন যে সুহৃদ ভাবটা মনের মধ্যে ছিল সেটা এক নিমেষে উবে যায়। সেই সাথেও নিজেকে বড় খেলো মনে হয়, মায়ের সাথে বন্ধু হতে গিয়ে মায়ের শরীর টাকেই শুধু ভেবেছে। মা হয়ত ওর কাছে বান্ধবীর মতন এগিয়েছিল কিন্তু আদিই বারেবারে মাকে জড়িয়ে কামোত্তেজিত হয়ে গেছে। নিজেকে নিজেই বারেবারে ধিক্কার দিল। মাথা নিচু করে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকল ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে। বেশ কয়েকদিন ধরেই মায়ের সাথে এক শীতল মানসিক দ্বন্দ চলছে এইবারে সেটা কাটিয়ে উঠতেই হবে, না হলে এক ছাদের তলায় ঠিক ভাবে থাকা যাচ্ছে না। পরের দিন থেকে পুজোর ছুটি শুরু, কিন্তু এখন পর্যন্ত কি ভাবে এই পুজোর ছুটি কাটাবে সেটাই অনিশ্চিত।

ঠিক এই কথাটাই ঋতুপর্ণা চুপচাপ লাইব্রেরিতে বসে ভাবছিল আর মোবাইলটা নিয়ে এদিকে ওদিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিল। মোবাইল স্ক্রিনে অনেকদিন আগের ঘুরতে যাওয়ার একটা ছবি লাগানো। তখন আদি বেশ ছোট ছিল। অবশ্য ওর মোবাইলের গ্যালারিতে আদির বেশ কয়েকটা ছবি আছে কিন্তু ওদের একসাথের নেই। ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে গ্যালারি খুলে এক এক করে আদির ছবি গুলো দেখে আর হাসে। সত্যি মানুষের মন বোঝা বড় কষ্টকর, কখন কোন দিকে ধেয়ে যাবে কার পানে তাকিয়ে থাকবে কার সাথে হটাত করে সান্নিধ্য ঘটে যাবে বলা দায়। সুভাষের সাথে, প্রদীপের সাথে ওর অভিজ্ঞতা বড় তিক্ত, সেই সাথে সোসাইটির লোক জন অথবা এতদিন যত পুরুষ ওর কাছে এসেছে সবার চোখে শুধু মাত্র যৌন ক্ষুধাই দেখতে পেয়েছে। আদির মধ্যেও একপ্রকার ভীষণ আকাঙ্খার দেখা দিয়েছে সেটাও ঋতুপর্ণা বোঝে কিন্তু সেই সাথে এটাও জানে যে আদি ওর ছেলে আর উঠতি বয়সে নারীর সান্নিধ্যে এই রকম একটু আধটু হয়েই থাকে। ঋতুপর্ণা কতবার চেষ্টা করেছে ছেলে যাতে অন্য মেয়ের সাথে মেলামেশা করে কিন্তু ছেলে ইদানিং কোন মেয়ের দিকেই ঠিক ভাবে দেখে না যদিও দেখে তাও আবার নিজের থেকে বড় এই যেমন তিস্তার সাথে ইদানিং বেশ ভাব হয়েছে। এর আসল কারন ওর জানতে হবে বিশেষ করে সেইদিন ওর ঘরে ঢুকে যখন দেখলো যে আদি পড়ার বইয়ের মধ্যে ওর যুবতী বয়সের একটা ফটোর দিকে দেখছিল সেই দেখে ঋতুপর্ণার মন বড় চঞ্চল হয়ে উঠেছিল।

ওয়ার্ক শপ থেকে গাড়ি বেশ কয়েকদিন আগেই নিয়ে আসা হয়েছে, কিন্তু আদি কিছুতেই ওকে গাড়ি একা চালাতে দেয় না, তাই বাড়ি ফেরার সময়ে ওকে ট্যাক্সি নিতে হয়। স্কুলে বিকেলের দিকে যদি নাচের পিরিয়ড না থাকে তাহলে ঋতুপর্ণা কমন রুমে বসে অন্যদের সাথে গল্প করে কাটায়। এই এক্সিডেন্টের পরে অনেকেই ওর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে তাই বেশ খুশি। সেই সাথে অন্য মহিলাদের সাথে গল্প করলে অনেককিছু জানা যায়, কারুর পরকীয়া প্রেমের গল্প একজনের নতুন বিয়ে হয়েছে তার বরের গল্প, কোন টিচার নতুন প্রেম করছে তার গল্প ইত্যাদি। ঋতুপর্ণা চুপচাপ সবার কথা শোনে, নিজের সেই রকম কিছুই বলার থাকে না। এটা সবাই জানে তাই বিশেষ কেউ ওকে জোর করে না ওদের এই আড্ডায় অংশ নেওয়ার জন্য। মাঝে মাঝে শীলার গল্প শুনে একটু উত্তেজিত হয়ে ওঠে, কখন সুস্মিতার গল্প শুনে বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে যায়।

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে, নাচের ক্লাস করিয়ে চুপচাপ বসার ঘরে বসেছিল ঋতুপর্ণা। সারাদিনে নিজেও আদিকে ফোন করেনি আর আদিও মাকে ফোন করেনি। মনটা বড় চঞ্চল হয়ে ওঠে, কেন এত শীতলতা। মিশতে গিয়েও কেন এত জড়তা, কি ভাবে এই জড়তা কাটিয়ে সুন্দর ভাবে মেশা যায় সেই চিন্তায় ডুবে যায়। আদি বাড়িতে ফিরলে ওর স্কুলের গল্প করবে, অন্য টিচারদের সাথে কি কি কথা হল সেই গল্প করবে, তিস্তাকে নিয়ে একটু ছেলেকে খেপাবে। তিস্তার নাম করলেই ছেলে লজ্জায় একটু লাল হয়ে যায়, সেই লাজুক ভাব উপভোগ করবে। মন বড় উৎফুল্ল আর চঞ্চল হয়ে ওঠে ঋতুপর্ণার। ছেলের দেরি দেখে বারে বারে ঘড়ির দিকে তাকায় আর মোবাইলের দিকে। এত দেরি হওয়ার কথা নয়, দেরি হলে আগে অবশ্য ফোন করে জানিয়ে দিত কিন্তু বিগত কয়েকদিনে ঠিক সময়েই ঘরে ফিরেছে তাই ফোন করার দরকার হয়নি। দুপুরে মাঝে মধ্যে ফোনে কথাবার্তা হয়েছিল কিন্তু সেটা মায়ের প্রশ্ন আর ছেলের উত্তর পর্যন্ত সীমিত ছিল, এর বেশি ঋতুপর্ণাও কিছু বলেনি আদিও সেই গন্ডি উলঙ্ঘন করেনি।

দুপুরে সুভাষের সাথে কথা বলার পরে আদির মন বিষিয়ে ওঠে। সেই বিষাক্ত মনোভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য কলেজের পরে সঞ্জীবের সাথে মিলে কয়েক পেগ মদ গেলে। মনে মনে বাবাকে প্রচুর গালমন্দ করে আদি বেশ রাতের দিকে বাড়িতে ফেরে। আদি আগেও বেশ কয়েকবার বন্ধুদের সাথে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরেছে, তবে সেই সময়ে আনন্দ ফুর্তিতে গিলেছে এবং প্রত্যেক বার মাকে জানিয়েই করেছে। মা মৃদু বকুনি দেওয়া ছাড়া বিশেষ কিছুই বলেনি। শুধু বলতো, "এখন উঠতি বয়স, এই সব মদ খাওয়া গাজা টানা একটু আধটু হয়েই থাকে, তবে এই সব যেন পরবর্তী কালে বদ অভ্যেসে না দাঁড়ায়।"

আদিও সুবোধ বালকের মতন মাথা দুলিয়ে মাকে শান্ত করে জানিয়ে দিত শুধু মাত্র এইবার ব্যাস এরপরে আর নয়। কিন্তু সেদিন আদির মানসিক অবস্থা সেইরকম ছিল না, মাকে ফোনে আর জানানো হয়নি।







(#০৫)

কলিং বেল শুনেই ঋতুপর্ণার চিত্ত বড়ই আনচান করে ওঠে। ছেলে এসেছে, এতক্ষণ ধরে অপেক্ষার অবসান হবে। একটু অভিমান করে মৃদু বকুনি দেবে, একটু খুনসুটি করবে ছেলের সাথে। এই ভেবে দৌড়ে দরজা খুলে দিল।

দরজা খুলতেই সামনে ছেলের লাল ঢুলুঢুলু চোখ আর শরীর থেকে বোটকা মদের গন্ধ পেয়েই অগ্নিশর্মা হয়ে গেল। আগেও যতবার আদি মদ খেয়ে এসেছে তার আগে ওকে বলে দিত। ঋতুপর্ণা বাধা দেয়নি তাতে কিন্তু এই না জানিয়ে মদ খেয়ে দেরি করে বাড়ি ফিরেছে দেখেই ঋতুপর্ণার মাথায় রক্ত চড়ে গেল। ঋতুপর্ণা খোলা মনেই মিশতে চেয়েছিল আদির সাথে, কিন্তু তাই বলে ওকে না জানিয়ে করবে এটা ঠিক সহ্য করতে পারলো না। নিজেকে প্রতারিত বলে মনে হল। এতক্ষন একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখেছিল ঋতুপর্ণা, ভেবেছিল আদির সাথে মন প্রান ঢেলেই মিশবে, সেটা কাঁচের ঝাড়বাতির মতন ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল ওর জল ভরা চোখের সামনে।

প্রচন্ড আঘাত পেয়ে ছেলের গালে সপাটে একটা চড় কষিয়ে বলে, "তুই আবার মদ খেয়েছিস!?"

আদি ভেবেছিল হয়তো মা রাগারাগি করবে কিন্তু একেবারে দরজা খুলেই যে মা ওর গালে একটা চড় কষিয়ে দেবে সেটা ভাবতে পারেনি। মায়ের নরম আঙ্গুল হলে কি হবে, চড়টা বেশ জোরেই ছিল সেই সাথে আদির বুকে গিয়ে সেই চড় ধাক্কা খায়। মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে মায়ের দুচোখ জলে ভর্তি।

ছলছল চোখে আদির দিকে তাকিয়ে ভীষণ বেদনায় ফুঁসে ওঠে ঋতুপর্ণা, "এখন বড় হয়ে গেছিস তাই না? এখন নিজের মতন চলবি, কিন্তু এইসবে কি আমি কোনোদিন বাধা দিয়েছি যে আমাকে...."

আদি মায়ের দিকে হাত বাড়াতেই ঋতুপর্ণা ফুঁসে ওঠে, "একদম আমাকে ছুবি না। তোর বাবাও একটা মাতাল ছিল আর তুইও সেই এক। এরপরে আর কি কি করবি? চোখ দুটো বন্ধ হলে বাঁচি।"

কথাগুলো বলতে বলতে ঋতুপর্ণার বুক ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ভেবেছিল যে ছেলেকে বুকে ধরেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেবে, অন্তত এই কয়দিনে ওদের মাঝে যে ঠাণ্ডা দেয়াল গড়ে উঠেছে সেটা ভেঙ্গে দেবে। কিন্তু ওর ছেলে শেষ ওকে না জানিয়ে মদ খেয়ে ঘরে ঢুকবে সেটা ওর কাছে অপ্রত্যাশিত। বুক ভাঙা স্বরে বলতে থাকে, "যা দুর হয়ে যা, যেখানে পারিস চলে যা না হলে আমিই চলে যাচ্ছি। এখন তো তোর সাথে তোর বাবার বেশ মেলামেশ হয়েছে যা না মুম্বাই চলে যা।"

বলেই ত্রস্ত পায়ে নিজের ঘরে ঢুকে বিছানায় লুটিয়ে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে।

আদি হতভম্বের মতন দাঁড়িয়ে থাকে, কি করে বলে যে বাবার সাথে মনোমালিন্য হয়েছে বলেই সেই ক্ষোভে এই মদ খেয়েছে। আদির গালের জ্বালা এক নিমেশে উধাও হয়ে বুকের চিনচিন ব্যাথাটা চিড়বিড় করে ওঠে। মায়ের দৌড়ে চলে যাওয়ার দিকে চোয়াল চেপে, জল ভরা শুন্য চাহনি নিয়ে তাকিয়ে থাকে। বুকের পাঁজর পাপবোধে এক এক করে ভেঙ্গে যায়। মা নিজের রুমে ঢুকে যাওয়ার পরে আদি ধীরে ধীরে মায়ের রুমের দরজায় এসে দাঁড়ায়। নরম বিছানার ওপরে মায়ের নধর দেহ কান্নার রোলে ফুলে ফুলে উঠছে, যেন সারা দেহে ভুমিকম্প দেখা দিয়েছে। সেই ভীষণ ভুমিকম্প আদির বুকের আঙ্গিনায় এসে আছাড় খায়। এইভাবে মাকে কাঁদতে দেখে আদি নিজেকে কিছুতেই সামলাতে সক্ষম হয় না, কিন্তু মায়ের এই অবস্থায় কাছে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে, মা আরো বেশি রেগে যাবে হয়ত ক্ষোভের বশে কিছু উলটো পাল্টা না করে বসে।

সেই ভয়ে বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ মায়ের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে নিচু গলায় বলে, "সরি মা, আর হবে না।"

ছেলের "সরি" আওয়াজ কানের মধ্যে হাহাকার রবে প্রতিধ্বনি হয়। বিছানার চাদর বুকের কাছে চেপে ধরে মুখ গুঁজে গুমরে ওঠে ঋতুপর্ণা। মানুষের রাগের সময়ে পুরানো ভুলের কথা, পুরানো ঘটনা বেশি করে মনে পরে। কোনরকমে ঘাড় উচু করে একবার দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে। আদি তখন মাথা নিচু করে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে। আদিকে দেখেই ওর বুক ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়। আদি কিছুক্ষণ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে নিজের রুমে চলে যায়। সেই চলে যাওয়া দেখে ঋতুপর্ণা ডুকরে কেঁদে ওঠে। বুকের গভীর থেকে চেঁচিয়ে ওঠে, যা যা না তোর ওই মাতাল লম্পট বাবার কাছেই যা। কিন্তু এই শব্দ গুলো মুখে আনেনি ঋতুপর্ণা।

বিগত দিনের সকল কাহিনী সকল ভুল গুলো এক এক করে ঋতুপর্ণার ঝাপসা চাহনির সামনে ঘুরে বেড়ায়। কি দেখে সুভাষকে ভালবেসেছিল জানে না। হয়ত বাবার কড়া শাসনের থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে চেয়েছিল ঋতুপর্ণা, চেয়েছিল এই ছোট শহর থেকে বেড়িয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতন নীল আকাশের নিচে ডানা মেলে উড়ে যাবে। প্রথমে প্রেম বেশ গভীর ছিল সুভাষ আর ঋতুপর্ণার কিন্তু ধীরে ধীরে যত দিন গেল, সুভাষ বেশি কাজ পেল তত সুভাষের চাহিদা বেড়ে গেল। মাঝেই মাঝেই মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে ওকে নিয়ে পড়ে যেত। ছোট পোশাক পড়িয়ে ছবি তুলতো। তবে সুভাষ মদ খেয়ে কোনোদিন ওর গায়ে হাত তোলেনি অথবা ওকে জোর করেনি। সুভাষের সাথে ঘর থেকে বেরিয়ে না আসলে ওর জীবন অন্য খাতে বইতো। সুভাষের সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার পরে পুরুষের প্রতি ঘৃণা জন্মায়নি সেটা নয়। পুরুষ দেখলেই তাদের চাহনি দেখলেই ঋতুপর্ণা বুঝতে পারতো কে ওকে সন্মান দেয় আর কে ওকে নিয়ে বিছানায় যেতে চায়। পারত পক্ষে ঋতুপর্ণা নিজেকে বাঁচিয়ে আদিকে নিয়েই থাকত। কিন্তু মনের চাহিদা, দেহের চাহিদার কাছে একদিন এই তৃষ্ণার্ত হৃদয় হার মেনে যায়। দেখা হয় প্রদীপের সাথে, দ্বিতীয় বার মানুষ চিনতে ভুল করে ঋতুপর্ণা। ভেবেছিল অদুর ভবিষ্যতে আদিকে রাজি করিয়ে নিয়ে প্রদীপের সাথে বিয়ে করবে। বুড়ো বয়সে সবার এক সঙ্গীর দরকার পরে, সেই সঙ্গী খুঁজতেই প্রদীপের সাথে মেলামেশা করেছিল ঋতুপর্ণা। কিন্তু সেখানেও বাধ সাধে ওর নিয়তি। ওর জীবনটা যেন মস্ত বড় ভুলে, প্রতারনায় ঢাকা। চারপাশের সব পুরুষ মেকি, সে নিজের ছেলেই হোক আর স্বামী হোক।

প্রশ্ন করে নিজের কাছে.... কে আমি, কোথায় ছিলাম, কোথায় যাব এই আমি।
মেঘের ফাঁকে একটু চাঁদের ওই রেখা, সে ভুল।
চলে গেলে ডাকবে না তো কেউ পিছু, স্মৃতি আমার থাকবে না তো আর কিছু।
যদি ভাবি এই আমি আর নই একা, সে ভুল।

আদি নিজের রুমে ঢুকে চুপচাপ নিজের জামা কাপড় বদলে নিজের বিছানায় সটান শুয়ে পড়ে। কিছুই আর ভালো লাগছে না। পুজোর আগেই এইসব হতে হতো? কোথায় পুজোতে একটু আনন্দ ফুর্তি করবে তা না, বাবার সাথে ঝগড়া করে মদ খেয়ে মাকে দুঃখ দিল। মাকে কেন দুঃখ দিতে গেল, এতে মায়ের কি দোষ। মুম্বাই যেতে মা হয়তো বাধা দিত না। আদি সোজা মুম্বাই গিয়ে ঝগড়া করে মারামারি করে নিজের ক্ষোভ মিটিয়ে আসতে পারতো। এই ভুল ওকে যেন তেন প্রকারে ঠিক করতেই হবে, না হলে দম বন্ধ হয়ে আসছে ওর, মনে হচ্ছে কেউ ওর বুকের ওপরে চেপে বসে ওর গলা টিপে ধরেছে।

কতখন এইভাবে চোখ বুজে বিছানায় পরে ছিল আদির খেয়াল নেই। ওর এই ঘোর ভাঙ্গে মায়ের ডাকে, "আয় খেয়ে নিবি।"

মায়ের গলা যেন শত ক্রোশ দুর থেকে ভেসে আসে!

খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না। মায়ের কথা অমান্য করবে সেই শক্তিও ছিল না, কিন্তু মায়ের সামনে দাঁড়ানোর শক্তি টুকুও ওর শরীরের বেঁচে নেই। কুণ্ঠা বোধে নিজেকে ধিক্কার দিয়ে বিছানায় উঠে বসে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে। ঋতুপর্ণা ওর দিকে গম্ভির ভাবে রোষকষায়িত চোখে তাকিয়ে।

দ্বিতীয় বার মায়ের গম্ভীর গলা শোনা যায়, "উঠে এসে খেয়ে আমাকে উদ্ধার করে যা। সেই তো দুপুরে খেয়েছিস, নাকি তাও খাসনি? এইভাবে না খেয়ে থাকলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে।"

ঋতুপর্ণা আদিকে ডাক দিয়ে খাবার ঘরে চলে যায় খাবার বাড়ার জন্য। এই মন নিয়ে টানা টানিতে কখন যে রাত একটা বেজে গেছে সেটা কারুর খেয়াল নেই।

মায়ের এই গম্ভীর কণ্ঠ যেন স্নেহ জড়ানো, বুকের বাধ ভেঙ্গে গেল আদির। চোখ জোড়া জ্বালা দিয়ে আদ্র হয়ে উঠল আবার। আদি মাথা নিচু করে বিছানা থেকে উঠে খাবার টেবিলে এসে চুপচাপ বসে পড়ে। মায়ের দিকে তাকানোর মতন শক্তি ওর নেই। ঋতুপর্ণা ওর সামনে ভাতের থালা নামিয়ে সামনের চেয়ারে চুপচাপ বসে পড়ে। ওর খিদে ছেলের অবস্থা দেখে অনেক আগেই চলে গেছে। খাবার ইচ্ছে আদিরও নেই কিন্তু মাকে আর বেশি ঘাঁটানোর সাহস আর নেই তাই ভাত খুঁটে কয়েক গ্রাস মুখে তুলে নেয়। আদির খাবার ইচ্ছে আর নেই, এই কুড়ি একুশ বছরে ভাবে চুপচাপ কোনোদিন খায়নি। ছোট বেলায় মা ওকে খাইয়ে দিত না হলে খেতে বসে দুইজনে সারাদিনের গল্প করতো।

ঋতুপর্ণা চুপচাপ টেবিল ছেড়ে উঠে নিজের রুমে ঢুকে পড়ে। জীবনটা সম্পূর্ণ বৃথা, কি হবে এই চার দেয়ালের মধ্যে থেকে। এই বাড়ি ঘর ছেড়ে, ছেলেকে ছেড়ে কোথাও চলে যাবে। কাশী বৃন্দাবন হরিদ্বার হৃষীকেশ এমন সব জায়গায় কত মঠ আশ্রম আছে, না হলে কোন মিশনারি জয়েন করে নেবে, সেটাই ভালো। প্রচন্ড ক্ষোভে একটা ব্যাগ নামিয়ে নিজের কাপড় জামা ভরতে শুরু করে দেয়। সারা শরীর ওর জ্বলছে, ভীষণ তাপে ওর ত্বক ওর বুক পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। ছেলেটাও শেষ পর্যন্ত ওর বাবার মতন হয়ে গেল? একে নিয়েই বাকি জীবনের স্বপ্ন দেখেছিল সেইদিন।

আদি ভাতের থালা বেসিনে রেখে চুপচাপ নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়। যাওয়ার পথে মায়ের রুমে একবার উঁকি মারতেই চোখ পড়ে ব্যাগের ওপরে। মা আলমারি খুলে জামা কাপড় বের করে ব্যাগে ভরছে। মা ওর কাছ থেকে দূরে চলে যাবে, এই কথা ভাবতেই আদির মাথায় বাজ পড়ে। না এটা কখনই হতে দিতে পারে না আদি, ওর জীবনের সব কিছু ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে তাহলে। আদি ধীরে ধীরে মায়ের রুমে ঢোকে। ঋতুপর্ণা আড় চোখে একবার আদির দিকে তাকিয়ে নিজের কাজে মন দেয়। বুকটা হঠাৎ করে শুন্য হয়ে যায়, যেন ওর কর্ণ কুহর ছেলের বক্তব্য শোনার জন্য আকুল হয়ে ওঠে।

হাতের মধ্যে ভাঁজ করা বেশ কয়েকটা শাড়ি নিয়ে আদির দিকে রোষ কষায়িত চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, "কিছু বলার আছে বাকি আছে না এইভাবে চুপচাপ থাকবি?"

আদি মাথা নিচু করে ধরা গলায় বলে, "তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা মা।"

ঋতুপর্ণা চোয়াল শক্ত করে বুকের মধ্যে জ্বলে ওঠা বহ্নি শিখা দমন করে ছেলের নত চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখে ওর গাল বেয়ে দুই জলের রেখা বয়ে চলেছে। ছেলের মনে তাহলে কুণ্ঠা পাপ বোধ আছে। ছেলের মাতাল হয়ে বাড়ি ফেরার পেছনে অন্য কোন কারন আছে না হলে এইভাবে চুপচাপ ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো না।

শাড়ি গুলো বিছানায় ফেলে দিয়ে ছেলের আনত চেহারার দিকে তাকিয়ে উতসুক হয়ে জিজ্ঞেস করে, "কি হয়েছে রে তোর?"

আদি মায়ের সামনে হেট হয়ে দাঁড়িয়ে বলে, "প্লিজ তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না, তাহলে আমি বাঁচব না।"

ঋতুপর্ণা এগিয়ে আসে ছেলের দিকে। আদির চিবুকে আঙ্গুল ঠেকিয়ে নিজের দিকে তুলে জিজ্ঞেস করে, "সত্যি বল, তোর কিছু একটা হয়েছে না হলে...."

আদি মায়ের হাত দুটো চেপে ধরে বলে, "আগে বল তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না তাহলে বলবো, সব কথা বলবো।"

অভিমানিনী ঋতুপর্ণা মুখ গোমড়া করে উত্তর দেয়, "না ছাড়, আমি সব ছেড়ে ছুড়ে চলে যাবো। এখন আর আমার কি দরকার। তোর বাবা তোকে টাকা দেয়, এরপরে তুই চাকরি পেয়ে যাবি তারপরে আমার আর দরকার কিসের।"

আদির বুক গুমড়ে ওঠে চাপা আঁতকে বলে, "না মা, তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না।"

ছেলের কান্না ভেজা গলা শুনে ঋতুপর্ণার বুক ভিজে যায়, "আচ্ছা শুনি কি হয়েছে।"

আদি ধরা গলায় এক এক করে সুভাষের সাথে কি কি কথা হয়েছিল সেই গুলো মায়ের কাছে বলে, "মা গো আমি সহ্য করতে পারিনি যে বাবা তোমার সাথে এই সব করেছিল। বাবার প্রতি এত ঘৃণা জন্মে গিয়েছিল যে আমি সেই বিষ কাটাতে মদ খেয়েছি। প্লিস...."

সব শুনে ঋতুপর্ণা কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে ছেলের সামনে। ছেলে তাহলে ওকে ভালোবাসে, ওকে ছেড়ে যায়নি। এই কথাটা বুঝতে পেরে স্বস্তির শ্বাস নেয় ঋতুপর্ণা। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে আদির দিকে তাকিয়ে বলে, "আচ্ছা তুই আমাকে এত ভালবাসিস!"

মায়ের ঠোঁটে মিষ্টি হাসি দেখে আদি স্বস্তির শ্বাস নিয়ে চোখ মুছে মাকে বলে, "হ্যাঁ মা ভীষণ।" এই বলে মায়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।

ঋতুপর্ণার হৃদয় ঠিক এই শব্দ শোনার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিল যেন। ছেলের হাতে হাত রেখে কাছে এসে দাঁড়ায়।

মায়ের ঠোঁটে মিষ্টি এক চিলতে হাসি দেখে আদি সব কিছু ভুলে যায়। ওর স্বপ্নের নারী ওর সামনে, ওর ভালোবাসা ওর প্রেম ওর মা ওর সামনে দাঁড়িয়ে। মায়ের জন্য সারা পৃথিবীর সাথে লড়াই করতে রাজি। আদি, ঋতুপর্ণার হাত ধরে কাছে টেনে ধরল। ছেলে হঠাৎ করে টান দিতেই ঋতুপর্ণা টাল সামলাতে না পেরে ছেলের প্রশস্ত বুকের ওপরে এসে পড়ে গেল। ওর উন্নত কোমল স্তন জোড়া আলতো করে ছুঁয়ে গেল আদির বুকের সাথে। আদি ধীরে ধীরে নিজের মাথা নামিয়ে আনলো মায়ের মুখের কাছে। আয়ত চোখে অজানা আশঙ্কা নিয়ে তাকিয়ে রইলো ছেলের চোখের দিকে ঋতুপর্ণা। আদি ঠোঁট মেলে মায়ের দিকে এগোতেই ঋতুপর্ণা কেঁপে উঠল, ছেলে কি করতে চায়। বড্ড বদ, প্রথমে মদ খেয়ে এসে বুক ভাঙবে তারপরে আবার আদর করে মানিয়ে নেবে।

ঋতুপর্ণা ছেলের বুকের ওপরে হাতের পাতা মেলে একটু দূরে ঠেলে কৌতুক করে বলে, "যা দুষ্টু। রাগাবি তারপরে আবার ভালোবাসা দেখাবি। একদম কাছে আসবি না, যা দুর হ।"

বুকের ওপরে পাতা মেলে দূরে সরাতে চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না।







(#০৬)

আদির হাত ততক্ষণে মায়ের কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে এনেছে, মায়ের কোমল শরীর নিজের সাথে আলতো করে চেপে ধরেছে। ছেলের ঘন উষ্ণ শ্বাস ঋতুপর্ণার উষ্ণ লাজুক চেহারার ওপরে মত্ত বসন্তের হাওয়ার মতন নেচে বেড়ায়। ছেলের তপ্ত শ্বাসে ঋতুপর্ণার বুকের গভীরে হিল্লোল দেখা দেয়। নরম আঙ্গুল, শক্ত নখ, পেশীবহুল ছেলের ছাতি আঁকড়ে ধরে। সারা শরীর এক অদ্ভুত ছন্দে কেঁপে ওঠে। আদি মায়ের নরম গালের কাছে মাথা নামিয়ে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই ঋতুপর্ণার দুই হাতের নখ চেপে বসে ছেলের বুকের ওপরে। মায়ের নরম মসৃণ গালে তপ্ত ভিজে ঠোঁট ছুঁইয়ে আদির মনে হয় যেন মাখনের প্রলেপের ওপরে ঠোঁট লাগিয়েছে। ঋতুপর্ণা গাল গরম হয়ে যায়, আদির ভিজে ঠোঁটের পরশে ভিজে ওঠে ওর গাল। আদি আবার একটা ছোট চুমু খায় মায়ের গালে। হাতের বেড়ি মায়ের কোমরে শক্ত হয়ে নিজের কাছে টেনে ধরে।

আদি মায়ের গালে আলতো চুমু খেয়ে চাপা গভীর গলায় বলে, "মা তুমি বড় মিষ্টি। তোমাকে প্রাণ ভরে ভালবাসতে ইচ্ছে করে, মা।"

ঋতুপর্ণা ছেলের বুকের ওপরে থেকে হাত সরিয়ে কর্কশ গালে হাত রেখে বলে, "আমি তো সেই আশায় বসে ছিলাম রে কিন্তু তুই আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিলি যে।"

আদি মায়ের নাকের ওপরে ছোট একটা চুমু খেয়ে বলে, "কোথায় আর স্বপ্ন চুরমার হল বল। আমি তো ইচ্ছে করে খাইনি মা, বুকের মধ্যে এত জ্বালা করছিল যে তখন মনে হচ্ছিল হাতের কাছে মিস্টার সুভাষকে পেলে খুন করে দেব।"

ঋতুপর্ণা ছলছল প্রেমাসক্ত চোখে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, "না রে খুন টুন করতে হবে না। তুই শুধু আমার কাছে থাকিস তাহলেই হবে রে।"

ছেলের শিক্ত ঠোঁটের ছোঁয়ায় সারা শরীর জুড়ে প্রচন্ড তাপের সৃষ্টি হয়, বুকের রক্ত উত্তাল ঝড়ের মতন আন্দোলিত হতে শুরু করে দেয়। বুক জুড়ে অসম্ভব এক জ্বালা দেখা দেয়। ছেলের না কামানো গালে হাত ঘষে ধীরে ধীরে মাথায় উঠিয়ে দেয়।

অবিন্যাস্ত চুলের ঝুটি ধরে, মিহি কণ্ঠে বলে, "এইবারে আর দুষ্টুমি নয়, অনেক বেশি চুমু খেয়ে ফেলিস।"

কথাগুলো গলা থেকে কোনরকমে বেরিয়ে এলো কিন্তু ওর হাতের মুঠো ছেলের চুলে কিছুতেই শিথিল হওয়ার লক্ষন দেখায় না।

আদির মধ্যে মা'কে প্রচন্ড ভাবে কাছে পাওয়ার ইচ্ছেটা চাগিয়ে ওঠে। মায়ের পিঠের ওপরে হাত রেখে নিজের সাথে চেপে ধরে ফিসফিস করে বলে, "কোথায় দুষ্টুমি করলাম মা। বান্ধবী হয়েও যে এতদিন চুপ ছিলে, তাই একটু বুক ভরে দেখতে ইচ্ছে করছে তোমাকে।"

উফফফ ছেলে বলে কি, কিন্তু এইভাবে কি কেউ নিজের বান্ধবীকে দৃঢ় আলিঙ্গনে বেঁধে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দেয়। এত ভীষণ ভালোবাসার ঝড় উঠেছে দুই শুন্য বুকের মাঝে। ছেলে যে ভাবে মাকে চেপে ধরেছে তাতে ঋতুপর্ণা অনায়াসে ছেলের খালি বুকের নিচে লুকিয়ে থাকা হৃদয়ের ধুকপুকানি নিজের স্তনের ওপরে অনুভব করতে পারছে। ছেলের অদম্য চঞ্চল ধুকুপুকানি ওর বুকের রক্তে নাচন লাগিয়ে দেয়। ঋতুপর্ণা তৃষ্ণার বশে, আদির চুল টেনে নিজের দিকে মাথা নামিয়ে ওর কপালে, গালে সিক্ত চুমুতে ভরিয়ে দেয়। খোঁচা খোঁচা দাড়ি নিজের কোমল গালে একটু কুটকুট করে, কিন্তু এই জ্বালা ধরা বেশ মনে ধরে ঋতুপর্ণার। এই ভীষণ ভাবে জড়িয়ে ধরা, কর্কশ গালের সাথে কোমল গাল মিশিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওকে পাগল করে তোলে। মায়ের নরম গালে গাল ঘষে লালচে গাল আরো লাল করে দেয় আদি। ধীরে ধীরে আদির গাল ঘষা বেড়ে ওঠে সেই সাথে মায়ের পিঠের ওপরে ওর ডান হাত ইতস্তত ঘুরে বেড়ায়। ছেলের সাথে বান্ধবীর মতন মিশবে বলে বিকেলে ঋতুপর্ণা একটা নুডুল স্ট্রাপ টপ পড়েছিল আর নিচে একটা হাল্কা প্লাজো পড়েছিল। বন্ধুর মতন মিশতে হলে একটু বন্ধুর পছন্দের কাপড় পড়তে হয় তাই এই পোশাক।

গালে গাল ঘষতে ঘষতে আদি চাপা কণ্ঠে ডেকে ওঠে, "মা গো...."

ঋতুপর্ণার স্বর খাদে নেমে যায়, "বল না সোনা, মনের ভেতরে যা আছে খুলে বল।"

আদির শরীরের রক্ত তলপেটে জড় হয়ে নিচের দিকে নেমে গেছে। মায়ের নরম কমনীয় দেহের ছোঁয়ায় আর ভীষণ আদরে ওর হাফ প্যান্টের নিচে শুয়ে থাকা পুরুষাঙ্গ ধীরে ধীরে গর্জন করতে শুরু করে দেয়। আদি নিজের উরুসন্ধি চেপে ধরে মায়ের নরম তলপেটের সাথে। ঋতুপর্ণার তলপেটে একটা কঠিন বজ্রের মতন তপ্ত ছোঁয়ায় ওর শরীর কাঠ হয়ে যায়। থরথর করে কেঁপে ওঠে ওর তলপেট, ওর দুই মোটা পুরুষ্টু ঊরু জোড়া। পায়ের মাঝে ঘামতে শুরু করে দেয়। কুলকুল ধারা ওর চাপা প্যান্টি ভিজিয়ে দেয়।

আদি মায়ের কানের দুল সমতে বাম কানের লতি মুখের মধ্যে পুরে ফেলে। ঋতুপর্ণা এহেন কামাসিক্ত আচরনের জন্য একদম প্রস্তুত ছিল না। আহহহ করে ওঠে ঋতুপর্ণা ছেলের এই আচমকা আক্রমনে। ওর শরীর আর ওর বশে নেই। কখন যে নিজেকে সঁপে দিয়ে নিজের কোমল লাস্যময়ী নধর দেহটাকে ছেলের প্রকান্ড পেশীবহুল দেহের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে সেটা খেয়াল নেই। তলপেটে ভীষণ কঠিন পুরুষাঙ্গের চাপ বেশি করে উপভোগ করার জন্য নিজে থেকেই নিজের দেহ উজাড় করে চেপে ধরে তলপেট। আদি কানের লতি চুষতে চুষতে অনুভব করে মায়ের ঘাড়ের অতি ক্ষুদ্র রোমকূপ গুলো একসাথে জেগে উঠে ওর আহবানে সাড়া দিচ্ছে। আদির গাল ঘাড় সব কিছু মায়ের উষ্ণ ঘন শ্বাসে ভেসে যাচ্ছে। ঋতুপর্ণা ছেলের চুল মুঠ করে ধরে নিজের দিকে টেনে ধরে, ছেলের প্রেম ঘন চুম্বনে সাড়া দেয়।

ঋতুপর্ণার কানের লতিতে ছেলের ভিজে জিবের ডগা স্পর্শ করতেই মিহি কামঘন শিতকার ঠিকরে বেড়িয়ে আসে ওর আধা খোলা ঠোঁটের ভেতর থেকে, "এই সোনা.... কি করছিস তুই...."

মায়ের কামঘন সিক্ত গলা শুনে আদির লিঙ্গ দপদপ করে নড়ে ওঠে। মায়ের সাথে ওর পুরুষাঙ্গ চেপে থাকার ফলে, ড্রাম স্টিকের মতন মায়ের নরম মেদযুক্ত তলপেটে তা একটু পরপর বাড়ি মারে। আদি ঋতুপর্ণার কানের লতি ছেড়ে চোয়াল চেপে ঠোঁট নামিয়ে আনে। ঋতুপর্ণার সম্পূর্ণ চেহারা আদির লালাতে ধীরে ধীরে ভিজে যায়। মায়ের ঘাড়ে ঠোঁট চেপে ধরে আদি। ঋতুপর্ণা নিজের উন্মুক্ত ঘাড়ে, কাঁধে আদির ভিজে গরম জিবের ছোঁয়াতে ভীষণ পাগল হয়ে ওঠে। উত্তপ্ত শরীর থেকে ভিজে লালার পরশে যেন ছ্যাঁক ছ্যাঁক করে ধোঁয়া বের হতে শুরু করে দেয়। ঋতুপর্ণার নাকের পাটা ফুলে ওঠে, কামঘন শ্বাসের ফলে স্তন জোড়া হাপরের মতন ওঠানামা করতে শুরু করে দেয়। আদির বাম হাত নেমে যায় মায়ের কোমরের শেষ প্রান্তে, ঠিক প্লাজোর বেল্টে হাত লাগিয়ে চেপে ধরে মাকে। ঋতুপর্ণা ছেলের চুলের মুঠি ধরে ঘাড় থেকে মাথা উঠিয়ে দেয়। কাজল কালো শিক্ত চোখ মেলে ছেলের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সারা চেহারা জুড়ে এক লাজুক মিষ্টি ভাব, শীতল শরতের রোদের উত্তাপ মাখা। জড়াজড়িতে মায়ের নরম উন্নত স্তন জোড়া ওর বুকের সাথে লেপ্টে গেছে। আদির নগ্ন বুকের পেশি অনায়াসে মায়ের ফুলে ওঠা শক্ত স্তনের বোঁটার পরশ অনুভব করতে সক্ষম হয়।

মায়ের কালো চোখের মণির মাঝে নিজের চেহারার প্রতিফলন দেখে আদির গলা বসে যায়। কোনরকমে শক্তি জুটিয়ে মাকে বলে, "তুমি না ভারি সুন্দরী, প্রচন্ড সেক্সি। আমি না...."

ওকে যে সেক্সি বলবে এইটা ভাবেনি ঋতুপর্ণা তাই ছেলের মুখে সেক্সি, তীব্র যৌন আবেদনে মাখামাখি রূপের ব্যাখ্যা শুনে ঋতুপর্ণার হৃদয় গলে যায়। ঠোঁট জোড়া অল্প খুলে ছেলের দিকে আয়ত নয়নে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, "বান্ধবীর সাথে বুঝি এই রকম চুমু খায়। কই জানতাম না ত রে। তুই কি তোর অন্য বান্ধবীদের সাথে এই রকম ফ্লার্ট করিস নাকি?"

আদি হেসে ফেলে মায়ের কথা শুনে, "ধ্যাত মা, অন্য কোন বান্ধবী তোমার ধারে কাছে আসতে পারে না। তুই অন্যনা, তুমি মা তুমি সব কিছু।"

ঋতুপর্ণা নিচের ঠোঁট দাঁতে কেটে জিজ্ঞেস করে, "তা এই বান্ধবীর মধ্যে এমন কি দেখলি যে পাগল হয়ে গেলি।"

আদি মায়ের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে নিচু গলায় বলে, "অনেক কিছু আছে যেটা কখনই অন্য কেউ দিতে পারে না। তুমি যেমন সুন্দরী তেমন আর কেউ নেই।"

ঋতুপর্ণা ছেলের গলা কোমল পেলব বাহুর বেড় দিয়ে জড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, "একটু বলে দিলে ভালো হয় না।"

আদি মায়ের নাকের ওপরে, আধা খোলা ঠোঁটের ওপরে হালকা ফুঁ দিয়ে বলে, "এই তোমার কাজল কালো চোখের মধ্যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে।"

উফফ, এযে ভীষণ ভালোবাসা, এত প্রেম কোথায় রাখবে ঋতুপর্ণা। মা আর ছেলে ভুলেই গেছে ওদের মাঝের আসল সম্পর্ক। আদির বুক যেমন হুহু করে মায়ের দেহের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে গেছে ঠিক ততটাই তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠেছে ঋতুপর্ণার সর্বাঙ্গ।

ছেলের এই কথার উত্তরে উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করে, "আর কি দেখেছিস আমার মধ্যে?"

আদি নিচু গভীর গলায় বলে, "তোমার ভেতরে এক অদ্ভুত আকর্ষণ আছে যেটা কিছুতেই উপেক্ষা করা যায় না। যতবার তোমাকে দেখি ততবার আমি পাগল হয়ে যাই মনে হয় তোমাকে জড়িয়ে ধরি, আদরে আদরে তোমাকে পাগল করে দেই। তোমাকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে ভীষণ ভাবে ভালবাসতে ইচ্ছে করে।"

কথা গুলো শুনতে শুনতে আর পায়ের মাঝে ছেলের ভিমকায় লিঙ্গের পেষণ উপভোগ করতে করতে ঋতুপর্ণা মিউমিউ কর ওঠে, "ধ্যাত বড্ড বাড়িয়ে বলছিস।"

আদি উত্তরে বলে, "না গো, এক ফোঁটা বাড়িয়ে বলছি না।"

ঋতুপর্ণার চোখ ছেলের ঠোঁটের দিকে নিবদ্ধ হয়ে যায়। দুই হাতে ছেলের গলা জড়িয়ে মাথার চুল আঁকড়ে ধরে মিহি আদুরে গলায় বলে, "এইভাবে কিন্তু কোন ছেলে তার মাকে জড়িয়ে আদর করে না এমন কি বান্ধবীদের করে না।"

আদি ঘন প্রেমের ভাষায় বলে মায়ের মুখের ওপরে ঝুঁকে বলে, "বলো না মা, তাহলে কাকে করে এইরকম আদর?"

ঋতুপর্ণা যেন আর থাকতে পারছে না, উফফ ওই ভীষণ জ্বলজ্বলে দুই চোখ কি ভাবে ওকে গিলে খেতে চাইছে। কঠিন বাহুপাশ যেন ওর মোমের শরীর গলিয়ে দিতে চাইছে। ঋতুপর্ণা দুই হাতে জড়িয়ে ধরলো ছেলের শরীর, নিজের শরীর অবশ হয়ে লেপ্টে গেল ছেলের বুকের সাথে। চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে ওর। ছেলের প্রশ্নের উত্তর ওর অজানা নয় কিন্তু নিজের মুখে কি করে বলে। একবার দুই বার তিনবার, পরপর মনে হল যেন ওর হৃদস্পন্দন থেমে গেল ছেলের তপ্ত ছাতির সাথে মিশে গিয়ে। ছেলের চোখের দিকে তাকাতে বড্ড লজ্জা করছে, এই লজ্জার ভাব ওর অজানা নয়, তবুও কেমন যেন অচেনা ভাব আছে এই লজ্জায় যেন প্রথম বার কেউ ওকে এইভাবে আঁকড়ে ধরে হাওয়ায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভীষণ উত্তেজনায় ঋতুপর্ণার পায়ের পাতা জোড়া টানটান হয়ে যায় শরীর জুড়ে মৃদু কম্পন আর সেই কম্পন ওর ঠোঁট জোড়ায় দেখা দেয়।

ছেলেকে জড়িয়ে ধরে মিহি লাজুক গলায় বলে, "যা শয়তান, বলব না, কিছুতেই বলবো না এইভাবে কে কাদের কি করে। সর সর...."

মুখে এক কথা, ছেলেকে দুই হাতে আঁকড়ে বুকের সাথে মিশিয়ে দেয়।

আদি দুই সবল হাতে মায়ের পাতলা কোমর জড়িয়ে একটু মাটি থেকে তুলে ধরে। ঋতুপর্ণা নাতিদীর্ঘ মিহি আহহহ করে ওঠে ছেলের এই ভীষণ কামনাযুক্ত প্রেমের আচরনে। ওর দুই পা অবশ হয়ে খুলে যায়। আদির দীর্ঘ কঠিন পুরুষাঙ্গ বরাবর নিজের মেলে ধরা ঊরুসন্ধি চেপে ধরে মিশিয়ে সেই বিশাল পুরুষাঙ্গের উত্তাপে নিজেকে দগ্ধ অধীর হয়ে ওঠে। আদি ঝুঁকে পড়ে ঋতুপর্ণার লাল রসালো চকচকে নরম ঠোঁটের কাছে। ঋতুপর্ণার চোখের মণি ছেলের ঠোঁটের ওপরে নিবদ্ধ হয়ে যায় আর মেলে ধরে নিজের ঠোঁট জোড়া, আহ্বান জানায় ছেলের ঠোঁট। আদি জিব বের করে আলতো করে বুলিয়ে দেয় মায়ের নরম সিক্ত ঠোঁটের ওপরে। কেঁপে ওঠে ঋতুপর্ণার সারা শরীর, ওর কোমল বাহু দিয়ে শরীরের সব শক্তি একত্রিত করে চেপে ধরে ছেলেকে। নিজের তৃষ্ণার্ত শিক্ত ঠোঁটের ওপরে ছেলের জিবের আলতো ছোঁয়ায় বুকের রক্ত ছলাত ছলাত করে ওঠে ঋতুপর্ণার। আদি ধীরে ধীরে ঠোঁট চেপে ধরে মায়ের ঠোঁটের ওপরে। ভীষণ উত্তেজনার বশে ঋতুপর্ণা নখ বসিয়ে দেয় ছেলের পিঠের ওপরে। ছেলের চুম্বনে সারা দিতে ঋতুপর্ণা চোখ বুজে ফেলে। আদি মায়ের নিচের ঠোঁট নিজের ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে আলতো চুষে দেয়। ঋতুপর্ণা নিথর হয়ে যায় ছেলের তীব্র প্রেমঘন চুম্বনে, যেন এই প্রথম ওকে কেউ এইভাবে চুমু খেল। আদির ডান হাতের থাবা নেমে যায় মায়ের কোমরের নিচে, ঠিক নরম পাছার ওপরে চেপে নিজেদের ঊরুসন্ধি মিশিয়ে দেয়। ছেলের গভীর চুম্বনের ফলে ঋতুপর্ণার সারা শরীর গলে তলপেট বেয়ে নিচের দিকে ঝমঝম করে নামতে শুরু করে দেয়। ঋতুপর্ণার জিব আপনা হতেই ছেলের জিবের সাথে নিজের খেয়ালে খেলা করতে শুরু করে দেয়। চারপাশের সময় থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। আদির মনে হয় ওর জিব যেন কোন শিক্ত তপ্ত গুহার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। দাঁত দিয়ে মায়ের নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে আদি, সেই সাথে ঋতুপর্ণা নিজের ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে ছেলের ঠোঁট। আদির মনে হয় যেন ওর পা আর মাটিতে নেই, মায়ের সাথে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে, শরীরের সাথে শরীর মিলিয়ে এক অপার শুন্যে ভেসে চলেছে। ঋতুপর্ণার পায়ের পাতা টানটান হয়ে যায়, ছেলের অধরের তপ্ত ছোঁয়া পেতে ভীষণ আগ্রহী হয়ে ওঠে ওর ঠোঁট। দুই চোখ বোজা তাও যেন মনে হয় চোখের সামনে লাল নীল হলুদ সবুজ রঙ বেরঙ্গের আলোর ফুলকি ছুটছে। মা আর ছেলে গভীর চুম্বনে আবদ্ধ হয়ে নিজেদের মাখামাখি করে ফেলে, যেন দুই শরীর কিন্তু আত্মা একটাই, রক্ত প্রবাহ এক শরীর ছেড়ে অন্য শরীরের ধমনি বেয়ে ছুটে চলেছে। মায়ের ঠোঁটের রস বড় মধুর মনে হল, মাতাল হয়ে গেল আদি মায়ের ঠোঁটের রস খেয়ে, যেন ওর মায়ের ঠোঁট জোড়া মহুয়ার রসে ডোবানো। আদি আলতো করে মায়ের ঠোঁট চিবোতে লাগলো, সেই সাথে ঋতুপর্ণা ছেলের মাথার পেছনে হাত দিয়ে ছেলের চুল আঁকড়ে চুম্বন টাকে আরো ঘন করে নিল নিজের সাথে। কেউই কারুর ঠোঁট ছাড়তে চায় না। নাকের সাথে নাক ঠেকা লেগে শ্বাসের সাথে শ্বাস মিশে একাকার। আদি মায়ের কোমর ছেড়ে পিঠের ওপরে হাত চেপে মায়ের স্তন জোড়া নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে দিল। ঋতুপর্ণার গেঞ্জির পাতলা কাপড় ফুঁড়ে ওর স্তনের বোঁটা জোড়া ছেলের প্রশস্ত বুকের ওপরে আঁকিবুঁকি কেটে দিল। আদির শ্বাসে আগুন, ঋতুপর্ণার শ্বাসেও সমান আগুন, দুইজনেরই চোখ বন্ধ কিন্তু চোখের সামনে অনন্ত ভালোবাসার সাগরে ভেসে যাওয়ার গতি।

অল্পক্ষন না অনেকক্ষণ, সময়ের বেড়জাল কাটিয়ে মা আর ছেলে নিজেদের ঠোঁট ছেড়ে দেয় শ্বাস নেওয়ার জন্য। ঋতুপর্ণার বুক জোড়া প্রবল ভাবে ওঠানামা করছে আর সেই দোলা ভীষণ ভাবে আদির বুকে আছড়ে পড়ছে বারেবারে। ছেলের তীব্র গভীর প্রেমের ঘন চুম্বনের ফলে ঋতুপর্ণার দুই চোখের কোল অজানা কারনে ভরে আসে। একি অসম্ভব কান্ড ঘটিয়ে দিল ঋতুপর্ণা আদির সাথে। এর পরে কি আর পেছনে ফিরে তাকাবার অবকাশ আছে। আদির বাহুর বাঁধন আলগা হতেই ঋতুপর্ণা একটু সরে দাঁড়ায় ছেলের সামনে থেকে। আদির কান, গাল মাথা শরীর সব অঙ্গ থেকে আগুনের ফুলকি ঝরে পড়ছে। ছেলের দিকে তাকানোর শক্তি হারিয়ে ফেলে ঋতুপর্ণা। দুই ঢুলুঢুলু চোখে লাজুক হাসি, ফর্সা লালচে গালে মাদলসার রক্তিমাভা। কোনরকমে প্রেমাসিক্ত চোখের পাতা মেলে ছেলের দিকে তাকায় ঋতুপর্ণা।

আদির বুকে জুড়ে ধাক্কা মেরে ওঠে এক ভীষণ প্রেমের উচ্ছ্বাস, এক লহমায় যেন কয়েক কোটি বছর পেরিয়ে এসেছে মা আর ছেলে, শুধু মাত্র এই খনের জন্য হয়ত এতদিন ঋতুপর্ণা আর আদি প্রহর গুনছিল।

আদি মায়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দুই হাত নিজের মুঠোর মধ্যে চেপে ধরে জিজ্ঞেস করে, "কেমন লাগলো মা?"

ঋতুপর্ণার গলার আওয়াজ যেন গভীর খাদের মধ্যে ডুবে গেছে। নরম হাতের ওপরে ছেলের হাতের চাপে সম্বিত ফিরে আসে ওর। নিচু গলায় ছেলের দিকে এক পা বাড়িয়ে বলে, "একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না?"

বাড়াবাড়ি হয়ে গেল সত্যি, কিন্তু ঋতুপর্ণা যেন যুগ যুগান্ত ধরে এই লহমার অপেক্ষা করছিল, আদিও এই চুম্বনের মিলনের জন্য প্রতীক্ষা করেছিল সারা জীবন। এরপরে কি হবে, ওদের এই ভালোবাসার সম্পর্ক ওদের কোথায় নিয়ে যাবে। এই প্রশ্নের উত্তর ঋতুপর্ণার অজানা, আদিও জানে না এরপরে মায়ের সাথে কি সত্যি শুধু এক বান্ধবীর মতন সম্পর্ক হবে না তার চেয়েও গভীর কিছু হবে।




********** দশম পর্ব সমাপ্ত **********





কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment