CH Ad (Clicksor)

Friday, October 23, 2015

অসীম তৃষ্ণা_Written By pinuram [চতুর্থ পর্ব (চ্যাপ্টার ৭ - চ্যাপ্টার ৮)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




অসীম তৃষ্ণা
Written By pinuram




চতুর্থ পর্ব

(#০৭)

আদি মায়ের গালে আদর করে বেশ কয়েকটা চুমু খেয়ে হাতের বেড় আলগা করে দেয়। কঠিন আলিঙ্গন থেকে মুক্তি পেয়ে ঋতুপর্ণা ওর দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। মা ওর দিকে বড় বড় সিক্ত চোখে তাকিয়ে রয়েছে। চোখের চাহনিতে একটু দুষ্টুমির ছাপ, ঠোঁটে বাঁকা অজানা অর্থের হাসি। আদি এক দৃষ্টে মায়ের গোলাপি নরম ঠোঁটের দিকে চেয়ে। মায়ের ঠোঁট জোড়া অল্প কেঁপে ওঠে সেই সাথে নিচের ঠোঁটের কাছে যে তিলটা আছে সেটাও নড়ে ওঠে। আদির বুক পাগল প্রায় হয়ে যায়, মনে হয় একটু ঝুঁকে মায়ের ওই গোলাপি নরম ঠোঁটে একটা জোর কামড় বসিয়ে দেয়।

ছেলের চোখের তীব্র আগুনে চাহনি ঋতুপর্ণাকে ঝলসে দেয়। মনে মনে এক থেকে দশ পর্যন্ত গুনে সংযমের বাঁধ শক্ত করে নেয়। ছেলের নতুন বান্ধবী হতে ইচ্ছুক, কিন্তু সেই বন্ধুত্তের খেলা খেলতে খেলতে কত দুর যাবে? না না, ওর ছেলে ওকে মায়ের চোখেই দেখবে, এটা নিছক ছেলের একটা আদুরে আবদার। নিজেকে শান্ত করে নেয় ঋতুপর্ণা, শরীরের কাছে কিছুতেই বিবেক বুদ্ধিকে হারতে দেওয়া চলবে না।

ছেলের প্রশস্ত ছাতির ওপরে হাতের পাতা মেলে ঠেলে দিয়ে হেসে বলে, "সর না, ওই ভাবে কেন তাকিয়ে আছিস।"

আদি মায়ের দিকে একটু ঝুঁকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি কিছু বলবে বলছিলে, তার অপেক্ষায় আছি।"

ঝুঁকে পরার ফলে ওর উত্তপ্ত চেহারার ওপরে ছেলের উষ্ণ শ্বাসের ঢেউ বয়ে যায়। সেই শ্বাসের সাথে সাথে ঋতুপর্ণার হৃদয়ের রক্ত টগবগ করে ফুটে ওঠে। ছেলের চোখ ওর চোখের ওপরে একভাবে নিবদ্ধ। কি এত মন দিয়ে দেখছে। ছেলের কালো চোখের মণির মধ্যে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেল। গলে যাচ্ছে ঋতুপর্ণার হৃদয়। বহু বছর আগে যখন সুভাষের প্রেমে বিভোর হয়ে ছিল তখন এক পুরুষের চোখের মণিতে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখেছিল। তারপরে আর ঠিক ভাবে ওকে কেউ দেখেনি, নিজেও কারুর চোখের দিকে ওইভাবে তাকিয়ে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখেনি।

ঠোঁট জোড়া মেলে উষ্ণ শ্বাস বেরিয়ে আসে। ঘন শ্বাসের ফলে ওর নিটোল উন্নত স্তন জোড়া ফুলে ওঠে। ঋতুপর্ণার গলার কাছে স্বর দলা পাকিয়ে যায়, "পরে বলবো এখন যা। এখন আমাকে একটু রান্না করতে দে, না হলে আজকে কিন্তু খাওয়া দাওয়া আর হবে না।"

মায়ের এই তীব্র ঘন শ্বাস আর সিক্ত চোখের চাহনি দেখে বুঝতে পারে যে ওর মা গলে গেছে। এই নারীকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে প্রস্তুত হতে হবে। বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখবে যাতে ওকে ছাড়া আর কারুর ছবি মায়ের হৃদয়ে না প্রবেশ করতে পারে। তাই মায়ের কোমরের দিকে হাত বাড়াতে গিয়েও বাড়ায় না। শরীর নয়, মায়ের হৃদয় সম্পূর্ণ রূপে জিতে নিলেই মায়ের সব কিছু ওর হয়ে যাবে। বুকের ওপরে মায়ের নরম আঙ্গুল চেপে বসে।

আদি মায়ের হাতের ওপরে হাত রেখে বুকের বাম দিকে চেপে ধরে আরও জোরে চেপে নিচু অথচ গভীর কণ্ঠে বলে, "অপেক্ষায় থাকবো কিন্তু।"

নিচের ঠোঁট দাঁতের মাঝে নিয়ে ধীরে ধীরে ছেলের বুকের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নেয়। ডালের হাতা তুলে নিয়ে ছেলের দিকে উঁচিয়ে বলে, "বের হ এখুনি, না হলে হাতা দিয়ে মারবো!"

ঠিক তখনি দরজায় কলিং বেল বেজে ওঠে। মা আর ছেলের গভীর খেলার মাঝে ছেদ পরে যায়। আদি মায়ের মুখের ওপরে ঠোঁট গোল করে গরম হাওয়া বইয়ে বলে, "তুমি না বড্ড দুষ্টু মিষ্টি, আমসত্বের মতন।"

ঋতুপর্ণার বুকের আকুলিবিকুলি করে ওঠে ছেলের গরম শ্বাসের ফলে। ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি মাখিয়ে আলতো মাথা দুলিয়ে ছেলেকে ঠেলে দিয়ে দরজার দিকে চলে যায়। কাজের মেয়ে নিতা এসে গেছে। ওর সামনে এই ভাবে কানে গালে সর্বাঙ্গে লালিমা মাখা অবস্থায় যেতে লজ্জা করে। দরজা খোলার আগে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার ছেলেকে দেখে চোখ পাকিয়ে ওকে সরে যেতে বলে। ওর চোখ চলে যায় আদির বারমুডার দিকে, সামনের দিকে একটা তাঁবু হয়ে গেছে। কি কারনে ছেলের প্যান্টে তাঁবু হয়েছে সেটা বুঝতে অসুবিধে হয় না। চোখ পাকিয়ে ইশারায় ওকে নিজের ঘরে যেতে বলে।

আদি রান্না ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে মায়ের মত্ত ছন্দে হেঁটে যাওয়া দেখে। গোলাপি শাড়ি মায়ের গোলগাল অঙ্গের সাথে আঠার পরতের মতন লেপটে। সরু কোমরের নীচে ফুলে ওঠা ভারী নিতম্বের দুলুনি দেখে ওর বুকের রক্ত নেচে ওঠে। বাঁকা পিঠের শিরদাঁড়া যেন সরু নদী, নাভির চারপাশে স্বল্প মেদের পরতে গোল পেটর দৃশ্য অতীব মাদকতাময়। ওর মা ওর সামনে ঠিক হাটছে না, যেন নেচে চলে যাচ্ছে। বুকের বাম দিক চেপে অস্ফুট উফফফ করে ওঠে। মাথা দুলাতে দুলাতে নিজের ঘরে ঢুকে যায়। এতক্ষণ মায়ের সাথে রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি বিছানার চাদর উঠিয়ে দেয়, কাপবোর্ড খুলে গেঞ্জি জাঙ্গিয়া নিয়ে গান গাইতে গাইতে বাথরুমে ঢুকে পরে। বারমুডা খুলতেই ওর কঠিন লিঙ্গ সমান্তরাল হয়ে দাঁড়িয়ে যায়, ঠিক যেন একটা কামান, গোলা ছোঁড়ার অপেক্ষায় লক্ষের দিকে উঁচিয়ে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে গত রাতের মায়ের নধর লাস্যময়ী তীব্র আকর্ষণীয় উলঙ্গ দেহ পল্লব। শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে লিঙ্গ হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে। উফফফ উফফফ উম্মম করতে করতে ওর অণ্ডকোষে ঝড় দেখা দেয়। শরীরের প্রতি ধমনী ঝাকুনি দিতে শুরু করে। বীর্য প্রায় লিঙ্গের ডগায় চলে আসে।

ঠিক তখনি বাথরুমের দরজায় মৃদু টোকার আওয়াজে সতর্ক হয়ে যায় আদি। ওইপাশ থেকে ওর মায়ের নিচু ফিসফিস গলা, "ভালো ভাবে সাবান মেখে স্নান করিস। নিতা একটু পরে তোর ঘর মুছতে আসবে।"

মা ইশারায় জানিয়ে গেল যেন উলঙ্গ অবস্থায় বাথরুম থেকে বেরিয়ে না আসে। ওদিকে আদির লিঙ্গ ওর হাতের মুঠির মধ্যে ফেটে পরার যোগাঢ় হয়ে যায়। কাঁপা গলায় লিঙ্গের গোড়া শক্ত করে চেপে ধরে মৃদু ঝাঁঝিয়ে ওঠে, "হ্যাঁ হ্যাঁ সাবান মেখেই স্নান করব। তুমি না বড্ড দুষ্টু.... নিজের কাজে যাও।"

ঋতুপর্ণা ছেলের মুখে "দুষ্টু" শুনে একটু ইয়ার্কি মেরে বলে, "আর তুই বড্ড শয়তান। নিতা এসে গেছে কিন্তু।"

আদি হস্ত মৈথুন থামিয়ে তোয়ালে দিয়ে গা মুছতে মুছতে দরজার ওপার থেকে চেঁচিয়ে বলে, "তুমি কি যাবে না আমি এমনি বেরিয়ে আসবো।"

বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে ঋতুপর্ণার, ছেলের কথা শুনে কান গরম হয়ে যায়, হাত মুঠি করে দরজায় ধাক্কা মেরে বলে, "কিল মারব না এমন, যা শয়তান! তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আয় দেরি হয়ে যাবে।"

ঋতুপর্ণা ঠোঁট চেপে মিচকি হেসে দরজা থেকে সরে যায়। আলমারি থেকে একটা পরিস্কার চাদর বের করে বিছানার ওপরে বিছিয়ে দেয়। রোজদিন টিশার্ট আর জিন্স পরেই যায়, কিন্তু সেদিন ছেলেকে একটু ভিন্ন পোশাকে দেখতে বড় ইচ্ছে করে। ছেলের জন্য একটা গাঢ় বাদামী রঙের শার্ট আর একটা ঘিয়ে রঙের ট্রাউজার বের করে বিছানার ওপরে রেখে দেয়। সাধারণত ছেলে নিজের জামা কাপড় নিজেই পছন্দ করে, কিন্তু সেদিন ওর বড় ইচ্ছে হয় ছেলেকে এই পোশাকে দেখার। নিতা ঘর ঝারু দিতে দিতে আদির ঘরে ঢুকে পরে। ঋতুপর্ণা ওকে দেখে ভালো ভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে চলে যায়। ছেলের ছেলেখেলার জন্য অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গেছে, তবে সকালটা বেশ নোনতা মধুর কাটলো। নিজের জন্য আর ছেলের টিফিনের জন্য নিতাকে চারখানা রুটি বানাতে নির্দেশ দিয়ে দেয়। অন্যদিন হলে নিজেই রুটি বানিয়ে নিত কিন্তু একটু দেরি হয়ে গেছে। রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে সকালের খাবার, ব্রেড টোস্ট তৈরি করে, কফি বানিয়ে নেয়। তাড়াহুড়ো লেগে যায়, ইসসস এরমধ্যে ন’টা বেজে গেল। মন ময়ূরী নেচে ওঠে, আজকে লেট মার্ক লাগবে এই ছেলের দুষ্টুমির জন্য। নিতা ঘর মুছতে শুরু করে দিয়েছে।

আদি স্নান সেরে ঘরে ঢুকে দেখে বিছানার ওপরে ওর জামা কাপড় সাজানো। তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে গাঢ় বাদামী রঙের শার্ট খুলে দেখে। এই জামা কাপড় পরে কোনোদিন কলেজে যায়নি। এই ট্রাউজারটা মা মাস চারেক আগে কিনে দিয়েছিল, কিন্তু আর পরা হয়নি, কারন সবসময়ে জিন্স পরে বের হয়। মায়ের পছন্দের পোশাক পড়তে হবে ভেবেই হাসি পায়, বুক ভরে ওঠে। মনে হয় ওর প্রেমিকা ওকে নিজের পছন্দ মতন সাজাতে চায়। তাড়াতাড়ি জামা প্যান্ট পরে চুল আঁচড়ে ঘড়ি দেখে। ইসসস ন’টা বেজে গেল। আজকে আর প্রথম পিরিয়ড করা যাবে না। কিন্তু মায়ের সাথে এই দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটি করা আর হত না। কলেজের চেয়ে এই মিষ্টি মধুর সকাল ওর কাছে অনেক বেশি প্রিয়।

নিতা ঋতুপর্ণার ঘর মুছে চলে যেতেই দরজা বন্ধ করে দেয়। এক টানে ওর চিত্তাকর্ষক নরম শরীর থেকে গোলাপি শাড়িটা খুলে মেঝেতে ফেলে দেয়। ব্লাউজ সায়া খুলে শুধু মাত্র ব্রা আর প্যান্টি পরে নিজেকে একটু খানি আয়নায় দেখে। মনে মনে হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা। আলমারি থেকে একটা নীল রঙের শাড়ি আর নীল রঙের ছোট হাতার ব্লাউজ বের করে তাড়াতাড়ি পরে ফেলে। শাড়ি পরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে ওর গয়নার বাক্স খুলে মেলে ধরে সামনে। সোনার গয়না পরে স্কুলে যাওয়া যায় না। একজোড়া নীল রঙের লম্বা কানের দুল বের করে শাড়ির সাথে রঙ মিলিয়ে পরে নেয়। গলায় সোনার হার, সেটা অবশ্য খোলে না, তবে একটা নীল রঙের লকেট বের করে হারের মধ্যে গলিয়ে নিয়ে উন্নত দুই স্তনের মাঝে লকেট ঝুলিয়ে দেয়। কপালে একটা বড় গাঢ় নীল রঙের টিপ পরে আর তার ওপরে একটা ছোট হাল্কা নীল রঙের টিপ রঙ দিয়ে এঁকে নেয়। ঠোঁটে হাল্কা গোলাপি লিপস্টিক মাখিয়ে নেয়। চোখের কোনে কাজল এঁকে নেয়, সাধারণত এইটুকু সাজগোজ করে প্রতিদিন স্কুলে যায়। আঁচলটা ভালোভাবে বুকের ওপরে মেলে ধরে, ব্লাউজের সাথে একটা ছোট ব্রোচ বেঁধে আঁচল ঠিক করে নেয়। হাতে ঘড়ি পড়তে গিয়ে দেখে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সাড়ে নটা বেজে গেল এইখানেই। এইবারে দৌড়াতে হবে স্কুলের দিকে।

জামা প্যান্ট পরে ল্যাপটপ ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে নিজের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে আদি। মায়ের দিকে চোখ যেতেই বুকের রক্ত ছলকে ওঠে। এ যে নীলাম্বরী এক অপ্সরা ওর সামনে দাঁড়িয়ে! জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে, আকাশের মুখ গোমড়া কিন্তু বাড়ির ভেতরের পরিবেশ উত্তপ্ত। খাবার টেবিলে বসে ব্রেডে জ্যাম মাখিয়ে নেয়। মা ওর পাশে এসে কফির কাপ দুটো রাখে। পাশে এসে দাঁড়াতেই মায়ের শরীর থেকে মাদকতাময় এক সুবাস এসে ওকে মাতাল করে দেয়। মায়ের ঠোঁটে মিষ্টি হাসি, চোখের তারায় এক অজানা দুষ্টুমি। না না ওর চোখের ভুল হবে হয়তো।

ঋতুপর্ণার চোখ ছেলের আপাদমস্তক জরিপ করে নেয়। গাঢ় বাদামী শার্ট আর ঘিয়ে রঙের ট্রাউসারে ছেলের বয়স যেন একটু বেড়ে গেছে। নাকের নীচে পাতলা গোঁফ, গালে স্বল্প দাড়ি, সুঠাম দেহের গঠন। ভীষণ বুদ্ধিদীপ্ত আর স্মার্ট দেখাচ্ছে। কাঁধে ওই কলেজের ঝোলান ব্যাগ না থাকলে সহজেই ওকে কোন অফিসের কর্তা বলে চালানো যাবে।

ছেলের পাশে চেয়ার টেনে বসে ফিসফিস করে বলে, "তোকে দারুন স্মার্ট দেখাচ্ছে।" 

আদি এক দৃষ্টে মায়ের রূপসুধা আকণ্ঠ পান করছিল। ওর চোখের দৃষ্টি মায়ের গোলাপি নরম ঠোঁটের ওপরে আর চোখের দিকে নিবদ্ধ ছিল। মায়ের মিষ্টি নরম আওয়াজ শুনে মিচকি হেসে বলে, "হঠাৎ এই ড্রেস পড়তে বললে কেন?"

ঋতুপর্ণা, ছেলের জন্য ব্রেডে জ্যাম লাগাতে লাগাতে বলে, "রোজদিন জিন্স আর টিশার্ট পরে যাস আজকে একটু ভিন্ন ড্রেস পড়তে দিলাম।"

ছেলে ওর দিকে নিস্পলক নয়নে চেয়ে রয়েছে, যেন একটু হলেই গিলে ফেলবে। ছেলের এই চাহনির উত্তাপে ওর গালে রক্তিমাভা দেখা দেয়। ভুরু নাচিয়ে ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, "কি দেখছিস রে ওই ভাবে?"

আদি মায়ের হাত থেকে ব্রেড নিতে গিয়ে নরম আঙ্গুল চেপে ধরে ফিসফিস করে বলে, "তুমি একদম নীলাম্বরী পরীর মতন সেজেছ। আজ স্কুলের শুধু ছেলেরা নয়, মেয়েরাও হার্ট ফেল করবে!"

হাত বেশ জোরেই চেপে ধরে রয়েছে ছেলে, কি ভাবে ছাড়াবে ঠিক ভেবে পায় না। ওইদিকে নিতার কাজ শেষ হয়ে গেছে। নিতা রান্না ঘর থেকে বাসন মাজা শেষ করে ঋতুপর্ণার উদ্দেশ্যে বলে, "আমি যাচ্ছি কাকিমা।"

নিতার গলার আওয়াজ শুনেই আদি মায়ের হাত ছেড়ে দেয়। নিতা বেরিয়ে যেতেই ঋতুপর্ণা হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। বেশিক্ষণ আবার ছেলের হাতের মধ্যে হাত রেখে এইভাবে বসে থাকলে আর ওর স্কুল যাওয়া হত না। সুভাষের সাথে প্রথম যখন প্রেম করেছিল সেই অনুভুতি পুনরায় হৃদয়ের গভীরে দেখা দেয়। কিন্তু এইবারে সেই পুরানো অনুভুতি ছাপিয়ে চলে গেছে এক নতুন দিগন্তে। নিজের ছেলের সাথে বান্ধবীর খেলা খেলতে বেশ মজা লাগছে আর সেই সাথে একটু দ্বিধাবোধ যে ওর মনে নেই তাও নিয়। বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে না ত ওদের এই সম্পর্ক, একটা সংশয় যদিও মনের মধ্যে উঁকি মারে তাও এই ভালোলাগা বেশ ভালো লাগে ওর। তাড়াতাড়ি ব্রেড জ্যাম শেষ করে কফির মগ তুলে নেয়।

আদি কয়েক চুমুকে কফি শেষ করে মা'কে বলে, "সাবধানে গাড়ি চালিয়ে যেও।"

ঋতুপর্ণা ছেলের ভালোবাসার উদ্বেগ জেনে স্বস্তির শ্বাস নিয়ে বলে, "এই পাঁচ কিলোমিটার যাবো আর কি। তুই সাবধানে যাস আর পারলে দুপুরে লাঞ্চের সময়ে ফোন করিস।"

আদি মায়ের কাছে এসে ঝুঁকে পরে মাথায় চুমু খাওয়ার জন্য। এই চুম্বন প্রক্রিয়া ওদের নিত্যকর্ম, কলেজে বেরিয়ে যাওয়ার আগে গালে আলতো ঠোঁট ছুঁইয়ে আর ওর মাথায় নাক ঘষে একটু মায়ের গন্ধ নিয়ে যাবে। কফি কাপে চুমুক দিয়ে ছেলের দিকে মাথা উঁচু করে দেয়। আদি অন্যদিনের মতন মায়ের নরম গালে ঠোঁট চেপে ধরে, কিন্তু অন্যদিনের মতন আলতো ঠোঁট না ছুঁইয়ে ওর ঠোঁট মায়ের ঠোঁটের পাশে চেপে ধরে। ছেলের এই প্রকার চুম্বনে একটু আশ্চর্য হয়ে যায় ঋতুপর্ণা। আর একটু হলেই ওর ছেলে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়েছিল। ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে।

আদি চোখের মণি ঘুরিয়ে দুষ্টুমির এক হাসি দিয়ে বলে, "বান্ধবীকে চুমু খেতেই পারি তাই না।"

চঞ্চল চিত্তে ঋতুপর্ণা মিচকি হেসে উত্তর দেয়, "গালে দিলে ভালো করতিস।"

আদির পা আর যেন মাটিতে পড়ছে না। মা'কে বান্ধবী হিসাবে পেয়ে যতটা চঞ্চল হয়ে উঠেছে তত চাঞ্চল্য তনিমার সাথে প্রেম করার সময়েও দেখা দেয়নি। পা প্রায় মাটিতে পড়ছে না। এক প্রকার দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। সন্তোষ স্যারের ক্লাস আজকে মিস হবেই হবে। অনিন্দ্যর কাছ থেকে রেসিপ্রোকেটিং ইঞ্জিনের নোটস নিতে হবে। কলেজে ঢুকতেই সুদিপ্তা আর অনিন্দ্যর সাথে দেখা।

সুদিপ্তা ওকে দেখে এক গাল হেসে জিজ্ঞেস করে, "কি রে তোকে যে আজ চেনা যাচ্ছে না। এটা নতুন গার্ল ফ্রেন্ডের চয়েস নাকি?"

আদির ইয়ার্কি মেরে বলে, "হ্যাঁ নতুন একটা গার্ল ফ্রেন্ড পটিয়েছি।"

অনিন্দ্য আর সুদিপ্তা সঙ্গে সঙ্গে উৎসুক হয়ে ওঠে, "কে কে, কোন ইয়ার?"

আদি মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়, "কলেজের নয়, বাইরের।"

অনিন্দ্য চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞেস করে, "কোথাকার মাল পটালি রে? তোর ড্রেস দেখে মনে হচ্ছে তুই শালা মানুষ হয়ে গেছিস। আমাদের সেই পাগলা আদি কোথায়?"

আদি মাথা নাড়িয়ে হেসে বলে, "না না, এই ড্রেস মায়ের পছন্দের।"

সুদিপ্তা মন মরা হয়ে উত্তর দেয়, "যা শালা আমি ভাবলাম কোন নতুন গার্ল ফ্রেন্ড হয়েছে আর সেই তোকে এই ড্রেস পরিয়েছে। গত কাল কাকিমা তাহলে তোকে বেশ টাইট দিয়েছে তাই না?"

আদি মনে মনে হাসে, ওর বান্ধবী যে ওর মা সেটা বলতে পারে না, সেটা কখনই বলা উচিত নয়। ওদের কাছ থেকে শোনে যে সন্তোষ স্যারের জ্বর হয়েছে তাই ক্লাস হয়নি। পকেট থেকে ফোন বের করে সবার চোখের আড়াল করে মায়ের ছবি দেখে। কয়েক সপ্তাহ আগে, যেদিন ময়ূরী রঙের সালোয়ার কামিজ কিনতে গিয়েছিল সেইদিন। লাল পাড় হলদে রঙের শাড়ি পরে মা দাঁড়িয়ে। হাত দুটো বুকের কাছে ভাঁজ করে ওর দিকে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে। সেইদিন শাড়ির সাথে মিলিয়ে কপালে একটা হলদে আর লাল রঙের টিপ পড়েছিল। মা কোনোদিন এক রঙের টিপ পরে না। একটা বড় টিপের ওপরে একটা ছোট টিপ সর্বদা থাকবে, এটাই ওর মায়ের সাজের বিশিষ্ট।

আদি নাক কুঁচকে মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে, "আই লাভ ইউ ডার্লিং।"

ওর যেন মনে হল মোবাইলের ছবিটা ওর দিকে তাকিয়ে মিচকি হেসে বলে উঠল, "সো এম আই হানি। (আমারও এক অবস্থা সোনা)।"

আদির চিত্ত আকুলি বিকুলি করে ওঠে মায়ের গলার আওয়াজ শোনার জন্য। তারপরে মাথা ঝাঁকিয়ে মনে মনে হেসে ফেলে, একি পাগলামি করছে। মা স্কুলে থাকলে ফোন সাইলেন্ট করে রাখে, ও ফোন করলেও মা শুনতে পাবে না। সেই দুপুরে লাঞ্চের সময়ে হয়তো মায়ের গলা শুনতে পাবে তার আগে নয়। মায়ের মনের ইচ্ছেটা বড় জানতে ইচ্ছে করে আদির। কি ভাবছে ওর মা, কি করছে এখন। চোখের সামনে মায়ের নীলাম্বরী শাড়ির ভাঁজে ঢাকা অতীব চিত্তাকর্ষক দেহ পল্লব ভেসে ওঠে। কবে যে ওই গোলাপি নরম ঠোঁটে চুমু খেতে পারবে, কবে ওর ভাগ্যে ওই মিষ্টি অধর রস জুটবে সেই চিন্তায় ডুবে যায়। বারে বারে ওর ঠোঁটে মায়ের নরম গালের পরশ অনুভব করে কেঁপে ওঠে।







(#০৮)

ঋতুপর্ণা গাড়ি চালাবে কি, ওর মন পড়ে থাকে ছেলের কাছে। ইসসস সকাল সকাল ওর বুকে দোলা দিয়ে পালিয়ে গেল। ছেলের সাথে প্রেমিক প্রেমিকার খেলা খেলতে গিয়ে একটু ছেলের প্রেমে পড়ে গেছে। স্কুলে ঢুকেই ফোন সাইলেন্ট করে দিতে হয়। প্রথমার্ধে ওর নাচের ক্লাস থাকে না, রঙ্গনার সাথে লাইব্রেরিতে বসে লাইব্রেরির কাজ করতে হয়।

ওকে লাইব্রেরিতে মিচকি হাসি হাসি মুখে ঢুকতে দেখে রঙ্গনা ওর কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে জিজ্ঞেস করে, "তোকে আজকে একটু অন্য রকম দেখাচ্ছে কি ব্যাপার।"

ঋতুপর্ণার গালে লালিমা দেখা দেয়, "না কিছু হয়নি এমনি। তুই যা নিজের কাজ কর।"

রঙ্গনা ছাড়ে না চোখ টেরিয়ে ওকে বলে, "কিছু একটা হয়েছে তোর। প্রেম করছিস নাকি রে? তোকে না সত্যি সেই প্রথম প্রেমের ছোট মেয়েদের মতন লাগছে।"

এই যা রঙ্গনা কি সত্যি ওর গালের লালিমা, ওর চোখের তারার চমক দেখে ফেলল। কি উত্তর দেবে, ছেলের সাথে বান্ধবীর খেলা খেলার এক ভিন্ন স্বাদ ওর বুকের মাঝে রক্তিম আভা চাগিয়ে তুলেছে সেই উত্তর দেবে। সবাই ওকে ধিক্কার জানাবে তার চেয়ে ভালো ওদের খেলা ওদের মাঝেই থাক।

একটা চেয়ার টেনে বসে রঙ্গনাকে উত্তর দেয়, "না রে কিছু হয়নি।"

ঋতুপর্ণা আর প্রদীপের সম্পর্কের ব্যাপারে রঙ্গনা জানে তাই রঙ্গনা ওকে প্রশ্ন করে, "মিস্টার বিশ্বাসের সাথে কেমন চলছে?"

ঋতুপর্ণা মনের প্রকৃত ভাব লুকিয়ে উত্তর দেয়, "ভালো চলছে, দে লেজার টা দে, নতুন বইয়ের লিস্ট বানিয়ে ফেলি।"

রঙ্গনা উঠে গিয়ে এক গাদা বই নিয়ে এসে ওর সামনে রেখে দেয়। বই গুলোতে কাগজ সাটিয়ে ঠিক মতন নাম্বারিং করতে শুরু করে দেয়। কোন বই কোন তাকে কোন নাম্বারে থাকবে সেটা আগে একটা খাতায় লিখতে হবে তারপরে কম্পিউটারে এন্ট্রি করতে হবে। মোবাইলের কথা একদম ভুলেই গিয়েছিল। বেশ কিছু পরে ব্যাগ খুলে টিসু বের করার সময়ে ওর চোখ মোবাইলে চলে যায়। বেশ কয়েকটা মিস কল দেখে ফোন খুলে দেখে। ঠিক সেই সময়ে প্রদীপের ফোন আসে। প্রদীপের ফোন পেয়ে একটু বিরক্তি বোধ জেগে ওঠে ওর মনে। ও ঠিক এই ফোনের অপেক্ষায় ছিল না, ওর মন বলছিল ওর ছেলে ওকে ফোন করবে।

তাই ফোন উঠিয়ে একটু বিরক্তির সুরে বলে, "হ্যাঁ বলো কেমন আছো।"

প্রদীপ হঠাৎ ঋতুপর্ণার গুরু গম্ভীর কণ্ঠস্বর শুনে একটু দমে আমতা আমতা করে বলে, "না মানে এমনি ফোন করলাম। কি করছো?"

ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, "কাজ করছি আর কি করবো।"

প্রদীপ জিজ্ঞেস করে, "না মানে জিজ্ঞেস করছিলাম যে একটু বের হতে পারবে। একটু কাজ ছিল এই শপিং আর কি।"

ঋতুপর্ণার একদম ইচ্ছে ছিল না প্রদীপের সাথে কথা বলার বা দেখা করার, ওর মন পরে ছিল ছেলের কাছে তাই প্রদীপকে কাটানোর জন্য উত্তর দেয়, "না, সেকেন্ড হাফে পরপর চার খানা ক্লাস আছে, সরি প্রদীপ আজকে হবে না।"

প্রদীপ মন মরা হয়ে বলে, "আচ্ছা ঠিক আছে। বিয়েতে আসছো তো নাকি? সেই দিনেও স্কুল করবে?"

ঋতুপর্ণা হেসে ফেলে, "না না, সেই দিন আসব চিন্তা নেই।"

প্রদীপ ফোন রেখে দিতেই কল লিস্ট খুলে ছেলের মোবাইল নাম্বার দেখে। মন চঞ্চল, ছেলের ঠোঁট একটু হলেই ওর ঠোঁট ছুঁয়ে যেত। নিজের অজান্তেই ঠোঁটের পাশে হাত বুলিয়ে নেয়। সকালে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছিল যেন মনে হচ্ছিল কতদিন পরে এক প্রেমিকের বাহু ডোরে বাঁধা পড়েছে। সুভাষের কথা মনে করতে একদম ইচ্ছে করে না। সুভাষের নাম শুনলেই ওর শরীর জ্বলে ওঠে। প্রেম করে বিয়ে করার পরেও ওর সাথে প্রতারণা করলো ওর স্বামী। না না, মাথা ঝাঁকিয়ে সুভাষকে মাথা থেকে বের করে দেয়। ছেলেকে কল করবে কি করবে না সেই দোনা মনা করে।

আবার ঠিক তখনি ওর ফোনে একটা মেসেজ আসে। খুলে দেখে ছেলের মেসেজ, "হাই, ডার্লিং কি করছ।"

একেবারে একদিনে মা থেকে "ডার্লিং" বানিয়ে দিল ওর ছেলে! নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে ফোন করে ছেলেকে। বুকের রক্তে তীব্র আলোড়ন। ফোন করবে না একটা মেসেজ করবে। না না, ফোন করলে রঙ্গনা আবার ওদের কথোপকথন শুনে ফেলতে পারে। তাই ঋতুপর্ণা ছেলেকে একটা মেসেজ করে, "কি রে তোর ক্লাস নেই।"

সঙ্গে সঙ্গে আদির উত্তর আসে, "না, সন্তোষ স্যারের জ্বর তাই খালি।"

ঋতুপর্ণা প্রশ্ন করে, "লাইব্রেরিতে গিয়ে কিছু পড়াশুনা করতে পারিস তো। খালি বসে কি করছিস?"

আদির উত্তর আসে, "তোমার কথা ভাবছিলাম।"

উফফফ, ছেলে কি ভাবছে ওর কথা। ইসসস ছেলেটা না বড্ড দুষ্টু হয়ে গেছে। ঋতুপর্ণা প্রশ্ন করে, "কি ভাবছিলি রে দুষ্টু ছেলে।"

আদি প্রশ্ন করে, "তোমার নরম গোলাপি গালের কথা।"

উম্মম ছেলেটা সত্যি পাগল হয়ে গেছে আর সেই সাথে ওকেও পাগল করে দিয়েছে। ঋতুপর্ণা লিখে পাঠায়, "কিন্তু আজকে তো ঠিক গালে চুমু খাস নি।"

আদি উত্তর দেয়, "সরি, একটু সরে গেছে। মানে তোমার গাল এত পিচ্ছিল যে ঠিক জায়গায় চুমু খেতে পারিনি।"

পাগল ছেলে, মাথা দোলায় ঋতুপর্ণা। নিশ্চয় ইচ্ছে করেই ওর ঠোঁট ছুঁতে চেয়েছিল কিন্তু এইভাবে ঠোঁটে ঠোঁট মেলাতে দ্বিধা বোধ করেছে তাই ঠিক ঠোঁটের পাশে চুমু খেয়েছে। ঋতুপর্ণা লেখে, "যা শয়তান, তোর মনে অন্য কিছু ছিল।"

আদি উত্তর পাঠায়, "তুমি কি করে জানলে।"

ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, "মায়ের মন সব জানতে পারে বুঝলি।"

আদি লিখে পাঠায়, "মায়ের মন না বান্ধবীর মন?"

ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, "দুটোই বলতে পারিস।"

আদি লেখে, "কিন্তু কোনটা বেশি।"

ঋতুপর্ণা কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দেয়, "আগে মা তারপরে বান্ধবী। আদি আমি কিন্তু শুধু তোর সাথে এই বান্ধবীর খেলা খেলছি আর বেশি কিছু না। আশা করি সেটা বুঝিস।"

আদির উত্তর আসে, "জানি মা, কিন্তু তাও মা'কে মিষ্টি বান্ধবী রূপে দেখতে বেশি উত্তেজক লাগে।"

শরীরের প্রতিটি রোমকূপ উন্মিলিত হয়ে যায় এই মেসেজ পরে। উত্তেজক মানে, উত্তেজনা যে ওর শরীর মন ছাপিয়ে গেছে। হৃদয়ের আগল বেঁধে ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, "আদি একটা কথা বলবো সোনা।"

আদি লিখে পাঠায়, "হ্যাঁ বলো না, তোমার সব কথা মানতে রাজি।"

ঋতুপর্ণা কিছুক্ষণ ভেবে লিখে পাঠায়, "আগে কিন্তু মাতৃস্বত্বা তারপরে তোর বান্ধবী। সেই সন্মান অন্তত একটু রাখিস।"

আদির উত্তর দিতে একটু দেরি হতে দেখে ঋতুপর্ণা ভাবতে শুরু করে, ছেলে কি আহত হোল? কিন্তু ছেলেকে এই ভাবে সোজাসুজি না বললে ওরা গন্ডি ছাড়িয়ে কোথায় পৌঁছাবে তার ঠিক নেই। কিছু পরে আদির উত্তর আসে, "নিশ্চয় মা, আগে তুমি আমার মা তারপরে আমার বান্ধবী।"

ঋতুপর্ণা স্বস্তির শ্বাস নিয়ে মজা করে লেখে, "তাই বলে এই নয় যে একদম দুষ্টুমি করতে পারবো না।"

আদি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেয়, "উফফফ তুমি না সোনা মা, মিষ্টি ডার্লিং।"

উফফ ছেলেটা পাগল হয়ে গেল যে। ঋতুপর্ণা লিখে পাঠায়, "আচ্ছা বাবা, এইবারে তোর ডার্লিং একটু কাজ করবে।"

আদি লিখে পাঠায়, "আচ্ছা তাই সই কিন্তু লাঞ্চে ফোন করবো।"

ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, "ওকে বাই। ক্লাসে আবার অন্য মনস্ক হয়ে বসে থাকিস না।"

সঙ্গে সঙ্গে একটা চুম্বনের মেসেজ আসে, "কিসসসসস...."

ঋতুপর্ণা পাল্টা উত্তর দেয়, "উম্মম্মম্ম"

শুধু মেসেজ লিখে আর পরে কি আর মন ভরে। একটু কথা বলা একটু গলার আওয়াজ শোনা। ঋতুপর্ণার চিত্ত বড় ব্যাকুল হয়ে ওঠে ছেলের গাঢ় গলার আওয়াজ শোনার জন্য। কিন্তু লজ্জা পায় একি করছে। আগে ছেলেই ফোন করুক। ওকে বান্ধবীর মতন দেখার স্বপ্ন ছেলের সুতরাং ছেলের পদক্ষেপের অপেক্ষা করবে। দেখতে চায় ছেলে ওকে নিয়ে কি কি স্বপ্ন এঁকেছে। সময় আর কাটতে চায় না কিছুতেই। খাতা কি লিখবে, বারে বারে পেন দাঁতের মাঝে কেটে মোবাইল দেখে। বারেবারে গত রাতের কথা মনে পড়ে যায়, কেমন ভাবে ওকে জড়িয়ে ধরেছিল। সকালের কথা মনে পড়ে যায়, ভীষণ প্রগাঢ় ছিল ছেলের বাহু বেষ্টনী।

ঠিক দুপুরে লাঞ্চের সময়ে ছেলের ফোন। সঙ্গে সঙ্গে ফোন তুলে ছেলেকে মৃদু বকুনি দেয় ঋতুপর্ণা, "পড়াশুনা নেই নাকি, শুধু ফোন আর ফোন। এই রকম করলে হবে।"

আদি উত্তেজিত কণ্ঠে উত্তর দেয়, "কি করবো বলো, প্রথম বার এত সুন্দরী একজন বান্ধবী পেয়েছি। ওর গলা না শুনলে থাকতে পারছি না।"

ঋতুপর্ণা কানের ওপরে ফোন চেপে ধরে, সকালে রান্না ঘরে ওর কানের সাথে আদির গাল ঠেকেছিল। ফোনের ভেতর দিয়ে সেই পরশ খুঁজে নিতে চেষ্টা করে ওর মন। আসলে সেটা কখনই সম্ভব নয় কিন্তু প্রেমিকার চিত্ত অনেক কিছুই ভেবে নিতে সক্ষম হয়। ঋতুপর্ণা গলা নামিয়ে বলে, "কি হয়েছে এতবার করে ফোন করছিস কেন?"

আদি নিচু গলায় ওইপাশ থেকে উত্তর দেয়, "তোমাকে আজকে ভারী মিষ্টি দেখাচ্ছে।"

ঋতুপর্ণার কান ছেলের কণ্ঠ স্বর শুনে লাল হয়ে যায়, লাজবতী লতার মতন লাজুক হেসে বলে, "আচ্ছা তাই নাকি। কিন্তু তুই যে কোন ফটো উঠালি না।"

আদি মিহি অথচ গভীর কণ্ঠে উত্তর দেয়, "চোখে আঁকা রয়েছে আর সেই ছবি একেবারে বুকে গেঁথে গেছে।"

ঋতুপর্ণা লাজুক হেসে উত্তর দেয়, "বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না একটু। খেলার প্রেমিকার চেয়ে সত্যিকারের একটা প্রেমিকা জোটালে কত ভালো হত। তোর এই সব কথা শুনে অতি সহজে পটে যেত।"

আদি মুখ ভার করে উত্তর দেয়, "সোজাসুজি বলে দাও ভালো লাগছে না আর ফোন করবো না।"

ছেলের অভিমানী কণ্ঠ শুনে থাকতে পারে না ঋতুপর্ণা। ছেলেকে প্রবোধ দিয়ে বলে, "না না তোর সাথে ইয়ার্কি মারছিলাম।" একটু থেমে ছেলে সাবধান করে বলে, "কিন্তু আমার ওই কথাটা মনে রাখিস।"

আদি প্রশ্ন করে, "কোন কথা?"

ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, "আগে আমি মা, তারপরে....."

আদি ম্লান হেসে উত্তর দেয়, "হ্যাঁ হ্যাঁ জানি, তুমি আমার মা তাই এত সহজে এত কথা বলতে পারছি। অন্য কেউ হলে কি আর একদিনে এত খোলামেলা হয়ে মিশতে পারতাম।"

তা সত্যি, ছেলে বলেই এত সহজে মিশে গেছে। অন্য কেউ হলে ওর হাত ধরতেই অথবা ওর গালে চুমু খেতেই কয়েক দিন লাগিয়ে দিত। ঋতুপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, "সাবধানে বাড়ি ফিরিস। আকাশ মেঘলা করে আছে।"

আকাশ দুপুরের পর থেকেই মেঘলা, সেই দেখে আদির মন আবার ওঠে, "এই, না না, এই বৃষ্টিতে ঘরে কি আর মন টিকবে। চলো আজকে সিনেমা দেখে আসি।"

বাইরে যাওয়ার কথা শুনে একটু ঋতুপর্ণার মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। গতরাতে ছেলের সাথে যে রকম মাখামাখি হয়ে গেছে সেটা আশাতীত। সেই সাথে মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায় নিজেদের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে। গত কাল অনেক কেনাকাটা হয়ে গেছে, অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। নাচের ক্লাস করে আর নাচের কোচিং করে এমন কিছু আয় হয় না। ওর বড় ফ্লাট দেখে সবাই ভাবে ওরা খুব বড়লোক কিন্তু আসলে ওদের আর্থিক অবস্থা সাধারন মধ্যবিত্ত মানুষের মতন। আর এই কারনেই ডিভোর্সের পরে এক প্রকার জোর করেই ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পাঠিয়েছিল। গলা ধরে আসে, মাসের শেষ হতে এখন বাকি। যদিও আদির খরচ অনেকটাই সুভাষ দেয় কিন্তু তাও ছেলের ছোট খাটো আবদার ওকেই মেটাতে হয়।

ঋতুপর্ণা নিচু কণ্ঠে ছেলেকে বুঝিয়ে বলে, "না রে গত কাল অনেক খরচ হয়ে গেছে। তার ওপরে আজকে বাড়িতে মেয়েরা নাচ শিখতে আসবে। পরে একদিন না হয় আবার বেরোনো যাবে।"

আদি মায়ের ভারী গলা শুনে সংশয় বুঝতে দেরি হয় না। বড় কষ্ট হয় নিজেদের এই আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে। বাবার ওপরে ভীষণ রাগ হয়, কেন যে বাবা মাকে ছেড়ে চলে গেল জানে না। তবে সেই সাথে একটা আশার আলো দেখা দেয় ওর মনে। বাবা যদি মায়ের পাশে থাকত তাহলে কি আর মাকে এইভাবে নিজের মতন করে ভালবাসতে পারত? কখনই না। বাবার কাছ থেকে মাকে ছিনিয়ে নিতে পারত না কখনই কিন্তু প্রদীপ বিশ্বাসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে।

মায়ের ভারাক্রান্ত কণ্ঠ স্বর শুনে আদি উত্তর দেয়, "প্লিজ ওই ভাবে মন মরা হয়ে থেকো না। তোমার শুকনো মুখ দেখলে বুক শুকিয়ে যায়।"

আহা রে, ছেলেটা সত্যি ওর ব্যাথা বোঝে। চোখের কোনে এক চিলতে জলের রেখা দেখা দেয়। আড়ালে চোখের কোন মুছে হেসে বলে, "ছাতা নিয়ে গেছিস?"

আদি উত্যক্ত করার জন্য উত্তর দেয়, "ছাতা, সেটা কি জিনিস?"

লাঞ্চের সময় শেষ, এইবারে ক্লাস এইটের নাচের ক্লাস শুরু হবে। ঋতুপর্ণা ছেলেকে বলে, "এই আমার এখন ক্লাস আছে। বাকি কথা বাড়িতে হবে। সাবধানে আসিস।"

আদি ফোন ছেড়ে হাওয়ায় হাত ছুঁড়ে নেচে ওঠে। পকেটে বিশেষ টাকা নেই। এই মাসে যা ওর বাবা যা টাকা পাঠিয়েছিল সেটা সেমেস্টার খরচ দিতে আর কিছু বই কিনতে খরচ হয়ে গেছে। তারপরে আবার বন্ধুদের নিয়ে গত সপ্তাহে একটা সিনেমা দেখতে গিয়েছিল সেখানেও খরচ হয়ে গেছে। বাবার কাছে বেশি টাকা চাইতে খারাপ লাগে। গত বছরে একটা দামী নিকোন ডিএসএলআর ক্যামেরা ওর জন্মদিনে কিনে উপহার দিয়েছিল। তার দাম প্রায় চল্লিশ পঞ্চাশ হাজার টাকা। মায়ের কাছে বেশি টাকা চাওয়া যায় না। স্কুল করে নাচের ক্লাস করে, এত বড় বাড়ি সামলে, সারা মাসের খরচ খরচা সামলে তাও মাসে হাজার দেড় হাজার টাকার মতন হাত খরচ দেয়।

পার্স খুলে দেখে একটা পাঁচশো টাকার নোট পরে আছে আর কয়েকটা দশ টাকার নোট। তনিমার সাথে প্রেম করার সময়ে তনিমার এই চাই সেই চাই আবদার থাকত। কিন্তু এই নতুন বান্ধবীর তেমন কোন আবদার নেই। উপরন্তু এই বান্ধবী ওর একদম নিজের, এর জন্য একটা কিছু কিনে নিয়ে যেতেই হয়।

কলেজের সেকেন্ড হাফ কোনোরকমে ঘড়ি দেখে আর আকাশ দেখে কাটিয়ে দেয় আদি। বিকেল হতে হতেই আকাশের বুকে মেঘের গুড়গুড় চড়চড় ধ্বনি মুখরিত হয়ে ওঠে। ছাতা নিয়ে কোনোদিন আসে না আদি, তাই বৃষ্টি হওয়ার আগেই বেরিয়ে পড়লো কলেজ থেকে। বাস স্টপে এসে বাড়ির জন্য বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইলো।

এমন সময়ে মায়ের ফোন আসে, "তুই কি কলেজ থেকে বেরিয়ে পড়েছিস?"

আদির মন চঞ্চল হয়ে ওঠে মায়ের গলা শুনে, এখুনি মাকে কাছে পেলে যেন জড়িয়ে ধরবে। অসীম চাঞ্চল্য সংযত রেখে উত্তর দেয়, "হ্যাঁ বেরিয়ে পড়েছি, তুমি কি বাড়িতে না বাইরে?"

ঋতুপর্ণা অনেক আগেই বাড়ি ফিরে গেছে। বিকেলে নাচ শিখতে বেশ কয়েকটা মেয়ে আসে ওর কাছে। তাদের নাচ শেখাতে ব্যাস্ত ছিল। তার মাঝে আকাশের গুড়গুড় চড়চড় আওয়াজ শুনে ছেলের জন্য মন কেমন করে ওঠে। উদ্বেগ মাখা কণ্ঠে ছেলেকে বলে, "তুই বললে একদম শুনিস না। দেখ এখুনি বৃষ্টি আসবে।"

আদি মা'কে শান্ত করে উত্তর দেয়, "এত বছরে বৃষ্টি কি তোমার ছেলেকে তোমার কাছে যাওয়ার জন্য আটকাতে পেরেছে যে আজকে পারবে।"

ঠিক তখনি ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। লোকজনের দৌড়াদৌড়ি লেগে যায়। দেখতে দেখতে বাস স্টান্ডের পাশের গাছের তলা ভরে ওঠে। ব্যাগ মাথায় করে মাকে উত্তর দেয়, "ভেবেছিলাম বাস এসে পরবে কিন্তু বৃষ্টিটা সত্যি শয়তান। ঠিক অসময়ে এসে যায়।"

ঋতুপর্ণা ছেলের কথা শুনে বলে, "এবারে ভেজ, আর কি করবি! জ্বর হলে আমি ছাড়া আর কে আছে তোকে দেখবে।"

আদি গলা নামিয়ে উত্তর দেয়, "তুমি ছাড়া আমি কানা, ডার্লিং।"

আবার সেই ডার্লিং শব্দ শুনে ঋতুপর্ণার বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। ছেলেকে উত্যক্ত করে বলে, "কলেজ শেষ হলেই তোকে বিয়ে দিয়ে দেব আর আমার ছুটি।"

আদি মজা করে উত্তর দেয়, "ইসসস এই তো সবে মাত্র একটা সুন্দরী বান্ধবীর দেখা পেলাম। কয়েকদিন একটু মজা করে নেই তারপরে দেখা যাবে। আর আমার কপালে কোন মেয়ে জুটবে না বুঝলে।"

ঋতুপর্ণা চোখের তারা ঘুরিয়ে উত্তর নিচু কণ্ঠে দেয়, "আচ্ছা বাবা আচ্ছা। ভালো মতন বাড়ি ফিরে আয়।"

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভেজা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। অন্যদিন হলে বৃষ্টিতে ভিজতে খুব খারাপ লাগে তবে সেদিন বৃষ্টিতে ভিজতে বড় ভালো লাগে। ভিজে জামা কাপড়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ওর গত রাতের কথা মনে পরে যায়। আর তখনি বৃষ্টি আর বৃষ্টি বলে মনে হয় না। ওর শরীরে এক অদ্ভুত আগুনের দেখা দেয়। মায়ের আঁচল, মায়ের চুলের মাদক গন্ধ, মা নরম শরীর ওকে বেশি করে টানে। বাড়ি যাওয়ার বাস চলে আসতেই ভিড় বাসে ঠেলে উঠে পরে। যে করে হোক এই বাসে না উঠতে পারলে তাড়াতাড়ি মায়ের কাছে যাওয়া হবে না। সকাল থেকে কলেজ করে ক্লান্ত হয়ে গেছে।

নির্দিষ্ট বাস স্টপেজে নেমে দেখে তখন বৃষ্টি থামেনি। এইবারে হেঁটেই বাড়ি ফিরতে হবে। একে বারে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে কিছুতেই মন মানে না। বৃষ্টি মাথায় করে নিয়ে একটা কেক প্যাটিসের দোকানে ঢুকে পড়ে। বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য অনেক লোক সেই দোকানে আশ্রয় নিয়েছে তাতে দোকানির বিক্রি বেড়ে গেছে। ছোট বেলা থেকে ওর খুব চকোলেট খেতে পছন্দ, সেটা অবশ্য ওর মায়ের দৌলতে পেয়েছদে। মাও চকোলেট খেতে খুব ভালোবাসে বিশেষ করে ডার্ক চকোলেট হলে কথাই নেই। দোকান থেকে দুই খানা বড় ডার্ক ফ্যান্টাসি চকোলেট কেনে আর দুটো চিকেন প্যাটিস।

দোকানের পাশেই রাস্তার ধারে একটা ফুলের দোকান। বৃষ্টির ফলে প্লাস্টিক দিয়ে সব ফুল ঢেকে দিয়েছে দোকানি। গোলাপ কিনবে না রজনী গন্ধা ভেবে পায় না। মায়ের দুটো ফুল বেশ পছন্দের তবে মা হলদে ফুল বেশি পছন্দ করে। বেশ কয়েকটা হলদে ফুলের সাথে বেশ কয়েকটা রজনীগন্ধার স্টিক নিয়ে একটা মোটামুটি আকারের একটা তোড়া বানিয়ে কিনে নেয়। এতেই প্রায় দুশো টাকা খরচ হয়ে যায়। টাকার দিকে দেখে না, মাসের শেষে একটু টানাটানি হবে হয়তো কিন্তু সেটা ঠিক সামলে নেবে। আর নিতান্তই লাগলে মায়ের পার্স জিন্দাবাদ।

ভিকে জামা কাপড় গায়ের সাথে লেপটে ওর শরীরের উত্তাপ এক প্রকার শুষে নিয়েছে। একটা সিগারেট পেলে বড় ভালো হয় কিন্তু নিরুপায়। এই মুষলধার বৃষ্টিতে কি আর সিগারেট খাওয়া যায়। তার ওপরে এক হাতে ফুলের তোড়া আর অন্য হাতে প্যাটিসের প্লাস্টিক। এক প্রকার কাক ভিজে হয়েই বাড়ি ফিরল আদি।

ফ্লাটে ঢুকতেই ওদের গার্ড, নিমাই ওকে দেখে হেসে বলে একদম কাকের মতন ভিজে গেছে। নিমাইয়ের সাথে বেশ ভালোই হৃদ্যতা, ওর গাড়ি ধুয়ে দেয় রোজ সকালে। নিমাইকে দেখে আদি একটা সিগারেট ধরাতে বলে। নিমাই মিচকি হেসে ওর দিকে একটা বিড়ি ধরিয়ে এগিয়ে দেয়। মাসের শেষের দিকে মাঝে মাঝেই বিড়িতে নেমে আসতে হয়। তবে ওর পড়ার টেবিলের ড্রয়ারে একটা দুটো বাড়তি সিগারেট লুকিয়ে রাখা থাকে। অগত্যা শরীর গরম করার জন্য নিমাইয়ের কাছ থেকে বিড়ি নিয়ে কয়েকটা টান মেরে জিজ্ঞেস করে গাড়ির কথা। নিমাই উত্তরে জানিয়ে দেয় ওর মা অনেক আগেই ফিরে এসেছে। যেহেতু মা বেশ রূপসী আর সবার সাথে মিশে যায় তাই এই ফ্লাট বাড়ির সবার আদরের দিদিমনি।

ওর হাতে ফুলের তোড়া দেখে নিমাই ইয়ার্কি মেরে বলে, "নতুন আমদানি নাকি আদিদা।"

আদিও ইয়ার্কি মেরে উত্তর দেয়, "হ্যাঁ রে আজকেই পটালাম আর আজকেই ফুল কিনলাম।"

নিমাই আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে, "কি ব্যাপার তুমি ফুল কিনলে আর বাড়িতে নিয়ে এলে?"

আদি হেসে উত্তর দেয়, "বৃষ্টির জন্য আর দেওয়া হল না তাই বাড়িতে নিয়ে এলাম।"

নিমাই ভুরু নাচিয়ে ওকে বলে, "যাও যাও, তাড়াতাড়ি বাড়ি যাও, না হলে দিদিমনি মেরে ছাল গুটিয়ে দেবে।"

লিফটে উঠে সোজা চারতলায়। ওর কাছে বাড়ির একটা চাবি থাকে। দরজায় কান পেতে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ বাড়ির ভেতরের আওয়াজ শোনে। বসার ঘরের পাশের ঘরে ডেকে একটা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তাল বেজে চলেছে, সেই সাথে মায়ের নাচের বোলের আওয়াজ আর পায়ের তোড়ার আওয়াজ কানে ভেসে আসে। উফফফ, মায়ের ওই রাঙ্গা ফর্সা নরম পায়ের পাতায় চুমু খেতে ইচ্ছে করে। ফর্সা বাঁকা রোমহীন পায়ের গুলি বেয়ে ঠোঁটের ভিজে দাগ ফেলতে ইচ্ছে করে। পেলব জঙ্ঘার ওপরে হাত বুলিয়ে আদর করতে ইচ্ছে করে। কবে যে ওর কপালে এই সৌভাগ্য ঘটবে।





কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment