CH Ad (Clicksor)

Sunday, May 25, 2014

জীবনের আর এক অধ্যায়_Written By Lekhak (লেখক) [২য় খন্ড (চ্যাপ্টার ০৪ - চ্যাপ্টার ০৬)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




জীবনের আর এক অধ্যায়
Written By Lekhak (লেখক)






।।চার।।

বৌদি ট্যাক্সির মধ্যে আবার রিকোয়েস্ট করলো। এতক্ষণ পাপিয়ার চিন্তায় বুঁদ হয়েছিলাম। এবার বৌদির কপালে হাত রেখে আসতে আসতে টেপা শুরু করলাম। বৌদিও স্বস্তি পেয়ে বলে উঠল, "আহ্ কি আরাম। টেপো, টেপো, ভালো লাগছে।"

সেদিনের প্রেক্ষাপট টা শুধু বদলে গেছে। ঘরের মধ্যে সেদিন পাপিয়া ছিল। এখন ট্যাক্সিতে আমি সুধাবৌদির কপাল টিপে দিচ্ছি। ড্রাইভারও বুঝলো, মাঝপথে একটা ছেলে উঠল। সে এখন এই মহিলার কপাল টিপে দিচ্ছে। কি দিনকাল পড়েছে!

 - "বৌদি তোমাকে দিয়ে খাটিয়ে নিচ্ছে? তাই না?"

সুধা বৌদি মুচকি হেসে বলল।

আমি বললাম, "তা কেন? উল্টোপাল্টা কিছু খেয়েছেন। গ্যাস থেকে এই প্রবলেমটা হচ্ছে। একটা হজমের ওষুধ খেয়ে নিলে প্রবলেমটা মিটে যাবে।"

 - ""সমস্যাটা ঠিক কোথায়? বুঝে উঠতে পারছি না। এখন দেখছি বুকেও বেশ ব্যাথা হচ্ছে।"

বৌদি বলল।

কপাল থেকে ব্যাথাটা আসতে আসতে নিচের দিকে নামছে! বৌদি বলল, "গলার কাছটাও খুব ব্যাথা। কেন জানি না এরকম হচ্ছে?"

চলন্ত গাড়ীর মধ্যে হাজার হোক কোন বিবাহিত মহিলার বুকে হাত দেওয়া যায় না। ভাগ্যিস সেই রিকোয়েস্টটা সুধাবৌদি করে বসেনি। শুধু একটি বার বলল, "আজ আমার কপালে খুব ভোগান্তি আছে। বরটাও কাছে নেই। রাত বিরেতে বিপদে পড়লে কে আমাকে দেখবে?"

বেশ বিচলিত বোধ করছি আমিও। সুধাবৌদিকে বললাম, "খুব অসুবিধে হচ্ছে? আগে কখনও এরকম প্রবলেম হয়েছে আপনার?"

বৌদি বলল, "নাহ্। দিজ ইজ ফার্সট টাইম। আমার মনে হচ্ছে সাংঘাতিক কিছু হতে চলেছে। আই ফিল নার্ভাস।"

বৌদিকে একটু সাহস জোগালাম। - "ওকে ওকে। আমি দেখছি।"

ট্যাক্সিওয়ালাকে বললাম, রাস্তায় কোন ওষুধের দোকান দেখলে সেখানে ট্যাক্সিটা দাঁড় করাতে। একটা হজমের ওষুধ পেটে পড়লেই গ্যাসটা শরীর থেকে নেমে যাবে। বৌদি আমার হাতটা ধরে বলল, "উফ কি বিপদে ফেললাম তোমাকে। সরি বাবুয়া। আই অ্যাম এক্সট্রিমলি সরি।"

পরোপোকারী বাবুয়া কোনকিছুতেই হার মানে না। অসহায় একজন মহিলাকে সাহায্য করা আমার কর্তব্য। মাঝপথে নিরুপায় হয়ে আমার কাছে একজন ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে, এরজন্য বাবুয়ার একটা সফ্ট মেন্টালিটি থাকা আবশ্যক। তাই নয় কি? আমি ওকে বললাম, একদম নার্ভাস না হতে। কাছেই একটা ওষুধের দোকান পড়ল। ড্রাইভার গাড়ীটা সেখানে দাঁড় করালো। আমি ছুটে নেমে গিয়ে তাড়াতাড়ি ওষুধ নিয়ে এলাম। সাথে এক বোতল জল। পাশের সিগারেটের দোকানটা থেকে জলটা কিনেছি। বৌদি ঢক ঢক করে ওষুধ শুদ্ধু জলটা খেয়ে নিল। সেই সাথে আমাকেও একবার থ্যাঙ্কস জানালো।আমি বললাম, "কি এবারে রিলিফ হচ্ছে? সুস্থ বোধ হচ্ছে?"

বৌদি বলল, "হ্যাঁ।"

বৌদি বলল, "উফ যা ভয় পেয়েছিলাম। ভাবলাম, মরেই যাব বোধহয়।"

আমি বললাম "মাঝে মাঝে এরকম আমারও হয়। গ্যাস থেকে পেইনটা ওঠে। আপনার ফার্স্ট টাইম হয়েছে। তাই নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলেন।"

বৌদি বলল, "যাক বাবা, এ যাত্রা বেঁচে গেলাম। তোমাকে এগেইন থ্যাঙ্কস।"

আমি বললাম, "এ আর এমনকি? থ্যাঙ্কস দিন ওপরওয়ালাকে। ভাগ্যিস মাঝপথে আমি গাড়ীতে উঠেছিলাম। একা থাকলে সত্যি বিপদে পড়ে যেতেন।"

বৌদি বলল, "সত্যি একা থাকার কি যে বড় জ্বালা। তাই না? আচ্ছা তোমার কখনও এরকম মনে হয় না?

আমি বললাম, "কি?"

বৌদি বলল, "এই যে তুমি কখনও সখনও একা থাকো। বাবাও নেই, মা হয়তো বাইরে কোথাও বেড়াতে গেছেন। তোমার একা একা সময় কাটে?"

আমি হাসতে লাগলাম। বললাম, "আমি তো পুরুষমানুষ। আমার আবার অসুবিধে কি? এই সমস্যাগুলো মেয়েছেলেদের হয়। ব্যাটাছেলেদের হয় না। তাছাড়া আমাদের বাড়ীতে কাজের মাসী আছে। একটা অল্পবয়সী মেয়েও আছে, কাজ করে দিয়ে চলে যায়। মাসী দুবেলা এসে রান্না করে। আমি কখনও সখনও বাজারটায় যাই। মা থাকলে দোকানপাটও করে দিই। যখন একা থাকি, খুব একটা অসুবিধে হয় না।"

বৌদির কথাগুলো যেন মনপূতঃ হলো না। আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। একটু যেন বিষন্নই মনে হল। আমাকে বলল, "তোমার আর আমার পরিস্থিতি তো এক নয়। এটা আগেই আমার বোঝা উচিৎ ছিল। বোকা বোকার মতন প্রশ্ন করে ফেলি মাঝে মাঝে। আমার নিজেরই খারাপ লাগে। ইস আমি কি বোকা? সবাই কি আমার মতন?"

আমি হেসে বললাম, "কেন কি হয়েছে? স্বামীকে কাছে পান না বলে একাকীত্ব ফিল করেন? এটা তো স্বাভাবিক। জীবনে মানুষকে অনেক স্যাক্রিফাইসই করতে হয়। আপনিও তাই করছেন। আপনার জন্য ভগবান এরকমই পরিকল্পনা করে রেখেছেন, ভাগ্যটা আমাদের হাতে নেই। ওটা ওপরওয়ালার হাতে। সবাই সবকিছু চাইলেই, তা সহজে পেয়ে যায় না।"

বৌদিকে দেখলাম এবার খানিকটা আকুতি দৃষ্টি নিয়ে দেখছে আমাকে। একদিনেই আমার ব্যক্তিগত জীবন, সখ আল্হাদ, পাস্ট হিস্ট্রি সব জেনে নেবে, তাই কি হয়? দেখলাম, আমার সন্মন্ধে আরও কিছু জানবার ভীষন কৌতূহল। গাড়ীতে বাকীটা পথ যেতে যেতেই আমাকে প্রথম প্রশ্নটা করলো, "তোমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নেই বাবুয়া?"

আমি একটু চমকে উঠলাম। হাটের হাঁড়ির খবর জানতে চাইছে বৌদি। ব্যাপারটা কি?

ব্যক্তিগত প্রসঙ্গটা এড়িয়ে যেতেই চাইছিলাম। বউদি তবু জিজ্ঞাসা করলো, "এই বয়সেই তো ছেলেদের গার্লফ্রেন্ডদের সাথে ভাব হয়। তোমার বেলায় কি জোটেনি? এত সুন্দর চেহারা, এত হ্যান্ডসাম। আমার মনে হয়, কেউ না কেউ এসেছে তোমার জীবনে। যদি আনইজি ফিল করো, তাহলে বোলো না। আমিও জোর করবো না। এমনি জাস্ট একটু কৌতূহল হল, তাই জিজ্ঞেস করলাম।"

বৌদিকে হেসে বললাম, "না, সেরকম কেউ নেই। আমি কাউকে ফ্রেন্ড বানাবার সুযোগ পাইনি। তাছাড়া বিভিন্ন সোসাল কাজে বিজি থাকি, প্রেম করার সময়ই পাইনি এতদিন। কি করে বানাবো?"

বৌদি হাসতে লাগল আমার কথা শুনে। হেসে বলল, "যা বলেছো। ভাবছো, এই বউদিটা একদিনের আলাপেই মাথা কিনে নিয়েছে। যা জিজ্ঞাসা করবে, তাই উত্তর দিতে হবে। এ আবার হয় না কি?"

বলেই আবার হাসতে লাগল বৌদি।

আমি দেখলাম বৌদির ওই হাসির মধ্যেই কেমন যেন একটা মায়াজালের বেষ্টনীর মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছি আমি। বৌদির চাউনি আর হাসির মধ্যে কি যেন একটা ইচ্ছা ইচ্ছা ভাব লুকিয়ে রয়েছে। বৌদির আমাকে নিয়ে এত ইন্টারেস্ট কেন, সেটাও বোধগম্য হচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে, বৌদি কি তাহলে অন্যের বিবাহিত স্ত্রী হয়ে আমাকেই তার বয়ফ্রেন্ড বানাতে চাইছে? এই দুনিয়ায় ভাই সবই হয়, সব সত্যি। পৃথিবীটা যে এক আজব কারখানা।

হাসতে হাসতে প্রায় গড়িয়ে পড়ার মতনই অবস্থা হচ্ছিল বৌদির। একটু আগে, মাথা ব্যাথা করছিল বলে আমাকে দিয়ে কপাল টেপালো, শরীর খারাপের নাম করে, আমাকে দিয়ে ওষুধও কেনালো। তাহলে কি তখন ভান করছিল? আমি যেন একটা রহস্যের মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে গেলাম।

ট্যাক্সিটা এসে গেল বাগুইহাটির মোড়ে। সুধাবৌদি বলল, "বাবুয়া তোমাকে আমি ড্রপ করে দিই? মা নিশ্চই এখন খুব চিন্তা করছে। এত রাত্রি হল, ছেলে বাড়ী ফিরলো না?"

বৌদিকে বললাম, "মা, তো এখন এখানে নেই। হায়দ্রাবাদে বাবার কাছে গেছে। ফিরবে সেই একসপ্তাহ পর। আমি বাড়িতে এখন একাই আছি। তবে আজ বাড়ীতে রান্না বান্না কিছু নেই। আমাকে না খেয়েই শুয়ে পড়তে হবে।"

বৌদি বলল, "ওমা তা কেন?"

আমি বললাম, "কাজের মাসী দুদিন ধরে আসছে না। শরীর খারাপ হয়েছে। আমি মাঝে মাঝে হোটেল থেকেও খাবার খেয়ে কাটিয়ে দিই। কিন্তু আজ একটু দেরী হল। এত রাত্রে হোটেলও খোলা নেই। অগত্যা।"

বৌদি বলল, ছিঃ ছিঃ দেখেছো। তোমার আজ আমি কতটা ক্ষতি করে দিলাম? ইস কোন মানে হয়? এসব ওযুধ কিনতে গিয়ে আরও দেরী হয়ে গেল। আমি বড্ড গিলটি ফিল করছি।"

আমি বললাম, "তা কেন?এরকম তো হতেই পারে। একদিন খাবার না খেলে আমি তো আর মরে যাব না? কাল নয় দুদিনের খাবারটাকে একসাথে খেয়ে নেব।"

বলে আমিও হাসতে লাগলাম, ম্যাটারটাকে হালকা করার চেষ্টা করতে লাগলাম।

রাত্রি সোয়া একটা বাজে। দোকানগুলো সত্যি সব বন্ধ হয়ে গেছে। রাত বারোটার পর, এখানে কোথাও খাবার পাওয়া যায় না। বৌদি, ট্যাক্সির জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে কোন রেষ্টুরেন্ট খোলা আছে কিনা দেখার চেষ্টা করলো। একটাও খুঁজে পেল না। হতাশ হয়ে বলল, "আমার এখন একটা কথাই বলতে ইচ্ছে করছে। এরজন্য দায়ী শুধু আমি। আর কেউ নয়।"

এমন কিছু ব্যাপার নয়। ব্যাটাছেলেদের পেটে একদিন খাবার না জুটলে এমন কিছু মহাভারত অশুদ্ধ হয় না। বৌদি তখনও গিলটি ফিল করছিল দেখে, আমার নিজের ওপরই তখন রাগ হচ্ছিল। কেন শুধু শুধু আগ বাড়িয়ে বৌদিকে, খাবার জুটবে না, কথাটা বলতে গেলাম? না বললেই তো ভাল হত? ট্যাক্সিওয়ালাকে বললাম, গাড়ীটা আমার বাড়ীর সামনে দাঁড় করাতে, আর ঠিক সেইসময়ই বৌদি বলে উঠল, "একটা রিকোয়েস্ট করবো বাবুয়া?, রাখবে কি রাখবে না সেটা অবশ্য তোমার ওপরে নির্ভরশীল। আমি বলছিলাম কি? যদি, তুমি, আজ, রাতটা, আমার, ওখানেই?"







।।পাঁচ।।

বৌদির স্পর্ধা দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি। রাত বিরেতে একটা ইয়ং ছেলেকে বাড়ীতে ইনভাইট করছে। স্বামী কাছে নেই বলে সাপের পাঁচ পা দেখেছে নাকি? রহস্য তো আরও জটিল হচ্ছে।

বৌদি আবার বলল, "আমি আগেই বলেছি, আমন্ত্রণ রক্ষা করার বিষয়টা তোমার হাতে। ওখানে আমি জোর করবো না।আমার বাড়ীতে রান্না বান্না করাই থাকে। সকালেও নিজে রেঁধেছি, নিজে খেয়েছি। অতিথি তো বড়সড় খুব একটা আসে না। একদিন না হয় বাবুয়াকে এই সুযোগে খাওয়ালাম। মা নেই, বাবা নেই, মনে করো না একটা বৌদি তোমার সেবা করছে।"

 -- কিন্তু ম্যাডাম?"

আমার মুখ থেকে ম্যাডাম কথাটা শুনতে বৌদির বেশ আপত্তি ঠেকলো। - "ওসব ম্যাডাম ফ্যাডাম আমাকে বোলো না তো? আমি হলাম তোমার বৌদি। "সুধা বৌদি"। আমাকে "সুধা বৌদি" বলে ডাকতে পারো। বৌদিকে নাম ধরে ডাকলেও বৌদি কিছু মনে করবো না।"

আমি অবাক। গাড়ীতে বসে বসে ভাবছিলাম, বিয়ে করা বউ। অথচ এই অবাধ লাইসেন্সটা পেলো কোথাথেকে? হাজব্যান্ড বেশি সময় কাছে থাকে না বলেই কি সুযোগ নেয়? না আলট্রা মর্ডান, এখনকার মেয়েদের মতন। যারা কোনকিছুরই ধাত ধারে না।

বৌদি বলল, "তুমি কি রাজী? তাহলে এই ড্রাইভার দাদাকে বলবো, গাড়ীটা আমার বাড়ীর সামনেই পার্ক করাতে।"

আমার মনের মধ্যে ইতস্তত ভাবটা একটু হলেও কাজ করছে, কারণ পাড়ায় আমার একটা ইমেজ আছে। পাপিয়ার সাথে আমার যাই হোক না কেন সেটা বাইরে আসার সুযোগ নেই। তাছাড়া পাপিয়াকে আমি সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। কিন্তু এই বৌদি আমাদের পাড়াতে নতুন। দিন চারেক হল এখানে এসেছে। এত তাড়াতাড়ি একটা মাখো মাখো সম্পর্কে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা, এটা কি ঠিক হবে? রাত বিরেতে মুখার্জ্জীদার বাড়ীতে, বৌদির ফ্ল্যাটে এনট্রি মারবো, মুখার্জ্জীদাও যদি দেখে ফেলে? বাবুয়ার ইমেজে কালির দাগ লেগে যেতে পারে। তখন সেটাকে পরিষ্কার করবে কে?

বেঁকে বসতেই যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাকে অবাক করে বৌদি বলল, "বাবুয়া তোমার সেল ফোন আছে না?"

আমি বললাম, "হ্যাঁ। কেন?"

 - "আমাকে নম্বরটা দাও। তারপরে বলছি।"

বাধ্য যুবকের মতন বৌদির কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলেছি। সেলফোন নম্বরটা দিলাম। সুধা বৌদি নম্বরটা মোবাইলে সেভ করে নিয়েই বলল, "তুমি ট্যাক্সি থেকে এখন নেমে যাও। আমি তোমাকে কল করছি। বাড়ীতে গিয়েই কল করছি। তোমাকে টেনশন নিতে হবে না। আমি জানি পাড়ায় তোমার কি ইমেজ। একসাথে ট্যাক্সি থেকে নামলে হয়তো কেউ খারাপ ভাবতে পারে। আমি দেখে নেবো, সব ঠিকঠাক আছে, আশেপাশে কেউ নেই, তারপরে তোমাকে কল করছি। নো টেনশন।"

সুধাবৌদি আমাকে ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দিয়েই হুশ করে বেরিয়ে গেল। আর আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি, "কে বলেছিল আমায়? পাড়ায় সোশাল ওয়ার্ক করে গুড বয়ের ইমেজ তৈরী করতে? কেউ মাথার দিব্যি দিয়েছিল? কি সুন্দর বাড়ীতে ডেকে খাওয়ানোর প্রস্তাবটা অনায়াসেই দিয়ে চলে গেল বৌদি। আর আমি কিনা এখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চিন্তা করছি, রাত বিরেতে বৌদির বাড়ীতে হানা দেওয়াটা কি ঠিক হবে? দূর ছাই আমার ইমেজ, নিকুচি করেছে। অত সুন্দর বউদিটা, সাধের আমন্ত্রণ কি কেউ পায়ে ঠেলে? আমার জায়গায় যদি বাপী হত? ভুজঙ্গ হত? ঠিক চলে যেত। আর আমি কি না?"

আসলে আমার মধ্যে তখন দুটো সত্ত্বা কাজ করছে। কিছুটা নতুন বৌদির সঙ্গ পাবার হাতছানি, বৌদির মধ্যে যদি সত্যি কোন রহস্য থাকে, তাহলে সেটার উন্মোচন ঘটবে, হয়তো আজ রাতেই। ভাবছি বৌদি কি আবার আমার প্রেমে পড়ল নাকি? আর দ্বিতীয় তো এটাও ভাবছি, কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন পাড়ায় বন্ধুদের মুখটা দেখাবো, তখন কি এটাও বলতে পারবো? এই জানিস তো, ওই যে নতুন বউদিটা আমাদের পাড়ায় এসেছে। হ্যাঁ, হ্যাঁ সুধাবৌদি। কালরাতে আমি বৌদির ফ্ল্যাটেই ছিলাম। উফ কি মজা আর কি মজা। তোরা যদি তখন দেখতিস।

আমার ভেতরের সত্ত্বাটা সেইসময় আমাকে যেন বলতে লাগল, "মিষ্টার তীর্থঙ্কর মিত্র, এমন ভাব দেখাচ্ছো যেন ভাজা মাছটিও উল্টে খেতে জানো না। সবই তো জানো বাপু। তাহলে আবার ইতস্তত ভাব কিসের? বয়সে ছ বছরের বড়, তোমার মাষ্টারনী পাপিয়াকে নিয়ে তুমি যা করেছ, সেটা বুঝি কিছু নয়? অল্পবয়সী কাজের যে মেয়েটা বাড়ীতে কাজ করতে আসে, তাকে নিয়েও তো ফস্টিনষ্টিকম করো নি। তাহলে এত ন্যাকামো কিসের? বৌদি আদর করে ডাকছে, যাও।ডোন্ট মিস দ্য বিগ অপরচুনিটি। রিয়েল চান্স মিস করলে, পরে পস্তাতে হয়। সুযোগকে কখনও ঘাড়ের পাশ দিয়ে চলে যেতে নেই। আফটার অল ইউ আর ডক্টর জেকিল অ্যান্ড মিষ্টার হাইড। কেউ না জানুক তোমার এই ভেতরের সত্ত্বা তো জানে। হাঃ হাঃ হাঃ।"

সত্যিই কি আমি ডক্টর জেকিল অ্যান্ড মিষ্টার হাইড? দিনে একরকম আর রাতে আর এক রকম? আমার মনে হল, আমার ভেতরের সত্ত্বাটা একেবারেই বেকার কথা শোনাচ্ছে আমাকে। আমি কোনদিনই যেচে, গায়ে পড়ে, কারুর সাথে কামনার সখ মেটাতে যাইনি। আমি কারুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে কিছু করিনি। সবই হয়েছে তাদের ইচ্ছায়, আচম্বিতে নয়তো অপ্রত্যাশিত ভাবে। জেনে শুনে নিজের গায়ে বদনামের আঁচড়টি আমি লাগাবো, অত বোকা আমি নই।আমাকে তারাই মনে মনে কামনা করেছে, সখ মিটিয়েছে, আর আমিও কখনও সখনও হয়তো অবাধে নিজের ইচ্ছা পূরণ করেছি। এরমধ্যে দোষের তো কিছু নেই। যত সব ভোগাস কথা।

পায়ের তলায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মশার কামড় খাচ্ছি। বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেল, সুধাবৌদির ফোনটা তখনও এলো না।ঘড়িতে দেখলাম, পনেরো মিনিট অতিক্রান্ত, এখনও বৌদি যখন ফোন করলো না, তার মানে কি ভুলে গেল?

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাপিয়ার কথাটাই আবার মনে পড়ছিল। "পাপিয়া" সেই নবমীর দিন রাত্রে, আমাকে দিয়ে মাথা টিপিয়ে টিপিয়ে সুখ করে নিচ্ছে ভালমতন। মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করছে, আবার পিট পিট করে দেখছে আমাকে। এবার সিরিয়াস হয়েই বললাম, "অনেক তো হল, এবার বিয়েটা সেরে ফেলো না? কি সুখ পাও, রোজ রোজ এক একটা করে বয় ফ্রেন্ড চেঞ্জ করে?"

পাপিয়া খিলিখিলিয়ে হাসতে লাগল আমার কথা শুনে। "ও আমার দরদী রে? এই মেয়েটার ওপর কত দরদ। তা তুই বিয়ে করছিস না কেন বাবুয়া?"

 -- "আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে নাকি? এই তো দুবছর আগে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করলাম। আগে নিজের পায়ে দাঁড়াই। প্রতিষ্ঠিত হই।"

পাপিয়া বলল, "আচ্ছা বাবুয়া তুই কি ভার্জিন? এখনও কারুর সাথে প্রেম করিসনি?"

আমি কাকলির সাথে প্রেমের ব্যাপারটা পাপিয়ার কাছে চেপে গেলাম। ওকে বললাম, "হঠাৎ আমার ব্যাপারে এত কৌতূহল?"

পাপিয়া বলল, "তুই শালা ঝানুমাল। সব জানিস, সব বুঝিস। এই পাড়াতেই হয়তো কাউকে ফাঁসিয়েছিস। সব কি আর আমি দেখতে যাচ্ছি?"

অত্যাধিক ড্রিংক করে রয়েছে। নেশার ঘোরেই উল্টোপাল্টা বকছে। আমি কোন রিয়াক্ট করলাম না। পাপিয়াকে বললাম, "তুমি তো জানোই পাড়ার আমার একটা ইমেজ আছে, তাছাড়া এ পাড়ার কোন মেয়ে এমন আছে? যার সাথে আমি প্রেম করবো?"

পাপিয়া বলল, "সুন্দরী মেয়ে নেই, তাই বলতে চাইছিস কি? কি ধরণের মেয়ে তোর পছন্দ? সুন্দরী, ডানাকাটা পরী? না অন্য কিছু?"

আমি চুপ করে রয়েছি দেখে পাপিয়া বলল, "বল না। লজ্জ্বা পাচ্ছিস কেন? কাউকে ফাঁস করবো না।"

আমি বললাম, "ফাঁস করলে ভারী বয়েই গেল। সবাই জানে আমি কিরকম? তুমি বললেই বা বিশ্বাস করছে কে? নিজের চরকায় তেল দাও তো।"

হঠাৎ উঠে বসলো পাপিয়া। আমার গালটা দু হাত দিয়ে ধরে বলল, "এই বাবুয়া একটা কথা বলবো, কিছু মনে করবি না তো?"

পাপিয়াকে বললাম, "কি কথা বলো?"

আমার গাল দুটো ধরেই পাপিয়া বলল, "এই আমাকে দেখে তোর কোন ফিলিংস হয় না?"

 -- "কিসের ফিলিংস?"

 - "ধ্যাত্ ন্যাকা। কিছু যেন বোঝে না। আরে আমি আমার কথা বলছি রে। এই পাপিয়া। যাকে নিয়ে তুই এত ভাবিস, এত চিন্তা করিস। আমি তার কথা বলছি।"

পাপিয়াকে বললাম, "হ্যাঁ, চিন্তা তো করিই তোমাকে নিয়ে। ওই যে তুমি ছেলেগুলোকে নিয়ে ঘোরো। তাদেরকে নিয়ে চিন্তা করি। কটা ছেলে ভাল, আর কটা ছেলে মন্দ, তুমি তার হিসাব রাখো? ভাবো ওরা তোমার সঙ্গ দিচ্ছে। আসলে তুমি যা ভাবো, ওরা ঠিক তাই ভাবে। খামোকা নিজের শরীরটাকে যার তার হাতে এঁটো করে কি লাভ? একদিন এই করেই দেখবে আরো ছটা বসন্ত পার হয়ে গেছে। সেদিন মনে হবে, আমি তো বুড়ি হয়ে গেলাম। আমার কি আর বিয়ে হবে? যাহ্ এ আমি কি করলাম?"

দেখলাম, চোখের কাছটায় ছলছল করছে পাপিয়ার। আমাকে বলল, "তুই না। মুডটা সত্যি একেবারে অফ করে দিলি। যাহ্ তোর সাথে আর কথা বলবো না।"

পাপিয়াকে বললাম, "যা বললাম, তোমার ভালর জন্যই বললাম, এবার ভেবে দেখো তুমি কি করবে? মানা আর না মানাটা তোমার হাতে। ওখানে আমার করণীয় কিছু নেই। আর তুমি আমার কথা জিঞ্জাসা করছো? এই বাবুয়া যদি মনে করে, মেয়েমানুষ জোটাতে পারে অতিসহজেই। কিন্তু পাড়ায় যেহেতু আমার একটা পরিচয় আছে, আমাকে মেপে মেপে তাই পা ফেলতে হয়। কেউ যেন এটা না বলে, বাবুয়া ছেলেটি খারাপ। মেয়েমানুষ নেওটা। ওটা আমার ইমেজের সাথে খাপ খাবে না। আর আমি যেদিন সত্যিকারের কোন ভাল মেয়ে পাব, দেখবো, বুঝবো, ঠিকই তার গলায় মালা দেবো।তোমাকে এই নিয়ে অত ভাবতে হবে না।"

দেখলাম, পাপিয়া শুধু আমার গায়ে ঢলে ঢলে পড়ছে। বললাম, "আমার মনে হচ্ছে তোমার খুব ঘুম পাচ্ছে এখন। একটা লম্বা ঘুম দেওয়া দরকার। আমি তাহলে যাই?"

পাপিয়া দু"হাত দিয়ে আমার গলা জড়িয়ে রেখেছে। আমাকে বলল, "না তুই যাবি না। আজ সারা রাত আমার সাথেই থাকবি। আমি তোকে যেতে দেবো না। ওহ্ বাবুয়া....."

 -- "কি মুশকিল? বাপীটা প্যান্ডেলে একা বসে রয়েছে, এতক্ষণে মনে হয়, আমাকে নিয়ে চিন্তা শুরু করে দিয়েছে। ছাড়ো না যাই....."

দেখলাম পাপিয়া আমাকে ক্রমশই জড়াতে শুরু করেছে। আমার বুকে গলায় হাত বুলিয়ে মুখ ঘষছে। হঠাৎ আমাকেই নাগর বানিয়ে ফেলেছে ও, আমার মাথা কোন কাজ করছে না। ক্রমশঃ পাপিয়ার ঠোঁট দুটো ধেয়ে আসছে আমার ঠোঁটের দিকে। কামতাড়িত লোভী মেয়েমানুষের মতন। হঠাৎ আমার প্রতিই কেন এত ওর মোহ বুঝে উঠতে পারছি না।পাপিয়া আমার ঠোঁটকে ওর ঠোঁট দিয়ে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে, দমবন্ধ হওয়ার মতন উপক্রম হল। বুলডোজার চালানোর মতন একনাগাড়ে ও চুমু খেয়েই যেতে লাগল। আষ্ঠেপৃষ্ঠে আমাকে পুরো সাপের মতন পেঁচিয়ে নিয়েছে। কোনও রকমে একটু মুক্তি চাওয়ার মতন প্রার্থনা করে বললাম, "কি করছো? মাসীমা দেখলে কি ভাববে? শেষ কালে মেয়ে কিনা বাবুয়াকে নিয়েও?"

ঠিক তারপরেই আমার ঠোঁট দুটোকে ছেড়ে দিল পাপিয়া। হঠাৎই কাঁদতে শুরু করলো হু হু করে। পাপিয়ার ঠোঁটের লিপস্টিক আমার ঠোঁটের সাথে মাখামাখি হয়ে গেছে। আমি জামার হাতলটা দিয়ে ঠোঁটটা মুছছি। পাপিয়া কাঁদতে কাঁদতেই বলল, "আমার শরীরের পবিত্রতা অনেক দিন আগেই নষ্ট হয়ে গেছে রে বাবুয়া, আজ পর্যন্ত ছছটা ছেলেকে দেহ দিয়েছি অনেকবার। এই এঁটো অঙ্গ নিয়ে আর নতুন স্বামীর ঘর করা যায় না। আজ তোকে সত্যি কথাটা না বলে থাকতে পারলাম না। আমি বড় স্বার্থপরের মত তোকে দিয়েও আজ আমার কামনা মেটালামরে বাবুয়া। মুখপুড়ি সত্যিই মুখ পুড়িয়েছে তার মায়ের। প্লীজ মা"কে কখনও বলিস না। আর পাড়াতেও কাউকে কিছু বলিস না। প্লীজ বাবুয়া প্লীজ।"







।।ছয়।।

ঠিক তার আরও পাঁচ মিনিট পরে সুধা বৌদির ফোনটা এলো। - "সরি বাবুয়া সরি। ফোন করতে অনেক দেরী হয়ে গেল। তুমি কিছু মাইন্ড করো নি তো?"

আমি বললাম, "আমি কি আসবো?"

বৌদি বলল, "আসবে ছাড়া নয়তো কি? চারিদিকে সব দেখে নিয়েছি। কেউ কোথাও নেই। সব এখন ঘুমোচ্ছে। হিঃ হিঃ হিঃ।"

বলেই একটু দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিল বৌদি। আমাকে বলল, "আমার তো দরজার লক খুলতেই দশ মিনিট সময় লেগে গেল। অনেক কষ্টে খুলেছি। দরজা এখন ভেজানোই আছে। তুমি আসবে, আলতো করে ঠেলা মারবে। দরজা খুলে যাবে। চলে এসো এখনি।"

চারপাশটা আমিও একবার দেখে নিলাম। সারা পাড়াটা এখন নিস্তব্ধ। পাড়ার কুকুরগুলো আমাকে খুব চেনে, মাঝে মাঝে ওদেরকে বিস্কুট কিনে এনে খাওয়াই, আমার পেছন পেছন ফলো করে বউদির ফ্ল্যাটের দিকেই আসছিল। হ্যাটা দিয়ে বললাম, যা ভাগ। আমার পিছু পিছু আসিস না।

কিছুদূর এসে তারপর কুকুরগুলো নিজের জায়গা মত ফিরে গেল। মুখার্জ্জীদার বাড়িটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাতের চাঁদটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। নিজের অন্তরাত্মা কে ঠেস দিয়ে বললাম, ভালই তো আমার বিবেক আর চরিত্র নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুললে? কি এমন দোষ করেছি? দিনে আমি ভার্জিন আর রাতে কিছুটা কামুক। তা বলে কি ডক্টর জেকিল অ্যান্ড মিষ্টার হাইড এর সঙ্গে আমাকে তুলনা করা যায়? আমার পাড়ায় একটা ইমেজ আছে না? না হলে গুটি গুটি পায়ে এখানে আসতাম? সটান চলে আসতাম বৌদির কাছে। সেটা যখন করিনি। তাহলে আমি ঠিক আগের মতই আছি।"

বৌদির কথামতন দরজায় আলতো ঠেলা মারতেই ওটা খুলে গেল। ঘরের মধ্যে সুধাবৌদিকে নতুন রূপে দেখলাম। শাড়ি ছেড়ে পাতলা একটা নাইটি চাপিয়েছে। আমি আসার আগেই পোষাক বদলে ফেলেছে গায়ের। স্লীম শরীরটার উপরিভাগে দুটি গর্ব করার মতন বুক। সুধা বৌদিকে দেখে মনে হচ্ছিল ঠিক যেন হিন্দী সিনেমার নায়িকা রাখী, এখন তার ঘরোয়া পোষাকে।

মেয়েদের শরীর সম্পর্কে যতটুকু জ্ঞান আছে আমার, তাতে এটুকু বুঝি নারীর শরীরের অন্যতম আকর্ষণ হল ভ্যাজাইনা।আর নাইটি পরা থাকলে, মেয়েদের সেই রত্নভান্ডারকে তুলে দেখাতে খুব সুবিধা হয়। একবার ছোটবেলায় বাপী আমাকে একটা হলুদ বই এনে পড়িয়েছিল। সেই বয়সে মানে টিন এজ এ যা হয়। উথাল পাতাল করে দেয় সবকিছু। আমারও হয়েছিল। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর আমি কাকলির প্রেমে পড়লাম, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ আর জীবনকে তখন নতুন করে আবিষ্কার করেছি। কাকলী আমার বান্ধবী হয়ে জীবনের পথ চলাটাই বদলে দিল। কিন্তু হায় কাকলি, তারপরে কোথায় সে যেন হারিয়ে গেল।

বৌদি বলল, "বাবুয়া শাড়ীটা খুলে একটু রিল্যাক্স হলাম। এখনও হাতমুখ ধোওয়া হয় নি। তুমি একটু ড্রয়িং রুমে বসবে? ততক্ষণ আমি বরং....."

বললাম, "ঠিক আছে আমি অপেক্ষা করছি, আপনি ঘুরে আসুন।"

ড্রয়িংরুমে আমাকে বসিয়ে সুধাবৌদি বাথরুমে চলে গেল। ছোট্ট একটা টু রুমের ফ্ল্যাট ভাড়া করেছে ঘোষদস্তিদার দম্পতি। আগে এই ফ্ল্যাটটাতেই কল্লোলদা থাকতো ওর মিসেস কে সঙ্গে নিয়ে। কল্লোলদা দিল্লীতে চাকরি পেয়ে মিসেসকে নিয়ে পোষ্টিং হয়েছেন। দ্বোতলায় ওপরে বাড়ীওয়ালা ভবতোষ মুখার্জ্জীর ছেলে কাঞ্চন মুখার্জ্জীই এখন সব। ভবতোষ মুখার্জ্জীর বয়স হয়েছে। বেশ কদিন ধরেই হার্টের রোগে ভুগছেন। ফ্ল্যাটটা বেশ কয়েকদিন ধরে খালি পড়ে ছিল বলে কাঞ্চনদাই আমাকে বার দুয়েক বলেছিল, "বাবুয়া নতুন কোন ভাড়াটের খোঁজ পেলে খবর দিস তো। তোদের ক্লাবে এসেও কেউ খোঁজ করতে পারে। বলবি, ভাড়া বেশি নয়। স্বামী-স্ত্রী বা ছোট ফ্যামিলি হলে আরামসে থাকতে পারবে এখানে।"

এ পাড়ার সবকিছুই আমার নখদর্পনে। কোন বাড়ীতে কে থাকে সব জানি। পূজোর চাঁদার বিলেই নামগুলো সব উঠে আসে। তবে আমার অবশ্য কাঞ্চনদার কথাটা পরে আর রাখা হয়নি। নতুন বৌদি এসেছে, সেটাও জানতে পারলাম দিনদুয়েক আগে। বৌদি নিজেই আমার খোঁজে গিয়েছিল, এই কাঞ্চনদাই বৌদিকে আমার কাছে পাঠিয়েছিল।

ড্রয়িং রুমে বসে বসে ছোট্ট সাজানো গোছানো ঘরটাকে উপভোগ করছিলাম। একটা আলমাড়ীর ওপর ফুলদানিতে রাখা রজনীগন্ধার কিছু স্টীক। সারা ঘরটা যেন সুন্দর সেন্টের গন্ধে ম ম করছে। ছোট্ট একটা বইয়ের আলমাড়ী। সেখানে দু থাক ভর্তি কিছু বই সাজানো রয়েছে। চোখে পড়ল বেশ কয়েকটা প্রাপ্তবয়স্ক বই। সবই বড়দের। সহস্র এক আরব্য রজনী, ভ্লদিমি নভোকভোর লেখা লোলিতা থেকে শুরু করে, বিদ্যা সুন্দর, কামসুত্র ও ইরোটিক সংগ্রহ। অনুমান, বৌদির তারমানে সেক্সের প্রতি ভালই ইন্টারেস্ট আছে। আমার শরীরের ভেতরে রক্তটা হঠাৎ যেন চলকে উঠল। শিরা উপশিরাগুলো নড়েচড়ে বসলো।

পাড়ায় এখনও অবধি, কারুর ফ্ল্যাটে ঢুকে অবশ্য এ দৃশ্য কখনও দেখিনি। ঘরকে সাজানোর জন্য, ঘরের চারদেওয়ালে যে চারটি ছবি লাগানো হয়েছে, তা সবই ন্যুড ছবি। আর্টিস্টিক পেইন্ট। তারমধ্যে দুটি ছবি বেশ উত্তেজনা প্রবণ। বক্ষ সম্পদকে দুইদিক দিয়ে দু"হাতে ধরে একজন উপছে পড়া যৌবন, বিলোতে চাইছে তার ভক্ত পাগল প্রেমিককে। আর একটি ছবিতে প্রায় বাতাবী লেবুর মতন বুক জোড়া নিয়ে এক নিষিদ্ধ রমনী। এমন লেবু ভাগ্য করে পাওয়াও কষ্টকর। কারণ অনেকের ভাগ্যে কমলালেবুও প্রায় জোটে না। চারটি ছবিতেই চারজন ভিন্ন নারী। এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায় দেখ।

বেশ শিহরিত হচ্ছিলাম ছবিগুলো দেখে। রুচিবোধ নিয়ে সংশয়ের কিছু নেই। কিন্তু এটা ভেবে অবাক হচ্ছিলাম, বিবাহিত একজনের স্ত্রী। তার এত নগ্ন সৌন্দর্যের প্রতি মোহ কেন? সুধাবৌদির স্বামীও এগুলোকে জেনে শুনে তাহলে অ্যালাও করলো? স্ত্রী, স্বামীকে কাছে পায় না বলেই কি এসব দেখে নিজের যৌনকামনাকে মেটানোর চেষ্টা করে? কিন্তু এ যে রীতিমতন উত্তেজনা প্রবণ ছবি। চোখে পড়লে লিঙ্গ এতটাই খাঁড়া হয়ে যাবে, চার পাঁচদিন পর পর গণিকাপল্লীতে গিয়ে কিছু বেশ্যাকে একনাগাড়ে ভোগ করলেও বোধহয় এটা শান্ত হবে না।

এ আয়োজন তাহলে কার জন্য? কার কামনাকে আরও তরান্বিত করবার জন্য এমন যৌন উত্তেজক ছবি ভরিয়ে ঘর সাজিয়েছে সুধা বৌদি? রহস্য যেন ক্রমেই ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। আমার মনে যেন সেই চিন্তারই উদ্রেক ঘটলো।






কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





লেখক(Lekhak)-এ লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

লেখক(Lekhak)-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

1 comment: