CH Ad (Clicksor)

Monday, November 9, 2015

পরিবর্তন_Written By mblanc [দ্বিতীয় পর্ব - ২.৫ অ্যানালাইসিস]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




পরিবর্তন
Written By mblanc




দ্বিতীয় পর্ব

।। ২.৫ ।।

অ্যানালাইসিস

বাড়ি গিয়ে স্নান করে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। অনু ঘরে ছিল না - আবার ওই ‘বান্ধবী’দের ওখানে গিয়ে থাকবে আর কী। ঘুম ভাঙতে ভাঙতে বিকেল হয়ে গেল।

কিছু স্ন্যাকস আর চা নিয়ে ঘরের কমপিউটারে বসলাম। ফর্মুলার ব্যাপারটা ভেবে দেখতে হবে। আমার রিসার্চের সমস্ত ডাটাই আমার ঘরের সিস্টেমে রাখা আছে ব্যাক-আপ হিসেবে। যদিও কাজটা কোম্পানির রেগুলেশন অনুযায়ী বেআইনি, কিন্তু আমি মাঝে মধ্যেই ছুটির দিনে ঘরে বসেই বেশ কিছুটা কাজ আগিয়ে দিয়ে থাকি - যে সমস্ত কাজে ল্যাবের যন্ত্রপাতি লাগে না আর কি।

দুটো উইন্ডো খুলে পাশাপাশি রাখলাম। একটায় ফর্মুলা-৪৮, অন্যটায় ফর্মুলা বি-১১ খুলেছি।

দুটোর মধ্যে কোন সিমিলারিটিই চোখে পড়ছে না। এত ভালোভাবে মিশল কী ভাবে?

অথবা এমনটাও হতে পারে যে, প্রথমে কোন রিয়্যাকশনই হয় নি। পরে যে কৃত্রিম চিনিটা ঢেলেছিলাম, সেটাই কিছু করেছে? তৃতীয় একটা উইন্ডো খুলে তাতে পর পর এন্ট্রি করলাম সুগারফ্রী-র উপাদানগুলো। মোটামুটিভাবে কতখানি ঢেলেছিলাম, তাও দিলাম। তারপর আমার পোষা বায়োকেমিস্ট্রি সফটওয়্যারটাকে নির্দেশ দিলাম, এই তিনটে জিনিসকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় মেশালে কী কী রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্ভব।

বেশ একটু সময় লাগবে। যাই আর এককাপ চা করে নিয়ে আসি গিয়ে।

কেটলি বসাতে গিয়ে অসাবধানে একটু ছ্যাঁকা খেলাম। আসলে অন্যমনস্ক ছিলাম; সেদিনকার স্বপ্নটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। সুজাতার সম্বন্ধে এমন অদ্ভুত স্বপ্ন! ওকে কখনো খারাপ চোখে দেখিনি; ইদানীং একটু বরং বাৎসল্যস্নেহই তৈরী হয়েছে ওর ওপর। তা সত্ত্বেও আমার অবচেতন মন কেন এমন স্বপ্ন দেখায়? হতে পারে মেয়ের প্রতি টান আর মায়ের প্রতি টানের মধ্যে বেসিক্যালি খুব একটা ফারাক নেই। আমি কি করে জানব। আমার তো মেয়ে নেই। ছেলেও নেই। কোনদিন হবে বলে মনেও হয় না, অনুর সহযোগিতা না থাকলে।

হয়তো অন্য কারোর ঔরসে অনুর সন্তান আমি পালন করতেও পারতাম। সামাজিক লজ্জার মধ্যে না পড়লেই হল। কিন্তু অনু তো সে রাস্তাও রাখেনি।

চা নিয়ে ফিরে এসে দেখি প্রেডিকটিভ অ্যানালিসিসটা হয়ে গেছে। দেখি কী করল?

হুমম। আমার কপালে খাঁজ পড়ল।

ঠিক এরকমটা আশা করিনি। আমার কমপিউটারের বক্তব্য হল এই; সাধারণতঃ ঐ দুটো ফর্মুলা মেশে না ঠিকই। কিন্তু সুগারফ্রী-র একটা উপাদান, ঐ দুটোর মাঝে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে, আর একটা এমন নতুন যৌগ তৈরী করছে যেটা… যেটার নাম আমার কম্পিউটারের ডাটাবেসে নেই। পরে ইন্টারনেটে খুঁজে দেখব অবিশ্যি, কিন্তু.... আমার মন বলছে এ জিনিস আজ ইস্তক অজানা। কারণ আমি এ ধরনের পরমাণু-বিন্যাস বাপের জন্মে দেখিনি।

কেন দেখিনি, তার কারণটাও একটু পরেই বুঝতে পারলাম। কম্পিউটারের রিপোর্টের ল্যাজে ছোট করে একটা নোট ফুটে উঠেছে। বলছে, ঐ নতুন যৌগটি রসায়নের স্বাভাবিক ধর্ম অনুযায়ী "আনস্টেবল" - খুব বেশী হলে চার-পাঁচ মিনিট মাত্র ওটা থাকে, আর তার পরেই অন্য তিনটে "স্টেবল" অণুতে ভেঙ্গে যায়। টেনশনের কথা হল, ঐ তিনটে ‘স্বাভাবিক’ রাসায়নিকের মধ্যে দুটি অতি বিষাক্ত - আমার চেনা; মাসতিনেক আগে ফর্মুলা বি-১০ বাতিল করতে হয়েছিল কারণ এগুলো চলে আসছিল এন্ড সলিউশনের মধ্যে।

তাহলে ব্যাপারটা এই দাঁড়াল যে ঐ "সেক্স ককটেল" চার-পাঁচ মিনিটের বেশী "জুড়োতে" দেওয়া যাবে না। দেরী করলেই সে ককটেল রীতিমত বিষ হয়ে উঠবে।

হটাৎ একটা কথা ভেবে মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠল। এ ওষুধ তা হলে কারখানায় তৈরী করা যাবে না। এটা আমার একান্ত নিজস্ব ওষুধ! আর এর সুফল হোক বা কুফল, সবই আমার নিজের ওপর দিয়েই যাবে।

দূর, কীসব উল্টোপাল্টা ভাবছি! আমি আর ঐ ওষুধ খাবোই না তো সুফল-কুফলের কথা উঠছে কোথা থেকে।

অবিশ্যি আমাকে নিজের কাছে স্বীকার করতে হল যে এখনো পর্যন্ত কুফলের চাইতে সুফলই বেশী পেয়েছি। দীপালির ওপর পাশবিক ব্যবহার করেছি বটে, কিন্তু তার আসলে ভালোই লেগেছে (যেটা আমার কাছে একটা রহস্য)। আর আমি.... মানে, অন্য লোকটা কেমন এনজয় করেছিল সেই সময়টা? বলছি বটে অন্য লোক, কিন্তু আমার পরিষ্কারভাবে মনে পড়ছে কেমন লেগেছিল। আহহহ....

পাজামার দড়ি খুলে আমার পেনিসটাকে বাইরে নিয়ে এলাম। শক্ত হয়ে গেছে.... কিন্তু সেই সাইজ কী হল? ওটাও কী টেম্পোরারি ছিল?

নিশ্চয়ই তাই। আহা রে, কী অসাধারণ আকার নিয়েছিল জিনিসটা। সে জিনিস শুধু পর্নো ছবিতেই দেখা যায়।

আর একবার যদি হত....

কিন্তু আবার যদি নিজেকে হারিয়ে ফেলি? এবার যদি সামনে অন্য কোন মেয়ে থাকে? কোন স্বাভাবিক মেয়ে, দীপালির মত হাফ-ম্যাড স্পেসিমেন নয়? যদি রাস্তাঘাটে বেরিয়ে কিছু করে ফেলে অন্য লোকটা?

না, না, যদি বেশী ডোজ না খাই তা হলে নিশ্চয় নিজের ওপর কন্ট্রোল রাখতে পারব। কিন্তু কম ডোজ খেলে ওষুধটা কাজই করবে না হয়তো।

অল্প একটু নিশ্চয় করবে। কিছু তো পরিবর্তন দেখা যাবে।

বেশী খাব না। অল্প একটু।

আর অল্প চেঞ্জ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে, নোটও লিখতে পারব। আফটার অল, আমি বিজ্ঞানী। পর্যবেক্ষণ করাই তো আমার কাজ।

সামান্য চাখব মাত্র।

ধড়ফড় করে উঠে তাড়াতাড়ি ধড়াচূড়া পালটে বেরিয়ে পড়লাম। শরীরের মধ্যে এক অদ্ভুত অনুভূতি.... কিসের যেন টান। বড় ফাঁকা ফাঁকা, যেন জলতেষ্টা, কিন্তু খিদের মত। না, তাও নয়। যাচ্চলে, আমি কি অ্যাডিকটেড হয়ে পড়লাম না কি? নিকুচি করেছে, আগে আমাকে আর একবার টেস্ট করতেই হবে।

একটুখানি, বেশী না।

পৌঁছে দেখলাম আমাদের রিসার্চ ফ্লোর পুরো অন্ধকার। কেউ নেই। ওপরের তলায় অফিস গমগম করছে, আর নীচে ল্যাব ছমছম করছে। ভালো, উল্টোপাল্টা কিছু হলে সাক্ষী থাকবে না।

"উল্টোপাল্টা কিছু!" - ভাবতেই তলপেটে কেমন করে উঠল।

আমার সিকিউরিটি কার্ড পাঞ্চ করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম। সটান ল্যাবের কোনায় গিয়ে যে বীকারে রেডি সল্যুশন রাখা থাকে, সেটায় হামলা! তবে অল্প, অল্প.... সাবধান। এবারে মাথা ঠাণ্ডা করে চলতে হবে। দুটো ফর্মুলা মিলিয়ে মাত্র আধ টেস্টটিউব ভরলাম এবার।

ডেন-এ গিয়ে সুগারফ্রী-র একটাই বড়ি ফেললাম টিউবে। বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে মুখটা চেপে ধরে বারকতক ঝাঁকাতেই সেই ব্রিলিয়ান্ট কমলা রঙ চলে এল। বাহ!

দেরী না করে আমার "সেক্স ককটেল" ঢেলে দিলাম গলায়। আজ আরো ভালো টেস্ট লাগছে।

তারপর....

চুপচাপ বসে আছি..... আছি...... পাঁচ মিনিট গেল। দশ মিনিট।

ডোজটা কী খুব কম হয়ে গেল না কী?

আবার একটু বানাব?

আর অল্প একটু? বেশি না?

সাহস হচ্ছে না। যদি রাস্তায় বাড়াবাড়ি হয়ে যায়, আজ আর জ্যান্ত ফিরতে হবে না।

মিনিট কুড়ি বাদেও যখন কিছুই হল না, মনে মনে নিজেকে নিজে গালাগাল দিতে দিতে উঠে পড়লাম। আজকের টেস্ট ফেলিওর। সে যাকগে, ওটা নতুন কিছু নয় আমার কাছে - ব্যর্থ ফলও একটা ফল বৈকি। যেমন আজকের গবেষণার থেকে এটা জানা গেল যে আমার সেক্স ককটেল অল্পমাত্রায় কাজ করে না - অন্তত ছ-সাত মিলিলিটারের বেশী দরকার। কাল দেখব আবার চেষ্টা করে ঠিক কী ডোজ কাজ করে।

যাই বলি না কেন, নিজের মনের কাছ থেকে লুকোতে পারব কেন। আশাভঙ্গের গোমড়া মুখ নিয়ে উঠে এলাম বাড়ি যাবার পথে।





কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





mblanc-এর লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

mblanc-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইনডেক্স-এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment