আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
জামাই আদর
Written By Lekhak (লেখক)
Written By Lekhak (লেখক)
।।দশ।।
চান করে নতুন পাজামা পাঞ্জাবী পড়ে সুনীল ঘরে এসে আবার বসেছে। মনীষাও সুনীলকে সঙ্গ দেবার জন্য আবার ঘরে এসে ঢুকলো। সুনীলের মনের ভেতরে তখনও উদ্ভট চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। শ্বাশুড়ী মায়ের কি মতলব বোঝা যাচ্ছে না। মনীষা না থাকলে এই বাড়ীতে ওর মায়ের সাথে একা একা থাকতে হবে। বিষমটা না খেলে সিনেমায় যাওয়াটা দিব্যি হত। সব গন্ডোগোল পাকিয়ে দিয়েছে ঐ বিষম খাওয়াটা। কি উদ্দেশ্য নিয়ে যে সুনীলকে আটকে দিলেন সেটাই পরিষ্কার হচ্ছে না। নিশ্চই কোন প্ল্যান রয়েছে এর মধ্যে। এমন মেয়ে জামাইতে মজে রয়েছেন এখানে আসার পর থেকে, যেন মেয়ের জায়গাটা উনিই নিয়ে নেবেন। কপালে যে কি খাঁড়া ঝুলছে কে জানে?মনীষা ঘরে ঢুকে বলল, "তুমি না ভীষন আনরোমান্টিক হয়ে পড়েছ এই কদিনে।"
সুনীল বলল, "মানে?"
- "মানে আবার কি? মা দেখছ না এখনও কত রোমান্টিক। আর তুমি কিনা জামাই হয়ে....."
-- "কি বলছ তুমি মনীষা? তোমার মায়ের কাছে আমি রোমান্টিক হব?"
সুনীল যেন হোচট খাচ্ছিল বারবার। একরাশ বিরক্ত মুখ নিয়েই বলল, "আর যাই হোক, ছেলের কাছে মা যেমনি, শ্বাশুড়িও তেমনি। শ্বাশুড়ি মা সমান। তার সাথে ইয়ার্কী ফাজলামী আমি মারতে পারি? উনি মারছেন আমি মেনে নিচ্ছি। কিন্তু তাই বলে আমি তো আর চ্যাংড়ামো মারতে পারি না।"
মনীষা বুঝল, সুনীল বেশ সিরিয়াস হয়ে গেছে। ওর গালে হাত রেখে আদর করে বলল, "আচ্ছা আচ্ছা, আমি মা'কে বলে দেবে। তোমার সাথে মা আর বেশি ইয়ার্কী মারবে না। এবার তো একটু হাসো?"
সুনীল হাসলো। মনীষা বলল, "তোমার মুখের এই হাসিটুকু দেখতে না পারলে আমার ভাল লাগে না। তখন থেকে গম্ভীর হয়ে রয়েছ। দেখ এখন কেমন ভাল লাগছে।"
মনীষার মা ঢুকলেন ঘরে। সুনীল ইশারা করল মনীষাকে। ও যেন মা'কে কিছু না বলে। সুনীল ব্যাপারটাকে মানিয়ে নেবে। মনীষাও চোখ টিপে ঘাড় নাড়ল। মনীষার মা বললেন, "জানো সুনীল, মনীষার যেমন শুধু মেয়েবন্ধু। আমার কোন মেয়ে বন্ধু ছিলই না কলেজ লাইফে। একগাদা ছেলে বন্ধুর সাথে মিশতাম আমি। তাদের সাথে হৈ হল্লা করতাম। সবকটাই ছিল দামাল ছেলে। আর তোমার শ্বশুড় মশাই ছিলেন নিরীহ, শান্ত প্রকৃতির। বিয়ের আগে আমাকে দেখার জন্য যেদিন এল, সেদিন দেখি কথাই বলতে পারছে না লজ্জায়, এত লাজুক প্রকৃতির লোক আমি জীবনে দেখিনি। তখন মেয়েরা ছিল ঠিক মনীষার বাপীর মতন। ঠিক যেমন এখন ছেলেদের ক্ষেত্রে হয়েছে।"
সুনীল বলল, "এখন মেয়েরা খুব মর্ডান হয়ে গেছে। আগের মতন আর নেই।"
- "আমি কিন্তু বরাবরই একই রকম ছিলাম। আগেও মর্ডান ছিলাম, এখনও আছি।"
সুনীল বলল, "তাও তো আপনি ঘর সংসার করেছেন। এখন কার মেয়েরা তো তাও করতে চায় না। সব সময় উরু উরু মন। বরং এদিক দিয়ে মনীষা কিছুটা ব্যাতিক্রম। একেবারে আপনার স্বভাব পেয়েছে।"
কথাটা বলে মনীষার দিকে তাকিয়ে একবার হাসি দিল সুনীল। মনীষাও হাসল।
একটু ফোড়ন কেটে মনীষার মা বললেন, "আমার আবার বোকাহাবা ছেলে ঠিক পছন্দ হয় না জানো তো? ছেলে হবে, হ্যান্ডসাম, চালাক চতুর। পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকে মানিয়ে নেবে। সুযোগ এলে সুযোগের সদব্যাবহার করবে। সব দিক দিয়ে পারদর্শী হবে, তবে সে হবে সত্যিকারের পুরুষ। আমি খুব লাকি যে তোমার মধ্যে আমি সবকটা গুনই পেয়েছি।"
মনীষাও বুঝতে পারছে না। সুনীলও বুঝতে পারছে না মায়ের কথার কি মানে? সেই থেকে হেঁয়ালি করেই চলেছেন ভদ্রমহিলা। ইয়ার্কীর যেন শেষ নেই। মনে মনে সুনীল বলল, "মা তুমি কি সত্যিই এরকম? না অন্য কোন ইচ্ছা এখনও রয়ে গেছে মনের মধ্যে।"
হঠাৎই ঘোরটা কাটিয়ে দিয়ে মনীষার মা বলে উঠলেন, "এই মনি এবার তুইও চানটা করে আয়। আমার রান্না শেষ হতে কিন্তু আর বেশি দেরি নেই।"
মনীষা যাই বলে চলে গেল বাথরুমে চান করতে। সুনীলকে মনিষার মা বললেন, "সুনীল আজ কিন্তু আমার হাতের রান্না সব খেতে হবে তোমাকে। আমি তোমার জন্য খুব যত্ন করে বানাচ্ছি। দুপুরে খেয়ে দেয়ে উঠে, তারপর আমরা আমাদের কাজটা সারব।"
-- "কি কাজ মা?"
সুনীল ভুরু কুঁচকে তাকাল মনীষার মায়ের দিকে।
মনীষার মা হেসে বললেন, "ওফ তোমাকেও সবকিছু বোঝাতে হয় হ্যান্ডসাম? তুমি না চালাক ছেলে? মায়ের ইশারাতেই তো জামাইকে বুঝে নিতে হয়। আর কি বলব তোমাকে?"
বলেই হাসতে হাসতে আবার রান্নাঘরে চলে গেলেন।
সুনীল বসে বসে ভাবতে লাগল। একদিকে ও ভয়ে সিটিয়ে যাচ্ছে, আর ওদিকে শ্বাশুড়ী মা হাসিতে একেবারে গড়িয়ে পড়ছে। এ যে কি লীলা খেলা শুরু হয়েছে কে জানে? দুতিনবার ওপর ওয়ালাকে স্মরণ করে ও চুপচাপ বসে রইল বিছানাতে।
মনীষাও যথারীতি চান করে এল। টুনটুনি আর বুলবুল আসার আগেই মনীষার মায়ের সব পদ রান্না হয়ে গেল। জামাইকে আদর যত্নে খাওয়াবার জন্য নিজেই সুনীলের পাশে বসলেন। মনীষা বসল উল্টোদিকের চেয়ারটাতে।
অনেক পদ রান্না করেছেন মনীষার মা। সুনীল প্রতিটি রান্না তৃপ্তি করে খেল। কারন মনীষার মায়ের রান্নার হাত খুব ভাল। শ্বাশুড়ি মা এমন ভাবে পাশে বসে রয়েছেন, যে কোন পদ বাদ গেলেই উনি পীড়াপীড়ি, জোড়াজুড়ি শুরু করে দেবেন। শাশুড়িকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য সুনীলকে পুরো পেট পুরে সব রান্নাই খেতে হল।
খাওয়াদাওয়ার একটু পরে টুনটুনি আর বুলবুল এসে হাজির। ওরা বলল, "ও জামাইবাবু, আপনি কেন যাবেন না? চলুন না, চলুন না। আমাদের সাথে আপনিও চলুন।"
এই সব বলে সুনীলকে অনেকবার রাজী করানোর চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পারলো না ঐ দুটো মেয়ে। মনীষার মা শেষ কথা বলেই দিলেন। - "তোমাদের জামাইবাবু এখন যাবে না। ও আমার সঙ্গে থাকবে। মেয়েকে নিয়ে তোমরা যাও। জামাইকে নিয়ে আমি....."
মনীষা সেজেগুজে তৈরী হয়ে বেরিয়ে গেল ওদের সাথে। যাওয়ার আগে সুনীলের গালে একটা চুমু খেয়ে ওকে বললো, "তুমি এখন একটু রেষ্ট নাও। মা একটু পরেই তোমার কাছে আসবে।"
ইভিনিং শো আরম্ভ হতে এখন অনেক দেরী আছে। কিন্তু মনীষা অনেক আগেই বেরিয়ে গেল। কারন সিনেমা যাবার আগে ওকে একবার টুনটুনি আর বুলবুলের বাড়ীতে যেতে হবে। এতদিন বাদে বিয়ের পর এসেছে। তাই বাড়ীর লোকেদের সাথেও একটু দেখা করা দরকার।
কিছুটা দুশ্চিন্তা, কিছুটা কৌতূহল। সব মিলিয়ে মিশিয়েই একটা ছাপ পড়েছে তখন সুনীলের মুখে। শ্বাশুড়ি এবার ওকে কেমন আপ্যায়ন করে সেটাই দেখার বিষয়। হঠাৎ যেন একটা দুর্লভ বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন মহিলা অনেক দিন বাদে। নইলে সুনীলকে দেখার পর থেকেই উনি অমন ছটফট করছেন কেন? জামাইকে পেয়ে মজে গেছেন সেটা বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু প্রবৃত্তিটা অন্যরকম হলে মুশকিল। আজকাল চারিদিকে যা সব হচ্ছে। নিজেদের জীবনেও তার প্রতিফলন দেখা যায় মাঝে মাঝে। ভদ্রমহিলা যতই পরমা সুন্দরী হোক না কেন? এখন তো উনার ছুকরী সাজার বয়স নেই। যৌবনের জেল্লা যদিও বা শরীরে ভালমতই অবশিষ্ট আছে, তাই বলে জামাইকে এখন যদি উনি রুই কাতলা বানিয়ে জালে আটকানোর চেষ্টা করেন, তাহলেই তো মুশকিল। সুনীলের তখন পালানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। এত বড় ফাঁকা বাড়ীতে উনি যে সুনীলকে নিয়ে এখন কি করবেন সেটাই তো সুনীলের বোধগম্য হচ্ছে না।
।।এগারো।।
সুনীল খাওয়ার পর একটু আরাম করতে লাগল বিছানায় শুয়ে শুয়ে। চোখে তখন একটু ঘুম ঘুম ভাব এসেছে। মনীষার মা তখনও ঘরে ঢোকেননি। হঠাৎ ওর খেয়াল হল, মায়ের গলার আওয়াজ পাচ্ছে পাশের ঘর থেকে। উনি যেন সুনীলকে ডাকছেন অন্য ঘর থেকে, সুনীলের এটাই মনে হল।পাশের ঘর থেকে মনীষার মা সুনীলকে ডাকছেন। - "বাবা সুনীল, একটু আমার ঘরে আসবে? এই যে পাশের ঘরে।"
ফাঁকা বাড়ীতে মনীষার মা এখন জামাইকে নিয়ে কি কেলোর কীর্তি করবেন সেটাই প্রশ্ন। সুনীলের মনে হল মা বোধহয় কোন ফন্দী এঁটেচেন মনে মনে। ও জেদ ধরে পাশের ঘরে গেল না। যে ঘরটায় শুয়ে আরাম করছিল, সেখানেই শুয়ে রইল। একটু পরে সুনীলের সাড়া না পেয়ে মনীষার মা নিজেই ঐ ঘরটায় এসে ঢুকলেন।
শ্বাশুড়ীকে দেখে একেবারে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল সুনীলের। দেহের পোশাক-আশাক খুলে মা একটা নাইটি চাপিয়েছেন গায়ে। নাইটিটা আবার বুকের ওপর থেকে বেশ কিছুটা ঝুলে পড়েছে নিচের দিকে। বুকের খাঁজ নজরে চলে আসছে সুনীলের। ওদিকে না তাকিয়ে সুনীল এবার চোখটা অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করতে লাগল। ঘুমের ভাণ করে পড়ে থাকার চেষ্টা করতে লাগল, যাতে শাশুড়ীর কোন পরিকল্পনা থাকলে সেটা ভেস্তে দিতে পারে।
মহিলা জামাই এর কাছে কোনরকম লাজলজ্জার বালাই না রেখে বিছানার সামনে এসে সুনীলের পাশেই বসে পড়লেন। সুনীলকে বললেন, "এই সুনীল, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ? চলো না আমার ঘরে?"
সুনীল আসলে যে ঘরটায় শুয়ে আরাম করছিল, ওটা মনীষার ঘর। মা চাইছিলেন সুনীলকে নিজের ঘরে নিয়ে যেতে।
একবার বলার পর সুনীল যখন সাড়া দিল না। মনীষার মা নিজের একটা হাত সুনীলের বুকের ওপর রাখলেন। খুব গম্ভীর গলায় বললেন, "সুনীল তোমার সঙ্গে আমার কিন্তু খুব দরকারী কথা আছে।"
-- "কি এমন দরকারী কথা?"
সুনীল চোখ দুটো খুলল এবার। মনীষার মা বললেন, "আমাকে তুমি যা ভাবছ, আমি কিন্তু তা নই।"
সুনীল ধড়মড় করে উঠে বসল। মনীষার মা'কে বলল, "কি দরকারি কথা মা? বলো আমাকে।"
-- "তুমি একটা আস্ত গবেট। শ্বাশুড়ী তোমার সাথে কি করতে চাইছে তুমি বুঝতে পারছ না?"
সুনীল একটু ভাঙা গলায় নিরীহ গোবেচারা যুবকের মতন বলল, "কি করতে চাইছ মা?"
মনীষার মা বললেন, "আমি কি বুড়ী হয়ে গেছি সুনীল?"
-- "বুড়ী? না তো মা। তুমি তো এখনও সুন্দরই রয়েছ।"
- "তবে কেন এখনও তোমার দেহমনে আমি আগুন ধরাতে পারছি না সুনীল? আমার শরীরটাকে তুমি একবার ভাল করে দেখই না?"
বলেই নাইটি শুদ্ধু শরীরটাকে নিয়ে এবার সুনীলের দিকে আরও ঝুকে পড়লেন মনীষার মা। বিছানায় বসে অক্টোপাসের মতন দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন জামাই খোকাকে।
সুনীল বলল, "একি করছ মা তুমি? আমাকে ছাড়ো। ছাড়ো আমাকে।"
- "তুমি তো লক্ষ্মী ছেলে সুনীল। মা তোমাকে আদর করছে, একটু আদরটা করতে দাও। আমি নয় তোমার পাঞ্জাবীটা গা থেকে খুলে তোমাকে একটু আরাম দিই। তুমি বরং বিছানায় শুয়ে থাকো।"
সুনীল দেখল পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। মনীষার মা ওকে দুহাত দিয়ে বিছানায় চিৎপাৎ করে শুইয়ে দিয়ে পাঞ্জাবীর বোতাম গুলো খুলে, ওটাকে ওপরের দিকে টেনে তোলবার চেষ্টা করছে। পাঞ্জাবীটা গা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে দিয়ে এবার সুনীলের পাজামার দড়িতে হাত লাগিয়ে ফেলেছে মনীষার মা।
-- "মা তুমি একি করছ?"
বেশ একটু রেগেমেগেই শাশুড়ীকে এক ঝটকায় দূরে সরিয়ে দিল সুনীল। নিজেও কিছুটা বিছানার একপাশে সরে এসেছে। মায়ের কীর্তিকলাপ দেখে ও নিজেও হতভম্ব হয়ে গেছে। এক কোনে গিয়ে ও রীতিমতন হাঁফাতে লাগল। যেন আর একটু হলেই সুনীলকে গিলে ফেলত মনীষার মা।
শাশুড়ীর দিকে তাকিয়ে সুনীল দেখল মনিষার মা দিব্যি হাসছেন। হাসিটা আসতে আসতে ছোট থেকে বড় হতে লাগল। ক্রমশই অট্টহাসিতে পরিণত হল। সুনীল বুঝতে পারল না ব্যাপারটা কি হচ্ছে? মা হাসছেন? এসব করেও মজা পাচ্ছেন ভদ্রমহিলা?
- "ওফ সুনীল। সত্যি তুমি এত ভয় পেয়ে যাবে আমি ভাবতে পারিনি। আরে বাবা পুরুষ হয়ে এত ভয় পেলে চলে? আমি তো তোমার পৌরুষের কথাই শুনে এসেছি মনীষার মুখ থেকে। আমার মেয়ের যৌবন ধন্য করে দিয়েছ। যার কল্যাণে আমার মেয়ের যৌবন সার্থক হল তাকে একবার নেড়েচেড়ে দেখতে ইচ্ছে করছিল, আর তুমি কিনা ভয় পেয়ে গেলে। হি হি।"
সুনীলের মনে হল, ওর শ্বাশুড়ি মা ইচ্ছে করলে যা খুশি তাই করতে পারে। ইয়ার্কি ফাজলামীটা মারতে মারতে এমন একটা জায়গায় এসে দাড়িয়েছে, যে মহিলার চরিত্র সন্মন্ধে যে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করবে। জামাই এর সাথে এমনটা করা যায় না কি? ছি ছি।
ও খুব সিরিয়াস হয়েই বলল, "মা তুমি ব্যাপারটাকে লাইটলি নিতে পারো। কিন্তু আমার এসব পছন্দ নয়। তুমি ব্যাপারটাকে বড্ড ফ্রেন্ডলী করে ফেলছ, আমি কিন্তু অতটা ফ্রেন্ডলী হতে পারব না তোমার সাথে। মনীষা নেহাতই বলেছিল, তাই আমি আর কিছু মনে করলাম না। কিন্তু তুমি এভাবে বারে বারে আমাকে পরখ কোরো না। তাহলে কিন্তু আমি ভীষন ঝামেলায় পড়ে যাব। কালই চলে যাব শিলিগুড়ি থেকে।"
সুনীল কথাটা বলা মাত্রই মনীষার মা আঁতকে উঠলেন। আবার কাছে এসে সুনীলের মুখে নিজের হাতটা চাপা দিলেন। বললেন, "না না সুনীল অমন কথা বোলো না। আমি তাহলে মরে যাব। মনীষার কাছে মুখ দেখাতে পারব না আমি। মা'কে মেয়ে যেটুকু শ্রদ্ধা করে, সেটুকুও করবে না কাল থেকে। আমি কোথায় যাব? কাকে মুখ দেখাব? মরা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না আমার। আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি সুনীল। আর হবে না এখন থেকে।"
সুনীল দেখল মনীষার মায়ের চোখে জল। মুখটা নিচু করে ফেলেছেন। টসটস করে জল গড়াচ্ছে চোখ দিয়ে। সেই জল সুনীলের পাজামার ওপরও দুফোটা পড়েছে। মা এত দূঃখ পেয়েছে, যে মায়ের কান্নাও থামাতে পারছে না কোন মতে। এত করেও মহিলার ভেতরে কি যে আছে বুঝতে পারছে না সুনীল। কখনও দূঃখ, কখনও মজা, কখনও হাসি, এ যেন বিচিত্র এক খেলা চলছে শ্বশুড়বাড়ীতে আসার পর থেকে। মায়ের মনের মধ্যে এমন কি ইচ্ছা লুকিয়ে রয়েছে, যেটা বারে বারেই নাজেহাল করে দিচ্ছে ওকে?
সুনীল শ্বাশুড়ির চোখ দুটো দুহাত দিয়ে মুছতে মুছতে বলল, "মা কেঁদো না। আরে আমি সত্যি তোমার ইয়ার্কীটা বুঝতে পারিনি। এরকম তো সাধারণত কেউ করে না। তাই। আর আমি তোমাকে কড়া ভাবে বলে কষ্ট দিলাম? আমি মাফ চাইছি তোমার কাছে।"
মনীষার মা কান্নাটা থামিয়ে মুখ ভার করেই রইলেন। সুনীলকে বললেন, "সুনীল আমি পাশের ঘরে চলে যাচ্ছি। একটু ঘুমোচ্ছি। তুমিও ঘুমোও। সন্ধে হলে আমি চা করে দেব। তারপর মনিরাও চলে আসবে।"
বলে বিছানা থেকে নেমে চলে গেলেন ঘর ছেড়ে। সুনীল একা বিছানায় পড়ে রইল। ওর মনে হল কি থেকে কি যেন হয়ে গেল।
।।বারো।।
একা একা শুয়ে শুয়ে সুনীলের যেন ভাল লাগছিল কিছুই। মনীষার মায়ের মধ্যে কোথাও যেন একটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে এখনও সুনীল বুঝে উঠতে পারছে না। যে মহিলাটি এত সহজ সরল, তার মনের মধ্যেও কি এমন কামনা বাসনা লুকিয়ে থাকতে পারে? হাজার হোক অমন সুন্দর যার স্বামী রয়েছে, তার এমন আচরণ? চিন্তাই করা যায় না। সুনীল মনীষার মুখেই শুনেছে, মনীষার বাবা দেবতূল্য মানুষ। উনি মনিষার মায়ের জন্য অনেক স্বার্থই ত্যাগ করেছেন। তবে কেন মনীষার মা মনীষার বাবাকে ঠকাচ্ছেন? ওনাদের বিবাহিত জীবন কি সুখের নয়? এই টানাপোড়েনের মধ্যেও তো মনীষারও জন্ম হয়েছে এ ঘরে। তাহলে? হঠাৎ শ্বাশুড়ি মায়ের জামাই এর প্রতি আসক্তি? কি কারনে?কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে সুনীলের মনে হল, না এবার একটু শাশুড়ীর ঘরে যাওয়াটা দরকার। আসল ব্যাপারটা কি বুঝে উঠতে হবে। জিজ্ঞেস করবে মনীষার মা'কে, "মা তোমার কি হয়েছে বলো? আমাকে যদি নিজের মনে করো, তাহলে ফ্রেন্ডলী বলো। যেমন ভাবে তুমি ফ্রেন্ডলী মেশার চেষ্টা করেছ আমার সাথে।"
পাশের ঘরের দরজাটা ভেতর থেকে ভেজানো ছিল। সুনীল আলতো করে ঠেলা মারতেই খুলে গেল। দেখল মনীষার মা দাঁড়িয়ে রয়েছেন দেওয়ালের দিকে মুখ করে। সামনে একটা শোকেস্। ছোট্ট কাঁচের আলমাড়ীটার ওপর দাঁড় করানো একটা ফটো ফ্রেম। ফ্রেমে বাঁধানো দুটি ছবি। একটা মনীষার মায়ের আর একটা বাবার। দুটোই বিয়ের সময় তোলা ছবি। ফটো ফ্রেমটার দিকে তাকিয়ে আপন মনে কি যেন বলে যাচ্ছেন। সুনীল ঢুকেছে ঘরে, ওনার খেয়াল নেই।
সুনীলের মনে হল, নিজের স্বামীর ফটোর দিকে তাকিয়ে ওনার মধ্যে কোন অভিমান ফুটে উঠছে, আপন মনে বিড়বিড় করে যাচ্ছেন, আর সেই সাথে নিজের স্বামীর কাছে জবাব দিহি চাইছেন। কিছু কথা সুনীলের কানে এল। মনীষার বাবার কাছে যেন উনি কৈফিয়েত দাবী করলেন এই বলে, "আর কত কষ্ট দেবে আমায়? যা করেছ, মনির কাছে তুমি লুকোতে পারবে? পারবে মেয়েকে সত্যি কথাটা বলতে? এইদিন দেখব বলেই কি আমি তোমাকে বিয়ে করেছিলাম? একটা ভাল মানুষের মুখোস পড়ে কাটিয়েছ সারা জীবন। বিয়ের বাইশটা বছর আমার কেটে গেছে দেখতে দেখতে। স্বার্থপরের মতন আমার চোখকে ধূলো দিয়ে আমাকে অন্ধকারেই রেখে দিলে সারাটা জীবন। কি ক্ষতি করেছিলাম আমি তোমার? যে কুকর্মটা করতে তোমার একটুও বাধল না। ভাবলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে তুমি পার পেয়ে গেলে? শেষ অস্ত্র মনীষা, সেটাও যখন আমার হাত ছাড়া হয়ে গেল, তখন তোমার অকর্মের রাস্তাটা আরও খুলে গেল। বাহ্ বাহ্ আমার চরিত্রহীন স্বামী আমার। কি বাহাদুরীর কাজটাই না করেছ বুড়ো বয়সে। তোমাকে এখন পায় কে?"
সুনীল পুরো স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছিল মনীষার মায়ের কথা শুনে। কি এমন করেছে মনীষার বাবা? যার জন্য এত অভিমান ফুটে উঠেছে তার গলায়? মনে হচ্ছে একটা চরম বিপর্যয় ঘনিয়ে এসেছে মায়ের জীবনে। মাকে এত কষ্ট পেতে দেখবে, সুনীলও আশা করেনি। পেছনে দাঁড়িয়ে মনীষার মায়ের কথা শুনে ওর গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে যাচ্ছিল। বুঝতে পারছিল সাংঘাতিক একটা কিছু ঘটে গেছে মনীষার মায়ের জীবনে।
শ্বাশুড়ীকে এবার পেছন থেকে ডাকল সুনীল। - "আমি সুনীল মা। কি হয়েছে তোমার?"
মনীষার মা পেছনে ঘুরলেন। সুনীলকে দেখেই ছুটে এসে ওর বুকে মাথা রাখলেন। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগলেন। সুনীল শ্বাশুড়ির পিঠে হাত রেখে ওনাকে তখন স্বান্তনা দিচ্ছে। মনীষার মাকে আশ্বাস দিয়ে সুনীল বলল, "কি হয়েছে? আমাকে তুমি বলো মা। তোমার কোন ভয় নেই।"
সুনীলকে আসল সত্যিটা এবার বললেন মনীষার মা। - "তোমার বাপী আবার আর একটা বিয়ে করেছে।"
-- "অ্যাঁ?"
- "হ্যাঁ। আবার বিয়ে করেছে মনীষার বাপী। ভেবেছিল আমি কিছু টের পাব না। কিন্তু ওর সব নাটক ধরে ফেলেছি আমি। একটা কুলাঙ্গার লোক। জঘন্য কাজটা করতে একটুও লজ্জা করল না। সারাজীবন এই শরীটা নিয়ে শুধু যার কাছ থেকে অবহেলাই পেলাম, কোনদিন নিজের ভালবাসা, চাহিদার কথা জানাতে পারলাম না, শুধু তার মুখের দিকে তাকিয়ে আমি সহ্য করে গেলাম। একবার মুখ ফুটে বলতেও পারলাম না, বিয়ে করে বউকে যে ভালবাসাটা দিতে হয়, সেটাও কি আমি আশা করতে পারি না তোমার কাছ থেকে? কেন আমাকে চিরকাল এই সুখ থেকে তুমি বঞ্চিত করে রাখলে? কেন? কেন? আমি তো তোমাকে ছেড়ে অন্য কাউকেও বিয়ে করতে পারতাম? পাত্রের তো আমার অভাব ছিল না। শুধু তার মুখের দিকে তাকিয়ে আমি এই কষ্টটাকে মেনে নিয়েছি। কেন? সে কাজ পাগল লোক বলে। ব্যাবসা আর কাজ নিয়েই পড়ে থাকতে সে ভালবাসে। মনীষাটাকেও পাঠিয়ে দিল কলকাতায়। আর আমি এখানে আরও একা পড়ে গেলাম। তাও মেনে নিয়েছিলাম, কিন্তু আর সহ্য করতে পারলাম না, যখন শুনলাম সে নাকি আবার কোন মহিলার সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হয়েছে। আমি কান্না চেপে রাখতে পারিনি সুনীল। বারবার মনীষাকে ফোন করেছি। কিন্তু একবারও ওর বাপীর গুণকীর্তনের কথা বলিনি। মনে সংশয় ছিল, আমার মত মনীষার জীবনেও যেন এমন দশা না হয়। ওকেও যেন চোখের জলে ভাসতে না হয় আমার মত। বারবার মনীষার কাছে একটা কথাই জানতে চেয়েছি, হ্যাঁরে তোদের বিবাহিত জীবন সুখের তো? তোর স্বামী তোকে আদর করে? তোদের দেহ ভালবাসা হয়? কাজের শেষে সুনীল নতুন করে উদ্যম ফিরে পায়? তোর শরীরটাকে চায়? তোকে আকাঙ্খা করে? ও যখন প্রতিটা কথায় হ্যাঁ বলতো, আমি যেন না দেখা কোন স্বপ্নের জন্য কাতর হয়ে যেতাম। বসে বসে একলা মনে এটাই ভাবতাম, সত্যি মনীষার বাপীর বদলে আমার যদি সুনীলের মত কোন স্বামী হত? আমাকে আদর করত। ভালবাসত। আমার না পাওয়া ইচ্ছাটাকে পূরণ করত। তাহলে বোধহয় সব দূঃখ আর বেদনা গুলো চলে যেত নিমেষের মধ্যে। মরে বেঁচে থাকার চেয়ে আমি যেন সত্যিকারের বাঁচতে পারতাম।"
একটু দম নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আবার বলতে লাগলেন মনীষার মা, "সুনীল আমি লজ্জ্বিত তোমার কাছে। যার জন্য কুড়ে কুড়ে মরেছি এতদিন, সেই ভালবাসার মোহে আমি কেমন যেন হয়ে গিয়েছিলাম তোমাকে দেখে। নিজের অবুঝ আর ছেলেমানুষ মনকে আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। স্বামী আমার দুচোখের বিষ। কিন্তু জামাইকে দেখে আমার মনটা আবার সেই বিশ বছর আগে ফিরে গিয়েছিল। আমি তোমার শাশুড়ি, কিন্তু আমার কোন হোশ নেই। কামনার তাগিদে আমি কি করছি, আমি নিজেই জানি না। হঠাৎ তোমাকে জড়িয়ে ধরে আমি আদর করতে যাচ্ছিলাম, তারপর হঠাৎ খেয়াল হল, এমা। এ আমি কি করছি? ওতো আমার জামাই? জামাইয়ের সাথে এমন আচরণ চলে? আমার মেয়ে জানলে কি ভাববে? কিছুক্ষণের জন্য আমার বোধশক্তি লজ্জা সব লোপ পেয়ে গিয়েছিল সুনীল। আমার এই দূর্দশার জন্যই এমন নিষিদ্ধ আচরণ করে ফেলেছিলাম তোমার সাথে। আমাকে ক্ষমা করো সুনীল....."
মনীষার মায়ের দূর্দশা দেখে কিছু বলতে পারছে না সুনীল। শুধু একটা কথাই জিঞ্জাসা করল, মা তুমি নিশ্চিত? যে বাপী দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন?
- "আমি নিশ্চিত সুনীল। নিশ্চিত। ঐ হতচ্ছাড়া মাগীটার সাথে দেখা করার জন্যই তো যাচ্ছে তোমার বাপী। রাজস্থানে, কন্ট্র্যাক্ট ওসব কিছুই নয়। আমার সতীনের সাথে ভালবাসার খেলা খেলতে যাচ্ছে তোমার শ্বশুড়। এক সপ্তাহ ওখানে থেকে ফুর্তী করে তবে ফিরবে। বুঝতে পারছ না?"
-- "আপনি যে জেনে গেছেন? সেটা বাপী ধরতে পেরেছে?"
- "না। আর জানলেও বা কি? আমার কাছে তো ও ক্ষমা পাবে না কিছুতেই। আমি জীবনে ওকে ক্ষমা করব না।"
শ্বাশুড়ী বিরহে কাতর। সুনীল বেশ গম্ভীর মুখেই বলল, এ ব্যাপারটা তো তাহলে মনীষাকে জানানো দরকার?
মনীষার মা যেন এবার সুনীলের পায়ে পড়লেন। - "না না সুনীল, একদম না। মনি ওর বাপীকে প্রচন্ড ভালবাসে। ভালবাসে আমাকেও। ভীষন আঘাত পাবে। নিজের জীবনটাকেও আত্মাহুতি দিয়ে দিতে পারে কষ্টে। তখন তোমার কি হবে? আমার জন্য মনীষাকে আমি কোন কষ্ট পেতে দেব না। যা হয়েছে আমার জীবনে হয়েছে। এর জন্য মনি কেন নিজের জীবনটাকে নষ্ট দেবে? তোমাদের এখন নতুন জীবন সুনীল। সুখ ভালবাসার মধ্যে দিয়ে তোমাদের এখন অনেকটা পথ যেতে হবে। মনিকে সব বলে দিয়ে ওর জীবনেও সেই বিস্বাদটা তুমি এনে দিও না।"
সুনীল কোন সমাধান খুঁজে পাচ্ছে না হঠাৎই ঘটে যাওয়া এই কঠিন সমস্যার। মা'কে শুধু বলল, "মা তাহলে তুমি এখন কি করবে? চলো আমার সাথে কলকাতায়।"
দূঃখের হাসি হাসতে লাগলেন মনীষার মা। বললেন - "না না, কলকাতায় আমি যাব না সুনীল। আমি এখানেই থাকব। তোমার বাপীর মত আর একটা বিয়ে তো আমি করতে পারব না সুনীল। হতাশা আর কষ্টেই বাকী জীবনটা আমি কাটিয়ে দেব এখানে থেকে। আমার আর ভালবাসার দাম কে দিল? শরীরি ভালবাসা না হলে বিবাহিত জীবনের তো কোন দাম নেই সুনীল। এ জীবনে কিছুই তো পেলাম না। সুন্দরী মুখটা ভগবান দিল। কিন্তু এই মুখ আমার পোড়ামুখই রয়ে গেল। স্বামী আমাকে চরম ঠকান ঠকিয়ে দিল।"
শাশুড়ীকে আবার বুকে জড়িয়ে ধরে সুনীল আপ্রাণ চেষ্টা করছিল সান্তনা দেবার। না পাওয়া ভালবাসা, আদর সোহাগে বঞ্চিতা এক নারীকে ও কিভাবে ভুলিয়ে রাখবে, বুঝে উঠতে পারছিল না। জামাই হয়ে শ্বশুড়ের জায়গায় শাশুড়িকে আদর করা যায় না। শাস্ত্রে এর বিধিনিষেধ আছে। তবুও ওর মনে হচ্ছিল আজ যদি এই বিধিনিষেধকেও তোয়াক্কা করে ও মহিলাটির দূঃখ ভুলিয়ে দিতে পারত, তাহলে না জানি কত ভাল হত। অন্তত সাময়িক দূঃখ কষ্টটাকে ভুলে যেতে পারতেন মনীষার মা। স্বামী যে আদর ভালবাসাটা সারাজীবন দেননি ওনাকে, সেটাই কোন কাছের মানুষের কাছ থেকে ফিরে পেয়ে উনি আবার নতুন করে বাঁচার স্বাদ পেতেন। একটু আগে ছেলেমানুষের মতন আচরণ করে সুনীলকে চমকে দিয়েছিলেন মনীষার মা। জামাই এর কাছে ঘৃণার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু এখন সেই আসল সত্যিটাকে জানতে পেরে সুনীলেরও অন্যরকম হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। সম্পর্কের বেড়াজালটাকে ছিঁড়ে ফেলে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে ওনার সারাজীবনের না পাওয়া আশা আকাঙ্খা গুলোকে। যেন কোন স্ত্রীর প্রত্যাশা পূরণ। নারী হয়ে সে যা তার স্বামীর কাছ থেকে আশা করে। সুনীল সেই প্রত্যাশাই পূরণ করতে চাইছে জামাই আদরের মাধ্যমে।
হঠাৎই মনীষার মায়ের মাথায় একটা চুমু খেয়ে সুনীল বলেই ফেললো, "মা আজ যা তোমার সাথে করতে চলেছি, তা শুধু তোমার এই দূঃখ ভরা মুখটার দিকে চেয়েই। আমি জানি তুমি জীবনে অনেক কিছুই পাওনি। যা পাওনি তা নিয়ে দূঃখ করে লাভ নেই মা। আমি জানি না আমি কারুর ক্ষতি করছি কিনা? কিন্তু কারুর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমার এর থেকে ভাল আর কিছু করার নেই। তোমার চনমনে এই সুন্দর মুখটা আবার দেখতে না পারলে আমার কিছুই ভাল লাগছে না মা। আমি তোমার মুখে আবার হাসি ফোটাতে চাই। শুধু আজ যা হবে, তুমি মনীষাকে বোলো না। আমিও না।"
সুনীলের কথা শুনে ওর বুকের ওপর থেকে মুখ তুলে সুনীলকে দেখছেন মনীষার মা। মুখে কথা নেই। শুধু একরাশ বিস্ময়। জামাইয়ের উদারতায় উনিও আড়ষ্ট হয়ে গেছেন। ভাবতে পারছেন না এরপরে সুনীল কি করে বসবে?
একটা ইচ্ছের সাথে অন্য ইচ্ছাটাও এবার মিলে মিশে একাকার। প্রথমে কিছুটা ইতস্তত, তারপরে হঠাৎই ঠোঁটের ওপরে সুনীলের ধেয়ে আসা চুম্বনটাকে উনি বাধা দিতে পারলেন না। সুনীল মনীষার মায়ের ঠোঁটদুটোর ওপর পুরো ছড়িয়ে দিল নিজের ঠোঁটদুটোকে। আবেগে আবদ্ধ হয়ে মনীষার মায়ের ঠোঁট চুষতে শুরু করে দিল দিগ্বিদিগজ্ঞান শূন্য হয়ে।
মা শুধু বললেন, "সুনীল এটা কোরো না। কেউ আমাকে তাহলে ক্ষমা করবে না।"
সুনীল শুনলো না। বলল, "মা, ভুলে যাও কে তোমার স্বামী, আর কে তোমার মেয়ে। মনে কর এই মূহূর্তে কেউ তোমার না পাওয়া সুখটাকে ফিরিয়ে দিতে চায় শুভাকাঙ্খির মতন। তুমি শুধু এটাকে সাদরে গ্রহণ কর। ব্যাস আমি আর কিছু চাই না তোমার কাছ থেকে।"
সুনীলের কঠিন চুম্বন মনীষার মা কে নাজেহাল করে দিয়েছে, তবও যেন অনেকদিনের অনভ্যস্ত প্রক্রিয়ার সাথে উনিও এবার ধাতস্থ হতে লাগলেন আসতে আসতে। সুনীলের ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে উনিও ভুলে যেতে লাগলেন, ওনার মেয়ে আছে স্বামী আছে। কিন্তু এই মূহূর্তে জামাই ছাড়া আর কেউ নেই। তাকে অবলম্বন করেই উনি নিজের সব দূঃখ কষ্টটাকে লাঘব করতে চান।
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
লেখক(Lekhak)-এর লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereলেখক(Lekhak)-এর লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইন্ডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment