আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
এই সময় এক রবিবারে মানসীর আলাপ হয় স্বপনের সাথে। মানসীর খুড়তুতো বোন হল নিহারিকা, ডাক নাম নেহা। স্বপন নেহার বয় ফ্রেন্ড। বয় ফ্রেন্ড মানে বিয়ে একদম ঠিক, তাই দুজনেই দুজনের সব আত্মীয়র বাড়িতেই যায়। নেহা মানসীকে রাঙাদিদি বলে। তাই স্বপনও ওকে রাঙ্গাদিদি বলেই ডাকে। ওর সেই প্রথমবার কোন ছেলেকে দেখে মনে হয় এই ছেলেটা আমার বন্ধু হলে খুব ভাল হত। ঠিক সেই মুহূর্তেই স্বপন বলে,
স্বপন – আমি তোমার বন্ধু হলাম রাঙাদিদি।
মানসী হকচকিয়ে যায়। চট করে কিছু উত্তর দিতে পারে না।
স্বপন – কি গো দিদি চুপ করে গেলে কেন ? আমাকে বন্ধু হিসাবে পছন্দ হল না ?
মানসী – আমার মত কালো মেয়েকে তোমার মত সুন্দর দেখতে ছেলে কিভাবে বন্ধু করবে ?
স্বপন – কালো ! সেটা আবার কি জিনিস ?
মানসী – কেন আমাকে উপহাস করছ ? তুমি ঠিকই বুঝেছ আমি কি বলছি।
স্বপন – দেখো রাঙাদিদি, আমি কারো গায়ের রঙও দেখিনা বা চেহারাও দেখিনা বন্ধুত্ব করার আগে। আমি শুধু মন দেখি। আর তোমার সাথে কথা বলে বা নিহারিকার কাছে তোমার সম্পর্কে যা শুনেছি তাতে তোমাকে দেখার আগেই বন্ধু করে নিয়েছি। এখন তুমি মেনে নিলেই হল।
মানসী – দিদি আবার বন্ধু হয় নাকি।
স্বপন – দেখো তোমার বয়স আমার সমানই হবে। যদিও সবাই বলে মেয়েদের বয়েস নিয়ে কথা বলতে নেই, আমি সেসব মানি না। কিন্তু নিহারিকা তোমাকে দিদি বলে, তাই আমিও তোমায় দিদি বলছি। কিন্তু আসলে আমরা বন্ধু।
মানসী – ঠিক আছে স্বপন আমরা বন্ধু।
স্বপন হাত বাড়িয়ে দেয়। মানসী একটু ইতস্ততঃ করে ওর হাতে হাত মেলায়। বড় হবার পড়ে এই প্রথম কোন ছেলে ভালবেসে ওর হাতে হাত রাখে। মানসীর শরীর শিউরে ওঠে। স্বপন হাত মিলিয়েই থেমে থাকে না। মানসীকে জড়িয়ে ধরে। মানসীর শরীর অসার হয়ে যায়। ও স্বপনের কোলে শরীর ছেড়ে দেয়। স্বপন একটু ভয় পেয়ে ওকে ধরে পাশের সোফাতে বসিয়ে দেয়। নেহা গিয়ে মানসীর মাথাত হাত বুলিয়ে দেয়।
নেহা – কিরে রাঙা দি কি হল
মানসী – নারে মাথাটা কেমন করে উঠল
নেহা – ও এইরকমই, যে মেয়েকে ভাল লাগবে তাকেই জড়িয়ে ধরে
মানসী – তুই কিছু বলিস না ?
নেহা – না রে ও মনের থেকে একদম পরিস্কার। ও তোকে কোন খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে জড়িয়ে ধরেনি।
মানসী – সেটা আমিও বুঝেছি।
মানসী নিজের মনে বলে আমি স্বপনের আলিঙ্গনের সঠিক মানে বুঝলেও আমার শরীর সেটা বোঝেনি। তারপর উঠে দাঁড়ায় আর স্বপনের হাত ধরে নিজের বুকের মধ্যে চেপে ধরে।
মানসী – আজ থেকে তোমাকে আমি আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু হিসাবে দেখব।
স্বপন – ওইরকম বেহুঁশ মত হয়ে গেলে কেন ?
মানসী – সেটা আজ থাক। পরে কোনদিন বলব।
মানসী ভাবে একটা ছেলে ওকে কালো বলে নাক শিঁটকালো না আর ও এইরকম মন দিয়ে ফেলল! তারপর ভাবে বোন নিহারিকার ভাগ্য কি ভাল, যে স্বপনের মত ছেলে পেয়েছে। ইস্* যদি ওর ভাগ্যে স্বপন আসতো। একবার একটু হিংসা হয় বোনের জন্য। তারপরেই নিজে নিজেকে তিরস্কার করে। বোনকে ও খুব ভাল বাসে। সেই বোনের বন্ধু যে কিনা বোনকে বিয়ে করবে, তার দিকে চোখ দিচ্ছে। ছিঃ মানসী ছিঃ – আবার নিজেকেই ধিক্কার দেয়। আবার ভাবে আর একবার যদি স্বপন বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরত। কি শান্তি ওর বুকের মধ্যে হারিয়ে যেতে। স্বপনের হাত যখন নিজের দুই বুকে চেপে ধরেছিল ওর মন চাইছিল স্বপন ওর বুক দুটোকে দুমড়ে মুচড়ে দিক। কিন্তু স্বপন এত ভাল ছেলে যে ওইসবের কোন লক্ষণই দেখাল না। স্বপন এখন মা বাবার সাথে কথা বলছে। স্বপন ফেরার সময় ওকে নিজেই জড়িয়ে ধরবে। ওর বুকের মধ্যে নিজের বুক দুটো চেপে ধরবে। স্বপন ভাববে বন্ধু ভেবে জড়িয়ে ধরেছি। বাকি সবাইও তাই ভাববে। ও নিজেও তাই ভাববে। শুধু ওর শরীর অন্য কিছু ভেবে নেবে। বুঝতে পারে নিজের মনে বড় বেশী স্বপন স্বপন করে ফেলছে। তাড়াতাড়ি বৌদির কাছে পালিয়ে যায়।
সুলগ্না – কি হল আমার রাঙা দিদির ?
মানসী – কিছু না
সুলগ্না – নেহার বয় ফ্রেন্ড খুব ভাল ছেলে
মানসী – (লজ্জা লজ্জা মুখ করে) হ্যাঁ খুব ভাল ছেলে
সুলগ্না – তুমি লজ্জা পাচ্ছ কেন ?
মানসী – কই না তো, লজ্জা পাচ্ছি না তো।
বলতে বলতে মানসীর গলা লজ্জা আর কান্না মিশে ধরে যায়।
সুলগ্না – এই রাঙা দিদি কি হল
মানসী আর নিজেকে সামলাতে পারে না। বউদিকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সুলগ্না একটু ভাবে তারপর বুঝতে পারে মানসীর মন।
সুলগ্না – কিন্তু রাঙা দি স্বপন নেহার বন্ধু, ওর সাথে বিয়ে করবে।
মানসী – হ্যাঁ সেটা জানি
সুলগ্না – কিন্তু ওকে দেখে তোমার মনে কি হল !
মানসী – এই প্রথম কোন ছেলে আমার সাথে এত ভাল ভাবে ব্যবহার করলো।
সুলগ্না – তা ঠিক। কিন্তু তাতে কি হল !
মানসী – স্বপন যখন আমাকে জড়িয়ে ধরল তখন আমার মনে হল আমি স্বর্গে পৌঁছে গিয়েছি। এই ভাবে ভালবেসে কেউ আমাকে ছোঁয় নি।
সুলগ্না – তুমি কি এই একটুতেই স্বপন কে ভালবেসে ফেললে ?
মানসী – সেইরকমই মনে হচ্ছে। যদিও আমি জানি ও নেহার বন্ধু। ও আমাকে ওইরকম কিছু ভাবে নি। কিন্ত ওর আলিঙ্গনে গিয়ে আমার মন জানলেও, শরীর মানতে চায় নি।
সুলগ্না – ও কিছু নয়। এটা সাময়িক ব্যাপার। তুমি ওকে বন্ধু হিসাবেই দেখবে।
মানসী – আমি সেটা বুঝি। তাই তোমার কাছে পালিয়ে এলাম, নিজেকে সামলিয়ে নেবার জন্য।
সুলগ্না – ভগবান তোমার জন্যেও ঠিক এইরকম একটা ছেলে বানিয়ে রেখেছেন। কোন না কোন দিন ঠিক তার খোঁজ পেয়ে যাবে।
মানসী – তোমার আশীর্বাদ থাকলে সব সম্ভব।
স্বপন থাকতো রাঁচিতে। নিহারিকা থাকতো কলকাতায়। সুলগ্না বৌদি স্বপন কে বলে পরের বার কলকাতায় আসলে কাছে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে।
স্বপন – আমার কি সেই ভাগ্য হবে আপনাদের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাব ?
নিহারিকা – পরের বার স্বপন আসলে আমরা একসাথে দক্ষিণেশ্বর যাব।
সুলগ্না – খুব ভাল হবে। কি মানসী যাবে তো সপনের সাথে দক্ষিণেশ্বরে ?
মানসী – (আস্তে করে) হ্যাঁ যাব
স্বপন – আমার বন্ধু আমার সাথে যেতে চাইবে না সেটা হয় না কি ?
সুলগ্না – তুমি নেহার সামনে ওর দিদিকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চাইছ ?
স্বপন – নিহারিকাও তো সাথে থাকবে। আর রাঙা দিদি তো বন্ধু। অনেক সময় বন্ধুর দাবী প্রেয়সীর থেকে বেশী হয়।
সুলগ্না – না না আমাদের নেহার থেকে মানসীকে বেশী ভালবাসতে হবে না।
নিহারিকা – ও যাকে খুশী ভালবাসুক, আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না।
সুলগ্না – তোমাদের দেখে খুব ভাল লাগে। আশীর্বাদ করি তোমাদের ভবিষ্যৎ সুখের হোক।
পরের মাসে স্বপন কলকাতায় আসলে নিহারিকার সাথে বৌদিদের ঘরে যায়। স্বপন যাবার সাথে সাথে সুলগ্না আর মানসী ওর জন্য চা জল এনে গল্প করতে বসে। এমন সময় সেই বিখ্যাত বড়দা আসেন। বড়দা মানে সুলগ্না বৌদির বর।
বড়দা – কি গল্প হচ্ছে এখানে ?
সুলগ্না – এ হচ্ছে স্বপন, নেহার বন্ধু।
বড়দা – কি খব স্বপন, কেমন আছ।
স্বপন – ভালই আছি বড়দা।
বড়দা – কত দিন থাকবে এবার ?
স্বপন – কাল রাঁচি ফিরে যাব
বড়দা – তোমাদের বিয়ে করবার প্ল্যান কবে ?
স্বপন – মোটামুটি এক বছর পরে।
বড়দা – মানসী তুই কি করছিস এখানে ?
সুলগ্না – স্বপন মানসীকেও বন্ধু বানিয়েছে
বড়দা – সে আবার কি করে হয় !
সুল্গনা – সব হয়, তুমি ওইসব বুঝবে না।
স্বপন – বড়দা আপনি এইসব ছোটো খাট ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। আমি নিহারিকাকে বিয়ে করবো। আমি জানি এই বাড়িটাও নিহারিকার বাড়ির মতই। তাই এই বাড়ির সন্মান আমারও দায়িত্বের মধ্যে পরে। রাঙা দিদিকে বন্ধু বলেছি। তাই রাঙা দিদির ভাল মন্দের খেয়াল আমি অতি অবশ্যই রাখব।
বড়দা – না না আমি কিছুই চিন্তা করছি না। ঠিক আছে তোমরা গল্প করো। আমার আবার একটু একটা মিটিঙে যাবার আছে।
বড়দা চলে যাবার পর সুলগ্না, মানসী আর নেহাকে নিয়ে স্বপন বের হতে যায়। কিন্তু সেই সময় আরেকটা মেয়ে আসে। এসেই হৈচৈ করতে শুরু করে।
সুলগ্না – এই যে স্বপন তোমার আরেক বন্ধু এসে গেছে
স্বপন – কে ইনি ?
শ্রেয়সী – আমি শ্রেয়সী, তুমি কে ?
স্বপন – আমি স্বপন
শ্রেয়সী – সে তো বুঝলাম। কিন্তু এখানে কোন সম্পর্কে এসেছ ?
স্বপন – আমি মানসীর বন্ধু।
শ্রেয়সী – তোমার সাহস তো কম নয়, মানসীর বন্ধু আবার আমাদের বাড়িতেও এসেছ ?
স্বপন – তোমাদের বাড়ি এসেছি, একটু আগে বড়দার সাথে গল্প করেছি আর এখন এদের নিয়ে দক্ষিণেশ্বর বেড়াতে যাচ্ছি। তুমি কি যাবে আমাদের সাথে ?
শ্রেয়সী – তুমি মানসীর বন্ধু, ওকে নিয়েই বেড়াতে যাও। পৃথিবীর সবাইকে নিয়ে যাবার কি দরকার ?
সুলগ্না – শ্রেয়সী তোমার এই সমস্যা, তোমার সবার সাথেই লড়াই করা চাই।
শ্রেয়সী – কেন আমি কি করলাম ?
সুলগ্না – স্বপন আসলে নেহার বন্ধু। স্বপন নেহা কে বিয়ে করবে। এর আগের বার এসে মানসীকে বন্ধু বানিয়েছে। তাই এবার সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাবে।
শ্রেয়সী – তবে আমিও যাব।
স্বপন – এবার কি মনে হচ্ছে আমার সাথে বন্ধুত্ব করা যায় ?
শ্রেয়সী – এখন তো সাথে ঘুরতে যাই। পরে চিন্তা করে দেখব বন্ধুত্ব করা যায় কি না।
স্বপন – তাই হোক।
সবাই একসাথে বেরোয়। স্বপন ট্যাক্সি করে যেতে চাইছিল। কিন্তু সুলগ্না বৌদি ট্যাক্সি করে যেতে চান না।
সুলগ্না – দক্ষিণেশ্বর তো এইটুকু দুর তা আবার ট্যাক্সি করে যাবার কি দরকার !
স্বপন – আমি দুই বান্ধবী, প্রেয়সী আর সবার থেকে আপন বৌদিকে নিয়ে বেড়াতে যাব তাই আবার বাসে ? তা হয় না।
মানসী – না না বাসে করে গেলেই হবে
শ্রেয়সী – স্বপন যখন ট্যাক্সি করে নিয়ে যেতে চাইছে তখন বাসে করে যাবার কোন মানেই হয় না।
নিহারিকা – আমরা ট্যাক্সি করেই যাই
মানসী – শুধু শুধু পয়সা নষ্ট
স্বপন – আমার দুই বন্ধুর জন্য না হয় একটু পয়সা খরচ হল
সবাই ট্যাক্সি করেই যায়।
এখানে মানসীর দিদি শ্রেয়সীর একটু পরিচয় দেই। শ্রেয়সীও কালো মেয়ে। পড়াশুনা – শ্রেয়সী বলে সেটা আবার কি জিনিস। কোন মানুষ বেঁচে থাকতে পড়াশুনা কেন করবে! বাবার পয়সা আছে, বিয়ে দিয়ে দেবে। হেসে খেলে সিনেমা দেখে এখনকার জীবন কাটিয়ে দেব। বিয়ের পরে দেখা যাবে। ওর ফিগার অভাবনীয় – ৩০-৩০-৩৪। ভগবান ওইরকম একটা মেয়েই বানিয়েছিলেন। তার ওপর শ্রেয়সী ভীষণ স্বার্থপর ছিল। শুধু নিজেরটাই বুঝত। তার উপর শুচিবাই মেয়ে। একটা ভাল গুণ ছিল মানে সবাই সেই গুণকে ভাল বলে। খুব ঠাকুরে ভক্তি। সিনেমা দেখা, ঘুরে বেড়ানোর পরেই ওর প্রধান কাজ ছিল পুজা করা। আর বলত গান শেখে। যেই ওর গান শুনেছে সেই বলেছে ভালই গায় কিন্তু আরও একটু শিখতে হবে।
যাই হোক সবাই মিলে দক্ষিণেশ্বরে যায়। গিয়ে পুজা দেয়। তার পর সবাই গঙ্গার ধারে গিয়ে বসে। এই ঘটনার সময় কাল হল ১৯৮৭ সাল। তখন দক্ষিণেশ্বর এখনকার থেকে অনেক আলাদা ছিল। বিকালে গঙ্গার ধারে এখনকার মত ভিড় হত না। স্বপন সবার জন্য আইসক্রিম কেনে।
শ্রেয়সী – তুমি আমাদের বেড়াতে নিয়ে এসে শুধু আইসক্রিম খাওয়াবে ?
স্বপন – আর কি খাবে বল ?
মানসী – না না আর কিছু খাওয়াতে হবে না। আমরা পুজো দিতে এসেছি, সেটা হয়ে গেছে। এবার বাড়ি চল।
সুলগ্না – কেন রাঙা দিদি স্বপনের সাথে বসে গল্প করতে ভাল লাগছে না ?
শ্রেয়সী – স্বপন তো শুধু নেহার হাত ধরে আছে
সুলগ্না – কারো হাত ধরার অধিকার অর্জন করতে হয়। শুধু শুধু কেউ তোমার হাত ধরবে না।
স্বপন – সত্যি তো আমি আমার বন্ধুদের ছেড়ে শুধু নিহারিকার হাত ধরে আছি।
স্বপন গিয়ে মানসীর হাত ধরতে চায় কিন্তু মানসী লজ্জায় হাত ছারিয়ে দূরে দুরেই থাকে। শ্রেয়সী এসে স্বপনের হাত ধরে। স্বপন এক হাতে নিহারিকার হাত ধরে থাকে আর এক হাত শ্রেয়সী ওর বুকের মধ্যে চেপে রাখে। কিন্তু শ্রেয়সীর পুরো সমতল বুকে হাত রাখলে কোন ছেলের মনেই কোন প্রতিক্রিয়া হয় না। স্বপনেরও হল না। যাই হোক কিছু সময় ওই ভাবে বসার পড়ে শ্রেয়সী আবার বলে খিদে পেয়েছে।
মানসী – তোর পেটে আছে টা কি ? শুধু খাই খাই !
সুলগ্না – শ্রেয়সী একটু বদলাও নিজেকে
শ্রেয়সী – স্বপনের সাথে আবার ফর্মালিটি করার কি আছে ? ও তো আমাদের বন্ধু বলেছে।
সুলগ্না – ও তোমাকে বন্ধু বলেছে কিন্তু তুমি কি ওকে বন্ধু বলে মেনে নিয়েছ ?
শ্রেয়সী – হ্যাঁ ও আমার বন্ধুই তো
মানসী – তোর ধান্দা শুধু কারো ঘাড় ভেঙ্গে আনন্দ করা
শ্রেয়সী – তাতে খারাপ কি দেখলি ? আমার জন্য তো তোরাও মজা করিস।
নিহারিকা – এই শোনো তুমি সবার জন্য এগরোল নিয়ে এস।
স্বপন – হ্যাঁ নিয়ে আসছি
শ্রেয়সী – চল আমিও যাই তোমার সাথে।
শ্রেয়সী স্বপনের হাত ওর বুকের মধ্যে ধরে রোল কিনতে যায়।
স্বপন – এই ভাবে আমার হাত ধরেছ সব লোকে কি ভাববে ?
শ্রেয়সী – কেন কি হয়েছে ?
স্বপন – কিছু না
শ্রেয়সী – আমার বন্ধুর হাত আমি কি ভাবে ধরব, সেটা লোকের ভাবার ওপর নির্ভর করে না।
স্বপন – তাও শালীনতা বলে একটা জিনিস আছে
শ্রেয়সী – যাও আমি বুঝতে পাড়ছি। আমার বুক একদম সমান বলে তোমার ভাল লাগছে না। এই যদি আমার জায়গায় মানসী হত ওর বুকে তুমি নিজের ইচ্ছায় হাত রেখে দিতে
স্বপন – দেখো আমি এই ভাবে কথা বলতে বা শুনতে অভ্যস্ত নই। আমি কোন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব ওর গায়ের রঙ বা বুকের মাপ দেখে করি না। আমার কাছে তুমিও যা, মানসীও তাই।
শ্রেয়সী – সরি বাবা, ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু আমার তোমার হাত এইভাবে ধরতে ভাল লাগছে।
স্বপন – সে ঠিক আছে, কিন্তু তোমার নেহার এটা ভাল নাও লাগতে পারে
শ্রেয়সী – ছাড় তো, নেহা তো আর এখন দেখছে না।
স্বপন – ভীষণ দুষ্টু মেয়ে তুমি।
দুজনে মিলে রোল কেনে। শ্রেয়সী সবার জন্য ডবল ডিমের রোল বানাতে বলে। রোল কিনে ফেরার সময় আর শ্রেয়সী আর ওইভাবে হাত ধরে না।
সুলগ্না – কি ব্যাপার শ্রেয়সী তুমি স্বপনের হাত ধরে আসছ না !
শ্রেয়সী – স্বপনের পছন্দ নয় যে আমি ওর হাত ধরি
স্বপন – আমি কখন বললাম সেই কথা ?
শ্রেয়সী – সব কথা বলতে হয় না
মানসী – তুই নিশ্চয় স্বপনের হাত বুকের মধ্যে চেপে ধরে ছিলিস ?
শ্রেয়সী – তা না তো কিভাবে হাত ধরব ?
মানসী – আমি তো চিনি তোকে। আর এখন স্বপনকেও চিনি।
শ্রেয়সী – আমি একটু স্বপনের হাত আমার বুকে রেখেছি তো কি হয়েছে ?
সুলগ্না – তুমি কি কখনো বড় হবে না ? নেহাই বা কি ভাববে ?
নিহারিকা – শ্রেদিদি তুমি বাড়ীতে গিয়ে স্বপনের হাত, মুখ যা খুশী ধরে থেকো। কেউ কিচ্ছু বলবে না। এখানে সবার মধ্যে ওইভাবে হাত ধর না।
সুল্গনা – ওকে যা খুশী ধরতে বলছ ? তুমি জানো না নাকি ওকে ?
নিহারিকা – হ্যাঁ জানি। শ্রেদিদি আমার স্বপনের যা খুশী ধরতে পারে আমি কিচ্ছু বলব না। একদিন ধরলেই কি আর আমার থেকে পালিয়ে যাবে ?
শ্রেয়সী – আমি মোটেও কিছু উলটো পাল্টা জিনিসে হাত দেব না।
সুলগ্না – আচ্ছা নেহা তোমার আর স্বপনের ভালবাসা কি ভাবে শুরু হল ?
নিহারিকা – একদিন ও আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো যে আমি ওকে বিয়ে করতে রাজী আছি কি না ?
সুলগ্না – তুমি কি বললে ?
নিহারিকা – আমি যদি তোমার ডাকে সাড়া নাই দেব তবে আর আজ ডাকলে কেন এসেছি !
সুলগ্না – এ আবার কি রকম
নিহারিকা – ওই রকমই
সুলগ্না – স্বপন তুমি নিহারিকা কে প্রপোজ কেন করলে ?
স্বপন – দেখো আমি নিহারিকাকে প্রথম দেখি যেদিন ওর দাদার সাথে ওদের বাড়ি যাই
সুলগ্না – তুমি ওর দাদাকে চেন ?
নিহারিকা – ও আর দাদা একসাথে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছে
সুলগ্না – কি করতে গিয়েছিলে ওদের বাড়ি ?
স্বপন – বাবা তুমি তো পুরো বিশদ জানতে চাও ?
সুলগ্না – তোমার সাথে আমার ননদের বিয়ে হবে আর তোমাকে জানবো না ?
স্বপন – আচ্ছা ঠিক আছে। আমি আর ওর দাদা ব্যাঙ্গালর যাচ্ছিলাম। আমার বাড়ি বেশ দূরে তাই অফিস থেকে ওদের বাড়ীতে খেয়ে ত্রেন ধরি।
সুলগ্না – তারপর ?
স্বপন – তারপর আর কি ! আমি গেলে নিহারিকা আমাকে খেতে দেয়। ও এত যত্ন করে খাওয়ায় যে আমার মনে হয় যে মেয়ে একটা অচেনা ছেলেকে এত যত্ন করতে পারে, সে নিজের ভালবাসার লোককে অনেক বেশিই খেয়াল রাখবে। তাই বলতে পারো আমি স্বার্থপরের মত নিজের সুবিধার জন্য ওকে ভালবেসেছি।
সুলগ্না – তোমরা বুঝলে স্বপন নেহাকে কেন ভালবাসে ?
মানসী – নেহা খুব ভাল মেয়ে। ও সবাইকে ভালবাসে।
স্বপন – এটাই এখন সমস্যা আমার কাছে
সুলগ্না – কেন ভাই ?
স্বপন – এরপরেও যদি আরও কাউকে যত্ন করে খাওয়ায় আর সেও ভালবেসে ফেলে ?
নিহারিকা – মোটেই না, আমি সবাইকে অতো খাতির করি না
সুলগ্না – তবে স্বপনকে এত যত্ন করেছিলি কেন ?
নিহারিকা – আমার ওকে দেখে ভাল লেগেছিল তাই।
মানসী – নেহা নিজে ভাল তাই ওর ভাল ছেলে খুঁজে পেটে অসুবিধা হয়নি।
শ্রেয়সী – আমি বাবা বুঝি না, শুধু খেতে দেবার মধ্যে এত যত্ন, ভালবাসা কোথা থেকে আসে ! প্লেটে করে সামনে খাবার দেবে, ব্যাস হয়ে গেল।
সুলগ্না – সেটাই যদি বুঝতে তবে তোমার দুনিয়া আলাদা হত।
শ্রেয়সী – দরকার নেই আমার বোঝার। আমি যেরকম তাতে যদি কোন ছেলের ভাল লাগে তো ঠিক আছে। আর না হলে বাবা যার সাথে বলবে আমি বিয়ে করে নেব।
মানসী – না রে দিদি জীবনে স্বপনের মত একটা ছেলের ভালবাসার খুব দরকার আছে। তুই কোনদিন বুঝলিই না ভালবাসা কাকে বলে।
শ্রেয়সী – যেন তুই খুব বুঝিস !
মানসী ঠিক বুঝেছিল ভালবাসা কি জিনিস। কিন্তু শ্রেয়সী সেটা জানত না বা ওর সেটা বোঝার ক্ষমতাও ছিল না। আরও কিছু সময় দক্ষিণেশ্বরে থেকে ওরা বাড়ি ফিরে আসে। স্বপনরা আর বেশী বসে না। ও নিহারিকাকে ওর বাড়ি পৌঁছে দিয়ে নিজের বাড়ি ফিরবে। ও যাবার সময় মানসীকে জড়িয়ে ধরে। মানসীও মনে মনে এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিল।
সুলগ্না – স্বপন খুব ভাল কাটল আজকের বিকাল টা।
স্বপন – আমারও খুব ভাল লেগেছে।
শ্রেয়সী – মানসীর সব থেকে ভাল লেগেছে।
নিহারিকা – আমার ও রাঙা দিদিকে খুব ভালবাসে।
শ্রেয়সী – মানসীও
Tumi_je_amar-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here
মূল ইনডেক্স-এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
কাজল নদী
Written By Tumi_je_amar
Written By Tumi_je_amar
দ্বিতীয় পরিচ্ছদ – আলোর ঝলক
(#০১)
(#০১)
এই সময় এক রবিবারে মানসীর আলাপ হয় স্বপনের সাথে। মানসীর খুড়তুতো বোন হল নিহারিকা, ডাক নাম নেহা। স্বপন নেহার বয় ফ্রেন্ড। বয় ফ্রেন্ড মানে বিয়ে একদম ঠিক, তাই দুজনেই দুজনের সব আত্মীয়র বাড়িতেই যায়। নেহা মানসীকে রাঙাদিদি বলে। তাই স্বপনও ওকে রাঙ্গাদিদি বলেই ডাকে। ওর সেই প্রথমবার কোন ছেলেকে দেখে মনে হয় এই ছেলেটা আমার বন্ধু হলে খুব ভাল হত। ঠিক সেই মুহূর্তেই স্বপন বলে,
স্বপন – আমি তোমার বন্ধু হলাম রাঙাদিদি।
মানসী হকচকিয়ে যায়। চট করে কিছু উত্তর দিতে পারে না।
স্বপন – কি গো দিদি চুপ করে গেলে কেন ? আমাকে বন্ধু হিসাবে পছন্দ হল না ?
মানসী – আমার মত কালো মেয়েকে তোমার মত সুন্দর দেখতে ছেলে কিভাবে বন্ধু করবে ?
স্বপন – কালো ! সেটা আবার কি জিনিস ?
মানসী – কেন আমাকে উপহাস করছ ? তুমি ঠিকই বুঝেছ আমি কি বলছি।
স্বপন – দেখো রাঙাদিদি, আমি কারো গায়ের রঙও দেখিনা বা চেহারাও দেখিনা বন্ধুত্ব করার আগে। আমি শুধু মন দেখি। আর তোমার সাথে কথা বলে বা নিহারিকার কাছে তোমার সম্পর্কে যা শুনেছি তাতে তোমাকে দেখার আগেই বন্ধু করে নিয়েছি। এখন তুমি মেনে নিলেই হল।
মানসী – দিদি আবার বন্ধু হয় নাকি।
স্বপন – দেখো তোমার বয়স আমার সমানই হবে। যদিও সবাই বলে মেয়েদের বয়েস নিয়ে কথা বলতে নেই, আমি সেসব মানি না। কিন্তু নিহারিকা তোমাকে দিদি বলে, তাই আমিও তোমায় দিদি বলছি। কিন্তু আসলে আমরা বন্ধু।
মানসী – ঠিক আছে স্বপন আমরা বন্ধু।
স্বপন হাত বাড়িয়ে দেয়। মানসী একটু ইতস্ততঃ করে ওর হাতে হাত মেলায়। বড় হবার পড়ে এই প্রথম কোন ছেলে ভালবেসে ওর হাতে হাত রাখে। মানসীর শরীর শিউরে ওঠে। স্বপন হাত মিলিয়েই থেমে থাকে না। মানসীকে জড়িয়ে ধরে। মানসীর শরীর অসার হয়ে যায়। ও স্বপনের কোলে শরীর ছেড়ে দেয়। স্বপন একটু ভয় পেয়ে ওকে ধরে পাশের সোফাতে বসিয়ে দেয়। নেহা গিয়ে মানসীর মাথাত হাত বুলিয়ে দেয়।
নেহা – কিরে রাঙা দি কি হল
মানসী – নারে মাথাটা কেমন করে উঠল
নেহা – ও এইরকমই, যে মেয়েকে ভাল লাগবে তাকেই জড়িয়ে ধরে
মানসী – তুই কিছু বলিস না ?
নেহা – না রে ও মনের থেকে একদম পরিস্কার। ও তোকে কোন খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে জড়িয়ে ধরেনি।
মানসী – সেটা আমিও বুঝেছি।
মানসী নিজের মনে বলে আমি স্বপনের আলিঙ্গনের সঠিক মানে বুঝলেও আমার শরীর সেটা বোঝেনি। তারপর উঠে দাঁড়ায় আর স্বপনের হাত ধরে নিজের বুকের মধ্যে চেপে ধরে।
মানসী – আজ থেকে তোমাকে আমি আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু হিসাবে দেখব।
স্বপন – ওইরকম বেহুঁশ মত হয়ে গেলে কেন ?
মানসী – সেটা আজ থাক। পরে কোনদিন বলব।
(#০২)
মানসী ভাবে একটা ছেলে ওকে কালো বলে নাক শিঁটকালো না আর ও এইরকম মন দিয়ে ফেলল! তারপর ভাবে বোন নিহারিকার ভাগ্য কি ভাল, যে স্বপনের মত ছেলে পেয়েছে। ইস্* যদি ওর ভাগ্যে স্বপন আসতো। একবার একটু হিংসা হয় বোনের জন্য। তারপরেই নিজে নিজেকে তিরস্কার করে। বোনকে ও খুব ভাল বাসে। সেই বোনের বন্ধু যে কিনা বোনকে বিয়ে করবে, তার দিকে চোখ দিচ্ছে। ছিঃ মানসী ছিঃ – আবার নিজেকেই ধিক্কার দেয়। আবার ভাবে আর একবার যদি স্বপন বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরত। কি শান্তি ওর বুকের মধ্যে হারিয়ে যেতে। স্বপনের হাত যখন নিজের দুই বুকে চেপে ধরেছিল ওর মন চাইছিল স্বপন ওর বুক দুটোকে দুমড়ে মুচড়ে দিক। কিন্তু স্বপন এত ভাল ছেলে যে ওইসবের কোন লক্ষণই দেখাল না। স্বপন এখন মা বাবার সাথে কথা বলছে। স্বপন ফেরার সময় ওকে নিজেই জড়িয়ে ধরবে। ওর বুকের মধ্যে নিজের বুক দুটো চেপে ধরবে। স্বপন ভাববে বন্ধু ভেবে জড়িয়ে ধরেছি। বাকি সবাইও তাই ভাববে। ও নিজেও তাই ভাববে। শুধু ওর শরীর অন্য কিছু ভেবে নেবে। বুঝতে পারে নিজের মনে বড় বেশী স্বপন স্বপন করে ফেলছে। তাড়াতাড়ি বৌদির কাছে পালিয়ে যায়।
সুলগ্না – কি হল আমার রাঙা দিদির ?
মানসী – কিছু না
সুলগ্না – নেহার বয় ফ্রেন্ড খুব ভাল ছেলে
মানসী – (লজ্জা লজ্জা মুখ করে) হ্যাঁ খুব ভাল ছেলে
সুলগ্না – তুমি লজ্জা পাচ্ছ কেন ?
মানসী – কই না তো, লজ্জা পাচ্ছি না তো।
বলতে বলতে মানসীর গলা লজ্জা আর কান্না মিশে ধরে যায়।
সুলগ্না – এই রাঙা দিদি কি হল
মানসী আর নিজেকে সামলাতে পারে না। বউদিকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সুলগ্না একটু ভাবে তারপর বুঝতে পারে মানসীর মন।
সুলগ্না – কিন্তু রাঙা দি স্বপন নেহার বন্ধু, ওর সাথে বিয়ে করবে।
মানসী – হ্যাঁ সেটা জানি
সুলগ্না – কিন্তু ওকে দেখে তোমার মনে কি হল !
মানসী – এই প্রথম কোন ছেলে আমার সাথে এত ভাল ভাবে ব্যবহার করলো।
সুলগ্না – তা ঠিক। কিন্তু তাতে কি হল !
মানসী – স্বপন যখন আমাকে জড়িয়ে ধরল তখন আমার মনে হল আমি স্বর্গে পৌঁছে গিয়েছি। এই ভাবে ভালবেসে কেউ আমাকে ছোঁয় নি।
সুলগ্না – তুমি কি এই একটুতেই স্বপন কে ভালবেসে ফেললে ?
মানসী – সেইরকমই মনে হচ্ছে। যদিও আমি জানি ও নেহার বন্ধু। ও আমাকে ওইরকম কিছু ভাবে নি। কিন্ত ওর আলিঙ্গনে গিয়ে আমার মন জানলেও, শরীর মানতে চায় নি।
সুলগ্না – ও কিছু নয়। এটা সাময়িক ব্যাপার। তুমি ওকে বন্ধু হিসাবেই দেখবে।
মানসী – আমি সেটা বুঝি। তাই তোমার কাছে পালিয়ে এলাম, নিজেকে সামলিয়ে নেবার জন্য।
সুলগ্না – ভগবান তোমার জন্যেও ঠিক এইরকম একটা ছেলে বানিয়ে রেখেছেন। কোন না কোন দিন ঠিক তার খোঁজ পেয়ে যাবে।
মানসী – তোমার আশীর্বাদ থাকলে সব সম্ভব।
(#০৩)
স্বপন থাকতো রাঁচিতে। নিহারিকা থাকতো কলকাতায়। সুলগ্না বৌদি স্বপন কে বলে পরের বার কলকাতায় আসলে কাছে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে।
স্বপন – আমার কি সেই ভাগ্য হবে আপনাদের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাব ?
নিহারিকা – পরের বার স্বপন আসলে আমরা একসাথে দক্ষিণেশ্বর যাব।
সুলগ্না – খুব ভাল হবে। কি মানসী যাবে তো সপনের সাথে দক্ষিণেশ্বরে ?
মানসী – (আস্তে করে) হ্যাঁ যাব
স্বপন – আমার বন্ধু আমার সাথে যেতে চাইবে না সেটা হয় না কি ?
সুলগ্না – তুমি নেহার সামনে ওর দিদিকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চাইছ ?
স্বপন – নিহারিকাও তো সাথে থাকবে। আর রাঙা দিদি তো বন্ধু। অনেক সময় বন্ধুর দাবী প্রেয়সীর থেকে বেশী হয়।
সুলগ্না – না না আমাদের নেহার থেকে মানসীকে বেশী ভালবাসতে হবে না।
নিহারিকা – ও যাকে খুশী ভালবাসুক, আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না।
সুলগ্না – তোমাদের দেখে খুব ভাল লাগে। আশীর্বাদ করি তোমাদের ভবিষ্যৎ সুখের হোক।
পরের মাসে স্বপন কলকাতায় আসলে নিহারিকার সাথে বৌদিদের ঘরে যায়। স্বপন যাবার সাথে সাথে সুলগ্না আর মানসী ওর জন্য চা জল এনে গল্প করতে বসে। এমন সময় সেই বিখ্যাত বড়দা আসেন। বড়দা মানে সুলগ্না বৌদির বর।
বড়দা – কি গল্প হচ্ছে এখানে ?
সুলগ্না – এ হচ্ছে স্বপন, নেহার বন্ধু।
বড়দা – কি খব স্বপন, কেমন আছ।
স্বপন – ভালই আছি বড়দা।
বড়দা – কত দিন থাকবে এবার ?
স্বপন – কাল রাঁচি ফিরে যাব
বড়দা – তোমাদের বিয়ে করবার প্ল্যান কবে ?
স্বপন – মোটামুটি এক বছর পরে।
বড়দা – মানসী তুই কি করছিস এখানে ?
সুলগ্না – স্বপন মানসীকেও বন্ধু বানিয়েছে
বড়দা – সে আবার কি করে হয় !
সুল্গনা – সব হয়, তুমি ওইসব বুঝবে না।
স্বপন – বড়দা আপনি এইসব ছোটো খাট ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। আমি নিহারিকাকে বিয়ে করবো। আমি জানি এই বাড়িটাও নিহারিকার বাড়ির মতই। তাই এই বাড়ির সন্মান আমারও দায়িত্বের মধ্যে পরে। রাঙা দিদিকে বন্ধু বলেছি। তাই রাঙা দিদির ভাল মন্দের খেয়াল আমি অতি অবশ্যই রাখব।
বড়দা – না না আমি কিছুই চিন্তা করছি না। ঠিক আছে তোমরা গল্প করো। আমার আবার একটু একটা মিটিঙে যাবার আছে।
(#০৪)
বড়দা চলে যাবার পর সুলগ্না, মানসী আর নেহাকে নিয়ে স্বপন বের হতে যায়। কিন্তু সেই সময় আরেকটা মেয়ে আসে। এসেই হৈচৈ করতে শুরু করে।
সুলগ্না – এই যে স্বপন তোমার আরেক বন্ধু এসে গেছে
স্বপন – কে ইনি ?
শ্রেয়সী – আমি শ্রেয়সী, তুমি কে ?
স্বপন – আমি স্বপন
শ্রেয়সী – সে তো বুঝলাম। কিন্তু এখানে কোন সম্পর্কে এসেছ ?
স্বপন – আমি মানসীর বন্ধু।
শ্রেয়সী – তোমার সাহস তো কম নয়, মানসীর বন্ধু আবার আমাদের বাড়িতেও এসেছ ?
স্বপন – তোমাদের বাড়ি এসেছি, একটু আগে বড়দার সাথে গল্প করেছি আর এখন এদের নিয়ে দক্ষিণেশ্বর বেড়াতে যাচ্ছি। তুমি কি যাবে আমাদের সাথে ?
শ্রেয়সী – তুমি মানসীর বন্ধু, ওকে নিয়েই বেড়াতে যাও। পৃথিবীর সবাইকে নিয়ে যাবার কি দরকার ?
সুলগ্না – শ্রেয়সী তোমার এই সমস্যা, তোমার সবার সাথেই লড়াই করা চাই।
শ্রেয়সী – কেন আমি কি করলাম ?
সুলগ্না – স্বপন আসলে নেহার বন্ধু। স্বপন নেহা কে বিয়ে করবে। এর আগের বার এসে মানসীকে বন্ধু বানিয়েছে। তাই এবার সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যাবে।
শ্রেয়সী – তবে আমিও যাব।
স্বপন – এবার কি মনে হচ্ছে আমার সাথে বন্ধুত্ব করা যায় ?
শ্রেয়সী – এখন তো সাথে ঘুরতে যাই। পরে চিন্তা করে দেখব বন্ধুত্ব করা যায় কি না।
স্বপন – তাই হোক।
(#০৫)
সবাই একসাথে বেরোয়। স্বপন ট্যাক্সি করে যেতে চাইছিল। কিন্তু সুলগ্না বৌদি ট্যাক্সি করে যেতে চান না।
সুলগ্না – দক্ষিণেশ্বর তো এইটুকু দুর তা আবার ট্যাক্সি করে যাবার কি দরকার !
স্বপন – আমি দুই বান্ধবী, প্রেয়সী আর সবার থেকে আপন বৌদিকে নিয়ে বেড়াতে যাব তাই আবার বাসে ? তা হয় না।
মানসী – না না বাসে করে গেলেই হবে
শ্রেয়সী – স্বপন যখন ট্যাক্সি করে নিয়ে যেতে চাইছে তখন বাসে করে যাবার কোন মানেই হয় না।
নিহারিকা – আমরা ট্যাক্সি করেই যাই
মানসী – শুধু শুধু পয়সা নষ্ট
স্বপন – আমার দুই বন্ধুর জন্য না হয় একটু পয়সা খরচ হল
সবাই ট্যাক্সি করেই যায়।
এখানে মানসীর দিদি শ্রেয়সীর একটু পরিচয় দেই। শ্রেয়সীও কালো মেয়ে। পড়াশুনা – শ্রেয়সী বলে সেটা আবার কি জিনিস। কোন মানুষ বেঁচে থাকতে পড়াশুনা কেন করবে! বাবার পয়সা আছে, বিয়ে দিয়ে দেবে। হেসে খেলে সিনেমা দেখে এখনকার জীবন কাটিয়ে দেব। বিয়ের পরে দেখা যাবে। ওর ফিগার অভাবনীয় – ৩০-৩০-৩৪। ভগবান ওইরকম একটা মেয়েই বানিয়েছিলেন। তার ওপর শ্রেয়সী ভীষণ স্বার্থপর ছিল। শুধু নিজেরটাই বুঝত। তার উপর শুচিবাই মেয়ে। একটা ভাল গুণ ছিল মানে সবাই সেই গুণকে ভাল বলে। খুব ঠাকুরে ভক্তি। সিনেমা দেখা, ঘুরে বেড়ানোর পরেই ওর প্রধান কাজ ছিল পুজা করা। আর বলত গান শেখে। যেই ওর গান শুনেছে সেই বলেছে ভালই গায় কিন্তু আরও একটু শিখতে হবে।
(#০৬)
যাই হোক সবাই মিলে দক্ষিণেশ্বরে যায়। গিয়ে পুজা দেয়। তার পর সবাই গঙ্গার ধারে গিয়ে বসে। এই ঘটনার সময় কাল হল ১৯৮৭ সাল। তখন দক্ষিণেশ্বর এখনকার থেকে অনেক আলাদা ছিল। বিকালে গঙ্গার ধারে এখনকার মত ভিড় হত না। স্বপন সবার জন্য আইসক্রিম কেনে।
শ্রেয়সী – তুমি আমাদের বেড়াতে নিয়ে এসে শুধু আইসক্রিম খাওয়াবে ?
স্বপন – আর কি খাবে বল ?
মানসী – না না আর কিছু খাওয়াতে হবে না। আমরা পুজো দিতে এসেছি, সেটা হয়ে গেছে। এবার বাড়ি চল।
সুলগ্না – কেন রাঙা দিদি স্বপনের সাথে বসে গল্প করতে ভাল লাগছে না ?
শ্রেয়সী – স্বপন তো শুধু নেহার হাত ধরে আছে
সুলগ্না – কারো হাত ধরার অধিকার অর্জন করতে হয়। শুধু শুধু কেউ তোমার হাত ধরবে না।
স্বপন – সত্যি তো আমি আমার বন্ধুদের ছেড়ে শুধু নিহারিকার হাত ধরে আছি।
স্বপন গিয়ে মানসীর হাত ধরতে চায় কিন্তু মানসী লজ্জায় হাত ছারিয়ে দূরে দুরেই থাকে। শ্রেয়সী এসে স্বপনের হাত ধরে। স্বপন এক হাতে নিহারিকার হাত ধরে থাকে আর এক হাত শ্রেয়সী ওর বুকের মধ্যে চেপে রাখে। কিন্তু শ্রেয়সীর পুরো সমতল বুকে হাত রাখলে কোন ছেলের মনেই কোন প্রতিক্রিয়া হয় না। স্বপনেরও হল না। যাই হোক কিছু সময় ওই ভাবে বসার পড়ে শ্রেয়সী আবার বলে খিদে পেয়েছে।
মানসী – তোর পেটে আছে টা কি ? শুধু খাই খাই !
সুলগ্না – শ্রেয়সী একটু বদলাও নিজেকে
শ্রেয়সী – স্বপনের সাথে আবার ফর্মালিটি করার কি আছে ? ও তো আমাদের বন্ধু বলেছে।
সুলগ্না – ও তোমাকে বন্ধু বলেছে কিন্তু তুমি কি ওকে বন্ধু বলে মেনে নিয়েছ ?
শ্রেয়সী – হ্যাঁ ও আমার বন্ধুই তো
মানসী – তোর ধান্দা শুধু কারো ঘাড় ভেঙ্গে আনন্দ করা
শ্রেয়সী – তাতে খারাপ কি দেখলি ? আমার জন্য তো তোরাও মজা করিস।
নিহারিকা – এই শোনো তুমি সবার জন্য এগরোল নিয়ে এস।
স্বপন – হ্যাঁ নিয়ে আসছি
শ্রেয়সী – চল আমিও যাই তোমার সাথে।
(#০৭)
শ্রেয়সী স্বপনের হাত ওর বুকের মধ্যে ধরে রোল কিনতে যায়।
স্বপন – এই ভাবে আমার হাত ধরেছ সব লোকে কি ভাববে ?
শ্রেয়সী – কেন কি হয়েছে ?
স্বপন – কিছু না
শ্রেয়সী – আমার বন্ধুর হাত আমি কি ভাবে ধরব, সেটা লোকের ভাবার ওপর নির্ভর করে না।
স্বপন – তাও শালীনতা বলে একটা জিনিস আছে
শ্রেয়সী – যাও আমি বুঝতে পাড়ছি। আমার বুক একদম সমান বলে তোমার ভাল লাগছে না। এই যদি আমার জায়গায় মানসী হত ওর বুকে তুমি নিজের ইচ্ছায় হাত রেখে দিতে
স্বপন – দেখো আমি এই ভাবে কথা বলতে বা শুনতে অভ্যস্ত নই। আমি কোন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব ওর গায়ের রঙ বা বুকের মাপ দেখে করি না। আমার কাছে তুমিও যা, মানসীও তাই।
শ্রেয়সী – সরি বাবা, ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু আমার তোমার হাত এইভাবে ধরতে ভাল লাগছে।
স্বপন – সে ঠিক আছে, কিন্তু তোমার নেহার এটা ভাল নাও লাগতে পারে
শ্রেয়সী – ছাড় তো, নেহা তো আর এখন দেখছে না।
স্বপন – ভীষণ দুষ্টু মেয়ে তুমি।
দুজনে মিলে রোল কেনে। শ্রেয়সী সবার জন্য ডবল ডিমের রোল বানাতে বলে। রোল কিনে ফেরার সময় আর শ্রেয়সী আর ওইভাবে হাত ধরে না।
সুলগ্না – কি ব্যাপার শ্রেয়সী তুমি স্বপনের হাত ধরে আসছ না !
শ্রেয়সী – স্বপনের পছন্দ নয় যে আমি ওর হাত ধরি
স্বপন – আমি কখন বললাম সেই কথা ?
শ্রেয়সী – সব কথা বলতে হয় না
মানসী – তুই নিশ্চয় স্বপনের হাত বুকের মধ্যে চেপে ধরে ছিলিস ?
শ্রেয়সী – তা না তো কিভাবে হাত ধরব ?
মানসী – আমি তো চিনি তোকে। আর এখন স্বপনকেও চিনি।
শ্রেয়সী – আমি একটু স্বপনের হাত আমার বুকে রেখেছি তো কি হয়েছে ?
সুলগ্না – তুমি কি কখনো বড় হবে না ? নেহাই বা কি ভাববে ?
নিহারিকা – শ্রেদিদি তুমি বাড়ীতে গিয়ে স্বপনের হাত, মুখ যা খুশী ধরে থেকো। কেউ কিচ্ছু বলবে না। এখানে সবার মধ্যে ওইভাবে হাত ধর না।
সুল্গনা – ওকে যা খুশী ধরতে বলছ ? তুমি জানো না নাকি ওকে ?
নিহারিকা – হ্যাঁ জানি। শ্রেদিদি আমার স্বপনের যা খুশী ধরতে পারে আমি কিচ্ছু বলব না। একদিন ধরলেই কি আর আমার থেকে পালিয়ে যাবে ?
শ্রেয়সী – আমি মোটেও কিছু উলটো পাল্টা জিনিসে হাত দেব না।
(#০৮)
সুলগ্না – আচ্ছা নেহা তোমার আর স্বপনের ভালবাসা কি ভাবে শুরু হল ?
নিহারিকা – একদিন ও আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো যে আমি ওকে বিয়ে করতে রাজী আছি কি না ?
সুলগ্না – তুমি কি বললে ?
নিহারিকা – আমি যদি তোমার ডাকে সাড়া নাই দেব তবে আর আজ ডাকলে কেন এসেছি !
সুলগ্না – এ আবার কি রকম
নিহারিকা – ওই রকমই
সুলগ্না – স্বপন তুমি নিহারিকা কে প্রপোজ কেন করলে ?
স্বপন – দেখো আমি নিহারিকাকে প্রথম দেখি যেদিন ওর দাদার সাথে ওদের বাড়ি যাই
সুলগ্না – তুমি ওর দাদাকে চেন ?
নিহারিকা – ও আর দাদা একসাথে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছে
সুলগ্না – কি করতে গিয়েছিলে ওদের বাড়ি ?
স্বপন – বাবা তুমি তো পুরো বিশদ জানতে চাও ?
সুলগ্না – তোমার সাথে আমার ননদের বিয়ে হবে আর তোমাকে জানবো না ?
স্বপন – আচ্ছা ঠিক আছে। আমি আর ওর দাদা ব্যাঙ্গালর যাচ্ছিলাম। আমার বাড়ি বেশ দূরে তাই অফিস থেকে ওদের বাড়ীতে খেয়ে ত্রেন ধরি।
সুলগ্না – তারপর ?
স্বপন – তারপর আর কি ! আমি গেলে নিহারিকা আমাকে খেতে দেয়। ও এত যত্ন করে খাওয়ায় যে আমার মনে হয় যে মেয়ে একটা অচেনা ছেলেকে এত যত্ন করতে পারে, সে নিজের ভালবাসার লোককে অনেক বেশিই খেয়াল রাখবে। তাই বলতে পারো আমি স্বার্থপরের মত নিজের সুবিধার জন্য ওকে ভালবেসেছি।
সুলগ্না – তোমরা বুঝলে স্বপন নেহাকে কেন ভালবাসে ?
মানসী – নেহা খুব ভাল মেয়ে। ও সবাইকে ভালবাসে।
স্বপন – এটাই এখন সমস্যা আমার কাছে
সুলগ্না – কেন ভাই ?
স্বপন – এরপরেও যদি আরও কাউকে যত্ন করে খাওয়ায় আর সেও ভালবেসে ফেলে ?
নিহারিকা – মোটেই না, আমি সবাইকে অতো খাতির করি না
সুলগ্না – তবে স্বপনকে এত যত্ন করেছিলি কেন ?
নিহারিকা – আমার ওকে দেখে ভাল লেগেছিল তাই।
মানসী – নেহা নিজে ভাল তাই ওর ভাল ছেলে খুঁজে পেটে অসুবিধা হয়নি।
শ্রেয়সী – আমি বাবা বুঝি না, শুধু খেতে দেবার মধ্যে এত যত্ন, ভালবাসা কোথা থেকে আসে ! প্লেটে করে সামনে খাবার দেবে, ব্যাস হয়ে গেল।
সুলগ্না – সেটাই যদি বুঝতে তবে তোমার দুনিয়া আলাদা হত।
শ্রেয়সী – দরকার নেই আমার বোঝার। আমি যেরকম তাতে যদি কোন ছেলের ভাল লাগে তো ঠিক আছে। আর না হলে বাবা যার সাথে বলবে আমি বিয়ে করে নেব।
মানসী – না রে দিদি জীবনে স্বপনের মত একটা ছেলের ভালবাসার খুব দরকার আছে। তুই কোনদিন বুঝলিই না ভালবাসা কাকে বলে।
শ্রেয়সী – যেন তুই খুব বুঝিস !
মানসী ঠিক বুঝেছিল ভালবাসা কি জিনিস। কিন্তু শ্রেয়সী সেটা জানত না বা ওর সেটা বোঝার ক্ষমতাও ছিল না। আরও কিছু সময় দক্ষিণেশ্বরে থেকে ওরা বাড়ি ফিরে আসে। স্বপনরা আর বেশী বসে না। ও নিহারিকাকে ওর বাড়ি পৌঁছে দিয়ে নিজের বাড়ি ফিরবে। ও যাবার সময় মানসীকে জড়িয়ে ধরে। মানসীও মনে মনে এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিল।
সুলগ্না – স্বপন খুব ভাল কাটল আজকের বিকাল টা।
স্বপন – আমারও খুব ভাল লেগেছে।
শ্রেয়সী – মানসীর সব থেকে ভাল লেগেছে।
নিহারিকা – আমার ও রাঙা দিদিকে খুব ভালবাসে।
শ্রেয়সী – মানসীও
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
Tumi_je_amar-এর লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereTumi_je_amar-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইনডেক্স-এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment