CH Ad (Clicksor)

Saturday, October 31, 2015

কাজল নদী_Written By Tumi_je_amar [চতুর্থ পরিচ্ছদ – রাঙা মাটির পথ (চ্যাপ্টার ০৭ - চ্যাপ্টার ১২)]

আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




কাজল নদী
Written By Tumi_je_amar





চতুর্থ পরিচ্ছদ – রাঙা মাটির পথ

(#০৭)

পরদিন সকালে উঠে মানসী স্বপনের মুখের দিকে তাকাতে পারছিল না। নিজেও চুপ করে বালিসে মুখ গুঁজে শুয়ে ছিল। যথারীতি স্বপন সকালের চা করে। নিহারিকা জলখাবার বানাতে থাকে। সবাই ঘুম থেকে উঠে যায় কিন্তু মানসী শুয়েই থাকে। স্বপন চা নিয়ে এসে ওকে ডাকে। 

স্বপন – কি হয়েছে আমার বন্ধুর ?

মানসী কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে। 

স্বপন – আমার ওপর রাগ করেছ ?

মানসী মাথা নাড়িয়ে না না বলে।

স্বপন ওর মাথা ধরে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়। মানসী স্বপনের বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে রাখে। বড়দা এসে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে। স্বপন বলে যে মানসীর কোন কারণে মন খারাপ হয়েছে। কিন্তু ওই ব্যাপারটা ওর কাছেই ছেড়ে দিতে।

বড়দা – তোমরা দুই বন্ধু বেশ আছো। আমি দেখি আর অবাক হয়ে যাই।

স্বপন – আপনি আপনার বোনকে বোঝেন না আর বোনকে নিয়ে চিন্তাও বেশী করেন না।

বড়দা – সত্যি বলছি, আমি আমার বোনকে বেশী সময় দিতে পারি না।

স্বপন – বড়দা এই নিয়ে আমি আপনার সাথে পরে কথা বলব। এখন দেখি আমার বন্ধুর কি হল।

বড়দা – হ্যাঁ হ্যাঁ দেখো।

এই বলে বড়দা চলে যান। 

মানসী – তুমি এইসব বললে কেন দাদাকে

স্বপন – কি বললাম ?

মানসী – ওই যে বললে দাদা আমাকে নিয়ে ভাবে না

স্বপন – বড়দা তোমাকে বিয়ে দিয়েছে ? দেন নি। উনি ভাল করেই জানেন যে তোমার বিয়ে উনি না দিলে হবে না। তো পুরো দায়িত্ব ওনার। 

মানসী – তাও এই ভাবে কেউ বলে দাদা কে ?

স্বপন – আমি বলি। সত্যি কথা বলতে আমার কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু সকাল বেলা তোমার কি হয়েছে ?

মানসী – কিচ্ছু হয় নি

স্বপন – শরীর খারাপ না মন খারাপ

মানসী – শরীর ঠিক আছে। আর মনে যা হয়েছে সেটা তোমাকে বলতে পারব না

স্বপন – এরকম কিছু হয় নাকি যেটা তুমি আমাকে বলতে পারবে না !

মানসী – আজ না না, কাল হয়েছে

স্বপন – তোমার কি পিরিয়ড হয়েছে ?

মানসী – না রে বাবা, সেটা হলে তোমার কাছে না বলার মতো নয়।

স্বপন – তবে ?

মানসী – না না আমি বলতে পারবো না।

স্বপন – আচ্ছা বলতে হবে না। এখন মুখ ধুয়ে চা খাও। 

একটু পরে স্বপন আর বড়দা বাজার যান। তখন স্বপন বড়দাকে জিজ্ঞাসা করেন মানসীকে বিয়ে দেবার কি হল। বড়দা অনেক কিছু বলেন, কিন্তু বলার পরে নিজেই বোঝেন যে উতর টা ঠিক যুক্তি যুক্ত হল না। স্বপন বলে যে মানসীর বিয়ে ও যেখানে ঠিক করবে সেখানেই দিতে হবে। বড়দা বলেন উনি চিন্তা করে দেখবেন।







(#০৮)

স্বপনের বাড়ীতে সৃজা স্বপনের মেয়েকে নিয়ে খেলা করছিলো। নিহারিকা আর মানসী কথা বলে।

নিহারিকা – রাঙ্গাদি তোর কি হয়েছে ?

মানসী – কিছু না

নিহারিকা – আমি মনে হয় বুঝতে পাড়ছি তোর কি হয়েছে

মানসী – কি বুঝেছিস ?

নিহারিকা – তুই কাল রাতে আমাদের সেক্স করা দেখেছিস, তাই না ?

মানসী উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে। 

নিহারিকা – আরে লজ্জা না পেয়ে বল না। আমি রাগ করিনি।

মানসী মাথা নেড়ে সায় দেয়।

নিহারিকা – দেখেছিস ভাল করেছিস, আজ রাতে আরও ভাল করে দেখিস, লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে হবে না।

মানসী – যাঃ তাই হয় নাকি

নিহারিকা – দেখার পরে তোর শরীর খারাপ লাগছে ?

মানসী – তখন মাথা ঘুরছিল

নিহারিকা – সে আমি বুঝি। আগে স্বপন তোকে জড়িয়ে ধরলেই তুই অজ্ঞান হয়ে যেতিস। আর কাল রাতে তুই ওকে পুরো উলঙ্গ দেখেছিস, শরীর খারাপ করবেই।

মানসী – তোর আমার ওপর রাগ হচ্ছে না ?

নিহারিকা – কেন রাগ হবে ! তুই আমার সবথেকে প্রিয় দিদি। তুইও স্বপন কে ভালবাসিস। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমি স্বপন কে তোর থেকে ছিনিয়ে নিয়েছি।

মানসী – না না বোন, স্বপন আগে তোর 

নিহারিকা – ওইসব আগে পরে দিয়ে কি আর প্রেম হয় ? আমার থেকে তুই স্বপন কে বেশী ভালবাসিস, সেটা আমি প্রথম দিন থেকে জানি।

মানসী – তোর হিংসা হয় না ? ভয় লাগে না ?

নিহারিকা – নিজের দিদিকে কেউ হিংসা করে নাকি। আর ভয় ? কিসের ভয় ?

মানসী – স্বপন যদি তোকে ছেড়ে দেয়

নিহারিকা – অসম্ভব। আমার স্বপন আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। তোর সাথে পঞ্চাশ বার সেক্স করলেও স্বপন আমারই থাকবে।

মানসী – আজে বাজে কথা বলবি না

নিহারিকা – রাঙ্গাদি একটা সত্যি কথা বল

মানসী – কি ?

নিহারিকা – তুই চাস স্বপন তোর সাথে সেক্স করুক। তাই না !

মানসী – যাঃ

নিহারিকা – আমাদের ফুলশয্যার আগে স্বপন তোকে যা বলেছিল, আমার মনে আছে।

মানসী – সেতো ইয়ার্কি করেছিল

নিহারিকা – কিন্তু সেই ইয়ার্কি শুনে তোর চোখে যে আনন্দ দেখেছিলাম আমি সেটাও ভুলিনি

মানসী – হ্যাঁ সত্যি বলতে আমারও ইচ্ছা করছিল

নিহারিকা – সেই ইচ্ছা আজও আছে

মানসী কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে।

নিহারিকা – দিদি শোন আমরা তোকে আর স্বপনকে বাড়ীতে রেখে যাব। তোর যা ইচ্ছা করিস ওর সাথে।

মানসী – এই না না এইসব করবি না

নিহারিকা – দেখ দিদি আমি খুব বুঝি যে বড়দার তোকে বিয়ে দেবার কোন ইচ্ছা নেই। আর এতদিন পর্যন্ত তুই জানতেই পারলি না সেক্স কি হয়। আর স্বপন যদি দু এক বার তোর সাথে সেক্স করে ওর যন্ত্রটা ক্ষয়ে যাবে না। তোর যা ইচ্ছা কর।

মানসী – তুই এতো ভাল ?

নিহারিকা – না রে আমি ওইসব ভাল টালো কিছু না। আমি আমার দিদির আনন্দের জন্য সহযোগিতা করছি।

মানসী – এই ভাবে সহযোগিতা কেউ করে নাকি ?

নিহারিকা – পাণ্ডব রা মায়ের কথা রাখতে একটা মেয়েকে সাড়া জীবন ভাগাভাগি করে নিয়েছিল। আর আমি তোর ভালবাসার জন্য আমার স্বপন কে তোর সাথে দুদিন ভাগ করব, সে আর এমন কি!

মানসী – তুই সত্যি বলছিস ?

নিহারিকা – হ্যাঁ কিন্তু শুধু এইবার এই পাটনাতেই। এর পরে কিন্তু আর চাইবি না আমার স্বপনকে।

মানসী – যদি চাই ?

নিহারিকা – দু একবার চাইলে কিছু হবে না। সবসময় চাইবি না।

মানসী – তুই আমাকে যত টুকু দিয়ে খুশী থাকবি, সে টুকুই নেবো। 

নিহারিকা – আমি কিন্তু স্বপন কে কিছু বলে যাব না। যা বলার তুই বলবি।

মানসী – না বাবা আমি কিছু বলতে পারবো না।

নিহারিকা – তুই বললে যা চাস তাই পাবি। না বললে পাবি না। তোর প্রবলেম !

স্বপন আর বড়দা বাজার থেকে ফিরে আসেন। বড়দা একটা বিশাল বড় ইলিশ মাছ কিনেছেন। সৃজা আর স্বপনের মেয়ে দুজনেই অতো বড় মাছ দেখে নাচতে থাকে।

বড়দা – স্বপন তুমি ভাপা ইলিশ করতে পারো ?

স্বপন – ইলিশ মাছ দেখলে আমার সর্ষে, পোস্ত আর নারকেলের দুধ দিয়ে ভাপা ইলিশ ছাড়া আর কিছু মনেই আসে না। আমার সব থেকে প্রিয় খাবার।

বড়দা – বেশ জম্পেশ করে বানাও দেখি আজকে। 

স্বপন – রাঙ্গাদি চল আমার সাথে মাছ কাটবে।







(#০৯)

স্বপন আর মানসী মাছ কাটে। বড়দা বলেন স্বপন এতো বড় মাছকে কি সুন্দর করে কাটল। মানসী বলে ভাল রাঁধুনি সব সময়েই নিজেই মাছ তরকারি নিজে কেটে নেয়। ভাপা ইলিশ রান্না করার পরে দুপুরে একটু বিশ্রাম নিয়ে সবাই বেড়াতে বেরোবে। সেদিন ওদের পাটনা চিড়িয়াখানা যাবার কথা। 

নিহারিকা বলে যে ওর রাঙা দিদির শরীর খারাপ করছে।

বড়দা – কি হল আবার ?

মানসী – কিছু না, একটু গা গুলোচ্ছে

বড়দা – তখনই বলেছিলাম ওত গুলো ইলিশ মাছ খাস না। স্বপন তোমার কাছে পুদিনহারা আছে ?

স্বপন – হ্যাঁ আছে

বড়দা – ওকে খাইয়ে দাও। আর আজকের বেড়ানো ক্যান্সেল।

সৃজা – না না তা হবে না। 

মানসী – তোমরা যাও, আমি এমনি শুয়ে থাকবো

বড়দা – তুই একা একা থাকবি ? সেটা ঠিক হবে না।

নিহারিকা – স্বপন থাকুক। আমি আপনাদের নিয়ে ঘুরে আসছি।

মানসী – না না তা হয় না।

নিহারিকা – ও অনেকবার চিড়িয়াখানা গিয়েছে। একবার না গেলে কিছু হবে না।

বড়দা – কত দুর চিড়িয়াখানা ?

স্বপন – পনের মিনিট লাগবে যেতে।

নিহারিকা – আমরা দু তিন ঘণ্টার মধ্যেই ফিরে আসবো

বড়দা – তবে তাড়াতাড়ি চল, আবার তাড়াতাড়িই ফিরতে হবে। কি যে করে এই মেয়েটা।







(#১০)

বড়দা যদি বুঝত মানসী কোথায় শরীর খারাপ হয়েছে ! যাই হোক ওরা বেড়াতে চলে যায়। মানসী শুয়ে থাকে। স্বপন এসে ওর মাথার কাছে বসে।

স্বপন – আমার বন্ধুর আজ সকাল থেকে কি হয়েছে ?

মানসী – কিছু হয়নি স্বপন। তুমি যদি রাগ না করো একটা কথা বলব ?

স্বপন – তোমার কথায় আমি রাগ করবো ? কখনোই তা হতে পারে না।

মানসী – আমাকে ১৫ মিনিট একা থাকতে দেবে ? প্লীজ !

স্বপন – সে আবার এমন কি। তুমি বিশ্রাম করো, আমি রাগ করবো না।

স্বপন বাইরের ঘরে গিয়ে বসে। আর ক্যাসেটে রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা শুনতে থাকে।

মানসী শুয়ে শুয়ে ভাবে। নেহা ওকে সুযোগ করে দিয়ে গেছে ওর স্বপনকে পুরোপুরি কাছে নেওয়ার জন্য। একবার ভাবে ছুটে যায় স্বপনের কাছে আর নিজেকে সমর্পণ করে দেয় ওর কাছে। তারপর ভাবে নেহা বললেও সেটা করলে ও ওর বোনকে মুখ দেখাতে পারবে না। আর স্বপনের সামনেই বা পরদিন সকালে দাঁড়াবে কি ভাবে। ও নিজের ক্ষনিক সুখের জন্য নিজের কাছে অনেক অনেক ছোটো হয়ে যাবে। স্বপন ওর সারা জীবনের বন্ধু সেই বন্ধুত্বকে এই ভাবে নষ্ট করতে পারবে না ও। তারপর ভাবে একবার, শুধু একবার সব কিছু করলে কিই বা এমন হবে। পৃথিবীতে নেহা ছাড়া কেউ জানতেই পারবে না। পরমুহূর্তেই ভাবে আর কেউ নাই বা জানল। ওর সব থেকে কাছের দুজন মানুষই জানবে। ও এই সংসারে স্বপনের ভাবনাকেই সব থেকে গুরুত্ব দেয়। সেই স্বপনের কাছে ছোটো হয়ে যাবে। একটা জঙ্গলের জন্তুর সাথে ওর কোন তফাৎ থাকবে না। 

একবার আবার ভাবে এই সুযোগ আর পাবে না। ভগবানও হয়তো এই চায়। আবার ভাবে ভগবান চাইলেই যে ওকে মেনে নিতে হবে তার কোন মানে নেই। আর সব থেকে বড় হল ও আয়নায় নিজের মুখ কি ভাবে দেখবে। ও এতদিন একটা মুল্য বোধ নিয়ে বেঁচে আছে। সেই মূল্যবোধ ও কোন কারনেই নষ্ট করতে পারবে না। ও সারা জীবন স্বপনের বন্ধু হয়েই থাকবে। 

এইসব ভাবতে ভাবতে মানসী কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতেও পারেনি। প্রায় এক ঘণ্টা পরে স্বপন দেখতে আসে মানসী কি করছে। ও ঘুমিয়ে গেছে দেখে স্বপন ওর মাথার কাছে বসে। আস্তে করে মানসীর হাত নিজের হাতের মধ্যে নেয়। মানসী তাকিয়ে স্বপনকে দেখে।

মানসী – কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি

স্বপন – তোমার শরীর ঠিক আছে ?

মানসী – আমার শরীর খারাপই হয়নি

স্বপন – তবে নিহারিকা যে বলল

মানসী – ওর মাথায় অনেক কিছু আইডিয়া ঘোরে

স্বপন – মানে ?

মানসী – ছাড় ওইসব। আসলে তোমাকে আমার সাথে গল্প করার জন্য রেখে গেছে। বড়দার সামনে তো তোমার সাথে মন খুলে কথা বলতে পারি না তাই।

স্বপন – বল কি কথা বলবে আমার সাথে ?

মানসী – তুমি ভীষণ অসভ্য। কোন কথা বলব না যাও

স্বপন – এই বললে আমার সাথে কথা বলবে বলে থেকে গেলে। আবার এই বলছ আমার সাথে কথা বলবে না। সত্যি মেয়েদের বোঝা বড়ই শক্ত।

মানসী – আমি ভীষণ খারাপ মেয়ে স্বপন

স্বপন – তুমি কিসে খারাপ হলে

মানসী – কাল তোমাকে আর নেহাকে রাত্রে দেখেছি

স্বপন – আমি জানি

মানসী – তুমি জানো ? কি লজ্জা কি লজ্জা !

স্বপন – তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখলে কেন ? ইচ্ছা হলে আমাকে বলতে তোমার সামনে সব কিছু দেখাতাম। তুমি আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু তোমার কাছে কিছুই লুকাব না।

মানসী – নিজের বোন কে কেউ দেখে না।

স্বপন – তুমি তো আমাকে দেখছিলে।

মানসী – আমি বলেছি যে আমি খুব খারাপ মেয়ে

স্বপন – তুমি মোটেও খারাপ মেয়ে নও







(#১১)

মানসী স্বপনের বুকে মুখ লুকায়। স্বপন মানসীকে আদর করতে থাকে। অনেকদিন পরে মানসী আবার স্বপনের কোলে অসার হয়ে পরে। স্বপন ওর সারা গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়। একটু সামলিয়ে নিয়ে মানসী বলে ওকে আরও আদর করতে।

স্বপন – রাঙা দি তুমি কি চাও

মানসী – আমি এমনিই খারাপ মেয়ে, এর থেকে বেশী খারাপ হতে পারবো না।

স্বপন – তুমি কি চাও আমি তোমায় পুরোপুরি ভালবাসি

মানসী – আমার শরীর তাই চায়।

স্বপন – আর তোমার মন ?

মানসী – আমার মন চায় তোমার বন্ধু থাকতে। সারা জীবন তোমার বন্ধু থাকবো।

স্বপন – আর তোমার শরীরের চাহিদা

মানসী – গুলি মারো শরীরের চাহিদাকে। শরীরের চাহিদা ক্ষনস্থায়ী, আর মন সারা জীবনের জন্য। 

স্বপন – তুমি চাইলেও আমি তোমার সাথে কিছু করবো না।

মানসী আবার স্বপনের বুকে মাথা গোঁজে। স্বপন ওর পিঠে হাত রেখে বসে থাকে। অনেকক্ষণ দুজনেই ওই ভাবে চুপ চাপ বসে থাকে।

মানসী – আচ্ছা স্বপন আমি যদি তোমাকে চুমু খাই তবে সেটা কি খুব বেশী অন্যায় হবে ?

স্বপন – তুমি কি চুমু খেতে চাও ?

মানসী – না চাইলে জিজ্ঞাসা করবো কেন ?

স্বপন – কোথায় চুমু খাবে ?

মানসী – মারব কিন্তু এবার। ঠোঁটে চুমু খাব তাছাড়া আর কি !

স্বপন – চুমু খাওয়া যায়। আমারও মনে হয় চুমু খাওয়া খুব একটা বেশী সেক্স রিলেটেড নয়। ভালবাসলেই চুমু খাওয়া যায়।

মানসী – তবে স্বপন চুমু খেতে গিয়ে কিন্তু আমার বুকে হাত দেবে না।

স্বপন – সে দেব না। কিন্তু তোমার বুক তো আমার হাতে বা বুকে কত সময়েই লাগে !

মানসী – ভালবাসায় লেগে যাওয়া আর কামনা নিয়ে হাত দেওয়া দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।

স্বপন – তোমার বুক দুটো কিন্তু বড় সুন্দর

মানসী – একদম বাজে কথা বলবে না। আমার বুকের দিকে ওইভাবে তাকাবে না বলে দিচ্ছি।

স্বপন – তাকালে কি করবে ?

মানসী – নেহা কে বলে দেব।

স্বপন – নেহা তো আরও কিছু করতে বলে গেছে। এইটুকু তে আর কি বলবে!

মানসী – যাও তুমি ভীষণ দুষ্টু ছেলে।







(#১২)

স্বপন মানসীকে কাছে টেনে নেয়। পরম ভালবাসায় দুজনে দুজনে চুমু খায়। তারপর দুজনেই দুজনার মাথায় হাত রেখে প্রতিজ্ঞা করে মন যাই চাক না কেন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন ওরা দুজনে কখনোই চুমু খাবার থেকে বেশী কিছু করবে না। 

মানসী – স্বপন একটা কথা বল

স্বপন – কি ?

মানসী – তোমরা দরজা খোলা রেখে সেক্স করছিলে কেন ?

স্বপন – সবাই কোন অপরাধ বা অনৈতিক কাজ করলে দরজা বন্ধ কোরে করে। আমার আর নিহারিকার সেক্স করা অপরাধও নয় বা অনৈতিকও নয়। তবে দরজা বন্ধ কেন করব !

মানসী – বাড়ীতে আমরা আছি। সেটা তো ভাবা উচিত।

স্বপন – আমরা তো সবার সামনে কিছু করছিলাম না। দরজায় পর্দা লাগানো ছিল।

মানসী – আমি না হয়ে যদি বড়দা হত ?

স্বপন – বড়দা কখনোই আমার ঘরে উঁকি দিয়ে দেখবে না। 

তারপরে দুই বন্ধু আরও অনেকক্ষণ গল্প করে। মানসী বলে যে ও বুঝতে পারে ওর বড়দা আসলে ওর বিয়ে দিতে চায় না। মানসী না থাকলে সৃজাকে কে দেখবে সেটা একটা কারন। আর বড়দা একদমই পয়সা খরচ করতে চান না। স্বপন জিজ্ঞাসা করে যে ও নিজে নিজে কেন কাউকে পছন্দ করে বিয়ে করে না।

মানসী – আমার সে সাহস নেই স্বপন।

স্বপন – আমি একদিন ঠিক তোমার বিয়ে দেব। বড়দা যাই বলুক না কেন, শুনবো না।

এরপর স্বপন মানসীকে আবার শুয়ে পড়তে বলে কারন বড়দাদের ফেরার সময় হয়ে গেছে। মানসী চুপচাপ শুয়ে থাকে আর সেদিনের কথা ভাবে। স্বপন আবার বাইরে বসে শেষের কবিতা শুনতে থাকে।

কিছুক্ষন পরেই বড়দারা ফিরে আসেন।

বড়দা – মানসী তোমার শরীর ঠিক আছে ?

মানসী – হ্যাঁ ঠিক আছে

বড়দা – আজ রাত্রে শুধু মুড়ি জল খাবে, আর কিছু খাবে না।

স্বপন – না না বড়দা আমি পাতলা করে চিকেন স্ট্যু বানিয়ে দেব। কিচ্ছু হবে না।

বড়দা – তুমি পারও বটে !

সৃজা – রাঙ্গাপি রাঙ্গাপি কত বড় বাঘ দেখলাম জানো

মানসী – কত বড় ?

সৃজা – এত্ত বড়, না না এর থেকেও বড়, আর একদম সামনে দাঁড়িয়ে

মানসী – তোমাকে কামড়ে দিল না ?

সৃজা – নেট লাগানো ছিল

মানসী – আর কি দেখলে ?

সৃজা – অনেক বড় বাগান, অনেক গাছ, অনেক পাখি আরও অনেক কিছু দেখেছি।

সেদিন রাত্রে নিহারিকা মানসীকে জিজ্ঞাসা করে ওরা কি করলো ? 

মানসী – আমরা শুধু চুমু খেয়েছি আর গল্প করেছি।

নিহারিকা – আমি জানতাম তোরা এর বেশী কিছু করবি না।

মানসী – কি করে জানলি ?

নিহারিকা – আমি জানবো না আমার স্বপন কে আর রাঙ্গাদি কে !!

তার পর দিন ওরা সবাই মিলে পাটনা প্ল্যানেটোরিয়াম যায়। বড়দা যেতে চাইছিলেন না। বলছিলেন যে উনি কোলকাতায় বিড়লা প্ল্যানেটরিয়াম অনেকবার গিয়েছেন।

স্বপন – বড়দা এই প্ল্যানেটিরিয়াম ভারতের সব থেকে আধুনিক। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা শুধু যন্ত্র পাতির দাম। এইরকম প্ল্যানেটিরিয়াম লন্ডনের মাদাম তুসো মিউজিয়ামের পাশে আছে।

বড়দা – চল তবে দেখে আসি।

(এটা ১৯৯৩ সালের কথা। সেই সময় পাটনা প্ল্যানেটিরিয়াম ভারতের সবথেকে আধুনিক প্ল্যানেটিরিয়াম ছিল আর সত্যিই এটা লন্ডনের প্ল্যানেটিরিয়ামের মতই বানানো। এখন ভারতে আরও অনেক জায়গায় আছে)।

সবাই মিলে প্ল্যানেটিরিয়াম দেখে। বড়দা বলেন যে ওটা সত্যিই অনেক অন্য রকম। সেদিন রাতে ওরা সবাই কোলকাতায় ফিরে যায়।




চতুর্থ পরিচ্ছদ সমাপ্ত





কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য। 





Tumi_je_amar-এর লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

Tumi_je_amar-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click here

মূল ইনডেক্স-এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ


হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

No comments:

Post a Comment