Thursday, January 2, 2014

নিষিদ্ধ ভালবাসা_Written By pinuram [২য় খন্ড (সৌন্দর্যের সম্মোহন)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




নিষিদ্ধ ভালবাসা
Written By pinuram






সৌন্দর্যের সম্মোহন (#01)

নিঃসঙ্গ একা একা ছাদের ওপরে আমি ঘুরে বেড়াতে থাকলাম। বারে বারে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পরীর বিমুগ্ধ সৌন্দর্য। মনে হল যেন প্রথম দেখায় আমি প্রেমে পড়ে গেছি। হটাৎ করে মনের এক কোণে ভয় ঢোকে, যদি পরী আমার সাথে কথা না বলে? তারপরে ভাবলাম, কেন কথা বলবে না, আমি তো এক দুর সম্পর্কের আত্মীয় হই। শীত কালের রাঙ্গা সূর্য পশ্চিম আকাশের কোলে ঢলে পড়েছে। বিয়ে বাড়ি আলোয় আলোকিত, চারদিকে মানুষের ভিড়, সবাই সেজেগুজে বরযাত্রী যাবার জন্য তৈরি। সবাই যেন নিজেদেরকে সুন্দর করে সাজিয়ে নেওয়ার জন্য উন্মুখ। নিচে নেমে জানতে পারলাম যে, কনের বাড়ি অনেক দুর, রাণাঘাট নামে একটি জায়গা। বসিরহাট থেকে প্রায় ঘন্টা চারেকের পথ। বিয়ের লগ্ন সেই মধ্যরাত্রে। বাঙালি বাড়ির বিয়ে বলে কথা আর আমি নিজে বাংলার বাইরে কাটালে কি হবে, আমি ধুতি পাঞ্জাবী পড়তে ভালবাসতাম খুব। তাই সেদিন আমি ঘিয়ে রঙের তসরের পাঞ্জাবী আর ঘিয়ে রঙের ধাক্কা পাড়ের ধুতি পড়েছিলাম। সুব্রত ছাড়া আর কেউ ধুতি পরেনি তাই নিজেকে কেমন যেন বেমানান লাগছিল, সবাই তাকিয়ে দেখছিল আমাকে। আমি একটু অসস্থিতে পড়ে গেছিলাম। অত লোকের মাঝে আমি বড় একা বোধ করছিলাম, বিশেষ কাউকে চিনতাম না তাই, গল্প করার লোক খুঁজে পাইনি। একদিকে দাঁড়িয়ে শুধু পরীর কথাই বারবার মনের মধ্যে ঘুরেফিরে চক্কর দিচ্ছিল।

এমন সময়, পেছন থেকে কেউ আমার হাতা ধরে টান মারে। আমি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি একটি বাচ্চা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে।

আমি ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করি "কি হয়েছে?"

ছেলেটার মুখের দুষ্টুমির হাসি আমাকে উত্তর দিল "আমি দুষ্টু, আমার নাম দুষ্টু আমি তোমার শশাঙ্ক মামার ছেলে।"

আমি হেসে দুষ্টুর চুলে বিলি কেটে দিয়ে বললাম "বাঃ বেশ তো। কি ব্যাপার ডাকছ কেন?"

---"আমার ছোটো পিপি পরী, তোমাকে উঠানে ডাকছে।"

আমি জিজ্ঞেস করি "কেন?"

সরল মুখে শয়তানির হাসি হেসে উত্তর দেয় দুষ্টু "আমি কি জানি, নিজে গিয়ে জিজ্ঞেস করে নাও।" বলেই দৌড়ে পালিয়ে গেল।

আমি তো আহ্লাদে আটখানা, মনের ভেতরে ময়ুর পেখম তুলে নাচতে শুরু করে দিয়েছে, এক দেখায় যাকে ভালবেসে ফেলেছি সে ডাকছে আমাকে। প্রবল উত্তেজনায় ডিসেম্বরের ঠাণ্ডার মধ্যে কপালে ঘাম দিতে শুরু করে দিয়েছে। উঠানে নেমে দেখলাম যে পরী আরও অন্য অনেক মহিলার সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করছে, সাথে আমার মা আছেন। বুকের মধ্যে ভাললাগার বেলুনটা হটাৎ করে চুপসে গেলো। ক্ষণিকের জন্য মনমরা হয়ে পড়লাম।

আমায় দেখে মা কাছে ডাক দিয়ে বললেন "কি রে, সাড়া দিন কোথায় ছিলিস তুই?"

পরী মায়ের দেখাদেখি হেসে আমায় জিজ্ঞেস করল "হ্যাঁ অভিমন্যু, কোথায় ছিলে সারাদিন? দেখা পাইনি তোমার।"

আমি তো মুখ ফস্কে প্রায় বলে ফেলেছিলাম যে, তোমার কথা ভাবছিলাম সারাদিন, কখন একটু দর্শন দেবে।

মা জানিয়ে দিলেন যে বরযাত্রীর বাস সন্ধ্যে ছ’টায় ছাড়বে, আমি যেখানে থাকি না কেন আমি যেন সময় মতন বাসে চেপে যাই।

মায়ের কথা শুনে পরী আমার পাশে এসে আমার হাত ধরে মাকে আশ্বাস দিয়ে বলল "চিন্তা করোনা উলুপিদি, ছোটো বেলায় যেমন চোখে চোখে রাখতাম, ঠিক সেই রকম করে রাখব।"

আমি পরীর দিকে তাকিয়ে দেখি, সুন্দরী কি সুন্দর করে সেজেছে। পরনে কালো সিল্কের সাড়ী, তাতে সোনালী সুতোর কাজ। চুলে খোঁপা, কানে সোনার দুল ঝলমল করছে। আমার মনে হল যেন, স্বর্গের কোন অপ্সরা মর্ত্যে নেমে এসেছে। হাতের ছোঁয়া পাওয়া মাত্রই আমার রোমকূপ গুলো খাড়া হয়ে গেল। নাকে সেই জুঁই ফুলে সুবাস লাগতেই মন আকুল হয়ে উঠলো। পাশে দাঁড়িয়ে পরী, আমার চেয়ে ইঞ্ছি চারেক ছোটো হবে, আমার কাঁধের কাছে মাথা। মুখ পানে চেয়ে দেখি, রূপ যেন ফেটে পড়ছে। টিকালো নাক, বাঁকা ভুরু, কাজলে আঁকা দু’নয়ন, গোলাপের পাপড়ির মতন নরম ঠোঁট দুটি। মনে হচ্ছিল যেন এখুনি জড়িয়ে ধরি। আমার হাঁ করা মুখের দিকে চেয়ে আমায় বলল ওর পাশে হাঁটতে।






সৌন্দর্যের সম্মোহন (#02)

উঠানে ওপর দিয়ে আমরা হাঁটতে শুরু করলাম, আমার বাঁ পাশে পরী। আমার তো কথা বন্দ, সুন্দরী এক নারী আমার পাশে হাঁটছে এই ভেবে, চেয়েও যেটা বেশি সেটা হচ্ছে যে আমি তো ওর রূপের জালে জড়িয়ে প্রেমে পড়ে গেছি।

পরী আমায় জিজ্ঞেস করল "তোমার ছোটো বেলার কথা কিছু মনে নেই?"

নির্বাক আমি, মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিলাম "না"।

পরী কথা বলে চলেছে, আমি চুপ করে শুনে চলেছি "তুমি নাকি পড়াশুনায় অনেক ভালো?"

বাধ্য ছেলের মতন মাথা নাড়া দেই আবার "হ্যাঁ"

আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল "তোমাকে এই ধুতি পাঞ্জাবীতে দারুন দেখাচ্ছে। সব সময় পড়ো এইরকম ড্রেস?"

আমার কানে তো পরীর মিঠে আওয়াজ ভ্রমরের গুঞ্জনের মতন লাগছিল, আমি কথা কি বলব শুধু শুনে যাচ্ছিলাম। 

"আমি বি.এস.সি পড়েছি, ফিজিক্স নিয়ে। তুমিও তো এক স্ট্রিমে তাই না।"

মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেই "হ্যাঁ"

হটাৎ করে পরীর গলার স্বর একটু ভারী হয়ে আসে "আমি আর পড়তে চাই, এম.এস.সি। কিন্তু আমার বাড়ির লোক আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। উলুপিদি কে দাকার আইডিয়া আমার ছিল। উলুপিদি পড়াশুনা করে স্কুল টিচার হয়েছেন, আমাদের স্কুলে পড়াতেন উলুপিদি। আমিও উলুপিদির মতন পড়াশুনা করে স্কুল টিচার হব। আমি জানি উলুপিদি বললে আমার মা না করবে না।"

পরী হাঁটছে আমার পাশে আমার হাত ধরে, কোমল আঙ্গুলের পরশে শরীরে শিহরণ খেলে বেড়াচ্ছে মাঝে মাঝে। কখন কখন আমার আঙ্গুল গুলো ওর নরম আঙুলের সাথে ছুঁয়ে যাচ্ছে। আলতো ছোঁয়ায় আমার শিরদাঁড়ায় মাঝে মাঝে এক বিদ্যুৎ তরঙ্গ নেচে চলে যাচ্ছে। ওর দিকে মুখ ঘুরিয়ে তাকাতেই আমার চোখ আটকে গেল উদ্ধত বুকের ওপরে, শারীর আঁচলের নিচে ঢাকা কোমল বক্ষ, বক্ষ মাঝে গভীর খাঁজ, উফফ সেই গভীর খাঁজ দেখে মাথা ঠিক রাখা দায়।

পরী থামেনি, কথা বলেই চলেছে, "আমি তোমার মাকে, সব জানিয়েছি আর উলুপিদি বলেছেন যে সময় মতন আমার মায়ের সাথে কথা বলবেন। আমি জানি আমার মা, উলুপিদির কথা অমান্য করবে না। আমি শুনেছি যে উলুপিদি নাকি আমাকে ছোটো বেলায় নিজের মেয়ের মতন ভালবাসত, আর আমার মা উলুপিদির কথা শুনত। জানিনা এর মাঝে কি হয়েছে, কেন এতদিন ধরে আমাদের বাড়ির কেউ উলুপিদির খোঁজ নেয়নি। কিছু দিন আগে যখন মা উলুপিদির কথা বলেছিল তার সাথে বলেছিল যে তোমার মাকে খুব মিস করে আমার মা। আমি জানি তোমার মা যদি আমার মাকে কিছু বলে তাহলে আমার মা সেটা অমান্য করবে না।"

তারপরে আমার দিকে তাকিয়ে বলে "কি অভিমন্যু, আমার মা আমাকে পড়তে দেবে? বলো না।"

এতক্ষণ ধরে পরীর কথা শুনছিলাম ঠিক তবে মনটা অন্য কিছুতে পরেছিল। আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নেই, ভাবতে থাকি কি উত্তর দেব।

আমার কাছে কোন উত্তর না পেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটু রেগে যায় পরী, "সেই তখন থেকে শুধু আমি কতাহ বলে যাচ্ছি, তুমি কি বোবা, কথা বলতে জাননা? শুধু তখন থেকে গাধার মতন মাথা নাড়িয়ে চলেছো। কিছু তো হ্যাঁ কিংবা না, উত্তর তো দেবে নাকি?"

বলে ফেলি যা হবার হবে, বুকের মাঝে রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। আমি বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে, আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে ফেল "পরী, তুমি না, খুব সুন্দরী দেখতে।"

বলার পরেই আমি চোখ বন্দ করে নেই, গালে আসন্ন চপেটাঘাত বরিষণ হতে চলেছে এখুনি, তার প্রতীক্ষায়। 

সঙ্গে সঙ্গে হাত ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়ল পরী, আমার দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বলল "আমার কোন কথা শোননি তাহলে? আর এমন বদমাশ ছেলে আমি জীবনে দুটো দেখিনি। জানো কি সম্পর্কে আমি তোমার মাসি হই?" তারপরে আমার হাতে আলতো করে চাঁটি মেরে বলল "তুমি না সত্যি খুব বদ।"

উঠানের এক কোণে দাঁড়িয়ে আমরা, এদিকে আলো একটু কম, পরী আমার সামনে দাঁড়িয়ে। 

আমি বড় একটা নিঃশ্বাস নিয়ে সর্ব শক্তি যোগাড় করে বলি "আমি সত্যি বলছি, তোমার সব কথা আমি শুনছিলাম, কিন্তু জানো, তুমি না ভারী সুন্দরী।"

আমার কথা শুনে খিলখিল করে হেসে ফেলে পরী, হাসিতে যেন মুক্ত ঝরে পড়ছে "থ্যাংক্স ফর কমপ্লিমেন্টস। ভারী বদ তুমি, সেটা মানতে হবে।" 

আমি জিজ্ঞেস করি "তোমার বান্ধবীরা কোথায় গেল? কাউকে তো সাথে দেখছি না।"

পরী জানাল যে ওর বান্ধবীদের বউভাতে নিমন্ত্রন করা হয়েছে তাই কেউ সাথে নেই; আর যেহেতু বাড়ির সব থেকে ছোটো তাই বান্ধবীরা চলে যাওয়ার পড়ে খুব একা একা মনে হচ্ছিল ওর। কথা শুনে মনে হল হাত বাড়িয়ে পরীর দু’হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে নেই। ঠিক সেই সময়ে আমার মা ডাক দিলেন যে বাস ছাড়ছে আমাদের বাসে উঠতে হবে। কপাল চাপড়ে মনে মনে বললাম হে ভগবান, এখুনি কি মায়ের ডাক দেওয়ার ছিল?

পরী আমার দিকে তাকিয়ে বুঝে গেছিল যে, আমি হাত বাড়িয়েছি ওর দিকে। সেটা বুঝে মিচকি হেসে দৌড়ে চলে গেল বাসের দিকে। যাবার আগে ফিসফিস করে বলে গেল "আমি বাসে ওয়েট করব কিন্তু..."







কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment