CH Ad (Clicksor)

Monday, November 9, 2015

পরিবর্তন_Written By mblanc [প্রথম পর্ব - ১.৫ শখের গোয়েন্দা]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




পরিবর্তন
Written By mblanc



প্রথম পর্ব 

।। ১.৫ ।।

শখের গোয়েন্দা

ভবানীপুর যখন পৌঁছলাম, ঘড়ির কাঁটা তখন ওপরের দিকে একটা সমকোণ এঁকেছে। জগুবাজারের বাসস্টপের উলটো দিকে ফুটপাথে কিছু দোকান, আমি তার জটলার মাঝে সেঁধিয়ে গেলাম। বাসস্টপে সামান্য কিছু লোকজন; অনু নামলে হারিয়ে ফেলার কোনো চান্সই নেই।

আশ্চর্য, আমি এখন চাইছি যাতে আমি হারিয়ে ফেলি ওকে।

ওই তো। বাস থেকে নামছে। বেশ সাজুগুজু করা হয়েছে তো! তা হবে না আর, বয়ফ্রেন্ডের কাছে যাচ্ছে যে, একটু শৃঙ্গার করতে হবে বৈকি! শৃঙ্গার হবে, রতি হবে, কামকলা হবে - আর আমার জীবন ফুলে কলাগাছ হবে!

ইচ্ছে হল খুব এই ভরা বাসস্টপের মাঝেই কনফ্রন্ট করি। মজলিশের মধ্যে কাপড় খুলে নিই। অনেক কষ্টে ইচ্ছেটা দমন করে পা বাড়ালাম। অনু যাচ্ছে মেন রোড ধরে, আমি যাচ্ছি কুড়ি কদম পিছনে ফুটপাথের দোকানের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে।

তুমি চলো ডালে ডালে,আমি চলি পাতায় পাতায়!

অনু রাস্তা পার হয়ে ডানদিকে ঘুরল, ভেতরে ঢুকল হরিশ মুখার্জী রোডের দিকে, একটা সরু গলি দিয়ে। মোড়ে জঞ্জালের স্তুপে কুকুরের কলরব। আমি তাড়াতাড়ি মোড় পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। ভিতরে তাকিয়ে দেখতে পেলাম সে আবার ডানদিকে ঘুরে আরো সরু একটা গলির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল। আবার একই রুটিন - মোড় অবধি যাও, ভেতরে উঁকি মারো, তারপর এগিয়ে চলো।

গলির গলি, তস্য গলি। এ কোন গোলকধাঁধাঁয় ঢুকছে অনু? এখানে রাস্তা জানলই বা কী করে?

শেষ গলিটা অতি সরু - একজনের বেশি দুজন পাশাপাশি যেতে পারবে না। এই গলিতেই অনু একটা বাড়ির সামনে থমকে গিয়ে এদিক-ওদিক তাকাল। আমি ছিলাম কোণায় একটা বাড়ির রোয়াকে, আর মেঘলা দুপুরে এ সরু গলি প্রায় অন্ধকার - সুতরাং অনুর দিক থেকে আমি প্রায় অদৃশ্য। সে বাড়িটার গেটের কাছে এগিয়ে গেল।

পুরনো আমলের দালানবাড়ি। সামনের দিকের পুরোটা চওড়া বারান্দা ঢাকা, তিনটে তলাতেই। একতলার বারান্দার একসাইডে কোলাপসিবল গেট, বাকিটা কালো রঙের গ্রীলে ঢাকা, তা আবার ঢাকা মানিপ্ল্যান্টের লতায়-পাতায়। ভারী প্রাইভেট জায়গা।

বারান্দার পাশেই, বাড়ির সাইডের দিকে একটা জানালা, পুরনো স্টাইলের, খড়খড়ি দেওয়া। গেটের পাশের বেলটা না টিপে অনু সেই জানালায় টোকা দিল আস্তে আস্তে। আমি সুযোগ বুঝে পা টিপে টিপে আর একটু এগিয়ে গিয়ে আরেকটা ছায়াপড়া কোনায় গিয়ে দাঁড়ালাম, যাতে বারান্দার ভেতরটা আর পরিষ্কারভাবে দেখা যায়।

বারান্দার ভেতরের দরজাটা খুলল।

একজন বেরিয়ে এল। অনুকে দেখে একটু হেসে, গেট খুললও।

একটি মেয়ে। পরনে নেভি ব্লু  নাইটগাউন, স্বাস্থ্যবতী গড়ন (কিন্তু মোটা বলা যায় না), ভারী বুক আর এক ঢাল এলো চুল কোমর ছাপিয়ে পাছা ঢেকে ফেলছে।

হঠাৎ করে আমার পায়ের তলাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগলো। এতক্ষণের সব যোশ ফুঁয়ে উড়ে গেলো। দৃষ্টি নেমে এলো মাটির দিকে।

আমি তা হলে মিথ্যে সন্দেহ করছিলাম? অনু তা হলে নির্দোষ? তা হলে আমি.... আমি.... ছিঃ!

নিজেকে ইঁদুর-ছুঁচোর মত কিছু একটা মনে হতে লাগল আর ইঁদুরের মতই পালাবার ইচ্ছেটাই প্রবল হয়ে উঠলো।

চকাৎ !

যাবার জন্যে পা বাড়াতে গিয়েও হঠাত শব্দটা শুনে থেমে গেলাম। পা ফিরে এলো আগের জায়গায়, দৃষ্টি ফিরে গেল যথাস্থানে। যৌন অভিজ্ঞতা খুব বেশি না থাকলেও, এ শব্দ ভুল হবার কথা না।

 - "বাব্বাঃ, কি জোরে, সারা পাড়া শুনে ফেলবে যে...."

 - "শুনুক গিয়ে, আমার মিষ্টি সখীটাকে একটু আদর করব তাতে কার কী?"

দুজনের খিলখিল হাসি।

মেয়েরা কি নিজেদের মধ্যে এতখানি ভালবাসা প্রকাশ করে? এটা কি স্বাভাবিক?

 - "এই আজ কি ভেতরে যাবি না এখানেই খুলতে শুরু করবি!"

দাঁড়াও দাঁড়াও। এটা ডেফিনিটলি অস্বাভাবিক।

দুজনে হাসতে হাসতে ঘরে ঢুকে গেল। দরজা বন্ধ হল সাবধানে, ঠুক। মনে হল যেন আমার মুখের ওপরেই বন্ধ হল।

এ কী করছে অনু?

আমি গেট পর্যন্ত এগিয়ে গেলাম। কলিং বেল-এ আঙ্গুল দিতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু সরিয়ে নিলাম।

না, বোধহয় ব্যাপারটা আগে নিজের চোখে দেখাই ভাল। কিন্তু কিভাবে দেখবো? একটু পিছিয়ে এসে বাড়িটার দিকে ভাল করে তাকালাম। পুরনো বাড়ি, তিনতলা। সব দরজা-জানালা বন্ধ। সেটা একটা অন্যতম অস্বাভাবিক ব্যাপার।

পাশের বাড়িটাও পুরনো, আর দুই বাড়ির মাঝে সরু একটু ফাঁক। সেটা দিয়েই ঢুকে গেলাম। পিছনেও একই অবস্থা - তবে একটু ডানদিকে এগিয়ে একটা ছোট চৌকো জায়গা একটু ফাঁকা, সেখানে আম-জাম কিছু একটা গাছ উঠেছে। আমি ঘাড় বাঁকিয়ে - যতটা সম্ভব - দেখতে চেষ্টা করতে লাগলাম যে কোন জানালা খোলা আছে কি না।

ঐ তো। একটু ফাঁক দেখতে পাচ্ছি না? ঐ যে বাঁদিক থেকে দু নম্বর জানালাটা?

না, জানালাটা বন্ধ, কিন্তু একটা পাল্লার খড়খড়িটা একটু ফাঁক। কার্ণিশটা সেকালের রীতি অনুযায়ী চওড়া, প্রায় একালের বারান্দার মতোই। একবার উঠতে পারলে অনায়াসে দাঁড়ানো যাবে।

কবে সেই ছেলেবেলায় চড়েছি গাছে, পারব এখনো?





কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





mblanc-এর লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

mblanc-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইনডেক্স-এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment