আমরা টেক্সট ফরম্যাটে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত, যারা ফন্ট সমস্যার কারনে পড়তে পারবেন না তাদের কাছে আগেই জানিয়ে রাখছি। আরও দুঃখিত গল্পগুলো চটি হেভেনের স্পেশাল ফরম্যাটে না দিতে পারার জন্য। খুব শিগগিরই গল্পগুলো এডিট করে চটি হেভেন ফরম্যাটে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো। এই অসঙ্গতির জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
মহানগরের আলেয়া
Written By pinuram
Written By pinuram
ষোল
সাপের কোঠর (#০১)
দুপুর নাগাদ একবার কঙ্কনার হোটেলে গিয়ে ওর সাথে দেখা করে ওকে আবার সব কথা মনে করিয়ে দেয়। ওর হাতে এক সপ্তাহ সময়, এর মধ্যে কাজ না হলে আগে নাসরিনকে খুন করবে, তারপরে কঙ্কনাকে খুন করবে। কঙ্কনা জানে, যে পথেই পা দেবে, সেই পথে মৃত্যু অবশ্যাম্ভাবি। সিমোন রমলা সবার নজর বাঁচিয়ে এই শহরে এসেছিল ওই ক্লাবের যৌন সমাবেশে যোগদান করবে বলে। স্বপ্নেও ভাবেনি যে এইখানে এসে দানার সাথে দেখা হয়ে যাবে, আর ওদের অদৃষ্টে এই অঘটন ঘটে যাবে। কঙ্কনা ওকে জানায়, নাসরিনের সাথে কথা না বলতে পেরে ওর স্বামী আমজাদ বেশ চিন্তিত। দানা শাসিয়ে দেয়, সত্যি কথা জানালে ওর কপালে মৃত্যু আছে। কঙ্কনা জানায় বিকেলেই সিমোনকে ফোন করে দেখা করার কথা জানাবে।
প্রতিদিন বিকেলে একবার করে কঙ্কনার সাথে দেখা করে জেনে নেয় সিমোনের সাথে কথাবার্তা কতদুর এগিয়েছে। কঙ্কনা জানায়, সিমোন অতীব চটুল ধূর্ত মহিলা, ওকে অত সহজে বাগে ফেলা সম্ভব নয়। তবে নয়নার সম্বন্ধে সিমোন বেশ উৎসুক। কঙ্কনা জানায়, সিমোন নাকি একবার নয়নাকে ফোন করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু নয়না ওর ফোন উঠায়নি, তারপর থেকে সিমোন খুব ক্ষেপে যায় নয়নার ওপরে। ওদের সুহৃদ বন্ধু বিমান চন্দের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নয়নার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে প্রস্তুত। সেইসাথে যখন জানতে পারে যে দানা এর সাথে জড়িত, তখন পুরানো কথা ভুলে গিয়ে কঙ্কনার সাথে হাত মেলায় সিমোন। কঙ্কনা জানায়, ইতিমধ্যে সিমোনের কানে ওর পরিকল্পনার খবর তুলে দিয়েছে। এই খবর পেয়ে দানা মনে মনে খুব খুশি। এক সময়ে এই নয়না বিমানের সাথে এবং সিমোন মোহনের সাথে চক্রান্ত করে ওর মেয়েকে অপহরন করার ষড়যন্ত্র তৈরি করেছিল। এইবারে সবাই সবার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে। সবাইকে আরো একবার এক জায়গায় করতে পারলে জতুগৃহ দাহ করা যাবে।
দিন চারেক পরে কঙ্কনা জানায় যে সিমোন নাকি নাসরিনের সাথেও দেখা করতে চেয়েছে। সিমোন জানে একা কঙ্কনা ওর সুহৃদ বান্ধবী নাসরিন ছাড়া কোথাও বের হয় না। এই কয়দিনে এক কঙ্কনাকে দেখে ওর মনে সন্দেহ হয়, হয়ত এ দুই জনে ওর বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র করছে তাই ওদের একসাথে দেখা করতে চায়। দানা কিছুক্ষণ ভেবে বলে এক রাতের জন্য নাসরিনকে ওর হোটেলে ছেড়ে যাবে, সেই সময়ে যেন সিমোনকে হোটেলে ডেকে দেখা করিয়ে দেয়।
কথা মতন নাসরিনকে পঞ্চম রাতে হোটেলে ছেড়ে দেয় দানা। তবে সারা রাত হোটেলের বাইরে গাড়ির মধ্যে বসে পাহারা দেয়। সিমোনে নিশ্চয় ওদের সাথে দেখা করতে আসবে।
একঘণ্টা কেটে যায়, বারেবারে মহুয়া ফোন করে খবরা খবর জানতে চায়। দানা জানায়, কোন সন্দেহজনক লোকের সন্ধান তখন পর্যন্ত পায়নি। রাত বেড়ে ওঠে, কিন্তু সিমোনের গাড়ি অথবা মোহনের গাড়ির দেখা পাওয়া যায় না। চরম উৎকণ্ঠায় সারা রাত কেটে যায়, কিন্তু সিমোন ওদের সাথে দেখা করতে আসেনা। দানার মনে তখন সন্দেহ জাগে, কঙ্কনা আর নাসরিন কি তাহলে ওকে ভুলিয়ে আবার পলায়ন করেছে। সেই চিন্তা মাথায় ঢুকতেই দানার গায়ের রক্ত ফুটতে শুরু করে দেয়। হাতের কাছে পেয়েও ওদের ওপরে নিজের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া হল না। চেয়েছিল এক আর ফল হল আরেক।
সকাল হয়ে যায়, একবার ভাবে হোটেলের কামরায় গিয়ে ওদের সাথে দেখা করবে। সত্যি কি ওরা পালিয়েছে? সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে মনাকে সঙ্গে নিয়ে লবিতে ঢোকে দানা। রিসেপশনিস্টকে ওদের কামরার নাম্বার দিয়ে বলে ওদের সাথে দেখা করতে এসেছে। রিসেপশনিস্ট ফোন করে কঙ্কনার কামরায়, কিন্তু ফোন বারেবারে বেজে যায়। রিসেপশনিস্ট জানায়, গতরাতে অথবা সকাল পর্যন্ত ওদের দুইজনের কেউই হোটেল ছেড়ে যায়নি। বেশ কয়েকবার ফোন করার পরেও যখন কেউ ফোন উঠাল না তখন রিসেপশনিস্টের সাথে দানার মনে সন্দেহ জাগে। কি হলো কঙ্কনা আর নাসরিনের? একরাতের মধ্যে এই সদর দরজা দিয়ে কি করে উধাও হতে পারে দুই মহিলা। নামকরা পাঁচতারা হোটেল, এদের নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে চেক আউট না করেই বেড়িয়ে যাওয়া কোন প্রকারে সম্ভব নয়।
হোটেলের ম্যানেজার চলে আসে ততক্ষণে। রমলার পত্রিকার নাম নিয়ে জানায় ওই পত্রিকার তরফ থেকে ওদের সাথে দেখা করতে এসেছে কিন্তু অনেকবার ফোন করার পরেও কারুর সারা শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত হাউস্কিপিং স্টাফ কে সাথে নিয়ে ম্যানেজার আর দানা ওদের কামরায় যায়।
হোটেলের ম্যানেজার প্রথমে কলিং বেল বাজায়, ওইপাশ থেকে কোন সারা শব্দের আওয়াজ না পেয়ে দানা আর বাকিরা সবাই এক ওপরের মুখ চাওয়াচায়ি করে। হাউস্কিপিং স্টাফের লোক দরজার হাতলে হাত রাখতেই দরজা খুলে যায়। সেই দেখে সবাই স্থম্ভিত হয়ে যায়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই ওদের নজরে পড়ে বিছানার ওপরে কঙ্কনার রক্তাক্ত দেহ। গলায় একটা ছুরির দাগ, শ্বাসনালী কেটে দেওয়া হয়েছে। পাশের সোফার ওপরে নাসরিনের মৃতদেহ, ওর শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলা হয়েছে। দানার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, বুঝতে দেরি হয় না এর পেছনে সিমোনের হাত। দুইজনকে একসাথে খুন করবে বলেই নাসরিনকে ডেকে পাঠিয়েছিল। এইকাজ ভাড়াটে গুন্ডার দ্বারা করানো হয়েছে।
সঙ্গে সঙ্গে ম্যানেজার পুলিসে খবর দেয়। আধা ঘন্টার মধ্যেই হোটেল পুলিসে পুলিসে ছয়লাপ হয়ে যায়। নামকরা পাঁচ তারা হোটেল, এই খবর কোন রকমে একবার যদি প্রকাশ হয়ে যায় তাহলে হোটেলের নাম খারাপ হয়ে যাবে। ম্যানেজারের মাথায় হাত, এইদিকে পুলিস ততক্ষণে প্রাথমিক তদন্ত সেরে ফেলে। ওদের সঙ্গের কাগজপত্র ঘেঁটে ওদের পরিচয় উদ্ধার করে। দানা এর মাঝে ওইখান থেকে চুপিচুপি সরে যায়। একবার যদি পুলিসের সন্দেহ ওর ওপরে পড়ে তাহলে মুশকিল। ওর কাছে কোন প্রমান নেই যে এর পেছনে সিমোন খৈতানের হাত, কিন্তু ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উল্টে পুলিসের সন্দেহ ওর ওপরে বেশি করে পড়বে।
বাইরে বেরিয়ে এসেই মহুয়াকে ফোন করে জানাতেই মহুয়া চমকে ওঠে। আর ওইখানে দাঁড়ায় না, সোজা বাড়ি ফিরে যায় দানা। বাড়িতে ফিরে দানা বিস্তারে মহুয়ায়কে সব ঘটনা জানায়। এই সময়ে ওইখানে থাকলে পুলিসের নজরে পড়ে যেত তাই গোলমালের মধ্যে কোনোরকমে গা ঢাকা দিয়ে ওইখান থেকে চলে এসেছে। তবে ওর দৃঢ় বিশ্বাস এর পেছনে সিমোনের হাত। রমলার কাজ এটা হতেই পারে না, কারন রমলা জানেনা যে নাসরিন আর কঙ্কনা এই শহরে এসেছে।
এমন সময়ে দানার ফোন বেজে ওঠে। ফোন তুলেই দানা স্তম্ভিত হয়ে যায়, সিমোন কি মনে করে ফোন করেছে?
মহুয়ার ফিসফিস করে ওকে বলে, "ফোন তুলে দেখো কি বলতে চায়। এইরাতেই কঙ্কনা আর নাসরিনের খুন, আর তারপরেই তোমাকে ফোন। ওদের মতিগতি সুবিধের বলে মনে হচ্ছে না জিত। দেখবে ঠিক তোমাকে দেখা করার জন্য ডাকবে। সাবধান জিত আমার কিন্তু মন বড় ছটফট করছে।"
সেটা অবশ্য দানারও করছে। এরপরে সিমোনে কি পদক্ষেপ নেবে সেটা জানাই গেল না। হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি শান্ত করে ফোন তুলে সিমোনকে জিজ্ঞেস করে, "কেমন আছেন মিসেস খৈতান?"
সিমোন মৃদু হেসে বলে, "আমি আর কেমন থাকতে পারি মিস্টার মন্ডল। ভালো মন্দ মিলে এক রকম আছি।"
হঠাৎ ফোন করার কারন জিজ্ঞেস করে দানা, "হঠাৎ কি মনে করে ফোন করা হল, মিসেস খৈতান?"
সিমোন হেসে উত্তর দেয়, "অত আদিখ্যেতা করে ফোনে বারেবারে মিসেস খৈতান বলে ডাকতে হবে না দানা। আমি আজকে বাগান বাড়িতে। এখন একাই আছি, এই একটু বিশ্রাম আর....."
ওই কথা শুনে ক্ষণিকের জন্য দানার চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। বুঝতে দেরি লাগে না অতীব ধূর্ত হিংস্র নারী ওকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টায় আছে। মহুয়া কি করে এতসব বুঝতে পারে আগে থেকে? ওর নাক কি কুকুর? দানাও দেখতে চায় কতদুর এরা নাচতে পারে। বাগান বাড়িতে একা মানেই সিমোন আবার নতুন কোন ছেলেকে পেয়েছে নিজের কাম পিপাসা চরিতার্থ করার জন্য। এহেন কামুক নারীরা কখনই এক পুরুষে সন্তুষ্ট হতে পারে না, রোজ রাতে নতুন দামাল ষাঁড় চাই বিছানায়।
দানা হেসে সিমোনকে বলে, "আচ্ছা তাই নাকি? নতুন কাকে পেলে?"
সিমোন মিচকি হেসে উত্তর দেয়, "একা মানে সম্পূর্ণ একা দানা। (কণ্ঠে মধু ঢেলে) কিছু না এমনি, খুব একা লাগছিল তাই ফোন করেছিলাম।"
মহুয়া কটমট করে দানার দিকে তাকায়, এই মহিলা কত রঙ্গ না জানে। মহুয়া রাগে ওই দিকে ফুঁসতে শুরু করে দেয়। পারলে ফোনের মধ্যে ঢুকে সিমোনকে গলা টিপে হত্যা করে।
দানা ওকে আরো খেলিয়ে জিজ্ঞেস করে, "কেন সিমোন, যাওয়ার আগে কঙ্কনা নতুন কারুর ফোন নাম্বার দিয়ে যায়নি তোমাকে। কি ব্যাপারে ফোন করেছো বললে না তো?"
অতীব ছলনাময়ী সিমোন হেসে বলে, "কি যে বলো না তুমি। কঙ্কনা শহর ছেড়ে গেছে সে প্রায় এক বছর হয়ে গেল। (সঙ্গে সঙ্গে সিমোন উৎসুক হয়ে ওঠে) তুমি কি করে জানলে যে কঙ্কনা এই শহরে নেই?"
দানাও বাঁকা হেসে জবাব দেয়, "আমি কেন জানতে পারি না সিমোন? ফোন করেছিলাম, ফোন পাইনি, বাড়িতে গেছিলাম সেখানেও পাইনি।"
সিমোনের গলা কিঞ্চিত কেঁপে ওঠে, "ওর বাড়ি গিয়েছিলে মানে? তুমি ওর বাড়ি চেন?"
কিছুতেই বুঝতে দিতে চায় না যে আসলে কঙ্কনার সাথে ওর কোনোদিন দেখা হয়েছিল।
না, কঙ্কনার আসল বাড়ি চেনে না দানা। যেখানে প্রতিবার ওকে নিয়ে যেত সেটা অন্য কারুর বাড়ি আর সেই মালিক বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে বিদেশ চলে গেছে তাই সেই রহস্যের আর উত্তর পেল না দানা।
দানা এতক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছিল, কিন্তু সিমোনের চাপা কণ্ঠ স্বর শুনে দাঁড়িয়ে পরে জিজ্ঞেস করে, "সত্যি করে বলো সিমোন, কঙ্কনা কোথায়?"
পাল্টা হেসে জবাব দেয় সিমোন, "আগে দেখা কর তারপরে জানাবো।"
দেখা ওকে করতেই হবে। কঙ্কনা আর নাসরিনের মৃত্যুর পরে, কিছুতেই অনুধাবন করা যাচ্ছে না সিমোনের মাথায় কি চলছে। সেটা জানার জন্য ওর সাথে দেখা করা এক মাত্র পথ। ফোনে সেটা সম্ভব নয়, কিন্তু দেখা করলে ভীষণ কিছু একটা হবার আশঙ্কা আছে।
দানা একটু ভেবে চিন্তে ওকে বলে, "দেখো সিমোন, তোমার সম্বন্ধে অনেক কিছুই আমার জানা, সুতরাং যদি ভালোয় ভালোয় কঙ্কনার খবর দাও তাহলে খুব ভালো হয়।"
পাল্টা হেসে সিমোন জবাব দেয়, "সেটা আমিও জানি দানা। তবে কি জানো সব কিছু ফোনে বলা যায় না। আমি তোমার জন্য আমাদের পুরানো জায়গায় অপেক্ষা করছি। কঙ্কনার খবর জানতে হলে দেখা করো।"
দানা বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে মহুয়ার দিকে তাকায়। মহুয়া বুঝে উঠতে পারে না, দেখা করা ঠিক হবে না না দেখা করা ভালো। সিমোন যেমন ধূর্ত ছলনাময়ী নারী, দানাকে একা পেয়ে যদি প্রাণে মারতে চায় তাহলে মহুয়া সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে। আগে হলে দানার ভয় ডর থাকতো না, কিন্তু এখন পাশে প্রেয়সী আর কচি রুহি।
রুহিকে কোলের মধ্যে শক্ত করে ধরে দানার দিকে তাকিয়ে থাকে মহুয়া। কি করবে দানা? একা একা যাবে নাকি ওই সাপের গর্তে? নয়নার মতন এর ছোবল বিষাক্ত, চুপচাপ পড়ে থাকবে, তারপরে হঠাৎ করে ছোবল মারবে। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে দানা উত্তর দেয়, "ঠিক আছে, আমি দেখা করবো।"
মহুয়ার চোখ ফেটে জল চলে আসে।
সিমোন মৃদু হেসে বলে, "সন্ধ্যের পরে আমাদের সেই পুরানো জায়গায় চলে এসো।"
ফোন ছাড়তেই মহুয়া ওকে ভয়ার্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, "কি করতে চলেছ?"
দানা চোয়াল চেপে জিজ্ঞেস করে, "কি চাও তুমি। সারা জীবন গর্তে ঢুকে বেঁচে থাকি? একদিকে নয়না, একদিকে মোহন সিমোন। এরা বেঁচে থাকলে আমাদের জীবন দুর্বিষহ করে ছেড়ে দেবে।"
রুহিকে কোলের মধ্যে আঁকড়ে মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, "একটু শান্তি নেই জীবনে। যাচ্ছ যাও একটু সাবধানে যেও।"
সত্যি, একটার পর একটা ঝামেলা ওদের জীবনে লেগেই আছে। শুরু হয়েছিল দানার সাথে কিন্তু সেটা ছড়িয়ে পড়ল মহুয়া আর রুহির জীবনে। এখন পর্যন্ত মহুয়াকে সত্যি কথাটা বলতে পারেনি, কি কারনে কঙ্কনা আর নাসরিন ওকে খুন করতে চেয়েছিল।
চোখের জল মুছে দানাকে বলে, "ওইখানে যেতে দিতে একটা শর্তে পারি। তুমি আকরাম নাসির বলাই শক্তি সবাইকে সাথে নিয়ে যাও।"
দানা জানে সবাইকে সাথে নিয়ে গেলে সিমোন মুখ খুলবে না উল্টে অন্য কিছু চাল খেলবে। দানা একাই যাবে ঠিক করে, তবে সাথে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যাবে। রুহি জিজ্ঞেস করাতে সঠিক উত্তর দিতে পারে না দানা। বিমানের বাগান বাড়িতে ঢোকার আগে ওর কাছে বেরিয়ে আসার একটা সুচতুর পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু এইবারে সেই পরিকল্পনা নেই। এক প্রকার সাপের গর্তে মাথা ঢুকাতে চলেছে দানা কিন্তু নিরুপায়। মহুয়া আর রুহিকে বাড়িতে নামিয়ে দেয়। মনা আর পিন্টু বারেবারে ওর সাথে যাওয়ার কথা বলে কিন্তু দানা মানা করে দেয়। ওদের বাড়িতে থাকতে নির্দেশ দেয়, বলে দানার না ফিরে আসা পর্যন্ত যেন মশা মাছি যেন বাড়ির ত্রিসীমানায় না আসে।
সন্ধ্যের পরে একাই গাড়ি নিয়ে সিমোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে। কোমরের পেছনে একটা পিস্তল দ্বিতীয় পিস্তল পায়ের গোড়ালিতে। যদি ওই বাড়িতে সিমোন ছাড়া আরও লোকজন থাকে, তাহলে দানার বেঁচে ফেরার আশঙ্কা আছে, আর যদি একা থাকে, তাহলে সিমোনেকে ওইখানে পুঁতে রেখে আসবে।
বড় রাস্তা ছেড়ে গ্রামের পথে বাঁক নিতেই দানার বুকের ধুকপুকানির মাত্রা বেড়ে ওঠে, কি হবে কি হবে। গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইলে মহুয়া আর রুহির ছবিটা দেখে। মোবাইল স্ক্রিনে ঠোঁট চেপে চুম্বন দেয় রুহি আর মহুয়াকে। আসন্ন উৎকণ্ঠায় জিব শুকিয়ে গেছে, কিন্তু দমে গেলে চলবে না। বাড়ির সামনে আসতেই দারোয়ান বড় লোহার গেট খুলে দেয়। এতদিনে দানার গাড়ি চিনে গেছে বাগান বাড়ির দারোয়ান। বাড়ির সামনে একটা মোটরসাইকেল আর সিমোনের গাড়ি দাঁড় করানো। মোটর সাইকেল দেখে বুঝতে দেরি হয় না সিমোন একা নয়, সাথে কোন পুরুষ সঙ্গী আছে। গাড়ি থেকে নেমে একটা সিগারেট ধরাতেই একটা ছেলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে ওকে ভেতরে ডাকে। ছেলেটা দেখতে সুঠাম স্বাস্থ্যবান, বুঝতে দেরি হয় না নিজের কামক্ষুধা মেটানোর জন্য এই ছেলেকে ধরেছে সিমোনে। ছেলেটার ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত, পরনে শুধু মাত্র একটা প্যান্ট। দানা জানিয়ে দেয় সিগারেট শেষ করে ভেতরে আসবে। ছেলেটা জানায়, সিগারেট নিয়ে ভেতরে ঢুকলে কোন অসুবিধে হবে না। সেটা দানার অজানা নয়, এই বাড়ির শয়ন কক্ষে সিমোনের শরীর নিয়ে বহুবার সঙ্গমে মেতেছিল। ছেলেটার চোখ বাঁচিয়ে কোমরের পেছনে হাত দিয়ে পিস্তল দেখে নেয় আর মোবাইলে রেকর্ডের বোতাম টিপে ওদের বার্তালাপ রেকর্ড করার জন্য চালিয়ে দেয়। তারপরে ছেলেটার পেছন পেছন ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। ছেলেটা ওকে বসার ঘরের সোফায় বসতে বলে বারের দিকে চলে যায়। কি নেবে জিজ্ঞেস করাতে দানা মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয় কিছু নেবে না। এই বাড়িতে কারুর ওপরে বিশ্বাস নেই, হয়ত মদের সাথে বিষ মিশিয়ে ওকে মেরে ফেলল। ছেলেটা মাথা দুলিয়ে একটা গেলাসে তরল পানীয় ঢেলে শয়ন কক্ষে ঢুকে যায়।
সাপের কোঠর (#০২)
কিছুক্ষণ পরে সিমোন গেলাস হাতে শয়ন কক্ষ থেকে বেড়িয়ে আসে। পরনে শুধু মাত্র একটা সাদা তোয়ালে। বুকের অর্ধেকের বেশি অনাবৃত, শরীর জড়িয়ে শুধু মাত্র পাছা কোন রকমে ঢেকে রাখা। বাকি অঙ্গ বস্ত্রহীন, হয়তো ইচ্ছে করেই দানাকে উত্তেজিত করার জন্য তোয়ালে জড়িয়েছে, কিম্বা সদ্য কামকেলি থেকে উঠে এসছে। তোয়ালে ভেদ করে সুগোল স্তন জোড়ার আকার পরিস্কার ফুটে উঠেছে। কাঁধের দিকে তাকালেই বোঝা যায় ব্রা পরা নেই, তোয়ালে ফুঁড়ে কঠিন স্তন বৃন্ত, দানার দিকে উঁচিয়ে হাতছানি দিয়ে ডাক দেয়। বক্ষ বিভাজনের অধিকাংশ উপচে বেড়িয়ে। গায়ের সাথে এক প্রকার লেপটে রয়েছে তোয়ালে। হাঁটার ফলে তোয়ালে মাঝে মাঝে সরে যায় ঊরুসন্ধি থেকে আর নরম সাদা প্যান্টি ঢাকা ফোলা যোনি দেশ দেখা যায়। দুই বাহু, দুই কাঁধ সম্পূর্ণ অনাবৃত, অবশ্য উপরিবক্ষে কামকেলির সেই চরম ছাপ নেই। মসৃণ ফর্সা পুরুষ্টু ঊরু যুগলের ওপরে ঘরের আলো পিছলে যায়। অবিন্যাস্ত চুল মাথার ওপরে একটা ক্লিপ দিয়ে আটকানো, তাও বেশ কিছুটা ওর গোল ফর্সা মুখের ওপরে এসে মুখ মন্ডল আরো লাস্যময়ী করে তুলেছে। ওর দিকে তাকিয়ে এক কামুকী হাসি দিয়ে ওর পাশের সোফার ওপরে বসে পড়ে সিমোনে। ছেলেটা কিছুক্ষণ পরে ঘর থেকে জামা পরে বেরিয়ে আসে।
সিমোনে ওর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলে, "ওকে সন্তু, তুমি যেতে পারো। আবার পরে ডাক দেব।"
সন্তু বেড়িয়ে যেতেই দানার দিকে তাকিয়ে হেসে জিজ্ঞেস করে, "কি হলো, এতদিন পরে সময় হলো আসার?"
দানা চোয়াল চেপে অল্প হেসে বলে, "দেখা করতে চাইলে দেখা করা যায় সিমোন!"
সিমোন ওর চোখে চোখ রেখে পা ভাঁজ করে সোফার ওপরে তুলে দেয়। পা ভাঁজ করার ফলে সিমোনের সুগোল দুই নরম পাছা সম্পূর্ণ দানার চোখের সামনে অনাবৃত হয়ে যায়। পাছার খাঁজের মাঝ দিয়ে ভিজে সাদা এক চিলতে কাপড়ে ঢাকা ফোলা নরম সদ্য মন্থিত যোনি দেখা পরে। যোনি রসে ভিজে সাদা প্যান্টি ফোলা নরম যোনির সাথে লেপটে যোনির আকার অবয়াব পরিস্ফুটিত করে তোলে। কোমরের নিচের প্রায় সবকিছু অনাবৃত দেখে দানার লিঙ্গের ছটফটানি বেড়ে ওঠে। কিন্তু দানা নিজের উত্তেজনা আয়ত্তে রেখে সিমোনের তীব্র যৌন আবেদনময় শরীর গোগ্রাসে গিলে নেয়। বাড়িতে কি শুধু এই ছেলেটা ছিল না আরো কেউ আছে? সঠিক জানা নেই। দানার ক্ষুধার্ত দৃষ্টি দেখে সিমোনের বুকের রক্ত কামোত্তেজনায় চঞ্চল হয়ে ওঠে। গেলাসে জিব ঠেকিয়ে চোখে কামুকী হাসি দিয়ে ইশারা করে, কি এত জুলুজুলু করে দেখছে? একসময়ে বিনা বাধায় এই শরীর ওর হাতের মধ্যে চলে যেত। ইচ্ছে মতন দানার ভারী পেশী বহুল শরীরের নীচে পরে থেকে কামক্রীড়াতে মেতে উঠতো।
সিমোন ওর দিকে বাঁকা হাসি দিয়ে বলে, "হাতে এখন সময় আছে, বুকে তৃষ্ণা এখন বাকি আছে।"
দানা মাথা নাড়িয়ে হেসে বলে, "তুমি আর শুধরাবে না তাই না সিমোন। কি আলোচনা করতে চাও?"
সিমোন হাসিতে ফেটে পড়ে, হাসির চোটে স্তন জোড়া ভীষণ ভাবে দুলে ওঠে, "আমার খিদে এখুনি কেন মরতে যাবে দানা।" সঙ্গে সঙ্গে হাসি থামিয়ে বলে, "নয়নার মাথা আমার চাই, তবেই আমার খিদে মরবে, দানা।"
খিল খিল হাসির পরেই এহেন থমথমে কণ্ঠ শুনে দানা তীক্ষ্ণ চোখে সিমোনের চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে। মদের গেলাসে ছোট চুমুক দিয়ে দানাকে বলে, "বিমানের মৃত্যুর পেছনে আসলে নয়না দায়ী। সেটা তুমিও ভালো ভাবে জানো আমিও জানি। বিমান ওকে যে বাড়িটা দিয়েছে সেটা আমার ছিল। মোহনকে বলে ওই আড়াই কোটি টাকার বাড়ি নয়নাকে দিয়ে দিয়েছে। সেটা আমি কি করে সহ্য করি বলো? বিমানের মৃত্যুর পরে মোহন খুব ভেঙ্গে পড়েছে। কতবার বিমানকে বললাম, আরে বাবা, আজকাল বাজারে কত নতুন কচি মাগী এসেছে। রিচা দত্ত, সুনয়না ঘোষ, মল্লিকা সেন, আরো কত কচি উঠতি মেয়ে, এদের কাউকে পছন্দ করে মাগী বানিয়ে রাখুক। তা না, বাপ্পা নস্কর যেহেতু ওর গুদ মেরেছে, বিমান সেই গুদ চায়। কি কারন? না ভবিষ্যতে নয়নাকে ব্যাবহার করে বাপ্পাকে সরাবে। আর কি দুর্ভাগ্য দেখো, নিজেই....."
বলতে বলতে থেমে গেল সিমোনে। বিমানের মৃত্যুতে সত্যি কি সিমোন আহত, না ওর আড়াই কোটি বাড়ি নয়নার নামে হয়ে গেছে সেই জন্য আহত?
একটু থেমে দানাকে বলে, "কেন তুমি নয়নাকে আগলে রেখেছ দানা সেটাই বুঝতে পারছি না। তোমার সাথে আমাদের ব্যাবসায়িক সম্পর্ক, (চোখ টিপে কামুকী হাসি দিয়ে বলে) তোমার সাথে আমার সম্পর্ক মহুয়া আর নয়নার আগের তাই না? আমাদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি করে কি লাভ বলো?"
মহুয়ার সাথে সম্পর্ক সিমোনের আগের সেটা সিমোন জানে না। মনে মনে হেসে ফেলে দানা, মহুয়া আর রুহি ওর জীবন, ওর পৃথিবী ওর সব কিছু। সামান্য কয়েক কোটি টাকা উপার্জন করার জন্য দানা ব্যবসায় নামেনি, ওর আসল উদ্দেশ্য ছিল নিজের খুনের প্রতিশোধ নেওয়া, সেই করত করতে অনেকে জালে জড়িয়ে পরে আর এক এক করে সবার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়। নয়নাকে এই খৈতানেরা আক্রমন করুক সেটা দানা মনেপ্রানে চায়।
বেশ ভাবনাচিন্তা করার মেকি ভাব দেখিয়ে কিছু পরে দানা ওকে বলে, "দেখো সিমোন, নয়না এখন প্রচণ্ড সতর্ক হয়ে গেছে। সাদা পোশাকের পুলিস ওর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মোতায়ন করা হয়েছে। আমাদের সাথে আর বিশেষ সম্পর্ক নেই। শুধু শুধু আমার কথায় নয়না বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসবে সেটা নয়।"
সিমোন সোফার ওপরে একটু নড়েচড়ে বসে, যার ফলে তোয়ালে কোমরের প্রায় কাছে চলে আসে। ঊরুসন্ধি পর্যন্ত সম্পূর্ণ পেলব মসৃণ ঊরু জোড়া উন্মোচিত হয়ে যায়। দানার চোখ সিমোনের ঊরুসন্ধির দিকে চলে যায়। সিমোনের শরীরের আনাচে কানাচে দানার লোলুপ দৃষ্টি ঘোরাফেরা করে। সেই দেখে বাঁকা হেসে সিমোন ওকে বলে, "ইসস দানা, কেন মিথ্যে বলছ। তোমার মিসেস মাঝে মাঝেই ওর বাড়িতে যায় সেই খবর আমার কাছে আছে। তুমি চাইলে সব কিছু সম্ভব দানা। কিছু একটা করো।"
ওর বাড়ির ওপরে সিমোন যে নজর রাখবে সেটা আগে থেকেই অনুধাবন করেছিল তাই বাঁকা হাসি দিয়ে সিমোনকে বলে, "তুমি আর নয়না এক ধাতুর তৈরি মহিলা। কে কখন কাকে কি ভাবে মৃত্যু পথযাত্রী বানিয়ে দেবে তার নেই ঠিক।"
অনাবৃত উপরি বক্ষে একটু হাত বুলিয়ে, স্তন জোড়া আলতো চেপে সিমোনে কামুকী দিয়ে হিসহিস কণ্ঠে ওকে বলে, "এই বুকে এতদিনে এই দেখলে, দানা?"
অতীব যৌন উদ্রেক কারি ভঙ্গিমা দেখে দানা হেসে ফেলে, "অনেক কিছু দেখেছি সিমোন, আর অনেক কিছু বুঝেছি।"
সিমোন চোখ বেঁকিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করে, "আচ্ছা! কি কি দেখেছো?"
পায়ের ওপরে পা বদল করে বসে যায় সিমোন। তোয়ালে কোমর পর্যন্ত উঠে যায়, সামনের ভাঁজ খুলে যায়, হয়ত ইচ্ছে করেই এমন করেছে সিমোন। তোয়ালের দিকে খেয়াল নেই সিমোনের, অথবা দানাকে কামোত্তেজিত করার জন্য ইচ্ছে করেই প্যান্টি ঢাকা ঊরুসন্ধি ওর লোলুপ চোখের সামনে মেলে ধরেছে। সাদা ভিজে প্যান্টি ঢাকা ফোলা নরম যোনি দেশ একটু খানি লুকোচুরি খেলে ওর চোখের সামনে মেলে যায়। যোনি চেরার ওপরে চেপে বসে প্যান্টি। পুরুষ্টু ফর্সা ঊরু যুগলের মাঝে মন্মোহক নারী অঙ্গ দেখে দানার বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে।
হঠাৎ মাথার চুল একটু ঝাঁকিয়ে সোফা ছেড়ে উঠে পড়ে সিমোনে। বারের দিকে ধীর পায়ে পাছা দুলিয়ে হেঁটে যায়। নিজের কামোত্তেজনা দাঁতে দাঁত পিষে সংবরণ করে সিমোনের চূড়ান্ত লাস্যময়ী শরীর দুই চোখে গোগ্রাসে গিলে ফেলে। প্যান্টের ভেতরে ওর লিঙ্গ দামাল হয়ে উঠেছে, মদ ছাড়াই সিমোনের হাসি আর চূড়ান্ত লাস্যময়ী দেহ দেখে দানার নেশা চড়ে গেছে।
বারে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে ওর দিকে তাকিয়ে কামুকী হাসি দিয়ে বলে, "তোমার জন্য গ্লেনফিডিক হুইস্কি আনিয়েছিলাম মিস্টার মন্ডল।"
সামনে ঝুঁকে যাওয়ার ফলে তোয়ালের নীচ থেকে সম্পূর্ণ ফর্সা সুগোল নরম পাছা জোড়া অনাবৃত হয়ে যায় দানার লোলুপ চোখের সামনে। পাছা দুলিয়ে দানাকে চরম কামোত্তেজিত করে তোলে সিমোন। দানাও শেষ পর্যন্ত সিমোনের সাথে ছলনা আর শরীরের খেলায় নেমে পড়ে। কঙ্কনা আর নাসরিনের খবর ওর চাই, যে করে হোক চাই। আর তার জন্য যদি সিমোনের সাথে ওকে উদ্দাম সঙ্গম করতে হয় তাও রাজি। সোফা ছেড়ে উঠে, সিমোনের পেছনে দাঁড়িয়ে ওর পিঠের ওপরে হাত রাখে দানা। দানার হাতের ছোঁয়া পেয়ে সিমোন ওর দিকে সরে আসে।
দানা একবারের জন্য সিমোনের মুখ থেকে রাতের ঘটনার সম্বন্ধে শুনতে চায়। ওর পকেটের মোবাইল তখন পর্যন্ত ওদের সংলাপ রেকর্ড করে চলেছে। দানার এক হাত নেমে যায় সিমোনের কোমরে। কোমরে হাত পেঁচিয়ে কাছে টেনে কানেকানে বলে, "কঙ্কনার কি খবর, সিমোন?"
সিমোনে বাঁকা হাসি দিয়ে দানার বুকের ওপরে নিজের স্তন চেপে ধরে বলে, "এখনো ওই কঙ্কনা আর নাসরিন কে নিয়ে পরে আছো কেন? ওরা এইখানে নেই, এইখানে আমি তোমার সামনে।" একটু থেমে চোরা হাসি দিয়ে বলে, "ঠিক কত জনের সাথে শুয়েছো তুমি?"
সিমোনের গোলাপি ঠোঁটের বাঁকা হাসি দানাকে তাতিয়ে দেয়। তোয়ালের তলায় হাত গলিয়ে, সিমোনের নরম পাছা জোড়া থাবার মধ্যে আলতো পিষে ধরে। কঠিন তপ্ত হাতের পরশে সিমোনের দেহ কেঁপে ওঠে, স্তন জোড়া চেপে ধরে দানার প্রশস্থ ছাতির ওপরে। প্যান্টের ভেতরে লিঙ্গ ছটফট করছে, কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে সিমোনের নরম তলপেটের ওপরে চেপে বসে যায়। নিজের দিকে টেনে ওর তলপেটে লিঙ্গ ঘষে সিমোনকে আর নিজেকে উত্তেজিত করে তোলে দানা। হাতের কাছে এত নরম কোমল শরীর পেয়ে নিজেকে আর আয়ত্তে রাখতে পারে না। সিমোন মদের গেলাস বারের টেবিলে রেখে দানার গলা দুই হাতে পেঁচিয়ে ওর চোখের দিকে চূড়ান্ত কামনা ভরা চাহনি নিয়ে তাকিয়ে থাকে। প্যান্টির ওপর দিয়ে নরম সুগোল পাছার ওপরে হাত বুলিয়ে, আর তলপেটে লিঙ্গ ঘষে শরীরের রক্ত গরম হয়ে যায়। ওর মুখের ওপরে সিমোনের তপ্ত শ্বাসের ঢেউ বয়ে চলে। দুইজনের চোখে নির্বাক অসীম কামক্ষুধা। আধা বোজা চোখে ঠোঁট জোড়া অল্প মেলে দানার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায় সিমোন।
দানা মাথা নিচু করে ওর চোখের ওপরে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করে, "কঙ্কনা কোথায় সিমোন?"
সিমোন জিব বের করে আলতো করে ওর ঠোঁট চেতে চাপা ফিসফিস কণ্ঠে বলে, "আগে নয়নার খবর দাও তারপরে আমি কঙ্কনার খবর দেবো। নয়নাকে আমার হাতে তুলে দাও, আর বাকিটা আমার ওপরে ছেড়ে দাও।"
সত্যি কি কঙ্কনা ওর পরিকল্পনা মতন কিছুই সিমোনকে জানায়নি? মাথাটা নামিয়েছিল ওই গোলাপি নরম ঠোঁটে একটা কামড় বসানোর জন্য। কিন্তু চুমুটা খেতে গিয়েও খেল না। মাথা ঝিমঝিম করছে। বিবেক আর বুদ্ধি একসাথে পরস্পরের সাথে যুদ্ধে নেমেছে। শেষ পর্যন্ত কি করবে দানা? "অশ্বথামা হত - ইতি গজ" চাল না দিলে এই ধুরন্ধুর দুই মহিলাকে পরাস্ত করা ওর একার পক্ষে অসম্ভব।
একহাতে সিমোনের সুগোল নরম পাছা জোরে চেপে ধরে, অন্য হাতে কোমর পেঁচিয়ে বাহু বেষ্টনীতে কঠিন ভাবে বেঁধে ওকে বলে, "মাথায় একটা জব্বর পরিকল্পনা আছে। (কিছুক্ষণ থেমে বলে) নয়নার প্রাণ ভোমরা ওর ভাইয়ের মধ্যে লুকিয়ে। তুমি যদি ওর ভাইকে অপহরন করতে পারো তাহলে খুব সহজেই নয়নাকে ফাঁদে ফেলতে পারবে।"
লাস্যময়ী সিমোন ওর বাহুপাশে ছটফট করে নিজেকে আরও বেশি করে দানার সাথে চেপে ধরে জিজ্ঞেস করে, "কিন্তু ওর ভাইকে কি করে ধরবো? শুনেছি ওর ভাই মন্দ বুদ্ধি, বাড়ি থেকে বের হয় না। নয়না ওর ভাইকে চোখে চোখে রাখে সব সময়ে।"
তোয়ালে প্রায় খুলে যাওয়ার যোগাড়। একহাতে সিমোনের সুগোল নরম পাছার আয়েশ করে চটকে চলেছে, অন্য হাত তোয়ালের ভেতরে ঢুকিয়ে সিমোনের পিঠের ওপরে আদর করে নিজের দিকে টেনে ধরে। প্যান্টের ভেতরে ফুঁসে ওঠা লিঙ্গ, সোজা সিমোনের ঊরুসন্ধির কাছে গিয়ে ধাক্কা মারে আর কঠিন লিঙ্গের পরশে সিমোন বারেবারে নিজের ঊরুসন্ধি দানার ঊরুসন্ধির সাথে পিষে ধরে।
সিমোনের নধর লাস্যময়ী দেহ বেশ করে মর্দন করতে করতে বলে, "হ্যাঁ এটা সত্যি যে নয়না ওর ভাইকে চোখে চোখে রাখে। আমাকে কয়েকদিন সময় দাও। আমি ওর ভাইকে তোমার হাতে তুলে দেবার ব্যাবস্থা করে দেবো। যেদিন তুলে দেব সেইদিন রাতেই তুমি নয়নাকে ফোন করে জানিয়ে দেবে যে ওর ভাই তোমার কবলে। পরেরদিন এই বাড়িতে ডেকে এনে, অথবা যেখানে তোমার খুশি সেখানে ডেকে এনে ওর সাথে বোঝাপড়া করে নিও।"
দানার কঠিন বাহু বেষ্টনীর মাঝে ছটফট করে উঠে কামুকী ধূর্ত হাসি দিয়ে বলে, "দারুন পরিকল্পনা দানা। যেদিন তুমি আমার হাতে ওকে তুলে দেবে সেদিন আমি তোমাকে কঙ্কনার খবর দেব।"
দানার মাথা গরম হয়ে যায় ওই কথা শুনে, সঙ্গে সঙ্গে সিমোনের হাত পেঁচিয়ে ধরে চাপা হুঙ্কার দেয়, "আমার সাথে ছলনা করছ সিমোন? জানো তোমার মরণ কাঠি আমার হাতের মুঠিতে?"
হাত পেঁচিয়ে ধরার ফলে একটু ব্যাথায় সিমোনের ভুরু কুঁচকে যায়, সেই সাথে মরণ কাঠির কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে যায়। কিসের কথা বলতে চায় দানা, "এই দানা, প্লিজ, ছাড়ো লাগছে। আমি তোমাকে বলেছি তো কঙ্কনার খবর দেব। এত জোরে চেপে ধরলে হাড় মাংস এক হয়ে যাবে যে।"
দানা হেসে বাহু বেষ্টনী আলগা করে দেয়। ওর সামনেই একটা গেলাসে মদ ঢেলে ওকে ধরিয়ে দেয় সিমোন। মদে এক চুমুক দিয়ে সিমোনকে জিজ্ঞেস করে, "এইবারে বলো কঙ্কনার খবর।"
সিমোনে বাঁকা ধূর্ত হেসে একটু দূরে সরে গিয়ে বলে, "আমি ব্যাবসায়ী মানুষ। আগে কাজ তারপরে দাম।"
দানা চোয়াল চেপে ওকে বলে, "তোমার বিরুদ্ধে আমার কাছে অনেক তথ্য প্রমান আছে। বিমান আর মোহন আমার সামনে স্বীকার করেছিল যে তুমি মৈনাকের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সেই আলোচনা আমার কাছে রেকর্ড করা আছে।"
সিমোন হেসে ফেলে, "কেন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছি। তুমি যদি ওই টেপ নিয়ে পুলিসের কাছে যাও, একটা শুনানিতে ওই টেপ মিথ্যে বলে প্রমান করতে আমার এক মিনিট লাগবে না। তুমি কথা রাখো আমিও কথা রাখব।"
চোখ টিপে মদের গেলাসে চুমুক দিয়ে বলে, "তোমার ওপরে আমার কড়া নজর আছে ভুলে যেও না।"
বুক ভরে শ্বাস নেয় দানা, এত সহজে সিমোনের কাছ থেকে খবর বের করা যাবে না সেটা জানত। দানা যদি বুনো ওল, তাহলে সিমোনে বাঘা তেঁতুল! মদের গেলাস শেষ করে বিশেষ কথা না বাড়িয়ে বেড়িয়ে পড়ে। বুকের মধ্যে ধুকপুকানি বেড়ে ওঠে। সিমোনে ওর বাড়ির ওপরে নজর রেখে চলেছে। খুব শীঘ্র কাজ হাসিল করতে হবে, এক ঢিলে দুই পাখী মারতে হবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ, কি ভাবে বুবাইকে ওই বাড়ি থেকে বের করে সিমোনের হাতে তুলে দেওয়া যায়। ময়নাকে ব্যাবহার করে নয়নার ভাই বুবাইকে ওর বাড়ি থেকে বের করে আনা সম্ভব। একবার আহত নয়না আর ক্ষুধার্ত হিংস্র সিমোনে মুখোমুখি হলে দুইজনা দুইজনকে খুন করে ফেলবে। ওর পথের কাঁটা সরে যাবে।
সিমোনের বাড়ি থেকে বেড়িয়েই মহুয়াকে ফোনে জানিয়ে দেয় ওর পরিকল্পনার কথা। মহুয়া সব শুনে আঁতকে ওঠে, শেষ পর্যন্ত এক নিরপরাধ ছেলের সাহায্যে নিয়ে নয়নাকে ফাঁসাতে চায় দানা? মন কিছুতেই মানতে চায় না মহুয়ার। দানা মহুয়াকে বুঝিয়ে বলে, নয়না মারা গেলে এই নিষ্ঠুর জগত ওর ভাইকে বাঁচতে দেবে না। আরো বলে সেই ছেলের কামুক প্রবৃত্তি যা তাতে ওর বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো। কত কাজের মেয়ের সর্বনাশ করেছে নয়না আর তার ভাই তার ইয়ত্তা নেই। কাজের ছলে ওদের দেহ ভোগ করেছে বুবাই, টাকা দিয়ে সেই সব মেয়েদের চুপ করিয়ে দিয়েছে নয়না। সেদিন রাতে যদি দানা ওর বাড়িতে না থাকতো, তাহলে ওই বুবাইকে দিয়েই সঙ্গীতাকে ধর্ষণ করাত নয়না। আর বুবাই যা খেপা ছেলে, সঙ্গীতাকে হয়ত আঁচড়ে কামড়ে খিমচে রক্ত মাংস হাড় বের করে দিত। সেই শুনেই মহুয়ার শরীর, বুবাই আর নয়নার প্রতি তীব্র ঘৃণায় জ্বলে ওঠে। দানাকে একপ্রকার আদেশ দেয় ওদের শেষ করে দিতে।
সাপের কোঠর (#০৩)
ময়নাকে এই ঝামেলার মাঝে টানতে চাইছিল না কিন্তু নিরুপায়, এ ছাড়া ওর কাছে আর কোন রাস্তা খোলা নেই ওর ভাইকে ওই বাড়ি থেকে বের করার জন্য। দানার সাথে ওর ভাই বের হবে না, সোজা নয়নাকে নিয়ে সিমোনের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। একমাত্র রাস্তা ওর ভাই। যদি সিমোনের হাতে ওর ভাই পরে তাহলে ভাইকে বাঁচাতে নিশ্চয় নয়না, সিমোনের কাছে ধরা দেবে।
এতদিন পরে দরজায় দানাকে দেখে ময়না অবাক হয়ে যায়। নয়নার গাড়ি চালানোর সময়ে একবার শুধু ফারহান আর ও মিলে ময়নার সাথে সঙ্গমে মেতেছিল, তারপরে ফারহান যদিও মাঝে মাঝে ময়নার কাছে আসতো, তবে দানা কোনোদিন আর আসেনি। ওকে দেখেই একটু অবাক হয়ে যায়। আসার কারন জিজ্ঞেস করেলে দানা জানায় বিশেষ প্রয়োজনে এসেছে। ময়নার প্রেমিক কৌশিক সেদিন বাড়িতেই ছিল। দানার সাথে আগে পরিচয় ছিল না, নয়না পরিচয় করিয়ে দেয় পুরানো বন্ধু বলে। দানার নাম শুনেই কৌশিক ওকে চিনতে পারে। মিচকি হেসে ওকে বলে যে ওর জন্য ময়নাকে হাতে পেয়েছে। সেই শুনে বেশ কিছুক্ষণ হাসাহাসি চলে।
কৌশিক ওর পিঠে চাপড়ে বলে, "তুমি না তুই না আপনি কি বলব ভেবে পাচ্ছি না। আজকাল অনেক বড়লোক হয়ে গেছিস। টিভিতে খবরের কাগজে এই কয়দিন তোর নামে বেশ খবর ছাপাছাপি হল।"
কৌশিককে "তুই" বলেই সম্বোধন করে দানা, "আরে না না, সেই রকম কিছু নয় রে। সব সময়ে মিথ্যের জয় হবে সেটা মেনে নিতে একটু কষ্ট। যাই হোক যেটা আসল কাজে এসেছিলাম সেটা এখন বলি।"
ময়নাকে সব কিছু খুলে বলতেই ময়নার চক্ষু চড়ক গাছ। দানা বলে কি? ওই মন্দ বুদ্ধি বুবাইয়ের সাথে সহবাস করে যাচ্ছে বটে, তবে একেবারে প্রেমের নাটক করতে হবে শুনে একটু ঘাবড়ে যায়। বর্তমান ঝামেলার জন্য বেশ কিছুদিন নয়নার বাড়িতে যাওয়া হয়নি। এরমাঝে কি ভাবে বুবাইকে বাড়ি থেকে বের করে আনবে সেটাই চিন্তার। কিন্তু নয়নাকে ধরতে হঠাৎ বুবাইয়ের সাহায্যের কি দরকার পড়ল সেটা ময়না বুঝতে পারল না। দানা ওকে বুঝিয়ে বলে নয়নার প্রান ভোমরা ওর ভাই বুবাই। বুবাই যদি সিমোনের হাতে পড়ে, তাহলে দিগ্বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে যাবে নয়না, আর সিমোনের কাছে ধরা দেবে। ময়নাকে শুধু মাত্র বুবাইকে কোথাও নিয়ে যাবার ছলে ওই বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে আর সোজা সিমোনের হাতে তুলে দিতে হবে। অবশ্য তার জন্য মোটা টাকা দেবে দানা। ময়না টাকা চায় না, ম্লান হেসে ওর হাত ধরে জানিয়ে দেয় দানা যা বলবে সেটা করতে রাজি। তবে দানা এটাও জানায়, বুবাইকে ওই বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসার পরে ওকে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হবে। কৌশিক জানিয়ে দেয়, দানার কথা মতন বুবাইকে ওর হাতে তুলে দিয়ে ওরা কয়েকদিনের জন্য গা ঢাকা দিয়ে থাকবে।
দানা নিজেকে এর মধ্যে জড়াতে চায় না কিন্তু ময়নাকে আর সিমোনকে বলে এসেছে। কি ভাবে সরাসরি না গিয়ে বুবাইকে সিমোনের হাতে তুলে দেওয়া যায় সেটাই চিন্তায় মগ্ন। রাতের খাওয়ার পরে বারান্দায় বসে একটা সিগারেট ধরিয়ে সেই অঙ্ক কষে।
এমন সময়ে কাঁধের ওপরে প্রেয়সীর নরম হাতের ছোঁয়া পেয়ে সম্বিত ফিরে পায়। কাঁধ ঘাড় নরম আঙ্গুল দিয়ে টিপতে টিপতে মহুয়া ওকে জিজ্ঞেস করে, "শেষ পর্যন্ত বুবাইকে কেন এই ঝামেলার মাঝে টেনে আনছো?"
শেষ পর্যন্ত দানাকে সত্যি উজাগর করতেই হয়, না হলে মহুয়া কিছুতেই এই কাজে ওর সাথে সাথ দেবে না। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে মহুয়াকে বলে, "যেদিন বিমানের খুন হল, সেদিন রাতে ওদের মুখে আমি শুনেছিলাম যে ওরা নাকি মেয়েকে অপহরন করতো।"
কথাটা কানে যেতেই মহুয়ার শরীর কেঁপে ওঠে। মুখ চাপা দিয়ে আঁতকে ওঠে, "কি বলছো?"
দানা ওর হাত ধরে পাশে বসিয়ে বলে, "হ্যাঁ, আর এই নয়নার সাহায্যে রুহিকে ওরা অপহরন করাতো, তাই নয়না আমাদের সাথে এতদিন ভালো সম্পর্ক রেখেছিল।"
মেয়েকে অপহরন করার কথা শুনেই মহুয়ার গায়ে কাঁটা দিয়ে। দাঁতে দাঁত পিষে ছলছল চোখে দানার দিকে তাকিয়ে নির্বাক হয়ে বসে থাকে। কি বলবে? কার দোষে ওর মেয়েকে এর মাঝে টেনে আনা হয়েছে? শেষ পর্যন্ত মাথা ঝাঁকিয়ে দানাকে বলে, "ওর রক্ত আমার চাই জিত।" দানার বুকের ওপরে কিল মেরে অস্ফুট চেঁচিয়ে ওঠে, "নয়না আর সিমোনের রক্ত আমার চাই, জিত।"
দানা ওকে জড়িয়ে ধরে বসে। বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে অনেকক্ষণ নিথর হয়ে পড়ে থাকে মহুয়া। ওর কপালে কি একটুকু শান্তি উপরওয়ালা লিখে যায়নি? ক্ষুধার্ত হায়নার কবল থেকে বেঁচে এসে কি শেষ পর্যন্ত সাপের কবলে পড়লো? কিন্তু এই বুকের মাঝে যতক্ষণ মুখ গুঁজে থাকে ততক্ষণ ওর হৃদয় জানে এই পৃথিবীতে কারুর সাধ্য নেই ওকে এই বুকের ওপর থেকে কেড়ে নিয়ে যায়।
দানা ওর হাত ধরে কোলের ওপরে বসিয়ে বলে, "কি করে বুবাইকে সিমোনের হাতে তুলে দেব সেটাই ভাবছি।"
একহাতে মহুয়ার কোমর জড়ানো, অন্য হাতের আঙ্গুলে সিগারেট। ধুয়ো নাকে যেতেই খুক খুক করে কেশে উঠে রেগে যায় মহুয়া, "আগে সিগারেট ফেলো।"
অগত্যা আধা খাওয়া সিগারেটটা দুর করে ফেলে দিতে হয়। কি করা যাবে কোলের প্রেয়সীকে রাগাতে পারে না যে।
মহুয়া চোখ মুছে ওর গলা জড়িয়ে বলে, "সরাসরি যেতে হবে না। তুমি সিমোনকে ময়নার খবর দিয়ে বল, সোজাসুজি ওর সাথে এই বিষয়ে কথা বলুক। সিমোনকে এটা বল, যেন ময়নাকে খুলে কোন বিষয়ে না জানায়। শুধু এটা জানাক যে একবার বুবাইকে দেখতে চায়। সেই সাথে তুমি সিমোনকে বল, যখন ময়না বুবাইকে নিয়ে সিমোনের কাছে যাবে, তখন সিমোন ময়নার কাছ থেকে বুবাইকে ছিনিয়ে নেবে। ব্যাস তাহলে তুমি এই প্রেক্ষাপটে কোথাও থাকবে না। সিমোনের কাজ হাসিল হয়ে যাবে আর তোমার কাজ হাসিল হয়ে যাবে। শুধু তোমাকে ময়নার ওপরে একটু নজর রাখতে হবে যাতে সিমোন ওকে না আক্রমন করে বসে।"
দানা মাথা নাড়িয়ে মহুয়াকে এক গাদা চুমু খেয়ে বলে, "তুমি না থাকলে আমার কি হতো বলো তো?"
মহুয়া মিচকি হেসে কানেকানে বলে, "এইখানে একা একা বসে ছিঁড়তে আর আটি বাঁধতে।" বলেই খিলখিল করে হেসে ফেলে।
ওই হাসি শুনে দানা আর থাকতে পারে না। মহুয়াকে কোলে তুলে ওদের মিলন কক্ষে ঢুকে পড়ে।
পরদিন সকালেই সিমোন ওকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে কবে দানা, নয়নার ভাইকে ওর হাতে তুলে দেবে। মহুয়ার সুচতুর পরিকল্পনা দানা সিমোনকে খুলে বলে। দানা জানায়, স্মিতা নামের এক মডেলের সাথে নয়নার ভাইয়ের বেশ ভালো সম্পর্ক। তাকে টাকা দিয়ে হাত করতে পারলে অতি সহজে বুবাইকে নিজের কবলে করা যাবে। একবার বুবাই সিমোনের কবলে পড়লে নয়নাকে বাগে ফেলা অতি সহজ হয়ে যাবে। এই পরিকল্পনা সিমোনের মনে ধরে যায়, জানিয়ে দেয় স্মিতা নামক মডেলের সাথে এই বিষয়ে কথা বলবে। সেই সাথে দানা এটা জানিয়ে দেয় যেহেতু স্মিতা বাইরের লোক, সিমোন যেন সব কিছু খলাখুলি ওর সাথে আলোচনা না করে বসে। সিমোনে সাঙ্ঘাতিক ধূর্ত মহিলা, দানাকে জানিয়ে দেয় ওর মাথায় সেই টুকু বুদ্ধি আছে কি ভাবে স্মিতার সাথে কথা বলবে আর কি ভাবে বুবাইকে বের করার পরিকল্পনা করবে। দানা মনে মনে খুব খুশি, এক এক করে ওর শত্রু সংখ্যা কমছে, তবে এখন ওর আসল শত্রু, নাসরিন আর কঙ্কনার হদিস পাওয়া গেল না। সিমোনকে জিজ্ঞেস করলেই বলে আগে বুবাই তারপরে ওদের খবর দেবে।
সেদিন বিকেলে ময়না ওকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে সিমোন ওকে ফোন করেছিল আর বুবাইকে নিয়ে বেড়াতে বের হবার কথা বলেছে। দানা ওকে বলে খুব সন্তর্পণে যেন বুবাইকে নিয়ে বের হয়, ঘুনাক্ষরেও যদি নয়না টের পেয়ে যায় যে এই ঘুরতে বের হবার পেছনে কোন দুরাভিসন্ধি আছে, তাহলে ময়নাকে মেরে ফেলতে ওর হাত কাঁপবে না একটুও। সেই সাথে এটাও জানায় কয়েকদিন ওর সাথে ভালো ব্যাবহার করতে যাতে বুবাই অথবা নয়নার কোন সন্দেহ না হয়। তারপরে চারদিন পরে ময়না যেন বেড়ানোর ছল করে বুবাইকে সঙ্গে নিয়ে বেড়িয়ে আসে। কথা মতন কাজে লেগে পড়ে ময়না।
চারদিন চাপা উৎকণ্ঠায় কেটে যায় মহুয়া আর দানার। সমুদ্র আর সুমিতার চলে যাওয়ার দুঃখ ভোলার জন্য নয়না কাজের মধ্যে ডুবে যায়। ময়না রোজদিন নয়নার বাড়িতে গিয়ে বুবাইয়ের সাথে বেশি করে সময় কাটাতে শুরু করে দেয়। সিমোন ওই দিকে আহত নরখাদক বাঘিনীর মতন বুবাইয়ের অপেক্ষায় দিন গোনে। ময়নার ঘন ঘন আসা যাওয়াতে নয়না একটু খুশি, এই ঝামেলার ফলে বুবাই খুব ভয় পেয়ে গেছিল, সব সময়ে নিজের ঘরের মধ্যে বন্দি থাকতো। ময়না খবর দেয় যে বুবাইকে নিয়ে বের হতে এইবারে কোন অসুবিধে নেই।
সেদিন সকালে সিমোনকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে ফাঁদ তৈরি, শুধু সিমোন বলে দিক কোথায় বুবাইকে নিয়ে আসতে হবে। উত্তরে সিমোন জানিয়ে দেয়, মোহনার দিকের বড় রাস্তায় উঠে বেশ কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পরে একটা সাদা রঙের গাড়ি দেখতে পাবে। বুবাইকে যেন গাড়িতে ছেড়ে ওরা চলে যায়। দানা জানিয়ে দেয়, স্মিতার সাথে আরো একজন থাকবে, আর কঙ্কনার খবর না পেলে বুবাইকে ওর হাতে তুলে দেবে না। যদি সিমোন কোন ছলনা করতে চায় তাহলে সোজা পুলিসকে ফোন করে ডেকে নেবে ওইখানে।
সব শুনে সিমোনে কুটিল এক হাসি দিয়ে বলে, "ইসস দানা, বড় ভুল করছ। পরিকল্পনা তোমার, আমি মানছি আমি স্মিতার সাথে দেখা করেছি কিন্তু তুমি যা পারো সেটা আমি পারি না ভাবলে কি করে। তোমার পরিকল্পনা রীতিমতন আমার মোবাইলে টেপ করা আছে। সুতরাং বেগরবাই করলে ওই টেপ পুলিসের হাতে চলে যাবে। নাও নাও দানা, নিজেদের মধ্যে বেশি মারামারি করে লাভ নেই। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় নয়নাকে হাতের মুঠোর মধ্যে আমার চাই।"
দানা বুঝতে পেরেছিল এইরকম কিছু একটা হতে পারে। যে পথে সিমোনকে আক্রমন করতে চেয়েছিল সেই পথ ধরে যে সিমোন এগোবে না সেটা বলে দিতে হয় না।
নয়না নিজের শুটিংয়ে বেড়িয়ে গেছে। পরিকল্পনা মাফিক ময়না ওর বাড়িতে বিকেলে পৌঁছে যায়। এই কয়দিনে বুবাইকে রোজ স্বপ্ন দেখিয়ে গেছে যে একটা বড় পার্কে বেড়াতে নিয়ে যাবে। যদিও নয়নার বিশেষ ইচ্ছে ছিল না, তবুও বুবাইয়ের জেদের বসে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে যায়। স্মিতাকে ভরসা করা যায় না, তাই নিতাকে সঙ্গে যেতে নির্দেশ দেয়। নয়নার বাড়ি থেকে, বুবাই আর নিতাকে নিয়ে বের হতেই দানাকে ফোন করে দেয় ময়না। ওরা একটা ট্যাক্সিতে উঠে মোহনার দিকের বড় রাস্তা ধরে।
পকেটে পিস্তল, মহুয়ার কপালে একটা চুমু খেয়ে বেরিয়ে পড়ে দানা। নিজের গাড়ি নেয় না কারন নিতা আর সিমোন দুইজনে ওর গাড়ি ভালো ভাবেই চেনে। শক্তিকে দিয়ে অন্য একটা গাড়ি আনিয়ে নেয়। ময়নার বাড়ি থেকে কৌশিককে তুলে নিয়ে মোহনার দিকের বড় রাস্তা ধরে।
ময়না ওকে ট্যাক্সির নাম্বার মোবাইলে পাঠিয়ে দিয়েছিল, তাই বড় রাস্তায় পড়ার পরে ট্যাক্সি অনুসরন করতে ওদের অসুবিধে হয় না। ট্যাক্সির মধ্যে ময়না, নিতা আর বুবাই আর পেছনের গাড়িতে শক্তি, কৌশিক আর দানা। দানা শক্ত হাতে গাড়ি চালাতে চালাতে ঘনঘন সিগারেট টেনে চলে, বুকের মধ্যে চাপা উত্তেজনা। ট্যাক্সি হুহু বেগে মোহনার দিকে এগিয়ে চলেছে, বেশ কয়েক কিলোমিটার পার হয়ে যাওয়ার পরেও কোন সাদা রঙের গাড়ির দেখা নেই। দানার সন্দেহ হয়, একি হলো? নিতার হয়ত সন্দেহ হয়ে গেছে আর নয়নাকে ফোনে সব জানিয়ে দিয়েছে। নাকি সিমোন ওদের দেখে ফেলেছে আর তাই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। সামনে পেছনে প্রচুর বাস ট্রাক গাড়ি ঘোড়া, এর মাঝে যদি ওদের কেউ অনুসরন করে চলে তাহলে বোঝার উপায় নেই।
বেশ কিছুপরে ট্যাক্সিটা হঠাৎ এক বাঁক নিয়ে একটা গ্রামের রাস্তায় নেমে পড়ে। দানা চমকে যায়, কি হল ব্যাপারটা। কৌশিক আর দানা মুখ চাওয়াচায়ি করে, এমন কথা ছিল না। সিমোনকে ফোন করবে কি করবে না। সিমোনকে ফোন করলে জেনে যাবে যে পেছনে অনুসরন করছে, সেটা জানাতে চায় না। আড়াল করে দেখতে চায় কতদুর কি হতে চলেছে। দানাও ওই গ্রামের রাস্তায় গাড়ি নামিয়ে দেয়। বেশ দুর থেকে গাড়িটাকে অনুসরন করতে করতে এগিয়ে চলে। নিতা নিশ্চয় এতক্ষণে ময়নার দুরাভিসন্ধি টের পেয়ে গেছে। একটু দুর যেতেই ট্যাক্সির সামনে একটা কালো রঙের গাড়ি এসে দাঁড়ায়। দানা দূরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে হাতে পিস্তল নিয়ে পাশের মাঠে নেমে পড়ে। ধানের মধ্যে গা ঢাকা দিয়ে ট্যাক্সির দিকে তিনজনে এগিয়ে যায়। ওদের কানে মেয়েলী কণ্ঠস্বরের চেঁচামেচির আওয়াজ ভেসে আসে। কয়েকজন দুষ্কৃতি গাড়ি থেকে নেমে ট্যাক্সির দিকে বন্দুক উঁচিয়ে এগিয়ে যায়। সবকটা লোকের মুখ কালো জালের মুখোশে ঢাকা, কাউকে চেনার জো নেই। প্রথমে ট্যাক্সির ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে বের করে মাথার পেছনে এক ঘা মেরে অজ্ঞান করে দেয়। তারপরে পেছনের দরজা খুলে তিনজনকে টেনে বের করে। মুখোশে ঢাকা লোক গুলো এদিক ওদিকে তাকিয়ে ফোনে তুলে কারুর সাথে কিছু কথা বলে। দানা হলপ করে বলতে পারে ওইপাশের ব্যাক্তি, সিমোন ছাড়া আর কেউ নয়। ময়না আর নিতার চোখ বেঁধে, নাকের কাছে কিছু একটা শুকিয়ে দিয়ে অজ্ঞান করে দেয়। বুবাইকে অজ্ঞান করে দিয়ে কালো গাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে দুষ্কৃতীরা অন্যপাশের রাস্তা ধরে চলে যায়। দানার কেমন খটকা লাগে, সিমোনে বলেছিল সাদা রঙের গাড়ি বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে, সেটা না হয়ে একটা কালো রঙের গাড়ি গ্রাম ছাড়িয়ে মাঠের মাঝে।
কৌশিক এক দৌড়ে ময়নার কাছে গিয়ে ওর চোখের বাঁধন খুলে দেয়। জল আনা হয়নি, কোন রকমে ময়নাকে কোলে তুলে শক্তির আনা গাড়িতে বসিয়ে ওরা চলে যায়। ট্যাক্সি চালক আর নিতাকে রাস্তার ধারে অজ্ঞান অবস্থায় ছেড়ে দেয় দানা। এই কিডন্যাপের খবর অন্তত সিমোনের আগে নয়নার কানে পৌঁছান উচিত। গাড়ি করে সোজা ওরা মহানগর ফিরে নদীর ওপাড়ে বড় রেলের স্টেশানে চলে যায়।
দানা একটা টাকা ভর্তি ব্যাগ ময়নার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে, "তোরা কয়েক দিনের জন্য গা ঢাকা দিয়ে থাক। আমাকে যেন ভুলেও ফোন করিস না আর পারলে নিজেদের ফোন এই কয়দিনে ব্যাবহার করিস না। খবরের কাগজে চোখ রাখিস, এই ঝামেলার খবর কাগজে ছাপা হবেই সুতরাং ওই বুঝে তোরা আবার এই মহানগরে ফিরে আসিস।"
কৌশিক আর ময়নাকে ট্রেনে উঠিয়ে দানা বাড়ি ফিরে আসে।
চরম উৎকণ্ঠায় মহুয়ার জিভ শুকিয়ে, বারেবারে ঘর বাহির করে দানার অপেক্ষায়। বাড়ি ফিরেই মহুয়াকে সম্পূর্ণ ঘটনাবলী জানিয়ে নিজের অস্থিরতা ব্যাক্ত করে। এটা আবার সিমোনের কোন নতুন চাল, জায়গাটা ওদের বাগান বাড়ি থেকে অনেকদুরে, সাদা রঙের গাড়ির জায়গায় কালো রঙের গাড়ি। সিমোনে অথবা মোহনকে এই সময়ে ফোন করা ঠিক হবে না। দরকার পড়লে ওরা নিজেরাই ফোন করবে। দানা যে এর সাথে জড়িত সেটা যদি পুলিস জানতে পারে তাহলে বিশাল সমস্যা দেখা দেবে।
একটু পরেই মহুয়ার ফোন বেজে ওঠে। ওইপাশ থেকে নয়না আর্তনাদ করে ওঠে, "ভাইকে কেউ কিডন্যাপ করেছে, মহুয়া। প্লিস এসো....." বলেই কেঁদে ফেলে।
মহুয়া আর দানা মুখ চাওয়াচায়ি করে। ওর বাড়িতে এখন যাওয়া উচিত যদিও ওরা জানে কে অপহরন করেছে, তবে একটু সংশয় আছে সেই সম্বন্ধে। নয়নাকে হাতে না পাওয়া পর্যন্ত সিমোন ওর টেপ পুলিসের কাছে দেবে না। মহুয়া রাগে জ্বলতে থাকলেও ওকে শান্ত হতে অনুরোধ করে জানিয়ে দেয় ওরা কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবে।
চিন্তা মগ্ন দানাকে জিজ্ঞেস করে, "কি করবে? সব চাল যে উলটো পড়ে গেল।"
দানা মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, "কি যে হয়ে গেল জানি না। সিমোন বলেছিল বুবাইকে হাতে পেলে আমাকে কঙ্কনার খবর দেবে। এখন সিমোনকে ফোন করা একদম যাবে না। ওর কথায় বিশ্বাস করা একদম উচিত হয়নি আমার।" একটু থেমে বলে, "এখন চল নয়নার বাড়িতে। পুলিসের সাহায্য এইবারে নিতেই হবে না হলে ওদের বাগে ফেলা যাবে না কিছুতেই। ভেবেছিলাম সিমোন আর নয়না সামনাসামনি হলে একে ওপরকে খুন করবে, কিন্তু এখানে মনে হচ্ছে কোন তৃতীয় ব্যাক্তির আগমন হয়েছে। তবে মোহন হলে ক্ষতি নেই কিন্তু অন্য কেউ হলে বড় মুশকিল।"
তৃতীয় ব্যাক্তি কে হতে পারে, শত চিন্তা করেও কিছুতেই দানা আর মহুয়া উদ্ধার করতে পারে না।
কেমন লাগলো দু-একটা শব্দ হলেও প্লিজ লিখে জানান। আপনাদের মহামূল্যবান মন্তব্যই আমার গল্প শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য।
পিনুরামের লেখা এই গল্পটির ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
click hereপিনুরামের লেখা গল্পগুলোর ইনডেক্স-এ যেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
মূল ইনডেক্স এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
হোমপেজ এ যেতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
No comments:
Post a Comment