CH Ad (Clicksor)

Saturday, May 24, 2014

জামাই আদর_Written By Lekhak (লেখক) [১ম খন্ড (চ্যাপ্টার ০১ - চ্যাপ্টার ০৩)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




জামাই আদর
Written By Lekhak (লেখক)







।।এক।।

সুনীলের সঙ্গে মনীষার আলাপ হয় একটা জন্মদিনের পার্টিতে। সুনীলের বাবার ব্যাবসায়িক পার্টনার মিষ্টার প্রশান্ত চৌধুরীর একমাত্র কন্যা রিমঝিম। তারই জন্মদিনের পার্টিতে সুনীলকে উপস্থিত থাকতে হবে। এসব আর কিছুই নয়। সোসাল বাইন্ডিংস। সুনীলের যাবার ইচ্ছা একদমই ছিল না। বাবা জোড় করেছে, সুতরাং ওকে যেতে হবে। ব্যাবসার কাজে বাবা তখন থাকবে কলকাতা থেকে অনেক দূরে, সেই লন্ডনে। মিষ্টার প্রশান্ত চৌধুরী অনেক করে সুনীলের বাবাকে বলেছেন, "আপনি না থাকলেও ছেলেকে অন্তত পাঠিয়ে দেবেন। তাহলেই আমার ভাল লাগবে।"

বাবার জোড়াজুড়িতে শেষ পর্যন্ত ওকে আসতে হল। পার্টিটা তখন বেশ ভালই জমেছে। চারিদিকে হৈ হট্টগোল। এরমধ্যেই প্রশান্ত চৌধুরী সুনীলকে বুকে জড়িয়ে একবার থ্যাঙ্কস্ জানিয়ে গেলেন। উনি প্রচন্ড খুশি, বাবার জায়গায় সুনীল এই কর্তব্যটি পালন করেছে বলে। রিমঝিমও এসে গালটা একবার টিপে দিয়ে গেল সুনীলের। - "এসেছ তুমি? আমার কি ভাল লাগছে।"

সবাই আনন্দে মশগুল। সুনীল বড় হল ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে তখন থেকে লক্ষ্য করে যাচ্ছিল পার্টিতে আসা বেশ সুন্দরী মেয়েটিকে। ঠোঁটে মৃদু হাসি নিয়ে ভদ্রতা দেখিয়ে রিমঝিমের মতন অতিথিদের বিনীত ভাবে অভ্যর্থনা করছে।

সুনীল ওকে লক্ষ্য করে যাচ্ছিল অনেক্ষণ ধরে। আসব না আসব না করেও রিমঝিমের জন্মদিনে আসাটা যেন সার্থক হয়েছে। কি সুন্দর সেজেছে মেয়েটা। অপরূপ দেহ সৌষ্ঠব। সুনীল একেবারে মুগ্ধ। যার জন্মদিন, সেই রিমঝিমও অনেক সেজেছে। কিন্তু ওকেও যেন ফিকে লাগছে ঐ সুন্দরী মেয়েটির কাছে।

রিমঝিমের সাথে সাথেই ঘুরছিল মেয়েটি। একেবারে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মতন। সুনীলের তাই মনে হল। শুধু একবার রিমঝিম যদি ওর সাথে আলাপটাও একবার করিয়ে দেয়। কেক কাটার সময়ও সুনীল দেখল মেয়েটি রিমঝিমের পাশে দাঁড়িয়ে। সবার সাথে গলা মিলিয়ে ও যখন রিমঝিমকে হ্যাপি বার্থডে উইশ করছিল, তখনও সুনীল ওকে দেখছিল একদৃষ্টে।

কেক কাটার পর রিমঝিম সুনীলের কাছে এল। ওকে বললো, "একা একা এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছ কেন শুনি? পার্টি ভাল লাগছে না বুঝি? বোর লাগছে?"

রিমঝিমের পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে ঐ মেয়েটি। সুনীল কিছু বলার আগেই রিমঝিম বলল, "নাও, আমার এই বন্ধুটির সাথে আলাপ করো। এর নাম মনীষা। আমার সবথেকে বেষ্ট ফ্রেন্ড। ওর সাথে কথা বললেই তোমার বোরনেস কেটে যাবে।"

মনীষা হাসছিল রিমঝিমের কথা শুনে। সুনীলের সাথে ওর আলাপ করিয়ে দিয়েই রিমঝিম আবার চলে গেল অন্য গেষ্টদের অ্যাটেন্ড করতে।

মেয়েটি সুনীলকে বলল, "আপনি কিছু খাচ্ছেন না? কি খাবেন বলুন, আমি এনে দিচ্ছি।"

সুনীল বেশ লাজুক হয়ে পড়েছে মেয়েটা কাছে এসে পড়ায়। একটু ইতস্তত হয়েই ও বলল, "না না আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমি ঠিক আছি।"

 - "কিন্তু আপনি যে কিছুই নিচ্ছেন না। ড্রিংকসও না।"

 -- "আমি ড্রিংকস করি না।"

 - "ওমা তাই? আমি আপনার কথা রিমঝিমের মুখে শুনেছি। আপনি মিষ্টার সুনীল তো?"

 -- "হ্যাঁ কি শুনেছেন?"

 - "ও বাবা। অনেক বড় বিজনেস ম্যানের ছেলে আপনি। রিমঝিমের বাবা, মানে মেসোমশাই আর আপনার বাবা তো একই বিজনেস এর পার্টনার।"

কি সুন্দর করে কথা বলছে মেয়েটি। সুনীলের আড়ষ্টতা এবার একটু কেটে গেল। ও বলল - "হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। বাবা এখন এখানে নেই। উনি লন্ডনে। আমি একাই এসেছি পার্টিতে। আর আপনি?"

 - "আমি? আমি মনীষা। রিমঝিমের আদরের বন্ধু। আমার বাবাও রিমঝিমের বাবার বিশেষ পরিচিত। অনেকদিনের আলাপ। বন্ধুই বলতে পারেন। বাবা মা এখানে কেউ নেই। আমি একাই এসেছি।"

 -- "আপনার বাবা মা এখন কোথায়?"

 - "বাবা মা তো শিলিগুড়িতে। ওনারা ওখানেই রয়েছেন।"

 -- "আপনি শিলিগুড়ি থেকে একা এসেছেন?"

 - "না না আমি কলকাতাতেই থাকি। আমাদের এখানেও একটা বাড়ী আছে। কলকাতায় থেকে পড়াশোনা করি। বাবা মা, মাসে একবার আমার কাছে আসেন। আমিও যাই বছরে দুবার।"

শিলিগুড়ির মেয়ে কলকাতায় এসে রয়েছে? সুনীলের বেশ ভাল লাগছিল মেয়েটির সাথে কথা বলতে। কাছে দাঁড়িয়ে আয়ত চোখ মেলে সুনীলের সাথে কথা বলছে। মেয়েটি বেশ সহজ। প্রথম আলাপেই সুনীলকে বেশ অবাক করে দিয়েছে।

একে অপরূপ সাজ। তার ওপর সুনীলকে আরও ধন্য করে দিয়ে মেয়েটি বলল, "চলুন না, আমরা ঐ সোফাটায় গিয়ে বসি।"

হলঘরে তখন একটা সিডি চলছে পপুলার হিন্দী গানের। সবাই ওয়াইনের গ্লাস হাতে ধরে নাচে পা মেলাচ্ছে। মনীষা বললো, "আপনি নাচবেন না?"

 -- "না না, আমি নাচব না।"

সুনীলের নাচার থেকে এখন গল্প করতেই ভাল লাগছে বেশি।

জন্মদিনের কেক কাটা একটা টুকরো সুনীলের জন্য হঠাৎই নিয়ে এসে মনীষা বললো, "নিন, এই কেকটা অন্তত খান। আপনি তো কিছুই খাচ্ছেন না....."

হাত বাড়িয়ে কেকটা নিয়ে সুনীল বললো, "আপনি দেখছি আমাকে না খাইয়ে ছাড়বেন না।"

মনীষা তখনও হাসছিল। সোফায় সুনীলের পাশে বসে পড়ে ও আবার কথা বলতে লাগল। খুব জানতে ইচ্ছে করছে সুনীলের। কলকাতায় ও কোথায় থাকে.....

উল্টে মনীষাই ওকে জিজ্ঞাসা করলো, "আপনাদের বাড়ীটা কোথায়?"

 -- "গল্ফগ্রীণ।"

 - "গল্ফগ্রীণ? ও মা, তাহলে তো কাছেই।"

 -- "কাছেই?"

 - "হ্যাঁ, আমাদের বাড়ীটা তো টালীগঞ্জে।"

 -- "টালীগঞ্জ?"

 - "হ্যাঁ আপনাকে বললাম না। আমাদের কলকাতাতেও একটা বাড়ী আছে। টালীগঞ্জের ঐ বাড়ীতে থেকেই আমি পড়াশুনা করি।"

 -- "আপনি একাই থাকেন?"

 - "হ্যাঁ। চাকর আছে অবশ্য একটা। বাবা মাসে ঐ একবার আসেন। এছাড়া রিমঝিম রোজই আমার ওখানে যাতায়াত করে। আমার পড়াশুনা আর গল্প করে সময় কেটে যায়।"

এই প্রথম সুনীলের মনে হল, টালীগঞ্জের ঐ বাড়ীতে ও যদি মাঝে মধ্যে যেতে পারত.....

ওকে অবাক করে মনীষা বললো, "আসুন না আমার ওখানে একদিন ভাল লাগবে।"

একী? এতো আমি যা মনে মনে চাইছি, তাই তো দেখি মিলে যাচ্ছে! সবই তো ঐ বলে দিচ্ছে!

সুনীলকে আরও অবাক করে মনীষা বলল, "আপনি বিয়ে করেন নি এখনও?"

 -- "বিয়ে? না করিনি এখনও।"

 - "সেকি এখনও করেন নি? ওমা কেন?"

 -- "সেরকম মেয়ে এখনও পছন্দ হয় নি তাই।"

বিয়ের আগে প্রেমটা না হলে বিয়েটা যেন ঠিক জমে না। মনীষা তুমি কত সুন্দর। আচ্ছা তুমিও বোধহয় বিয়ে করনি মনীষা। তাহলে প্রেমটা নয় আমার সাথে? কিম পছন্দ নয়? একবার ভেবে দেখতে পারো মনীষা। যদি তোমার সাথে আমার আজ থেকেই প্রেম শুরু হয়ে যায়? তোমার দিকে ঠোঁটটা বাড়িয়ে দিই, চুমু খাওয়ার জন্য। তারপর..... তোমার উষ্ণ বুকে মাথা রেখে..... একটু ঘন সান্নিধ্য..... কি মনীষা, তুমি কি রাজী? আমার সাথে প্রেম করতে?

সুনীল মদ না খেয়েও মাতাল হয়ে যাচ্ছিল মনীষাকে দেখতে দেখতে। ওর মুখে কথা নেই। শুধু মনের মধ্যে মনীষার সাথে প্রেম করার একটা অদম্য ইচ্ছা জাগছে। কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারছে না। শুধুই নিজের মনের সাথে কথা বলে যাচ্ছে।

একটু পরে রিমঝিম আবার ফিরে এলো। মনীষাকে বললো, "এই মনীষা। তুই যে দেখছি একেবারে জমেই গেলি এখানে। এবার একটু আয় আমার সঙ্গে। আমার বয় ফ্রেন্ড এসেছে। তোর সাথে ওকেও আলাপ করিয়ে দেব।"

যাঃ। যাও বা সুন্দর সুন্দর কথা হচ্ছিল মনীষার সাথে, রিমঝিম এসে ওকে সাথে করে নিয়ে গেল। সুনীলকে আবার একা ফেলে দিল। আবার কখন মনীষা ওর কাছে এসে গল্প করবে কে জানে? সারাক্ষণ একটা আশা নিয়ে সুনীল একা একা বসে রইল পার্টিতে।

মনীষা আর কাছে এলো না। একটু রাগ হচ্ছিল রিমঝিমের ওপর। কি যে করলো প্রশান্ত চৌধুরীর মেয়েটা। আলাপটা যখন জমে উঠেছিল, তখনই ওকে নিয়ে চলে গেল? আর কি এমন সুযোগ পাবে আবার? বোধহয় না।







।।দুই।।

রাত্রে পার্টি ছেড়ে আসবার সময় অবশ্য সুনীলকে আবার আশার আলো দেখাল রিমঝিম। ওকে বলল, "কি, আমার বন্ধুটিকে পছন্দ হয়েছে? ওতো তোমার কথা খুব বলছিল,একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেছে তোমার সাথে আলাপ করে। যাবে নাকি একবার ওর বাসায়? কলকাতাতেই থাকে, টালীগঞ্জে।"

প্রথম দর্শন আর আলাপে সুনীলও মুগ্ধ। মনীষা ওর আশাতে জল ঢেলে দেয় নি। তখনকার মতন রিমঝিম কে বিদায় আর ধন্যবাদ জানিয়ে সুনীল ফিরে এল নিজের বাড়ীতে। রিমঝিম ওকে সেলফোন নম্বরটা দিয়ে বলল, "আমাকে ফোন কোরো। কবে তুমি যাবে আমাকে বলে দিও। আমি মনীষাকে আগে থেকে বলে রাখব।"

আজকের জন্মদিনের পার্টিটা ওর কাছে এক স্মরনীয় দিন। এক নতুন সম্পর্কের সূচনা হল। বাড়ীতে ফিরে সুনীল মনে মনে ঠিক করে নিল, এই মেয়ের কাছেই ও বিয়ে করার প্রস্তাব রাখবে। এত সুন্দরী, ভদ্র, মার্জিত মেয়ে। মনীষাকে জীবন সাথী হিসেবে পেলে দারুন হবে।

ঠিক করল, দুদিন বাদেই মনীষার বাড়ীতে যাবে, ওর সাথে গিয়ে দেখা করবে। তার আগে রিমঝিমকে শুধু একটা ফোন করে জানিয়ে দিতে হবে।

মনীষার বাড়ীটা টালীগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের খুব কাছেই। ওর বাবা বাড়ীটা কিনেছিলেন বছর চারেক আগে। ভেবেছিলেন শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় এসে পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করবেন। কিন্তু মনীষার মা রাজী হন নি। শিলিগুড়ির মেয়ে মনীষার মা। তার বাপের বাড়ীও খুব কাছে। মনীষার বাবার সাথে বিয়ে হওয়ার পরও উনি শিলিগুড়ির মোহ ত্যাগ করেননি। মনীষার বাবা শিলিগুড়িতে থেকেই ওখানে ব্যাবসা করেছেন, বড় করেছেন একমাত্র কন্যাটিকে। বাড়ীও করেছেন, তিনতলা বাড়ী। মনীষা চেয়েছিল কলকাতায় এসে পড়াশুনো করবে। সেই ইচ্ছেতে সাধ দেবার জন্যই কলকাতায় বাড়ীটা কেনা। খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে বাড়ীটা কিনেছিলেন মনীষার বাবা। কিন্তু ঐ দ্বোতলা বাড়ীতে মনীষার সাথে তারা দুজনের কেউই থাকেন না। মেয়েকে দেখতে মাসে একবার যাওয়া আসা করেন শিলিগুড়ি থেকে মনীষার বাবা। মনীষার মা প্রথম প্রথম আসতেন। এখন নিয়মিত আসতে পারেন না।

মনীষার এখন বি.এ. ফাইনাল ইয়ার চলছে। বাবা ঠিক করেছেন, কলকাতায় যদি কোন সুপাত্র জুটে যায়, তাহলে মেয়ের বিয়েটা এখানেই দিয়ে তারপর মেয়ে এবং জামাই বাবাজীবনকে বাড়ীটা দিয়ে দেবেন তাদের থাকার জন্য। মনীষা তার স্বামীকে নিয়ে এই বাড়ীতেই সুখে কাটাবে। আর শিলিগুড়িতে থেকে মনীষার বাবা মা বাকী জীবনটা কাটাবে।

একমাত্র কন্যা সুন্দরী মনীষার পাত্রের যখন অভাব হবে না তখন একটু জানাশোনার মধ্যে দেখে নিয়ে বিয়ে দিতে পারলে আরও ভাল হবে।

মনীষাকে সুনীল দেখার আগেই ওকে দেখে পছন্দ করে ফেলেছিল, সুনীলের বাবা। রিমঝিমের সাথে সেদিন মনীষাও ছিল। প্রশান্ত চৌধুরীকে বেশ আগ্রহ নিয়েই সুনীলের বাবা বলেছিল, "বাহ্ মেয়েটি বেশ সুন্দরী তো? রিমঝিমের বন্ধু বুঝি? এমন মেয়েকে ঘরের বউ করতে পারলে তো ভালই হবে। আপনি মেয়েটিকে চেনেন নাকি? কোথায় বাড়ী? কলকাতায়? আমার ছেলের সাথে তো একে দারুন মানাবে।"

প্রশান্ত চৌধুরি বলেছিলেন, "হ্যাঁ, ওর নাম মনীষা। ওর বাবা আমার বিশেষ পরিচিত। শিলিগুড়িতে দোকান, ব্যাবসা, বাড়ী, সম্পত্তি সবই আছে। আপনি চাইলে আমি মনীষার বাবার সাথে কথা বলতে পারি। তাছাড়া সুনীলও তো পাত্র হিসেবে খুব ভাল। আমার বিশ্বাস মনীষার বাবা রাজী হয়ে যাবেন এ বিয়ে দিতে।"

সুনীলের বাবা ইচ্ছে করেই সুনীলকে পাঠিয়েছিল সেদিন রিমঝিমের জন্মদিনের পার্টিতে। আগে তো সুনীল ওকে দেখে পছন্দ করুক। তারপর না হয় পাকা কথা বলা যাবে।

সুনীলের মত ছেলেকে প্রশান্ত চৌধুরীরও খুব পছন্দ ছিল। সুনীলের বাবা যখন তার ব্যাবসায়িক পার্টনার, তখন তার ছেলের সাথে নিজের মেয়ে রিমঝিম এর বিয়ে দিতে কোন আপত্তি নেই। শুধু এখানে গন্ডগোল পাকিয়ে বসেছে রিমঝিম। কারণ ও যে ছেলেটিকে ভালবাসে, তাকে ছাড়া ও কাউকে বিয়ে করবে না।

রিমঝিম বাবার মুখ থেকে শুনে আগেই বলে রেখেছিল মনীষাকে। - "আমার জন্মদিনে একজন আসবে। তার বাবা তোকে দেখে আগেই পছন্দ করেছে। এবার দেখ ছেলেরও তোকে পছন্দ হয় কিনা? পার্টিতে এলে ছেলেটাকেও তুই এক ঝলক দেখে নিতে পারবি। তারপরই শুভ মূহূর্ত। মালাবদল করে বিয়ে হবে তোদের দুজনের। আমরা সবাই মিলে শিলিগুড়ি যাব। আনন্দ করব, কি মজা হবে তখন বলতো? আমার মন বলছে, ছেলেটাকে দেখলে তোরও পছন্দ হবে।"

ঠিক রিমঝিমের জন্মদিনের পরের দিনই রিমঝিমকে ফোন করে মনীষার বাড়ীতে যাওয়ার ইচ্ছাটা প্রকাশ করে সুনীল একটু চটপটই করে ফেলল কাজটা। সুনীলকে রিমঝিম বলে দিল, "ঠিক আছে, আমি এখনই মনীষাকে বলে দিচ্ছি, ও তাহলে কলেজ থেকে ফিরে তোমার জন্য অপেক্ষা করবে।"

সুনীল চেয়েছিল রিমঝিমও ওর সাথে যাক। কিন্তু রিমঝিম রাজী হয় নি। বলল, "শুধু শুধু তোমাদের মধ্যে পড়ে আমি কি করব? নিজেরা দুজনে মিলে একটু মনের কথা সারবে, তার মধ্যে আবার আমি কেন? আমি না গেলেও কোন অসুবিধে হবে না। মনীষা কিছু মনে করবে না। আমি বরং মনীষাকে বলে দিচ্ছি।"

বিকেলবেলা ঠিক পাঁচটার সময় সুনীল এলো মনীষাদের কলকাতার বাড়ীতে। পুরো বাড়ীটায় ও একা শুধু একটি কাজের লোক ছাড়া।

ঘরে বসে দুজনে দুজনের মুখোমুখি। সুনীল বলল, "এত বড় বাড়ীতে একা থাকেন, ভয় করে না? আপনার বাবা মাও তো কাছে নেই।"

 - "একটু ভয় তো করেই। কিন্তু কি করব? কলকাতায় থেকে পড়াশুনো করছি। মা ও জেদ করে শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় এলেন না। আমার তো একা ছাড়া কোন গতি নেই। রিমঝিমরা আছে তাই রক্ষে। মেসোমশাই তো আমাকে নিজের মেয়ের মতই দেখেন। ওদের জন্যই কলকাতায় আছি। ওনারা আমার কথা খুব চিন্তা করেন।"

 -- "আপনি কলেজে পড়েন?"

 - "হ্যাঁ, বি.এ ফাইনাল ইয়ার।"

 -- "কলেজের পড়া শেষ হলে কি করবেন?"

হাসছিল মনীষা। - "মেয়েরা যা করে। বাবা মা আমার কারুর সাথে বিয়ে দিয়ে দেবেন। তারপর তার সাথেই বাকী জীবনটা।"

 -- "আপনার কাউকে পছন্দ?"

সুনীল নিজের পছন্দের কথাটা না বলে, উল্টে মনীষাকেই প্রশ্নটা করে ফেলল বোকার মতন। একুশ বছরের মনীষা ওর দিকে তাকিয়ে রইল চোখের অব্যক্ত আকুতি নিয়ে। কি জবাব দেবে মনীষা বুঝতে পারছে না। সুনীলই শেষ পর্যন্ত মনের কথাটা বলল, "আমি যদি আপনাকে বিয়ে করতে চাই? আপনি রাজী হবেন? আপনার বাবা মার সাথে কথা বলার জন্য আমি না হয় বাবাকে রাজী করাবো। বাবা লন্ডন থেকে ফিরে আসবে দুদিনের মধ্যেই। তারপর....."

মনীষা যে এক কথাতেই সন্মতি জানিয়ে দেবে, সুনীলও আশা করেনি। মেয়েটা এত সুন্দর। কাল রিমঝিমের জন্মদিনে আলাপ হয়েই মনে দাগ কেটে গেছে। সুনীল যেন এমন একটা মেয়েকেই জীবন সাথী বানাবে, মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিল একদিন। আজ তার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। ভাবেনি এক কথায় ঘাড় নেড়ে মনীষা বলবে, "আমার আপত্তি নেই। শুধু আমাকেও একবার বাবা মাকে জানাতে হবে।"

কাল রাতেই সুনীলকে দেখে মনে মনে পছন্দ করে নিয়েছে মনীষা। শুধু সুনীল ওকে প্রস্তাব দেয় কিনা, অপেক্ষা ছিল সেটারই দেখার। একদিনও অপেক্ষা করতে না পেরে আজ সুনীল যখন মনীষার টানে চলে এসেছে এখানে। তখন আর কি চাই? প্রেম ভালবাসার সমুদ্রে অবগাহন করতে সুনীল এখন পুরোপুরি তৈরী। মনীষাও হ্যাঁ বলে দিয়েছে, সুনীলের ভীষন আনন্দ হচ্ছিল।

অতবড় বাড়ীটায় একা পেয়ে সুনীলের খুব ইচ্ছে করছিল মনীষাকে একটা চুমু খেতে। একটু কাছে এসে মনীষার ঠোঁটে চুমুটা খেতেই যাচ্ছিল। কিন্তু মনীষা ওর মুখে হাত চাপা দিয়ে বলল, "না না, আজ নয়। সময় মত সব হবে।"

খুব বেশি দেরি হল না। সময়টা এল মাসখানেকের মধ্যেই। এত তাড়াতাড়ি বিয়েটা হয়ে যাবে সুনীলও আশা করেনি। বাবা লন্ডন থেকে ফিরতেই ছেলে যখন বাবাকে মনীষার ব্যাপারটা বলল, বাবা বললেন, "আমি তো তোকে আগে থেকে এইজন্যই তোকে কিছু বলিনি। বললে তুই হয়তো রিমঝিমের জন্মদিনের পার্টিটাই অ্যাটেন্ড করতিস না। আর মনীষার সাথেও তোর আলাপ হত না। কি সুন্দর মেয়ে বলতো? আমার তো প্রথম দিন ওকে দেখেই ভাল লেগে গিয়েছিল। জানতাম, তুইও দেখলে পছন্দ করবি মনীষাকে। লাখে একটা হয় ওরকম মেয়ে।"

শিলিগুড়ি থেকে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ছুটে এলেন মনীষার বাবা। প্রশান্ত চৌধুরী আলাপ করালেন সুনীলের বাবার সঙ্গে। বললেন, "এই এবার আপনারা দুজনে একসাথে। আমি দুজনকেই খুব কাছ থেকে চিনি। সুতরাং আমার মনে হয় পৃথিবীতে এর থেকে ভাল সন্মন্ধ আর কিছু হতে পারে না।"

সুনীলের বাবা যেহেতু প্রশান্ত চৌধুরির ব্যাবসায়িক পার্টনার, ছেলেও সুপুরুষ। মনীষার বাবা এক কথায় রাজী হয়ে গেলেন এই বিয়ে দিতে।







।।তিন।।

খুব ধুমধাম করে হল সুনীলের বিয়ে। কলকাতা থেকে সোজা শিলিগুড়ি। দুদিন আগেই সুনীল সহ বরযাত্রীরা সব হোটেল ভাড়া করে ওখানে রয়েছে। যা কিছু বিশাল আয়োজন সব করেছেন মনীষার বাবা। শুভদৃষ্টি, মালাবদল সবই হল।

বিয়ের রাত্রে মনীষার মাকে প্রথম দেখল সুনীল। এখনও কত অপরূপ সৌন্দর্য মহিলার। যেমন মেয়ে তেমনি তার মা। যৌবনের জেল্লা যাই যাই করে এখনও যা অবশিষ্ট আছে, তাই অনেক। মনীষা যেন পুরো ওর মায়ের রূপটাই পেয়েছে।

শ্বশুর বাড়ীতে বিয়ের দিন থেকেই খুব আদর যত্ন হতে লাগল সুনীলের। রিমঝিমের বাবা প্রশান্ত চৌধুরি বলেই দিয়েছিলেন সুনীলের বাবাকে, জামাই হিসেবে ও যা আদর যত্ন পাবে মনীষার বাড়ীর লোকেদের কাছ থেকে, তা অনেক জামাইরাই পায় না। সেটা সুনীলও উপলব্ধি করতে লাগল ভাল মতন।

শিলিগুড়ি তে দুদিন কাটিয়ে বউকে নিয়ে কলকাতায় চলে এল সুনীল। এবার সুনীলদের বাড়ীতে বৌভাতের অনুষ্ঠান। অনেক অতিথি সমাগম হল। ফুলশয্যার রাত্রে মনীষার কাছ থেকে সন্মতি পেয়ে ওর শরীরটা নিয়ে খেলা করল সুনীল। সঙ্গম করলো মনীষার সঙ্গে।

বিয়ের পরেই ওরা চলে গেল হানিমুনে। গেল গোয়াতে। হোটেলের শয্যায় মনীষা সব কিছু উজাড় করে দিল সুনীলকে। এই প্রথম মনীষার শরীরের খাঁজে কোন পুরুষের স্পর্ষ লাগছে। সুনীলের সঙ্গে যৌন সঙ্গমে মনীষাও রোমাঞ্চে শিহরিত হতে লাগল। উত্তেজনায় দেহমন রোমাঞ্চিত করে ও সুনীলকে সমর্পন করতে লাগল বারোবার। যে মনীষা সুনীলের এখন অর্ধাঙ্গিনী। তার লজ্জা পাবার কোন ব্যাপার নেই। পেলব নগ্ন মনীষার শরীরটায় সুনীল হাত বুলিয়ে আদর করছে, ওর দুপায়ের মাঝখানের জঙ্ঘায় হাত রাখছে, একহাতে ওকে জড়িয়ে নিয়ে ওর ঠোঁট মুখে পুরে নিয়ে চুষতে চুষতে এক অনাস্বাদিত আনন্দে শিহরণে পুলকিত করে দিচ্ছে মনীষার মন আর দেহটাকে। সক্রিয় হচ্ছে মনীষাও। সুনীলকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকের ওপর টেনে তুলছে। রতিসঙ্গমে মেতে উঠছে দুজনে, হানিমুনের চরম আনন্দ। একুশ বছরের মনীষার ভরা যৌবনে সুনীলের দেহসঙ্গমের মধুর স্মৃতি। ওকে ভোগ করতে করতে সুনীলের তখন বাঁধভাঙা সেই আনন্দের কোন শেষ নেই।

 -- "তোমাকে না পেলে আমার সারাজীবনের মত আক্ষেপ থেকে যেত মনীষা। তোমার ভালবাসা আমার জীবনকে সমৃদ্ধ করবে আজ থেকে। মন প্রান দিয়ে তোমাকে ভালবাসব সারাজীবন। ভালবাসার আকর্ষন একটুও কমবে না। তুমি দেখে নিও।"

মনীষাও কথা দিল সুনীলকে। আরও অধিক ভালবাসা দেবে সুনীলকে। জীবনের এক অচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে সারাজীবন।

হানিমুনে পুরো সাতদিন কাটালো সুনীল। মনীষার শরীর যৌবনের জোয়ারে শরীর ভাসিয়ে সুনীলও ওর যৌবনটাকে সার্থক করল। অপরূপ শরীরের স্বাদ দিয়ে সুনীলকে অমৃতের আস্বাদ দিল মনীষা।

সাতদিনই চূড়ান্ত সঙ্গম করল মনীষার সঙ্গে। শরীর মন তখন নাচছে সুনীলের। মনীষার যৌবনের উদ্দাম স্রোত ওকে এমন ভাবে ভাসিয়ে দিল যে হানিমুন থেকে ফিরে এসেও মিলন চাহিদা পূরণ হতে লাগল প্রত্যাশা মতন। সুনীল ব্যাবসার কাজের মধ্যে ডুবে গিয়েও দিনের শেষে বাড়ী ফিরে নিজেকে একবারও ক্লান্ত মনে করত না। মনীষার বুকে মুখ রেখে ও যেন নতুন উদ্যম ফিরে পেত।

শরীরের ক্ষুধাতৃষ্ণা মেটানো এক জৈবিক ব্যাপার। শরীরকে সুস্থ রাখতে স্ত্রীর সান্নিধ্য অবশ্যই প্রয়োজন। মনীষা সেই দেহভালবাসা দেখাতে কখনও অনীহা বোধ করত না। ওকে বিয়ে করে সুনীল সব দিক দিয়েই খুশি। এইভাবেই ওদের দিনগুলো কেটে যেতে লাগল আসতে আসতে।

মনীষার ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দিতে তখন আর ছয়মাস বাকী। বিয়ের পর কলেজে যাওয়া একটু কমিয়ে দিয়েছে। সুনীল মনিষাকে বলে রেখেছিল, "তুমি ইচ্ছে করলে পরীক্ষা দিতে পারো মনীষা। আমার দিক দিয়ে কোন আপত্তি নেই।"

বিয়ের সময় মনীষার বাবা সুনীলের বাবাকে বলে দিয়েছিল, "কলকাতার বাড়ীটা আমার এই মেয়ের জন্যই কেনা। সুতরাং সুনীলকে বলবেন মাঝে মধ্যে ওখানেও গিয়েও থাকতে। নইলে বাড়ীটা আমার ফাঁকা পড়ে থাকবে।"

সুনীল সপ্তাহের দুটো দিন মনীষাকে নিয়ে ওখানে কাটাতো। বাকী কটা দিন নিজের বাড়ীতে। আনন্দ আর জোয়ারে সুনীল তখন মনীষাকে নিয়ে ভাসছে। একদিন রাত্রে শুয়ে মনীষাকে আদর করার সময় সুনীলকে মনীষা বলল, "এই, মাস খানেকের জন্য শিলিগুড়ি যাবে? তুমি আর আমি। মা ফোন করেছিল, অনেক করে বলছে। চলো না ঘুরে আসি।"

মনীষার নগ্ন শরীরটাকে জিভ দিয়ে আদর করছিল সুনীল। নিরাভরণ মনীষার শরীর সুনীলকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আরও বলল, "বিয়ের পর সেভাবে তো শিলিগুড়িতে যাওয়াই হয় নি তোমার। জামাই আদর আর পেলে কোথায়? মাও বারবার বলে, সুনীল তো সেভাবে এলো না। ওকে বল না একটা লম্বা ছুটি নিয়ে তোকে সাথে করে এখানে চলে আসতে। এইখানে এসে মাস খানেক থাকবি, আনন্দ করবি। একেবারে জামাই ষষ্ঠী কাটিয়ে তারপর আবার না হয় ফিরে যাবি কলকাতায়। তোদের এখানে কাছে পেলে তোর বাবাও খুশি হবে। মেয়েকে দেখতে পাওয়ার জন্য সেও তো ব্যাচারা পাগল। খালি বলছে মনীষাকে বলো না, সুনীলকে নিয়ে একবার এখানে চলে আসতে। ব্যাবসা থেকে একমাস ছুটি নিয়ে এলে কি আর এমন অসুবিধে হবে?"

সুনীলকে রাজী করানোর দায়িত্ব মনীষার। সুন্দরী বউ আবদার রেখেছে সুনীল ওর কথা রাখবে না তাও নয়। শুধু শিলিগুড়ি যাবার জন্য বাবার অনুমতিটা নিতে হবে। বাবা যখন কলকাতায় থাকেন না, সুনীলকেই তখন ব্যাবসার সব দায়িত্ব সামলাতে হয়। বাবার কাছে অনুরোধ করলে বাবাও না করবেন না, এটাও সুনীলের অজানা নয়। ছেলে শ্বশুরবাড়ী গিয়ে একটু জামাই আদর পেয়ে আসবে, এতে আর আপত্তির কি আছে?

বাবাও এক কথায় সায় দিলেন। সুনীলকে বললেন, "যাও যাও, মনীষাকে নিয়ে ঘুরে এসো শিলিগুড়ি থেকে, একমাস কাটিয়ে এসো। আমি এখানে ততদিন ঠিক সামলে নিতে পারব। ওনাদের মত মানুষ হয়? এত করে যখন তোমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ি চাইছেন, তখন তোমার যাওয়াটাই উচিত হবে। তোমরা বরং কালই রওনা দিয়ে দাও শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে। রাতের ট্রেন ধরে বেরিয়ে পড়ো, আমি খবর পাঠিয়ে দিচ্ছি বেয়াই মশাইকে। যে মনীষা কে নিয়ে আমার ছেলে কালই যাচ্ছে শিলিগুড়িতে।"






কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





লেখক(Lekhak)-এ লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

লেখক(Lekhak)-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment