আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
আগস্ট মাসের শেষের দিকে। দুপুরের পর থেকেই ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছিল, এই বছর মনে হয় অন্য বছরের চেয়ে একটু বেশি বৃষ্টি হবার সভাবনা আছে। অফিসে ওর বস, শান্তনুর সাথে একটু মনমালিন্য হয়েছিল, সেই নিয়ে একটু চিন্তায়। কাজের চাপের বুধাদিত্যকে কোনদিন ঝোঁকাতে পারেনি কিন্তু বসের সাথে মাঝে মাঝেই এই মনমালিন্য ঠিক আর পেরে উঠছেনা বুধাদিত্য। প্রান প্রেয়সী, ঝিলাম আবার স্কুল কলিগদের নিয়ে লাজপত নগর গেছে, শপিং করতে। সাথে গাড়ি টাও নিয়ে গিয়েছিল তাই বুধাদিত্যকে অটো করে বাড়ি ফিরতে হয়। শপিঙ্গে বেরনোর আগেই ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিল ঝিলাম যে ফিরতে দেরি হতে পারে। বাড়ি ঢোকা মাত্রই ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। অগত্যা একা বসে টিভি দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। রাত প্রায় ন’টা বাজতে চলল, বৃষ্টি যেন আরও জোরে শুরু হয়ে গেছে। দুই বার ফোন করে পেল না ঝিলামকে, একটু চিন্তায় পড়ে গেল বুধাদিত্য, এই বৃষ্টিতে কিছু হল নাকি গাড়ির অথবা ঝিলামের? গাড়ির কিছু হলে কালীনাথ ফোন করে জানিয়ে দিত। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে কালীনাথের ফোনে ফোন করে বুধাদিত্য।
কালীনাথ ঝিলামকে ফোন ধরিয়ে দেয়। বুধাদিত্য ফোন ধরেই বকা দেয়, “কি হল সেই কখন থেকে ফোন করে যাচ্ছি। ফোন ধরতে পার না তাহলে রেখেছ কেন?”
ঝিলাম বেগতিক দেখে রুদ্র রুপ ধারন করে, জানে এই রুপেই একমাত্র বুধাদিত্য বশ মানবে না হলে আরও চোটপাট শুরু করে দেবে তাই চেঁচিয়ে উত্তর দেয়, “চেচিয় না, আমি আগেই বলে দিয়েছিলাম যে আমার ফিরতে দেরি হবে। আর ফোন ধরতে পারিনি কেননা আমার দু’হাতে মেহেন্দি লাগানো, তাই।”
বুধাদিত্য নরম হয়ে যায় রুদ্র দেবীর সামনে, “না মানে এত রাত হয়ে গেল, এত বৃষ্টি তাই একটু চিন্তায় ছিলাম।”
ঝিলাম হেসে ফেলে, অসুধে কাজ হয়েছে, “উম্ম কত চিন্তা যেন আমার জন্য। যাই হোক আমি রাস্তায়, মনামি কে বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আসছি।”
বুধাদিত্য, “আজ হটাত মেহেন্দি লাগাতে গেলে, তাও আবার লাজপত নগর গিয়ে?”
ঝিলাম, “আরে বাবা, সব জেরা কি এখানে করবে নাকি। বাড়ি এসে বলছি সব কথা। ফ্রিজ থেকে খাবার গুলো বের করে গরম করে রেখ আর প্লিস সোনা, মিষ্টি সোনা, দুষ্টু সোনা, আমার জন্যে একটু স্যালাড বানিয়ে রেখ।”
বুধাদিত্য প্রশ্ন করে, “রাতে স্যালাড কেন খাবে?”
ঝিলাম কড়া সুরে উত্তর দেয়, “যেটা বলা হয়েছে সেটা কর, আমি বাড়ি ফিরে বাকি কথা বলব।”
হেসে ফেলে বুধাদিত্য, “জি মালকিন, আপনার আদেশ শিরধার্য। আমি আপনার আদেশ মান্য করিব। শুধু আপানার চাঁদ মুখের কিঞ্চিত তাড়াতাড়ি দর্শন পাইলে আমি অতীব পুলকিত হইতাম। যদি দয়া করে আপনার সারথিকে একটু তড়িৎ বেগে বাহন চালাইতে আদেশ দেন তাহলে...”
হেসে ফেলে ঝিলাম, “ওকে, বাবা, আমি এখুনি আসছি, কিন্তু জানত বৃষ্টি হলে রাস্তায় কত জ্যাম হয়।”
ঝিলাম স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে রান্না সেরে তারপরে ঘুরতে বেড়িয়েছে। বুধাদিত্য ফোন রেখে ফ্রিজ খুলে দেখল যে ভাত ডাল তরকারি সব বানানো। ডিপ ফ্রিজে খান চারেক মুরগির ঠ্যাঙ রাখা। বুধাদিত্য ভাবল এই বৃষ্টির রাতে নুডুলসের সাথে চিকেন লেগ বেশ ভালো জমবে। নুডুলস ঝিলামের খুব পছন্দের খাদ্য, বানিয়ে রাখলে ঝিলামকে একটু অবাক করে দেওয়া হবে। ওর জীবনে ঝিলাম পা রাখার পরে কোনদিন রান্না ঘরে ঢোকেনি বুধাদিত্য। বাইরে থেকে রান্না ঘর দেখে আর চেনা যায় না যে এটা তার ছন্নছাড়া রান্না ঘর ছিল।
রান্না ঘরে ঢুকে নুডুলস আর চিকেন রান্না করতে করতে গত কয়েক মাসের ছবি বুধাদিত্যের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ঝিলামকে সেই মৃত্যুর কবল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। শামুকের খোলে লুকিয়ে থাকা ঝিলামকে প্রেয়সী “ঝিল্লিরানী” তে পরিবর্তন করা। নিজের জীবন তাঁর হাতে সঁপে এক নতুন “বুধো”র আগমন। বুক ভরে শ্বাস নেয়, বারেবারে “দেবী”র কথা মনে পড়ে যায়, দেবস্মিতা ওর বাবাকে পাঁকের জীবন থেকে তুলে এনে এক নতুন জীবন প্রদান করে এখানে দুজনে দুজনা কে আঁকড়ে নতুন জীবনের আস্বাদ নেয় প্রতিদিন। হারিয়ে যাওয়া প্রেয়সীকে পেয়ে বুধাদিত্য সব ভুলে নিজেকে ঝিলামের হাতে সমর্পণ করে দিয়েছে। এই নতুন খুঁজে পাওয়া মুক্তির স্বাদে ঝিলাম এক নতুন নারী, দ্বিতীয় জীবনে অবশেষে মনের মানুষ খুঁজে পেয়ে ঝিলাম অতীব আনন্দিত। ভাগ্য সবার হয়ত সহায় হয়না তাই ঝিলাম এই জীবন দু’হাতে আঁকড়ে ধরে থাকে, তিলেতিলে সাজিয়ে সুন্দর করে তুলতে তৎপর। ঘরের দেয়াল, বিছানার চাদর, জানালার পর্দা, সোফার কভার, টেবিলের থালা বাটি গ্লাস পর্যন্ত যেন এই বাড়ির নব রাজ্ঞীর অধীন, এই প্রাসাদের রানীর ছোঁয়ায় ঝলমল করছে সর্বদা। রান্না শেষ, খাবার টেবিলে তিনটে মোমবাতি রাখে, একটা বড় কাঁচের বাটির মধ্যে কিছু ছোটো ছোটো সুগন্ধি প্রদীপ ভাসিয়ে দেয়।
সোফার ওপরে বসে পড়ে বুধাদিত্য, চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই প্রেমের দৃশ্য আর চনমন করে ওঠে বুধাদিত্যের শরীর। পরের দিন আর অফিস যেতে পারেনি বুধাদিত্য। ঝিলামের তীব্র অধর দংশন ওকে নিয়ে যায় এক অচিন পুরীতে, এক স্বপ্নের রাজ্যে। সেই রাতে বাড়ি ফিরে পরস্পরকে প্রান ঢেলে, হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসার শেষ কণা টুকু পরস্পরে অঙ্গে মাখিয়ে দিয়েছিল। বাড়ি ফিরতে সেদিন অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল, ঘরে ঢুকতেই পরস্পরকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে যেন একটাই শরীর। দুই প্রেমে উন্মাদ নাগ আর নাগিনী পরস্পরকে ছাড়তেই চায়না। সে যেন প্রেমের এক নবীন যুদ্ধ, কে কাকে হারিয়ে দেয় এই ভালোবাসার খেলায়। কেউ কাউকে ছাড়তে চায়না, চুম্বনে, মর্দনে, পেষণে সোহাগে ভরিয়ে বারেবারে সেই সুখের সাগরে ভেসে গিয়েছিল দুই প্রান। রাগরস সারা অঙ্গে মাখিয়ে ভোরের দিকে পরস্পরকে আলিঙ্গনে বেঁধে শোয়ার ঘরের মেঝের ওপরে ঘুমিয়ে পড়েছিল দুই ক্লান্ত কপোত কপোতী। পরের দিন সকালে ঝিলামের শরীরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে এক নতুন রুপ অপার তৃপ্তিতে, বুধাদিত্য অবশেষে খুঁজে পায় তার ভালোবাসার শীতল মলয়।
কলিং বেল শুনে সম্বিৎ ফিরে পায়। দরজা খুলে প্রেয়সীকে সাদর আহবান জানায়। ফর্সা হাত দুটি মেহেন্দি ঢাকা, দুই কাজল কালো চোখে দুষ্টুমির হাসি। কালীনাথ পেছন পেছন ব্যাগ নিয়ে ঘরে রেখে চলে যায়। বুধাদিত্য চুপ করে দাঁড়িয়ে একবার ঝিলামের আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে। ছাতার মতন বড় ঘেরের লম্বা সাদা রঙের কামিজ আর আঁটো চুড়িদার পরনে।
বুধাদিত্য হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার বলত, হটাত মেহেন্দি লাগাতে গেলে?”
ঝিলাম ওর বুকের ওপরে কুনুই দিয়ে গুত মেরে বলে, “এমনি ইচ্ছে হল তাই সাজলাম একটু।” বুধাদিত্য ওর কোমর জড়িয়ে ধরে বুকের কাছে টেনে আনে। ঝিলাম চেঁচিয়ে ওঠে “এই ছাড়ো ছাড়ো, হাতের মেহেন্দি ঘ্যেচে যাবে যে।” বুধাদিত্য ওর গালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়। ঝিলাম অগত্যা নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, “এবারে সত্যি বলছি হাতের মেহেন্দি কিন্তু মুখে মাখিয়ে দেব, তখন বুঝবে।”
বুধাদিত্য হেসে উত্তর দেয়, “তুমি নিতাই গৌরাঙ্গ হয়েছ তাই ত একটু দুষ্টুমি করার সুযোগ পেলাম।”
ঝিলাম, “প্লিস সোনা, করো না।”
বুধাদিত্য, “তা কতক্ষণে এই মেহেন্দি তোমার হাত থেকে ছাড়াবে?”
ঝিলাম, “একটু লেবু কেটে নিয়ে এস না, প্লিস।”
বুধাদিত্য, “এই সাদা ড্রেস পড়ে তুমি মেহেন্দি ছাড়াবে, যদি কাপরে লেগে যায় তাহলে?”
ঝিলাম নিচের ঠোঁট চেপে হেসে ফেলে, “সত্যি বলছ যে দুষ্টুমি করবে না?” বুধাদিত্য মাথা নাড়ায়, না করব না। ঝিলাম কানেকানে বলে, “সালোয়ার নামিয়ে দাও।”
বুধাদিত্য ঝিলামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর মুখের দিকে তাকায়। ঝিলামের মুখ লাল হয়ে যায় একটু লজ্জায়। বুধাদিত্যের হাত ওর পায়ের সালোয়ারের ওপর দিয়ে ওর বক্র পায়ের গুলির উপরে আদর করে কামিজ উপর দিকে উঠিয়ে দেয়। ঝিলামের শরীর শিরশির করে কেঁপে ওঠে সেই প্রেমের পরশে। বুধাদিত্য ওর কোমরে হাত নিয়ে ওর নগ্ন পেটের ওপরে আলতো করে চেপে ধরে। ঝিলাম আলতো কোমর নাড়ায়, আর বুধাদিত্য দুই পাশে হাত রেখে ওর পাতলা কোমর চেপে ধরে।
সারা অঙ্গে এক বিদ্যুৎ খেলে যায় ঝিলামের, কঠিন তপ্ত আঙুল ওর নরম পেটের ওপরে খেলা করতে শুরু করে। ঝিলাম মৃদু কণে আদেশ দেয়, “বুধো প্লিস, আমি কিন্তু খুব মারব এবারে।”
বুধাদিত্য ধিরে ধিরে ওর চুড়িদারের দড়ি খুলে দেয়, গোড়ালির কাছে টেনে নামিয়ে দেয় পরনের চুড়িদার। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঝিলাম, ওর নগ্ন কোমরে বুধাদিত্যের তপ্ত আঙুল নরম পেটের ওপরে খেলা করে চলে। কোমরবন্ধনীর পাশে হাত রেখে আলতো করে আঙুল দিয়ে চাপ দেয়। ঝিলামের সারা শরীর অবশ হয়ে আসে, চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে উত্তেজনায়। কোনরকম সামনে ঝুঁকে বুধাদিত্যের মাথার ওপরে কুনুই দিয়ে ঠ্যালা মারে। বুধাদিত্যের হাত কোমর ছাড়িয়ে ঝিলামের কোমল নিটোল নিতম্বের তপ্ত ত্বক স্পর্শ করে। ঝিলামের দুই উরুতে কাপন ধরে, দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি হারাতে থাকে ললনা। বুধাদিত্য দুই হাতের থাবার মধ্যে দুই সুডৌল নিটোল ভারী নিতম্বে আলতো চাপ দিয়ে ওর মুখের কাছে টেনে ধরে ঝিলামের পেট।
ঝিলামের সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে, মৃদু কণে বলে, “বুধো প্লিস, সোনা এখন না।” বুধাদিত্য কামিজের ওপর দিয়ে ওর নরম পেটের ওপরে সুগভীর নাভির ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে। ঝিলাম মৃদু শীৎকার করে ওঠে, “শয়তান ছেলে, ছাড়ো প্লিস।”
বুধাদিত্য প্রেয়সীকে আরও উত্যক্ত করে তোলে, দুই হাতের দশ আঙুলে চেপে ধরে কোমল নিতম্বের মাংস। গরম ত্বকের ওপরে গরম আঙ্গুলের পেষণে ঝিলামের উরু কেঁপে ওঠে। ঝিলাম যদি নিজেকে এই প্রগাড় আলিঙ্গন থেকে নিজেকে না ছাড়িয়ে নেয় তাহলে এখুনি চেতনা হারিয়ে লুটিয়ে পড়বে বুধাদিত্যের কোলে। হাঁটু দিয়ে বুধাদিত্যের মুখের ওপরে ঠেলে দেয়, কোনোরকমে সরিয়ে দেয় বুধাদিত্যকে। বুধাদিত্য ওকে ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, আর সেই ক্ষণে ঝিলাম দৌড়ে পালিয়ে যায় ঘরের মধ্যে।
বাথরুমে ঢুকে মৃদু বকুনি দেয় দয়িতকে, “তুমি না, একদম জানো, মস্ত শয়তান।”
বুধাদিত্য, “উফফফ... তোমার ওই সেক্সি শরীর থেকে হাত সরাতে ইচ্ছে করে না যে।”
ঝিলাম, “আমি স্যালাড কেটে রাখতে বলেছিলাম, সেটা করেছ?”
বুধাদিত্য, “না, স্যালাড কেন খাবে? আমি নুডুলস আর চিকেন বানিয়েছি তোমার জন্য।”
ঝিলাম অবাক সুরে জিজ্ঞেস করে, “কি! তুমি রান্না ঘরে ঢুকেছিলে? জিনিস পত্র পেলে খুঁজে?”
বুধাদিত্য, “হ্যাঁ খুঁজে নিলাম।”
ঝিলাম, “দাঁড়াও আমি এখুনি আসছি”
ঝিলাম হাত ধুয়ে কাপড় বদলে খাওয়ার ঘরে এসে দেখে যে টেবিলে মোমবাতি রাখা, একটা কাঁচের বড় বাটিতে সুগন্ধি গোলাপ জল আর তাঁর মাঝে কয়েকটা ছোটো ছোটো প্রদীপ জ্বালান। টেবিলে দুটি প্লেট সাজানো। টেবিলের মাঝে দুটি কাঁচের বাটিতে নুডুলস আর চিলি চিকেন রাখা। ঝিলামের দুই চোখ ছলছল করে ওঠে। বুধাদিত্য ঝিলামকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। ঝিলাম ওর হাতের ওপরে হাত রেখে নিজের শরীরের শক্ত করে বেঁধে নেয় ওই দুই কঠিন হাতের বন্ধন। মাথা পেছন দিকে হেলিয়ে ওর কাঁধের ওপরে রাখে, শক্ত করে ঠোঁট চেপে কঠিন চোয়ালের ওপরে।
বুধাদিত্য ফিসফিস করে বলে, “মাঝে মাঝে প্রেমিকাকে একটু রেস্ট দিতে হয়, তাই ভাবলাম ডিনার আমি বানিয়ে রাখি।”
ঝিলাম, “তুমি রান্না করেছ, ঝাল হোক, পোড়া হোক। তুমি যদি বিষ দাও তাও খাবো আমি।”
বুধাদিত্য, “ঝিল্লিরানি প্লিস ওই কথা বল না। অনেক কষ্টে কুড়িয়ে পাওয়া এই দ্বিতীয় জীবন।”
ঝিলাম ছলছল চোখে দুই হাত ওর চোখের সামনে মেলে ধরে বলে, “দেখ, মেহেন্দির রঙ কত গাড় হয়েছে, তাই না।”
বুধাদিত্য ওর গালে গাল ঘষে বলে, “ফর্সা হাতের ওপরে দারুন মানিয়েছে। শালা যে লোকটা ওই হাত ধরে এঁকেছিল তাঁর ওপরে হিংসে হচ্ছে।”
ঝিলাম আলতো কামড় দেয় বুধাদিত্যের গালে, “ধুত, তুমি না, সত্যি...”
বুধাদিত্য, “কিন্তু তুমি স্যালাড কেন খেতে চেয়েছিলে?”
ঝিলাম একটু আহত সুরে বলে, “আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি, জানো আমার ওজন বেড়ে গেছে, ছাপ্পান কিলো হয়ে গেছে তোমার ঝিল্লিরানী।”
বুধাদিত্য ওকে দুই হাতের মধ্যে পিষে ধরে বলে, “না ঝিল্লি, কে বলেছে তুমি মোটা। তোমার ঠিক জায়গায় ঠিক ঠিক বেড়েছে, আমার সুবিধা হয়েছে একটু নরম নরম আদর করতে।”
ঝিলাম লাজুক হেসে বলে, “ইসসস... তুমি না... সবসময়ে উলটোপালটা ভাব। ছাড়ো এখন।” বুধাদিত্যের আলিঙ্গনের মাঝে ওর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে, “খেতে দেবে না তোমার প্রেমিকাকে? আমার যে খিধেতে পেট জ্বলছে গো।”
বুধাদিত্যের জীবনশৈলী আমুল বদলে দিয়েছে ঝিলাম, কড়া শাসন, রাত ন’টার মধ্যে রাতের খাওয়া সেরে ফেলতে হয়। ঝিলামকে সকাল সকাল উঠে স্কুল যেতে হয় তাই রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে। শুধু মাত্র ছুটির দিন গুলতে সেই নিয়ম একটু শিথিল হয়। খাওয়া শেষে বুধাদিত্য সোফার ওপরে গা এলিয়ে শুয়ে পড়ে, আগামিকাল শনিবার, দুজনের ছুটি। বাইরে ঝড়ের তান্ডব বেড়ে যায়। বুধাদিত্যের হৃদয় আকুল হয়ে ওঠে প্রেয়সীকে ক্রোরে নিয়ে খেলার জন্য। ঝিলামের নুপুরের শব্দে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকায় ওর দিকে। পরনে একটা পাতলা মোলায়ম স্লিপ, সারা অঙ্গে মাদকতার ছন্দ তুলে ওর দিকে দুষ্টু মিষ্টি হেসে এগিয়ে আসে। চলনের তালে তালে দুই নিটোল ভারী নিতম্ব দোল খায়। স্লিপের নিচের অংশ বারেবারে জানুসন্ধি থেকে সরে গিয়ে দেখা দেয় পরনের গোলাপি ক্ষীণ প্যান্টি। নারীসুধার দ্বারে চেপে বসে অবয়াব ফুটে উঠেছে ওই পাতলা কাপড়ের ভেতর থেকে। দুই উরু যেন দুই মসৃণ স্ফটিকের থাম, বসার ঘরের মৃদু আলোতে চকচক করছে শরীরের ত্বক। ওর মুখের দিকে তাকাতেই ঝিলাম হেসে ফেলে। ঠোঁট দুটি অতীব গোলাপি আর মধুভরা। স্লিপের ভেতর থেকে দুই উন্নত বক্ষ সামনের দিকে ঠিকরে বেড়িয়ে এসেছে। ভেতরে কোন বখবন্ধনি পরেনি ঝিলাম, তাই দুই পীনোন্নত বক্ষের আবছা অবয়াব দেখা যায়। কোমল বক্ষের উপরে স্থিত দুই শক্ত বৃন্ত যেন দুটি ছোটো রসালো ফল, বুধদিত্যের চুম্বনের অধীর প্রতীক্ষায় ওর দিকে উন্মুখ হয়ে চেয়ে।
ঝিলাম ওর পাশে বসে আলতো ঠেলে বলে, “এই একটু সর, আমি শোব।”
বুধাদিত্য দুই হাতে আলতো করে জড়িয়ে ধরে প্রেয়সীকে। ঝিলাম ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে বুধাদিত্যের শরীরের ওপরে শুয়ে পড়ে। দয়িতার হাত নিজের হাতের মুঠির মধ্যে নিয়ে ছোটো ছোটো চুমু খায় ঝিলাম। বুধাদিত্য বাম হাতে ঝিলামের পেটের ওপরে রেখে জড়িয়ে ধরে থাকে। বুধাদিত্যের হাতের চাপে কেঁপে উতে ঝিলাম ওর ডান হাত মুখের কাছে এনে আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দেয়। দুই হাতে আস্টেপিস্টে চেপে ধরে ঝিলামকে, সাপের মতন একেবেকে নড়ে ওঠে ঝিলাম, নিটোল নিতম্বের নিচে উঁচিয়ে ওঠে বুধাদিত্যের সুদীর্ঘ কঠিন সিংহ। বুধাদিত্যের হাত ছাড়িয়ে ওর বুকের ওপরে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে ঝিলাম। নড়ার ফলে নিতম্ব থেকে স্লিপ উপরে উঠে কোমর চলে আসে। বুধাদিত্য এক হাতে ঝিলামের পিঠ ধরে নিজের বুকের সাথে স্তনজোড়া চেপে দেয় অন্য হাতে নিতম্ব চেপে জানুসন্ধিতে নিজের কঠিন সিংহ স্পর্শ করিয়ে দেয়। সেই তপ্ত শলাকার স্পর্শে ঝিলাম অবশ হয়ে যায়। আবেগের বশে গলা চেপে ধরে বুধাদিত্যের আর নিজের উরু মেলে ধরে নারীসুধার দ্বারে চেপে ধরে বুধাদিত্যের কঠিন সিংহ। বিশাল টিভি স্ক্রিনে কোন এক মারদাঙ্গা ইংরাজি সিনেমা চলছে, সেদিকে বিশেষ কারুর মন নেই, দুজনে পরস্পরের আদরে সোহাগে, অনুরাগে তরী ভাসাতে ব্যাস্ত।
ঝিলাম বুকের কাছে হাত ভাঁজ করে মাথা উঠিয়ে বুধাদিত্যের নাকের ডগায় আঙুল বুলিয়ে বলে, “বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে জানো।”
বুধাদিত্য, “হুম সেত অনেক ক্ষণ ধরে হচ্ছে।”
ঝিলাম, “তুমি আজ হটাত করে রান্না করতে গেলে?”
বুধাদিত্য, “তুমি হটাত করে সাজতে পার তাহলে আমি রান্না কেন করতে পারি না।”
ঝিলাম, “গাড়িতে তেল শেষ নাহলে ঘুরতে নিয়ে যেতে বলতাম। বেশ কোথাও ফাঁকা জায়গায় গিয়ে দু’জনে বৃষ্টিতে ভিজতাম।”
বুধাদিত্য, “তারপরে তোমার জ্বর হত আর আমার অফিস মাঠে মারা যেত।”
ঝিলাম, “ধুর পাগল বৃষ্টিতে ভিজলেই কি জ্বর হয় নাকি? ছোটো বেলায় অনেক ভিজেছি, দুর্গাপুরে বর্ষা কালে খুব বৃষ্টি হয়।”
ঠিক তখন ঝিলামের মোবাইল বেজে ওঠে, ভাটা পড়ে ওদের সোহাগের খেলায়। ওপাশে অনিন্দিতাদি, “কিরে তোরা কি ঘুমিয়ে পড়েছিস নাকি রে?”
ঝিলাম এক হাতে ফোন অন্য হাত বুধাদিত্যের হাত নিজের বুকের ওপরে টেনে ধরে বলে, “দিদিভাই, কেমন আছো তোমারা?”
অনিন্দিতাদি, “আমরা ভালো আছি। তোরা কি আমাদের একটু শান্তি দিবি।”
ঝিলাম অবাক, “কেন কি হল?”
অনিন্দিতাদি হেসে ফেলে, “তোদের ছেলে কি শেষ পর্যন্ত তোদের বিয়ে খেতে যাবে?”
ঝিলাম লজ্জায় পড়ে যায়। বাবা মা গত মাসে এসে ঘুরে গেছেন, দেখে গেছেন মেয়ের নতুন রুপ। একটু ইতস্তত করেছিলেন ঝিলামের বাবা মা, বুধাদিত্য আর ঝিলামের এখন বিয়ে হয়নি এবং একসাথে আছে, এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলেন। ঝিলাম নিজের বাবা মাকে বলেছিল যে, লাল চেলি আর সিল্কের জোড়ের বাঁধন শুধু কাপড়ের গিঁট মাত্র। নিজের জীবন দিয়ে সেই গিঁটের সত্যতা বুঝেছে। দুই হৃদয়ে যদি গিঁট না পরে তাহলে কাপড়ের গিঁট বেঁধে কি লাভ? বুঝিয়ে বলেছিল বিয়ে করলেই যে ছেড়ে যাবে না আর বিয়ে না করলেই যে মানুষের ছাড়াছাড়ি হয়ে যেতে পারে, সেই সব অবান্তর ধারনা। যেখানে দুই হ্রদয়ের বন্ধন মজবুত হয় সেই সম্পর্কে বিয়ে হোক বা না হোক কিছু এসে যায় না। ওর বাবা মা, সমাজের একটু দোহাই দেন, ঝিলাম ওদের আসস্থ করে বলেছিল যে, সময় হলে ঠিক বিয়ে করে নেবে। ঝিলামের নতুন চাকরি আর দুই মাস আগে বুধাদিত্য ওর শরীর খারাপের সময় অনেক ছুটি নিয়েছিল, ছুটির ব্যাবস্থা করে একদিন সবাইকে ডেকে রেজিস্ট্রি সেরে নেবে। মেয়ের জীবনে আনন্দ আর হাসি মুখ দেখে বেশি কথা বাড়ায়নি ওর বাবা মা।
ঝিলাম লজ্জায় পড়ে যায়, “না না সে রকম কিছু হবে না, চিন্তা নেই।”
অনিন্দিতাদি, “কেন রে ঝগড়া করেছিস নাকি তোরা?”
বুধাদিত্যের হাত দুটি ঝিলামের নিটোল নিতম্বের ওপরে খেলা করে, বুধাদিত্যের দিকে ঠোঁট কুঁচকে একটা চুমু খেয়ে অনিন্দিতাদিকে উত্তর দেয়, “বুধোর সাথে ঝগড়া’ত আমাদের দিনের একটা নিত্য কাজ, সে আবার নতুন কি।”
অনিন্দিতাদি, “বাপরে, প্রেমে মরে গেলাম। এবারে বিয়টা করে ফেল। ভাই কোথায়?”
বুধাদিত্য ঝিলামকে আদর করতে করতে বলে, “আমি এখানেই আছি, বল আমি সব শুনতে পাচ্ছি।”
অনিন্দিতাদি গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কোলে নিয়ে শুয়ে নাকি?”
ঝিলাম বুধাদিত্যের নাকের ওপরে নাক ঘষে বলে, “দিদিভাই, তুমি না, আবার শুরু করে দিলে।”
অনিন্দিতাদি, “আচ্ছা বাবা, এবারে বল কবে বিয়ে করছিস তোরা?”
ঝিলাম, “বিয়ে’ত শুধু একটা অনুষ্ঠান মাত্র, অত তাড়াহুড়ো করার কি আছে। সময় হলেই হয়ে যাবে, আর আমাদের অতশত কিছু করার নেই, শুধু দু’জনে একটা সই দেব ব্যাস, কয়েক ঘন্টার ব্যাপার। জানিয়ে দেব তোমাদের, চিন্তা নেই।”
অনিন্দিতাদি হেসে বলে, “তার মানে তোর ছেলে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে যে বাবার বিয়ে দেখেছি।”
বুধাদিত্য, “তোমার কি শুরু করেছ বলত।”
দেবস্মিতা, “বাপ্পা দাদার বিয়ে দেখতে চায়।”
ঝিলাম আর বুধাদিত্য দু’জনেই অবাক, অনিন্দিতাদির বাড়িতে দেবস্মিতা, ব্যাপার বুঝতে একটু কষ্ট হয়। অনিন্দিতাদি হেসে বলে, “কি রে চমকে গেলি নাকি? দেবস্মিতা আজ বিকেলে বাপ্পা আর পিসেমশায়কে নিয়ে বাড়িতে এসেছে। আমরা সবাই মায়ের বাড়িতে।”
ঝিলাম অবাক, “তোমার সবাই কি পন্ডিতিয়ায়? দাও দাও মাকে একটু ফোন দাও।” ঝিলাম প্রমীলা দেবীকে মা বলে ডাকে।
প্রমীলা দেবী ফোন ধরেই ঝিলামকে জিজ্ঞেস করে, “তোর শরীর কেমন আছে রে? ঠিক মতন আয়রন ট্যাবলেট খাচ্ছিস তুই? গত সপ্তাহে ডাক্তারের কাছে যাবার কথা ছিল, গিয়েছিলি কি?”
ঝিলাম বেমালুম ভুলে গেছিল গায়নকলজিস্টের কথা, তাই জিব কেটে বলল, “না মা, একদম ভুলে গেছিলাম। প্লিস রাগ করোনা সোনা মা। আমি পরের সপ্তাহে দেখিয়ে নেব।”
প্রমীলাদেবী মৃদু বকুনি দিয়ে বলেন, “দে’ত ছোঁরা টাকে ফোন দে। তোকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যেতে পারল না? কি এমন কাজ করে দেখি।”
ঝিলাম প্রমীলা দেবীকে বলে, “না না, বুধোর দোষ নয়। ওকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।”
বুধাদিত্য অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “শোনো পমুডার্লিং তোমার আর ঝিল্লীর কথার মধ্যে আমাকে একদম জড়াবে না। ঝিল্লি আমাকে ডাক্তাররে ব্যাপারে কিছু বলে নি।”
ঝিলাম নাক কুঁচকে, বুধাদিত্যের দিকে তাকিয়ে নিচু গলায় বলে, “সরি বুধো।” তারপরে প্রমীলাদেবীকে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার তোমরা বেশ মজা করছ তাই না।”
প্রমীলা দেবী, “জামাই ষষ্টির সময়ে সুব্রত বাইরে ছিল, আসতে পারে নি। সুবিরকে ও কোনদিন ডেকে খাওয়ান হয়নি। তাই ওদের সবাইকে একসাথে ডেকেছি। এমনিতে দেবস্মিতা খুব ব্যাস্ত থাকে, সময় নিয়ে আসতে একটু দেরি হয়ে গেল এই আর কি।”
দেবস্মিতা, “না কি করে মজা করি বলত, তোমরা দু’জনে যে নেই।”
ঝিলাম, “তুমি বাপ্পাকে নিয়ে চলে এস এখানে।”
দেবস্মিতা, “আমার বুড়টাকে কে দেখবে, তুমি? যদি বলি সাইটে গাড়ি পাঠাও তাহলে আমার গাড়ি সাইটে পাঠিয়ে দেয় আর ওয়ার্কারদের ভ্যান পাঠায় আমাকে আনতে, এই ত আমার বুড়ো। ছেড়ে কি আর যেতে পারি, বল।”
বুধাদিত্য, “তোমরা সবাই একসাথে বসে কি জল্পনা করছ বলত?”
অনিন্দিতাদি, “তোদের এবারে বিয়েটা দিয়েই ছারব আমরা, তাঁর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বাড়ি বসে।”
প্রমীলাদেবী, “শোন রে, বুধি, ঝিলামের জন্মদিনের দুই দিন পড়ে একটা ভাল দিন আছে। ঠিক বিয়ের নয় তবে ভালো দিন, শুভ কাজ করা যায়। তোরা ত আর বিয়ের তারিখ মেনে বিয়ে করবি বলে মনে হয় না তাই ভাবলাম যে ওই দিনে যদি...”
ঝিলাম প্রমীলাদেবীর কথা টেনে নিয়ে বলে, “ঠিক আছে মা, তোমার এত ইচ্ছে তাহলে আমরা করেই নেব।”
দেবস্মিতা, “উফফফ হাঁফ ছেড়ে বাচলাম শেষ পর্যন্ত। তাড়াতাড়ি তাহলে সব শুরু করতে হয় আর ত মোটে দিন কুড়ি। বিয়ে কিন্তু ধানবাদ থেকে হবে।”
বুধাদিত্য ঝিলাম এক সুরে বলে ওঠে, “না, আমরা দিল্লীতেই বিয়ে করব। আর বিয়েতে শুধু বাড়ির লোক ছাড়া কেউ আসবে না।”
প্রমীলা দেবী আঁতকে ওঠেন, “মানে? দিল্লীতে হলে আমরা যাব কিকরে? তোর বাবা মা দাদারা দিদিরা কি করে যাবে? তুই নিয়ে যাবি?”
ঝিলাম ক্ষণিকের জন্য চিন্তায় পর যায়, অদের পরিবার অনেক বড়, দিল্লীতে নিয়ে আসা বেশ খরচ সাপেক্ষ। দেবস্মিতা হেসে বলে, “ঝিলাম এত চিন্তা করছ কেন? আমার বন্ধুর বিয়ে বলে কথা, বল’ত রাজধানি বুক করে দেব।”
ঝিলামের চোখ বন্ধ করে দেবীর মুখ স্মরন করে, একবারের জন্য দেখেছিল সেই সময়ে। ধরা গলায় বলে দেবস্মিতাকে, “তুমি সত্যি দেবী।”
দেবস্মিতা, “তাহলে তারিখ সেটাই থাকল, আমরা সবাইকে নিয়ে তোমার জন্মদিনের দিন পৌঁছে যাব দিল্লী। বেশ মজা হবে তোমার জন্মদিন আর দুই দিন পড়ে তোমার বিয়ে।”
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি, আকাশে বর্ষার মেঘের খেলা একটু কমে গেছে। বাড়িতে দুই দিন আগে থেকেই লোকজন ভর্তি। ঝিলামের জন্মদিনের দিন কোলকাতা, ধানবাদ থেকে সবাই চলে আসে। বুধাদিত্য ঝিলামের ফ্লাট একটা রনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই কদিনে। দুর্গাপুর থেকে ঝিলামের বাবা মা, দুই দাদা আর তাদের পরিবার, দুই দিদি আর তাদের পরিবার মিলিয়ে জনা পনের জন লোক। রঞ্জন বাবু, প্রমীলা দেবী, অনিন্দিতাদি, বুবাই, সুব্রত দা ওদিকে ধানবাদ থেকে দেবস্মিতা বাপ্পা আর সুবিরবাবু। সকাল থেকে বাড়িতে সাজসাজ রব, কোলাহল শুনে মনে হবে যেন এক রণক্ষেত্র। চার দিনের জন্য একটা হোটেলের তিনটে রুম ভাড়া করা হয়েছিল, পুরুষেরা ছাড়া সেই হোটেলে কেউ থাকেনি। বাড়ির মেয়েরা বাড়িতেই ছিল এই ক’দিন। এই ক’দিন বুধাদিত্য অফিসে গিয়েছিল কিন্তু ঝিলাম আর স্কুল করতে পারেনি। দেবস্মিতা ওকে নিয়ে পরপর দুই দিন লাজপত নগর, এস.এন.মারকেট করে বেড়িয়েছে। ঝিলামের মা রান্না বান্নার ভার সামলে নিয়েছিলেন। দেবস্মিতা আর অনিন্দিতাদি এই কদিনে বাড়ির সব কিছু সামলে নিয়ে রেখেছে। ঝিলামের দিদিরা এই প্রথম বার রাজধানি চেপে দিল্লী এসেছে, তাই গত দুই দিন বর আর বাচ্চাদের নিয়ে দিল্লী ঘুরে বেড়িয়েছে।
সবাই বাড়ির লোক তাই আর বিশেষ কিছুই আয়োজন করা হয়নি। বাইরের মানুষ বলতে, ভিশাল স্যার আর শমিতা ম্যাডাম আর তাদের ছেলে বেদান্ত অন্যদিকে মনামি তার বর, নিরঞ্জনকে নিয়ে আসবে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রার, নিরঞ্জনের চেনা, তাই নিরঞ্জনের সাথে সন্ধ্যে নাগাদ আসবে। মনামি সকালবেলাতেই পৌঁছে ঝিলামের বাড়ি পৌঁছে যায়। ঝিলামের বাবা, বুধাদিত্যের বাবা আর রঞ্জন বাবু একটু বয়স্ক তাই তারা বসার ঘরে এসব থেকে দুরে নিজেদের মতন গল্পে ব্যাস্ত। অনিন্দিতাদি বুধাদিত্যের জন্য ধুতি পাঞ্জাবী কিনে এনেছিল, বুধাদিত্য সেই কাপড় পড়তে নারাজ, জেদ করে বসে ঝিলাম উপহার দেওয়া সুট পরে বিয়ে করবে। বাপ্পা বুবাই আর বাকি বাচ্চারা লাফালাফি দৌড়া দউরি করে ঘর মাতিয়ে তুলেছে। ঝিলামের বড়দি বড় মেয়ে, সঙ্গীতা, মিউসিক সিস্টেমে গান চালিয়ে নাচ শুরু করে দিয়েছে। ওর দেখাদেখি বাকি বাচ্চারা বসার ঘর দখল করে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে।
বুধাদিত্য, সুব্রতদা আর ঝিলামের দাদারা আর দুই জামাইবাবু ওর স্টাডিতে বসে দরজা বন্ধ করে ড্রিঙ্কস করছিল। শোয়ার ঘর মেয়েদের দখলে চলে গেছে, দেবস্মিতা ঝিলামকে নিয়ে ব্যাস্ত। ঝিলামের মা আর প্রমীলাদেবী দুপুরে খাওয়ার পরে গেস্ট রুমে একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু বাচ্চাদের চেঁচামেচিতে সেই ঘুমের বারোটা বেজে গেল।
প্রমীলা দেবী একবার বুধাদিত্যকে জিজ্ঞেস করে গেলেন, “এই ছোড়া রাতের খাবারের ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবে’ত?”
বুধাদিত্য বেড়িয়ে এসে উত্তর দিল, “কেন, তার ব্যাপারে’ত আমি কিছু জানিনা। ওটা’ত দেবীর ডিপার্টমেন্ট। ওকে জিজ্ঞেস কর।”
দেবস্মিতা , “হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক সময়ে ওঃ ক্যালক্যাটা থেকে ডেলিভারি দিয়ে যাবে, চিন্তা নেই।”
অনিন্দিতাদি বুধাদিত্যকে এসে অনুরোধ করে, “আমি তোর জন্য সাধ করে ধুতি পাঞ্জাবী এনেছি আর তুই পরবি না?”
বুধাদিত্য, “না পরবো না। ওই বারো হাতি কাপড় সামলাতে পারব না।”
ঝিলাম ওদিক থেকে চেঁচিয়ে বলে, “আরে ওকে জোর করে কাজ নেই, বেঁকে বসলে আবার বিয়ে পিছিয়ে যাবে। দেবী এত কষ্ট করে ওঃ ক্যালক্যাটা থেকে ইলিস পাতুরি আর ডাব চিংড়ি অর্ডার দিয়েছে সব মাটি হয়ে যাবে।” সবাই ওর কথা শুনে হেসে ফেলে। ঝিলাম অর্ধেক সাজা নিয়ে ওর ঘরে ঢুকে আদেশ করে, “তুমি সুট পরলে আমি কিন্তু অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা ইভিং গাউন পরবো?”
বুধাদিত্য ঝিলামের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “তোমাকে সেই ড্রেসিং গাউনে কিন্তু দারুন দেখাবে, সেটাই পড়ে নাও।”
ঝিলাম চোখ পাকিয়ে বুধাদিত্যের দিকে রেগে চেঁচিয়ে বলে, “আমি শেষ বারের মতন বলছি।”
ঝিলামের মা উঠে চলে আসেন। মেয়ের রুদ্র রুপ দেখে বলেন, “কেন বকাবকি করছিস? ধুতি না পরলেও চলবে, সুট পড়তে চাইছে, ঠিক আছে, পরুক না, ক্ষতি কি। আজকাল অনেকেই পরে।”
ঝিলাম মায়ের ওপরে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “তুমি চুপ কর, ওকে চেন না। না চেঁচালে কোন কথা শোনে না। তুমি তোমার বাকি জামাইদের মতন ননীর পুতুল ভেবনা একে।”
সুব্রতদা ঝিলামের চোখ দেখে বুধাদিত্যকে বলে, “বউ কিন্তু ক্ষেপে গেছে, এবারে গুত খাবে। তাড়াতাড়ি একটা কিছু স্থির কর।”
অগত্যা বুধাদিত্য সুব্রতদাকে বলে, “দেখ বাবা আমি ধুতি পড়তে জানিনা, সুতরাং পড়িয়ে দিতে হবে আমাকে।” ঝিলামের দিকে তাকিয়ে বলে, “মাঝখানে যদি ধুতি খুলে যায় তাহলে...”
ঝিলাম ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “তুমি ধুতি পরে কি একশ মিটার রেস দেবে? যাবে ত সেই এই ঘর থেকে অন্য ঘর। চুপ করে পরে নাও।”
অনিন্দিতাদি ঝিলামের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল, ঝিলামের কথা শুনে বুধাদিত্যকে বলে, “বেশ হয়েছে এবারে, এই হল একদম স্কুল টিচারের মতন কথা। এবারে ছড়ি দিয়ে মারতে বলব।”
সুব্রতদা অনিন্দিতাদিকে বলে, “অনু, কে কাকে কোন ছড়ি দিয়ে মারবে সেটা আর বলতে হবে না।” অনিন্দিতাদি লজ্জায় পরে যায়।
দেবস্মিতা ওদিক থেকে ঝিলামকে ডাক দেয়, “এই মেয়ে তাড়াতাড়ি এস, বাকিটা শেষ করি।”
বুবাই মামিকে দেখে বায়না ধরে সেও বউ সাজবে। অনিন্দিতাদি বকা দিতে যায়, দেবস্মিতা ওকে বসিয়ে দিয়ে বলে যে ঝিলামকে সাজানোর পরে বুবাইকে সজিয়ে দেবে। বাপ্পা একবার বুধাদিত্যর ঘরে ঢুকে ওদের ড্রিঙ্কস করতে দেখে বায়না ধরে কোল্ড ড্রিঙ্ক খাবে। সুব্রতদা শেষ পর্যন্ত একটা ছোটো গ্লাসে কোল্ড ড্রিঙ্ক দেয় খেতে।
সুবিরবাবু এক বার এসে দেখে যান সবার অবস্থা, “কি হল, সন্ধ্যে হতে চলল। কিছু পরে’ত নিরঞ্জন রেজিস্ট্রারকে নিয়ে এসে যাবে। তোমাদের সাজাগোজা হয়েছে?”
দেবস্মিতা, “তোমার এত তাড়া কিসের বলত। মেয়েদের সাজতে একটু দেরি হয়। ঠিক সময়ে সব কিছু হয়ে যাবে। পারলে কাউকে নিয়ে সি.আর.পার্ক চলে যাও, একটু দই লাগবে আর মিষ্টির অর্ডার দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে এস।”
অগত্যা সুবিরবাবু বউয়ের বকা খেয়ে চুপচাপ কালীনাথকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন। অনিন্দিতাদির আনা গাড় বাদামি রঙের পাঞ্জাবী পরে বুধাদিত্য। সুব্রতদা বুধাদিত্যকে ধুতি পরিয়ে দেয়, সাথে কোমরের গিঁট বেশ আঁটো করে বেঁধে দেয় যাতে খুলে না যায়। দেবস্মিতা ঝিলামের জন্য একটা লাল পাড় ঘিয়ে রঙের দামী জাদমদানি শাড়ি এনেছিল, সেই শাড়িতে ঝিলামকে সাজিয়ে এক অপরূপ রানীর মতন সাজিয়ে তুলেছে। দেবস্মিতা সোনার গয়নায় সাজিয়ে তুলেছে ঝিলামকে। প্রমীলাদেবী ঝিলামের জন্য সুন্দর একটি লোহাবাঁধান এনেছিল, সেটা হাতে পড়িয়ে দেয়। বুধাদিত্য ঝিলামের মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে, কাছে গিয়ে কানেকানে বলে যে রাতে পাগল করে দেবে। ঝিলাম আলতো চাঁটি মেরে বলে সবার সামনে যেন কিছু দুষ্টুমি না করে বসে। বুবাই একবার মামার মুখের দিকে তাকায় একবার নতুন মামীর মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।
সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসে। নিরঞ্জন ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কে নিয়ে উপস্থিত। বসার ঘর লোকে লোকারণ্য। বুধাদিত্য আর ঝিলাম পাশাপাশি দাঁড়ায়। অনিন্দিতাদি একটা কুলোতে সব সাজিয়ে নিয়ে আসে, পান পাতা, প্রদীপ ইত্যাদি। প্রমীলাদেবী কালীঘাটে পুজো দিয়ে মায়ের পায়ে ছোঁয়ান সিঁদুর এনেছিলেন, সেটা অনিন্দিতাদির হাতে দিলেন। আগে সই তারপরে সিঁদুর না আগে সিঁদুর তারপরে সই। এর মাঝে সুব্রতদা বলে যে আগে আঙটি পড়ান উচিত। অনিন্দিতাদি বুধাদিত্যকে জিজ্ঞেস করে, বউয়ের জন্য আঙটি কেনা হয়েছে কিনা? বুধাদিত্য আর ঝিলাম পরস্পরের মুখ চাওয়াচায়ি করে, এখন আঙটি পড়াতে হবে নাকি, এই সব’ত অনেক আগেই ওরা সেরে ফেলেছে। অনিন্দিতাদি, ঝিলামের বউদিরা সবাই চেপে ধরে যে সেই আঙটি খুলে আবার নতুন করে ওদের সামনে পড়াতে হবে। ঝিলাম নিজের আঙটি খুলে বুধাদিত্যের হাতে দেয়, আর ঝিলামের দেওয়া আঙটি’টা বুধাদিত্যের আঙ্গুলে চেপে বসে। সেই নিয়ে সবার মধ্যে হাসাহাসি, বিয়ের আগেই বউ খাইয়ে মোটা করে দিয়েছে। অনেক কষ্টে সাবান জল দিয়ে আঙটি খোলা হয়। সুব্রতদা, ঝিলামের জামাইবাবুরা সবাই বুধাদিত্যকে চেপে ধরে যে ঝিলামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আঙটি পড়াতে হবে। ঝিলাম হেসে ফেলে বুধাদিত্যের করুন অবস্থা দেখে। “এই না না, এটা ঠিক হচ্ছে না।” “বসে পর শালা, একবার আমরা দেখি।” বলে ওঠে সুব্রতদা। সেই সাথে ঝিলামের জামাইবাবুরা বলে ওঠে, “এই যে বাবু, রোজদিন’ত কান ধরে উঠ বস করায়, তা আমাদের সামনে করতে লজ্জা কিসের।” বুধাদিত্য, “আমি হাঁটু গেড়ে বসে পড়িয়ে দেব একটা সর্তে, ও যদি আমার কোলে বসে আমাকে আঙটি পড়িয়ে দেয়।” সেই শুনে সবাই হেসে ফেলে। ঝিলামের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়। সুবিরবাবু আর রঞ্জনবাবু হেসে বলেন যে তারা কিছু শুনতে পাননি, এবারে কানে তুল গুঁজে বসে থাকবেন তারা। ঝিলাম বুধাদিত্যর বাজুর ওপরে চাঁটি মেরে বলে যে সব দুষ্টুমির শোধ নেবে পরে। দেবস্মিতা হাতে কুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে, ওদের মেয়েলিপনা দেখে বলে যে তাড়াতাড়ি কর, হাত ব্যাথা করছে। সেই শুনে সুবিরবাবু বলেন যে, “হে প্রিয়তমা, কুলো আর তুমি দুজনেই আমার কোলে চলে এস।” দেবস্মিতার ফর্সা মুখ লাল হয়ে যায়। প্রমীলাদেবী দেবস্মিতাকে আলতো ধাক্কা দিয়ে বলেন, “কিরে তোর’টা এই বয়সেও এমন নাকি? আমার’টা যদি আমার দিকে একটু চোখ মেলে দেখত।” ঝিলাম দেবস্মিতাকে জড়িয়ে ধরে প্রমীলাদেবীকে বলে, “তুমি দেবীর কাছ থেকে কিছু সাজার টিপস নিও তাহলে মামা তোমাকে নিয়ে আবার হানিমুন যাবে।”
বুধাদিত্য যথারীতি সবার চাপে পরে ঝিলামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আঙটি পড়িয়ে দেয়। আঙটি পরানোর সময় সবাই চেঁচিয়ে ওঠে যে একদম ইংরাজি স্টাইলে হাতে চুমু খেয়ে আংটি পড়াতে হবে। বুধাদিত্য চেঁচিয়ে বলে এবারে আর না, বউ নিয়ে পালিয়ে অন্য কোথাও বিয়ে করে নেবে। ঝিলাম ওর চিবুকে হাত রেখে ছোট্ট একটা চুমু খায়। সেই দেখে সবার হর্ষধ্বনি দিয়ে ওঠে। ঠিক করা হয় যে সই দিয়ে তারপরে সিঁদুর পরানো হবে। সই দেওয়া শেষ, কে কে সাক্ষী হিসাবে সই দেবে সেটা নিয়ে একটু প্রশ্ন ওঠে। বুধাদিত্য বলে যে, ঝিলামের বাবা, মামা আর দেবস্মিতা সাক্ষী দিলে হবে। রঞ্জনবাবু এর মাঝে বলে ওঠেন, এই যাঃ বিয়ের মন্ত্র যে পড়া হলনা, তাহলে বিয়ে কি করে সম্পন্ন হবে। সুবিরবাবু হেসে বলেন, তিনি মন্ত্র পরে দেবেন। তিনি ঋগ বেদের একটা মন্ত্র উচ্চারন করে বললেন বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে, ব্যাস বর বধু এবারে সিঁদুর পড়াতে পারে। দেবস্মিতা কুলো এগিয়ে ধরে বুধাদিত্যের দিকে। ঝিলামের মা বলেন, বাবা আঙটি দিয়ে সিঁদুর পড়াতে হয়। ঝিলাম বলে ওঠে, ধুর, একটা কিছু দিয়ে পরালেই হল। দেবস্মিতা বুধাদিত্যকে বলে যে দুই আঙ্গুলে একটু সিঁদুর তুলে ঝিলামের সিঁথিতে লাগিয়ে দিতে। বুধাদিত্য এক চিমটে সিঁদুর উঠায়, ঝিলামের ঠোঁটে হাসি, দু’চোখ ছলছল করে ওঠে। মাথা নিচু করে দাঁড়ায় ওর সামনে, বুধাদিত্য কপালে থেকে সিঁদুর মাথার মাঝখানে পর্যন্ত টেনে দেয়। দেবস্মিতা ওকে বলে যে তিন বার লাগাতে হয়। বুধাদিত্য দ্বিতীয় বার সিঁদুর নিয়ে লাগিয়ে দেয়, বেশ কিছু সিঁদুর কপাল ছাড়িয়ে গালে আর নাকে মুখ পরে যায়। ঝিলাম মৃদু হেসে বকুনি দিয়ে বলে যে ঠিক ভাবে সিঁদুর পরাতেও জানেনা। তৃতীয়বার একটু বেশি করে সিঁদুর নিয়ে প্রথমে ওর কপালে আর সিঁথিতে লাগিয়ে দেয়, তারপরে ইচ্ছে করে বাকি টুকু ঝিলামের নাকের ওপরে আর দুই গালে লাগিয়ে দেয়। ঝিলাম খুশির জোয়ারে প্রায় কেঁদে ফেলে। গালের থেকে একটু খানি সিঁদুর হাতে নিয়ে বুধাদিত্যের গালে আর কপালে লাগিয়ে দেয়। সবাই হেসে ওঠে ওদের সিঁদুর খেলা দেখে। ঝিলামের সারা গালে কপালে সিদুরে লাল হয়ে গেছে, সেই সাথে বুধাদিত্যের গালে ঝিলামের সিঁদুর লেগে। ভালোবাসার আবেগে আর নিজেকে সামলাতে পারেনা বুধাদিত্য, ঝিলামকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে। সুব্রতদা চেঁচিয়ে ওঠে, “শালাবাবু, নাউ ইউ মে কিস দা ব্রাইড।” বুধাদিত্য জিজ্ঞেস করে যে সপ্তপদীর পরে দিদিভাইকে মন্ডপে চুমু খেয়েছিল কি না? সিঁদুরের রঙ্গে ঝিলামের মুখ খানি লাল হয়ে ছিল, সুব্রতদার কথা শুনে লজ্জায় আরও লাল হয়ে ওঠে। বুধাদিত্য বাঁ হাতে ঝিলামের কাঁধ জড়িয়ে ধরে মাথায় ঠোঁট চেপে ধরে। ব্যাস, সেই দেখে অনিন্দিতাদি বলে, “হয়ে গেছে তোর কিস দেওয়া।” খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হল বেশ হই হুল্লোড়ে, সবাই দেবস্মিতার গুণগান করে। অবশ্য দেবস্মিতা রান্না করেনি, কিন্তু ওর পছন্দের মেনু দেখে সবাই আপ্লুত। ঝিলামের দিদিদের হোটেল পাঠিয়ে দেওয়া হল, কারন ঝিলাম আর বুধাদিত্য এবারে নিজেদের ঘর চায়। দেবস্মিতা আর প্রমীলা দেবী মিলে সবার রাতের ব্যাবস্থা করে দিল।
নিজেদের শোয়ার ঘরে ঢুকতেই বুধাদিত্য ঝিলামকে জড়িয়ে ধরে। সদ্য বিবাহিতা, অপরূপ সুন্দরী প্রেয়সীকে অনেকদিন পরে একা পেয়েছে। ঝিলাম বুধাদিত্যের বুকের ওপরে মাথা চেপে হৃদপিণ্ডের ধুকপুক শোনে অনেকক্ষণ, বড় শান্তি এই বুকের, এই আলিঙ্গনে নিরাপত্তার ছোঁয়া। বুধাদিত্যের বাহুপাসে মনের শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তে পারে ঝিলাম, আনন্দে চোখ থেকে দুই ফোঁটা অশ্রু বুধাদিত্যের পাঞ্জাবির বুক ভিজিয়ে দেয়। বুধাদিত্য ঝিলামের মুখ আঁজলা করে তুলে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। চোখে জল ঠোঁটে হাসি, চেহারায় অপার ভালোবাসা নিয়ে ঝিলাম বুধাদিত্যের গলা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে। কাজল কালো চোখের ভেতরে প্রেয়সীর ছবি এঁকে নেয় বুধাদিত্য।
প্রেয়সীর পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে নাকের ওপরে নাক ঘষে কানেকানে বলে, “অনেকদিন পরে খুঁজে পেলাম।”
ঝিলাম মিষ্টি হেসে বলে, “এই রকম সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি?”
বুধাদিত্যের উষ্ণ শ্বাস ঝিলামের সারা মুখ ভরিয়ে দেয়, ঠোঁট নেমে আসে গোলাপি কোমল অধরে। তিরতির করে কেঁপে ওঠে ঝিলামের ঠোঁট, অল্প ফাঁক করে আহবান জানায় দয়িতের ভালোবাসার চুম্বন। আবেগে চোখ বন্ধ হয়ে যায় ঝিলামের, বুধাদিত্যের গভীর চুম্বনে অবশ হয়ে আসে শরীর। বুধাদিত্যের উষ্ণ হাত ঝিলামের মসৃণ পিঠে আদর করে দেয়। পরনের বসন একে একে দেহ চ্যুত হতে শুরু করে। শাড়ির প্যাঁচে ঢাকা প্রেয়সীর নধর দেহপল্লব বুধাদিত্যের চোখের সামনে উন্মোচিত হয় ধিরে ধিরে। বুধাদিত্য হাঁটু গেড়ে ঝিলামের সামনে বসে পেটের ওপরে চুমু খায়। শ্বাস ফুলে ওঠে ঝিলামের। বুধাদিত্য ঝিলামের নরম পেটের ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে। ব্লাউসে ঢাকা পীনোন্নত বক্ষ যুগল প্রবল ঢেউ আছড়ে পরে। নাক চেপে বুক ভরে ঝিলামের গায়ের গন্ধে হৃদয় ভরিয়ে নেয় বুধাদিত্য। নিম্নাগের কটি বস্ত্রে ঢাকা নারীত্বের দ্বার সিক্ত হয়ে ওঠে, উরু জোড়ায় কাঁপন ধরে ঝিলামের। দশ আঙ্গুলে বুধাদিত্যের মাথা খামচে ধরে মিহি সুরে ককিয়ে ওঠে ললনা, “সোনা আর দুষ্টুমি করো না, এবারে আমাকে বুকে করে নাও...”
বুধাদিত্য উঠে পরে মেঝে থেকে, ঝিলামকে পেছন থেকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে। ঘাড়ের ওপরে মুখ নিয়ে কানের লতি, গাল ঘাড় চুম্বনে ভরিয়ে দেয়। ঝিলাম পেছনে হাত দিয়ে বুধাদিত্যের মাথা টেনে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। বুধাদিত্যের পুরুষাঙ্গ ঝিলামের নগ্ন নিতম্বের মাঝে আটকা পরে যায়। কোমল নিতম্ব কঠিন তপ্ত শলাকার পরশে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শরীরের শেষ বস্ত্র টুকু দেহ চ্যুত হয়ে যায়।
বুধাদিত্য পাগল হয়ে যায় ঝিলামের রুপে, “বারে বারে হেরি, চঞ্চলা হরিণী মত্ত নয়না তুমি হে কামিনী,
তুমি আছো তাই, আছে মোর হিয়া, মোর বাহুপাশে তুমি হে যামিনী।
ওই বাঁকা চোখে তাকিও না আর, মরমে জ্বলিছে আগুন তোমার,
অধরের মধু দাও গো শুধু, সেচিয়া দাও গো হৃদয় আমার।
আলুলিত ওই কুন্তলরাশি, সর্পের ন্যায় যায় যে দুলিয়া
আস মোর প্রিয়ে, ক্রোরে আমার, বসে আছি আমি দু বাহু মেলিয়া।
হে গজ গামিনী, তোমার চলনে, ছলকাইয়া ওঠে মদিরা পেয়ালা,
কণ্ঠধ্বনি কর্ণরন্ধ্রে, প্রবেশিলে পরে বেজে ওঠে যে বেহালা।
ও দেহ পরতে লুকিয়ে রেখেছ, কত সহস্র বিজলীর কণা,
সুগভীর বক্ষবিদলন মাঝে, যা কিছু আছে, তাই অজানা।
পীনোন্নত বক্ষোপরি শোভিতেছে দুই কঠিন নুড়ি,
সুকোমল দুই শৃঙ্গ যে ডাকে, হাতছানি দিয়া আমি কি করি?
হে মোর প্রেয়সী, হে মোর ললনা, দূর করো মোর বুকের যাতনা,
ও রাঙ্গা চরনে, চুম্বিয়া আজ, আমি যে মিটাব তোমার বাসনা।
প্রতি ওই শ্বাসে স্ফীত হয়ে আসে, সুকোমল ওই বক্ষযুগল,
কামাগ্নি ধায় নাসারন্ধ্রে তায় তপ্ত শ্বাস বয় অবিরল।
নিটোল জানু দেখিয়া ভাবি যে হেরিতেছি দুই কদলি কান্ড,
ওই জানুমাঝে করিলে চিন্তন, মস্তিষ্ক হয় লন্ডভন্ড।
কুম্ভের ন্যায় দুই নিতম্ব, পশ্চাতের শোভা করিয়া বর্ধন,
হৃদয় আকুলি বিকুলি করে, করিব কুচকুম্ভ মর্দন।
হে মোর কামিনী হে মোর ললনা মিটাও আজি মোর মনের বাসনা,
হে মোর প্রেয়সী করো না ছলনা।”
দুই প্রেমে বিভোর নর নারী পরস্পরকে আলিঙ্গনে বদ্ধ হয়ে হারিয়ে যায় পরস্পরের মাঝে। শুরু হয় এক নতুন অঙ্ক, আগের সব অঙ্ক ভুলে।
পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here
মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
দ্বিতীয় অঙ্ক
Written By pinuram
Written By pinuram
পঞ্চদশ পর্বঃ দ্বিতীয় অঙ্ক (#1)
আগস্ট মাসের শেষের দিকে। দুপুরের পর থেকেই ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছিল, এই বছর মনে হয় অন্য বছরের চেয়ে একটু বেশি বৃষ্টি হবার সভাবনা আছে। অফিসে ওর বস, শান্তনুর সাথে একটু মনমালিন্য হয়েছিল, সেই নিয়ে একটু চিন্তায়। কাজের চাপের বুধাদিত্যকে কোনদিন ঝোঁকাতে পারেনি কিন্তু বসের সাথে মাঝে মাঝেই এই মনমালিন্য ঠিক আর পেরে উঠছেনা বুধাদিত্য। প্রান প্রেয়সী, ঝিলাম আবার স্কুল কলিগদের নিয়ে লাজপত নগর গেছে, শপিং করতে। সাথে গাড়ি টাও নিয়ে গিয়েছিল তাই বুধাদিত্যকে অটো করে বাড়ি ফিরতে হয়। শপিঙ্গে বেরনোর আগেই ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিল ঝিলাম যে ফিরতে দেরি হতে পারে। বাড়ি ঢোকা মাত্রই ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। অগত্যা একা বসে টিভি দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। রাত প্রায় ন’টা বাজতে চলল, বৃষ্টি যেন আরও জোরে শুরু হয়ে গেছে। দুই বার ফোন করে পেল না ঝিলামকে, একটু চিন্তায় পড়ে গেল বুধাদিত্য, এই বৃষ্টিতে কিছু হল নাকি গাড়ির অথবা ঝিলামের? গাড়ির কিছু হলে কালীনাথ ফোন করে জানিয়ে দিত। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে কালীনাথের ফোনে ফোন করে বুধাদিত্য।
কালীনাথ ঝিলামকে ফোন ধরিয়ে দেয়। বুধাদিত্য ফোন ধরেই বকা দেয়, “কি হল সেই কখন থেকে ফোন করে যাচ্ছি। ফোন ধরতে পার না তাহলে রেখেছ কেন?”
ঝিলাম বেগতিক দেখে রুদ্র রুপ ধারন করে, জানে এই রুপেই একমাত্র বুধাদিত্য বশ মানবে না হলে আরও চোটপাট শুরু করে দেবে তাই চেঁচিয়ে উত্তর দেয়, “চেচিয় না, আমি আগেই বলে দিয়েছিলাম যে আমার ফিরতে দেরি হবে। আর ফোন ধরতে পারিনি কেননা আমার দু’হাতে মেহেন্দি লাগানো, তাই।”
বুধাদিত্য নরম হয়ে যায় রুদ্র দেবীর সামনে, “না মানে এত রাত হয়ে গেল, এত বৃষ্টি তাই একটু চিন্তায় ছিলাম।”
ঝিলাম হেসে ফেলে, অসুধে কাজ হয়েছে, “উম্ম কত চিন্তা যেন আমার জন্য। যাই হোক আমি রাস্তায়, মনামি কে বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আসছি।”
বুধাদিত্য, “আজ হটাত মেহেন্দি লাগাতে গেলে, তাও আবার লাজপত নগর গিয়ে?”
ঝিলাম, “আরে বাবা, সব জেরা কি এখানে করবে নাকি। বাড়ি এসে বলছি সব কথা। ফ্রিজ থেকে খাবার গুলো বের করে গরম করে রেখ আর প্লিস সোনা, মিষ্টি সোনা, দুষ্টু সোনা, আমার জন্যে একটু স্যালাড বানিয়ে রেখ।”
বুধাদিত্য প্রশ্ন করে, “রাতে স্যালাড কেন খাবে?”
ঝিলাম কড়া সুরে উত্তর দেয়, “যেটা বলা হয়েছে সেটা কর, আমি বাড়ি ফিরে বাকি কথা বলব।”
হেসে ফেলে বুধাদিত্য, “জি মালকিন, আপনার আদেশ শিরধার্য। আমি আপনার আদেশ মান্য করিব। শুধু আপানার চাঁদ মুখের কিঞ্চিত তাড়াতাড়ি দর্শন পাইলে আমি অতীব পুলকিত হইতাম। যদি দয়া করে আপনার সারথিকে একটু তড়িৎ বেগে বাহন চালাইতে আদেশ দেন তাহলে...”
হেসে ফেলে ঝিলাম, “ওকে, বাবা, আমি এখুনি আসছি, কিন্তু জানত বৃষ্টি হলে রাস্তায় কত জ্যাম হয়।”
ঝিলাম স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে রান্না সেরে তারপরে ঘুরতে বেড়িয়েছে। বুধাদিত্য ফোন রেখে ফ্রিজ খুলে দেখল যে ভাত ডাল তরকারি সব বানানো। ডিপ ফ্রিজে খান চারেক মুরগির ঠ্যাঙ রাখা। বুধাদিত্য ভাবল এই বৃষ্টির রাতে নুডুলসের সাথে চিকেন লেগ বেশ ভালো জমবে। নুডুলস ঝিলামের খুব পছন্দের খাদ্য, বানিয়ে রাখলে ঝিলামকে একটু অবাক করে দেওয়া হবে। ওর জীবনে ঝিলাম পা রাখার পরে কোনদিন রান্না ঘরে ঢোকেনি বুধাদিত্য। বাইরে থেকে রান্না ঘর দেখে আর চেনা যায় না যে এটা তার ছন্নছাড়া রান্না ঘর ছিল।
রান্না ঘরে ঢুকে নুডুলস আর চিকেন রান্না করতে করতে গত কয়েক মাসের ছবি বুধাদিত্যের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ঝিলামকে সেই মৃত্যুর কবল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। শামুকের খোলে লুকিয়ে থাকা ঝিলামকে প্রেয়সী “ঝিল্লিরানী” তে পরিবর্তন করা। নিজের জীবন তাঁর হাতে সঁপে এক নতুন “বুধো”র আগমন। বুক ভরে শ্বাস নেয়, বারেবারে “দেবী”র কথা মনে পড়ে যায়, দেবস্মিতা ওর বাবাকে পাঁকের জীবন থেকে তুলে এনে এক নতুন জীবন প্রদান করে এখানে দুজনে দুজনা কে আঁকড়ে নতুন জীবনের আস্বাদ নেয় প্রতিদিন। হারিয়ে যাওয়া প্রেয়সীকে পেয়ে বুধাদিত্য সব ভুলে নিজেকে ঝিলামের হাতে সমর্পণ করে দিয়েছে। এই নতুন খুঁজে পাওয়া মুক্তির স্বাদে ঝিলাম এক নতুন নারী, দ্বিতীয় জীবনে অবশেষে মনের মানুষ খুঁজে পেয়ে ঝিলাম অতীব আনন্দিত। ভাগ্য সবার হয়ত সহায় হয়না তাই ঝিলাম এই জীবন দু’হাতে আঁকড়ে ধরে থাকে, তিলেতিলে সাজিয়ে সুন্দর করে তুলতে তৎপর। ঘরের দেয়াল, বিছানার চাদর, জানালার পর্দা, সোফার কভার, টেবিলের থালা বাটি গ্লাস পর্যন্ত যেন এই বাড়ির নব রাজ্ঞীর অধীন, এই প্রাসাদের রানীর ছোঁয়ায় ঝলমল করছে সর্বদা। রান্না শেষ, খাবার টেবিলে তিনটে মোমবাতি রাখে, একটা বড় কাঁচের বাটির মধ্যে কিছু ছোটো ছোটো সুগন্ধি প্রদীপ ভাসিয়ে দেয়।
সোফার ওপরে বসে পড়ে বুধাদিত্য, চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই প্রেমের দৃশ্য আর চনমন করে ওঠে বুধাদিত্যের শরীর। পরের দিন আর অফিস যেতে পারেনি বুধাদিত্য। ঝিলামের তীব্র অধর দংশন ওকে নিয়ে যায় এক অচিন পুরীতে, এক স্বপ্নের রাজ্যে। সেই রাতে বাড়ি ফিরে পরস্পরকে প্রান ঢেলে, হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসার শেষ কণা টুকু পরস্পরে অঙ্গে মাখিয়ে দিয়েছিল। বাড়ি ফিরতে সেদিন অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল, ঘরে ঢুকতেই পরস্পরকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে যেন একটাই শরীর। দুই প্রেমে উন্মাদ নাগ আর নাগিনী পরস্পরকে ছাড়তেই চায়না। সে যেন প্রেমের এক নবীন যুদ্ধ, কে কাকে হারিয়ে দেয় এই ভালোবাসার খেলায়। কেউ কাউকে ছাড়তে চায়না, চুম্বনে, মর্দনে, পেষণে সোহাগে ভরিয়ে বারেবারে সেই সুখের সাগরে ভেসে গিয়েছিল দুই প্রান। রাগরস সারা অঙ্গে মাখিয়ে ভোরের দিকে পরস্পরকে আলিঙ্গনে বেঁধে শোয়ার ঘরের মেঝের ওপরে ঘুমিয়ে পড়েছিল দুই ক্লান্ত কপোত কপোতী। পরের দিন সকালে ঝিলামের শরীরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে এক নতুন রুপ অপার তৃপ্তিতে, বুধাদিত্য অবশেষে খুঁজে পায় তার ভালোবাসার শীতল মলয়।
কলিং বেল শুনে সম্বিৎ ফিরে পায়। দরজা খুলে প্রেয়সীকে সাদর আহবান জানায়। ফর্সা হাত দুটি মেহেন্দি ঢাকা, দুই কাজল কালো চোখে দুষ্টুমির হাসি। কালীনাথ পেছন পেছন ব্যাগ নিয়ে ঘরে রেখে চলে যায়। বুধাদিত্য চুপ করে দাঁড়িয়ে একবার ঝিলামের আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে। ছাতার মতন বড় ঘেরের লম্বা সাদা রঙের কামিজ আর আঁটো চুড়িদার পরনে।
বুধাদিত্য হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার বলত, হটাত মেহেন্দি লাগাতে গেলে?”
ঝিলাম ওর বুকের ওপরে কুনুই দিয়ে গুত মেরে বলে, “এমনি ইচ্ছে হল তাই সাজলাম একটু।” বুধাদিত্য ওর কোমর জড়িয়ে ধরে বুকের কাছে টেনে আনে। ঝিলাম চেঁচিয়ে ওঠে “এই ছাড়ো ছাড়ো, হাতের মেহেন্দি ঘ্যেচে যাবে যে।” বুধাদিত্য ওর গালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়। ঝিলাম অগত্যা নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, “এবারে সত্যি বলছি হাতের মেহেন্দি কিন্তু মুখে মাখিয়ে দেব, তখন বুঝবে।”
বুধাদিত্য হেসে উত্তর দেয়, “তুমি নিতাই গৌরাঙ্গ হয়েছ তাই ত একটু দুষ্টুমি করার সুযোগ পেলাম।”
ঝিলাম, “প্লিস সোনা, করো না।”
বুধাদিত্য, “তা কতক্ষণে এই মেহেন্দি তোমার হাত থেকে ছাড়াবে?”
ঝিলাম, “একটু লেবু কেটে নিয়ে এস না, প্লিস।”
বুধাদিত্য, “এই সাদা ড্রেস পড়ে তুমি মেহেন্দি ছাড়াবে, যদি কাপরে লেগে যায় তাহলে?”
ঝিলাম নিচের ঠোঁট চেপে হেসে ফেলে, “সত্যি বলছ যে দুষ্টুমি করবে না?” বুধাদিত্য মাথা নাড়ায়, না করব না। ঝিলাম কানেকানে বলে, “সালোয়ার নামিয়ে দাও।”
বুধাদিত্য ঝিলামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর মুখের দিকে তাকায়। ঝিলামের মুখ লাল হয়ে যায় একটু লজ্জায়। বুধাদিত্যের হাত ওর পায়ের সালোয়ারের ওপর দিয়ে ওর বক্র পায়ের গুলির উপরে আদর করে কামিজ উপর দিকে উঠিয়ে দেয়। ঝিলামের শরীর শিরশির করে কেঁপে ওঠে সেই প্রেমের পরশে। বুধাদিত্য ওর কোমরে হাত নিয়ে ওর নগ্ন পেটের ওপরে আলতো করে চেপে ধরে। ঝিলাম আলতো কোমর নাড়ায়, আর বুধাদিত্য দুই পাশে হাত রেখে ওর পাতলা কোমর চেপে ধরে।
সারা অঙ্গে এক বিদ্যুৎ খেলে যায় ঝিলামের, কঠিন তপ্ত আঙুল ওর নরম পেটের ওপরে খেলা করতে শুরু করে। ঝিলাম মৃদু কণে আদেশ দেয়, “বুধো প্লিস, আমি কিন্তু খুব মারব এবারে।”
বুধাদিত্য ধিরে ধিরে ওর চুড়িদারের দড়ি খুলে দেয়, গোড়ালির কাছে টেনে নামিয়ে দেয় পরনের চুড়িদার। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঝিলাম, ওর নগ্ন কোমরে বুধাদিত্যের তপ্ত আঙুল নরম পেটের ওপরে খেলা করে চলে। কোমরবন্ধনীর পাশে হাত রেখে আলতো করে আঙুল দিয়ে চাপ দেয়। ঝিলামের সারা শরীর অবশ হয়ে আসে, চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে উত্তেজনায়। কোনরকম সামনে ঝুঁকে বুধাদিত্যের মাথার ওপরে কুনুই দিয়ে ঠ্যালা মারে। বুধাদিত্যের হাত কোমর ছাড়িয়ে ঝিলামের কোমল নিটোল নিতম্বের তপ্ত ত্বক স্পর্শ করে। ঝিলামের দুই উরুতে কাপন ধরে, দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি হারাতে থাকে ললনা। বুধাদিত্য দুই হাতের থাবার মধ্যে দুই সুডৌল নিটোল ভারী নিতম্বে আলতো চাপ দিয়ে ওর মুখের কাছে টেনে ধরে ঝিলামের পেট।
ঝিলামের সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে, মৃদু কণে বলে, “বুধো প্লিস, সোনা এখন না।” বুধাদিত্য কামিজের ওপর দিয়ে ওর নরম পেটের ওপরে সুগভীর নাভির ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে। ঝিলাম মৃদু শীৎকার করে ওঠে, “শয়তান ছেলে, ছাড়ো প্লিস।”
বুধাদিত্য প্রেয়সীকে আরও উত্যক্ত করে তোলে, দুই হাতের দশ আঙুলে চেপে ধরে কোমল নিতম্বের মাংস। গরম ত্বকের ওপরে গরম আঙ্গুলের পেষণে ঝিলামের উরু কেঁপে ওঠে। ঝিলাম যদি নিজেকে এই প্রগাড় আলিঙ্গন থেকে নিজেকে না ছাড়িয়ে নেয় তাহলে এখুনি চেতনা হারিয়ে লুটিয়ে পড়বে বুধাদিত্যের কোলে। হাঁটু দিয়ে বুধাদিত্যের মুখের ওপরে ঠেলে দেয়, কোনোরকমে সরিয়ে দেয় বুধাদিত্যকে। বুধাদিত্য ওকে ছেড়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, আর সেই ক্ষণে ঝিলাম দৌড়ে পালিয়ে যায় ঘরের মধ্যে।
বাথরুমে ঢুকে মৃদু বকুনি দেয় দয়িতকে, “তুমি না, একদম জানো, মস্ত শয়তান।”
বুধাদিত্য, “উফফফ... তোমার ওই সেক্সি শরীর থেকে হাত সরাতে ইচ্ছে করে না যে।”
ঝিলাম, “আমি স্যালাড কেটে রাখতে বলেছিলাম, সেটা করেছ?”
বুধাদিত্য, “না, স্যালাড কেন খাবে? আমি নুডুলস আর চিকেন বানিয়েছি তোমার জন্য।”
ঝিলাম অবাক সুরে জিজ্ঞেস করে, “কি! তুমি রান্না ঘরে ঢুকেছিলে? জিনিস পত্র পেলে খুঁজে?”
বুধাদিত্য, “হ্যাঁ খুঁজে নিলাম।”
ঝিলাম, “দাঁড়াও আমি এখুনি আসছি”
ঝিলাম হাত ধুয়ে কাপড় বদলে খাওয়ার ঘরে এসে দেখে যে টেবিলে মোমবাতি রাখা, একটা কাঁচের বড় বাটিতে সুগন্ধি গোলাপ জল আর তাঁর মাঝে কয়েকটা ছোটো ছোটো প্রদীপ জ্বালান। টেবিলে দুটি প্লেট সাজানো। টেবিলের মাঝে দুটি কাঁচের বাটিতে নুডুলস আর চিলি চিকেন রাখা। ঝিলামের দুই চোখ ছলছল করে ওঠে। বুধাদিত্য ঝিলামকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। ঝিলাম ওর হাতের ওপরে হাত রেখে নিজের শরীরের শক্ত করে বেঁধে নেয় ওই দুই কঠিন হাতের বন্ধন। মাথা পেছন দিকে হেলিয়ে ওর কাঁধের ওপরে রাখে, শক্ত করে ঠোঁট চেপে কঠিন চোয়ালের ওপরে।
বুধাদিত্য ফিসফিস করে বলে, “মাঝে মাঝে প্রেমিকাকে একটু রেস্ট দিতে হয়, তাই ভাবলাম ডিনার আমি বানিয়ে রাখি।”
ঝিলাম, “তুমি রান্না করেছ, ঝাল হোক, পোড়া হোক। তুমি যদি বিষ দাও তাও খাবো আমি।”
বুধাদিত্য, “ঝিল্লিরানি প্লিস ওই কথা বল না। অনেক কষ্টে কুড়িয়ে পাওয়া এই দ্বিতীয় জীবন।”
ঝিলাম ছলছল চোখে দুই হাত ওর চোখের সামনে মেলে ধরে বলে, “দেখ, মেহেন্দির রঙ কত গাড় হয়েছে, তাই না।”
বুধাদিত্য ওর গালে গাল ঘষে বলে, “ফর্সা হাতের ওপরে দারুন মানিয়েছে। শালা যে লোকটা ওই হাত ধরে এঁকেছিল তাঁর ওপরে হিংসে হচ্ছে।”
ঝিলাম আলতো কামড় দেয় বুধাদিত্যের গালে, “ধুত, তুমি না, সত্যি...”
বুধাদিত্য, “কিন্তু তুমি স্যালাড কেন খেতে চেয়েছিলে?”
ঝিলাম একটু আহত সুরে বলে, “আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি, জানো আমার ওজন বেড়ে গেছে, ছাপ্পান কিলো হয়ে গেছে তোমার ঝিল্লিরানী।”
বুধাদিত্য ওকে দুই হাতের মধ্যে পিষে ধরে বলে, “না ঝিল্লি, কে বলেছে তুমি মোটা। তোমার ঠিক জায়গায় ঠিক ঠিক বেড়েছে, আমার সুবিধা হয়েছে একটু নরম নরম আদর করতে।”
ঝিলাম লাজুক হেসে বলে, “ইসসস... তুমি না... সবসময়ে উলটোপালটা ভাব। ছাড়ো এখন।” বুধাদিত্যের আলিঙ্গনের মাঝে ওর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে, “খেতে দেবে না তোমার প্রেমিকাকে? আমার যে খিধেতে পেট জ্বলছে গো।”
পঞ্চদশ পর্বঃ দ্বিতীয় অঙ্ক (#2)
বুধাদিত্যের জীবনশৈলী আমুল বদলে দিয়েছে ঝিলাম, কড়া শাসন, রাত ন’টার মধ্যে রাতের খাওয়া সেরে ফেলতে হয়। ঝিলামকে সকাল সকাল উঠে স্কুল যেতে হয় তাই রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে। শুধু মাত্র ছুটির দিন গুলতে সেই নিয়ম একটু শিথিল হয়। খাওয়া শেষে বুধাদিত্য সোফার ওপরে গা এলিয়ে শুয়ে পড়ে, আগামিকাল শনিবার, দুজনের ছুটি। বাইরে ঝড়ের তান্ডব বেড়ে যায়। বুধাদিত্যের হৃদয় আকুল হয়ে ওঠে প্রেয়সীকে ক্রোরে নিয়ে খেলার জন্য। ঝিলামের নুপুরের শব্দে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকায় ওর দিকে। পরনে একটা পাতলা মোলায়ম স্লিপ, সারা অঙ্গে মাদকতার ছন্দ তুলে ওর দিকে দুষ্টু মিষ্টি হেসে এগিয়ে আসে। চলনের তালে তালে দুই নিটোল ভারী নিতম্ব দোল খায়। স্লিপের নিচের অংশ বারেবারে জানুসন্ধি থেকে সরে গিয়ে দেখা দেয় পরনের গোলাপি ক্ষীণ প্যান্টি। নারীসুধার দ্বারে চেপে বসে অবয়াব ফুটে উঠেছে ওই পাতলা কাপড়ের ভেতর থেকে। দুই উরু যেন দুই মসৃণ স্ফটিকের থাম, বসার ঘরের মৃদু আলোতে চকচক করছে শরীরের ত্বক। ওর মুখের দিকে তাকাতেই ঝিলাম হেসে ফেলে। ঠোঁট দুটি অতীব গোলাপি আর মধুভরা। স্লিপের ভেতর থেকে দুই উন্নত বক্ষ সামনের দিকে ঠিকরে বেড়িয়ে এসেছে। ভেতরে কোন বখবন্ধনি পরেনি ঝিলাম, তাই দুই পীনোন্নত বক্ষের আবছা অবয়াব দেখা যায়। কোমল বক্ষের উপরে স্থিত দুই শক্ত বৃন্ত যেন দুটি ছোটো রসালো ফল, বুধদিত্যের চুম্বনের অধীর প্রতীক্ষায় ওর দিকে উন্মুখ হয়ে চেয়ে।
ঝিলাম ওর পাশে বসে আলতো ঠেলে বলে, “এই একটু সর, আমি শোব।”
বুধাদিত্য দুই হাতে আলতো করে জড়িয়ে ধরে প্রেয়সীকে। ঝিলাম ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে বুধাদিত্যের শরীরের ওপরে শুয়ে পড়ে। দয়িতার হাত নিজের হাতের মুঠির মধ্যে নিয়ে ছোটো ছোটো চুমু খায় ঝিলাম। বুধাদিত্য বাম হাতে ঝিলামের পেটের ওপরে রেখে জড়িয়ে ধরে থাকে। বুধাদিত্যের হাতের চাপে কেঁপে উতে ঝিলাম ওর ডান হাত মুখের কাছে এনে আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দেয়। দুই হাতে আস্টেপিস্টে চেপে ধরে ঝিলামকে, সাপের মতন একেবেকে নড়ে ওঠে ঝিলাম, নিটোল নিতম্বের নিচে উঁচিয়ে ওঠে বুধাদিত্যের সুদীর্ঘ কঠিন সিংহ। বুধাদিত্যের হাত ছাড়িয়ে ওর বুকের ওপরে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে ঝিলাম। নড়ার ফলে নিতম্ব থেকে স্লিপ উপরে উঠে কোমর চলে আসে। বুধাদিত্য এক হাতে ঝিলামের পিঠ ধরে নিজের বুকের সাথে স্তনজোড়া চেপে দেয় অন্য হাতে নিতম্ব চেপে জানুসন্ধিতে নিজের কঠিন সিংহ স্পর্শ করিয়ে দেয়। সেই তপ্ত শলাকার স্পর্শে ঝিলাম অবশ হয়ে যায়। আবেগের বশে গলা চেপে ধরে বুধাদিত্যের আর নিজের উরু মেলে ধরে নারীসুধার দ্বারে চেপে ধরে বুধাদিত্যের কঠিন সিংহ। বিশাল টিভি স্ক্রিনে কোন এক মারদাঙ্গা ইংরাজি সিনেমা চলছে, সেদিকে বিশেষ কারুর মন নেই, দুজনে পরস্পরের আদরে সোহাগে, অনুরাগে তরী ভাসাতে ব্যাস্ত।
ঝিলাম বুকের কাছে হাত ভাঁজ করে মাথা উঠিয়ে বুধাদিত্যের নাকের ডগায় আঙুল বুলিয়ে বলে, “বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে জানো।”
বুধাদিত্য, “হুম সেত অনেক ক্ষণ ধরে হচ্ছে।”
ঝিলাম, “তুমি আজ হটাত করে রান্না করতে গেলে?”
বুধাদিত্য, “তুমি হটাত করে সাজতে পার তাহলে আমি রান্না কেন করতে পারি না।”
ঝিলাম, “গাড়িতে তেল শেষ নাহলে ঘুরতে নিয়ে যেতে বলতাম। বেশ কোথাও ফাঁকা জায়গায় গিয়ে দু’জনে বৃষ্টিতে ভিজতাম।”
বুধাদিত্য, “তারপরে তোমার জ্বর হত আর আমার অফিস মাঠে মারা যেত।”
ঝিলাম, “ধুর পাগল বৃষ্টিতে ভিজলেই কি জ্বর হয় নাকি? ছোটো বেলায় অনেক ভিজেছি, দুর্গাপুরে বর্ষা কালে খুব বৃষ্টি হয়।”
ঠিক তখন ঝিলামের মোবাইল বেজে ওঠে, ভাটা পড়ে ওদের সোহাগের খেলায়। ওপাশে অনিন্দিতাদি, “কিরে তোরা কি ঘুমিয়ে পড়েছিস নাকি রে?”
ঝিলাম এক হাতে ফোন অন্য হাত বুধাদিত্যের হাত নিজের বুকের ওপরে টেনে ধরে বলে, “দিদিভাই, কেমন আছো তোমারা?”
অনিন্দিতাদি, “আমরা ভালো আছি। তোরা কি আমাদের একটু শান্তি দিবি।”
ঝিলাম অবাক, “কেন কি হল?”
অনিন্দিতাদি হেসে ফেলে, “তোদের ছেলে কি শেষ পর্যন্ত তোদের বিয়ে খেতে যাবে?”
ঝিলাম লজ্জায় পড়ে যায়। বাবা মা গত মাসে এসে ঘুরে গেছেন, দেখে গেছেন মেয়ের নতুন রুপ। একটু ইতস্তত করেছিলেন ঝিলামের বাবা মা, বুধাদিত্য আর ঝিলামের এখন বিয়ে হয়নি এবং একসাথে আছে, এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলেন। ঝিলাম নিজের বাবা মাকে বলেছিল যে, লাল চেলি আর সিল্কের জোড়ের বাঁধন শুধু কাপড়ের গিঁট মাত্র। নিজের জীবন দিয়ে সেই গিঁটের সত্যতা বুঝেছে। দুই হৃদয়ে যদি গিঁট না পরে তাহলে কাপড়ের গিঁট বেঁধে কি লাভ? বুঝিয়ে বলেছিল বিয়ে করলেই যে ছেড়ে যাবে না আর বিয়ে না করলেই যে মানুষের ছাড়াছাড়ি হয়ে যেতে পারে, সেই সব অবান্তর ধারনা। যেখানে দুই হ্রদয়ের বন্ধন মজবুত হয় সেই সম্পর্কে বিয়ে হোক বা না হোক কিছু এসে যায় না। ওর বাবা মা, সমাজের একটু দোহাই দেন, ঝিলাম ওদের আসস্থ করে বলেছিল যে, সময় হলে ঠিক বিয়ে করে নেবে। ঝিলামের নতুন চাকরি আর দুই মাস আগে বুধাদিত্য ওর শরীর খারাপের সময় অনেক ছুটি নিয়েছিল, ছুটির ব্যাবস্থা করে একদিন সবাইকে ডেকে রেজিস্ট্রি সেরে নেবে। মেয়ের জীবনে আনন্দ আর হাসি মুখ দেখে বেশি কথা বাড়ায়নি ওর বাবা মা।
ঝিলাম লজ্জায় পড়ে যায়, “না না সে রকম কিছু হবে না, চিন্তা নেই।”
অনিন্দিতাদি, “কেন রে ঝগড়া করেছিস নাকি তোরা?”
বুধাদিত্যের হাত দুটি ঝিলামের নিটোল নিতম্বের ওপরে খেলা করে, বুধাদিত্যের দিকে ঠোঁট কুঁচকে একটা চুমু খেয়ে অনিন্দিতাদিকে উত্তর দেয়, “বুধোর সাথে ঝগড়া’ত আমাদের দিনের একটা নিত্য কাজ, সে আবার নতুন কি।”
অনিন্দিতাদি, “বাপরে, প্রেমে মরে গেলাম। এবারে বিয়টা করে ফেল। ভাই কোথায়?”
বুধাদিত্য ঝিলামকে আদর করতে করতে বলে, “আমি এখানেই আছি, বল আমি সব শুনতে পাচ্ছি।”
অনিন্দিতাদি গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কোলে নিয়ে শুয়ে নাকি?”
ঝিলাম বুধাদিত্যের নাকের ওপরে নাক ঘষে বলে, “দিদিভাই, তুমি না, আবার শুরু করে দিলে।”
অনিন্দিতাদি, “আচ্ছা বাবা, এবারে বল কবে বিয়ে করছিস তোরা?”
ঝিলাম, “বিয়ে’ত শুধু একটা অনুষ্ঠান মাত্র, অত তাড়াহুড়ো করার কি আছে। সময় হলেই হয়ে যাবে, আর আমাদের অতশত কিছু করার নেই, শুধু দু’জনে একটা সই দেব ব্যাস, কয়েক ঘন্টার ব্যাপার। জানিয়ে দেব তোমাদের, চিন্তা নেই।”
অনিন্দিতাদি হেসে বলে, “তার মানে তোর ছেলে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে যে বাবার বিয়ে দেখেছি।”
বুধাদিত্য, “তোমার কি শুরু করেছ বলত।”
দেবস্মিতা, “বাপ্পা দাদার বিয়ে দেখতে চায়।”
ঝিলাম আর বুধাদিত্য দু’জনেই অবাক, অনিন্দিতাদির বাড়িতে দেবস্মিতা, ব্যাপার বুঝতে একটু কষ্ট হয়। অনিন্দিতাদি হেসে বলে, “কি রে চমকে গেলি নাকি? দেবস্মিতা আজ বিকেলে বাপ্পা আর পিসেমশায়কে নিয়ে বাড়িতে এসেছে। আমরা সবাই মায়ের বাড়িতে।”
ঝিলাম অবাক, “তোমার সবাই কি পন্ডিতিয়ায়? দাও দাও মাকে একটু ফোন দাও।” ঝিলাম প্রমীলা দেবীকে মা বলে ডাকে।
প্রমীলা দেবী ফোন ধরেই ঝিলামকে জিজ্ঞেস করে, “তোর শরীর কেমন আছে রে? ঠিক মতন আয়রন ট্যাবলেট খাচ্ছিস তুই? গত সপ্তাহে ডাক্তারের কাছে যাবার কথা ছিল, গিয়েছিলি কি?”
ঝিলাম বেমালুম ভুলে গেছিল গায়নকলজিস্টের কথা, তাই জিব কেটে বলল, “না মা, একদম ভুলে গেছিলাম। প্লিস রাগ করোনা সোনা মা। আমি পরের সপ্তাহে দেখিয়ে নেব।”
প্রমীলাদেবী মৃদু বকুনি দিয়ে বলেন, “দে’ত ছোঁরা টাকে ফোন দে। তোকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যেতে পারল না? কি এমন কাজ করে দেখি।”
ঝিলাম প্রমীলা দেবীকে বলে, “না না, বুধোর দোষ নয়। ওকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।”
বুধাদিত্য অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “শোনো পমুডার্লিং তোমার আর ঝিল্লীর কথার মধ্যে আমাকে একদম জড়াবে না। ঝিল্লি আমাকে ডাক্তাররে ব্যাপারে কিছু বলে নি।”
ঝিলাম নাক কুঁচকে, বুধাদিত্যের দিকে তাকিয়ে নিচু গলায় বলে, “সরি বুধো।” তারপরে প্রমীলাদেবীকে জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার তোমরা বেশ মজা করছ তাই না।”
প্রমীলা দেবী, “জামাই ষষ্টির সময়ে সুব্রত বাইরে ছিল, আসতে পারে নি। সুবিরকে ও কোনদিন ডেকে খাওয়ান হয়নি। তাই ওদের সবাইকে একসাথে ডেকেছি। এমনিতে দেবস্মিতা খুব ব্যাস্ত থাকে, সময় নিয়ে আসতে একটু দেরি হয়ে গেল এই আর কি।”
দেবস্মিতা, “না কি করে মজা করি বলত, তোমরা দু’জনে যে নেই।”
ঝিলাম, “তুমি বাপ্পাকে নিয়ে চলে এস এখানে।”
দেবস্মিতা, “আমার বুড়টাকে কে দেখবে, তুমি? যদি বলি সাইটে গাড়ি পাঠাও তাহলে আমার গাড়ি সাইটে পাঠিয়ে দেয় আর ওয়ার্কারদের ভ্যান পাঠায় আমাকে আনতে, এই ত আমার বুড়ো। ছেড়ে কি আর যেতে পারি, বল।”
বুধাদিত্য, “তোমরা সবাই একসাথে বসে কি জল্পনা করছ বলত?”
অনিন্দিতাদি, “তোদের এবারে বিয়েটা দিয়েই ছারব আমরা, তাঁর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বাড়ি বসে।”
প্রমীলাদেবী, “শোন রে, বুধি, ঝিলামের জন্মদিনের দুই দিন পড়ে একটা ভাল দিন আছে। ঠিক বিয়ের নয় তবে ভালো দিন, শুভ কাজ করা যায়। তোরা ত আর বিয়ের তারিখ মেনে বিয়ে করবি বলে মনে হয় না তাই ভাবলাম যে ওই দিনে যদি...”
ঝিলাম প্রমীলাদেবীর কথা টেনে নিয়ে বলে, “ঠিক আছে মা, তোমার এত ইচ্ছে তাহলে আমরা করেই নেব।”
দেবস্মিতা, “উফফফ হাঁফ ছেড়ে বাচলাম শেষ পর্যন্ত। তাড়াতাড়ি তাহলে সব শুরু করতে হয় আর ত মোটে দিন কুড়ি। বিয়ে কিন্তু ধানবাদ থেকে হবে।”
বুধাদিত্য ঝিলাম এক সুরে বলে ওঠে, “না, আমরা দিল্লীতেই বিয়ে করব। আর বিয়েতে শুধু বাড়ির লোক ছাড়া কেউ আসবে না।”
প্রমীলা দেবী আঁতকে ওঠেন, “মানে? দিল্লীতে হলে আমরা যাব কিকরে? তোর বাবা মা দাদারা দিদিরা কি করে যাবে? তুই নিয়ে যাবি?”
ঝিলাম ক্ষণিকের জন্য চিন্তায় পর যায়, অদের পরিবার অনেক বড়, দিল্লীতে নিয়ে আসা বেশ খরচ সাপেক্ষ। দেবস্মিতা হেসে বলে, “ঝিলাম এত চিন্তা করছ কেন? আমার বন্ধুর বিয়ে বলে কথা, বল’ত রাজধানি বুক করে দেব।”
ঝিলামের চোখ বন্ধ করে দেবীর মুখ স্মরন করে, একবারের জন্য দেখেছিল সেই সময়ে। ধরা গলায় বলে দেবস্মিতাকে, “তুমি সত্যি দেবী।”
দেবস্মিতা, “তাহলে তারিখ সেটাই থাকল, আমরা সবাইকে নিয়ে তোমার জন্মদিনের দিন পৌঁছে যাব দিল্লী। বেশ মজা হবে তোমার জন্মদিন আর দুই দিন পড়ে তোমার বিয়ে।”
পঞ্চদশ পর্বঃ দ্বিতীয় অঙ্ক (#3)
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি, আকাশে বর্ষার মেঘের খেলা একটু কমে গেছে। বাড়িতে দুই দিন আগে থেকেই লোকজন ভর্তি। ঝিলামের জন্মদিনের দিন কোলকাতা, ধানবাদ থেকে সবাই চলে আসে। বুধাদিত্য ঝিলামের ফ্লাট একটা রনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই কদিনে। দুর্গাপুর থেকে ঝিলামের বাবা মা, দুই দাদা আর তাদের পরিবার, দুই দিদি আর তাদের পরিবার মিলিয়ে জনা পনের জন লোক। রঞ্জন বাবু, প্রমীলা দেবী, অনিন্দিতাদি, বুবাই, সুব্রত দা ওদিকে ধানবাদ থেকে দেবস্মিতা বাপ্পা আর সুবিরবাবু। সকাল থেকে বাড়িতে সাজসাজ রব, কোলাহল শুনে মনে হবে যেন এক রণক্ষেত্র। চার দিনের জন্য একটা হোটেলের তিনটে রুম ভাড়া করা হয়েছিল, পুরুষেরা ছাড়া সেই হোটেলে কেউ থাকেনি। বাড়ির মেয়েরা বাড়িতেই ছিল এই ক’দিন। এই ক’দিন বুধাদিত্য অফিসে গিয়েছিল কিন্তু ঝিলাম আর স্কুল করতে পারেনি। দেবস্মিতা ওকে নিয়ে পরপর দুই দিন লাজপত নগর, এস.এন.মারকেট করে বেড়িয়েছে। ঝিলামের মা রান্না বান্নার ভার সামলে নিয়েছিলেন। দেবস্মিতা আর অনিন্দিতাদি এই কদিনে বাড়ির সব কিছু সামলে নিয়ে রেখেছে। ঝিলামের দিদিরা এই প্রথম বার রাজধানি চেপে দিল্লী এসেছে, তাই গত দুই দিন বর আর বাচ্চাদের নিয়ে দিল্লী ঘুরে বেড়িয়েছে।
সবাই বাড়ির লোক তাই আর বিশেষ কিছুই আয়োজন করা হয়নি। বাইরের মানুষ বলতে, ভিশাল স্যার আর শমিতা ম্যাডাম আর তাদের ছেলে বেদান্ত অন্যদিকে মনামি তার বর, নিরঞ্জনকে নিয়ে আসবে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রার, নিরঞ্জনের চেনা, তাই নিরঞ্জনের সাথে সন্ধ্যে নাগাদ আসবে। মনামি সকালবেলাতেই পৌঁছে ঝিলামের বাড়ি পৌঁছে যায়। ঝিলামের বাবা, বুধাদিত্যের বাবা আর রঞ্জন বাবু একটু বয়স্ক তাই তারা বসার ঘরে এসব থেকে দুরে নিজেদের মতন গল্পে ব্যাস্ত। অনিন্দিতাদি বুধাদিত্যের জন্য ধুতি পাঞ্জাবী কিনে এনেছিল, বুধাদিত্য সেই কাপড় পড়তে নারাজ, জেদ করে বসে ঝিলাম উপহার দেওয়া সুট পরে বিয়ে করবে। বাপ্পা বুবাই আর বাকি বাচ্চারা লাফালাফি দৌড়া দউরি করে ঘর মাতিয়ে তুলেছে। ঝিলামের বড়দি বড় মেয়ে, সঙ্গীতা, মিউসিক সিস্টেমে গান চালিয়ে নাচ শুরু করে দিয়েছে। ওর দেখাদেখি বাকি বাচ্চারা বসার ঘর দখল করে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে।
বুধাদিত্য, সুব্রতদা আর ঝিলামের দাদারা আর দুই জামাইবাবু ওর স্টাডিতে বসে দরজা বন্ধ করে ড্রিঙ্কস করছিল। শোয়ার ঘর মেয়েদের দখলে চলে গেছে, দেবস্মিতা ঝিলামকে নিয়ে ব্যাস্ত। ঝিলামের মা আর প্রমীলাদেবী দুপুরে খাওয়ার পরে গেস্ট রুমে একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু বাচ্চাদের চেঁচামেচিতে সেই ঘুমের বারোটা বেজে গেল।
প্রমীলা দেবী একবার বুধাদিত্যকে জিজ্ঞেস করে গেলেন, “এই ছোড়া রাতের খাবারের ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবে’ত?”
বুধাদিত্য বেড়িয়ে এসে উত্তর দিল, “কেন, তার ব্যাপারে’ত আমি কিছু জানিনা। ওটা’ত দেবীর ডিপার্টমেন্ট। ওকে জিজ্ঞেস কর।”
দেবস্মিতা , “হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক সময়ে ওঃ ক্যালক্যাটা থেকে ডেলিভারি দিয়ে যাবে, চিন্তা নেই।”
অনিন্দিতাদি বুধাদিত্যকে এসে অনুরোধ করে, “আমি তোর জন্য সাধ করে ধুতি পাঞ্জাবী এনেছি আর তুই পরবি না?”
বুধাদিত্য, “না পরবো না। ওই বারো হাতি কাপড় সামলাতে পারব না।”
ঝিলাম ওদিক থেকে চেঁচিয়ে বলে, “আরে ওকে জোর করে কাজ নেই, বেঁকে বসলে আবার বিয়ে পিছিয়ে যাবে। দেবী এত কষ্ট করে ওঃ ক্যালক্যাটা থেকে ইলিস পাতুরি আর ডাব চিংড়ি অর্ডার দিয়েছে সব মাটি হয়ে যাবে।” সবাই ওর কথা শুনে হেসে ফেলে। ঝিলাম অর্ধেক সাজা নিয়ে ওর ঘরে ঢুকে আদেশ করে, “তুমি সুট পরলে আমি কিন্তু অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা ইভিং গাউন পরবো?”
বুধাদিত্য ঝিলামের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “তোমাকে সেই ড্রেসিং গাউনে কিন্তু দারুন দেখাবে, সেটাই পড়ে নাও।”
ঝিলাম চোখ পাকিয়ে বুধাদিত্যের দিকে রেগে চেঁচিয়ে বলে, “আমি শেষ বারের মতন বলছি।”
ঝিলামের মা উঠে চলে আসেন। মেয়ের রুদ্র রুপ দেখে বলেন, “কেন বকাবকি করছিস? ধুতি না পরলেও চলবে, সুট পড়তে চাইছে, ঠিক আছে, পরুক না, ক্ষতি কি। আজকাল অনেকেই পরে।”
ঝিলাম মায়ের ওপরে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “তুমি চুপ কর, ওকে চেন না। না চেঁচালে কোন কথা শোনে না। তুমি তোমার বাকি জামাইদের মতন ননীর পুতুল ভেবনা একে।”
সুব্রতদা ঝিলামের চোখ দেখে বুধাদিত্যকে বলে, “বউ কিন্তু ক্ষেপে গেছে, এবারে গুত খাবে। তাড়াতাড়ি একটা কিছু স্থির কর।”
অগত্যা বুধাদিত্য সুব্রতদাকে বলে, “দেখ বাবা আমি ধুতি পড়তে জানিনা, সুতরাং পড়িয়ে দিতে হবে আমাকে।” ঝিলামের দিকে তাকিয়ে বলে, “মাঝখানে যদি ধুতি খুলে যায় তাহলে...”
ঝিলাম ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “তুমি ধুতি পরে কি একশ মিটার রেস দেবে? যাবে ত সেই এই ঘর থেকে অন্য ঘর। চুপ করে পরে নাও।”
অনিন্দিতাদি ঝিলামের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল, ঝিলামের কথা শুনে বুধাদিত্যকে বলে, “বেশ হয়েছে এবারে, এই হল একদম স্কুল টিচারের মতন কথা। এবারে ছড়ি দিয়ে মারতে বলব।”
সুব্রতদা অনিন্দিতাদিকে বলে, “অনু, কে কাকে কোন ছড়ি দিয়ে মারবে সেটা আর বলতে হবে না।” অনিন্দিতাদি লজ্জায় পরে যায়।
দেবস্মিতা ওদিক থেকে ঝিলামকে ডাক দেয়, “এই মেয়ে তাড়াতাড়ি এস, বাকিটা শেষ করি।”
বুবাই মামিকে দেখে বায়না ধরে সেও বউ সাজবে। অনিন্দিতাদি বকা দিতে যায়, দেবস্মিতা ওকে বসিয়ে দিয়ে বলে যে ঝিলামকে সাজানোর পরে বুবাইকে সজিয়ে দেবে। বাপ্পা একবার বুধাদিত্যর ঘরে ঢুকে ওদের ড্রিঙ্কস করতে দেখে বায়না ধরে কোল্ড ড্রিঙ্ক খাবে। সুব্রতদা শেষ পর্যন্ত একটা ছোটো গ্লাসে কোল্ড ড্রিঙ্ক দেয় খেতে।
সুবিরবাবু এক বার এসে দেখে যান সবার অবস্থা, “কি হল, সন্ধ্যে হতে চলল। কিছু পরে’ত নিরঞ্জন রেজিস্ট্রারকে নিয়ে এসে যাবে। তোমাদের সাজাগোজা হয়েছে?”
দেবস্মিতা, “তোমার এত তাড়া কিসের বলত। মেয়েদের সাজতে একটু দেরি হয়। ঠিক সময়ে সব কিছু হয়ে যাবে। পারলে কাউকে নিয়ে সি.আর.পার্ক চলে যাও, একটু দই লাগবে আর মিষ্টির অর্ডার দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে এস।”
অগত্যা সুবিরবাবু বউয়ের বকা খেয়ে চুপচাপ কালীনাথকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন। অনিন্দিতাদির আনা গাড় বাদামি রঙের পাঞ্জাবী পরে বুধাদিত্য। সুব্রতদা বুধাদিত্যকে ধুতি পরিয়ে দেয়, সাথে কোমরের গিঁট বেশ আঁটো করে বেঁধে দেয় যাতে খুলে না যায়। দেবস্মিতা ঝিলামের জন্য একটা লাল পাড় ঘিয়ে রঙের দামী জাদমদানি শাড়ি এনেছিল, সেই শাড়িতে ঝিলামকে সাজিয়ে এক অপরূপ রানীর মতন সাজিয়ে তুলেছে। দেবস্মিতা সোনার গয়নায় সাজিয়ে তুলেছে ঝিলামকে। প্রমীলাদেবী ঝিলামের জন্য সুন্দর একটি লোহাবাঁধান এনেছিল, সেটা হাতে পড়িয়ে দেয়। বুধাদিত্য ঝিলামের মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে, কাছে গিয়ে কানেকানে বলে যে রাতে পাগল করে দেবে। ঝিলাম আলতো চাঁটি মেরে বলে সবার সামনে যেন কিছু দুষ্টুমি না করে বসে। বুবাই একবার মামার মুখের দিকে তাকায় একবার নতুন মামীর মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।
সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসে। নিরঞ্জন ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কে নিয়ে উপস্থিত। বসার ঘর লোকে লোকারণ্য। বুধাদিত্য আর ঝিলাম পাশাপাশি দাঁড়ায়। অনিন্দিতাদি একটা কুলোতে সব সাজিয়ে নিয়ে আসে, পান পাতা, প্রদীপ ইত্যাদি। প্রমীলাদেবী কালীঘাটে পুজো দিয়ে মায়ের পায়ে ছোঁয়ান সিঁদুর এনেছিলেন, সেটা অনিন্দিতাদির হাতে দিলেন। আগে সই তারপরে সিঁদুর না আগে সিঁদুর তারপরে সই। এর মাঝে সুব্রতদা বলে যে আগে আঙটি পড়ান উচিত। অনিন্দিতাদি বুধাদিত্যকে জিজ্ঞেস করে, বউয়ের জন্য আঙটি কেনা হয়েছে কিনা? বুধাদিত্য আর ঝিলাম পরস্পরের মুখ চাওয়াচায়ি করে, এখন আঙটি পড়াতে হবে নাকি, এই সব’ত অনেক আগেই ওরা সেরে ফেলেছে। অনিন্দিতাদি, ঝিলামের বউদিরা সবাই চেপে ধরে যে সেই আঙটি খুলে আবার নতুন করে ওদের সামনে পড়াতে হবে। ঝিলাম নিজের আঙটি খুলে বুধাদিত্যের হাতে দেয়, আর ঝিলামের দেওয়া আঙটি’টা বুধাদিত্যের আঙ্গুলে চেপে বসে। সেই নিয়ে সবার মধ্যে হাসাহাসি, বিয়ের আগেই বউ খাইয়ে মোটা করে দিয়েছে। অনেক কষ্টে সাবান জল দিয়ে আঙটি খোলা হয়। সুব্রতদা, ঝিলামের জামাইবাবুরা সবাই বুধাদিত্যকে চেপে ধরে যে ঝিলামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আঙটি পড়াতে হবে। ঝিলাম হেসে ফেলে বুধাদিত্যের করুন অবস্থা দেখে। “এই না না, এটা ঠিক হচ্ছে না।” “বসে পর শালা, একবার আমরা দেখি।” বলে ওঠে সুব্রতদা। সেই সাথে ঝিলামের জামাইবাবুরা বলে ওঠে, “এই যে বাবু, রোজদিন’ত কান ধরে উঠ বস করায়, তা আমাদের সামনে করতে লজ্জা কিসের।” বুধাদিত্য, “আমি হাঁটু গেড়ে বসে পড়িয়ে দেব একটা সর্তে, ও যদি আমার কোলে বসে আমাকে আঙটি পড়িয়ে দেয়।” সেই শুনে সবাই হেসে ফেলে। ঝিলামের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়। সুবিরবাবু আর রঞ্জনবাবু হেসে বলেন যে তারা কিছু শুনতে পাননি, এবারে কানে তুল গুঁজে বসে থাকবেন তারা। ঝিলাম বুধাদিত্যর বাজুর ওপরে চাঁটি মেরে বলে যে সব দুষ্টুমির শোধ নেবে পরে। দেবস্মিতা হাতে কুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে, ওদের মেয়েলিপনা দেখে বলে যে তাড়াতাড়ি কর, হাত ব্যাথা করছে। সেই শুনে সুবিরবাবু বলেন যে, “হে প্রিয়তমা, কুলো আর তুমি দুজনেই আমার কোলে চলে এস।” দেবস্মিতার ফর্সা মুখ লাল হয়ে যায়। প্রমীলাদেবী দেবস্মিতাকে আলতো ধাক্কা দিয়ে বলেন, “কিরে তোর’টা এই বয়সেও এমন নাকি? আমার’টা যদি আমার দিকে একটু চোখ মেলে দেখত।” ঝিলাম দেবস্মিতাকে জড়িয়ে ধরে প্রমীলাদেবীকে বলে, “তুমি দেবীর কাছ থেকে কিছু সাজার টিপস নিও তাহলে মামা তোমাকে নিয়ে আবার হানিমুন যাবে।”
বুধাদিত্য যথারীতি সবার চাপে পরে ঝিলামের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আঙটি পড়িয়ে দেয়। আঙটি পরানোর সময় সবাই চেঁচিয়ে ওঠে যে একদম ইংরাজি স্টাইলে হাতে চুমু খেয়ে আংটি পড়াতে হবে। বুধাদিত্য চেঁচিয়ে বলে এবারে আর না, বউ নিয়ে পালিয়ে অন্য কোথাও বিয়ে করে নেবে। ঝিলাম ওর চিবুকে হাত রেখে ছোট্ট একটা চুমু খায়। সেই দেখে সবার হর্ষধ্বনি দিয়ে ওঠে। ঠিক করা হয় যে সই দিয়ে তারপরে সিঁদুর পরানো হবে। সই দেওয়া শেষ, কে কে সাক্ষী হিসাবে সই দেবে সেটা নিয়ে একটু প্রশ্ন ওঠে। বুধাদিত্য বলে যে, ঝিলামের বাবা, মামা আর দেবস্মিতা সাক্ষী দিলে হবে। রঞ্জনবাবু এর মাঝে বলে ওঠেন, এই যাঃ বিয়ের মন্ত্র যে পড়া হলনা, তাহলে বিয়ে কি করে সম্পন্ন হবে। সুবিরবাবু হেসে বলেন, তিনি মন্ত্র পরে দেবেন। তিনি ঋগ বেদের একটা মন্ত্র উচ্চারন করে বললেন বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে, ব্যাস বর বধু এবারে সিঁদুর পড়াতে পারে। দেবস্মিতা কুলো এগিয়ে ধরে বুধাদিত্যের দিকে। ঝিলামের মা বলেন, বাবা আঙটি দিয়ে সিঁদুর পড়াতে হয়। ঝিলাম বলে ওঠে, ধুর, একটা কিছু দিয়ে পরালেই হল। দেবস্মিতা বুধাদিত্যকে বলে যে দুই আঙ্গুলে একটু সিঁদুর তুলে ঝিলামের সিঁথিতে লাগিয়ে দিতে। বুধাদিত্য এক চিমটে সিঁদুর উঠায়, ঝিলামের ঠোঁটে হাসি, দু’চোখ ছলছল করে ওঠে। মাথা নিচু করে দাঁড়ায় ওর সামনে, বুধাদিত্য কপালে থেকে সিঁদুর মাথার মাঝখানে পর্যন্ত টেনে দেয়। দেবস্মিতা ওকে বলে যে তিন বার লাগাতে হয়। বুধাদিত্য দ্বিতীয় বার সিঁদুর নিয়ে লাগিয়ে দেয়, বেশ কিছু সিঁদুর কপাল ছাড়িয়ে গালে আর নাকে মুখ পরে যায়। ঝিলাম মৃদু হেসে বকুনি দিয়ে বলে যে ঠিক ভাবে সিঁদুর পরাতেও জানেনা। তৃতীয়বার একটু বেশি করে সিঁদুর নিয়ে প্রথমে ওর কপালে আর সিঁথিতে লাগিয়ে দেয়, তারপরে ইচ্ছে করে বাকি টুকু ঝিলামের নাকের ওপরে আর দুই গালে লাগিয়ে দেয়। ঝিলাম খুশির জোয়ারে প্রায় কেঁদে ফেলে। গালের থেকে একটু খানি সিঁদুর হাতে নিয়ে বুধাদিত্যের গালে আর কপালে লাগিয়ে দেয়। সবাই হেসে ওঠে ওদের সিঁদুর খেলা দেখে। ঝিলামের সারা গালে কপালে সিদুরে লাল হয়ে গেছে, সেই সাথে বুধাদিত্যের গালে ঝিলামের সিঁদুর লেগে। ভালোবাসার আবেগে আর নিজেকে সামলাতে পারেনা বুধাদিত্য, ঝিলামকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে। সুব্রতদা চেঁচিয়ে ওঠে, “শালাবাবু, নাউ ইউ মে কিস দা ব্রাইড।” বুধাদিত্য জিজ্ঞেস করে যে সপ্তপদীর পরে দিদিভাইকে মন্ডপে চুমু খেয়েছিল কি না? সিঁদুরের রঙ্গে ঝিলামের মুখ খানি লাল হয়ে ছিল, সুব্রতদার কথা শুনে লজ্জায় আরও লাল হয়ে ওঠে। বুধাদিত্য বাঁ হাতে ঝিলামের কাঁধ জড়িয়ে ধরে মাথায় ঠোঁট চেপে ধরে। ব্যাস, সেই দেখে অনিন্দিতাদি বলে, “হয়ে গেছে তোর কিস দেওয়া।” খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হল বেশ হই হুল্লোড়ে, সবাই দেবস্মিতার গুণগান করে। অবশ্য দেবস্মিতা রান্না করেনি, কিন্তু ওর পছন্দের মেনু দেখে সবাই আপ্লুত। ঝিলামের দিদিদের হোটেল পাঠিয়ে দেওয়া হল, কারন ঝিলাম আর বুধাদিত্য এবারে নিজেদের ঘর চায়। দেবস্মিতা আর প্রমীলা দেবী মিলে সবার রাতের ব্যাবস্থা করে দিল।
নিজেদের শোয়ার ঘরে ঢুকতেই বুধাদিত্য ঝিলামকে জড়িয়ে ধরে। সদ্য বিবাহিতা, অপরূপ সুন্দরী প্রেয়সীকে অনেকদিন পরে একা পেয়েছে। ঝিলাম বুধাদিত্যের বুকের ওপরে মাথা চেপে হৃদপিণ্ডের ধুকপুক শোনে অনেকক্ষণ, বড় শান্তি এই বুকের, এই আলিঙ্গনে নিরাপত্তার ছোঁয়া। বুধাদিত্যের বাহুপাসে মনের শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তে পারে ঝিলাম, আনন্দে চোখ থেকে দুই ফোঁটা অশ্রু বুধাদিত্যের পাঞ্জাবির বুক ভিজিয়ে দেয়। বুধাদিত্য ঝিলামের মুখ আঁজলা করে তুলে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। চোখে জল ঠোঁটে হাসি, চেহারায় অপার ভালোবাসা নিয়ে ঝিলাম বুধাদিত্যের গলা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে। কাজল কালো চোখের ভেতরে প্রেয়সীর ছবি এঁকে নেয় বুধাদিত্য।
প্রেয়সীর পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে নাকের ওপরে নাক ঘষে কানেকানে বলে, “অনেকদিন পরে খুঁজে পেলাম।”
ঝিলাম মিষ্টি হেসে বলে, “এই রকম সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি?”
বুধাদিত্যের উষ্ণ শ্বাস ঝিলামের সারা মুখ ভরিয়ে দেয়, ঠোঁট নেমে আসে গোলাপি কোমল অধরে। তিরতির করে কেঁপে ওঠে ঝিলামের ঠোঁট, অল্প ফাঁক করে আহবান জানায় দয়িতের ভালোবাসার চুম্বন। আবেগে চোখ বন্ধ হয়ে যায় ঝিলামের, বুধাদিত্যের গভীর চুম্বনে অবশ হয়ে আসে শরীর। বুধাদিত্যের উষ্ণ হাত ঝিলামের মসৃণ পিঠে আদর করে দেয়। পরনের বসন একে একে দেহ চ্যুত হতে শুরু করে। শাড়ির প্যাঁচে ঢাকা প্রেয়সীর নধর দেহপল্লব বুধাদিত্যের চোখের সামনে উন্মোচিত হয় ধিরে ধিরে। বুধাদিত্য হাঁটু গেড়ে ঝিলামের সামনে বসে পেটের ওপরে চুমু খায়। শ্বাস ফুলে ওঠে ঝিলামের। বুধাদিত্য ঝিলামের নরম পেটের ওপরে ঠোঁট চেপে ধরে। ব্লাউসে ঢাকা পীনোন্নত বক্ষ যুগল প্রবল ঢেউ আছড়ে পরে। নাক চেপে বুক ভরে ঝিলামের গায়ের গন্ধে হৃদয় ভরিয়ে নেয় বুধাদিত্য। নিম্নাগের কটি বস্ত্রে ঢাকা নারীত্বের দ্বার সিক্ত হয়ে ওঠে, উরু জোড়ায় কাঁপন ধরে ঝিলামের। দশ আঙ্গুলে বুধাদিত্যের মাথা খামচে ধরে মিহি সুরে ককিয়ে ওঠে ললনা, “সোনা আর দুষ্টুমি করো না, এবারে আমাকে বুকে করে নাও...”
বুধাদিত্য উঠে পরে মেঝে থেকে, ঝিলামকে পেছন থেকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে। ঘাড়ের ওপরে মুখ নিয়ে কানের লতি, গাল ঘাড় চুম্বনে ভরিয়ে দেয়। ঝিলাম পেছনে হাত দিয়ে বুধাদিত্যের মাথা টেনে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। বুধাদিত্যের পুরুষাঙ্গ ঝিলামের নগ্ন নিতম্বের মাঝে আটকা পরে যায়। কোমল নিতম্ব কঠিন তপ্ত শলাকার পরশে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শরীরের শেষ বস্ত্র টুকু দেহ চ্যুত হয়ে যায়।
বুধাদিত্য পাগল হয়ে যায় ঝিলামের রুপে, “বারে বারে হেরি, চঞ্চলা হরিণী মত্ত নয়না তুমি হে কামিনী,
তুমি আছো তাই, আছে মোর হিয়া, মোর বাহুপাশে তুমি হে যামিনী।
ওই বাঁকা চোখে তাকিও না আর, মরমে জ্বলিছে আগুন তোমার,
অধরের মধু দাও গো শুধু, সেচিয়া দাও গো হৃদয় আমার।
আলুলিত ওই কুন্তলরাশি, সর্পের ন্যায় যায় যে দুলিয়া
আস মোর প্রিয়ে, ক্রোরে আমার, বসে আছি আমি দু বাহু মেলিয়া।
হে গজ গামিনী, তোমার চলনে, ছলকাইয়া ওঠে মদিরা পেয়ালা,
কণ্ঠধ্বনি কর্ণরন্ধ্রে, প্রবেশিলে পরে বেজে ওঠে যে বেহালা।
ও দেহ পরতে লুকিয়ে রেখেছ, কত সহস্র বিজলীর কণা,
সুগভীর বক্ষবিদলন মাঝে, যা কিছু আছে, তাই অজানা।
পীনোন্নত বক্ষোপরি শোভিতেছে দুই কঠিন নুড়ি,
সুকোমল দুই শৃঙ্গ যে ডাকে, হাতছানি দিয়া আমি কি করি?
হে মোর প্রেয়সী, হে মোর ললনা, দূর করো মোর বুকের যাতনা,
ও রাঙ্গা চরনে, চুম্বিয়া আজ, আমি যে মিটাব তোমার বাসনা।
প্রতি ওই শ্বাসে স্ফীত হয়ে আসে, সুকোমল ওই বক্ষযুগল,
কামাগ্নি ধায় নাসারন্ধ্রে তায় তপ্ত শ্বাস বয় অবিরল।
নিটোল জানু দেখিয়া ভাবি যে হেরিতেছি দুই কদলি কান্ড,
ওই জানুমাঝে করিলে চিন্তন, মস্তিষ্ক হয় লন্ডভন্ড।
কুম্ভের ন্যায় দুই নিতম্ব, পশ্চাতের শোভা করিয়া বর্ধন,
হৃদয় আকুলি বিকুলি করে, করিব কুচকুম্ভ মর্দন।
হে মোর কামিনী হে মোর ললনা মিটাও আজি মোর মনের বাসনা,
হে মোর প্রেয়সী করো না ছলনা।”
দুই প্রেমে বিভোর নর নারী পরস্পরকে আলিঙ্গনে বদ্ধ হয়ে হারিয়ে যায় পরস্পরের মাঝে। শুরু হয় এক নতুন অঙ্ক, আগের সব অঙ্ক ভুলে।
!!!!!!! দ্বিতীয় অঙ্কের সুত্রপাত !!!!!!!
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereপিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment