Thursday, January 2, 2014

নিষিদ্ধ ভালবাসা_Written By pinuram [৯ম খন্ড (নতুন নারীর আবির্ভাব)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




নিষিদ্ধ ভালবাসা
Written By pinuram





নতুন নারীর আবির্ভাব (#01)

খুব একা একা লাগছিল, পরী কাছে নেই। এমন সময়ে দুষ্টু এসে জানাল যে সুব্রতর ঘরে আমার ডাক পড়েছে। সুব্রতর ঘরে ঢুকে দেখলাম এক নতুন কোন মেয়ে মৈথিলীর পাশে বসে। সুব্রত পরিচয় করিয়ে দিল মেয়েটার সাথে, মেয়েটা সুব্রতর শালি, মৈথিলীর খুড়তুতো বোন, অরুণিমা। অরুনিমা কলকাতায় থাকে, বিএ ফার্স্ট ইয়ার পড়ছে, দক্ষিণ কলকাতার কোন কলেজে। আমি মনে মনে হেসে উঠি, সুব্রতর প্রচেষ্টা দেখে, আমার সাথে অরুনিমার সাক্ষাৎ করানোর ঢঙ্গ দেখে মনে হল যে ও চায় আমি আর অরুনিমা... অরুনিমার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, উনিশ বছর বয়স হবে হয়তো মেয়েটার। সবে যেন গোলাপের কুঁড়ি, বেশ সুন্দর করে প্রস্ফুটিত হবার অপেক্ষায়। আমার দিকে তাকিয়ে সৌজন্য সুলভ হাসে হাসে। আমি সুব্রতর কাঁধে হাত রেখে বললাম "ভায়া আমার শরীরটা ঠিক ভালো লাগছে না, আমি এখন আসছি।"

আমি মৈথিলীর দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করি, আমাকে মাথা নিচু করতে দেখে ঘাবড়ে যায় মৈথিলী, জিজ্ঞেস করে কি করছি। আমি বলি "চূর্ণি, তোমাকে সত্যি সুন্দর দেখতে। তোমার সাথে আগে মিট করতে হত।"

লজ্জায় লাল হয়ে যায় মৈথিলী, আমার মুখে চূর্ণি নাম শুনে সুব্রতর দিকে কটমট করে তাকিয়ে থাকে। ওকে ঐ নামে সুব্রত ছাড়া আর কেউ ডাকে না। আমি সুব্রতর কাঁধে হাত রেখে আশস্ত করে বলি যে আমি মজা করছিলাম।

আমি ঘর থেকে বেড়িয়ে, নিচে নেমে এক কাপ কফি নিয়ে ছাদে উঠে যাই। ছাদে কেউ নেই, আমি এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকি, সূর্য মধ্য গগনে জ্বলজ্বল করছে। শীত কালিন রোদ্দুর বেশ মনোরম লাগছে। চোখ বন্ধ করে দুহাত মাথার ওপরে তুলে একটু আড়ামোড়া ভাঙ্গি।

কফির কাপে চুমুক দিয়ে ভাবি পরীর কথা। কোথায় যাবে আমাদের সম্পর্কটা, কি হবে ভবিষ্যতে? সত্যি বলতে আমাদের মাঝে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, মায়ের অনেক দুর সম্পর্কের বোন, পরী। সেটাই কি একমাত্র কারন হয়ে দাঁড়াবে আমাদের ভালবাসার মাঝে? কেন আমরা একে অপরকে ভালবাসতে পারি না? যদি পারি তো বিয়ে কেন হতে পারেনা? শুধু কি এই জন্য যে ও আমার চেয়ে দু’বছরের বড় বলে? আমি নিজেকে বুঝিয়ে উঠতে পারি না যে কেন আমাদের প্রেম নিষিদ্ধ। ও একটা মেয়ে আমি একটা ছেলে, আমরা দু’জনে রক্তে মাংসে গড়া মানুষ, আমাদের বুকের মাঝে একটা হৃৎপিণ্ড ধুকপুক করে চলেছে। না ভালবাসা কখন নিষিদ্ধ হতে পারে না। হয়তো এই সমাজ মেনে নেবে না ঠিক মতন, হয়তো দিদা বা আমার মা আমাদের ভালবাসা মেনে নেবেন না। কিন্তু প্রেম কি বলে কয়ে আসে? বিদ্যুতের ঝটকার মতন আসে, কে কার সাথে কোন সময়ে প্রেমে পরবে কি করে জানা যাবে, কেউ তো আর পাঁজি দেখে প্রেম করে না। প্রেম তখন হয় যখন কেউ ব্যাস্ততার মধ্যেও তার মনের মানুষের কথা ভাবে, খালি সময়ে তো অনেকে অনেক কিছু ভাবে। নাড়ি বন্ধ হয় যখন মনের মানুষ কাছে থাকেনা।

কারুর মিষ্টি ডাকে আমি সম্বিৎ ফিরে পাই "হাই, তোমাকে সবাই খুঁজছে নিচে। খেতে ডাকছে তোমাকে।"

আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখি অরুনিমা আমার পেছনে দাঁড়িয়ে।





নতুন নারীর আবির্ভাব (#02)

আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম "আরে খাবার কথা তো আমি একদম ভুলে গেছিলাম। তো তোমাকে কে ডাকতে পাঠিয়েছে, তোমার জামাই বাবু না দিদি?"

উত্তর দিলো "দিদি তোমাকে ডাকতে পাঠিয়েছে খেতে যাবার জন্য।" নিচে নামার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করল "তুমি কলকাতায় থাকো?"

"হ্যাঁ, আমি উত্তর কলকাতায় থাকি আর তুমি মনে হয় দক্ষিণ কোলকাতা?"

"হ্যাঁ, ঢাকুরিয়া।"

আমি চেয়ে দেখলাম ওর দিকে, মেয়েটার সাজার শৈলী বেশ সুন্দর। লাল রঙের সাড়ী পরেছে, ব্লাউসের পেছনে একটা গিঁঠ দিয়ে বাঁধা, খোলা পিঠ, বাঁকা নদীর মতন মেরুদণ্ড। গায়ের রঙ ফর্সা, পাতলা গড়ন। 

আমাকে জিজ্ঞেস করল "তুমি ফাইনাল ইয়ারে?"

"হ্যাঁ"

"তারপর?"

"তারপর কি?"

"তারপর মানে, কলেজের পড়ে কি করবে? হাইয়ার স্টাডিস না জব।"

আমি মনে মনে ভাবি আমাকে নিয়ে এত প্রশ্ন কেন মেয়েটার। আমি উত্তর দিলাম "আমাকে চাকরি পেতে হবে। আমি একটা প্রাইভেট অরগানাইজেসানে কম্পিউটার কোর্স করছি।"

আমি ওকে ওর ভবিষ্যতের কথা জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দিল যে ও চাকরি বাকরি করতে চায় না, ও জীবন খুব সাধারন ভাবে কাটাতে চায়। কলেজের পরে বিয়ে, ঘর সংসার। আমি মাথা নাড়ি "হুম"

আমার পরীর একদম উল্টো। নিচে কওয়ার জায়গায় দেখলাম যে শুধু দুটো জায়গা খালি, অগত্যা ওর পাশেই খেতে বসতে হল। 

আমাদের উল্টো দিকে সুব্রত আর মৈথিলী খেতে বসেছিল। খাবার সময়ে দেখলাম যে মৈথিলী সুব্রতর কানে কানে কিছু একটা বলল, সেই শুনে দু’জনে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে। আমি নিশ্চিত যে মৈথিলী চাইছে আমার আর অরুনিমা মধ্যে কিছু একটা হোক। আমি ভেবে মনে মনে হেসে ফেলি, কত বোকামো করছ। খাবার সময়ে আমি চুপচাপ ছিলাম, বিশেষ কথা বলতে ভালো লাগছিল না আমার।

আমি এত চুপ দেখে সুব্রত আমাকে খাবার ওপরে একদিকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করল যে কি হয়েছে। আমি আমার মনের অবস্থা লুকিয়ে বললাম যে দিদা আমাকে ছোটবেলার কথা শুনাল, সেই আমের গাছ দেখাল, এই সব দেখে আমার মন কেমন একটা হয়ে গেছিল তাই আমি চুপ করে ছিলাম।

সুব্রত আমাকে বলল "আরে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুমি এক কাজ কর, অরুনিমাকে নিয়ে বাগান দেখিয়ে নিয়ে এসো, ভালো লাগবে।"

কানে কানে বলল "অরুনিমা একদম তোমার জন্য ফিট, সুন্দরী, স্মার্ট।"

আমি বাঁকা হাসি হেসে বলি "আরে না না, আমি ঠিক আছি। তুমি এরকম কেন করছ?"

"হুম, এত সুন্দরী মেয়ে, আমার কোন বন্ধু হলে তো হুমড়ি খেয়ে পরত আর তুমি কিনা এড়িয়ে যাচ্ছ। আমি নিজে থেকে আমার শালিকে তোমার কাছে পাঠাচ্ছি আর তুমি কিনা মানা করছ। তুমি ছাদে যাও, আমি একটু পরে পাঠিয়ে দেব।"







কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 




পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

পিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment